পর্ব-০৮
#তমিস্র_প্রভা🍁
#লেখিকা-লামিয়া_রহমান_মেঘালা
(প্রথমত গল্পটা সম্পূর্ণ কাল্পনিক বাস্তবের সাথে এর কোন মিল নেই)
ছায়া নির্ঝর এর দিকে তাকায়,
–এটাকে বাঁচা বলে না এর থেকে মৃত্যু অনেক ভালো।
–প্রিন্সেস তুমি কি বলছো.
–যা বলছি সত্যি বলছি। আপনি ধ্বংস করে দিয়েছেন সব,
মন্সটার আপনি,
নির্ঝর একবার ছায়ার দিকে তাকায়,
মেয়েটার মায়াবী চোখে পানির ফোঁটা সহ্য করা মুসকিল,
নির্ঝর উঠে সার্ট পরে।বেরিয়ে আসে,
ছায়া উঠে ফ্রেশ হয়ে তাদের রুমের সেই বেলকনিতে চলে যায়,
এর মাঝে রবি আসে তাদের ঘরে,
–ছায়া,
–হু,
–কেমন আছো?
–দেখতেই পাচ্ছো যন্ত্রণায় আছি৷
–এভাবে কেন বলছো?
–তুমি কি জানো না তোমার ভাই একজন রাক্ষস,
একজনের রাক্ষস এর সাথে একজন মানুষ অবশ্যই কখনো শুখে থাকতে পারে না,
–আমার ভাই রাক্ষস না ছায়া ও এমনটা শুধু মাত্র হয়ে গেছে ওকে একটু ভালোবাসা দেও ও তোমায় হার্ট করবে না,
–কিভাবে রবি ভাইয়া কিভাবে৷
ও টর্চার করে আমায়,
–ওর কাছে এটাই ভালোবাসা মনে হয়,
–মানে,
–মানে ও জানে ভালোবাসা হয়ত মেরে ধুরে হয়,
হয়ত কষ্ট দিলে ভালোবাসা পাওয়া যায়,
ও বিষাক্ত হয়ে আছে আপাতত,
ওর জীবন টাই বিষময়,
–মানে,
–তুমি সব জানলে ওকে ভালোবাসতে বাধ্য হবে,
আজ আমার ভাইয়া বেরিয়ে গেছে ওকে দেখে মনে হলো ও হয়ত আজ অনেক লেট করে ফিরবে,
এটাই সময় তোমায় সব কিছু বলার,
–সব কিছু কি?
–শুন,
নির্ঝর চৌধুরী,
গ্রেট আইকন Astrology অরূপ চৌধুরী এর এক নাতি সন্তান,
–জ্যোতিষ অরূপ চৌধুরী (ছায়ার কথা থেমে আসছে কথাটা শুনে)
–হ্যাঁ যার কাছে সবাই এক বার হাত দেখানোর জন্য হুমড়ি খেয়ে পরতো৷
–ক কিন্তু,
–আমার পুরো কথাটা শুনে নেও ছায়া,
সময়টা ছিল আজ থেকে প্রায় ১০০ বছর আগের যখন অরূপ চৌধুরী মাত্র ১০ বছর বয়সী এক জন নাবালক,
তার বাবা জানত এই ছেলেটা সাধারণ কোন ছেলে নয়,
ওর মাঝে অনেক অসাধারণ কিছু আছে,
ছেলেটা ছোট থেকেই যা বলত তাই হতো অতিত ভবিষ্যৎ বর্তমান সব পড়ে নিয়েছিলো সে,
তার অজানা কিছু ছিল না৷
তার থেকে লুকানোর কিছু ছিল না৷
সময়ের ব্যবধানে সে বড়ো হতে থাকে,
বাইরে থেকে পড়াশোনা শেষ করার পর অলিমা বৃষ্টি ম্যাম কে বিয়ে করার পর জন্ম হয় নির্ঝর চৌধুরী এর,
ওদের সংসার ভালো চলছিল কিন্তু কথায় আছে অনেক শুখ কখনো কপালে সয় না,
জাদু বিদ্যা এমন একটা জিনিস যা যে কোন মানুষ কে এক নিমিষেই শেষ করে দিতে পারে,
নির্ঝর তখন মাত্র ২ বছর বয়সের একটা ছেলে যখন মানুষ এর কুনজর সব সময় ওর উপর থাকতো,
অরূপ চৌধুরী এর একজন খুব কাছের শত্রু নির্ঝর কে অভিশাপ দেয় ওর জীবনের ভালোবাসা ও ধ্বংসের কারন হবে,
নির্ঝর যে দিন তার সত্যি ভালোবাসাকে খুজে পাবে সেদিন সে পরিনত হবে মানুষ রুপি দানবে, নির্ঝর এর খাদ্য রক্ত কিন্তু মির্ঝর কোন ভ্যাম্পায়ার নয়,
ও একটা মানুষ তোমার আমার মতো কিন্তু নির্ঝর এর সভাব মানুষের মতো।না,
নির্ঝর একজন মানুষের মতো দেখতে রাক্ষস ভেতর থেকে ও একজন রক্তের পিপাসায় আক্রান্ত দানব৷
নির্ঝর বেঁচে থাকবে অনেক বছর ওর কিছুই হবে না যেদিন ও ভালোবাসা শিখবে সেদিন থেকে নির্ঝর এর বয়স আর বাড়বে না রয়ে যাবে সেভাবে যেভাবে সে ছিল আগে,
সে দিন অরূপ চৌধুরী নির্ঝর এর ভবিষ্যৎ দেখে নিয়েছিল,
নির্ঝর এর বয়স তখন ২০ ওর সাথে দেখা হয় নাদিয়ার,
নাদিয়া কে জানো ছায়া?
–কে?
–তুমি।
–মানে,
–এসো তোমায় দেখাই,
ছায়াকে নিয়ে রবি নির্ঝর এর সিক্রেট রুমে যায়,
ছায়া সেখানে গিয়ে অবাক হয়ে যায় চারিদিকে তার ছবি৷
তার আর নির্ঝর এর বিয়ের ছবি,
ছায়া একটা সাদা গাউন পরে আছে এই ছায়া সেই ছায়ার মাঝে পার্থক্য অনেক,
এই ছায়া হলো এক জন রানি৷
হিরা নামের অলংকার দিয়ে সাজানো মেয়েটা,
–এ ত পুরো আমার মতো দেখতে,
–ও তোমার মতো দেখতে নয় ওটদ তুমি ই,
–কি বলছেন ভাইয়া,
–হ্যাঁ,
–আমার মাথায় কিছুই আসছে না,
সব কিছু গুলিয়ে যাচ্ছে,
–শুন তবে,
অতিত,
–বাবা ( নির্ঝর)
–হ্যাঁ বাবা বলো (অরূপ চৌধুরী)
–আমি ঘুরতে যেতে চাই ক্যালিফোর্নিয়ার সমুদ্রে,
–তুমি যেতে চাও?
–হ্যা।
–কবে?
–তুমি যে দিন অনুমতি দেও,
–ওকে তাহলে আজ রাতেই রওনা হও,
–ধন্যবাদ বাবা,
নির্ঝর তার রুমে চলে যায়,
–এটা তুমি কি করলে নির্ঝর এর বাবা।
তোমার জানা নেই ওর সময় ঘনিয়ে এসেছে,
–আমি সবি জানি কিন্তু আমি ভবিষ্যৎ দেখতে পারি তা বদলানোর ক্ষমতা আমার নেই,
আমি অসহায় অলিমা,
আমি আমার ছেলের ভবিষ্যৎ ঠিক করতে পারলাম না,
অলিমা স্বামী কে জড়িয়ে ধরে,
আজ সত্যি এই দম্পতি অসহায়,
দিন পেরিয়ে রাত হলো,
নির্ঝর ক্যালিফোর্নিয়াতে যাবার ফ্লাইট ধরেছে,
নির্ঝর কানে হেড ফোন দিয়ে বসে ছিল হটাৎ সামনে দিয়ে একটা মেয়ে হেঁটে আসছিল,
একটা গোল ড্রেস আর জিন্স পরা,
গলায় একটা স্কার্ফ পেচানো,
–এক্সকিউজ মি,(মেয়েটা)
–জি (নির্ঝর,)
–আমি নাদিয়া, নাদিয়া চৌধুরী এটা বোধহয় আমার সিট আপনার ব্যাগটা প্লিজ সরিয়ে দিন,
–হ্যাঁ অবশ্যই,
নির্ঝর হেসে তার ব্যাগ টা সরিয়ে দেয়,
আর নাদিয়া ওখানে বসে পরে
ওর হাসি নির্ঝর এর বুকে গিয়ে বিধে যায়।
য ভোলা সম্ভব না,
–তুমি কোথায় থাকো,(নির্ঝর)
–এখানেই,(নাদিয়া)
–মানে,
–মানে মা বলে অপরিচিত কাউকে ঠিকানা বলতে নেই,
–আচ্ছা তোমার মা এটা বলে,
–হুম,
–পরিচিত হয়ে নেও তাহলে।। আমি নির্ঝর চৌধুরী,
–অরূপ চৌধুরীর এক মাত্র ছেলে তাই ত?
–হ্যাঁ,
তুমি কি করে,
–আমি জানি আপনাকে চিনে ন এমন কেউ নেই,
–ওহ আচ্ছা আমি কি খুব ফেমাস নাকি,
–হুম ফেমাস ত,
গ্রেট Astrology অরূপ চৌধুরী এর এল মাত্র সন্তান আপনি।
–তুমি ত আমার সম্পর্কে তাহলে অনেক কিছুই জানো।
–হ্যাঁ জানি ত,
–তাহলে এবার তোমার সম্পর্কে ও জানার পুরো অধিকার আমার আছে তাই না নাদিয়া
–এক দিক দিয়ে বলতে গেলে হুম আছে,
–তাহলে বলো তুমি কে?
–চিল মিস্টার সন অফ আইকন,
আমি ইন্টার ২য় বর্ষের ১৮ বছর বয়সী একজন ছোট্ট বালিকা,
ডটর অফ রায়হায় খান,
–বিজনেস ম্যান রায়হান খান?
–জি জি ঠিক ধরেছেন,
–ত মিস নাদিয়া কোথায় যাচ্ছেন?
–আমি যাচ্ছি ক্যালিফোর্নিয়া,
–ওহ আমিও ত সেখানে যাচ্ছি,
–ওয়াউ তাহলে ত দারুন হলো,
–বাই দ্যা ওয়ে তুমি একা যাচ্ছো কি?
–হুম কাইন্ড অফ একাই আসলে আমি দেশ ভ্রমণ পছন্দ করি সো একাই যাওয়া হয়,
–আচ্ছা, তুমি ত আমার মতো,
–ওহ আমাদের সখ কি মিলে গেল নাকি?
–হুম একটু একটু মিলছে,
পুরোটা মিলতে সময় লাগবে,
–আপনি কি সব কিছু সময় নিয়ে করেন নাকি?
–হুম বাবা বলেন, সময় নিয়ে কাজ করতে কাজ সঠিক হবার সম্ভাবনা অনেক বেশি,
–আপনি আপনার বাবাকে ফলো করেন?
–অনেক বেশি।
–গুড,
জার্নিতে দু’জন দুজনের অনেক কাছে চলে এসেছিল,
নিজেদের সম্পর্কে সব কিছু জেনে গেছিল প্রায়,
সেটা ছিল মধুর কুছু প্রহর,
,
,
,
অন্যদিকে,
–সময় চলে এসেছে নির্ঝর এর জীবনে সেই মেয়ের পা পরে গেছে,
এখন শুধু দেখার পালা নির্ঝর সব থেকে কোমল হৃদয় এর মানুষ টাকে একটা মানুষ রুপি রাক্ষসে পরিনত হওয়া দেখার পালা,
গ্রেট আইকোন অরূপ চৌধুরী,
তার ছেলের ধ্বংস হওয়া নিজের চোখে দেখবে,
কথা গুলো বলে লোকটা অট্ট হাসিতে ফেটে পরে,
চলবে,
(দয়া করে গল্পটা ধৈর্য ধরে পড়ুন)