#গ্যাংস্টার_লাভ (সিজন 2)
#নুসরাত_জাহান_অংকুর
||পার্ট_১১||
রিহা গাল ফুলিয়ে জানলার দিকে ফিরে আছে ।রেহান ড্রাইভ করছে আর আড় চোখে রিহা কে দেখছে ।
_” আজকাল যেখানে সেখানে বেলুন দেখছি কেনো ? তবে এই বেলুনটা খুব ভালো ইচ্ছে করছে ফটাস করে ফাটিয়ে দি
কথাটা বলে রেহান রিহার গালে চাপ দেয়।রিহা রেহানের গলা টিপে বলে
_” আপনাকে আমি খুন করবো।তারপর জেলে গিয়ে নতুন আরেকটা বিয়ে করবো।
রেহান তাড়াতাড়ি ব্রেক করে রিহার থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে বলে
_” আবারো চাই নাকি? ওহ বুঝছি তোমার ভালো লাগছে তাই আবার চাইছো।সেটা সোজাসুজি বললে হতো আমি তো রেডী
রিহা চোখ ছোটছোট করে তাকিয়ে আছে রেহান ডোন্ট কেয়ার অ্যাটিটিউড নিয়ে আবার গাড়ি চালাতে মনোযোগ দিলো।
রিহা একভাবে তাকিয়ে আছে।রেহান না তাকিয়ে বলে
_” ওভাবে তাকিয়ে কি দেখছো ? জানি আমি হ্যান্ডসাম তাই বলে এভাবে চোখ দিয়ে গিলে খাবে? নজর লেগে যাবে তো
_”আপনাকে নজর না অন্য কিছু লাগবে । আপনি কি বলুন তো? যখন যা ইচ্ছা করবেন? আপনার ঝাল লাগছে তো পানি খান আমার ঠোঁটে কামড় দেওয়ার লজিকটা বুঝলাম না।এইসব শিখছেন কই থেকে ? সব পাগল ছাগলদের কাজ
রেহান ঘাড় বাঁকিয়ে রিহার গালে একটা কিস করে বলে
_”কি করবো বলো ? ঝাল লাগছিল আর রাগে একটা কামড় দিয়ে ফেলেছি।কিস তো আর করিনি
রিহা বিরক্ত নিয়ে বলে
_” এই আপনি গাড়ি কেনো কিনলেন ? বাইক কিনলে তো পারতেন ?এভাবে জ্বালানোর কোনো মানে হয় ফালতু সব।গাড়ি নিয়ে ভাব না দেখালে হচ্ছে না ?
রেহান রিহার কথা শুনে কোনো জবাব দেয় না ।রিহা ভেংচি কেটে ফোনে স্ক্রল করতে ব্যাস্ত হয়ে পড়ে।
কিছুক্ষণের মধ্যে ওরা অফিসে এসে পৌঁছে যায়।রিহা নেমে অফিসের দিকে তাকিয়ে অবাক রেহানের দিকে তাকাচ্ছে তো একবার অফিসের দিকে
রিহার চোখের ভাষা বুঝতে পেরে রিহা বলে
_” অফিসের নাম আমার দাদীর নামের সাথে কারণ আমার দাদা দাদী কষ্টের ফলে আমার আব্বু এত কিছু করতে পারছে আর তাদের সাফল্যকে বজায় রাখতে আমার চেষ্টা। এখন গাড়ির মত মাথা না খেয়ে ভিতরে চলো।
রিহা রেহানের হাতের কাছে গিয়ে জোড়ে চিমটি দেয়।রেহান চোখ পাকিয়ে তাকাতেই রিহা দাত কেলিয়ে বলে
_” মাথা তো খাইনি ।
রেহান রিহার হাত ধরে অফিসের ভিতর যায়।সবার সাথে রিহার পরিচয় করিয়ে দিয়ে রিহাকে নিয়ে কেবিনে যায়।
রিহা কেবিন ঘুরেঘুরে দেখছে হটাৎ রেহান কে প্রশ্ন করে
_” আপনার অফিসের অনেকগুলো মেয়ে তাই না ?
রেহান ভ্রু কুচকে ছোট করে বলে
_” তো ?
রিহা চারিদিক ঘুরে ঘুরে বলে
_” তো এর মধ্যে আপনার গফ কয়টা ? আমাকে তো বলেন ছেলেদের আশে পাশে দেখলে মহিলা কলেজে ভর্তি করবেন তাহলে আপনাকে কি আমি এখন মহিলা অফিস বানিয়ে দেবো ?এত মেয়েদের সাথে আপনি কেনো কাজ করেন? আমি কথা বললে দোষ আর আপনি সারা দেশে লুচুগীরি করে বেড়াবেন।রিহা বেচে থাকতে কখনো হবে না।
রেহান চেয়ারে বসে রিহাকে দেখছে আর রিহা সে তো বকবক করেই যাচ্ছে ।
হটাৎ রেহান একটা ধমক দেয় রিহা চুপ হয়ে যায়।
রেহান নিজের কাজে মনোযোগ দিতেই রিহার ফোনের মেসেজ টোন বেজে উঠে
রেহান কিছু লেখালেখি করছিলো রিহার মেসেজের আওয়াজে রেহান মৃদু হেসে বলে
_” আমি তো এখানে তাহলে কে তোমায় মেসেজ দিচ্ছে ?
রিহা ফোনটা হাতে নিয়ে চুপ হয়ে।রেহান নিজের কাজেই ব্যাস্ত।প্রথম বার রিহা উত্তর না দেওয়ায় রেহান দ্বিতীয়বার প্রশ্ন করে না।
রিহা উঠে রেহানের পাশে দাড়িয়ে বলে
_” কি করছেন ?
রেহান রিহাকে টান দিয়ে নিজের কোলে বসিয়ে বলে
_” আগে কি করছিলাম সেটা বাদ এখন শুধুই রোমান্স করবো।তুমিও তো সেটাই চাইছিলে। তাই তো এভাবে বার বার কথার ছলে বুঝিয়ে দিতে চাইছিলে ।তো মিসেস শুরু
রিহা রেহানের মুখ চেপে ধরে ।ফিসফিস করে বলে
_” আল্লাহ কি আপনার মাথায় অন্য কিছু ঢুকাইনি? সব কথার একটা মানে বের করা কি জরুরী।আমি বলছি যে আপনি কি কাজ করছেন সেটা আমাকে একটু দেখান।আমি তো আপনার অর্ধাঙ্গিনী ।আপনার সব
বাকিটা বলার আগেই রেহানের ফোন বেজে উঠে।রেহান রিহাকে কোলে নিয়েই ফোন ধরে। রেহান কথা বলছে আর রিহা দেখছে ।রিহার চোখের কোণে পানি জমায় বেধেছে।
রেহান দেখার আগেই সেটা মুছে উঠে দাড়াতে চেষ্টা করলে রেহান আরো চেপে ধরে।রিহার দিকে তাকিয়ে কথা বলছে ।
_” উফফ ছাড়ুন তো ।বিরক্ত লাগছে।আপনার হুটহাট এভাবে টানাটানি করা বিরক্তিকর।ছাড়ুন
রিহা জোর করে উঠে দাড়ায়।রেহান ফোন কেটে বলে
_” আজ তুমি কুয়াশায় আবদ্ধ তাই আমার সব কিছু বিরক্তিকর কিন্তু যেদিন কুয়াশা কেটে যাবে সবার আগে তুমি এই মানুষটাকে খুঁজবে।অপেক্ষায় রইলাম।
রেহান কথাটা বলে দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে।রিহা কিছু না বুঝে কিছু বলতে যাবে ।রেহান হাত বাড়িয়ে বলে
_” আমার একটা মিটিং আছে তুমি থাকো।আমি কিকুক্ষণের মধ্যে চলে আসবো।
রিহাকে কিছু বলতে না দিয়ে রেহান দরজা দিয়ে বেরিয়ে যায় ।রেহান যেতেই রিহা ফোন বের করে কাউকে ফোন করে ।
কিছুক্ষণ কথা বলে সব দেখে নেয় ।রিহা কি মনে করে দরজার দিকে তাকাতেই মনে হলো কেউ সরে গেছে।নিজের মনের ভুল ভেবে রিহা সব কিছু খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে থাকলো।
রেহান নিজের মিটিং শেষ করে একটা বয় কে বলে খারাব পাঠিয়ে দিতে বলে।
কেবিনে ঢুকেই রিহার ঘুমন্ত মুখটা চোখের সামনে পড়লো।রেহান ধির পায়ে সোফার দিকে এগিয়ে গিয়ে রিহার কপালে নিজের ঠোঁট জোড়া ছুইয়ে দেয়।রিহার কপালের সাথে নিজের কপাল ঠেকিয়ে বিড়বিড় করে বলে
_” তোমাকে আমি কিছুই বলবো না ।তুমি নিজে আমার ভালোবাসা বুঝবে আমাকে বুঝবে তারপর তোমাকে আপন করবো। যেমন আমি দূরে গিয়ে বুঝতে পেরেছিলাম তেমনি দরকার পড়লে তোমাকেও দূরে পাঠাবো।তবুও আমার ভালোবাসা তোমাকে বুঝতে হবে।নিশ্বাস নিয়ে কষ্টকর তুমি ছাড়া ।খুব ভালোবাসি আমার দুষ্টু পাখি কে।
_________________________________
একটা ল্যাপটপের সামনে একটা লোক বসে আছে।গভীর মনোযোগ দিয়ে কিছু পর্যবেক্ষণ করছে।
পিছন থেকে আরেকটা লোক কাধে হাত দিতে লোকটা পিছনে না তাকিয়ে বলে
_” আব্বু আমরা জিতবো।আর তারপর রাজ্য, আমাদের রাজসম্পদ আমাদের, রানি আমার। রেহান চৌধুরী কিছুই করতে পারবে না। ইচ্ছা তো করছে এক্ষুনি শেষ করে দিতে কিন্ত তোমার কথা রাখতে চুপ করে আছি।
দাত কটমট করে কথাটা বললো অজনা।লোকটার আব্বুর মুখ থমথমে ।
অজানা পিছনে ফিরে ওর আব্বুকে উদ্দেশ্যে বলে
_” কিহলো আব্বু ? তোমাকে এমন লাগছে কেনো ? তুমি খুশি না আমরা যে আমাদের লক্ষের খুব কাছেই। যা চেয়েছিলাম তার থেকে বেশি কিছু পাচ্ছি ।
মুখে গম্ভিরতা বজায় রেখে বলে
_” রেহান চৌধুরী কে এত বকা ভাবা গাধাদের কাজ। যার আব্বু বন্ধুর সম্মান বাঁচাতে গিয়ে মৃত্যু বরণ করে তার ছেলে এত সহজে দমে যাওয়ার পাত্র না ।শত্রুকে হালকা করে নেওয়া উচিত না মাই সন (son)
অজানা তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বলে
_” কিছু করতে পারবে না ওর প্রাণ ভোমরা আমার কাছে ।আর সেটা আমি যেভাবে খুশি ঘুরাতে পারি।
কথাটা বলেই অট্টহাসিতে ফেটে পড়ে।এই হাসি চার দেয়ালের মাঝে আবদ্ধ।
রিহা ঘুমের মধ্যে শীত অনুভব করছে পিটপিট করে চোখ খুলে রেহানের বিদস্ত চেহারা সামনে পড়লো।
রিহা আশে পাশে ভালো করে দেখে নেয়।রিহা কিছু বলার আগেই রেহান বলে
_” খাবারটা খেয়ে নাও।আমার এক্ষুনি যেতে হবে ।
রিহা টেবিলের উপর খাবার দেখে বলে
_” কয়টা বাজে ?আপনার অফিস টাইম শেষ ?
রেহান কোনো উত্তর দেয় না ।খাবার সামনে এনে রিহাকে জোর করে খাইয়ে দিতে লাগে ।
রিহা শুধু অবাক হচ্ছে অন্যদিনের মত আজ রেহান বেশি কথা বলছে না আর না কোনো দুষ্টুমি করছে ।
রিহা কাচুমাচু হয়ে বলে
_” কিছু কি হয়েছে ?
রেহান কোনো জবাব না দিয়ে রিহাকে নিয়ে বেরিয়ে যায়।পুরো রাস্তা রিহা চুপ।রেহান গাড়ি চালানোর মধ্যে রিহা দুইবার জিজ্ঞেস করছে ফলাফল ব্যার্থ।
রিহা আর কিছু না বলে চুপ করে বসে থাকে।কিছুক্ষণের মধ্যেই রেহানের গাড়ি এসে থামে।
রিহা জানলা দিয়ে তাকিয়ে দেখে এটা একটা হসপিটাল। রিহা রেহানকে আবার জিজ্ঞেস করছে।রেহান কোনো কথা না বলে রিহাকে নিয়ে ৪ফ্লোরে যায়।
লিফট থেকে বের হয়ে সামনে এগুতেই রিহার চোখ ছানাবড়া ।রিহার পা ওখানেই স্তব্ধ।
রেহান পিছনে তাকিয়ে রিহার হাত ধরে টেনে নিয়ে যেতেই রিহা এক ছুটে সামনে এগিয়ে অস্থির কণ্ঠে বলে
_” কি হইছে ? এত রক্ত শরীরে মাখামাখি কেনো ?
চলবে
(