টুকরো স্মৃতির অতলে পর্ব -১৫ ও শেষ

#টুকরো_স্মৃতির_অতলে❤️
#অন্তিম_পর্ব
লেখনীতেঃআহানিতা

মাস ছয় আগেই উনার আর আমার বিয়ে হয়েছে।এই ছয় মাসে উনার প্রেমে রোজরোজ নতুন ভাবে পড়েছি আমি।তার মুগ্ধতায় নতুন নতুন ভাবে আকৃষ্ট হয়েছি।আমি হালকা হাসলাম।সবটা মনে করেই ঠোঁটজোড়ার কোণে হাসি ফুটিয়ে বাইরে রাস্তায় তাকালাম। বেলকনির গ্রিল ভেদ করে বিকেলের ঠান্ডা বাতাস শরীর ছুঁয়ে যেতেই ঘাড়ে কারো ঠোঁটের উষ্ণ স্পর্ষ পেয়েই আৎকে উঠলাম আমি।মুহুর্তেই তার স্পর্ষটা টের পেয়ে হাত জোড়া দিয়ে গ্রিলের লোহা চেপে ধরে দাঁড়িয়ে রইলাম।তার উষ্ণ নিঃশ্বাস ঘাড়ে উপছে পড়তেই শিউরে উঠে হালকা কাঁপলাম আমি।নিঃশ্বাস ক্রমান্বয়ে ঘন হয়ে আসতেই উনার হাতজোড়া শাড়ির আঁচল বেয়ে চলে আসল আমার পেটে।আমি চোখজোড়া বন্ধ রেখেই কাঁপা কন্ঠে বলে উঠলাম,

‘ আ্ আপ্ আপনি এত তাড়াতাড়ি বাসায় চলে আসলেন?’

উনি ঘাড় থেকে ঠোঁটজোড়া সরিয়ে থুতনিটা হেলে রাখলেন আমার ঘাড়ে।কানের কাছে ফিসফিসিয়েই বললেন,

‘ তুই আম্মি হয়েছিস অবশেষে।সেই খবর জানাতে।’

আমি চকচকে চোখে পেঁছন ঘুরে তাকালাম। মেঘাকে আজই হসপিটালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।তা দুপুরেই জেনেছি আমি।তারপর ইহান ভাইকে বারো তেরো বার কল দিয়েছি ।কিন্তু পাঁচবার কল রিসিভড করে উনি আমাকে আশাহত রেখে ” এখনও অপারেশন হয়নি ” কথাটিই বললেন।এরপরের কল গুলো রিসিভডই করলেন নাহ।যায় হোক।অবশেষে তবে খবরটা কানে এল আমার। আমি খুশিতে বার কয়েক নিঃশ্বাস ফেলেই বলে উঠলাম,

‘ কেমন আছে আমার আব্বুটা? আর মেঘা? ও সু্স্থ আছে? ‘

উনি হালকা হাসলেন।মাথার ঘন চুলগুলোয় হাত বুলিয়ে হেসে বললেন,

‘ একদম ঠিক আছে মা আর বেবি।আপসোস এই জায়গায়!আমার বউ আম্মু হয়ে গেল অথচ আমি আব্বু হতে পারলাম না আজও।কপাল!’

আমি সরু চাহনিতে উনার দিকে তাকালাম।মেঘার বাচ্চাকে আমি যেমন নিজের বাচ্চা বলছি তেমন কি ইহান ভাইয়ের বাচ্চাকে উনার নিজের বাচ্চা বলা উচিত নয়?এটাতেও উনি হতাশ হচ্ছেন? ছোটছোট চোখ করে উনার দিকে তাকিয়ে থাকতেই উনি দাঁত কেলিয়ে হাসলেন। উনার কেলানো হাসির কিছু না বুঝে ভ্রু কুঁচকে তাকাতেই উনি বলে উঠলেন,

‘ কিন্তু চিন্তা নেই।আর এক, দুই, তিন, চার, পাঁচ, ছয়, সাত, আট মাস পরই আমিও বাবা হয়ে যাচ্ছি। আর তুই,’

আমি ভ্রু কুঁচকেই বললাম,

‘ আর আমি?’

উনি হাসলেন। উনার বা হাতে একটা খাম।খামটা আমার দিকে এগিয়ে দিয়েই মুচকি হাসলেন উনি।আমি খামটা খুলেই ভেতরের কাগজ গুলো হাতে নিয়েই চমকে উঠলাম।ভূত দেখার মতো চমকে উঠে বড়বড় চোখ করে উনার দিকে তাকাতেই উনি কানের কাছে মুখ নিয়ে বললেন,

‘ আর তুই মা হবি।’

আমি সেভাবেই উনার দিকে তাকিয়ে রইলাম।নিজেরই বিশ্বাস হচ্ছে না আমি মা হতে চলেছি।মা হওয়ার তেমন কোন লক্ষনই প্রকাশ পায় নি আমার শরীরে।শুধু কয়েকদিন শরীরটা দুর্বল ছিল আর মাথা ব্যাথা ছিল তাই ডক্টরের কাছে গিয়েছিলাম কয়েকদিন আগে।ডক্টরের কথাতেই কিছু টেস্ট করাতে হয়েছে।রিপোর্ট আজই দেওয়ার কথা ছিল।বুঝে নিলাম এগুলো সেই রিপোর্ট গুলোই। আমি খুশি হবো নাকি কষ্ট পাব কিছুই বুঝে উঠছি নাহ।শরীরের মধ্যে অদ্ভুত কার্যকলাপ চলছে যেন।এই মনে হচ্ছে কেঁদে দি তো এই মনে হচ্ছে হাসি।আমি উনার দিকে বিস্ময় নিয়ে তাকিয়ে রয়েই মৃদু কন্ঠে বললাম,

‘ সত্যি?আ্ আমি মা হতে চলেছি? ‘

উনি তৃপ্ত চাহনিতে তাকিয়েই হাসলেন।আমাকে এক হাত দিয়ে কাছে টেনে নিয়েই কপালে ঠোঁট জোড়া ছুঁয়ে দিলেন।তারপর নাকের সাথে নাক স্পর্ষ করিয়েই বলে উঠলেন,

‘ হ্যাঁ।তুমি মা হতে চলেছো মেহুলতা।আমার জীবনের সবচেয়ে বড় অধ্যায়ের সূচনা করেছো। আমার জীবনের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তিটা আমি তোমার জন্য পেতে চলেছি মেহুলতা।ভালোবাসি। তোমায় ভালোবাসি।’

আমি ইষৎ কেঁপে উঠেই খামচে ধরলাম উনার শার্ট।কথাগুলো বলার সময় প্রতিবারই উনার ঠোঁট আমার ঠোঁট ছুঁয়ে গিয়েছে।নরম ঠোঁটজোড়ার সেই স্পর্ষ নিজের ঠোঁটে বার কয়েক লাগায় প্রতিবারই ইষৎ কম্পনে নিজেকে সামলেছি।উনার দিকে তাকিয়েই বলে উঠলাম,

‘ আপনি হসপিটালে কখন গেলেন?’

উনি সেভাবে থেকেই আমার চুলে ফু দিয়ে বলে উঠলেন,

‘ ইহান কল করে যখন বলল লিটল চ্যাম্পের আগমণ ঘটেছে তখনই অফিস থেকে বের হয়েছিলাম। ইহানকে নিষেধ করেছিলাম তোকে জানাতে। আমি সরাসরি তোকে জানাব বলেই নিষেধ করেছিলাম। আসার পথে চ্যাম্পকে দেখতে গিয়ে ভাবলাম রিপোর্ট গুলোও নিয়ে আসি।দ্যান যা জানতে পারলাম আমি সত্যিই তার জন্য অনেক খুশি মেহুলতা।অনেক খুশি।’

আমি স্থির চোখে উনার হাসিটার দিকে তাকিয়ে রইলাম।উনি আমার চোখে চোখ রেখেই বললেন,

‘ আচ্ছা সে নিশ্চয় তোর মতো হবে?লিটল প্রিন্সেস!ছোট হাতগুলো দিয়ে আমায় ছুঁবে? ছোটছোট আঙ্গুল গুলো দিয়ে আমার খোঁচা দাঁড়িতে হাত বুলাবে যখন আমি ওকে কোলে নিব?গুঁটি গুঁটি পা ফেলে আমার হাত ধরে হাঁটবে সে তাই না?ছোট ছোট চুল গুলোতে দুই দুইটো ঝুটি করবে দুই পাশে?কিছু চুল কপালে এসে পড়বে?আলতো গলায় বলবে ” বা্ বা্ “?’

আমি অবাক চাহনিতে উনার দিকে তাকিয়ে রইলাম।উনার বর্ণনা শুনেই চোখের সামনে মুহুর্তেই ফুটে উঠল একটা ছোট্ট ফুটফুটে মেয়ের চিত্র।আমি ঠোঁট উল্টিয়েই বলে উঠলাম,

‘ উহ!সে আপনার মতোও হতে পারে। কিংবা হতে পারে দুইজনের মতোই হবে।’

উনি মুচকি হাসলেন কেবল।কপালে আবারও ঠোঁট ছুঁয়ে বলে উঠলেন,

‘ আট আটটে মাস কি একটু বেশি হয়ে গেল না?প্রিন্সেস তার বাবাকে এতদিন অপেক্ষা করাবে?উহ!এতগুলো দিন অপেক্ষা কি করে করব?’

আমি হাসলাম। উনার গালে দুই হাত রেখেই বলে উঠলাম,

‘ উহ!আপনি শুরুতেই সব ভেবে নিচ্ছেন দেখছি। সে তো লিটল প্রিন্সও হতে পারে।সব একেবারে জেনে বসে আছেন মনে হচ্ছেন।আর অপেক্ষা?অপেক্ষা করতে পারবেন নাহ? তাও আপনি?তার মায়ের জন্য যখন তিন তিনটে বছর অপেক্ষা করতে পেরেছেন তখন তার জন্য আটমাস পারবেন নাহ কেন?’

উনি বাঁকা হাসলেন। তারপরই বললেন,

‘ দিব্যি পারব। শত হোক সে আমার লিটল প্রিন্সেস।’

‘ আবারও লিটল প্রিন্সেস?’

উনি চোখ টিপেই ফিসফিস করে বললেন,

‘ উহ!আমি জানি আমার মেয়েই হবে।যে আমায় বাবা বলে ডাকবে।ঠোঁটজোড়া দিয়ে মুখে হামি দিবে, ঘুম ভাঙ্গাবে। ছোটছোট হাত জোড়া দিয়ে ঝাপটে ধরবে।’

আমি হাসলাম।চোখ জোড়া বন্ধ রেখেই কয়েক সেকেন্ড উনার বলা কথাগুলো ভাবলাম।সঙ্গে সঙ্গেই ঠোঁটের কোণে মিষ্টি হাসি ফুটল আমার।চোখ মেলে তাকিয়েই পায়ের পাতা ফ্লোরে ভর দিয়ে উনার ঘাড়ে হাত জোড়া রাখলাম।তারপর কিছুটা উঁচু হয়েই ঠোঁট জোড়া দিয়ে উনার ঠোঁটে ছুঁয়ে দিয়েই বলে উঠলাম,

‘ শুনুন?আপনাকে না মেহুল নামের মেয়েটি ভালোবাসে।প্রচন্ড ভালোবাসে।তার এই আনন্দের জন্য আপনি দায়ী।ভালোবাসি অর্কভাই।’

উনি সবটুকু কথা হাসিমুখে শুনেই পরমুহুর্তেই মুখ কালো করে নিলেন।আমার কোমড়ে হাত জোড়া দিয়ে চেপে ধরেই টেনে একেবারে উনার সাথে মিশিয়ে নিলেন।তারপরই গম্ভীর গলায় বলে উঠলেন,

‘ সবটুকুই ঠিক আছে। শুধু লাস্টের ভাই শব্দটা ছাড়া।আমি তোর কোন সময়ের ভাই?জ্বলজ্যান্ত বর হয়ে সামনে দাঁড়িয়ে আছি।আর তুই আমাকে ভাই বলিস?কি সাংঘাতিক মেয়ে। এই অপরাধে তুই ভালোবাসি শব্দটা দশবার বলবি আমার ঠোঁটের কাছে ঠোঁট রেখে।লেটস স্টার্ট!’।

আমি অবাক হয়েই বললাম,

‘ হোয়াট?’

‘ ইয়েস। শুধুমাত্র এই ভাই শব্দের কথা ভেবেই ইহানের ছেলেরে নিজের ছেলে বলি নাই।দেখা যাবে পরে আমার মেয়ে ওর ছেলেরে ভাই ভাই বলে জীবনটা ত্যাজপাতা বানিয়ে দিবে।তোর ডুপ্লিকেট হলে আর কি।’

আমি ভ্রু জোড়া কুঁচকেই বলে উঠলাম,

‘ মানে?’

উনি হাসলেন।তারপরই বললেন,

‘ উহ!অতো মানে বোঝানোর সময় নেই যে। বল,বল, ভালোবাসি বল।তোর বাচ্চাকে দেখতে যাবি তো হসপিটালে। তাড়াতাড়ি।নয়তো এভাবেই এখানে দাঁড়িয়ে থাকব।’

আমি ছোটছোট চোখে কয়েকবার তাকিয়েই মৃদুকন্ঠে দশবার “ভালোবাসি” বলে দিলাম।তারপরই উনি উনার হাতের বাঁধনটা ঢিলে করলেন। আমি সুযোগ পেয়েই ফসকে বেরিয়ে এলাম যেন।

.

হসপিটালের করিডোরে পা ফেলে উনার পেছন পেছনই এগিয়ে যেতে লাগলাম মেঘাদের কেবিনের সামনে এসেই থমকে দাঁড়ালাম।উনি দরজা পার হয়ে ডুকে পড়লেও আমি উঁকি মেরে একনজর তাকালাম কেবল।ভেতরে মেঘার পাশে ছোট গুলুমুলু বাচ্চাটাকে দেখেই খুশিতে চকচক করল আমার চোখে।ইহান ভাই মেঘার একটা হাত ধরেই পাশের টুলেই বসে ছিলেন।আমাদের দেখেই মৃদু হেসে বললেন,

‘ কনগ্রাচুলেশন, কনগ্রাচুলেশন মিঃ এন্ড মিসেস মাহমুদ।’

আমি হালকা হাসলাম।দু পা এগিয়েই পিচ্চিটাকে কোলে নিয়েই উচ্ছাসিত কন্ঠে বলে উঠলাম,

‘ এমাহ! এ তো পুরো ইহান ভাইয়ের মতো।আর মেঘার মতো ধবধবে ফর্সা।আমার বাচ্চাটা আমার কোন বৈশিষ্ট পেল না?আহ!মানব নাহ।’

মেঘা হেসেই বলে উঠল,

‘ ওর আচরণ তো এখনো প্রকাশ পায় নি।দেখবি আচরণ গুলো তোর মতোই চাপা হবে হয়তো।’

আমি অবাক হয়ে তাকিয়েই বললাম,

‘ আমি চাপা? ‘

আমার কথা শুনেই খিলখিলিয়ে হেসে উঠল মেঘা। ইহান ভাইও হালকা হাসলেন। তারপরই বললেন,

‘ চাপা না?দ্বীর্ঘ চারবছর আমার বন্ধটাকে ভালোবাসলে, চোখের সামনে একটা মেয়ের সাথে কত সহজে সহে আসলে, কান্না আসলেও দমিয়ে রাখলে, তারপর বিয়েতে তার ফিরিয়ে দেওয়াতে এটুকুও কষ্ট দেখালে নাহ, এরপরপ দুই বছরের দূরত্বে নিজেকে সাদাকালো জীবনে আবদ্ধ রাখা ইত্যাদি ইত্যাদি, এতকিছু নিজের ভেতর চেপে রাখতে যে সক্ষম সে চাপা স্বভাবের নয় বলতে চাইছো?’

আমি অবাক হয়ে চাইলাম ইহান ভাইয়ের দিকে। তারপর অর্কের দিকে তাকিয়েই জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে বললাম,

‘ কে বলল আমি অর্কভাইয়ের জন্য সাদাকালো জীবনে নিজেকে আবদ্ধ রেখেছি?’

সঙ্গে সঙ্গেই মেঘা আর ইহান ভাই হেসে উঠলেন হু হা করে।আমি বোকা বোকা চাহনিতে তাকিয়ে থাকতেই অর্কভাই ক্ষুদ্ধ চাহনিতে তাকালেন আমার দিকে।ইহান ভাই ভ্রু উঁচিয়েই অর্কের পেটে হাত দিয়ে গুতক মেরে বলে উঠলেন,

‘ দোস্ত তুমি তো ডুবে ডুবে জল খাও।ভাই থেকে সোজা বাচ্চার বাবা?’

আমি জিহ্বা কাঁমড়ে তাকালাম এবার।উনি নিশ্চয় রেগে এবার কিছু বলে দেবেন?আমি হতাশ চাহনিতে তাকাতেই উনি নিরাশ কন্ঠে বললেন,

‘ আজ বাসায় যা।তোকে ভাইয়ের সংজ্ঞা, ভাই কাকে বলে, ভাই কতপ্রকার সব শেখাব।ফালতু মেয়ে।’

আমি ছোট ছোট চোখে তাকালাম কেবল।উনি হনহনিয়ে বেরিয়ে গেলেন সেইখান থেকে।আমি মেঘার কোলে পিচ্চিকে রেখেই জোরে জোরে হাঁটলাম উনার পিছু পিছু।হসপিটাল থেকে বেরিয়ে আসতেই উনাকে আর দেখলাম নাহ কোথাও।এদিক ওদিক তাকিয়েই উনাকে না দেখেই ঠোঁট চেপে দাঁড়িয়ে রইলাম আমি।উনি কি শুধুমাত্র ভাই ডাকার জন্য আমায় রেখে চলে গেলেন?আমি ঠোঁট উল্টে সামনের দিকে তাকিয়েই হাঁটতে লাগলাম।রাস্তার একপাশে হসপিটাল থেকে কিছুটা দূরেই খোলা সবুজ মাঠ।মাঠটক বেশ বড়সড়ই।আমি ধীর পায়ে ওদিকটায় গিয়েই স্থির হয়ে দাঁড়ালাম।পেছন থেকে কেউ দেখছে বলেই মনে হল।সঙ্গে সঙ্গেই পেছন ঘুরে তাকালাম।নাহ!কেউ নেই। আমি আবারও আগের মতো দাঁড়িয়ে রইলাম।আমার থেকে কিছুটা দূরেই আহি আর রায়হানকে দেখে সেখানে আরও কিছুটা সময় দাঁড়ালাম।মাঠের সবুজ ঘাসেই রায়হান আর আহি বসে আছে। আহির হাতটা রায়হানের হাতে।হাতে বেলিফুলের তিন চার প্যাঁচের মালা জড়ানো।রায়হান পরিয়ে দিয়েছে তা বুঝতে পেরেই মুচকি হাসলাম আমি।ওদের দিকে একনজর মুগ্ধ চাহনিতে তাকিয়ে হেসেই পা বাড়াতেই মনে হলো আবারও কেউ আমায় পেছন থেকে দেখছে।সঙ্গে সঙ্গে আবারও পেঁছন ফিরে চাইলাম আমি।নাহ এবারও কেউ নেই।আমি হতাশ চাহনিতে আবার পা বাড়াতে নিলেই কেউ একজন আমার ডানহাতটা টেনে ধরল।আমি মুহুর্তে আৎকে উঠে চাইতেই অর্ক নামক মানুষটাকে দেখে মিনমিনে চোখে চাইলাম।উনি হাতে থাকা কাঁচের চুড়িগুলোর সুতো খুলে আমার হাতে পরিয়ে দিতে দিতেই বললেন,

‘ পাশে ফুটপাথে কাঁচের চুড়ি বিক্রি করছিল।নিতে গিয়ে ফিরে এসেই দেখি মেহুলতা আমায় রেখে পা বাড়িয়েছে।শোনো মেহুলতা তোমায় ভালোবাসি।এভাবে হুটহাট রেখে গিয়ে চিন্তায় ফেলবে না।ভালোবাসি মেহুলতা।সেই মেহুলতা যাকে তিন বছর আগের টুকরো স্মৃতির অতলে কুড়িয়ে পেয়েছিলাম আমি।’

#সমাপ্ত।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here