#তোমাতেই_সীমাবদ্ধ_আমি
#লেখনীতে:মাইশা চৌধুরী
(৯)
মোহনাকে হসপিটালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।অপারেশন থিয়েটারের সামনে পায়চারী করছে ইরফান।ইয়াশ, রিশাদ চৌধুরী দুজনে বসে আছে। রিশাদ সাহেব হার্টের রোগী। বেশি চিন্তা করলেই কিছু একটা হয়ে যেতে পারে উনার।
বেশকিছু ক্ষন পর ও.টি থেকে ডক্টর বের হলো।সকলের ছুটে এলো ডক্টরকে দেখে।
ডক্টর রাফিন মাথা নিচু করে বললেন,,
“I’m sorry। she is no more.”
ডক্টরের বলা এই কথা শোনার সাথে সাথেই ইরফান ফ্লোরে বসে পড়লো।বড্ড ভালো বাসতো ও মোহনাকে।
কেনো এমনটা করল ও? অজানা সকলের কাছে।
ইয়াশ নিজেও বুঝতে পারছে না হঠাৎ কি এমন হলো যে ওর ভাবী এমন একটা কাজ করল।
এদিকে বাসায় রাহিমা বেগম চিন্তায় ২ বার মুর্ছা গিয়েছেন।আনিশা কোনোরকম উনাকে সামলিয়েছে।
আনিশা রাহিমা বেগমের পাশে বসে ছিলো।তখনই ইয়াশের ফোন আসে।
আনিশা কল রিসিভ করতেই ইয়াশ বলে,,
“তুমি কি আম্মুর সামনে আছো?”
“হ্যা।কেনো?ভাবী কেমন আছে?”
“বলছি একটু সাইডে যাও আম্মুর।”
আনিশা ফোন নিয়ে বারান্দায় গেলো।
“হুম বলুন।”
“ভাবী আর নেই।”
এ কথা শুনে আনিশার মাথায় বাজ পড়ে।কি শুনছে ও!আনিশার মাথা ঘুরতে শুরু করে।
“আপনি কি বলছেন কি?”
“যা সত্যি তাই বলছি আনিশা।আম্মুকে কিভাবে বলবো আমি জানিনা। ভাইয়া ভেঙে পড়েছে।বাবা সামলাচ্ছে।আমরা বাসায় আসছি। আম্মুকে বুঝানোর চেষ্টা করো।”
বলে ফোন কেটে দেয় ইয়াশ।চোখের পানি কনুই দিয়ে মুছে ভাইয়ের কাছে যায়।
ইরফানের কাধে হাত দেয়।ইরফান ইয়াশের দিকে তাকিয়ে ওকে জরিয়ে ধরে কান্না করে দেয়।
“মোহনা কেনো এমনটা করলো ইয়াশ?কি হয়েছিলো ওর?আমাকে কেনো বলল না কিছু?আমি কি করেছিলাম।”
ইরফান প্রলাপ বকছে।ইয়াশের নিজের চোখে পানি চিকচিক করছে কিন্তু কাদতে পারছে না।সে কান্না করলে যে ইরফান আরও ভেঙে পড়বে।
ভোর রাতের দিকে মোহনার লা/শ নিয়ে বাড়ি ফিরল ইয়াশরা। রাহিমা বেগমকে এখনো কিছু বলেনি আনিশা।কান্না গলায় দলা পাকিয়ে আছে ওর।এ বাড়িতে আসার পর যে মেয়েটি ওর পাশে বসে কথা বলল সে নাকি এখন নেই!এটা মেনে নেওয়া যে বড্ড কঠিন হয়ে গেছে আনিশার কাছে।
আনিশা ভাবছে ক্ষনিকের পরিচয়। তাতেই ওর এতো খারাপ লাগছে। তাহলে বাকিদের কি অবস্থা হবে?আনিশার ভাবনার মাঝেই বাসার সামনে এম্বুলেন্স এসে থামলো।
রাহিমা বেগম হল রুমে বসে ছিলেন।এম্বুলেন্সের শব্দ কানে যেতেই আতকে উঠেন তিনি।দেখতে পান বাড়ির মেইন দরজা দিয়ে ২জন ওয়ার্ড বয় স্ট্রেচারে করে মুখ ঢাকা একটি লা/শ এনে রাখলো।
তখনই বাড়িতে ঢুকলো ইয়াশ,রিশাদ সাহেব,ইরফান।ইরফানকে ইয়াশ ধরে ধরে আনছে।রাহিমা বেগমের বুঝতে বাকি নেই কি হয়েছে।তবুও জিজ্ঞেস করলেন,,
“ইয়সশের বাবা কি হয়েছে? আমার বউমা ঠিক আছে তো?”
রিশাদ সাহেব কিছু বলতে পারলেন না।গিয়ে সোফায় থ মেরে বসে পড়লেন।রাহিমা মা বেগম এবার ইয়াশের কাছে গেলো।
“ইয়াশ তুই বল বাবা কি হয়েছে?ইরফানের এই অবস্থা কেন?”
“ভাবী আর নেই আম্মু।”
এ কথা শুনে রাহিমা বেগম ইরফানের সামনে গিয়ে ছেলের মুখের দিকে তাকাতেই উনার কলিজায় মচর দিয়ে উঠলো।ছেলের চোখে পানি! যে ছেলে সবসময় হাসি খুশি থাকে তার চোখে পানি এটা যেনো অবিশ্বাস্য কথা।
ইরফান মা’কে জড়িয়ে ধরে কেঁদে উঠলো।
“আম্মু মোহনাকে এনে দাও?ও কেনো আমাকে ফাকি দিয়ে চলে গেলো?আমি কি ভুল করেছিলাম? আমি তো শুধু ওকেই ভালোবেসেছি। ওর ভালো খারাপ সব দিকে খেয়াল রেখেছি।আমার মনের সর্বশ্রষ্ঠ যায়গা ওকে দিয়েছি।তাহলে কোন অভিমানে ও আমায় ছেড়ে গেলো?”
ছেলে বলা কথায় কি উত্তর দিবেন জানা নেই রাহিমা বেগমের।ছেলেদের নাকি কাঁদতে নেই।কিন্তু ইরফান আজ সে কথা বদলে দিয়েছে।ভালেবাসার মানুষ হারিয়ে গেলে কিরকম বেদনা হয় আজ উপলব্ধি করতে পারছে সে।
আনিশা হল রুমের এক কোনায় দাড়িয়ে কেদে চলেছে।ইয়াশ ওর পাশে দিয়ে মাথায় হাত রাখে।
আনিশা ইয়াশের বুকে মাথা রেখে কান্নায় ভেঙে পড়ে।
ইয়াশেরও বড্ড কান্না পাচ্ছে।মোহনা ওর ভাবী নয় বড় বোনের মতো ছিলো।বোন না থাকার আফসোসটা দূর করেছিলো মোহনা। কিন্তু সেই মোহনা কেনো এই কাজ করল? প্রশ্ন সকলের কাছে।
সকাল ৬টার দিকে মোহনার বাবা মা আসে উনারাও ভেঙে পড়ে একমাত্র মেয়ের এই অবস্থা দেখে।
বাদ যোহর দাফন কার্য সম্পূর্ণ হয়। ইয়াশের পা যেনো চলছেই না।নিজের বোনের থেকে কম ভাবেনি মোহনাকে। কেনো সে এমনটা করল?ইরফানের কথা ভাবতেই মাথা ঘুরে উঠছে ইয়াশের।
বাড়ি পৌঁছে দেখে ইরফান পাথরের ন্যায় বসে আছে।
রাহিমা বেগম ছেলের কষ্টে আরও অসুস্থ হয়ে পরেছেন।
আনিশা সকলকে সামলাচ্ছে।আনিশার বাবা মা ও এসেছে।
মন প্রচুর খারাপ তাদের ও।এই তো বিয়েতে কতো মজা করল।সেই মেয়ের হঠাৎ কি হলো?
ইরফানকে চেষ্টা করেও কিছু খাওয়াতে পারেনি কেউ।
সারাদিন পেরিয়ে রাত হয়ে গেলো।ইরফান ওভাবেই আছে নিজের রুমে ।
ইয়াশ ভাইকে চেষ্টা করেছে নরমাল করার কিন্তু পারেনি।
রাত তখন ১১টা।খাওয়ার জন্য ইরফানের রুমে গেলেন রাহিমা বেগম।কিন্তু একি রুম ফাকা!
ইরফানকে না দেখতে পেয়ে রাহিমা বেগম ওয়াশরুম, বারান্দা সব জায়গা খুঁজলেন কিন্তু পেলেন না।
এবার তিনি সকলকে ডাকলেন।সবাই এসে অনেক খোজাখুজি করল।
পুরো বাড়ি খোজা হলো ইরফানকে পাওয়া গেলো না।
কোথায় গেলো?
কেটে গেলো ৭দিন।কোথাও ইরফানের খোজ মিলল না।পুলিশও খুঁজে পেলো না ইরফানকে।ইয়াশ নিজে হন্যে হয়ে পুরো শহর খুজঁলো কিন্তু ফলাফল শূন্য।
ইয়াশ একদম ভেঙে পড়ল।
একদিকে ভাবীর মৃ/ত্যু আবার অন্যদিকে ভাইয়ের নিখোজঁ হওয়া।সব মিলিয়ে ভেঙে পড়েছে ইয়াশ। কিভাবে কি করবে কিচ্ছু বুঝতে পারছেনা।
চলবে…!!#তোমাতেই_সীমাবদ্ধ_আমি
#লেখনীতে:মাইশা চৌধুরী
(১০)
কয়েকদিন পর,,
মোহনার কবরের পাশে বসে আছে ইরফান।এক ধ্যানে তাকিয়ে আছে কবরের দিকে।
একটি দীর্ঘ শ্বাস নিয়ে ইরফান বলে উঠলো,,
“কেনো করলে তুমি এমনটা মোহ।অনেক ভালোবাসতাম তোমায় কিন্তু আমার ভালেবাসা দিয়ে তোমার অতীত ভুলাতে পারিনি।তোমারর ভিতরে যে এতো দুঃখ ছিলো বুঝতেই পারিনি কখনো।”
কথাগুলো বলতেই চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়লো।
কাল রাতে রুমে বসে ছিলে ইরফান তখনই ওর চোখ যায় ড্রেসিং টেবিলের সামনে রাখা মোহনার ফোনের দিকে।
ইরফান উঠে গিয়ে ফোনটা নেয়।লক না থাকায় ফোন খুলতে বেশি বেগ পেতে হয়নি ইরফানকে।
কল হিস্টোরি চেক করতেই কপালে ভাজ পরে ইরফানের।একটা নাম্বার থেকে বেশ কয়েকবার ফোন এসেছে।এবং মোহনার সু/ই/সা/ই/ড করার আগ মুহুর্তেও সেই নাম্বারে মোহনা নিজেই ফোন দিয়েছিলো।খটকা লাগা শুরু হয় ইরফানের।ও সেই নাম্বারটা কার জানার চেষ্টা শুরু করে।
কিছুতেই বুঝতে পারেনা।অবশেষে ইরফানের মনে পড়ে ইয়াশের বিয়ের দিন থেকে মোহনা ছিলো অন্য মনস্ক। ইরফান এবার ইয়াশের বিয়ের ভিডিও করা ছিলো কিছু সেগুলো ভালো করে দেখতে থাকে।একসময় দেখে মোহনা কোথায় থেকে যেনো চোখ মুছতে মুছতে দৌড়ে চলে যাচ্ছে।তাও বিয়ের সময়ই।
এবার ইরফান সিউর হয় বিষয়টা জটিল। দেরি না করে বের হয়ে পড়ে সত্যি উদঘাটন করতে।
ইরফান যায় সেই কমিউনিটি সেন্টারে যেখানে ইয়াশ আনিশার বিয়ে হয়েছে।
ইরফানের চেনা পরিচিত বলে অতো রাতে গিয়ে কোনো সমস্যায় পড়তে হয়নি।
ইরফানকে গার্ডকে বলে বিয়ের দিনের সিসিটিভি ফুটেজ দেখাতে।
গার্ড ইরফানকে নিয়ে একটি রুমে যায় এবং বিয়ের দিনের সিসিটিভি ফুটেজ দেখায়।
তাতে দেখা যায় বর আসার পর মোহনার ফোন আসে আর মোহনা একটু সাইডে যায় কথা বলতে।
তখনই ওর সামনে একজন সুদর্শন যুবক এসে দাড়ায়।কোলে একটি বাচ্চা মেয়ে।মোহনা সেই যুবকের সাথে বেশ কিছুক্ষণ কথা বলে এবং তারপরই কান্না করতে করতে সেখান থেকে চলে যায়।
তারা কি কথা বলছিলো এটা শোনা যাচ্ছিলো না।
ইরফান ফুটেজটা নিয়ে যায় ওর বন্ধু সাকিবের বাসায়।
রাত তখন ১:৩০। সাকিব ইরফানের কলেজ লাইফের বন্ধু। ইরফান সাকিবের বাসায় যেতেই সাকিব বলল,,
“কি হয়েছে ভাই সব ঠিক আছে তো?”
“কিছু ঠিক নেই আমার তোর সাহায্য প্রয়োজন।”
“কি হয়েছে বল।”
“তুই তো একজন থট স্পেশালিস্ট। ”
“হ্যা।”
“এই ভিডিও টা দেখ।ওরা কি কথা বলছে সেটা আমাকে বল।”
“ঠিক আছে।”
সাকিব দেখলো এবং বুঝলো।মুখ কালো করে ইরফানের দিকে তাকালো।
ইরফান জিজ্ঞেস করল,,
“কি হয়েছে বল.।”
“ভাবীর একটা পাস্ট ছিলো। ”
“কি পাস্ট?”
“ভাবী একজন কে ভালোবাসতো।কিন্তু সে ভাবীকে ভালোবাসেনি।”
“বুঝিয়ে বল।”
“ভাবরট ফোনে কল আসায় ভাবী সাইডে যায়।আর তখন যেই ছেলেটার সাথে দেখা হয় সে ভাবীর প্রাত্তন। তাকে বাচ্চা কোলে অবস্থায় দেখে ভাবী জিজ্ঞেস করে ‘কেমন আছো?’
ছেলেটি উত্তরে বলে ‘ভালো’।
কথায় কথায় ভাবী বলে ‘ভালই তো আছো সুখে আছো।’
ছেলেটি তখন হেসে বলে’হ্যা।তা তো থাকবোই। আমার বউ আমার সব কিছু।আমার মেয়ে আমার পৃথিবী।’
একথা সুখে ভাবীর চোখ ভিজে আসে।আবারো জিজ্ঞেস করে,,’আমার কি দোষ ছিলো? সেদিন কেনো হারিয়ে গিয়েছিলে?’
ছেলেটি তখন বলে, ‘আমার তোমার দেহ প্রয়োজন ছিলো আর কিছু না।’
বলে ছেলেটা চলে যায় আর ভাবী কান্না করতে করতে ভিতরে যায়।
ইরফান হতভম্ব হয়ে যায়।চলে আসে মোহনার কবরের কাছে।
” তুমি যদি একবার আমাকে সবটা বলতে আমি চেষ্টা করতাম তোমাকে দূরে রাখার এসব থেকে।আমি কি এতো বছরে তোমার কাছের কেউ হতে পারিনি মোহ?কেনো এমনটা করলে? আতীত ভেবে বর্তমান নষ্ট করে দিলে!আমার কথা ভাবলেনা। তোমার অতীত নিয়ে কোনো মাথা ব্যাথা আমার ছিলো না আর না আছে।তুমি আগে যা করেছো, করেছো।কিন্তু এখন তো তুমি আমার বউ ছিলে আমার সারা জীবনের পথ চলার সঙ্গী। আমার কথা একবারো মনে পড়লো না এই কাজটা করার সময়? আমি কিভাবে থাকবো এটা একবারো ভাবলে না!আমি যে শুধু তোমাকেই ভালোবাসি মোহ।প্লিজ ফিরে এসো”
কবরের সামনে হাটু গেড়ে বসে কথা গুলো বলছে ইরফান।আকাশ মেঘলা, বৃষ্টি এসে ভিজিয়ে দিচ্ছে ওকে।ওর কোনো হেলদোল নেই।
সারাদি কেটে সন্ধ্যা হয়ে গেলো। ইরফান ওভাবেই আছে।এবার উঠে টলমল পায়ে কোথাও চলে গেলো।
পরেরদিন,,
কোনো এক অফিসের সামনে দাড়িয়ে আছে ইরফান।কারোর অপেক্ষা করছে।কিছু ক্ষণের মাঝেই একজন এসে ইরফানের সামনে দাড়ালো।সে হলো ‘মাহিম’ মোহনার প্রাত্তন।মাহিম এসেই জিজ্ঞেস করে,,
“বলুন কেনো ডেকেছেন?”
“আপনি মাহিম?”
“জ্বি।”
“আমি ইরফান চৌধুরী মোহনার হাসবেন্ড। ”
বেশ অবাকই হলো মাহিম ইরফানের কথা শুনে।নিজেকে সামলে নিয়ে বলল,,
“জ্বি বলুন কি বলবেন।”
“আপনি জানেন মোহনা আর নেই।”
“কিহ!”
“হুম।”
এরপর সবটা বলে ইরফান মাহিমকে মোহনার সু/ই/সা/ই/ড করা থেকে থেকে শুরু করে ও সব খোঁজ করেছে সেগুলোও বলে।সব শুনে মাহিম বলে,,
“I’m sorry আমি বুঝতে পারিনি আমার কথায় হার্ট হয়ে মোহনা এমন একটা কাজ করবে।”
“ইট’স ওকে।আমি আসি। অনেকক ইচ্ছে ছিলো তোমার সাথে দেখা করার।যাকে পাগলের মতো ভালোবেসেছিলাম সে তো তোমাকে মনের মধ্যে রেখেছিলো। আমি শালা এতোই বকা ছিলাম যে বুঝতেই পারলাম না।বাট ইউ নো মাহিম আমি ওকে এখনো চাই পাগলের মতো।ওর পাস্ট নিয়ে আমার কোনো মাথা ব্যাথা ছিলো না আর থাকবেওনা।ওর যায়গা আমার এখানে (বুকের পা পাশে হাত দিয়ে) ছিলো আর থাকবে।”
কথা গুলো বলে হাতের কনুই দিয়ে চোখ মুছে চলে যেতে থাকে ইরফান।মাহিম ডাকে কিন্তু ইরফান পিছন ফিরে তাকায়না।
মাহিমের খারাপ লাগে ইরফানের জন্য।মনে মনে বলে,,
“স্যালুট ব্রো।তোমার মতো ভালোবাসতে পারা মানুষ এই পৃথিবীতে খুব কম জন আছে।”
__________________________________
কেটে গেলো বেশ কয়েকমাস,,
ইরফানের কোনো খোজ নেই।ইয়াশ ভাইকে না পেয়ে ইয়াশ অনেকটাই ভেঙে পড়েছে।রাহিমা বেগম চুপচাপ হয়ে গেছে। আগের মতো কথা বলেন না, হাসে না।রিশাদ হাসেব ও চুপচাপ। সবটা কেমন যেনো হয়ে গেলো।আনিশা মন মরা হয়ে আছে।বিয়ে হয়ে আসার পর এগুলো দেখে ও নিজেও বেশ ঘাবরে গিয়েছে।
“আজ বিয়ের ৬মাস পূর্ণ হয়েছে।আপনাকে আজ আমি সারপ্রাইজ দিতে চাই।”
মনে মনে কথাগুলো ভেবে আনিশা নিজেই হাসলো।তারপর কাজে লেগে পড়লো।
ইয়াশের কলেজ থেকে আসতে সন্ধ্যা হয়ে গেলো।
কাজ ছিলো তার উপর পুলিশ স্টেশন যেতে হয় ওকে ইরফানের খোজঁ করতে।প্রতিদিনের মতো আজও ইরফানের কোনো খোজ না পেয়ে নিরাশ হয়ে বাড়ি ফিরল ইয়াশ।
বাড়ি এসে প্রথমে বাবা মার সাথে দেখা করে রুমে আসতেই দেখতে পেলো খুব সুন্দর করে সাজানো রুমটা।ইয়াশের অজান্তেই ওর মুখে হাসি ফুটলো।
পায়েলের ঝুনঝুন শব্দে ইয়াশ খুজঁতে লাগলো কোথায় থেকে শব্দ টা আসছে।রুমের মাঝখানে আসতেই পিছন থেকে কেউ ওকে জড়িয়ে ধরল।
“Happy 6 months anniversary.”
“আজ ১২ তারিখ!”
“হুম।আপনি তো ভুলেই গেছেন।”
“আরেহ না তা-না।”
“হুম বুঝি।”
কথার মাঝেই ফোন বেজে উঠলো আনিশার।ফোনের কাছে গিয়ে ফোন স্ক্রিনে তাকাতে দেখল ওর ভাই ফোন করেছে।
ফোন রিসিভ করে কানে নিতেই আনিশা থ হয়ে হেলো।কারণ ফোনের ওপাশ থেকে ওর ভাই বলল,,
“আপু তারাতারি আয় আম্মু আব্বুর ঝগড়া হয়েছে আর আম্মু বাসা ছেড়ে নানুবাড়ি চলে গেছে।বাবা বলছে সন্ন্যাসী হয়ে যাবে।”
“কিহ!”
“হুম তুই তারাতারি আয়।আমি বাবাকে আটকাচ্ছি। ”
বলে ফোন কেটে দিলো আনিশার ভাই।
ইয়াশ জিজ্ঞাসুক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। আনিশা সবটা বলতেই ইয়াশ বলল,,
“তাহলে দ্রুত যাও।আমি পৌঁছে দেই।”
“না তুমি থাকো বাবা মার তোমাকে দরকার।আমি গাড়ি নিয়ে যাচ্ছি।”
“ঠিক আছে।”
আনিশা দ্রুত রেডি হয়ে বেরিয়ে গেলো।ইয়াশের মুখ মলিন হয়ে গেলো।চেঞ্জ করে নিলো।
চলবে…!!
(আমি একটু ব্যস্ত আছি তাই গল্প দিতে আনিয়ম হচ্ছে।তার জন্য আমি দুঃখিত।আমি একজন স্টুডেন্ট লেখালেখি ছাড়াও আমার পড়াশোনা আছে,, কিছুদিন অনিয়মই হবে কিছু মনে করবেন না কেউ🙂।)