#এসো_বৃষ্টি_হয়ে(৩)
#writer_sayuri_dilshad
সুখন একহাতে গলা চেপে ধরে অন্য হাতে বেলির মুখ চাপা দেয়। বেলি দেয়ালের সাথে মিশে যায়। দুই চোখ যেন কোঠর থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে। বেলি দুই হাতে সুখনকে ধাক্কা দিয়ে সরানোর চেষ্টা করে। কিন্তু পারে না।
সুখন যেন হিতাহিত জ্ঞান শুন্য হয়ে গেছে। দাঁতে দাঁত চেপে বলে,
– চুপ! একদম চুপ৷
কুলসুম বেগম নামাজটা কোনমতে শেষ করে সুখনের রুমে আসে কি হয়েছে দেখার জন্য। রুমের ভিতরের কর্মকান্ড বুঝতে পেরেই তিনি আর্তনাদ করে উঠেন। দৌড়ে যান ছেলের হাত থেকে বেলিকে ছাড়ানোর জন্য। বলতে লাগলেন,
– হায় আল্লাহ। সুখন করস কি! মাইয়াডা মইরা যাবো। ছাড়, ছাড় ওরে। শয়তানের বাচ্চা ছাড় ওরে।
বলতে বলতে সুখনের হাতে পিঠে চড় থাপ্পড় মারতে থাকেন। সুখন ছেড়ে দেয় বেলিকে। বেলি লুটিয়ে পড়ে ফ্লোরে। গলায় হাত ধরে কাশতে লাগলো। আর হা করে মুখ দিয়ে দম নিতে লাগলো। কুলসুম বেলির বুক পিঠে হাত বুলাতে বুলাতে বললো,
– মা, ভালো লাগতেছে এখন তোমার। পানি খাইবা একটু?
বেলি মাথা নেড়ে হ্যা বললো। কুলসুম বেগম দৌড়ে রান্নাঘর থেকে গ্লাসে করে পানি আনলেন।পানিটা গিলতে কষ্ট হলো বেলির। কেঁদে ফেললো বেলি গলার ব্যাথায় নয় তার মনের ব্যাথায়। কুলসুম বেগম বেলিকে জড়িয়ে ধরে মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বললেন,
– কান্দে না আম্মা। কান্দে না।
বেলির যেন আজ কান্নার বাদ ভাঙলো। হাউমাউ করে কেঁদে উঠলো বেলি। বললো,
– আম্মা আপনার ছেলে আরেকটা বিয়া করছে আম্মা। মানুষ মিথ্যা বলে নাই। আপনার ছেলে ঐ বেডিরে বিয়া করছে আম্মা। আমার এতো বড় সর্বনাশ করলো আম্মা। আপনি তো সব জানেন।
কুলসুম বেগম স্তব্ধ হয়ে গেলেন। পিঠে হাত বুলানো বন্ধ করে বেলিকে জড়িয়ে ধরে বসে আছেন। বেলি অনবরত কেঁদে যাচ্ছে আর ঐ কথাটায় বলে যাচ্ছে। লিখন কাঁদছে মায়ের সাথে তাল মিলিয়ে।
সুখনের আর বাসায় থাকতে মন চায় না। সে বেরিয়ে যায় দরজা খোলে। দেখে পাশের ফ্ল্যাটের মানুষগুলো দরজা খোলে তাদের ফ্ল্যাটের দিকে তাকিয়ে আছে। সুখনের রাগ লাগে, মাথা গরম হয়। সবটা রাগ গিয়ে পড়ে বেলির উপর। ইচ্ছে করে এই মানুষগুলোকে কয়েকটা কটু কথা বলে দিতে। কেন তাদের অন্যের বিষয়ে এত কৌতুহল দেখাতে হবে? সুখন নিজেকে সামলে নিলো। মনের ভাবনাগুলো মনের মধ্যে রেখেই স্থান ত্যাগ করলো দ্রুত পায়ে। আশেপাশের মানুষগুলো যেন এবার সস্তির নিশ্বাস ফেললো। তারা দ্রুত পায়ে এগিয়ে গেল ঘটনাস্থলের দিকে। কি হয়েছে জানতে হবে। ওদের দুজনের মধ্যে তো কোনোদিন ঝগড়া হয় না৷ স্বামী স্ত্রীর মধ্যে কতো ভালোবাসা!তাহলে আজ কি হলো।
মোবাইলটা গত ত্রিশ মিনিট ধরে একটানা বেজেই চলছে। বন্ধ হওয়ার নাম করছে। বেলি মোবাইলের স্ক্রিনে নামগুলো দেখছে। জেঠা, মা, কাকি, বাবা, ভাই সবার নাম ভেসে আছে। এই মানুষগুলো তাকে ত্রিশ মিনিট ধরে কল দিয়েই যাচ্ছে। এখন বারোটা ত্রিশ বাজে। অন্য কোনোদিন হলে হয়তো বেলি এখন ঘুমিয়ে থাকতো। কিন্তু আজ পাড়ছে না৷ মনটা ভীষণ খারাপ ওর। ফোনটা কিছুক্ষণ আগেই বেজে বন্ধ হয়েছিল আবার বাজতে শুরু করলো। জেঠা কল দিয়েছে। বেলি চোখ মুখ মুছে দুবার হা করে দম নিয়ে কলটা রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে হাউমাউ করে কাঁদতে কাঁদতে একটা মহিলার কন্ঠ ভেসে উঠলো। বেলির ভেতরটা মোচড় দিয়ে উঠলো। সবাই কি আজকের ঘটনা জেনে গেছে। তাহলে যে সবাই তাকে নিয়ে যেতে চাইবে এখান থেকে।
ওপাশ থেকে ক্রন্দনরত মহিলাটি বললো,
– ও বেলি, বেলি মা কথা কও না কেন? মা সুখনে নাকি আরেকটা বিয়া করছে। আমরা তো কিছুই জানতাম না। আমাদের তো পল্টু কইছে নাইলে তো কিছুই জানতাম না। মা তুমি এতো বড় ব্যাপারটা লুকায়া রাখছিলা কেন আমাদের কাছে?
বেলি গলার স্বর যতটা স্বাভাবিক রাখা যায় ততটা স্বাভাবিক রেখেই বললো,
– তোমরা চিন্তা করবা তাই বলি নাই। জেঠা জানে সব।
বেলির মা পান্না আক্তার বললেন,
– মা তোমার আর ঐ বাড়িতে থাকতে হবে না। তুমি আইসা পড়ো৷ তোমার বাপ আছে জেঠা আছে। ওনারাই সব বুঝে নিবে তুমি বাড়ি চলে আসো।
বেলি তার মাকে বুঝানোর স্বরে বলে,
– আমি চলে এলে তো ঐ মেয়ে আমার সাজানো গোছানো সংসারে এসে ঢুকবে। আমি কেনো চলে যাবো। যাওয়ার হলে ঐ মেয়ে যাবে। আমি তো আর এমনি এমনি আসি নাই। ওরা তোমাদের পায়ে ধরে আমাকে আনছে। আমি যাবো কেন?
পান্না বেগম আবার বিলাপ শুরু করেন। বলতে থাকেন,
– ঐ তো ভূল করছিলাম আমরা। তখন বাড়ি ছাড়তো না হারামজাদা, সারাদিন পা ধরে বসে থাকতো। বলতো আমি আপনার মেয়েরে রাণীর মতো করে রাখবো। সেদিন যদি ওর কথা না শুনতাম। তাহলে আজকে এইদিন দেখা লাগতো না । এখন আমার মেয়ের এমনে সব শেষ হয়তো না।
বেলির কান্না পায়। পুরোনো দিনের কথা মনে পরে যায়। কল কেটে দিয়ে মোবাইলটা অফ করে দেয়। দুই হাতে মুখ ঢেকে ডুকরে কেঁদে উঠে সে।
(বেলি এখন অতীতে বিচরণ করবে)
সেই ৪ বছর আগের কথা। তখন বেলি সবে ম্যাট্রিক পরীক্ষা দিচ্ছে। বাসা থেকে পরীক্ষার হলটা একটু দুরে বিধায় সব বান্ধবীরা মিলে একসাথে অটোতে বা সিএনজিতে করে যেতো আসতো। সেদিন ছিলো শেষ পরীক্ষা। সব বান্ধবীরা বললো তারা বাইরে খাওয়া দাওয়া করে ঘুরে ফিরে তারপর বাড়ি যাবে। জীবনটাকে উপভোগ করতে চায় তারা। বেলি বললো সে যাবে না। কারন তার ফ্যামিলি খুব কড়া। মেয়েদের অকারণে বাইরে ঘোরাঘুরি একদমই পছন্দ করে না। ওর বান্ধবীরা সবাই চলে গেলো। বেলি কয়েকটা রিকশাওয়ালাকে জিজ্ঞেস করলো ওদের এলাকায় যাবে নাকি। কয়েকজন না বললো, আর কয়েকজন যাবে বললেও ভাড়া চাইলো বেশি। কিছুটা হেটে গিয়ে সামনে থেকে রিকশা নিলে ভাড়া কম পরবে। যেই ভাবা সেই কাজ৷ বেলি হাটা শুরু করলো। রাস্তা পার হবার সময় বেলি ভালো করে দেখলো কোনো গাড়ি আসছে কিনা। দেখলো একটা অটোরিকশা বেশ খানিকটা দূরে। বেলি ভাবলো ওটা আসার আগেই সে চলে যেতে পারবে। তাই বেলি রাস্তা পার হতে লাগলো। কিন্তু অটোরিকশাটার যেন পাখা গজিয়েছিলো। যেন প্রায় উড়ে এসেই বেলিকে ধাক্কা মারে। বেলি ছিটকে পড়ে রাস্তায়। হাতের ফাইলটা পড়ে যায় খানিক দূরে।
– ও মাহ্
বলে চেচিয়ে উঠে বেলি। মাথাটা যেন ঘুরে যায় বেলির। আশেপাশের লোকজন জড়ো হয় বেলিকে ঘিরে। এক বুড়ো লোক বেলির কাছে এসে বলে,
– মা তুমি ঠিক আছো তো? কোথায় ব্যাথা পেয়েছো বলো।
বেলি লজ্জা পায় চারপাশের এত মানুষ দেখে। সে মাথা নেড়ে বলে,
– জ্বি চাচা, আমি ঠিক আছি। ব্যাথা পাই নি।
অথচ সে ব্যাথা পেয়েছে। বাম পায়ের বেশ খনিকটা উপরে অটোর সামনে থাকা একটা রড অল্প একটু ঢুকে গিয়েছে বেলির পায়ে এছাড়াও পড়ে যাওয়ার কারণে তার পা মচকে গেছে। এই ব্যাথাটা যদি বাড়িতে পেতো তাহলে সে ভে ভে করে কেঁদে বাড়ি মাথায় তুলতো। দুই তিনজন ডাক্তার লাগতো তাকে ঠিক করতে।
বেলি দাঁড়াতে গিয়ে দাঁড়াতে পারলো না। আবার বসে পড়লে। পায়ের ব্যাথার জন্য দাড়াতে পারলো না বেলি। অনেকটা জায়গা জুড়ে জ্বালা করছে বোধহয় চামড়া ছিলে গেছে। কিছুলোক চড়াও হলো অটোওয়ালার উপর। অকথ্য ভাষায় গালাগালি করতে করতে মারমুখী হলো অটোওয়ালার দিকে। একজন ছেলে তাদের থামালো। বললো বেলির চিকিৎসার যা খরচ সেই দেবে। শ্যামবর্নের লোকটার ঘামার্ত শরীরে নীল রংয়ের শার্টটা লেপ্টে আছে, চোখগুলো একটু ছোট করে একবার তাকালো বেলির দিকে। তারপর এগিয়ে এসে বললো,
– চলুন আপনাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায়।
বেলি মাথা নেড়ে বললো,
– দরকার নেই। আমি ঠিক আছি। আমি বাড়ি যাবো।
লোকটা বললো,
– কিন্তু আমি যে আপনার চিকিৎসার দ্বায়িত্ব নিয়েছি।
বেলি জোর দিয়ে রাগি স্বরে বললো,
– আমি সুস্থ আছি। আমার চিকিৎসার দরকার নেই। আমি বাড়ি যাবো।
লোকটা কিছুক্ষণ ভেবে বললো,
– বেশ তাহলে আমিই পৌঁছে দেই আপনাকে। আপনি যেতে পারবেন না। আপনার পা টা বোধহয় মচকে গেছে।
বেলি কিছু বলতে যাবে তার আগেই আশেপাশের লোকজন ঐ লোকটার সাথে সহমত পোষণ করলো। একজন মহিলা ছিলো তিনি বেলিকে ধরে অটোরিকশাটায় বসিয়ে দিলেন৷ ওর ফাইলটাও একটা লোক এনে দিলেন। ভদ্রলোক এসে বসলেন বেলির পাশে। জিজ্ঞেস করলেন,
– আপনার বাসা কোথায়?
বেলি সিটের কোণায় চেপে বসে বললো,
– পলাশপুর গ্রামে শেখ বাড়িতে যাবো।
অটোওয়ালা ঘাড় ঘুরিয়ে একবার বেলিকে দেখে বললো,
– আহমদ শেখ, রহমত শেখ আপনার কি লাগে?
বেলি বাবা আর জেঠার নাম শুনতেই তার কান্না পেলো। কোনোমতে কান্না আঁটকে বললো,
– বাবা আর জেঠা হয়।
অটোওয়ালা বিরবির করে নিজের কপালকে দোষারোপ করলো। বেলির পাশে বসে থাকা লোকটিকে বেলির পরিবার সম্পর্কে বলতে লাগলো।
অটোরিকশাটা যখন বেলির বাড়ির সামনে দাঁড়ালো তখন রহমত শেখ দুপুরের ভাত খেয়ে বাজারে যাচ্ছিলেন। গাড়ি দেখে তিনি থামলেন, দৃষ্টি নিবন্ধ করলেন গাড়িতে বসে থাকা যাত্রীর উপর। বেলিকে থমথমে মুখ করে অটোরিকশাতে বসে থাকতে দেখে এগিয়ে গেলেন বেলির দিকে।
এদিকে বেলি দুহাতে ফাইল আঁকড়ে ধরে নিজের কান্না আটকানোর চেষ্টা করছে। আশ্চর্য, রাস্তায় এতো বড় ব্যাথা পেয়েও কান্না আসলো না। অথচ বাড়ির সামনে আসতেই কেনো পাচ্ছে এটা সে বুঝলো না।
রহমত শেখ এগিয়ে এসে নরম গলায় বললেন,
– বেলি!
ব্যাস বেলি আর কান্না আটকে রাখতে পারলো না। ভে ভে করে কেঁদে দিলো রহমত শেখ বেলিকে কাঁদতে দেখে ভড়কে গেলেন৷ ভয়ার্ত কন্ঠ জিজ্ঞেস করলেন,
– কি হয়েছে মা? কাঁদো কেন?
বেলি আরও জোরে কেঁদে দিলো। পাশে বসে থাকা লোকটি চমকে তাকালো মেয়েটির দিকে। ফর্সা মুখখানি লালবর্ন ধারন করেছে। তৃষ্ণার্ত চোখে তাকিয়ে থাকে লোকটি, পলক পড়ে না চোখের।
বেলি রিকশা থেকে নেমে রহমত শেখকে জড়িয়ে ধরে বললো,
– জেঠা ডাক্তার ডাকো। আমি ব্যাথা পেয়েছি, অনেক বড় ব্যাথা পেয়েছি। আমার পা ভেঙে গেছে, আমি মরে যাবো।
লোকটি অবাক চোখে তাকিয়ে ছিলো। এবার ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটলো।
বাড়ির বাহিরে কারো কান্নার আওয়াজ পেয়ে আহমেদ শেখ বেরিয়ে এলেন। বেলিকে কাঁদতে দেখে রহমত শেখকে বলে,
– ভাইজান, হইছে কি?
বাবার গলার আওয়াজ শুনে বেলির কষ্ট ব্যাথা যেন আরো বেড়ে গেলো। জেঠাকে ছেড়ে এবার বাবাকে ধরে বললো,
– ও বাবা, বাবা।
রহমত শেখ শুকনো মুখে তাকালেন ভাইয়ের দিকে। তারপর বললেন,
– মেয়ে ব্যাথা পাইছে এইটুকুই বুঝছি তারে বাড়ির ভেতর নিয়া যা৷ আমি দেখি ডাক্তারে কল দেই।
আহমদ শেখ মেয়েকে ভিতরে নিয়ে যায়। বাড়ির ভেতর থেকেও বেলির কান্নার আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে।লোকটি তাকিয়ে থাকে মেয়েটির দিকে। মেয়েটিকে দেখে তার ভেতর ভালোবাসা তৈরি হয়। মনে মনে বলে যে করেই হোক এই মেয়েকে তার লাগবে, লাগবেই।
তারপরদিনেই বেলির বাড়িতে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আসে লোকটির মা, তাদের পরিচয় দেয়। তার ছেলপর নাম সুখন। বেলির পরিবার বেলি এখনো ছোট বিয়ে তাই বিয়ে দিবে না বলে প্রস্তাব ফিরিয়ে দেয়। তারপর আরেকদিন বেলিদের বাসায় আসে সুখনের মা। কেঁদে, বলে,
– ছেলে এই মেয়ে ছাড়া আর কাউকে বিয়ে করবে না। তার এই মেয়েকেই চায়। ছেলের জীবন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, ভাত খায় না। এই মেয়েকে না আনলে সে ভাত খাবে না।
বেলির জেঠা আর বাবা এবার ভাববে বলে মহিলাকে বিদায় দিতে চাইলো। কিন্তু মহিলা এবার আঁচল পেতে বেলিকে চায়।
বলে,
– ভাইসাব, আমার ছেলেটার জীবন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে দেখেন। আমি আঁচল পাতলাম আপনাদের মেয়েটারে ভিক্ষা দেন। আমি আপনার মেয়ের কোনো কষ্ট হতে দিবো না।
সুখন তারপর দিন বেলিদের বাড়িতে আসলো। বেলির মা পান্না বেগম উঠোনে কাজ করছিলো। তাকে সালাম দিলো।
পান্না বেগম সালামের জবাব দিলেন। জিজ্ঞেস করলেন,
– তোমাকে তো চিনলাম না৷
ছেলেটা হেসে বললো,
– আমার নাম সুখন। আমার মা বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আসছিলো।
পান্না বেগম কিছু বলার আগেই সুখন তার পা জড়িয়ে ধরলো। ঘটনার আকস্মিকতায় পান্না বেগমের গলার আওয়াজ একটু জোরে হলো। বেলি রুম থেকে বেরিয়ে বারান্দার গ্রিল ধরে দাড়ালো। বাড়ির সবাই এসে একে একে জড়ো হলো।
পান্না বেগম নরম গলায় বললেন,
– পা ছাড়ো, বাবা। ঘরে বসে কথা বলি।
সুখন নাছোড়বান্দা বিয়ে দিতে রাজি হলে তবেই পা ছাড়বে।
সুখন বললো,
– আপনি রাজি হন। তবেই আমি পা ছাড়বো। আমি কথা দিলাম আপনার মেয়েকে আমি রানীর মতন রাখবো।
সবাই রাজি হলো। ছেলে ভালো, শিক্ষিত, শহরে ব্যবসা আছে বাপের, ছেলে একাই ৷ এক বোন আছে বিয়ে হয়ে গেছে। শুধু মা, বাবা মারা গেছে। রাজি না হওয়ার কারণ নেই। শুধু তাদের না মত ছিলো বেলি একটু ছোট তাই ইচ্ছে ছিলো আরও পরে বিয়ে দিবে।
এরপর দিনেই বেলির বিয়ে হলো সুখনের সাথে।সুখন দেরি করতে চায় নি তাই তাড়াতাড়ি বিয়ের কাজ শেষ করা হলো।
(বেলি বর্তমানে ফিরে এসেছে)
বেলি ভাবতে পারে না, সেই সুখনেই কি এই সুখন। এত পরিবর্তন!
চলবে,
(ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। গঠনমূলক মন্তব্য করবেন)