ওয়েডিং_স্টোরি পর্ব শেষ

#ওয়েডিং_স্টোরি
#শেষ_পর্ব
#আভা_ইসলাম_রাত্রি

আভা এখন মেডিক্যাল থার্ড ইয়ারে। সময়ের তালে সবাই হয়েছে মিচিউর!এই তিন বছরে আভা-আহনাফ প্রেম জমে ক্ষির!
আভা-আহনাফের বিয়ে ঠিক হয়েছে দুদিন পর। আজ হলুদ। কাল বিয়ে। তারপরই, আভা হয়ে যাবে আহনাফের অর্ধাঙ্গিনী। অর্ধাঙ্গিনী! এই ছোট্ট নামের মধ্যেই যেনো কতশত আদর মেশানো। শুনলেই মনে প্রশান্তি কাজ করে। একটা নামে এতটা পূর্ণতা, এতটা পবিত্রতা কি করে থাকে?

সকাল থেকেই আভাদের বাড়িতে রমরমা পরিবেশ। আভাদের তিনকুলে যত আত্মীয় আছে, সবাই এসে আস্থানা গেড়েছেন আভাদের বাড়িতে।
বাসার ছাদে আভাকে হলুদ শাড়ি পড়ে বসিয়ে রাখা হয়েছে। একে একে সবাই হলুদ লাগাচ্ছে আভার মুখে-গায়ে। এবার আভার ভাবী আরোহীর পালা। আরোহী দুহাতের আঙুলে হলুদ নিয়ে ছোঁয়ালো আভার মুখে। হেসে বললো,
— ” সুখী হও, ননদিনী! স্বামী তোমায় আদর সোহাগে ভরিয়ে রাখুক! ”
আভা লজ্জা পেলো। আরোহীর মত নিজেও টিপ্পনী কেটে বললো,
— ” তোমার জামাই কি আদর কম করে? মানুষের আদর নিয়ে এত চিন্তা? ”
— ” বুঝবে ননদিনী, বুঝবে। বিয়েটা হতে দেও একবার। তারপর সব বুঝবে। ”
আভা হাসলো আরোহীর কথায়।
— ” পিউনি, পিউনি। চবি.. চবি.. ”
হঠাৎ কোথা থেকে মিনহাজ-আরোহীর মেয়ে মাইশা গুটিগুটি পায়ে ফোন হাতে এগিয়ে এলো আভার দিকে। তবে, আসতে পারলো না। মাঝপথে আরোহী আটকে নিলো। মাইশার ছোট্ট নরম শরীর’টাকে কোলে তুলে গালে চুমু খেল। মায়ের মত বুঝালো,
— ” মা, তোমার পিউ মনি এখন গোসল করবে। পরে ছবি তুলবো আমরা। ওকে? ”
— ” নান্না, নান্না, এক্কনই। ”
আরোহি অধৈর্য্য হলো। মেয়েটা হয়েছে একদম বাপের মত। মুখ থেকে যা বের করবে, তাই হওয়া চাই। হের-ফের হলে বাপ-বেটি দুজনেই জ্বালিয়ে খাবে। আভা মাইশার এমন আহাজারি দেখে আরোহীকে বললো,
— ” ভাবী, ওকে আমার কাছে দাও। শুধু ছবিই তো তুলবে। কিছু হবে না। ”
আরোহী মাইশাকে কোল থেকে নামালো। মাইশা ছাড়া পেয়ে দৌঁড়ে আভার কোলে চড়ে বসলো। আভা মাইশাকে হাত দিয়ে আগলে ওর নরম গালে চুমু খেল। মুচকি হেসে জিজ্ঞেস করলো,
— ” আমার পিউ মনি ছবি তুলবে? ”
— ” হুম, হুম। ”
— ” তুলো তাহলে। আমি রেডি। ”
মাইশা হেসে হেসে অনেকগুলি পোজ দিয়ে ছবি তুললো। এই বয়সেই এই মেয়ের যা ফ্যাশন! মেয়ে বড় হলে কি করবে, আল্লাহ মালুম।
অতঃপর, আভার মা এগিয়ে এলেন। তার চোখে পানি টলমল করছে। তিনি আঙ্গুলে হলুদ নিয়ে আভার গালে লাগালেন। আঁচল দিয়ে চোখ মুছে বললেন,
— ” সুখী হ, মা। আমার সুখটাও আল্লাহ তোকে দিক। ”
মায়ের চোখে জল দেখে আভার কান্না পেলো। আভা হুট করে মাকে জড়িয়ে ধরে শব্দ করে কেঁদে উঠলো। সবাইকে এভাবে ছেড়ে চলে যেতে তার বুকটা ফেটে যাচ্ছে। মেয়েদের এত কষ্ট কেন? সবসময় ত্যাগটা তারা’ই কেনো করবে? হয়তো এইজন্যেই মেয়েরা মায়ের জাতি!
_____________________
আজ আভার বিয়ে। অন্যান্য বিয়ে বাড়ির মত আভাদের বাড়িতেও হলুস্থুল কান্ড। আভাকে সাজানো হচ্ছে। আহনাফের বাছাই করা পার্লার থেকে মেয়ে এনে সাজানো হচ্ছে আভাকে। আভার পরনে লাল লেহেঙ্গা। মাথায় জড়ানো লাল দুপাট্টা। নাকে নথ, কানে দুল, গলায় মোটা স্বর্ণের হার। আভাকে আজ এক রানীর থেকে কম লাগছে না।

মিনহাজ রুমের মধ্যে সেই কখন থেকে ঘড়ি খুঁজে যাচ্ছে। কিন্তু পাচ্ছে না। বিয়ে বাড়ীতে তার কত কাজ। এখন এই ঘড়ি খুঁজতে সময় নষ্ট করলে চলে? উহু, মোটেও না! মিনহাজ এবার হাল ছেড়ে দিয়ে গলা ছাড়লো,
— ” আরোহী, আরোহী? ”
আরোহী রান্নাঘরে কাজ করছিল। মিনহাজের ডাক শুনে আভার মা হাতের কাজ সামলে আরোহীকে বললেন,
— “আরোহী মা, তোমাকে মিনহাজ ডাকছে। যাও, দেখে আসো কি বলে। ”
আরোহী শাশুড়ীর কথায় মাথা হেলিয়ে সায় দিল। হাতের পানি শাড়ীর আঁচলে মুছতে মুছতে বেরিয়ে গেলো রান্নাঘর থেকে।

— ” কি হয়েছে আবার? ”
আরোহী রুমে প্রবেশ করে প্রশ্ন করলো। মিনহাজ পাঞ্জাবির বোতাম লাগাতে মন দিয়ে, উত্তর করলো,
— ” আমার ঘড়ি পাচ্ছি না। কোথায় রেখেছো? ”
আরোহী ছোট্ট করে এক শ্বাস ফেললো। এ আর নতুন কি? সদা হয়! মিনহাজ হাতের নাগালে জিনিস রেখেও খুঁজে পায়না। মিনহাজের দুনিয়া গোছানোর দায়িত্ব সম্পুনর্টাই যেনো আরোহীর। আরোহী হেঁটে টি টেবিলের উপর থেকে কালো ঘড়িটা নিয়ে মিনহাজের দিকে এগিয়ে দিলো। বললো,
— ” সব রেডি করে দিয়ে যাওয়ার পরও ডাকাডাকি। কবে শোধরাবে তুমি? ”
মিনহাজ হাসলো। কাঁধে ঝোলানো সাদা রঙের টাওয়ালটা দিয়ে আরোহীর কোমর জড়িয়ে ধরে আরোহীকে নিজের দিকে টেনে নিলো। আরোহী তাকালো মিনহাজের দিকে। বিয়ের তিন বছর পার হয়ে যাওয়ার পরও মিনহাজের ছোট থেকে ছোট স্পর্শ আরোহীর ভিতর তোলপাড় করে দেয়। মিনহাজ আরোহীর কপালে কপাল ঠেকিয়ে আলতো সুরে বললো,
— ” এই বান্দা কখনোই শোধরাবে না, মাইশার আম্মু। সারাজীবন এভাবেই জ্বালিয়ে পুড়িয়ে মারবে তোমায়। ”
আরোহী কেঁপে উঠে হাসলো শুধু।
__________________
স্টেজে বসে আছে আভা। তারপাশে আহনাফ। আহনাফ চোখের পলক ফেলাবিহীন আভার দিকে তাকিয়ে আছে। আজ আভাকে তার স্বপ্নের চেয়েও মারাত্মক সুন্দর লাগছে। আহনাফ সবার অগোচরে আভার কোমরে হাত গলিয়ে চিমটি কাটলো। আভা ব্যাথায় অস্ফুটসুরে কুঁকিয়ে উঠলো। আহনাফ বললো,
— ” হলুদ লাগানোয় চেহারার সৌন্দর্য্য আরো বেশি করে ফুটে উঠেছে। রূপের আগুনে ঝলসে না যাই আমি! ”
আভা মাথা নিচু করে হাসলো। মিহি সুরে বলল,
— ” যত্তসব বাজে কথা! ”
— ” বাজে কথা না, ম্যাডাম। কাজের কথা। ”
— ” ইস! সরুন। দূরে গিয়ে বসুন। ”
— ” আরেব্বাস। বিয়ের হওয়ার আগেই দূরে সরিয়ে দিচ্ছ। বিয়ের পর কি করবে তাহলে? ”
— ” সেটা বিয়ের পর দেখা যাবে। এখন সরুণ তো। কত মানুষ আছে এখানে। আজকের দিনে অন্তত লজ্জা রাখেন একটু। ”
আহনাফ আভার কোমর ছেড়ে দিয়ে সোজা হয়ে বসলো। এই মুহূর্তে আহনাফকে এক পাক্কা ভদ্র ছেলে লাগছে। কিন্তু, আভা ত জানেই আহনাফ কিরকম বেশমর এক ছেলে। এই তিন বছর কম জ্বালায় নি ওকে। আহনাফ একটি ঝুঁকে আভার কানে ফিসফিস করে বললো,
— ” শুধু তোমার জন্যেই নিজের মধ্যে একটু লজ্জা রাখার চেষ্টা করছি। নাহলে আমি কিরকম নির্লজ্জ, সেটা আই থিঙ্ক তুমি জানোই। ”
আহনাফ সরে এলো আভার থেকে। আভা বিড়বিড় করে বললো, ‘ অসভ্য! ‘

অবশেষে এলো বিদায় মুর্হুতের। এত সময় খারাপ না লাগলেও এখন আভার বুক ফেটে কান্না আসছে। আভার একটুও ভালো লাগছে না। মন চাচ্ছে, আহনাফের সাড়ে তিন বছরের ভালোবাসাকে তুচ্ছ করে বাবা-মায়ের কাছেই থেকে যেতে। আভার বাবা আভার মাথায় হাত বুলিয়ে শান্তনা দিচ্ছেন। মিনহাজের মত কঠোর প্রাণের মানুষের চোখেও আজ জল। একটামাত্র বোন তার। আজ চলে যাচ্ছে। এর চেয়ে কষ্টের অনুভূতি দুটো হয়না। মিনহাজ আভাকে একহাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে ওর চোখের জল মুছে দিয়ে বললো,
— ” চান্দের রাইত, কাদছিস কেনো? তোর মন যখন চাইবে বাসায় চলে আসবি। আমরা সবাই তোর জন্যে অপেক্ষা করবো। তুই এলে আমি অনেকগুলি ফুচকা আনবো। মুখ ভরে ফুচকা খেলেও কিচ্ছু বলবো না। তবুও, কাদিস না। ”
আভা ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠে ভাইকে জড়িয়ে ধরলো।
আভার বাবা আভার হাত আহনাফের হাতে সপে ভেজা কণ্ঠে বললেন,
— ” বাবা, অনেক আদরের মেয়ে আমার। জীবনে কখনো কোনো কষ্ট ছুঁতে দেইনি ওকে। ওকে দেখে রেখো। এটা আমার অনুরোধ! ”
আহমাফের খারাপ লাগছে। সে আভার হাত শক্ত করে ধরে আভার বাবাকে আশ্বাস দিলো,
— ” বাবা, আমি আমার সর্বস্ব দিয়ে ওকে সুখী রাখবো। ভরসা রাখতে পারেন আমার উপর। ”
অতঃপর আভাকে গাড়িতে তুলে দেওয়া হলো। গাড়ি যতই সামনে যাচ্ছে আভার বুকটা ততই হাহাকার করছে। পরিবার ছেড়ে শশুরবাড়ি চলে যাওয়া একটা মেয়ের জন্যে কতটা বিষাদের সেটা শুধু ওই মেয়েই জানে।

আভা কাঁদতে কাঁদতে ঘেমে গেছে। আহনাফ পকেট থেকে টিস্যু বের করে আভার কপাল মুছে দিল। ড্রাইভারকে এসির তাপমাত্রা কমাতে বললো। আহনাফ আভার মাথায় হাত বুলিয়ে শান্ত সুরে বললো,
— ” হুশ, আর কান্না করে না। অসুস্থ হয়ে যাবে তুমি। ”
আভার কান্না থামলো না। আহনাফ আভার মাথা নিজের বুকের সাথে চেপে ধরে বলল,
— ” তুমি কিন্তু আমাকে কষ্ট দিচ্ছ, বউফ্রেন্ড! ”
আভার কান্না এবার কিছুটা থামলো। সে ধীরে ধীরে আহনাফের কাধে মাথা রেখে চোখ বুজলো। স্বামীর কাধে মাথা রেখে শান্তির এক ঘুম দিলো।
____________________
অবশেষে সব নিয়ম-টিয়ম শেষ করে আভাকে আহনাফের ঘরে আনা হলো। আহনাফের মা আভাকে সুন্দর করে বিছানায় বসালেন। আভাকে শিখালেন,
— ” কিছু লাগলে আহনাফকে বলবে। আর এখন একটা গোসল সেরে নিও। গরম লাগছে তো! ”
আভা মাথা নাড়ল। আহনাফের মা বললেন,
— ” শোনো, এখন এই বাড়ি তোমারও বাড়ি। তাই কখনো কোনো সংকোচ করবে না।যখন যা দরকার পড়বে, নিজেই নিয়ে নিবে। ঠিক আছে? ”
আহনাফের মায়ের সাথে এর আগেও আভার দেখা হয়েছে। মহিলাটা দারুন! কথাবার্তায় যেনো এক আভিজাত্যের ছোঁয়া। উনার বংশ খুব উচুঁ। তাই, বোধহয়! আহনাফের মা এবার ঝুঁকে এসে আভার কপালে চুমু দিলেন। আভার মনটা ভরে গেলো যেনো।এমন শাশুড়িও হয়, বুঝি? আহনাফের মা নিজের চোখের থেকে কাজল নিয়ে আভার কানের পিছনে ঘষলেন। মুচকি হেসে বললেন,
— * খুব সুন্দর লাগছে। সারাজীবন মনের দিক থেকে এমনই সুন্দর থাকো! ”
আভা হেসে জড়িয়ে ধরলো আহনাফের মা’কে। অতঃপর, আভাকে আশ্বস্ত করে তিনি রুম থেকে বেরিয়ে গেলেন।

একটু পর দরজায় সিটকিনি আটকানোর শব্দ হলো। আভা তাকালো সামনে। আহনাফ এসেছেন। আহনাফকে দেখে কেনো যেনো আভার গলা শুকিয়ে এলো। আভা এক ঢোক গিলে নিজেকে ধাতস্ত করার চেষ্টা করলো। আহনাফ এসে বসলো আভার পাশে। আভার উদ্দেশ্যে বললো,
— ” আনকম্ফোর্টবেল লাগছে? ”
আভা মাথা নেড়ে ‘ না বোধক ‘ উত্তর দিলো। আহনাফ আভার দিকে একটা প্যাকেট এগিয়ে দিয়ে বললো,
— ” এখানে শাড়ি আছে। যাও, ফ্রেশ হয়ে নাও। ”
আভা শাড়ি হাতে নিয়ে বিছানা ছাড়লো।
একটু পর আভা বের হলো ওয়াশরুম থেকে। তার পরনে কলাপাতা রঙের সুতির শাড়ি। মাথার চুলে টাওয়াল জড়ানো। আভা আহনাফের দিকে একনজর তাকিয়ে আয়নার সামনে গিয়ে বসলো। মাতাহর চুল থেকে টাওয়াল খুলে চুল ঝাড়াতে লাগলো।

— ” দাও, আমি করে দিচ্ছি। ”
আহনাফ আভার হাত থেকে টাওয়ার নিয়ে নিজেই আভার চুল মুছে দিতে লাগলো। খুব আস্তে করে! এমনিতে আভা যখন নিজের চুল ঝাড়ে তখন অতশত যত্ন নিয়ে করে না। কিন্তু আহনাফ খুব যত্ন নিয়ে আভার প্রতিটা চুলের ভাজ থেকে পানি ঝাড়াচ্ছে। ব্যাপারটা দারুন লাগছে আভার।
ফ্রেশ হওয়া শেষ হলে আহনাফ আভাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরলো। আয়নার সাহায্যে আভার দিকে চেয়ে বলল,
— ” বউফ্রেন্ড,তুমি জিজ্ঞেস করলে না, আমি কেনো তোমায় কলাপাতা রঙের শাড়ি পড়তে দিয়েছি? ”
— ” কেনো? ”
— ” তিন বছর আগে তোমায় এক গল্প বলেছিলাম। এক রাজকন্যার গল্প। মনে আছে? ”
— ” হুম। ”
— ” আমি যখন সেই রাজকন্যাকে প্রথম দেখি, তখনও তার গায়ে জড়ানো ছিলো কলাপাতা রঙের শাড়ি। কিন্তু, তখন আর এখনের মধ্যে পার্থক্য কি জানো? তখন সে আমার ছিল না, কিন্তু আজ, সে আমার অর্ধাঙ্গিনী, আমার বিয়ে করা বউ। ”
আভা চোখ বুঁজে আহনাফের বুকে গা এলিয়ে দিলো। এত কেনো ভালো লাগলো কথাটা? আহনাফ এমন ঘোরমাখা কথা বলেন কেনো? সে কি জানেনা, তার এমন ঘোরমাখা কথা শুনিয়া আভা হারিয়ে যায়।
— ” আমি তোমার দেনমোহর তোমার বাবার কাছে দিয়েছি তুমি পেয়েছ কিনা জানিনা! ”
আভা চোখ খুললো। মাথা নিচু করে উত্তর দিলো,
— ” পেয়েছি। ”
— ” বউফ্রেন্ড, বারান্দায় যাবে? ”
আভা সম্মতি দিলো।
দুজনেই বারান্দায় এসে দাঁড়ালো। আহনাফ বারান্দায় রাখা দোলনায় বসে আভাকেও তার পাশে বসালো। আহনাফ আকাশের দিকে চেয়ে রইলো অনেকক্ষণ। আর আভা তাকালো আহনাফের দিকে। এই মানুষটাকে যত দেখে ততই অবাক হয় আভা! একটা মানুষ এত ভালো হয় কি করে? এই তিন বছরে কম ঝড় আসে নি।কিন্তু এই মানুষটা সবসময় আভার পাশে থেকেছে। আভার হাত শক্ত করে ধরে বলেছে, ‘ আমি আছি তো! তবে, ভয় কিসের? ‘
তবে, একেই কি ভালোবাসা বলে? আভা উত্তর পেলো, হ্যাঁ, এটাই ভালোবাসা! এটাই পূর্ণতা!
হঠাৎ আহনাফ আভাকে হেচকা টান দিয়ে নিজের কোলে বসালো। আভা এতে একটু ভয় পেলেও পরক্ষণে সেই ভয় কাটিয়ে উঠলো। আহনাফ আভার কাধে মাথা গুঁজে ফিসফিসিয়ে বললো,
— ” শোনো মেয়ে, তুমি আমার জন্যে সৃষ্টিকর্তার দেওয়া সেরা উপহার! ”
আভা বরাবরের মত কেঁপে উঠলো। আহনাফের বুকে গা এলিয়ে মুচকি হেসে বলল,
— ” ওহে যুবক, আপনি আমার জন্যে সৃষ্টিকর্তার কাছে চাওয়া সেরা দোয়া! ”
আজ দুজনেই খুব খুশি! আল্লাহ্-তায়ালা তাদের প্রতি সুখের খাতাটা যেনো উপড় করে দিয়েছেন। এই দীর্ঘ যাত্রাটাই হলো
‘ AVANAF ‘ এর ওয়েডিং স্টোরি। সুখে থাকুক পৃথিবীর সকল প্রেমিকযুগল। পূর্ণতা পাক সকল ভালোবাসা! আমিন, আমিন!

#সমাপ্ত

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here