তুমি থেকে যাও আমি রেখে দিব পর্ব -৩১+৩২

#তুমি_থেকে_যাও_আমি_রেখে_দিব
#পর্ব_৩১
#লেখিকা_Fabiha_bushra_nimu

আহান বিছানার মধ্যে অনেক গুলো শপিং ব্যাগ ছড়িয়ে ছিটিয়ে নিয়ে বসে আছে।অধরা’কে তাকিয়ে থাকতে দেখে,বলল।

–ওভাবে তাকিয়ে আছো কেনো”?ভেতরে এসো।

আহানে’র কথা শুনে অধরা ভেতরে এসে আহানে’র পাশে বসলো।আহান তিন’টা শপিং ব্যাগ অধরা’র হাতে ধড়িয়ে দিলো।অধরা ব্যাগ গুলো খুলতে-ই অবাকে’র থেকে বেশি খুশি হলো।এগুলো সব তার পছন্দ করা শাড়ী।অধরা খুশি হয়ে বলল।

–এগুলো আমার জন্য নিয়ে এসেছেন।

–না আমার আরেক’টা বউ আছে।তার জন্য নিয়ে আসছি।বলে-ই আহান চলে গেলো।অধরা সবগুলো ব্যাগ খুলে দেখতে লাগলো।সবকিছু সাজার জিনিস।অধরা’র জন্য এনেছে।অধরা সবকিছু গুছিয়ে রেখে গোসল করতে চলে গেলো।একদম রেডি হয়ে নিচে নেমে আসলো।অধরা’র দিকে তাকিয়ে আহান মনে মনে বলল।

–মাশাল্লাহ।আচ্ছা এত সাজার কি দরকার ছিলো।বাসায় এত মানুষ।সবাই ওর দিকে তাকিয়ে আছে।ভাবতে-ই রাগ লাগছে,আহানে’র।

–অধরা তোমাকে অনেক সুন্দর লাগছে।এটা সেই শাড়ী’টা না।যেটা নিয়ে,আমি আর আহান ঝগড়া করছিলাম।বলল তিতির।

অধরা খুশি হয়ে উত্তর দিলো।

–হ্যাঁ এটাই সেই শাড়ী।উনি আমাকে সকালে দিয়েছেন।

–খুব সুন্দর লাগছে তোমাকে।আমি’ও এটাই ভেবে ছিলাম।তোমার জন্য-ই নিচ্ছে।কিন্তু তোমাকে বলবে না।তোমাকে সারপ্রাইজ দিবে তাই।

–আপু তোমাকে-ও অনেক সুন্দর লাগছে।

–ধন্যবাদ বোন।চলো দেখি তিতলি-কে কতদূর সাজানো হলো।একটু পরে-ই বরের বাসার লোকজন চলে আসবে।বলে-ই দু’জন তিতলি’র রুমে গেলো।পার্লারে’র মেয়েগুলো তিতলি-কে সাজাচ্ছে।অধরা আর তিতির গিয়ে তিতলি’র পাশে বসলো।তিতলি চুপচাপ বসে আছে।দেখে-ই বোঝা যাচ্ছে।তিতলি’র মন টা ভিষন খারাপ।একটু পরে কোথায় থেকে যেনো,আকাশ তিতলি’র রুমে এসে অধরা’কে জড়িয়ে ধরলো।

–আপাই আমি চলে এসেছি তোর কাছে।আকাশ-কে দেখে অধরা অবাক হয়ে গেলো।অনেক দিন কথা বলা হয় না।নানিদে’র সাথে।অধরা খুব লজ্জিত বোধ করলো।তার ননদের বিয়ে।আর সে,তার নিজের বাসার লোকজনদে’র দাওয়াত দিতে ভুলে গেলো।মানসিক চাপ এমন একটা বাজে জিনিস।যেটা মাথায় আসলে কোনো কিছু খেয়াল থাকে না।

–কি রে আকাশ তোরা কখন এলি।

–আমরা একটু আগে এসেছি।গ্রামের বাসায় গিয়েছিলাম।আমাদের বাসা বন্ধক রাখা হয়েছিলো না আপাই।নানি আমাদের বাসা ছাড়িয়ে দিয়েছে।

–নানি আর মা কোথায়।

–বাহিরে তোর শশুরের সাথে গল্প করছে।আকাশে’র কথা শুনে অধরা বাহিরে চলে গেলো।আকাশ’কে দেখে,তিতলি একটু চমকে উঠলো।আকাশ তিতলি’র কাছে গিয়ে বলল।

–তুমি ভয় পেও না।আমি কাউকে কিছু বলবো না।আপাই সবকিছু জানে।তবু্ও তোমাকে কারো সামনে ছোট হতে দেয় নাই।দেখছো আমার আপাই কতটা ভালো।আকাশে’র কথা শুনে তিতলি বেশ অবাক হলো।কিন্তু প্রকাশ করলো না।হালকা হেঁসে আকাশের মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো।

–নানি তুমি রাগ করেছো।আমি আসলে..

–হয়েছে থাক আর বলতে হবে না।বিয়ে হবার পরে এভাবে সবাই পর করে দেয়।

–তুমি এভাবে কথা বলছো কেনো।

–আমি মজা করলাম।আমি সবকিছু জানি।চৌধুরী সাহেব আমাদের সবকিছু জানিয়েছেন।উনি তো আমাদের দশদিন আগে থেকে,বলে রেখেছেন।পাঁচ দিন হলো গ্রামে গিয়ে ছিলাম।জমির বিষয়’টা ঠিক করলাম।

–আচ্ছা নানি ভালো করেছো।তোমার সাথে আমার দরকারি কথা আছে।

–আমি জানি তুই কি বলতে চাস।সব কথা পরে হবে।আগে আমাকে বউয়ের ঘরে নিয়ে চল।দেখি কেমন সাজালো বউকে।

অধরা তার নানি ও মাকে নিয়ে তিতলি’র রুমে গেলো।খুব সুন্দর করে সাজানো হয়েছে তিতলি-কে।রুবিনা বেগম অনেক দোয়া করে দিলেন তিতলি-কে।হাতের বালা,আর একটা গহনার বাক্স তিতলি’র হাতে ধড়িয়ে দিয়ে চলে গেলো।

সন্ধ্যার দিকে বর আসলো।খুব সুন্দর ভাবে তিতলির বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পূর্ণ হলো।যাওয়ার সময় তিতলি প্রচুর কেঁদেছে।কেনো জানি সবাইকে ছেড়ে যেতে ইচ্ছে করছিলো না।দুই ভাইকে জড়িয়ে ধরে কান্না করছে।তিতলির কান্না দেখে দুই ভাই’ও কান্না করে দিয়েছিলো।তিতলি’র আম্মু এখনো কান্না করছে।আশরাফুল চৌধুরীর মন খারাপ।তিতির মাকে বোঝাচ্ছে।তিতলি যাওয়া’র পরে অর্ধেক বাসা ফাঁকা হয়ে গেছে।দূরের মেহমান গুলো শুধু আছে।সকালে তারা’ও বাসার উদ্দেশ্য রওনা দিবে।অধরা তার নানিদে’র বিদায় করে দিয়ে নিজের রুমে আসলো।পুরো রুম ফাঁকা।ঘড়ির কাটা বারোটা ছুঁই ছুঁই।অধরা নানিদের এত করে নিষেধ করলো।রাত করে যাওয়া দরকার নেই।মাঝরাতে চলে গেলো।অধরা একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে ওয়াশরুম চলে গেলো।রুমে এসে,এলেমেলো রুম টা সুন্দর করে গুছিয়ে ফেললো।

কাঁধে কারো হাতের স্পর্শ পেতে-ই পেছনে ঘুরে তাকালো আহান।অধরা’র দিকে তাকিয়ে আবার অন্য দিকে ঘুরে রইলো।

–ঘুমাবেন না।

–আমার ঘুম পেলে আমি ঘুমাবো।তুমি যাও ঘুমিয়ে পড়ো।

–আচ্ছা আপনার কি হয়েছে বলেন তো।দু’দিন ধরে দেখছি আপনার মন খারাপ।আমাকে বলতে পারেন।মন’টা হালকা লাগবে।আপুর জন্য মন খারাপ লাগছে।

–অধরা আমার কেনো জানি,মনে হচ্ছে বিয়ে’টা ঠিক হলো না।আমার বোন সুখী হবে তো।কোনো কষ্ট এসে আমার বোনটা’কে ছারখার করে দিয়ে যাবে না তো।

–আপনি শুধু শুধু চিন্তা করছেন।আপুর কিছু হবে না।আপু অনেক সুখে থাকবে।বীর ছেলেটা অনেক ভালো।

–বীর ছেলেটা’কে আমার একদম ভালো লাগে না।তুমি কি করে জানলে বীর ছেলেটা ভালো।

–ব্যবহার দেখে,ছেলেটা’র ব্যবহার অনেক ভালো।আর যার ব্যবহার ভালো।তার মন’ও অনেক ভালো।আশা করছি।আপুকে অনেক ভালো লাগবে।

–আমার সামনে অন্য ছেলেদের কথা বলবে না।

–কেনো”?

আহান কোনো কথা না বলে,নিজের রুমে চলে গেলো।অধরা হালকা হাসলো।আহানের মন খারাপ।যেকোনো মূল্য এখন আহানের মন ভালো করতে হবে।অধরা আহানের পিছু পিছু রুমে চলে গেলো।আহান নিজের পড়নে থাকা সাদা রংয়ের পাঞ্জাবি’টা খুলে,কালো রংয়ের ট্রি শার্ট পরে নিলো।অধরা গিয়ে আহান’কে পেছনে থেকে জড়িয়ে বলল।

–আমি আপনাকে কিছু বলছিলাম।উত্তর না দিয়ে চলে আসলেন কেনো।আপনি জানেন আমি অধরা আমার সাথে কথা বলার জন্য কত ছেলে পাগল।

–তাহলে তাঁদের কাছে যাও।আমার কাছে পড়ে আছো কেনো।তোমার জন্য চার পা আলা দেবরা’ও পাগল।

–তাদের মধ্যে আপনি একজন।বলে-ই অধরা আহান’কে ছেড়ে দিয়ে বাহিরের দিকে যাবে।তখনি আহানের হাত ধরে বলল।

–কোথা’ও যেও না।আমার কাছেই থাকো।তোমাকে ছাড়া কিছু ভালো লাগে না।বুকের ভেতরে হাজার টা কষ্ট নিয়ে’ও।তোমার জন্য আমার বাঁচতে ইচ্ছে করে।আমি তোমার জন্য বহুবছর বাঁচতে চাই অধরা।আমি যদি মরে যাই তাহলে তুমি আরেক’টা বিয়ে করবে।

কথাটি শোনা মাত্রই অধরার কলিজা কেঁপে উঠলো।অধরা সাথে সাথে আহানে’র মুখ চেপে ধরলো।

–ছিঃ একদম বাজে কথা বলবেন না।এসব কথা বললে,আমি কিন্তু আপনাকে রেখে অনেক দূর চলে যাব।আপনার আগে যেনো আমার মৃত্যু হয়।আমি যে,আপনার মৃত্যু সয্য করতে পারবো না।প্লিজ আমি বেঁচে থাকতে,আর কোনোদিন এমন কথা বলবেন না।আমি জানি প্রতিটা মানুষকে-ই মৃত্যুর সাধ গ্রহণ করতে হবে।কে”? কবে কখন মৃত্যু বরন করবে।তা আমরা কেউ জানিনা।তাই আপনি এসব কথা বলবেন না।আমার অনেক খারাপ লাগে।আমি’ও যদি একই কথা বলি।আমি মরে গেলে আপনি-ও কি আরেকটা বিয়ে করবেন।ভুলে যাবেন আমাকে।আমার কথা কি আপনার আদৌও মনে থাকবে।একবারো কি মনে হবে,অধরা নামক কোনো অধ্যায় আপনার জীবনে ছিলো।আমি জানি আপনি আমাকে ভুলে যাবেন।নতুন বউ নিয়ে..আর কিছু বলতে পারলো না অধরা।আহান অধরা’কে নিজের বুকে টেনে নিলো।অধরা আহান’কে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দিলো।

–কান্না করছো কেনো।আমি তো মজা করছি।একদম বাজে কথা বলবে না।আমি এত সহজে তোমাকে রেখে কোথা’ও যাচ্ছি না।তোমার সাথে এখনো কত ঝগড়া,মারামারি,রাগ,অভিমান করা বাকি আছে বলতো।সবাই যদি জানে,ঝগড়ুটে রাণী অধরা।সামান্য একটা কথা শুনে কান্না করছে।তাহলে সবাই হাসাহাসি করবে।

–এটা আপনার সামান্য কথা মনে হচ্ছে।আমি’ও দুই দিন পরে মরে যাব।তখন দেখবো কেমন লাগে।

–আবার বাজে কথা বলে।

–আপনি কেনো বললেন,আপনি আমাকে রেখে চলে যাবেন।

–সবাই একদিন চলে যাবে।আমি কি সারাজীবন থাকবো নাকি।

–যেদিন যাবেন।সবাই দেখতে পাবে।তাহলে আপনি আগ বাড়িয়ে গেলো বললেন।আমরা মেয়েরা ছোট খাটো বিষয়ে কান্না করি ঠিকি।কিন্তু জীবনের সবথেকে কঠিন সময় গুলো হেঁসে খেলে পার করে দেই।

–আচ্ছা আমার ভুল হয়েছে।আমি আর কখনো এমন কথা বলবো না।এবার কান্না থামা’ও।এবার রেগে যাব কিন্তু।তুমি কি বাচ্চা নাকি।এভাবে কান্না করছো।আহানের কথা শুনে,অধরা কোনো কথা না বলে বিছানায় শুইয়ে পড়ল।আহান ফ্রেশ হতে চলে গেলো।অধরা কান্না করতে করতে ঘুমিয়ে গেলো।আহান এসে অধরা’কে নিজের বুকে টেনে নিলো।তারপরে অধরা’কে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে গেলো।

পরের দিন সকাল বেলা সবাই খাওয়া করে নিজেদের বাসার উদ্দেশ্য রওনা দিলো।আশেপাশের আত্মীয়-স্বজনরা আছে।সবাই মিলে তিতলি’কে নিয়ে আসতে যাবে।পুরো বাসা মোটামুটি ফাঁকা হয়ে গেছে।সবাই রেডি হয়ে নিচে আসলো।অধরা আহানের দেওয়া কালো রংয়ের শাড়ি’টা পড়েছে।খুব সুন্দর করে সেজেছে অধরা।আশা ছিলো আজ অনন্ত আহান তার প্রসংশা করবে।অধরা’র ভাবনার মাঝে,এক বালতি পানি ঢেলে দিয়ে।আহান রেগে বলল।

–এত সেজেছে কেনো”?তুমি কি বিয়ে করতে যাচ্ছো।কোনোদিন আমার জন্য সেজে রুমে বসে থাকো নাই।বাহিরে যাওয়া’র জন্য ঠিকি সেজেছো।বোরকা পড়তে পারো নাই।অধরা অসহায় দৃষ্টিতে আহানের দিকে তাকালো।আহানের জন্যই তো সে,সেজেছিল।আহানর তার প্রসংশা দূর।এতগুলো কথা শুনিয়ে দিলো।অধরা’র ভাবনার মাঝে আহান আবার বলে উঠলো।

–ওদের বাসায় গিয়ে,কারো সাথে কথা বলবে না।সব সময় আমার সাথে থাকবে।ছেলেদের সাথে কথা বললে,তোমার অবস্থা আমি কি করো তুমি নিজেও জানো না।বলে-ই আধরা’র হাত ধরে গাড়ির কাছে নিয়ে আসলো।সবাই গাড়িতে উঠে পড়লে,আহান অধরা’কে নিজের পাশে বসিয়ে নিলো।

–বল ছিলাম কি।

–কোনো কথা বলা লাগবে না।তুমি কথা বললেই সমস্যা।

–এমন করছেন কেনো।আগে আমার কথা টা তো শুনবেন।

–মানুষজনের মধ্যে আপনি আগগে করে কথা বলবে না তো।লোকে কি বলবে।আজ থেকে তুমি করে বলবে।

–আপনি পারবো না।আমার আমার শরম করে।

–ঝগড়া করার সময় তো শরম করে না।

–না করে না।

–আবার বেয়াদবের মতো মুখে মুখে কথা বলো।

অধরা চুপ হয়ে গেলো।সাড়া রাস্তা চুপচাপ এসেছে।একটা কথা’ও বলে নাই।সবাই তিতলি’র শশুর বাড়ি এসে পৌঁছে গেলো।সবাই খুব যত্ন করে তাদের ভেতরে নিয়ে গেলো।বাবা-মাকে দেখতে পেয়ে তিতলি উঠে আসার চেষ্টা করলো।কিন্তু পারলো না।একদল মহিলা তিতলিকে ঘিরে বসে আছে।অধরা,তিতির,আশা তিনজন একসাথে তিতলির কাছে গেলো।সবার সাথে খুব ভালো ভাবেই কথা বলেছে তিতলি।আহান আসলো আহান’কে জড়িয়ে ধরলো তিতলি।

–কেমন আছিস ভাই।

–আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।তুমি ভালো আছো তো আপু।

–আমি’ও অনেক ভালো আছি ভাই।এই বাড়ির সবাই অনেক ভালো।

–আর ভাইয়া।

–তোর ভাই’ও অনেক ভালো।

তিতলি’র কথা শুনে স্বস্তির নিঃশ্বাস ছাড়লো আহান।তারপরে অধরা’র পাশে গিয়ে দাঁড়াল।আহান কে দেখে একটু দূরে সরে দাঁড়াল আহান।আহান রাগী দৃষ্টিতে তাকালো।আবার আহানের পাশে এসে দাঁড়ালো।

–মহারাণীর বুঝি রাগ হয়েছে।

অধরা কোনো কথা বলল না।

–আসো কয়টা ছবি তুলি।তোমার সাথে একটা’ও ছবি তোলা হয় নাই।

–লাগবে না।

–লাগবে না।তাহলে মুখ ফুলিয়ে আছো কেনো।কালকে আমি দেখেছিলাম।দুইজন স্বামী-স্ত্রী ছবি তুলছে।তুমি ওদের দিকে তাকিয়ে ছিলে।তোমা’ও ইচ্ছে করছিলো তাই না।

–কচু আমার বয়ে গেছে।আপনার সাথে ছবি তুলতে।

–তাহলে সত্যি করে বলো তো।তুমি গাড়িতে কি বলতে চেয়েছিলে।

–কেনো ছবি তোলার কথা।

–তাহলে এখন অস্বীকার করলে কেনো।

–কারন এখন আমার ছবি তুলতে ইচ্ছে করছে না।আহান জোর করে অধরা’র কয়টা ছবি তুলে সবার সাথে কুশল বিনিময় করতে চলে গেলো।অধরা’কে একা দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে,একটা ছেলে হুট করে এসে।অধরা’র হাত ধরে বলল।

–হাই আমি আবির তুমি”?

হঠাৎ করে কেউ হাত ধরাতে চমকে উঠলো অধরা।অপরিচিত ছেলে’কে দেখে এক ঝটকায় নিজের হাত সরিয়ে নিলো।

–এটা কেমন ধরনের অসভ্যতা।কারো অনুমতি না নিয়ে।বেয়াদবের মতো হাত ধরেন কেনো।কানের নিচে থাপ্পড় বসিয়ে দিলে,বেয়াদবি করার সাধ মিটে যাবে।

–তুমি রেগে যাচ্ছো কেনো”?আমি তোমার সাথে পরিচিত হতে আসছি।সরি প্লিজ তুমি কিছু মনে করো না।আমি আসলে আমেরিকায় থাকি।আর আমেরিকায় এটা সামান্য বিষয়।এখন যে,আমি বাংলাদেশ আছি।সেটা আমার খেয়ালই নেই।আমাকে মাফ করে দাও তুমি।অধরা বিরক্ত হয়ে সেখানে থেকে সরে গেলো।

–আমার বউয়ের হাত ধরা।দাঁড়া তোর দেখাচ্ছি মজা।বলে-ই রাঁধুনিদের কাছে গেলো।রাঁধুনিদের বলল গরম পানি করে দিতে।গরম পানি করে নিয়ে এসে।ছেলেটি’কে খুঁজতে লাগলো।অনেক খোঁজার পরে পেয়ে গেলো।সবাইকে অবাক করে দিয়ে ছেলেটির হাতে গরম পানি ঢেলে দিলো আহান।সাথে সাথে ছেলেটি চিৎকার দিয়ে উঠলো।সেদিকে পাত্তা না দিয়ে।গটগট করে চলে গেলো।যাওয়ার আগে বলে গেলো।

–এর পরে থেকে সাবধানে মেয়েদের গায়ে হাত দিবি।অধরা আহানে’র যাওয়ার প্রাণে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।আশেপাশের মানুষ জন কানাকানি শুরু করে দিয়েছে।আশরাফুল চৌধুরী ছেলের কাজে বেশ বিরক্ত।বীরের বাবা-মা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে নিলো।অধরা আহানের সাথে যেতে চাইলে। আশরাফুল চৌধুরী থামিয়ে দিলেন।বললেন বাসায় গিয়ে সবটা বুঝে নিবেন। সন্ধ্যা বেলায় বীর,তিতলি আর রুহিকে চৌধুরী বাড়িতে নিয়ে আসা হলো।রুহির বাবা-মা প্রচুর বকেছিলো না আসার জন্য।তবুও নির্লজ্জের মতো চলে এসেছে রুহি।অধরা তাড়াতাড়ি করে রুমে আসলো।পুরো রুম অন্ধকার হয়ে আছে।অধরা রুমে এসে আলো জ্বালিয়ে দিলো।আহান কপালে হাত দিয়ে বিছানায় শুয়ে আছে।রুমে আলো জ্বলতেই চোখ মেলে তাকালো।অসম্ভব ভাবে আহানের চোখ লাল হয়ে আছে।অধরা’কে দেখে-ই উঠে বসলো।তারপরে টানতে টানতে ওয়াশরুমে নিয়ে গেলো।সাবান দিয়ে খুব জোরে জোরে ডলে অধরা’র হাত ধুইয়ে দিচ্ছে।ইতিমধ্যে অধরা’র লাল হয়ে গেছে।তবু’ও অধরা কিছু বলছে।মানুষটাকে এতটা রেগে যেতে আগে কখনো দেখে নাই অধরা।
#তুমি_থেকে_যাও_আমি_রেখে_দিব
#পর্ব_৩২
#লেখিকা_Fabiha_bushra_nimu

–একটু আস্তে ডলুন।এত জোরে হাত ডলতে শুরু করছেন।একটু পরে আমার হাত খুলে পড়ে যাবে।তখন সবাই বলবে,আহানের বউয়ের হাত নেই।

–বললে বলবে।তুমি ভালো হও।আর খারাপ হও।তুমি আমার-ই থাকবে।তোমাকে সারাজীবন আমি খাওয়াবো,পড়াবো।তাই তুমি আমার কথার গুরুত্ব দিবে।সবার কথার না।মনে থাকে যেন।

–কি হয়েছে এত রেগে আছেন কেনো।

–তুমি আবার বলছো কি হয়েছে।ঐ ছেলের সাহস কি করে হয়।তোমার হাত ধরার।তুমিই-বা কিছু বললে না কেনো”?

–তাই বলে আপনি ওনার হাত পুরিয়ে দিবেন।তাছাড়া উনি তো মাফ চেয়েছেন।

–একদম জানে মেরে ফেলবো।তুমি শুধু একান্ত আমার।তোমার ওপরে অন্য কারো নজর পরুক তা আমি চাই না।এখন থেকে বোরখা পরে বাসা থেকে বের হবে।মনে থাকে জেনো,না হলে আমার থেকে খারাপ কেউ হবে না।

–একটা ছেলেকে আমি চিনি না।হুট করে এসে আমার হাত ধরেছে।তাই আপনি তার হাত পুরিয়ে দিয়েছেন।একটা মেয়ে আমার চোখের সামনে আপনাকে জড়িয়ে ধরে ছিলো।এখন আপনাকে কি করা উচিৎ।

–সেটা তোমার ব্যর্থতা।তোমার স্বামীকে অন্য একটা মেয়ে জড়িয়ে ধরেছে।সেটা দেখে’ও তুমি মেয়েটি’কে কিছু বলো নাই।সেজন্য আমার বউয়ের হাত কেউ ধরবে।আমি’ও ভদ্র ছেলের মতো সেটা চুপচাপ সয্য করবো।এটা যদি ভেবে থাকো তাহলে,তোমার ধারনা ভুল।তাছাড়া আমি তো কোনো ভুল করি নাই।কোনো মেয়ে’র কাছে যাই নাই।মেয়েটা এক কথাই নির্লজ্জ আমি কিছু বুঝে উঠার আগে জড়িয়ে ধরেছিলো।আমি তো ধরি নাই।তোমার উচিৎ ছিলো মেয়েটি’কে থাপ্পড় মেরে,চুলের মুঠি ধরে।মেয়েটি’কে আমার অফিস থেকে বের করে দেওয়া।আমি তোমাকে বললাম।কারো রুমে আসতে হলে,অনুমতি নিতে হয়।তখন তোমার উচিৎ ছিলো।আমাকে একটা থাপ্পড় দিয়ে বলা।ঘরে বউ রেখে তুই এখানে অনেক মেয়ের সাথে নষ্টামি করছিস।আবার আমাকে অনুমতি নেওয়া শেখাচ্ছিস।একটা দজ্জাল বউ বউ ভাব আসতো তাই না বলো।তোমরা সব বউরা যদি এমন হতে,তাহলে স্বামীরা অন্য মেয়ের কাছে যাওয়ার সুযোগ-ই পেতো না।আর তোমার কথা বাদ-ই দিলাম তুমি তো একদম নিরামিষ।তুমি তো ভালোবাসতে-ই জানো না।একদমে কথা গুলো বলে থামলো আহান।খুব শান্ত ভাবে-ই কথা গুলো বলল।অধরা খুব মনযোগ সহকারে আহানের কথা গুলো শুনছিলো।আসলে-ই সে,একটা নিরামিষ।আহান নিজের অধিকার ঠিক বুঝে নেয়।অধরা কেনো তাহলে নিজের অধিকার ফলাতে পারে না।আহান আজ যেমন ছেলেটি’কে শাস্তি দিলো।অধরা কেনো সেদিন রুহি’কে শাস্তি দিলো না।কেনো আহানের সাথে ঝগড়া করলো না।ভাবতে-ই নিজরে প্রতি নিজের-ই রাগ হলো অধরার।অধরা পলকহীন ভাবে আহানের দিকে তাকিয়ে আছে।

–এভাবে দেখার কিছু নেই।আমি তোমার-ই জামাই।সারাজীবন দেখতে পারবে।এখন-ই যদি সব দেখে ফেলো।পরে কি দেখবে।একটু দেখে তুলে রাখো পরে দেখবে।আহানের কথায় অধরা লজ্জা পেয়ে মাথা নিচু করে নিলো।আহান আবার বলতে শুরু করলো।

–জানো অধরা আমি খুব সহজে রাগী না।কিন্তু একবার যদি রেগে যাই পরিণাম খুব ভয়াবহ হয়ে যায় জানো।তাই তোমাকে বলছি আমাকে কখনো রাগি’ও না।ফ্রেশ হয়ে বাহিরে আসো।আমি তোমার জন্য অপেক্ষা করছি।বলে-ই আহান চলে গেলো।অধরা ফ্রেশ হয়ে নিলো।ফ্রেশ হতে গিয়ে অধরা হাতে ব্যাথা অনুভব করলো।খুব শক্তভাবে-ই আহান তার হাত ধুইয়ে দিয়েছে।মনে থাকলে কোনো ছেলে তো দূর।ছেলের ছায়ার ওপর দিয়ে’ও হাটবো না।মনে মনে ঠিক করে নিলো অধরা।ফ্রেশ হয়ে বাহিরে আসলো অধরা।তারপরে কালো রংয়ের সালোয়ার কামিজ নিয়ে আবার ওয়াশরুমে গেলো।চেঞ্জ করে বাহিরে আসলো।আহানে’র থেকে সাহায্য নিয়ে,শাড়ী’টা গুছিয়ে আলমারিতে রেখে দিলো।

রাতে সবাই খেতে বসেছে।খাওয়ার সময় কথা বলতে নেই।তাই সবাই চুপচাপ খাচ্ছে।রুহি খাওয়ার পাশাপাশি আঁড়চোখে আহান’কে দেখে যাচ্ছে।তা অধরা’র চোখ এড়ালো না।অধরা চুপচাপ খেয়ে উঠে চলে গেলো।যাওয়ার আগে আহান’কে বলে গেলো ছাঁদে আসতে,কথা আছে।আহান খেয়ে ছাঁদে চলে গেলো।অধরা ছাঁদের রেলিং ধরে দাঁড়িয়ে আছে।আহান গিয়ে অধরাকে পেছনে থেকে জড়িয়ে ধরলো।হঠাৎ করে কারো স্পর্শ পাওয়ায় অধরা’র পুরো শরীর কেঁপে উঠলো।আহান অধরা’র কাঁধে থুতনি রেখে বলল।

–এত রাতে,ফাঁকা ছাঁদে একা একটা ছেলেকে ডেকেছো।তোমার ভয় লাগছে না।অধরা ভ্রু কুঁচকে আহানে’র দিকে তাকালো।

–আমি মনে হয় পরপুরুষ-কে ডেকেছি।সেজন্য ভয়ে আমার মরে যেতে হবে।আপনার ভালো না লাগলে চলে যান।ধরে রাখি নাই।

–তাহলে ডাকলে কেনো,জানো না এভাবে কখনো কোনো ছেলে’কে একা ডাকতে নেই।ডেকেছো তুমি,এসেছি তোমার ইচ্ছায়।কিন্তু যাব আমার ইচ্ছায়।রাগ তো আমার করা উচিৎ।সেখানে তুমি কেনো রাগ দেখাচ্ছো।

–আপনি আপনার এক্সকে এই বাড়ি থেকে তাড়াতাড়ি বিদায় করুন।ওকে আমার সয্য হয় না।কোনদিন না জানি ওকে আমি খুন করে ফেলবো।

–এটা করলে আমার খুব উপকার হয়।আর তুমি তো এসব কাজে এক্সপার্ট।তোমার কাছে খুন করা কোনো বিষয় না।

–মানে”?

–মানে তোমার যে,রাগ তুমি রেগে গেলে,আমাকে’ও খুন করে ফেলতে পারো।তাহলে একটা মেয়ে’কে শেষ করতে পারবে না।মেয়েটা আবার যে,সে মেয়ে না।খালি অধরা’র জামাইয়ের দিকে নজর দেয়।অধরা’র উচিৎ মেয়েটি’কে শাস্তি দেওয়া।

–কার জন্য দিব।অধরা’র জামাই তার এক্সকে ভালোবাসে।অধরা’কে তো ভালোবাসে না।তাই অধরা কিছু বলতে পারে না।হাজার হলে-ও একটা মাত্র জামাই অধরা’র।

–রাগের বেলায় ষোল আনার এক আনা’ও কম দেখায় না।অধরা কি বুঝে না।তার জামাই তাকে রাগানোর জন্য এসব বলে।ঘরে সুন্দরী বউ রেখে অন্য মেয়ে’কে ভালোবাসতে অধরা’র জামাইয়ের বইয়ে-ই গেছে।

–তারমানে আপনি রুহি আপুকে ভালোবাসেন না।

–আগে পড়ে কখনোই ভালোবাসি না।রুহির সাথে আমার রিলেশন ছিলো ঠিকি।কিন্তু রুহি আমার কাছে ফ্রেন্ডের মতো ছিলো।ওকে কখনো ছুঁইয়ে দেখতে ইচ্ছে করেনি।কখনো দেখার জন্য মনটা অস্থির হয়ে উঠেনি।কথা বলতে না পারলে,নিজেকে পাগল মনে হয় নাই।সে কাছে না থাকলে,আমার দম বন্ধ হয়ে আসে নাই।কিন্তু এমন একজন আছে,যার জন্য আমার সবকিছু হয়।অধরা এবার আগ্রহ নিয়ে আহানে’র দিকে ঘুরে দাঁড়ালো।অস্থির হয়ে,আহান’কে বলল কে সে।

–তোমাকে বলবো কেনো”?

–তাহলে কাকে বলবেন।

–যে,আমাকে ভালোবাসে,আমি যাকে ভালোবাসি তাকে বলবো।তুমি তো আমাকে ভালোবাসো না।

–তারমানে আপনি অন্য কাউকে ভালোবাসেন।আমাকে আগে বলে দিলে কি হতো।

–আগে বললে কি হতো।আহানের প্রশ্ন শুনে অধরা অস্থির গলায় জবাব দিল।

–তাহলে আপনাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতাম না।নিজের সবটুকু দিয়ে ভালো…

আহান ব্যাকুল হয়ে অধরা’র দিকে তাকিয়ে আছে।শুধুমাত্র অধরা’র মুখ থেকে ভালোবাসি কথাটা শোনার জন্য।অধরা থেমে গেলো দেখে আহান অধরা’কে নিজের কাছে টেনে নিয়ে আসলো।অধরা’র কপালে নিজের কপলা ঠেকিয়ে আস্তে করে বলল।

–আমাকে কি অধরা বলো।

আহান অধরা’র এতটা কাছে চলে আসায়।অধরা নিজরে দু’টি আবেশে বন্ধ করে নিলো।ঘন ঘন নিশ্বাস নিচ্ছে অধরা।সময়ের সাথে নিশ্বাসের গতিবেগ কেমন জানি ভারি হয়ে আসছে।কথা বলার শক্তি হারিয়ে ফেলছে।ইচ্ছে করছে।এই জোছনা রাতে আহানে’র মাঝে হারিয়ে যেতে।কিন্তু হঠাৎ করে-ই আহানে’র থেকে দূরে সরে আসলো অধরা।

–তিতলি আজকে’র চাঁদ টা অনেক সুন্দর তাই না বলো।চলো না ছাঁদে যাই।দু’জন মিলে চাঁদের সুন্দর্য উপভোগ করবো।

–তোমার কি হয়েছে বলো তো।এত ভালো ব্যবহার করছো যে,কার রাতে আমার সাথে যে,জানোয়ারের মতো ব্যবহার করছো।কোনো স্বামীর ব্যবহার এমন হতে পারে বলে আমার মনে হয় না।তোমার মতো স্বামী যেনো আল্লাহ কাউকে না দেয়।আহান আর অধরা ছাঁদে গেছে জন্য তুৃমি যাবে।সেটা আমি বুঝি না মনে করছো।

তিতলি’র কথা শুনে,বীর শক্ত করে তিতলির চুলের মুঠি ধরে বলল।

–তোর খুব কথা হয়েছে তাই না।আমার মুখে মুখে কথা বলছিস।আমাদের কথা যদি একটা’ও বাহিরে যায়।তাহলে তোর অবস্থা আমি কি করবো।তুই নিজের জানিস না।চোখের পানি মুছে ফেল,হাসি মুখে রুম থেকে বের হবি।তবু’ও তিতলি থামলো না।ফুপিয়ে কান্না করে-ই যাচ্ছে।তা দেখে বীর রেগে জোরে ধমক দিলো।তিতলি ভয়ে চুপসে গেলো।কান্না থামিয়ে দিলো।

–দুই মিনিট সময় দিলাম।ওয়াশরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে এসো।আমি তোমার জন্য অপেক্ষা করছি।তিতলি দৌড়ে ওয়াশরুমে চলে গেলো।ওয়াশরুমে গিয়ে হাউমাউ করে কান্না করে দিলো।তারপরে চোখ মুখে পানি দিয়ে,ওয়াশরুম থেকে বেড়িয়ে আসলো।মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে তিতলি।বীর তিতলি’র কাছে এসে,তিতলির হাত ধরে বাহিরে নিয়ে গেলো।

ড্রয়িং রুমে তিতির আর আশা কাজ করছিলো।ওদের একসাথে দেখে তিতর বলল।

–কিছু লাগবে তিতলি।

–না আপু কিছু লাগবে না।বীর ছাঁদে যাবে।তাই ওকে ছাঁদে নিয়ে যাচ্ছি।

–আচ্ছা নিয়ে যা,ছাঁদে আহান আর অধরা’ও আছে।

–ভাইয়া আমি’ও যাব তোমাদের সাথে।বলল রুহি।

–আমরা’ও একটু পরে যাব রুহি।তোমার ভাইয়া।আর আমার বড় ভাই এখনি চলে আসবে।ওদের খাওয়া হলে,আমরা সবাই মিলে ছাঁদে গিয়ে আড্ডা দিব।এখন ওরা যাচ্ছে।তুমি ওদের মধ্যে গিয়ে কি করবে।তুমি আমাদের সাথে থাকো।ওরা যাক।বলল তিতির।তিতিরে’র কথা শুনে রুহি মলিন হাসলো।তারপরে বলল আচ্ছা।বীর আর তিতলি ছাঁদের দিকে এগোতে লাগলো।

অধরা ছাঁদের রেলিং ধরে মাথা নিচু করে দাঁড়ালো।আহান অধরা’র হাতের ওপরে হাত রেখে বলল।

–আমাকে কিন্তু বললে না আমাকে কি”?আর আমাকে নিয়ে কি বা স্বপ্ন দেখছো তুমি।

–আপনি সত্যি অন্য কাউকে ভালোবাসেন।কথা গুলো বলতে গিয়ে অধরা’র গলা ধরে আসছিলো।কেনো জানি ভেতরে থেকে কথা আসছিলো না।আহান অন্য কাউকে ভালোবাসে,কথাটা শোনার পরে কেনো জানি কান্না করতে ইচ্ছে করছে অধরা’র।আহান যদি-ও কথাগুলো মজা করে-ও বলে থাকে।তবু-ও মানতে কষ্ট হচ্ছে।না চাইতে-ও চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়লো।আহান অধরা’কে নিজের বুকে টেনে নিয়ে মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বলল।

–পাগলি মেয়ে কান্না করছো কেনো”?আমি তো মজা করছি।তুমি এত বোকা কেনো”?নিজের অধিকার টুকু বুঝে নিতে পারো না।আর কবে বুঝবে তুমি।তোমাকে বোঝাতে বোঝাতে ক্লান্ত হয়ে গেছি আমি।

–এমন মজা করবেন না।আমি সয্য করতে পারি না।

–কেনো পারো না।এটা-ই তো আমি জানতে চাই।

–কেনো আপনি জানেন না।বোঝেন না কেনো আমি এমন করি।তা-ও বোকার মতো প্রশ্ন করেন।আমি যদি বলি আমি অন্য ছেলে ভালোবাসি।তখন আপনার ফিলিংস কেমন হবে।

–তোমাকে কিছু বলবো না।সোজা ছেলেটা’কে রাস্তা থেকে সরিয়ে দিব।তখন তুমি আমার কাছে-ই আসতে বাধ্য হবে।আর সারাজীবন আমার সাথে-ই তোমাকে থাকতে হবে।তাই অন্য কাউকে ভালোবাসা তো দূরে থাকলো।আশেপাশে গিয়ে দেখবে।আমি তোমার কি অবস্থা করি।

–আপনি খুব চালাক এত সহজে আপনাকে হারাইতে পারবো না।কি সুন্দর ঠান্ডা মাথায় উত্তর দিচ্ছেন।আমি’ও তাহলে আপনার ভালোবাসার মানুষকে খুন করে ফেলবো।বলুন সেই মেয়ে কে”?কোথায় থাকে।একবার শেষ করে দিলে।আপনি আমাকে ছেড়ে কোথাও যেতে পারবে না।

–তুমি আমাকে কপি করলে অধরা।

–কথা কম বলুন।জোর করে হলে-ও আমি আপনার ভালোবাসা আদায় করে নিব।তবু্ও অন্য কারো হতে দিব না।

–জোর করে নিতে হবে না ‘বউরাণী’ তোমাকে ভালোবাসার জন্য আমি সব সময় প্রস্তুত।অধরা’র চুমু দিয়ে বলল।

মানুষটা ভিষণ চালাক।ভাব অধরা ভাব কিছু একটা করে।মানুষটাকে হারিয়ে দিতেই হবে।

–এত ভেবে লাভ নেই।আমাকে হারাতে হলে,তোমাকে আবার জন্ম নিতে হবে।অধরা কিছু বলতে হবে।তখনি তিতলি আর বীর আসে।পায়ের শব্দ পেয়ে দু’জন সরে দাঁড়ালো।বীর আর তিতলি ওদের পাশে এসে দাঁড়ালো।

চলবে…..

(

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here