পর্ব-০৭
#তমিস্র_প্রভা🍁
#লেখিকা-লামিয়া_রহমান_মেঘালা
সূর্যের আলো ছায়ার চোখে পরতে ছায়া পাশে তাকায়,
নির্ঝর চোখ বন্ধ করে আছে,
কি মিষ্টি দেখতে ছেলেটার ঘুমন্ত চেহারা,
কিন্তু ভীষণ ঠান্ডা ছেলেটা,
ছায়া সরে আসে,
খুদা পেয়েছে ভীষণ,
ফ্রেশ হয়ে নির্ঝর এর কাছে আছে,
ডাকবে কি ডাকবে না দোটানে,
কিন্তু না ডাকলে কি খাবে,
ছায়াকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে নির্ঝর টান দেয় ছায়াকে,
ছায়া গিয়ে নির্ঝর এর বুকে পরে,
ছায়ার চোখ বড়ো বড়ো হয়ে যায়,
–কি করার চেষ্টা করছো তুমি?
–ক কিছু ন না,
খুদা পেয়েছে (অনেক আস্তে করে)
–খুদা পেয়েছে?
–হুম
–ওকে ঠিক আছে চলো,
নির্ঝর ছায়াকে নিজের কোলে বসায়,
–ক কি করছেন?
–আগে আমার সকাল শুরু হতে দেও,
কথাটা বলে নির্ঝর ছায়ার ঠোঁট আকড়ে ধরে,
ছায়ার ভেতর কারেন্ট বয়ে যেতে থাকে,
কিছুক্ষণ পর,
–আমার দিন শুরু হয়ে গেছে এবার তুমি যেতে পারো৷
নির্ঝর সরে আসে,
ছায়া ও সরে দাঁড়ায়,
–কোথায় যাবো আমার ত খুদা লেগেছে,
–ওহ সরি এসো,
নির্ঝর ফ্রেশ হয়ে ছায়াকে নিয়ে নিচে নামে,
টেবিলে খাবার সাজানো আছে,
ছায়া অবাক হয়,
–কে রান্ন করলো?
–এখানে যারা থাকে তারা যাও খেয়ে নেও।
–আপনি খাবেন না?
–হুম অন্য কিছু৷
–অন্য কিছু কি?
–তুমি বুঝবা না যাও খেয়ে নেও,
ছায়া টেবিলের একটা চেয়ার টেনে বসে
নির্ঝর ছায়ার পাশে বসে,
ছায়া খাবার খাওয়া শুরু করে,
নির্ঝর এক হাত মুখে দিয়ে ছায়ার খাওয়া দেখছে,
ছায়ার বেশ অসস্তি বোধ হচ্ছে,
কিন্তু কিছু বলছে না,
খাবার শেষে ছায়া হাত ধুয়ে মুছে নেয়,
–চলো তোমায় একটা জিনিস দেখাই আমি ভিশন ভালো নিশানা লাগাতে পারি৷
–হু
–হুম এসো,
নির্ঝর ছায়ার হাত ধরে বেলকনিতে নিয়ে আসে,
ছায়া ঘন জঙ্গলের মাঝে নিজের অস্তিত্ব টের পাচ্ছে,
নির্ঝর আশেপাশে থাকলে কেমন অদ্ভুত ফিল হয় ছায়ার,
ঠান্ডা বেশি লাগে,
এক আলাদা অনুভুতি ,
নির্ঝর একটা বন্দুক নিয়ে ছায়ার হাতে ধরায়,
ছায়া ভয় পেয়ে যায়,
–আমি কোন নিরীহ পশুকে মারতে চাই না প্লিজ
ছায়া কথাটা বলে মাথা ঘুরিয়ে চোখ বন্ধ করে নেয় আর নির্ঝর গুলি চালিয়ে দেয়,
দুর থেকে একটা আঁতকে ওঠা শব্দ ভেসে আসে,
নিশ্চিত কিছু মারা গেছে,
–চলো দেখা জাক কি হলো,
নির্ঝর ছায়াকে নিয়ে নিচে চলে আসে,
গাড়িতে বসে ড্রাইভ করতে থাকে,
অনেকটা পথ পেরোনের পর তারা আরও ঘন জঙ্গলে চলে আসে,
আশেপাশে গাছের এতোই ঘনত্ব যে সূর্যের আলো পৌঁছাতে পারছে না,
তার মাঝেই একটা রাস্তা,
নির্ঝর হটাৎ গাড়ি থামিয়ে দেয়,
সে গাড়ি থেকে নেমে ছায়ার হাত ধরে নামায়,
গাছের পাশে একটা পশুর মৃত দেহ পরে আছে,
ছায়া রক্ত দেখে নির্ঝর কে ধরে বসে,
–বাসায় নিয়ে চলুন প্লিজ,
তখন আশেপাশে দিয়ে শেয়ালের ডাক ভেসে আসতে থাকে,
ছায়ার ভীষণ ভয় হতে থাকে,
–নির্ঝর,
–প্রিন্সেস,
ওই দেখো কি,
ছায়া পাশ ফিরতে তার পায়ের উপর একটা পশু লাফিয়ে পরে,
ছায়া এক চিৎকার করে চোখ বন্ধ করে নেয়,
,
ছায়া চোখ খুলতে নিজেকে নির্ঝর এর রুমে আবিষ্কার করে,,
ছায়া ভয় পেয়ে যায়,,
–নির্ঝর,
–প্রিন্সেস
–আমি কি স্বপ্ন দেখছিলাম।
নির্ঝর ছায়ার কথায় হেসে দেয় দেখ তোমার পায়ে, ছায়া পায়ের দিকে তাকায়
পায়ে প্রচন্ড ব্যাথা অনুভব হচ্ছে,
ছায়া কেঁদে দেয়,
–আপনি একটা রাক্ষস আমি থাকবো না এখানে বাসায় দিয়ে আসুন প্লিজ
–ওয়াট আ নাইস জোক প্রিন্সেস,
–আই হেট উ,
–বাট আই লাভ উ,
কথাটা বলে ছায়ার ঠোঁট আকড়ে ধরে,
নির্ঝর সূচালো দাঁত ছায়ার ঠোঁটে বিঁধে যায়,
ছায়া চোখ বন্ধ করে নেয় ব্যাথায়,
ছায়া হাত দিয়ে নির্ঝর কে সরানোর চেষ্টা করছে কিন্তু পারছে না,
কিছুক্ষণ পর নির্ঝর এমনি সরে আসে,
ওর ঠোঁট ছায়ার রক্ত লেগে আছে,
–রাক্ষস একটা,
–হাহা আই লাভ উ৷
–মিথ্যা কথা ভালোবাসা এভাবে হয় না,
–ত কিভাবে হয়,
–ভালোবাসলে কেয়ার করতে হয় যত্ন নিতে হয়,
–হাহা সো ফানি,
–কিসের ফানি।
কোন ফানি নয় আমি সত্যি বলছি।
আপনি কষ্ট দিচ্ছেন ভালোবাসছেন না.
–এটাকে কষ্ট দেওয়া বলে?
–হ্যাঁ,
–ত ভালোবাসা কাকে বলে,
–ভালোবাসা যত্নে হয়,
ট্রাই টু আন্ডারস্ট্যান্ড,
ডোন্ট হিট মি ইটস হার্ট আ লট,
আমি বাসায় যাবো আপনি পাগল,
পাগল কথাটা শুনে নির্ঝর ছায়াকে থাপ্পড় বসিয়ে দেয়,
ছায়া নির্ঝর এর বুকে ঢুলে পরে,
–ও সিট ছায়া ছায়া,
ছায়ার মুখে হাত দিয়ে বাট ছায়া উঠছে না,
–আমার এমন করা উচিত হয় নি৷
ছায়া আম সরি,
আমি তোমায় সত্যি ভালোবাসি প্রিন্সেস,
ছায়াকে শুইয়ে দিয়ে নির্ঝর বাইরে চলে আসে,
প্রায় কিছুক্ষণ পরে,
ছায়ার সেন্স আসছে,
নির্ঝর ছায়ার পাশে বসে আছে,
নির্ঝর কে দেখে ছায় ভয় পেয়ে যায়,
–আর উ ওকে,
–আমি বাড়ি যাবো,
(কেঁদে দিয়ে)
–একটু আগে যেটা করেছি সেটাকে রিপিট করতে বলো না,
–আআ এটা ভালোবাসা নয়,
–ত ভালোবাসা শিখতে চাই নি,
আমরা এভাবেই ভালোবাসা শিখেছি,
উঠে খেয়ে নেও,
–আমি খাবো না,
–প্রিন্সেস আমার রাগ উঠলে তোমায় কেউ বাঁচাতে পারবে না মনে রেখ,
ছায়া ভয় পেয়ে যায় কথাটা শুনে,
নির্ঝর এর হাতে খেয়ে নেয় ছায়া,
ছায়া মাথা তুলে নির্ঝর এর দিকে একটু তাকায়,
ওর চোখ গুলো কি রোজ রং পরিবর্তন করে নাকি,
–আপনি লেন্স পরেন,
–কেন?
–এটা,
–নট উর বিজনেস
কথাটা বলে নির্ঝর চলে গেল,
–আমি পাগল হয়ে যাবো এখানে থাকলে,
আমি সত্যি এক দিন পাগল হয়ে যাবো কেউই বাঁচাতে পারবে না আমায়।
ছায়া শুয়ে পরে,
রাতে,
নির্ঝর জঙ্গলের মাঝে অনেক দুর ছোটার পরেও কোথাও তার খাবারের সন্ধান পেলো না,
–রবি.
–হ্যাঁ,
–আই কান্ট ফাইন্ড মাই ফুড ড্যামেড,
–কি করবো আমিও কিছু পাচ্ছি না।
–আমি ছায়ার কাছে যেতে পারবো না ওকে হর্ট করে দিবো তাহলে,
–পাগল হয়ে গেছিস ছায়া তোকে ছাড়া ওই বাড়িতে সেভ না,
–আআআআআ
নির্ঝর চিৎকার দিয়ে ওঠে,
–নির্ঝর রাত গভীর যদি ওর উপর কিছুর হামলা হয় তাহলে সমস্যা হয়ে যাবে,
নির্ঝর রবির কথায় ছুটে চলে আসে নিজের বাসায়,
ছায়া ঘুমচ্ছে,
ছায়ার মায়াবী চোখ দু’টো বন্ধ,
ছায়ার কাছে আসতে নির্ঝর এর সব হিংস্রতা কমে গেল,
তার ঠোঁট ভেদ করে বেরিয়ে আসা সূচালো দাঁত গুলো ও মিলিয়ে গেল
ছায়ার কাছে এসে ছায়ার বুকে মুখ গুজে শুয়ে পরে নির্ঝর,
এতে নির্ঝর এর ভেতরের সব রাগ মিলিয়ে যায়,
খুদার বেগ টাও ভুলে যায় সে,
ছায়া ঘুমিয়ে আছে,
ঘুমের মাঝেই নির্ঝর এর স্পর্শ ফিল করতে থাকে ছায়া,
নির্ঝর তার ঘাড়ে হামলা করেছে,
ছায়া নড়তে পারছে না নির্ঝর এর সমস্ত ভর ছায়ার উপর,
সে রাতে ছায়া নির্ঝর কে বাঁধা দিতে পারে নি
ছায়া যেন সব ভুলে গেছিল,
তার অতিত নির্ঝর কে?
সে কেমন?
সব কিছু ভুলে শুধু ভালোবাসাই ছিল তাদের এক মাত্র পাওয়া,
চাঁদের আলোয় আলোকিত তাদের ভালোবাসার রং,
,,
,,
পরের দিন সকালে,
ছায়ার ঘুম ভাঙতেই সারা শরীরে ব্যাথা অনুভব করে,
হাত টাও নাড়াতে পারছে না,
ছায়ার বুকে নির্ঝর এর মাথা দেখে ছায়া কিছুটা অবাক হয়,
কাল রাতের সব কথা মনে আসতে থাকে একটু একটু করে,
ছায়ার হাত উঠায় তার কব্জিতে নির্ঝর এর আঙ্গুলের ছাপ স্পষ্ট,
চলবে,