কিডন্যাপার (পর্ব :৮)
#S_A_Priya
_এখানেই শেষ?
_না।তারপর একদিন না চাইতেই ক্যাফেটেরিয়ায় দেখা হয়।ওর লাইফ পার্টনার ক্যালিফোর্নিয়া ইউনিভার্সিটি তে দুই বছর পড়াশুনা করে ড্রপ আউট হয়।
লোকটার কথা শুনে মৃদ্যু হাসলাম।ব্যাপারটা লক্ষ্য করে বলল,
_হাসার প্রয়োজন নেই।এলিসন এর কথাই ভাবুন।আমেরিকান গোয়ান্দা সংস্থা CIA’র ডাটাবেজ তৈরি করেছেন।উনি ও ক্যালিফোর্নিয়া ইউনিভার্সিটি তে দুই বছর পড়াশুনা করে ড্রপ আউট হন।আমেরিকার যে স্কুল থেকে সবচেয়ে বেশি ড্রপ আউট হয়,নাসার আইডিয়া প্রতিযোগিতায় দেখা গেল তারাই নতুন নতুন আইডিয়া দিয়ে নাসার বিজ্ঞানীদের চমকে দিয়েছে।আর ওর লাইফ পার্টনার ও এইদিক দিয়ে কম না।বুদ্ধিমান বলেই ওর মত মেয়েকে হাতে করে নিয়েছে।ওদের দু’জনকে মানিয়েছে বেশ। ম্যাড ফর ইচ আদার যেটাকে বলে আরকি।
_তো এখন যোগাযোগ হয়?
_না।ওর সাথে সব কন্ট্রাক্ট অফ।ওর তো দোষ নেই।এটা ওয়ান সাইড লাভ।আর জোর করে ভালবাসা হয় না।
গল্পটা শুনে লোকটার চোঁখের দিকে কিছুক্ষণ থাকিয়ে রইলাম।”ইয়েস” আমার একটা প্রশ্নের উত্তর পেয়ে গেছি।ইট ওয়াজ নট লাভ অ্যাট ফার্স্ট সাইট।বললাম,
_এটা লাভ অ্যাট ফার্স্ট সাইট ছিল না।অ্যান্সারটা আপনি নিজেই দিলেন যে,আপনার এক্স ছিল।আই থিংক, চ্যালেঞ্জ ও ছিল না। লোকটা চোঁখ নামিয়ে বলল,
_ইফ ইউ থিংক সো,ইউ আর রং।
_অকে,টাইম ওয়েষ্ট না করে বলুন সত্যিটা শুনতে চাই।
_নেগেটিভ থিংকিং আর অভার থিংকিং আপনাকে গ্রাস করে নিচ্ছে।মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলুন।
_দেখুন মি.আরহান চৌধুরী সত্যিটা আপনি বলবেন না।বলে দিলেই পারেন।আর আমি ড্যামেন শিওর মিথ্যা স্টোরি দিয়ে আপনি চালিয়ে দেবেন।লাগবে নাহ।আসি।
সিড়ির দিকে পা বাড়াতেই বলল,
_’ম্যাম ওটা চ্যালেঞ্জ ছিল।
লোকটার কথা শুনে পেছন ফিরে তাকালাম।চোঁখের দিকে তাকিয়ে ছিল।বললাম,
_আই ডোন্ট বিলিভ দিজ।
_আই অ্যাম নট অ্যা লায়ার।লাইফ মিনস লাভ,ইফ ইউ নো হাউ টু মেইন্টেন।
আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে চলে আসলাম।আই থিংক,এই লোকটার কাছে লাইফ মানে নট লাভ।লাইফ মানে চ্যালেঞ্জ।
বাই দ্যা ওয়ে,আজ থেকে আমি মুক্ত।নেগেটিভ থিংকিং আর ওভার থিংকিং স্কিপ করলাম।
।
দিনগুলি এভাবেই কাটছে।একদিন ক্যাম্পাসে সাদিক স্যারের সাথে দেখা।খোঁজ নিয়েছিলাম স্যারের।পাইনি।আজ যখন পেয়েছি হাতছাড়া করবো না।কথা হচ্ছে দেখা করবো কিভাবে?স্যার নিজস্ব কারে উঠে যেতে নিলেই এগিয়ে গিয়ে বললাম,
_’স্যার!!!
পেছন ফিরে তাকাতেই বললাম,
_’স্যার একটু দরকার ছিল।যদি একটু সময়,,,
স্যার কারের দিকে ইঙ্গিত করে বসতে বললেন।গাড়িতে বসতে বসতে বললেন,
_হেই,হোয়াটস আপ?
অ্যান্সার না দিয়ে মৃদ্যু হেসে বললাম,
_’রিভেঞ্জ নিলেন স্যার?মি.আরহান চৌধুরীকে ইউজ করে?
স্যারের দিকে তাকালাম না।বলতে গেলে সাহস হচ্ছিলো না।বললেন,
_ মিসেস নীলা,তোমাকে ভালবাসতাম তাই বলে রিভেঞ্জ নিবো?রিভেঞ্জ সাইকোরাই নেয়।
ঠিক তখনি একটা কথা মুখ ফসকে বেড়িয়ে গেলো।
_ভালবাসতাম মানে?এখন?
স্যার অ্যান্সার না দিয়ে মুখ ঘুরিয়ে নিলেন।তারমানে হ্যাঁ।এনিওয়ে, শুরুটা কিভাবে করবো ভেবে পাচ্ছি না।এদিকে স্যার ও কিছু বলছেন না।এরই মধ্যে ড্রাইভার রেষ্টুরেন্টের সামনে কার ব্রেক করল।
।
চেয়ারটায় বসতে বসতে স্যার বললেন,
_কি খাবে?
মাথা নেড়ে না সূচক জবাব দিলাম।
স্যার নিজের ইচ্ছেমত আইসক্রিম আর কূল ড্রিংক্স অর্ডার করলেন।
আইসক্রিমের বাটি এগিয়ে দিয়ে স্মিত হেসে বললেন,
_ইয়োর ফেবরেট।
মৃদ্যু হেসে হাত বাড়িয়ে এগিয়ে নিলাম।স্যার এটা কখন লক্ষ্য করলেন যে,আইসক্রিম আমার টপ লিস্টের খাবারের মধ্যে একটা?জানিনা।বললেন,
_ইয়োর মনের অবস্থা বুঝতে পেরেছি।সেদিন চাইলে বিয়েটা আমি আটকাতে পারতাম,বাট ওর সাথে পাঙ্গা?কে লড়বে?কোটিপতির ছেলে কোটিপতি।
স্যারের কথা শুনে বললাম,
_’সাইক্রিয়াটিস্ট বেশি কিছু না।
_বেশি কিছু না মানে?বর্তমানে আমরা যে রেষ্টুরেন্ট এ আছি,ওটাতে ও আরহান চৌধুরী শেয়ার।আর দেশে দেশের বাহিরে চৌধুরী ইন্ড্রাষ্ট্রিজ,রেষ্টুরেন্ট, শপিং মহল এইগুলা???
স্যারের কথা শুনে বড়সড় ধাক্কা খেলাম। কি বলবো ভেবে পাচ্ছি না।স্যার আবারো বললেন,
_সেদিন শপিং মলে আরহান আর আমি ছিলাম।তোমাকে দেখে আড়াল হই।আরহান আড়াল হওয়ার রিজন জানতে চাইলে বললাম, তুমি একমাত্র লেডি ডন।যে নিজের স্যারকে ও রিফিউজড করতে দ্বিধাবোধ করোনি।ডেফেনেটলি ইউ আর অ্যা বিউটি এন্ড কিউট গার্ল। যার কারণে আরহান প্রথম দেখায় প্রেমে পড়ে।এ ব্যাপারে তাকে বারণ করেছিলাম।শুনেনি।বেশ তর্কাতর্কি ও হয়েছিল।
এই পর্যন্ত বলে স্যার বড় একটা নিঃশ্বাস ফেললেন।বললাম,
_তারপর?
স্যার কূল ড্রিংক্স এর বোতলে মুখ লাগিয়ে একসাথে কয়েক ডোগ গিলে বললেন,
_আফটার দ্যাট,ও আমাকে চ্যালেঞ্জ করে বসলো। যে করেই হোক নিজের করবে।দ্যান,ফলো করা শুরু করল।শেষ পর্যন্ত বাড়িতে সিসি ক্যামেরা ফিট করে।ইয়োর বেডরুম পরে।সুইসাইড এটেন্ড নিচ্ছিলে ও পৌঁছালো কিভাবে?অ্যান্সারটা খুব সহজ।সিসি ফোটেজ।বাট তোমার জায়গায় আমি হলে রিভেঞ্জ নিতাম।জয় নাই বা হল।লড়াই করতে তো জানি।
একটা ব্যাপার বুঝে গেছি।স্যার আর কুমিরটার মধ্যে বন্ধুত্বের চেয়ে শত্রুতা বেশি।আমার সিক্সথ সেন্স বলছে, শত্রুতার কারণটা ও আমি।ভালোই হলো।কাঁটা দিয়ে কাঁটা তুলতে হবে।বাট কিভাবে?বললাম,
_’রিভেঞ্জ আমি নেবো। বাট প্রমাণ?আই অ্যাম ভেরি আর্জেন্ট টু ইউ।
স্যার কয়েক সেকেন্ড চোঁখের দিকে তাকালেন।ফোনটা হাতেই ছিল।ঘাটাঘাটি করে বললেন,
_বিয়েতে তোমাদেরকে ক্যামেরা বন্ধী করেছিলাম।আপাততঃ এগুলো কাজে লাগবে।মামলা করে এই ব্যাটাকে সায়েস্তা করা যাবে না।তবে এটা বুঝিয়ে দাও,মুখ বুঝে সহ্য করার মতো মেয়ে তুমি না।নেভার ডিসক্লোজ ইয়োর উয়্যাক্নেস টু আদারস।থানায় চলো দেরী করা ঠিক হবে না।
স্যার এতদূর পর্যন্ত গড়াগড়ি করবেন, তা স্বপ্নেও ভাবিনি।।বাট ফাঁকা হাতে মামলা?টাকা পয়সার লেনদেন তো আছেই। ব্যাপারটা হয়তো স্যার বুঝলেন।বললেন,
_’ডোন্ট ওরি।পরে না হয় শুধ করবে।আপাততঃ এটাই ভাবো,ওর টাকা আর আমাদের কৌশল।
একটা কথা ভেবে পাচ্ছি না।স্যার আমার জন্য এতকিছু করার কারণ?ভালবাসা?নাকি ফ্রেন্ডের প্রতি শত্রুতা? জানিনা।আই অ্যাম শিওর দ্যাট, হি লাইক মি।যা হবার হোক।ব্যাটাকে শাস্তি দিতে না পারি,জেদ তো কমবে।ভাবনায় বিচ্ছেদ ঘটিয়ে স্যার আবারো বললেন,
_হোয়াট হ্যাপেন্ড?
স্যারের চোঁখের দিকে তাকিয়ে বললাম,
_বাট এসব ঝামেলায় আপনি,,,
স্যার চেয়ার থেকে উঠতে উঠতে বললেন,
_’লেটস গো।
।
রাতে রুমে পায়চারী করছি।রিজন, হিসেব কোনো ভাবেই মিলছে না।ফার্স্টলি,স্যার আমার জন্য এতকিছু করার কারণ?আমাকে ফাঁসাচ্ছেন নাতো?নাহলে কুমিরটার পিছনে লাগার রিজন কি?শত্রুতা? জানিনা।
সেকেন্ডলি, যা হচ্ছে টিক হচ্ছে তো?আচ্ছা যদি ব্যাপারটা আদালত পর্যন্ত পৌঁছায়?জেল হবে নাতো আমার?এসির নিচেও টেনশানে ঘাম ঝড়ছে।একগ্লাস পানি খেয়ে বেডে বসলাম।মনে হল,অভার থিংকিং করছি।বন্ধী রুম থেকে আপাততঃ বের হওয়া দরকার।
সোজা চলে আসলাম লিভিং রুমে।কুমিরটা ল্যাপটপ নিয়ে বিজি।মেমি কার্টুন দেখছে।ওর পাশে গিয়ে বসলাম।মেয়েটা কাধে হেলান দিয়ে গলা জড়িয়ে ধরলো। ওকে টেনে এনে কুলে বসালাম।এই মেয়েটাকে ভুলে যাওয়া,এটলিষ্ট আমার পক্ষে সম্ভব না।থাকতে পারবো তো ওদেরকে ছেড়ে?এরই মধ্যে পুলিশের গাড়ির হুইসেল শুনে হার্টবিট বেড়ে গেল।কলিং বেল বাজতেই সার্ভেন্ট দরজা খুলে দিল।মিস্টার আরহান চৌধুরী নোটিশ দেখে পিছন ফিরে তাকালো।মনে হচ্ছে বুকের ভেতর কেউ হাতুঁড়ে দিয়ে পেঠাচ্ছে। চোঁখ নামিয়ে নিলাম।আই থিঙ্ক, যা হচ্ছে টিক হচ্ছে না।হাতে হ্যান্ডকাফ পড়ালো।সিনক্রিয়েট না করার কারণ???
চলবে,,