#ক্ষণিকের_বসন্ত
#পাট:৩
#লেখিকা:Angel Frozen (Ñîşhì)
সে আবার পরেরদিন সকালে সেই বন্ধু ঠিকানায় চলে যায়.
সকালে এখানে এসে দেখি ছেলেটি বারান্দায় মাথায় হাত দিয়ে শুয়ে আছে।
পাশে একটা চুলায় আগুন জ্বলছে হয়তো চা বানাবে।।
ত্বায়িহা :সেখানে গিয়ে দেখে পাতিলে পানি,,,
একটু আশেপাশে খুঁজে দেখি চা পাতি,,
চিনি সব আছে আর কি চায়।
ঝটপট তারাতারি চা বানিয়ে দু কাপে নিয়ে ছেলেটির পাশে বসে বলছি।
সকালে যদি চা না খায় তাহলে দিন কি করে শুরু হবে ,, তারাতারি চা খেয়ে নাও নয়তো ঠাণ্ডা পানি হয়ে যাবে।
ছেলিটা :পাশে কারো কথা শুনে তাকিয়ে দেখি সেই মেয়েটি যার কথার গাড়ি শুরা হলে থামার নাম নেই,,,
কিন্তু হাতে দেখি চায়ের কাপ,,
তাই নিয়ে চুপচাপ খেয়ে উঠে সোজা ঘোড়ার আস্তাবলে চলে যায়।
ত্বায়িহা :আজব চা কেমন হয়ছে ইশারা করে তো বলতে পারতে,,
হুহ কি ছেলেকে বন্ধু ভাবছি আমি যে কথায় বলতে পারে না।
ছেলেটা এমন একটা বিরক্তিকরভাবে আমার দিকে তাকিয়ে আছে যাতে মনে হয় আমি ওর পাকা গমে মই দিছি।
তারপর ওর সাথে ওর খামারবাড়ির অনেক কাজে সাহায্য করি।।
যে কাজ করতে যায় তাতেই বাধা দেয়।
তবুও আমি তার সকল বাধা না মেনে কাজ করি।
এভাবে প্রায় এক সপ্তাহ হয়ে যায়।ছেলেটা আমার আজারে পটোর পটোর শোনে চুপ চাপ।
*
*
*
একদিন সকালে বাড়ির বাহিরে আসবো তখন হঠাৎ রহিম চাচার সাথে দেখা হয়।
তাকে দেখে মনের কিউরিসিটি ধরে রাখতে না পেড়ে বলেই ফেলি চাচা একটা কথা জিজ্ঞাস করবো??
রহিম চাচা আমার দিকে এমন ভাবে তাকিয়ে আছে যাতে সে কোনো ভুত দেখছে।
আমি বলি চাচা কোনো সমস্যা এভাবে তাকিয়ে আছেন?? আমি কোনো ভুল করছি??
রহিম চাচা চোখে অশ্রু নিয়ে বলে না মেম এবাড়িতে একজনি চাচা বলে ডাকতো তো তাই তার কথা মনে পড়ে গেছে!!
ত্বায়িহা :তা চাচা সে কে আর কোথায় থাকে এখন??
রহিম চাচা : জুরাইন বাবা,,সে ছোট থেকে একদম আলাদা আমাকে চাচা ডাক ছাড়া কোনোদিন কথা বলতো না,,তার মতো আপনিও ডাকছেন।
ত্বায়িহা :চাচা আমিও আপনার মেয়ের মতো আমাকে নাম ধরে ডাকবেন না হয়,,মা বলে,,
তা চাচা এই জুরাইন কে,,তাকে তো এই বাড়িতে দেখি না???
রহিম চাচা :বেশ অবাক হয়ে প্রশ্ন সূচক দৃষ্টি নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে??
ত্বায়িহা :আমি কি কোনো ভুল প্রশ্ন করছি চাচা??
রহিম চাচা :আপনি জুরাইন বাবা কে চেনেন না??
ত্বায়িহা :না জুরাইন কে চিনি না??
রহিম চাচা :সৈয়দ জুরাইন চৌধুরী এ বাড়ির বড় ছেলে,,
আপনি তার বউ,,
যাকে বিয়ে করছেন তাকেই চেনেন না,,,
কেমন বউ আপনি??
চাচা নিজের কাজে যাবে তার আগে আবারো আমি তাকে প্রশ্ন করি নিচের ঘরে যে বৃদ্ধ মানুষ আছেন উনি কে।
রহিম চাচা :উনি এ সব কিছুর বাড়ির মালিক।। জুরাইন বাবার দাদাভাই।
সে নাতীর শোকে সেই রাতে অসুস্থ হয়ে যায়।
না জানি সেই কালো রাতে এ বাড়িতে কি ঘটিছিল
যার জন্য এ বাড়ির প্রাণটা আজ অন্ধকার কারাগৃহে বন্দী বলে,, সে তার চোখের পানি মুছতে মুছতে তার কাজে চলে যায়।
তারপর সারাদিন নানা রকম চিন্তায় দিনটা কেটে যায়,,,
সারা রাত আর দু চোখের পাতা এক করতে পারি নাই , ,,
কারণ কেমন মেয়ে আমি যে তার বরের নাম জানে না,,,
কিন্তু তার বউয়ের অধিকারে এ বাড়িতে আছি,,,
আমার পরিবার ভাল আছে,,,
আচ্ছা সত্যি কি লোকটা এতোটা খারাপ??
না কি অন্য কিছু??
কিন্তু বড়লোক দের বিশ্বাস নাই,,
এরা খারাপ হলেও বোঝার উপায় থাকে না।
কিন্তু গরীব কাজের মানুষের চোখের পানি কি মিথ্যে হবে??
জানি না তোর এতো ভেবে কাজ নেই ত্বায়িহা।
‘
‘
‘
সেদিন রহিম চাচার সাথে কথা বলে বেশ মন খারাপ ছিলো তাই দুদিন খামার বাড়ি যায় নাই,,
তাই আজ বাড়ি থেকে সোজা খামার বড়ির দিকে যাচ্ছি,,
সেখানে গিয়ে সোজা চুপচাপ এক কোণায় বসে আছি।
তা দেখতে পেয়ে ছেলেটা পাশে এসে দাড়িয়ে ছে তাকে দেখেই আবার বক বক শুরু করি
জানো তো আমার মন ভাল নেই,,যেদিকে তাকাই সে দিকে ধূ ধূ মরুভূমি মনে হয়,না জানি কখন হারিয়ে যায়।
ছেলেটি :আর যাই হোক মরুভূমি তে ঝড় হারিয়ে যাবে তবুও আপনি হারাবেন না।
ত্বায়িহা :উঠেই ছেলেটার সামনে দাড়িয়ে বলে,,,
খচ্চর বেডা তুই কথা জানিশ,,
তাহলে এতো দিন আমার সাথে কথা না বলে বোবার মতো থেকে আমার থেকে সহানুভূতি নিতে লজ্জা করে নাই???
ছেলেটা :এই ঠিক করে কথা বলুন!!!
আমি কি একবার ও আপনাকে বলছি আমি কথা বলতে পাড়ি না????
না কি আপনি একবার ও আমাকে জিজ্ঞাস করছেন আমি কথা কেনো বলি না?? বলেন।
ত্বায়িহা :এবার একটু মাথা চুলকিয়ে বলে,,তাই তো একবার ও আমি আপনাকে জিজ্ঞাস তো করি নাই,,,তাতে কি এখন করছি হবেন তো আমার বন্ধু বলে হাতটা বাড়িয়ে দেই।
ছেলেটা :হাত মিলানো বাদ দিয়ে পাশ কেটে চলে যায়,, আর পিছন ফিরে বলে আমি তোমার বন্ধু হবার যোগ্য নয়।।আমাকে বন্ধু বানালে কষ্ট পাবে। তাই আমার থেকে দূরে থাকলে ভাল থাকবা।
ত্বায়িহা :এক দৌড় দিয়ে তার সামনে দাড়িয়ে বলে,, “”সেই বন্ধুত্ব কি যেখানে বন্ধুর বিপদে কাজে না আসি,,,বন্ধুর জন্য যেমন খুশি তে থাকবো না হয় মাঝে মাঝে দুঃখেও থাকবো এখন তো,,বন্ধু হতে পাড়ি।
ছেলেটা :তুমি দেখছি নাছোড় বান্দা মেয়ে,,কি আর করার চলো দেখা যাক আমাদেন সম্পর্ক্য টা কতো দূর যায়।
এভাবে আমাদের বন্ধুত্বের দিন গুলা বেশ ভালই যাচ্ছিল,,
দুজনে এক সাথে এখানে ওখানে ঘুরাঘুরি করি,,,একসাথে রান্নাকরা,,
একসাথে খামার বাড়ির দেখাশোনা করা,,
হাসি মজা,,
গান কবিবা সব কিছুতে দিন গুলা বেশ রঙিন কাটছিল।। তার পিছুনেওয়া,,
সে আমার পিছনে লাগতে,,,
এসবের মাঝে আমরা দুজন দুজানার মনের কষ্ট গুলা সব ভুলে গেছিলা।
এসব ভুলে বেশি দিন সুখে থাকতে হয় নি,,,
খুব তাড়াতাড়ি সুখের অবসর ঘটে চলে।
‘
‘
‘
আমি যেহেতু সারাদিন বাড়িতে থাকি না তাই বাড়িতে কি ঘটে সেই সম্পর্ক্যে আমার কোনো ধারনা নেই।
একদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি পুরা বাড়ির ডেকোরেশনের কাজ শুরু হয়ে গেছে।।
এসব দেখে নিজের মাঝে খুব কৌতুহল কাজ করছিল।।কেনো এতো সাজ সজ্জা বুঝতেছি না।
সে সময় দেখি আমার ছোট ননদ জারা সামনে দিয়ে যাচ্ছে তাকে ডাক দিলাম জারা।
জারা :জ্বি ভাবী জান কিছু বলবেন??
ত্বায়িহা :আচ্ছা এতো আয়োজন কিসের জানতে পারি বলবা একটু??
জারা :বড় চাচাজি আবারো ভোটে জিতছেন প্লাস দাদাভাই এর জন্মদিন,,
তাই এবার পুরা শহর সহ আসে পাশের সব মানুষ জন আসবে।।
এসব দেখতে রেড়ি থাকবেন।
ত্বায়িহা :আমি কেনো রেডি থাকবো,,??
জারা :আপনি এ বাড়ির বড় বউ আর মেহমান গণ আসলে তো আপনাকে দেখবে তাই।তারপর জারা চলে যায়
।
।
পরেরদিন সকাল থেকে শুরু হয় বাড়িতে মানুষের আনাগোনা!!
বাড়ির বাহিরে সেই বড় আকারে আয়োজন করা হয়ছে,,সবার বসার ব্যবস্থা,,
খাবার আয়োজন ,,নাচ গানের আসোর,,
এদিকে আমার জন্য মানুষ দিয়ে রুমে ড্রেস পাঠিয়েছে শাশুড়ি মা।
তার নির্দেশ সেই ড্রেস পরে যেন অনুষ্ঠানে থাকি।
ড্রেসটা সেই সুন্দর নিচে লেহেঙ্গা সিস্টেম,, উপরে কামিজ,,
সাথে বিশাল বড় ওরনা,,,
আমি সেই ড্রেস পড়ে রেডি হয়ে নিলাম,,
সাথে ওড়না টা দিয়ে ঘোমটা দিলম,,
না আজ মুখটা বাহির করে রাখছি , ,
তারপর বাহিরে অনুষ্ঠানে গিয়ে এক কোণে দাড়িয়ে আছি,,,
ভাল লাগছিল না তাই বাড়ির ভেতরে আসার সময় হঠাৎ করে পা পিছলে পড়ে যায় কিন্তু…..
‘
‘
‘
চলবে….