#তুমি_শুধু_আমার
#written_by_ayrin
#part2_3
হসপিটালের করিডোরে অনবরত পাইচাড়ি করছে নিহান। কিছুক্ষণ পর পর মাথায় দুই হাত দিয়ে বসে আছে। তখন দেখলো অপারেশন থিয়েটার থেকে একজন নার্স দ্রুত পায়ে কোথাও চলছেন। নিহান তৎক্ষনাৎ নার্স এর পিছু পিছু গিয়ে অস্থির গলায় প্রশ্ন করছে মেহের কেমন আছে, মেহের ঠিক আছে তো? ওর গুরুতর কোন আঘাত লেগেছে কিনা।
নিহানের এতগুলো প্রশ্নগুলোর উত্তরে শুধু নার্স এটাই বললো পেসেন্ট এর অবস্থা এখন ভালো। অনেক বেশি ব্লিডিং হয়েছে,,বাকিটা ডক্টর থেকে জেনে নিবেন।
নিহান স্তব্ধ হয়ে গেলো কথাটা শুনে। এরকম পরিস্থিতিতে সে আগে কোনদিন পরেনি। তাই কি করবে না করবে ভেবে রিহান কে ফোন দিলো।
রিহানের মাত্র চোখ দুটি বুঝে আসছিলো ঘুমে। তখনি ফোন আসলো,,আলসেমি করে ফোন রিসিভ করলোনা। ফোনের সংখ্যা যখন পাচঁ হলো,,সে চিন্তিত মনে উঠে ফোন হাতে দিলো,, নিহানের কল দেখে মনে হলো ও সপ্তম আসমান থেকে মাটিতে পরে গিয়েছে। কারণ গত চার বছর নিহান রিহানকে নিজের ফেসবুক ফ্রেন্ডলিস্টেও রাখেনি। সেই নিহান আজকে তাকে ফোন দিয়েছে তাও আবার পাচঁ বার,,,
তাই আর কিছু না ভেবে তারাতাড়ি রিসিভ করলো।তখনি শুনতে পেলো নিহান কান্নারত গলায় বলছে ভাইয়া ও কি মরে যাবে। মেহের কি মরে যাবে। ভাইয়া তুমি ওকে বলোনা আমি আর রাগ করবোনা ওর সাথে।
এদিকে রিহান হতভম্ব হয়ে দাড়িয়ে আছে। সে কিছুই বুঝতে পারছেনা কি হয়েছে। রিহান নিহানকে বললো তুই কোথায় আছিস,, নিহান রিহানকে ঠিকানা বলার পর রিহান বাসা থেকে বেড়িয়ে গেলো।
রিহান হসপিটালে পৌছানোর পর নিহান কে দেখলো ডক্টরকে উত্তেজিত হয়ে কিছু জিজ্ঞেস করছে। উত্তরে ডক্টর বললেন,,
ডক্টর – মুচকি হেসে বললাম। রিলাক্স,, পেশেন্ট এখন ঠিক আছেন। তবে সময়মতো হসপিটালে না নিয়ে আসলে অনেক ক্ষতি হয়ে যেত। তবে উনাকে কয়েকদিন কোন রকম যেন প্রেশার না দেওয়া হয়।
নিহান এতক্ষণে যেন নিজের অস্তিত্ব ফিরে পেল। মেহের কে নিজের বোন মনে করে সে। সবচেয়ে বড় কথা মেহের ছাড়া আর কেউ ওকে অতটা বুঝতে পারেনা। যতটা বুঝে মেহের তাকে। অনেকেই তাদের বন্ধুত্ব দেখে হিংসা করে ওদের।
কিছুক্ষন পর মেহেরের সেন্স আসলো। নিজেকে হসপিটালে দেখে কিছুটা হতভম্ব হলো,,,
আশেপাশে তাকিয়ে দেখে ওর থেকে কিছুটা নিহান সোফায় বসে ঘুমিয়ে আছে। আর তার পাশে রিহান কে দেখে হকচকিয়ে গেলো। মেহেরের খুব পানির তৃষ্ণা লেগেছে। কিন্তু নিহানকে ডাকতেও পারছেনা। তাই নিজেই উঠে বসার চেষ্টা করছে।
রিহান এতক্ষণ ফোন স্ক্রোল করছিলো। মেহের কে জাগ্রত অবস্থায় দেখে কিছুটা অপ্রস্তুত হলো।
রিহান কিছুটা ইতস্তত ভাবে মেহের এর সামনে দাড়িয়ে বললো কিছু লাগবে তোমার?
মেহের একপলক রিহানের দিকে তাকিয়ে ভাঙ্গা ভাঙ্গা গলায় বললো নিহান কে একটু ঢেকে দিবেন প্লিজ।
রিহান- নিহান এতক্ষণ তোমার জন্য অনেক চিন্তিত ছিলো।মাত্র কয়েক মিনিট হবে ঘুমিয়েছে। এখন ওকে জাগালে ওর শরীর খারাপ হতে পারে। মেহের কে আবারো বললাম তোমার কিছু প্রয়োজন হলে আমাকে বলো,, নাহয় নার্স ডেকে দিচ্ছি ।
মেহের কিছু না বলে আবার চোখ বুঝে ফেললো। রিহান বুঝতে পারলো মেহের তার সাথে কথা বলতে আগ্রহী নয়। কিন্তু মেহের কে দেখে রিহানের মনে হয়েছে তার কিছু প্রয়োজন।
রিহান এবার মেহেরের দিকে তাকিয়ে দেখলো মেহের পানির গ্লাস এর দিকে তাকিয়ে আছে। রিহান বুঝতে পারলো মেহেরের তৃষ্ণা পেয়েছে। কিন্তু তাও আমাকে মুখ ফুটে কিছু বলছেনা। রিহান মনে মনে বলছে এই মেয়ের এতো অহংকার কেনো। আমার কি ঠেকা পরেছিলো ঐ মেয়েকে পানি দেওয়ার। শুধুমাত্র অসুস্থ দেখে মানবতার খাতিরে পানি দিচ্ছি,,তা নাহলে জীবনেও দিতাম না।
রিহান মেহেরের দিকে পানি এগিয়ে দিয়ে বললো এই মেয়ে নাও পানি খেয়ে নেও। মেহের রিহানের কথায় চোখ খোলবেনা খোলবেনা বলেও চেয়ে ফেললো রিহানের দিকে। রিহানকে দেখতে কেন যেনো ওর ভালো লাগছে,, তাই একদৃষ্টিতে তাকিয়েই আছে।
এদিকে রিহান বার বার মেহের কে ঢেকে চলছে। কিন্তু মেহেরের কোন পাত্তায় নেই। সে একদৃষ্টিতে রিহানের দিকে তাকিয়ে আছে। যার কারণে রিহান কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে পরেছেে। ও মানুক আর না মানুক তারা দুজন স্বামী স্ত্রী।
রিহান মনে মনে বলছে দেখো এতক্ষণ অহংকার দেখিয়ে এখন কেমন আমার দিকে ডেবডেব করে তাকিয়ে আছে।
রিহান মেহেরের মুখটা ধরে নিজেই পানি খাইয়ে দিলো। এতক্ষণে বাস্তবে ফিরে আসলো মেহের। এতক্ষণের কথা ভেবে অসস্তি ঘিরে ধরলো মেহের কে।
মেহের আবারো রিহান কে বললো নিহানকে একটু ঢেকে দিবেন প্লিজ। একটু জরুরি,,,
রিহান আর কিছু না বলে নিহানকে ডাকতে শুরু করলো। নিহানকে একবার ঢাক দিতেই নিহান ধরফরিয়ে ঘুম থেকে উঠলো,,আর বললো মেহু ঠিক আছে।ওর কিছু হয়নিতো?
মেহের নিহানকে অস্থির হতে দেখে আস্তে করে নিহান কে ডাক দিলো। মেহের কে জাগ্রত দেখে নিহান তারাহুরো করে মেহেরের কাছে গেলো।
নিহান মেহেরের কাছে গিয়েই ওকে ঠাস করে একটা থাপ্পড় বসিয়ে দিলো। মেহের বললো আজ কি থাপ্পড় ডে,, সবাই শুধু চড় মারছে?
নিহান বললো এই মেয়ে তুই কি কখনো মানুষ হবিনা। রাস্তার মধ্যে অন্যমনষ্ক হয়ে চলতে নিষেধ করিনি তোকে আমি,,
মেহের বললো আমি পাশ করেছি না ফেল করেছি রে? ফেল করলে মনে হয় এক্ষুনি কোমায় চলে যাবো।
নিহান বললো এত কিছুর মধ্যে আমি রেজাল্টের কথা ভুলেই গিয়েছিলাম। এবার আমারও টেনশন হচ্ছে,,,
মেহের বললো তারাতাড়ি রেজাল্ট চেক কর,,,তারাতাড়ি দেখ আমার হার্ট অনেক জোরে বিট করছে,, মনে হয় এবার টাটা বাই বাই হয়ে যাবো,,, যাওয়ার আগে রেজাল্ট টা দেখে যেতে চাই অন্তত,,
নিহান বললো তুই মরার আগে আমার মেয়ের জামাই কে দিয়ে যা, তা নাহলে আমার মেয়ে জন্মের আগেই বিধবা হয়ে যাবে।তোকে যে কথা দিয়েছি তোর ছেলের সাথে আমার মেয়ের বিয়ে দিবো।
রিহান দাড়িয়ে দাঁড়িয়ে এতক্ষণ মেহের আর নিহানের কথা শুনছিলো। কিন্তু নিহানের লাস্ট কথা শুনে রিহানের চোখ কপালে উঠে গেলো। আর সাথে সাথে কাশতে লাগলো,,,
মেহের আর নিহান দুজনে কথা বলতে এতটাই ব্যস্ত
ছিলো তাদের সাথে যে রুহান ও আছে সে কথা বেমালুম ভুলেই গেছে।
মেহেরের অসস্তি হচ্ছে কারণ মেহের নিহান ছাড়া আর কারো সামনে এভাবে বাচ্চামো করেনা। তাই রিহান কে দেখে মেহেরের অসস্তি হচ্ছে। নিহানের রিহানের সাথে কথা বলতে কেমন যেন উশখুশ লাগছে। প্রায় চার বছর নিহান তার ভাইয়ের সাথে কথা বলেনা। কারন সে মনে করে রিহান যদি দেশের বাহিরে না যেত তাহলে ওর মা মেহের কে এত কষ্ট দিতোনা। তাই এতদিন রাগ করে রিহানের সাথে কথা বলেনি।
নিহান মেহের কে বললো আমি ফ্রেশ হয়ে এসে রেজাল্ট বের করছি। বলে ওয়াশরুমে চলে গেলো। মেহের ঐপাশে নিহান এর ফোন দেখতে পেলো। নেওয়ার জন্য হাত বাড়াতেই স্যালাইন এর সুচ হাতে বিধলো,, তাই মৃদু চিৎকার করলো আহ বলে,,,
তখনি রিহান এসে মেহের এর হাত ধরে বললো এতো অধৈর্য কেন তুমি,, কোন কিছু কি ঠিকভাবে করতে পারোনা?
মেহের নিজের হাত থেকে রিহানের হাত সরিয়ে দিয়ে বললো আমি নিজের কাজ ঠিকভাবে করতে না পারলেও নিজের কাজ নিজেই করি। কারো দয়ার আমার দরকার নেই,,
রিহান মেহেরের দিকে তাকিয়ে মনে মনে বলছে,, কেন যে এই মেয়েকে হেল্প করতে আসি। কথার কি তেজ দেখো,,, যেচে কেনো যে হেল্প করতে আসলাম। হাত থেকে যে রক্ত বের হচ্ছে কোন হুশ আছে তার। তিনি তো কথার তেজে মানুষকে রক্তাক্ত করতে ব্যস্ত,,
#চলবে
#তুমি_শুধু_আমার
#written_by_ayrin
#part3
রিহান জোর করে মেহেরের হাত থেকে সুচ বের করলো। মেহের ব্যাথা পেয়েছে তাও চুপ করে আছে। রিহান মেহেরের হাতে একটা ওয়ান টাইম বেন্ডেজ বেধে দিলো। তারপর গিয়ে সোফায় বসে পরলো।
নিহান ওয়াশরুম থেকে বেড়িয়ে রেজাল্ট চেক করলো। মেহের আর নিহান দু’জনেই প্লাস পেয়ে পাশ করেছে৷ এটা নিয়ে দু’জন দুজনকে বললো তাহলে আমরা আবারো সেম,,,
আসলে মেহের আর নিহান দুজনেই কাকতালীয় ভাবে সব পরিক্ষায় একই নম্বর পেয়ে পাশ করেছে। অনেকেই বলেছে একসাথে বসার কারণে দুজনেই সেম লিখেছে তাই,,, তাই টিচার্সরা ওদের দুজন কে আলাদা বসাতো। তারপরও তাদের রেজাল্ট সেম আসতো।
কিছুক্ষণ পর মেহের ঘুমিয়ে গেলো। তখন রিহান নিহান কে বললো তুই বাড়িতে চলে যা আমি এখানে আছি। কিছুক্ষন রেস্ট নিয়ে আবার আসিছ।নিহান আচ্ছা বলে চলে গেলো। নিহান চলে যেতেই রিহান মেহেরের মুখের দিকে তাকিয়ে আছে,,,
কিছুক্ষন পর মেহের কে নড়াচড়া করতে দেখে রিহানের হুস আসলো,,
নিজেই নিজেই বিরবির করে বলছে, এই মেয়ে কি আমাকেও যাদু করেছে নাকি। শুধু চেয়েই থাকতে মন চায়। অথচ এই মেয়ের জন্য এতদিন আমি আমার পরিবার থেকে আলাদা ছিলাম।
এখন থেকে এই মেয়ের দিকে আর তাকাবো না। আর এই মেয়ের সাথে ভালোভাবে কথাই বলবোনা। তাহলেই সব আবার আগের মতো হয়ে যাবে।
একটু পরই মেহেরের ঘুম ভাঙ্গলো। রিহান কে একা দেখে ওর আবার অসস্তি হচ্ছে। চারপাশে তাকিয়ে নিহান কে খুঁজলো,, না পেয়ে রিহান কে জিজ্ঞেস করলো নিহান কোথায়?
রিহান মেহেরে মুখে নিহানের নাম শুনতেই কেন যেন রিহানের রাগ লাগছে। সারাক্ষণ শুধু নিহান আর নিহান। এখানে যে রিহান নামক একজন সুপুরুষ আছে সেটা কি মেহের দেখতে পায় না।
রাগের মাথায় বলেই ফেললো,, এত নিহান নিহান করো কেন? আমার জীবন নষ্ট করেছো,,এখন কি আমার ভাইয়ের জীবন টাও নষ্ট করবে? তোমাদের মতো মেয়েদের থেকে আর কিই বা আশা করা যায়,, তোমাদের মাথায় তো সারাক্ষণ এই চিন্তেই থাকে কিভাবে বড়লোকের ছেলেকে ফাঁসানো যায়। আমাকে পাওনি তাই আমার ভাইকে বেছে নিয়েছো।
মেহেরের মুখে নিহানের নাম শুনতেই রিহানের হিংসা হচ্ছে। তাই রাগের মাথায় এতগুলো কথা বলে ফেলেছে।
মেহের এতক্ষণ নিশ্বব্দে সব কথা শুনেছে। ওর এসব কথায় কষ্ট লাগেনা।কারণ গত পাঁচ বছরে এমন কথা রিহানের মা মেহের কে অনেক বার বলেছে। কিন্তু কেন যেন রিহানের মুখে এসব শুনে ওর ভীষন কষ্ট লাগছে।
মেহেরের আপন বলতে মাত্র দুজনই আছে,,নিহানের বাবা এবং নিহান।
আজ মেহেরের হোস্টেল ছেড়ে দিতে হবে,, তাই মেহের নিহান কে খুজছিলো। রিহান কে আর কিছু না বলে চুপচাপ শুয়ে থাকলো।
এদিকে রিহান রাগের মাথায় তো এতগুলো কথা বলে ফেলেছে। কিন্তু এখন ওর আপরাধ বোধ হচ্ছে। মেহের কে কিছু বলতে যাবে তখনই নিহান আসলো,, তাই আর কিছু বললো না।
নিহানকে দেখে মেহের বললো,,আমাকে রিলিজ দিবে কখন?
নিহান -আজ এখানে থাকতে হবে।
মেহের- আমি আজই বাড়ি ফিরে যেতে চাই প্লিজ,,
নিহান অনেক বার বলা সত্বেও মেহের হসপিটালে থাকতে রাজি হলোনা। এমনকি হসপিটালের বিল ও মেহের দিয়েছে। অবশেষে মেহেরের জেদ এর কাছে হার মেনে নিহান রিলিজ করিয়েছে মেহের কে।
নিহান- তোকে আমার বাড়িতে নিয়ে যেতে চাইনা আমি। আর তুই একা থাকবি সেটাও রিক্স,, হোস্টেল থেকে তোর সব কিছু আমি নতুন বাড়িতে সিফট করে দিয়েছি। আর তোর চাহিদা মতোই ছোট একটা বাড়ি ভাড়া নিয়েছি।তুই যতদিন সুস্থ না হবি ততদিন রাবেয়া খালা তোর সাথে থাকবে।
(রাবেয়া নিহানদের বাড়িতে থাকে এবং নিহান রিহানের ছোট বেলার যাবতীয় কাজ উনিই করেছেন।ঘরের কাজেও টুকটাক সাহায্য করেন)
মেহের নিহানের দিকে কৃতজ্ঞতার দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে,, আর ভাবছে এই ছেলেটা না থাকলে হয়তো সে এতদিনে মরেই যেতো,,নিজের ভাই থাকলেও মনে হয় এত কিছু করতো না তার জন্য ।আর এই ছেলেটাকে নিয়েই মানুষের মনে কত কুৎসিত ধারনা।
মেহের হসপিটাল থেকে বাড়িতে এসেছে আজ দুদিন হলো। এখন অনেক টাই সুস্থ হয়ে গেছে। নিহান আর রাবেয়া খালার যত্নে সুস্হ না হয়ে উপায় নেই।
অন্যদিকে রিহানের চোখে মেহেরের চেহারাটাই বাসে।রাতে ঘুমাতেও পারেনা ঠিকমতো। মেহের কে নিয়ে ভাবতে ভাবতে তার সারারাত কেটে যায়। আবার মনে মনে বলে মেহের কে যদি স্ত্রী হিসেবে মেনে নেয় তাহলে কি খুব বেশি ক্ষতি হয়ে যাবে। তারপর নিজের চিন্তাভাবনায় নিজেই বিরক্ত হয়।
রিহান ভাবছে সেদিন মেহেরের সাথে মিস বিহেভিয়ার করেছে তাই অপরাধবোধ থেকে মেহের কে নিয়ে বার বার ভাবছে। এসব কিছুতে সে বিরক্ত হয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে মেহের কে গিয়ে সরি বলবে।
তখন আবার চিন্তা করে সরি বললে তো অহংকারী মেহেরের দাম বেড়ে যাবে। তাই সে বলতে ও পারছেনা।
রাত দুটো বাজে,,
আজ ও রিহানের চোখে ঘুম নেই। অনেক ভেবে সিদ্ধান্ত নেয় মেয়েটাকে চুপিচুপি দেখে আসবে,,, তাতে কেউ জানবেও না। আর তার চোখে বারবার মেয়েটার চেহারা আসবে না।
কিন্তু মেহেরের বাড়ির ঠিকানা ওর জানা নেই। কিভাবে জানবে ভাবছে,,, নিহানকে জিজ্ঞেসা করতে পারবেনা। তাহলে নিহান সবকিছু বুঝতে পেরে যাবে। অনেক ভাবার পর একটা আইডিয়া পেলো,,কিন্তু তার জন্য আজকের রাতটুকু অপেক্ষা করতে হবে। এসব ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পরলো।
পরের দিন সকাল হতেই রিহান রাবেয়া খালাকে ফোন দিলো,,,
ওপাশ থেকে রিসিভ হতেই রিহান উৎসাহিত কন্ঠে বললো খালা আমি রিহান।
খালা- আরে রিহান বাবা তুমি আমার ফোন দিলা কোন দরকার?
রিহান- খালা তেমন কিছু দরকার নেই। তোমার হাতের স্পেসাল বিরিয়ানি টা খেতে ইচ্ছে করছে।
খালা- কিন্তু বাবা আমি এখন কিভাবে রান্না করে তোমাকে খাওয়াবো। আমি কয়েকদিনের মধ্যেই তোমাদের বাড়িতে চলে আসবো তখন নাহয় রান্না করে খাওয়াবো।
রিহান- কিন্তু আমার তো এখনি খেতে ইচ্ছে করছে। তুমি কোথায় আছো বলতো,, আমাদের বাড়ি থেকে কি বেশি ধুরে।
খালা – না না। তোমাদের বাড়ি থেকে বিশ মিনিটের রাস্তা। এই…. ঠিকানায়।
রিহান – তাহলে আমি আসছি তোমাকে নিতে,, তুমি রেডি থেকো ।
খালা- বাবা মেহের মামনি এখানে একা কিভাবে থাকবে?
রিহান বললো আমার অনেক বিরিয়ানি খেতে ইচ্ছে করছে। আমিই তোমার ঐখানে চলে আসবো তুমি রান্না করে রাখো।
খালা কে আর কিছু বলতে না দিয়েই ফোন কেটে দিলো।
ফোন রেখে রিহান একটা বিশ্বজয়ের হাসি দিলো। নিজের বুদ্ধির নিজেই প্রশংসা করলো।
রাবেয়া বিরিয়ানি রান্নার জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনাকাটা করার জন্য বাজারে চলে গেলো। মেহের ঘুমিয়ে থাকার কারনে মেহের কে না জানিয়েই গিয়েছেন। মেহের ঘুম থেকে উঠার আগেই চলে আসতে পারবেন ভেবে।
অনবরত কলিং বেল এর আওয়াজে মেহেরের ঘুম ভাঙ্গলো। ওর প্রচুর মাথা ব্যাথা করছে। কয়েকবার খালাকে ডেকে না পেয়ে নিজেই বিছানা ছেড়ে উঠলো।
দেয়াল ধরে ধরে দরজা পর্যন্ত গেলো। মেহের টিশার্ট আর লেডিস টউজার পরে আছে, চুলগুলো এলোমেলো হয়ে আছে।
দরজা খোলে রিহান কে দেখে চমকে গেলো। অন্যদিকে রিহানও ভাবেনি মেহের দরজা খোলবে। মেহের ভ্রু কুঁচকে রিহানের দিকে তাকিয়ে আছে।
রিহান একধ্যানে তাকিয়ে আছে মেহেরের দিকে। রিহানের চাহনি অনুশীলন করে নিজের দিকে তাকিয়ে মেহেরের চোখ বড় বড় হয়ে গেলো।
নিজেকে আড়াল করে, একটু কেশে বললো আপনি এখানে?
রিহানের এতক্ষণে হুস আসলো। ও মেহেরের থেকে চোখ সরিয়ে মিন মিন করে বললো ইয়ে মানে খালা,,,
তখনই পেছন থেকে খালা বললো আরে রিহান বাবা তুমি চলে এসেছো?
#চলবে