এইচএসসি পরীক্ষায় ফেল করেছি তাই পাত্রপক্ষ আমার বিয়েটা ভেঙ্গে দিয়েছে। ছেলের মামা এসে এনগেজমেন্টের আংটি খুলে নিয়ে গেল। সারারাত আমি কান্না করেছি, নিজেকে এতটা অসহায় আর কোনদিন অনুভব করিনি। বছর তিনেক আগে যখন মা মারা গেলেন তখনও কেঁদেছিলাম ঠিকই কিন্তু এভাবে ভেঙ্গে পড়িনি৷
রাতে খাবার সময় বাবা বললো,
“ মন খারাপ করিস না মা, এরচেয়ে ভালো ছেলের সঙ্গে তোকে বিয়ে দেবো। আল্লাহ যা করে ভালোর জন্যই করে জানিস না? শুধু শুধু মন খারাপ করে নিজেকে কষ্ট দিস না। ”
বাবার কথা আমি রাখতে পারিনি, রাতে নিজের রুমে শুয়ে শুয়ে একা অনেক কেঁদেছি। মানুষটার চেহারা বারবার চোখের সামনে ভাসতে লাগলো। একটা পরীক্ষায় পাশ করতে পারিনি বলে এভাবে কেউ বিয়ে ভেঙ্গে দেয়? নিজেকে বাবার মতো বলে সান্ত্বনা দিতে চেষ্টা করলাম। নিজেই নিজের মনকে বললাম ‘ হয়তো বিয়েটা ভাগ্যে নেই, পরীক্ষায় পাশ না করা তো শুধু অছিলা মাত্র। ’
..
..
..
সেদিন ছিল মঙ্গলবার!
আগেরদিন রাতেই বাবা বলেছিলেন পাত্রপক্ষ আমাকে দেখতে আসবে। ভাবির মোবাইলে পাত্রর ছবি দেখেছি। সিলেটের চা বাগানের মধ্যে সবুজ চা-পাতার মধ্যে দাঁড়িয়ে ছবিটি তোলা।
প্রথম দেখাতেই মনের কোণে একটা ভালো লাগার সৃষ্টি হয়েছিল। ছেলের মামা ভাবির কেমন যেন দুঃসম্পর্কের আত্মীয়। বিকাল চারটায় পাত্রপক্ষ আমাদের বাড়িতে এসে উপস্থিত হয়।
আমি সেদিন আমার পছন্দের কালো রঙের শাড়ি পরেছিলাম। হাত ভর্তি কাঁচের চুড়ি নিয়ে সেদিন পাত্রপক্ষের সামনে গিয়েছিলাম। কিছুক্ষণ কথা বলার পরে আমাকে ছেলের সঙ্গে আলাদা কথা বলার জন্য পাঠানো হয়।
আমাদের গ্রামের মধ্যে যে কয়টা হাতেগোনা পাকা বিল্ডিংয়ের বাড়ি আছে তাদের মধ্যে আমাদের বাড়িটাও অন্যতম। আমি তাকে নিয়ে আমার রুমের বেলকনিতে গিয়ে দাঁড়ালাম। আগেই তার নাম জানতাম ‘ সাইফ হাসান ’। নীরবতা ভেঙ্গে সাইফ সরাসরি বলেছিল
“ আমার কোনো প্রশ্ন নেই! আপনাকে আমার খুব পছন্দ হয়েছে , এবার আমাকে যদি আপনার পছন্দ হয় তাহলে সবাইকে জানিয়ে দিন। ”
আমি চোখ তুলে তার দিকে তাকালাম! আমার দিকে সেও তাকিয়ে রইল চোখে চোখ রেখে। সে খানিকটা হাসি দিয়ে বললো ,
“ ভেবেছিলাম কোনো প্রশ্নই করবো না। কিন্তু এখন তো দেখছি একটা প্রশ্ন অন্তত করা দরকার। পছন্দ হয়েছে তো আমাকে? ”
আমি মাথা নেড়ে হ্যাঁ ইঙ্গিত করলাম।
সাইফ বললো ,
“ তোমার মা নেই কিন্তু বাবা আছে। আর আমার বাবা নেই কিন্তু মা আছে। বিয়ের পরে আমরা কিন্তু সিলেটে থাকবো, মা আমার সঙ্গেই থাকে। সিলেট কিন্তু আমাদের এই বাগেরহাট থেকে অনেক দুর৷ সহজে বাবার বাড়ি আসতে পারবে না। ভেবেচিন্তে রাজি হবে কিন্তু ঠিক আছে? ”
এই প্রথম আমি মুখ ফুটে বললাম,
“ যদি রাজি না হই তাহলে কি করবেন? ”
“ আপনার চোখ দেখে মনে হচ্ছে আপনি আমাকে পছন্দ করেছেন। সুতরাং আর কথা বলতে চাই না। যত কথা সব জমিয়ে রাখবো। যেদিন আমাদের বিয়ে হবে, সেদিন রাতে সব কথা বলবো। তারপর সিলেটে গিয়ে প্রতি রাতে চা বাগানে দুজন মিলে হাঁটবো আর গল্প করবো। ”
আমাদের দুজনের সম্মতি নিয়ে বিয়ের দিন তারিখ ঠিক করা হলো। সাইফের মা আমার হাতে একটা আংটি পরিয়ে দিয়ে গেল। বিয়ে ঠিক হলো যেদিন দেখতে এসেছিল তার সতেরো দিন পরে। কল্পনার একটা নীল আকাশ মনের জানালায় ঠকঠক করে শব্দ করছে।
রাতে ভাবি বললো,
“ সবকিছু তো ঠিকঠাক হয়ে গেল। তোমাকে তো আর ধরে রাখা যাবে না। অবশ্য এরকম চমৎকার একটা স্বামী তোমার হবে আগেই জানতাম। ”
আমি বললাম,
“ ভাবি তোমার কি ওকে পছন্দ হয়েছে? ”
“ উমমম সবকিছু তো ঠিক আছে তবে সবসময় বসে বসে চা বাগানের ম্যানেজারি করে তো তাই পেটের ভুঁড়ি একটু বেড়েছে। সমস্যা নেই, বিয়ের পরে তুমি তার রাতের খাবার কমিয়ে দিও আর সকালে ফজরের নামাজের পড়ে কমপক্ষে এক ঘন্টা দৌড় করাবে। ”
“ ধুর ভাবি, কি যে বলো না তুমি। এখনো বিয়েই হলো না আর তুমি এসব কি কথা বলছো? ”
“ বিয়ে হয়নি তো কি হয়েছে? বিয়ে হবে! এখন তো শুধু দিনগুলো শেষ হবার অপেক্ষা। তারপরই তুমি হয়ে যাবে বৃষ্টি আক্তার থেকে বৃষ্টি হাসান। সাইফ হাসানের বউ বৃষ্টি হাসান। ”
“ ভাবি শোনো, মনে করো কোনো কারণে আমার বিয়েটা ভেঙ্গে গেল। তখন কি হবে? ”
“ তাই কখনো হয় নাকি? সবসময় নেগেটিভ চিন্তা না করে পজিটিভ চিন্তা করতে হয়। তুমিও এখন থেকে বিয়ের পরে কি কি করবা, কীভাবে নতুন জীবন শুরু করবা সেগুলো ভাবো। দেখবে নতুন একটা জীবন কল্পনায় ভেসে আসবে। ”
..
..
..
বিয়ে ঠিক হবার আটদিন পরে আমার এইচএসসি রেজাল্ট বের হলো। যে সাবজেক্ট নিয়ে ভয়ে ভয়ে ছিলাম সেই সাবজেক্টেই অকৃতকার্য হলাম। আমি রেজাল্ট পাবার পর থেকে খানিকটা মনমরা হয়ে গেলেও কল্পনা করিনি যে বিয়ে ভেঙ্গে যাবে।
রেজাল্ট বের হবার পরদিন সাইফের মামা বাবার কাছে কল দিয়ে বিয়ে ভাঙ্গার কথা কনফার্ম করেন। বাবা বাকরূদ্ধ হয়ে গেল, বাবা যখন খুব অসহায় হয়ে সাইফের মামাকে বোঝাতে লাগলো তখন আমি বেলকনিতে দাঁড়িয়ে আছি। মেয়ের ব্যর্থতার জন্য বাবার এমন বারবার অনুরোধ করা একদমই সহ্য হচ্ছিল না।
অবশেষে চূড়ান্তভাবে বিয়েটা ভেঙ্গে গেল। আমার হাতের আংটি খুলে নিয়ে গেল। ভাবি আমার কাছে এসে বললো,
“ ছেলেটাকে কতো ভালো ভেবেছিলাম। অথচ সে এভাবে সামান্য কারণে বিয়েটা ভেঙ্গে দিল। তার কি একবারও মনে হলো না যে একটা মেয়ের এভাবে বিয়ে ভেঙ্গে গেলে কতটা কষ্ট হবে। ”
রাতে আমার ঘুম হয় না ঠিকমতো। নিজের চেয়ে বেশি কষ্ট লাগে বাবার জন্য। ভালো ছেলের সঙ্গে বিয়ে হবে বলে বাবা আমাদের গ্রামের অনেক মানুষকে দাওয়াত দিয়েছিলেন। আত্মীয় স্বজন যে যেখানে আছে সবার কাছে মেয়ের বিয়ের দাওয়াত পৌঁছে দিয়েছিলেন। অথচ এখন আবার সবাইকে নিষেধ করা হচ্ছে, যখনই তারা প্রশ্ন করে তখন বাবা ঘুরিয়ে পেচিয়ে উত্তর দেয়। কিন্তু সবকিছু শুনেই তাদের একটাই কথা,
“ মেয়ে ফেল করেছে বলে বিয়ে ভেঙ্গে গেল। ”
সাইফের কোনো মোবাইল নাম্বার আমার কাছে ছিল না। সে নিজেই বলেছিল আমাদের পরবর্তী কথা হবে বাসর ঘরে। সেজন্য তার কোনো নাম্বার আমি চাইনি। চেষ্টা করলে হয়তো নাম্বার যোগাড় করে কল দিয়ে কথা বলতে পারতাম। জিজ্ঞেস করতে পারতাম ‘ একটা গ্রাম্য সহজসরল মেয়ের মনে আশার প্রদীপ জ্বেলে সেটা এক নিমিষেই কীভাবে নিভিয়ে দিল। ’
নাম্বার আর নেওয়া হয়নি, তাই কথাও হয়নি।
..
..
..
ভাইয়া আমাদের পাশের গ্রামের প্রাইমারি স্কুলের সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত তাই ভাবি আর ভাইয়া বাড়িতেই থাকে। গ্রামের স্থানীয় বাজারে দোকান ছিল বলে বাবাও বাড়িতে থাকে। কিন্তু বিয়ে ভেঙ্গে যাবার মাস খানিক পরে আমি ঢাকায় ফুফুর বাসায় চলে গেলাম। গ্রামে ভালো লাগে না, মাস শেষে বাবা টাকা পাঠিয়ে দিতেন। মন চাইলে ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে চলে আসতাম। বেশ ভালোই কাটছিল দিনগুলো।
পাঁচ মাস পার হয়েছে।
ঢাকা থেকে “ ইমাদ পরিবহনে ” বাগেরহাট রওনা দিলাম। ইমাদ বাস কোম্পানির সবগুলো বাস একটা নির্দিষ্ট ফিলিং স্টেশনে যাত্রা বিরতি দিয়ে থাকে। বেশ কয়েকবার আসা-যাওয়া করার কারণে যাত্রা বিরতির কথা জানতাম।
যথারীতি আজও গাড়ি ফিলিং স্টেশনে থামলো। ওয়াশরুমে যাবার জন্য আমিও বাস থেকে নিচে নামলাম। সবার সঙ্গে আমিও ওয়াশরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসলাম। কাছেই একটা দোকান থেকে দুই প্যাকেট চিপস কিনে হাঁটতে হাঁটতে বাসের দিকে এগিয়ে গেলাম। বাসে ওঠার আগেই কেউ একজন পিছন থেকে বললো ,
“ বৃষ্টি শুনুন! ”
পিছনে ফিরে তাকালাম, বহুদিন পর আবারও অবাক হয়ে রইলাম। আমার নাম ধরে সম্বোধন করা মানুষটার নাম সাইফ হাসান। সেই একইরকম দেখতে, চেহারায় কোনো পরিবর্তন নেই। আমি কিছু বলার আগেই সাইফ বললো,
“ কেমন আছেন? একটু কথা বলতে পারি? ”
কিছু কঠিন কথা কি বলা উচিত? হ্যাঁ অবশ্যই বলা দরকার , সে যে কাজটা করেছে তাতে আমার কিছু কথা বলা ঠিক হবে। কিন্তু আমার মুখ দিয়ে তেমন কোনো কথা বের হলো না।
“ জ্বি বলেন। একটু তাড়াতাড়ি বলবেন কারণ বাস এখনই ছেড়ে দিবে। ”
“ শুধু একটা প্রশ্ন করতে চাই। বিয়ের সবকিছু ঠিকঠাক হবার পরও আপনি কেন বিয়েটা ভেঙ্গে দিলেন? ”
সাইফের প্রশ্ন শুনে আশ্চর্য হয়ে তাকিয়ে রইলাম। লোকটা বলে কি? আমি নাকি বিয়ে ভেঙ্গেছি।
বললাম,
“ হাস্যকর প্রশ্ন করছেন কেন? বিয়ে তো আমি ভাঙ্গিনি, বিয়ে ভেঙ্গেছেন আপনি। এইচএসসিতে একটা পরীক্ষায় পাশ করতে পারিনি বলে আমাকে বিয়ে করতে আপনার হয়তো লজ্জা করছিল। তাই তো নিজে না এসে সেদিন নিজের মামাকে দিয়ে আমার হাত থেকে আংটি খুলে নিলেন। ”
সাইফও আমার দিকে তাকিয়ে রইল। মনে হচ্ছে সে এমন অদ্ভুত কথা কোনদিন শোনেনি। সাইফ বললো,
“ আমি তো মামাকে বলিনি বিয়ে ভেঙ্গে দিতে। বরং মামা নিজেই বললো যে আপনার বাবা নাকি আমার সঙ্গে সম্বন্ধ করতে রাজি না। কেন রাজি নয় সেরকম কিছু বলে নাই তবে মামার কাছে আপনার বাবা লোক দিয়ে এনগেজমেন্টের আংটি পাঠিয়ে দিয়েছেন। ”
বাস ছাড়ার সময় হয়ে গেল, সাইফও ইমাদ পরিবহনের যাত্রী। তবে সাইফ যাচ্ছে ঢাকা আর আমি যাচ্ছি বাগেরহাট। কাকতালীয় ভাবে দুজনের বাস একই সময়ে যাত্রা বিরতি দিয়েছে। আমি তখন বিয়ে ভেঙ্গে যাবার ইতিহাস সংক্ষিপ্ত করে সাইফকে বললাম। সবকিছু শুনে সাইফ বললো,
“ বুঝতে পেরেছি, সবকিছু তাহলে মামার নাটক। আর আমি কিনা বোকার মতো তার সবকথা বিশ্বাস করে আপনাদের সঙ্গে আর যোগাযোগ করিনি। বিশ্বাস করুন আমি ভাবিনি মামা এরকম কিছু করবে। যেহেতু মামা নিজেই আপনার সঙ্গে আমার বিয়ে ঠিক করেছিল তাই ভেবেছিলাম সে তো আর মিথ্যা বলবে না। ”
আমি চুপ করে রইলাম। তবে মনের মধ্যে কেমন যেন একটা সুর বাজতে লাগলো। অদ্ভুত কোনো ফুলের গন্ধ নাকের ডগায় ভর করলো। দুজনের দুই ইমাদ পরিবহনে বাস আমাদের অনবরত ডাকতে লাগলো। সাইফ আমার হাতটা ধরলো। আমি খানিকটা কেঁপে উঠলাম। সাইফ বললো,
“ মা বাগেরহাটে আছে, আমাকে একটা জরুরি কাজে ঢাকা যেতে হচ্ছে। ঢাকা থেকে সিলেটে না গিয়ে আবার বাগেরহাটে ফিরবো। আপনি বাড়ি গিয়ে আমার কথা বলবেন। আমি আমার মা’কে নিয়ে আবার আপনাদের বাড়িতে যাবো। আপনি কি বিয়ে করবেন আমাকে? ”
আবেগী মেয়ে আমি, এতটুকু কথাতেই আমার চোখ ভর্তি পানি এলো। বাসের ড্রাইভার অনবরত হর্ন দিতে লাগলো। সুপারভাইজার কাছে এসে দাঁড়িয়ে আছে আমাকে টেনে নেবার জন্য। আমি মাথা নেড়ে সাইফের চোখে চোখ রেখে বিয়ে করবো বলে আবারও প্রতিশ্রুতি দিলাম। সাইফ তার একটা ভিজিটিং কার্ড আমার হাতে দিয়ে বললো ,
“ ঢাকার কাজ শেষ করেই আমি ফিরে আসবো। এখানে আমার নাম্বার আছে, কল দিয়েন। ”
আমরা দুজন দুজনের বাসে উঠে গেলাম। সাইফ চলে গেল ঢাকার দিকে, আমি চললাম বাগেরহাট।
তবে আগের মতো মন খারাপ আর নেই। নাম্বারটা মোবাইলে সেভ করে কল না দিয়ে একটা মেসেজ দিলাম,
❝ এভাবেই মানুষ স্বপ্নের মানুষটাকে আবারও ফিরে পায়। নিজের সঙ্গে না ঘটলে বিশ্বাস করতে পারতাম না। ❞
সাইফ লিখলো,
❝ যদি ভাগ্যে থাকে লেখা ,
জীবনের শেষ মুহূর্তেও হতে পারে দেখা। ❞
..
..
..
গোপালগঞ্জ পার হয়ে মোল্লারহাট উপজেলার এরিয়ায় পৌঁছে গেলাম। গাড়ির সুপারভাইজার আমার কাছে এসে বললো ,
“ যাত্রা বিরতির সময় ফিলিং স্টেশনে আপনি যে ভাইয়ার সঙ্গে কথা বলছিলেন তার নাম্বারে একটু কল দিয়ে দেখুন তো তিনি ঠিক আছে কিনা। ”
অবাক হয়ে বললাম,“ ঠিক আছে কিনা মানে? ”
সুপারভাইজার বললো , “ সেই ভাইয়াটা যে বাসে ঢাকা যাচ্ছিল আমাদের সেই বাসটা পদ্মা সেতুর খানিকটা আগে এক্সিডেন্ট করেছে। কোম্পানি থেকে এইমাত্র আমাদের জানানো হয়েছে। আর তখনই মনে হলো আপনার সঙ্গে তো একটা ভাইয়া কথা বলছিল৷ ”
আমি যেন কাঁপতে লাগলাম। সুপারভাইজার বললো,
“ আমাদের ড্রাইভারসহ ঘটনাস্থলেই বাসের সামনের দিকের বেশ কিছু যাত্রী নিহত হয়েছে। আনুমানিক ১০/১২ জন হবে। পিছনে আমাদের আরেকটা বাস ছিল সেই বাসের সুপারভাইজার খবর জানালো। ”
আমি তাড়াতাড়ি সাইফের নাম্বারে কল দিলাম , কিন্তু সাইফের নাম্বার বন্ধ।
এতগুলো মানুষ মারা গেছে, সাইফ বেঁচে আছে তো? হে আল্লাহ, তাকে সুস্থ রেখো।
.
.
সত্যি বলতে আমি নিজেও এখনো বুঝতে পারছি না সাইফ বেঁচে থাকবে নাকি মারা যাবে। এদের মধ্যে কি আবারও দেখা হবে নাকি এটাই শেষ।
.
.
.
চলবে….
গল্পঃ- কিছু কথা প্রজাপতি।
পর্বঃ- এক (০১)