#তুমি_যে_আমার🥀
#Writer_Nondini_Nila
#Part_28
পুলিশ চলে যাওয়ার এক ঘন্টা পর নিদ্রা ও অভ্রের বড় ভাই থানায় এসে হাজির হয়। নিদ্রা থানায় গিয়ে জানায় ও অভ্রকে ডির্ভোস দেবে না। নিদ্রার কথায় অভ্র কে ছেড়ে দেয়। নিদ্রার সিদ্ধান্ত শুনে অভ্র অবাক হয়ে যায়। হতভম্ব হয়ে ভাই এর সাথে আগে আগে বেরিয়ে আসে। নিদ্রা তখনও আদিল এর কেবিন এর সামনে দাঁড়িয়ে আছে। আদিল তা দেখে বললো,
‘ কিছু বলবেন মিসেস অভ্র?’
নিদ্রা মাথা নেড়ে না বলে পেছনে ঘুরে চলে যেতে ধরে তখন আদিল আবার ডেকে উঠে নিদ্রাকে চমকে দাঁড়িয়ে পরে নিদ্রা। আদিলের কেবিনে কেউ নাই ও আশেপাশে লক্ষ্য করে নিদ্রার সামনে এসে আমতা আমতা করে বলে,
‘ আপনার হাতটা একটু দেখি।’
নিদ্রা আদিলের কথা শুনে চমকে উঠে। চোখ বড় করে বলে, ‘ হোয়াট?’
আদিল নিজের হাত বাড়িয়ে নিদ্রার বাম হাত টেনে ধরে। নিদ্রা লাফিয়ে উঠে তা দেখে চেঁচিয়ে উঠে বলে,
‘ কি করছেন কি হাত ছাড়ুন? আমার হাত কেন ধরেছেন? কি অসভ্যতামি হচ্ছে ছাড়ুন হাত?
নিদ্রা রাগে গজগজ করছে। কতো বড় অসভ্য ছেলে হলে এভাবে একটা মেয়ের হাত ধরা যায়।
আদিল কোন রিয়াকশন না করে হাতের মুঠো খুলে কি যেন দেখলো তারপর ছেড়ে দিয়ে ছলছল চোখে তাকালো নিদ্রার মুখের দিকে।
নিদ্রা হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করছিলো। হাত আলগা হতেই ছাড়িয়ে অগ্নি দৃষ্টিতে তাকায় আদিল এর দিকে কিন্তু আদিলের ছলছল চোখ দেখে থমকে যায়। রাগ টা নিমিষেই দূর হয়ে যায়। ও আদিলের মলিন মুখের দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। ছেলেটার মতিগতি কিছুই বুঝছেনা নিদ্রা।
‘ কাঁদছেন কেন? ‘
নিদ্রার কথা শুনে আদিল চোখের জল মুছে নেয় ঝটপট। তারপর অন্য দিকে ঘুরে বলে,
‘ আপনার হাত ধরার জন্য সরি। আমি কোন খারাপ মতলবে আপনার হাত ধরি নি। আমাকে খারাপ ভাববেন না। আপনি এখন আসতে পারেন।’
নিদ্রা স্তব্ধ হয়ে কথা শুনছে।ওর মনে হয়না অফিসার আদিল ওকে মিথ্যা বলছে। কেন জানি কথাগুলো বিশ্বাস হলো খুব। ও আর হাত ধরা নিয়ে কিছু বলল না।
শুধু জিজ্ঞেস করল, ‘ কারণটা জানতে পারি কি?’
আদিল অন্যদিকে তাকিয়ে থেকে বলল, ‘ আপনার সাথে আমার খুব প্রিয় একজন মানুষের সাথে খুব মিল। যাকে আমি অনেক দিন আগে হারিয়ে ফেলেছি। আপনি দেখতে অবিকল তার মতো।তাই একটা জিনিস আপনার হাতে চেক করছিলাম। এভাবে আপনার হাত ধরা উচিত হয়নি। আমাকে ক্ষমা করবেন।’
নিদ্রা আর কিছু না বলে বেরিয়ে আসে থানা থেকে।বাইরে এসে দেখে অভ্র আর ওর ভাই দাঁড়িয়ে আছে। নিদ্রা তাদের বাসায় চলে যেতে বলে।
‘তুই যাবি না?’
‘যাব কিন্তু তার আগে আমার এক জায়গায় যেতে হবে।’
‘কোথায় যাবি?’
‘ওই বাসায়! চাচা চাচির সাথে একটা বোঝাপড়া করতে হবে।’
‘তুই একা যাবি! আমিও যাই তোর সাথে।’
‘ তার দরকার নাই। তুই বাসায় যা।’
‘ না আমিও তোর সাথে যাব।’
‘জেদ করছিস কেন?’
‘এই রাতে বেলা তোকে একা ছাড়বো না।’
‘বাসা কাছেই 10 মিনিট লাগবে যেতে!’
‘তারা খুব একটা সুবিধার না। তাদের কাছে তোকে একা ছাড়তে পারবো না আমি সরি।’
অজ্ঞতা অভ্র কে নিয়েই যেতে রাজি হয় নিদ্রা।
.
12 ঘণ্টার মধ্যে বর্ষার বাবা জ্ঞান ফিরে। তার অবস্থা খারাপ ছিল। কিন্তু আল্লার রহমতে সুস্থ হয়েছেন তিনি।
বর্ষা বাপির সাথে দেখা করে বাইরে বসে আছে। মায়ের কাছেই ঘুমিয়ে ছিলো। মাম্মা জেগে বাপির জন্য উতলা হয়ে গেল। সকালে তাকে আগে বাপির সাথে দেখা করাতে হলো। তারপর শান্ত হলো।
এবার টাকার বন্দোবস্ত করতে হবে। মাম্মাকে নিয়ে বাড়ি ফিরে এলো বর্ষা। বাপিকে কয়েক দিন হসপিটালে থাকতে হবে। এ টাকা পয়সা কোথা থেকে দেবো সেই চিন্তা করছেন মাম্মা।
তখন বর্ষার মাথায় এলো একটা কথা। ও তাড়াতাড়ি মাম্মার কাছে গিয়ে বলল,,,,
‘মাম্মা বাপি যে আমান নামে একটা অ্যাকাউন্ট করেছিলো মনে আছে তোমার। সেখানকার টাকা তো বাপি কখনো খরচ করবে না বলেছিলো। আমার হয় সে টাকা এখনও অক্ষত আছে। আমরা সেই টাকা দিয়ে তো কিছুদিন চলতে পারি বাপিকে হসপিটাল থেকে ছাড়াতে পারবো তাই না।’
বর্ষার কথা শুনে ওর মায়ের চোখ জ্বলজ্বল করে উঠলো। বর্ষার একাউন্ট থেকে টাকা উঠিয়ে হসপিটালে যাবতীয় খরচ যাবে।
পরদিনই বাসা ছাড়ার লোক এসেছিল। বাপির এই অবস্থা দেখে তারা কিছুই করেনি। এক মাস টাইম দিয়েছে। বর্ষা নিজের প্রিয় ছাদে দোলনায় বসে আছে এখন। নিজের মন মতো এই ছাদটা ও সুন্দর সাজিয়েছে। কত স্মৃতি জড়িয়ে আছে এই ছাদে, বাসার আনাচে কানাচে। সব মায়া ছিন্ন করে বাসা থেকে চলে যেতে হবে। সব তো ওর জন্য ই হচ্ছে। লোকটা আমাদের নিঃস্ব করে ছাড়লো। ওই লোকটার জন্য ওর মনের কোনে একটু একটু অনুভূতি জন্ম হয়েছে ছিঃ। দোলনা থেকে ওঠে ওর প্রিয় ফুল গুলো ছুঁয়ে ছুঁয়ে দেখছে। চোখ দিয়ে অঝোর ধারায় জল গড়িয়ে পড়ছে।
মাম্মা হাসপাতালে গেছে বাপির জন্য খাবার নিয়ে। বর্ষা রেলিং এ হাত রেখে দাঁড়িয়ে আছে উদাশ হয়ে। তখন ওর মনে হলো কেউ ওর দিকে তাকিয়ে আছে ও আশেপাশে তাকালো কিন্তু সন্দেহ জনক কাউকে না পেয়ে সরে গেলো সেখানে থেকে। আর দ্রুত পায়ে হেঁটে রুমে চলে এলো।
কোথাও গিয়ে এক দন্ড দাঁড়াতে পারেনা বর্ষা সবসময় মনে হয় কেউ না কেউ ওকে লক্ষ করছে। আর মাত্র কয়েকদিন এইবাসায় থাকতে পারবে ভাবতেই চোখে জলে ভড়ে উঠছে। বর্ষা বিছানার শুয়ে পরলো। আর ঘুমিয়ে পড়ল। কলিংবেলের শব্দে ঘুম থেকে উঠলো। মাম্মা দাঁড়িয়ে আছে।
ভেতরে এসে বললো,
‘ ১৭ তারিখ থেকে তোর এক্সাম শুনলাম। বলিসনি কেন আমাকে।’
‘ আমি পরিক্ষা দেবো না মাম্মা।’
‘ কি বলছিস?’
‘ ঠিকই বলছি। এই অবস্থায় আমার পড়া আর হবে না।’
‘ এক চর দিয়ে তোমার গাল লাল করে দেবো। এসব বললে। চুপচাপ পরতে যাও।
‘ কিন্তু মাম্মা .
‘ লেখাপড়া নিয়ে আমি কোন কথা শুনতে চাইনা।’
‘ মাম্মা এতো টাকা খরচ না করলে হয় না।”
‘ রুমে যাও।’
বর্ষা চুপচাপ রুমে চলে এলো। বেতন আর ফিশ বাবদ বাইশ হাজার টাকা লাগবে এখন এতোটা খরচ করতে হবে ভেবেই ও এসব নিয়ে ভাবতে চায়নি। কিন্তু মাম্মার কথার উপর কথাও বলতে পারবে না। তাই পরিক্ষা দিতেই হবে। রুমে এসে পরতে বসতে হলো।
.
আরিয়ান বাসায় এসেছে আজ। ওর জানা হয়ে গেছে নিদ্রা আর অভ্র কে ডির্ভোস দেবে না। সব একদিকে ফেলে ও চলে এসেছে রাগে ওর শরীর কাঁপছে। বাবা মায়ের থেকে এটাও জানতে পেরেছে নিদ্রা ওর বর কে নিয়ে এসে অপমান করে গেছে।
আরিয়ান রাগে গজগজ করতে করতে বেরিয়ে গেলো। আর সোজা নিদ্রার হাসপাতালে এলো।
নিদ্রা নিজের কেবিনে বসে ছিলো। ওর সামনে বসে আছে আদিল। দুজনে কিছু বলে হাসছে।
তখন আরিয়ান দরজা শব্দ করে খুলে ভেতরে প্রবেশ করে।
দরজার শব্দে তাকিয়ে নিদ্রা দাঁড়িয়ে পরে আর রাগান্বিত আরিয়ানের মুখ দেখে। কতোদিন পর আরিয়ান কে দেখলো খেয়াল নেয় কিন্তু অনেকদিন পর দেখছে। আদিল রেগে পেছনে তাকালো। কি সুন্দর আড্ডা দিচ্ছিলো এমন সময় কে এলো ওদের ডিস্টার্ব করতে। পেছনে তাকিয়ে চমকে ঘাড় ঘুরিয়ে ফেললো। আরিয়ান আদিলের মুখ দেখার আগেই। আরিয়ান কোন দিকে লক্ষ্য না করে নিদ্রার হাত ধরে টেনে বেরিয়ে এলো হসপিটাল থেকে। নিদ্রা হাত ছাড়ানোর জন্য যুদ্ধ করতে লাগলো। ” ভাইয়া আমার হাত ছাড়ুন! কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন এভাবে?’
আদিল টিস্যু দিয়ে মুখ ডেকে বসে ছিলো আরিয়ান চলে যেতেই উঠে দাঁড়ালো। ওর মস্তিষ্কে ঢুকছে না আরিয়ান নিদ্রাকে এভাবে টেনে নিয়ে গেলো কেন?
ও হাসপাতালের বাইরে এসে কাউকে কল করলো। সাথে সাথে একটা সাদা রঙের প্রাইভেটকার এসে থামলো আর একজন দৌড়ে এসে দরজা খুলল,
আদিল ভেতরে গিয়ে বসতেই গাড়ি চলতে লাগলো। আদিলের পাশ থেকে কেউ বলে উঠলো,
‘ ডাঃ নিদ্রার সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পেরেছি। মনে হয় এতেই তোর প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবি।’
#তুমি_যে_আমার🥀
#Writer_Nondini_Nila
#Part_29
‘ডাঃ নিদ্রার সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পেরেছি। মনে হয় এতেই তোর প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবি।’
‘ শাওন এসব পরে শুনবো। এখন সামনের ওই গাড়িটাকে ফলো কর। ফার্স্ট!!’
শাওন ড্রাইভ করতে করতেই তূর্য এর দিকে তাকালো। আর কপাল কুঁচকে বললো,,,
‘ ওই গাড়ি ফলো করবো কেন? কি হয়েছে বল তো!’
‘ এতো কথা বলিস না। যা বলছি কর। আরিয়ানের সাথে ডাঃ নিদ্রার কি সম্পর্ক জানতেই হবে।’
বলেই তূর্য গাড়ির দিকে তাকালো। শাওন আর প্রশ্ন করলো না কোন। লাল গাড়িটাকে ফলো করতে লাগলো। গাড়ি আধা ঘন্টার মতো চললো। তূর্য বিরক্ত করে বসে আছে। আর কতো যাবে এই গাড়ি রাগ লাগছে ওর। একটা দুতালা বাড়ির সামনে এসে গাড়ি থামলো।
তূর্য জানালা দিয়ে দেখলো আরিয়ান নিদ্রার হাত ধরে টেনে বাসার ভেতর নিয়ে যাচ্ছে। নিদ্রা হাত ছাড়ানোর নিয়ে যুদ্ধ করে যাচ্ছে। শাওন গাড়ি থামিয়ে বললো,
‘ এটাতো ডাঃ নিদ্রার বাসা।’
তূর্য শাওন এর দিকে তাকিয়ে বললো, ‘ হোয়াট? তাহলে আরিয়ান কি উনার ভাই?’
‘ হুম চাচাতো। ডাঃ নিদ্রার পালিত বাবা মা মারা গেছেন। এখন চাচা চাচি এই বাসা থাকে। আর নিদ্রা ভাড়া বাসায় থেকে জব করতো। বর্তমানে শশুর বাড়ি….
‘ শাট আপ। তোকে কি আমি এখন সম্পূর্ণ কাহিনী শুনাতে বলেছি। চুপ থাক এসব পরে শুনবো।’
‘ ওকে।’
তূর্য বাসাটা ভালো করে স্ক্যান করে বললো, ‘লেটস গো হেয়ার।’
‘এবার তো বল। এমন দৌড় পাড়ালি কেন?’
‘ আরিয়ান ডাঃ নিদ্রা কে জোর করে বাসায় নিয়ে এলো কেন?’
‘ আমি খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি। আরিয়ান ডাঃ নিদ্রা কে পছন্দ করে, বিয়ে করতে চায়।’
‘ ওহ্ এই ব্যাপার।’
তূর্য কে নিয়ে বাসায় চলে এলো। শাওন গাড়ি থেকে নেমে পরলো কিন্তু তূর্য নামেনি। উল্টা ড্রাইভিং সিটে বসে পরেছি। শাওন তা দেখে জানালার গ্লাসে ভাড়ি দিয়ে বলে,
‘ তুই আবার কোথায় যাচ্ছিস?’
‘ তুই বাসায় যা আমি আসছি।’
শাওন হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো।
.
আজকে বাপিকে বাসায় আনা হয়েছে। মাম্মা বাপির পাশে বসে আছে। আমি দরজার কাছে দাঁড়িয়ে চোখ ভর্তি জল নিয়ে তাকিয়ে আছি বাপির দিকে। এসব কিছু আমার জন্য হলো আমি বাপিকে নিঃশ্ব করে দিলাম। বর্ষার বাপি বর্ষাকে দরজার কাছে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ডেকে উঠে। বর্ষা ধীর পায়ে বিছানায় একপাশে বসে। নিজের কান্না থামাতে পারে না। হু হু করে কেঁদে ওঠে।
নিবিড় চৌধুরী মেয়ের মাথায় হাত দিচে থাকে।
বর্ষা মাথা নিচু করে বাপিকে জরিয়ে ধরে কাঁদে। এক থেকেই উঠে চলে আসে।
‘ মেয়েটা একদম ভেঙে পরেছে। মুখের দিকে তাকানো যায় না।’ বলে উঠে বর্ষার মা।
‘ একটা ব্যবস্থা করতে হবে।’
‘ কি করবে?’
নিবিড় চৌধুরী কিছু বলে না। বর্ষার মা ও আর কিছু জিজ্ঞেস করে না। নিচে যায়। কাজের লোকের সাথে রাতের খাবার রেডি করে।
বর্ষা দরজা বন্ধ করে বেলকনিতে বসে মুখ চেপে ধরে কাঁদছে।
দরজা ধাক্কায় উঠে চোখ মুছে রুম থেকে বেরিয়ে আসে।
‘ কি করছিলি?’
‘ মাম্মা কিছু না।’
‘ আমার থেকে লুকাতি পারবি না। তোর চোখ মুখই বলে দিচ্ছে কাদছিলি।
বর্ষা মাথা নিচু করে ফেলে।
বর্ষার মা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে চলে আসে।
রাত একটা বাজে। বর্ষা ঘুমের ঘোরে অনুভব করছে কেউ ওর কপাল স্পর্শ করছে। ও ঘুমের মধ্যে ও কেঁপে উঠলো। সাথে সাথেও ঘুম ছুটে গেলো। ও ধরফরিয়ে উঠে বসলো।সারা শরীর থরথর করে কাঁপছে। কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমে গেছে। ভয়ে এদিক ওদিক তাকিয়ে লাইট জ্বালায়। বুকে হাত দিয়ে জোরে জোরে শ্বাস ফেলে। এসব কি ছিলো। মনে হলো কেউ আমাকে স্পর্শ করছে কে? নাকি সব আমার স্বপ্ন ছিলো। আকাশ পাতাল ভাবতে থাকে বিছানায় বসে। তারপর সব স্বপ্ন বলে লাইট অফ করে শুয়ে পরে ধরফর বুক নিয়েই।
এদিকে তূর্য বর্ষার বেলকনিতে বসে সিগারেট খাচ্ছে। বর্ষা শুয়ে পরতেই ও আড়ালে থেকে বেরিয়ে এসেছে। বর্ষা ঘুমিয়ে যেতেই শব্দ হীন পায়ে অন্ধকারে বর্ষার মুখের দিকে ঝুঁকে তাকিয়ে থাকে। বর্ষার ঘন শ্বাস ওর চোখে মুখে পরছে। এবার আর স্পর্শ করেনা। আরো একঘন্টার মতো থেকে চলে আসে।
বাসায় যেতেই শাওন ওকে চেপে ধরে,
‘ কোথায় গিয়েছিলি?’
‘ বর্ষার বাসায়!’
শাওন লাফিয়ে উঠে বলে, ‘ কিহহহ
‘ চেঁচাচ্ছিল কেন?’
‘ তোর মাথা খারাপ হয়েছে? এতো রাতে তুই সেখানে কেন গিয়েছিলি আর্জেন্ট কিছু কি?’
‘ জানি না। আমার বর্ষাকে কাছ থেকে দেখতে ইচ্ছে হয়েছে তাই গিয়ে ছিলাম।’
‘ ও মাই গড কি বলিস এসব। ‘
শাওন অবাকের চরম সীমায় পৌঁছে গেছে।
‘ ঘুম পাচ্ছে আমার পেছাল বাদ দিয়ে লাইট অফ কর!”
বলেই তূর্য শুয়ে পরলো। শাওন লাইট অফ করে তূর্য এর পাশে লাফিয়ে পরে আর বলে,
‘ ভাই তুই প্রেমে পরেছিস?’
‘ শাট আপ। আমি ঘুমাবো এখন।’
‘ আরে শোন না। তুই বর্ষাকে মিস করছিলি তাই না।’
তূর্য আর কিছু বললো না। শাওন ওর আর উওর না পেয়ে ঘুমিয়ে পরলো।
.
নিদ্রা বাসায় আসেনি সারা রাত। চিন্তা কেউ ঘুমাতে পারেনি রাতে। অভ্র নিদ্রার সমস্ত পরিচিতদের ফোন করে খোঁজ নিয়েছে কোথাও যায়নি। চিন্তায় সারারাত এক দন্ড শান্ত হয়ে বসতে পারেনি।
বারান্দায় বসে নিদ্রাকে নিয়ে দুশ্চিন্তা করতে করতে কখন ঘুমিয়ে পরেছে জানেনা। ঘুম ভাঙে সূর্য এর আলো চোখ পরায়। নিদ্রার কথা মাথায় আসতেই ছুটে বাইরে আসে। আজকে নিদ্রার বাসায় যাবে। একবার অফিসার আদিল এর সাথে কথা বলতে হবে।কাল জানতে পেরেছে অফিসার আদিল কাল নিদ্রার সাথে হাসপাতালে ছিলো।
আদিল এর নাম্বার সংগ্রহ করে ফোন করে অভ্র।
শাওন আর তূর্য গভীর ঘুমে মগ্ন। তখন ফোনের রিংটোন এ শাওন এর ঘুম আগে ভেঙে যায়। ওর ফোন ভেবেছিলো কিন্তু না ওর ফোনে না। ও তূর্য এর পাশে থেকে ফোন নিয়ে দেখে তূর্য এর কল এসেছে। সেভ নাই নাম্বার। শাওন তূর্য কে ধাক্কা দিয়ে বলে,
‘ ওই উঠ তোকে কে জানি সাত সকালে কল দিয়েছে দেখ তো।’
‘ ফোন কিন্তু ভেঙে ফেলবো। আর একটা শব্দ কানে আসলে।আর একবার ডাক দিলে তোর অবস্থা খারাপ করে দেবো শালা ঘুমাতে দে।’
বলেই তূর্য আবার ঘুমিয়ে পরলো।শাওন ওর ধমক শুনে আর ডাকলো না। কিন্তু ফোনের ব্যক্তি পণ করেছে বোধহয় না ধরা পর্যন্ত থামবে না। ও সাইলেন্ট করে তিশাকে কল করে ফিসফিস করে কথা বলছিলো। কিন্তু তূর্য এর কল আসা বন্ধ না হওয়ায় তিশাকে বলে কল কেটে তূর্য এর ফোন রিসিভ করে।
‘হ্যালো কে?
‘ হ্যালো আমি ডাঃ অভ্র নিদ্রার হাজবেন্ড।
নিদ্রার হাজবেন্ড শুনেই দৌড়ে তূর্য এর হাতে ফোন দিয়ে বলে সব। তূর্য বিরক্ত হলেও অভ্রর কল রিসিভ করে।
অভ্রর সাথে কথা বলেই তূর্য উঠে বসে আর দ্রুত ফ্রেশ হয়ে ইউনিফর্ম পরে নেয়। শাওন বিছানায় বসে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে তূর্য এর দিকে।
তূর্য রেডি হয়ে বলে, ‘ কি হয়েছে এমন করে তাকিয়ে আছিস কেন?’
‘ এই মাত্র ডাকার জন্য বকলি। আর এখন অভ্রর সাথে কথা বলেই রেডি হয়ে বেরিয়ে যাচ্ছিস ব্যাপার কি বলতো? কি বলেছে ডাঃ অভ্র যে এতো ছুটছিস।’
তূর্য বলে, ‘ ডাঃ নিদ্রা কে কাল থেকে খোঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।’
‘ হোয়াট?
‘ আসছি এদিকটা সামলে নিস।’
‘ডোন্ট ওয়ারি।’
তূর্য নিদ্রা দের বাসায় সামনে এসে দাঁড়ায়। অভ্র দাঁড়িয়ে আছে আগে থেকেই কিন্তু তাকে ভেতরে ঢুকতে দিচ্ছে না। পুলিশ দেখে এবার আর বাঁধা দিতে পারলো না দাড়োয়ান।
অভ্র কে নিয়ে ভেতরে ঢুকলো তূর্য।
‘ অফিসার আদিল কাল আপনার সামনে নিদ্রাকে নিয়ে এসেছে আরিয়ান তাই না!’
‘ জ্বি।’
‘ ওরা খুব খারাপ। নিদ্রা কে মানসিক ভাবে টর্চার করে। প্লিজ হেল্প মি।’
তূর্য অভ্রের কাধে হাত রেখে ভেতরে ঢুকে।
#চলবে……..
#চলবে……….