#টুকরো_স্মৃতির_অতলে❤
#পর্ব_০৪
লেখনীতেঃ আহানিতা
অর্কভাইদের বাড়িতে এসেই চুপ মেরে চোখ ঘুরিয়ে সবটা দেখছিলাম।অর্কভাইদের বাড়িতে আসার উদ্দেশ্য বিয়ের সেই তথাকথিত শপিং।তবে আমার উদ্দেশ্য অন্য।আমার এখানে আসার মূল এবং মূল উদ্দেশ্য রাতুল আঙ্কেল কিংবা আন্টিকে মানিয়ে নেওয়া।আব্বু আম্মুর মুখের উপর কথা বলার সাহস আমার নেই। তবে এখানে আঙ্কেল আন্টি নিশ্চয় আমার কথা শুনবেন?মানবেন?নাকি অর্কভাইয়ের মতো জোর করে চাপিয়ে দিবেন এই বিয়েটা?আমি দুই কদম এদিক ওদিক তাকিয়েই আঙ্কেল আর আন্টিকে খুঁজছি।সুযোগ পেলেই সবটা বুঝাব।আসার পর থেকে অর্কভাইকে দেখিনি আমি।আহিকে দেখেই দু পা এগিয়ে মৃদু হেসেই জিজ্ঞেস করলাম,
‘ আহি?’
আহি খুশিতে গদগদ হয়ে এগিয়ে এল।আমাকে দেখেই বিস্ময়ে চোখ মুখ হা করে বলে উঠল,
‘ এমাহ!তুমি? তোমাকে তো সন্ধ্যায় ভাইয়া আনার কথা ছিল।আগে ভাগে নিজেই চলে এলে?একা?সমস্যা হয় নি তো একা আসতে তোমার?’
আমি হাসলাম।মাথা নাড়িয়ে বললাম,
‘ আরেহ নাহ।সমস্যা হয়নি। তুই অনেক বড় হয়ে গিয়েছিস আহি।সেই ছোট আহি।’
‘ হু, অন্নেক বড়!ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারে পড়ি বলে কথা।কদিন পর সোজা ভার্সিটিতে।ভাবতে পারো?’
আমি হেসে উঠলাম।এদিক ওদিক চোখ বুলাতেই আহি চোখ টিপে বলে উঠল,
‘ যাকে খুঁজছো সে তার রুমেই আছে।’
আমি ভ্রু জোড়া কুঁচকে নিয়েই জিজ্ঞেস করলাম,
‘ মানে?’
আহি খিলখিল করে হাসল।আমার হাত ধরে টেনে একটা রুমের সামনে নিয়ে এসেই ফিসফিস করে বলে উঠল,
‘ উহ!এত টেন্সড দেখাচ্ছে কেন তোমায়?কুল!সে তো তোমার কাছাকাছিই আছে নাকি।’
আমি ভ্রু জোড়া কুচকে আহিকে আরো কিছু জিজ্ঞেস করব ঠিক তার আগেই আহি আমায় এক হাত দিয়ে ঠেলে ডুকিয়ে দিল রুমটায়।হুড়মুড়িয়ে কোন ভাবে পড়তে পড়তেও না পড়ে সোজা হয়ে দাঁড়ালাম।ভ্রু জোড়া কুচকে নিয়ে জোরে জোরে শ্বাস ফেললাম।আহি আমায় এই রুমটায় ডুকিয়ে দিল কেন?কি আজব!আমি চোখ সরু করে চারদিকে তাকাতেই অর্কভাইকে রক্তচক্ষু নিয়ে তাকিয়ে থাকতে দেখলাম।কপালের মসৃন ত্বকে ফুলে উঠেছে নীলছে রক্তশিরা।মাথার চুল ঝুকে পড়েছে তার কপালে।পরনে কালো রংয়ের টিশার্ট আর টাউজার। কোলে ল্যাপটপ নিয়ে কিছু করছিলেন বোধ হয়।আমার আগমণে যে তার সে কাজে চরম ব্যাঘাত ঘটেছে তা তার মুখচাহনি দেখেই বুঝতে পারলাম।শুকনো ঢোক গিলে উনার চোখের দিকে তাকাতেই উনি কঠিন কন্ঠে বলে উঠলেন আমায়,
‘ প্রবলেম কি তোর?কারো রুমে ডুকতে অনুমতি নিতে হয় জানিস নাহ তুই? নাকি তোকে বিয়ে করব বলেছি বল সবকিছুতেই অধিকার ফলানো শুরু করেছিস?ইরিটেটিং!’
আমি চুপ রইলাম।ড্যাবড্যাব করে উনার দিকে তাকিয়েই ফোসফাস নিঃশ্বাস ছাড়ছিলাম।উনি সেভাবে থেকেই ল্যাপটপে কাজ করতে লাগলেন।ল্যাপটপের স্ক্রিনে চোখ রেখেই বললেন,
‘ শোন? তোর আর আমার বিয়েটা স্বাভাবিক নাহ তুই জানিস তো সেটা? আমি তোকে কেবল এবং কেবল নিজের প্রয়োজনে বিয়ে করছি।সো প্লিজ অতোটা এক্সপেক্ট করবি নাহ। এমনটা ভাববি নাহ বিয়ের আগে তুই হুট করে আমারে রুমে ডুকে পড়লি আর আমি তোর সাথে রোমান্স করার জন্য এগিয়ে যাব।ওসব মাথায় আনিস নাহ প্লিজ।মাথায় থাকলেও ঝেড়ে ফেলে দে।সো এভাবে খাম্বার মতো দাঁড়িয়ে না থেকে আমার চোখের সামনে থেকে সরে যা। আমার বিরক্ত লাগছে তোকে দেখে।’
আমি অবাক হয়ে চাইলাম।উনি আমাকে নিয়ে এমনটা ভাবলেন?আমি উনার সাথে রোমান্স করার আশায় এখানে দাঁড়িয়ে আছি।কথাটা ভাবতেই মাথা ঘুলিয়ে এল যেন।দাঁত মুখ শক্ত করে চোখজোড়া অগ্নিমূর্তি করে তাকিয়ে রইলাম কেবল উনার দিকে।দাঁতে দাঁত চেপে বলে উঠলাম,
‘ অর্কভাই?আপনি নিজেকে কি ভাবেন বলুন তো?সুপারস্টার? শুনুন আপনি যদি সুপারস্টারও হতেন আমি আপনার মতো খারাপ মানুষকে কখনোই ভালোবাসতাম নাহ।রোমান্স করার ইচ্ছে থাকা তো দূর।শুধু আহি এই রুমে ঠেলে ডুকিয়ে দিয়েছিল বলেই…….’
উনি আমায় বাকিটা বলতে না দিয়েই ডান চোখের ভ্রু উঁচু করেই বললেন,
‘ আহি ঠেলে ডুকিয়ে দিয়েছে তোকে?আর তুইও ডুকে পড়লি?ওয়ান মিনিট।’
কথাটা বলেই উনি এগিয়ে এলেন।দরজার কাছে এসেই উঁকিঝুকি দিয়ে একদম আমার সামনে এসেই দাঁড়ালেন।আমার মুখের দিকে দৃষ্টি ফেলেই গম্ভীর কন্ঠে বলে উঠলেন উনি,
‘ আহির নাম নিয়ে মিথ্যে বলছিস?’
‘ মানে?’
আমি ভ্রু জোড়া কুঁচকে রেখেই জিজ্ঞাস করলাম। উনি নির্বিকার ভাবে দাঁড়িয়ে রইলেন।টাউজারের পকেটে হাত গুটিয়েই সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে আমার থেকে দু পা সরে দাঁড়ালেন।মুখে কিঞ্চিৎ বিরক্তি ঝুলিয়েই কাঁটকাঁট গলায় বলে উঠলেন,
‘ আহি যদি তোকে এই রুমে ডুকিয়ে দিত তবে আহি রুমের বাইরে থাকত নাহ কি?কিন্তু আনফরচুনেটলি আহি রুমের দরজার এদিক সেদিক কোথাও নেই।তারপরও বলবি মিথ্যে বলছিস নাহ?আচ্ছা বাদ দিলাম সেটা।এবার বল উদ্দেশ্য কি?’
উনার কাঁটকাঁট গলায় বলা কথাগুলো শুনেই ভয়ে শুকনো ঢোক গিললাম।কিন্তু পরক্ষনেই উদ্দেশ্য শব্দটা মাথায় আসতেই মাথায় চরম বুদ্ধি এসে উপস্থিত হলো।উনি কিছুক্ষন আগেও বলেছেন বিয়েটা কেবল উনার প্রয়োজন বা স্বার্থে করছেন।এই কথাটাই তো বিয়েটা ভাঙ্গার জন্য খুব বড়সড় প্রমাণ হতে পারে।আরেকবার যদি উনাকে দিয়ে কথাটা বলিয়ে নিয়ে রেকর্ড করতে পারি তবেই আমার কার্য সিদ্ধি হবে।আপদত আমার প্রথম উদ্দেশ্য উনার এই কথাটা রেকর্ড করে সংরক্ষন করা।দ্বিতীয় উদ্দেশ্য উনার মা বাবকে বুঝানো।আমি জোরে জোরে শ্বাস ফেলেই মৃদু কন্ঠে বললাম,
‘ উদ্দেশ্য?কি উদ্দেশ্য থাকবে?আমি তো শুধু, শু্ শুধু্্ আপনাকে একটা কথা বলতে এসেছিলাম অর্কভাই।বলব?’
অর্কভাই চোখজোড়ায় কঠিন দৃষ্টি নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে রইলেন।যার অর্থ উনি আমার কথাটা বিশ্বাস করছেন নাহ।তবুও উনি বিশ্বাস করবে এমনটা ভেবেই উনার দিকে অসহায় দৃষ্টিতে তাকালাম আমি।উনি বুকে হাতজোড়া গুঁজে বললেন,
‘ ওকে বল।’
আমি বিশ্বজয়ের হাসি হাসলাম।দাঁতে দাঁত কেলিয়ে মোবাইলে রেকর্ড সিস্টেমটা অন করেই হাসলাম।তারপর ইতস্তত কন্ঠেই বলতে লাগলাম,
‘ আসলে, আসলে অর্কভাই, আমি আপ্ আপনা্ আপনাকে ভা্ ভা্ ভালোবাসি।ভা্ ভালো্ ভালেবাসি।’
কথাগুলো এক নিঃশ্বাসে বলেই চোখ খিচলাম।ইশ!শেষে কিনা আমায় এই কথাটা বলতে হলো?কিন্তু এটা না বলা ছাড়া উপায় ও তো ছিল নাহ।আমি নিশ্চিত উনি এখনই বলবেন উনার থেকে এসব আশা না রাখতে।উনাকে ভালো না বাসতে। উনাকে ভালোবাসার অধিকার কেবল এবং কেবল ইশা আপুর আছে।এমনকি এই বিয়েটা যে স্বার্থের জন্য করছেন সেটাও বলবেন।আমি নিশ্চিত!আর এই কথাগুলো বললেই আমার উদ্দেশ্য পূরণ হবে।আহ!এই রেকর্ডিংটা বাবা মাকে শুনাতে পারলেই বিয়ে ভেঙ্গে চুরমার!উনার সাথে আর আমার জীবন জড়াবে নাহ তাহলে।এতসব ভাবনা নিয়েই আমি তৃপ্তি নিয়ে হাসছিলাম।কিন্তু আমার সেই হাসিটা বেশিক্ষন টিকল নাহ।অর্কভাই আমার কথার প্রতিউত্তরেই বলে উঠলেন,
‘ হবু বরকে ভালোবাসা ইজ নরমাল।’
আমি হতাশ হলাম।উনার দিকে তাকিয়েই কথা বের করার জন্যই বললাম,
‘ তবে ভালোবাসা বুঝছেন নাহ কেন আপনি?স্বার্থ দিয়ে তো ভালোবাসা যায় নাহ অর্কভাই।আপনি তো বিয়েটা করছেন কেবল স্বার্….’
উনি আমার কথাটা মুখ থেকে ছোঁ মেরে নিয়েই বলে উঠলেন,
‘ কেবল তোমায় ভালোবাসি বলে।রাইট?’
আমি ড্যাবড্যাব করে তাকালাম।কি বলছেন উনি?অর্কভাই বাঁকা হাসলেন।আমার হাত থেকে এক টানে মোবাইলটা নিয়ে নিয়েই আরাম করে বসে পড়লেন খাটের এক কোনায়।পায়ে পা তুলে নবাবের মতো বসেই মোবাইলটা হাতে নিয়েই ভ্রু উঁচিয়ে জিজ্ঞেস করলেন,
‘ পাসওয়ার্ড?’
আমি আবারও ড্যাবড্যাব করে তাকাতেই উনি হাসলেন।কয়েক সেকেন্ড পরই ঘাড় চুলকে বলে উঠলেন,
‘ বাহ!তুই তো দেখি পুরো ফেমিলি ভক্তরে!ফেমিলির চারজনের নামের প্রথম অক্ষর দিয়ে পাসওয়ার্ড?ওয়াও!’
আমি এবার চুপ মেরে দাঁড়িয়ে রইলাম সদ্য ধর পড়া চোরের মতো।নিজের উদ্দেশ্য সাধন হওয়া তো দূর উল্টে কিনা ফেঁসে গেলাম অর্কভাইয়ের কাছে?এবার?উনি কি করবেন?উনি তো কিছু স্বীকার করলেন না রেকর্ডিংটায়।উল্টে আমিই এমন অনাকাঙ্খিত কিছু কথা বলে ফেলেছি যা অন্য কারো কানে গেলেই আমি শেষ।মান সম্মান সব শেষ।আমি মিনমিন করে তাকিয়ে রইলাম অর্কভাইয়ের দিকে।উনি মোবাইলে রেকর্ডিংটা চালু করেই লাউডে দিলেন।সঙ্গে সঙ্গে ভেসে উঠল আমার বলা কথাটা।ভালোবাসি শব্দটা।উনি বাঁকা হাসলেন।রেকর্ডিংটা পুরোপুরি শুনেই বললেন,
‘ তো মিস মেহুলতা?তোর করা এই গ্র্যাট রেকর্ডিংটা কাকে দেওয়ার উদ্দেশ্য ছিল?আমাকে বল, সেন্ড করে দিচ্ছি।’
আমি চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলাম।কপালের ফোঁটা ফোঁটা ঘাম হাতের উল্টোপিঠে মুঁছে নিয়েই বলে উঠলাম,
‘ আসলে হাতের টাচ লেগে কিভাবে যেন রেকর্ড হয়ে গিয়েছে অর্কভাই।আমি তো ইচ্ছে করে করিনি। বিশ্বাস করুন।’
উনি মোবাইলটা কিছুক্ষন বেশ মনোযোগ দিয়ে ঘেটেঘুটে পাশে রাখলেন।বুকে হাতজোড়া ভাজ করেই লাল টকটকে চোখজোড়া নিয়ে আমার দিকে তাকালেন এবার।তারপর গম্ভীর কন্ঠে বলল,
‘ শোন, তোর আমার বিয়েটা হচ্ছেই।দ্যাটস ফাইনাল।ওকে?তুই যদি আরেকবার প্রমাণ জোগাড় করতে চাস তবে তোকে এটা বলে রাখি যে, তোর প্রমাণ জোগাড় করা হবে নাহ।বুঝলি?প্রত্যেকবারই দেখবি প্রমাণ ফুস। দ্বিতীয়ত, আমি আমার বাবা মায়ের কাছে তোর জন্য খারাপ হয়েছি।কেবল এবং কেবল তোর জন্য খারাপ হয়েছি।শুধু খারাপ নয়। জঘন্য রকম খারাপ হয়েছি তাদের সামনে।দ্বিতীয়বার যদি তুই আমাকে আমার বাবা মায়ের সামনে খারাপ বানানোর চিন্তা বা চেষ্টা করিস তো প্রমিজ,আমি তোকে খুন করে ফেলব মেহুল।খুন!তুই আমায় চিনিস নাহ।সো আমার বাবা মায়ের কাছে আমায় খারাপ বানিয়ে যদি তুই এই বিয়েটা ভাঙ্গার প্ল্যানিং করিস তো আমার থেকে খারাপ কেউ হবে নাহ মেহুল।মাইন্ড ইট।’
আমি আৎকে উঠলাম।অর্কভাই সব বুঝে গেলেন? আর উনার চাহনি?কন্ঠ?সবই আমার হৃদয়ে ভয়ের তোলপাড় করার জন্য যথেষ্টই ছিল।আমি শুকনো ঢোক গিলেই বললাম,
‘ আ্ আমি কিছু করব নাহ অর্কভাই।মোবাইলটা দিয়ে দিন।চলে যাচ্ছি।’
‘ মোবাইল তো আর পাওয়া হচ্ছে নাহ তোর।এটাই তোর শাস্তি।’
আমি হতবাক হয়ে চেয়ে বললাম,
‘ মানে?মানে মোবাইল দিবেন নাহ আপনি আমায়?’
উনি হেসেই উঠে দাঁড়ালেন।আমাকে রুমের দরজা দেখিয়ে বলে উঠলেন,
‘ নাহ।মোবাইল পাচ্ছিস নাহ তুই।এনিওয়েজ রুম থেকে বের হ।কিছুক্ষন পর শপিংয়ে যেতে হবে আবার।রেডি হতে হবে আমায়।’
আমি দরজার দিকে তাকিয়েই খাটে পড়ে থাকা মোবাইলটার দিাে তাকিয়ে রইলাম।একবার যদি হাতে পাই।হাতে পেলেই ভৌ দৌড় মারতাম আমি মোবাইল নিয়ে।যদি পেতাম।ইশ!অর্কভাই আমার ভবনার মাঝেই বলে উঠলেন,
‘ নো প্রবলেম!যদি চাস তোর সামনেই টিশার্ট, প্যান্ট সব চেঞ্জ করব।রাজি?যেভাবে দাঁড়িয়ে আছিস আই থিংক তুই রাজি।রাইট?’
আমি হতবাক হয়ে চাইতেই উনি বাঁকা হাসলেন।টিশার্টটা দুই হাত দিয়ে খুলে নিতেই চোখে পড়ল উনার উন্মুক্ত বুক। উজ্জ্বল ফর্সা লোমশ বুক।সাথে উনার মুখের বাঁকা হাসি।আমি তৎক্ষনাৎ দৌড়ে আসলাম ঐ রুম থেকে।একনজর তাকিয়েই দ্বিতীয়বার তাকানোর সাহস হলো নাহ আমার।শেষপর্যন্ত এইভাবে অপমানিত হতে হলো আমায়?ঐ লোকের লজ্জ্বা শরম কি কিছুই নেই?
.
রাতুল আঙ্কেলের সাথে অনেক্ষন কথা বলেও মূল কথাটা বলতে পারছি নাহ আমি।সোফায় বসে এক হাত দিয়ে আরেক হাত বার কয়েক ঘষেই জোরে জোরে নিঃশ্বাস ফেললাম।নিজেকে কথাগুলো বলার জন্য সর্বোচ্চ ভাবে তৈরি করেই সোজা হয়ে বসলাম।আরেকবার নিঃশ্বাস ফেলেই জিহ্বা ঠোঁটজোড়া দিয়ে ভিজিয়ে নিয়ে বলে উঠলাম এক নাগাড়ে,
‘ আঙ্কেল,আমি এই বিয়েতে রাজি নাহ।বিয়েটা করতে ইচ্ছুক নই আমি।কেবল বাবা মা রাজি বলেই আমি এই বিয়েটা করতে বাধ্য হয়েছি আঙ্কেল।তাছাড়া্ তাছাড়া অর্কভাইকে আমি পছন্দ করি নাহ আঙ্কেল।উনি তেমন মানুষই নয় যে আমি তাকে পছন্দ কর্………’
বাকিটা বলার আগেই আমার মুখ হা হয়ে গেল।অর্ক ভাই উনার রুমের দরজায় হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে সবগুলো কথাই শুনছিলেন।বেশ মনোযোগ নিয়েই শার্টের হাতা গুঁটাতে ব্যস্ত উনি।যেন কথাগুলো খুব স্বাভাবিক কথাবার্তাই।উনি সেভাবেই নিলেন সেরকমই ভাবভঙ্গি।কিন্তু কিছুক্ষন আগেও তো খুব করে শান্ত গম্ভীর কন্ঠে ভয় দেখিয়ে দিলেন আমায়।তাহলে এখন এত স্বাভাবিক?এতটা স্বাভাবিকতা কি উনাকে মানায়?
#চলবে……
[