#কল্পনায়_হলেও_শুধু_আমারি_থেকো💖
#লেখিকা-লামিয়া রহমান মেঘলা
#পর্ব_১৩
আমান মেঘকে পাজকোলে তুলে বাইরে নিয়ে আসে।
সবাই ওদের দিকে হা করে তাকিয়ে আছে।
মেঘ বেশ লজ্জা পেয়েছে।
সবার সামনে এভাবে তুলে নেওয়ার কি ছিল।
বাইরে আসতে আমান কে ঘিরে ধরেছে প্রেস৷। কিন্তু আমান তাদের কে এবার ও কোন উত্তর না দিয়ে মেঘকে গাড়িয়ে বসিয়ে নিয়ে বাসার দিকে চলে যায়।
বাসায় পৌঁছে,
মেঘ শুইয়ে দেয় আমান,
— নেও রেস্ট।
আমায় একটু অফিস যেতে হবে।
মেঘ আমানের দিকে তাকায় লোকটার মুখটা শুকিয়ে গেছে
ভিশন ক্লান্ত দেখাচ্ছে তাকে।
মেঘ তাকিয়ে আছে আমানের দিকে।
এগুলো সে মেঘের জন্য করছে।
লোকটা ত সব সময় ব্যাস্ত থাকে। কিন্তু হসপিটালের প্রায় ১০ দিন আমান এক চুল ও হসপিটাল থেকে নড়ে নি।
কেউ তাকে জোর করেও বাসায় পাঠাতে পারে নি।
কোন অতি জরুরি কাজ থাকলে সেটা সে সেখানে বসে থেকে সমাধান করেছে।
আমান মেঘের কপালে চুমু দিয়ে সরে আসতে গেলে মেঘ আমানের হাত ধরে বসে,
আমান বাঁধা পেয়ে পেছনে তাকায়,
মেঘকে হাত ধরতে দেখে মেঘের পাশে বসে,
— কিছু লাগবে?
কোথাও কষ্ট হচ্ছে?
কি হয়েছে?
— কিছু হয় নি।
— তাহলে?
মেঘ নিজের জায়গা থেকে একটু সরে আমানের কাছে যায়।
আমান বুঝতে পারছে না মেঘ কি বলতে চাইছে,
মেঘ আমানের কাছে গিয়ে ওর ঠোঁটে হালকা ভাবে ভালোবাসা একে দেয়।
আমান ভিশন অবাক হয় এই কাজে
এই প্রথম বার মেঘ এমন কিছু করলো।
যা সত্যি অবিশ্বাস্য কর।
— জান সব কিছু ভালো হোক।
মেঘ সরে আসে।
আমান মৃদু হেসে সেখান থেকে চলে আসে,
আমান বুঝতে পেরেছে মেঘও কোথাও কোথাও তাকে ভালোবেসে ফেলেছে৷
আমান অফিস গিয়ে নিজের কাজে ব্যাস্ত হয়ে যায়,
,
,
রিমি মেঘের জন্য খাবার নিয়ে আসে,
— আপু তুই সজাক।
— হুম।
— এইযে খাবার।
— রিমি বুরি একটা কথা ছিল।
— কি আপু বল।
— আমার আর এগুলো খেতে মন চাইছে না আমায় কিছু ঝাল দে।।
— ডক্টর বলেছিল আজ থেকে তুই খেতে পারবি সব।
আচ্ছা দাড়া।
আমি দেখি ওদের বলে রান্না করে নিয়ে আসছি।
— ও আমার কিউটি বনুটা।
— হুম যাই আমি।
রিমি কিচেনে চলে আসে।। মেঘের জন্য কিছু বাংলাদেশি খাবার রান্না করতে বলে।
সার্ভেন্ট রা রান্না করতে শুরু করে আর রিমি পড়তে বসে সেই সময়ে,
,
,
,
,
বাংলাদেশ,
— ম্যাম আমি সত্যি অনেক চেষ্টা করেছি।
৩ টা গুলি খাবার পরেও কিভাবে বেঁচে গেল সেটাই বুঝতে পারছি না।
— তোরা ঘট চেষ্টা করেছিস চেষ্টা করলে আজ নিউজে আসতো আমান খানের স্ত্রী মারা গেছে নাকি রি কভার করে বাসায় পৌঁছে গেছে এটা দেখাতো।
— ম্যাম আপনি আরেকটা সুযোগ দিন প্লিজ।
— তোকে আর সুযোগ আমি দিবো না।
তুই বার বার সুযোগ হারাস।। আর না।। আমি এবার অন্য রকম পথ অবলম্বন করবো।
— না। ম্যাম প্লিজ।
— তুই চুপ থাক তোর কথা শুনে আমার রক্ত টগবগ করছে।
মহিলা ফোন কেটে দিলো,
— আআআআ (চিৎকার করে)
এই মেয়েটার কি কৈ মাছের জান নাকি।
মরতেই চাই না।
কেন মরলো না।
ওর মৃত্যুর জন্য আমি অপেক্ষা করছি প্রতিদিন আর ও বার বার বেঁচে ফিরছে।
আমি চাই সব ধ্বংস করতে
সব ধ্বংস করতে চাই আমি।
আহ।
মহিলা চিৎকার করে বলছে৷
তার পর সেখান থেকে বেরিয়ে আসে৷
,
,
,
রিমি মেঘের জন্য খাবার নিয়ে আসে,
–নে ওঠ খেয়ে নে।
মেঘ উঠে রিমির হাতে খেয়ে নেয়,
,
–আপু।
–হুম বল
–তুই কতো লাকি জানিস।
–তোর মতো বেন পেয়েছি তাই।
— হ্যাঁ তা ত বটেই কিন্তু আরো একজন কে পেয়েছিস।
–আমান কে।
মেঘের মুখে এমন কথায় রিমি হেসে দেয়,
-হুম।
তুই যখন অসুস্থ ছিলি তখন ভাইয়া পুরাই পাগলের মতো আচরণ করছিল।
ভাইয়াকে এমন আমি কখনো দেখি নি।
সত্যি ভিশন খারাপ অবস্থা হয়ে ছিল ভাইয়ার।
ভাইয়া তোকে কতোটা ভালোবাসে তা আমি বুঝতে পেরেছি।
মেঘ মৃদু হাসে,
— ( আমারো মনে হয় ভালোবাসে ও আমায় ভিশন ভালোবাসে কিন্তু যদি সত্যি ভালোবাসে তবে এমন একটা এগ্রিমেন্ট কেন করেছিল।
আমার সত্যি জানা নেই।
ওকে বুঝতে পারছি না আমি।
কিন্তু আমায় এই ২ টা বছর বাঁচতে হবে সুন্দর মুহুর্তে গুলোকে সাথে নিয়ে বাকি জীবন চলতে হবে।
মেঘ মনে মনে)
–কি হয়েছে আপু কি ভাবছিস?
–কিছু না তুই পড়তে বস তোর ত পরিক্ষা।
–হ্যাঁ আমি তাহলে যাই।
–হুম।
রিমি চলে যায়।
আর মেঘ মাথাটা পেছনে ঠেকিয়ে শুয়ে থাকে,
–আমান সত্যি তুমি অদ্ভুত।
আমি জানি না আমি কখনো আপনাকে বলতে পারবো ভালোবাসি।
আমি সত্যি জানি না এই সুন্দর স্বপ্ন টা আমার জীবনে কতোটা সময় স্থানী হয়।
আমার জানা নেই আপনি কি আমার ভিনদেশী তারা হয়ে আমার আকাশে থাকবেন নাকি ভালেবাসার চাদর হয়ে প্রতিটা সময় আমায় জড়িয়ে রাখবেন।
এটা কি একটা স্বপ্ন।
আমি কি চোখ খুললে আপনাকে পাবো না।
আমার যে কষ্ট হবে আপনি ছেড়ে চলে গেলে।
সত্যি আমি ত পারবো না থাকতে।
সত্যি পারবো না।
মেঘ কথা গুলো বলার সময় বিন্দু বিন্দু চোখের পানি ফোটায় ফোটায় নিচে গড়িয়ে পরছিল।
মেঘের অন্তরাত্মার এই কষ্ট শুধু মেঘ ই জানে।
আর কেউ জানতে পারছে না।
,
,
রাতে,
আমান নিজের প্রায় অনেকটা কাজ শেষ করে বাসায় আসে টয়ার্ড হয়ে।
রুমে এসে দেখে মেঘ এক পাশে শুয়ে আছে
মেঘের বাচ্চামি মুখটা দেখে আমানের ক্লান্তি যেন দুর হয়ে যায়।
আমান গিয়ে মেঘের কপালে চুমু দেয়,
তার পর গোসল করতে যায়।
গোসল করে বেরিয়ে নিচে আসে,
রিমি আমানকে দেখে এগিয়ে যায়,
— ভাইয়া আপু আপনার জন্য অপেক্ষা করে ছিল অনেক চেষ্টা করেও বান্দা কে খাওয়াতে পারলাম না।। আপনি একটু দেখেন।
— আল্লাহ ও খায় নি।
— না।
আমান দুজনের খাবার নিয়ে উপরে যায়।
মেঘ এখনো ঘুম।
আমান মেঘের কপালে হাত দিয়ে আস্তে মেঘকে ডাকে,
— মেঘ।
— হু (ঘুমের ঘোরে)
— উঠো খেতে হবে।
— হু ( আবারো ঘুমের ঘোরে)
— উঠো না।
মেঘ এবার চোখ খুলে।।
— কখন এসেছেন (, ঘুম ঘুম সুরে )
— এইত একটু আগে উঠো।
আমান নিজে খায় মেঘকে খাইয়ে দেয়।
তার পর মেঘকে বুকে নিয়ে শুয়ে পরে,
সারা দিনের ক্লান্তি দুর হয়ে যাচ্ছে আমানের।
চলবে,