তোর_আসক্তি_পাগল_করেছে_আমায় পর্ব ২১+২২

#তোর_আসক্তি_পাগল_করেছে_আমায়
#Sabiya_Sabu_Sultana(Saba)
#পর্ব_২১
…সকালে হালকা মিষ্টি রৌদ্রের আলোয় আর কানে আসা রিন রিন শব্দ। মুখে হালকা পানির ছিটে। ঘুমের মধ্যে অনুভব করে সাঁঝ। পিট পিট করে চোখ খুলতে। দেখতে পায় এক স্বর্গীয় দৃশ্য। তার পূজারিনী তার পাগলি সামনে দাঁড়িয়ে আয়নার সামনে। মাথার থেকে টুপ টুপ করে পানি পড়ছে। তার ফলে পরনের সাদা টপ টা পিঠের দিকে অর্ধেক ভিজে গেছে। লাইট ব্লু প্রিন্ট্রেড লং স্কার্ট। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে । সাঁঝ এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে তার বেলার দিকে। আজ প্রথম সে এই ভাবে দেখছে বেলা এতটা হাসি খুশি এতটা স্নিগ্ধ। আগে দেখা যায়নি। সাঁঝ বোঝে এর কারণ। তাকে ফিরে পেয়েছে সেই জন্য মেয়ের মুখে হাসি ফুটেছে। কাল তার পাগলির মন পেয়েছে আবারো ফিরে সব রাগ অভিমান মিটিয়ে। এবার খুব তাড়াতাড়ি নিজের করে নেবে একে বারে সাঁঝ এর বেলা। মুচকি হাসি ফুটে ওঠে সাঁঝ মুখে এইসব ভাবতে।
.
. আসতে আসতে উঠে আসে গুটি গুটি পায়ে। পিছন থেকে এসে জড়িয়ে ধরে বেলা কে সাঁঝ। বেলার ভিজে চুলে মুখ ডুবিয়ে দেয়। এ যেনো এক স্বর্গ সুখ। বেলা কেঁপে ওঠে সাঁঝ এর স্পর্শে। আয়নাতে একবার তাকিয়ে দেখে সাঁঝ তাকে জড়িয়ে তার মাঝে ডুব দিয়েছে। সাঁঝ এর উষ্ণ স্পর্শ তার চুল ভেদ করে ঘাড়ে এসে পড়ছে। আর এতে বেলার দম আটকে আসছে। চুল সরিয়ে ঘাড়ে গলায় চুমু বসাতে থাকে সাঁঝ। বেলা চোখ বন্ধ করে সাঁঝ এর মাথা আকড়ে ধরে। বড় বড় শ্বাস নিতে থাকে। সাঁঝ সকাল সকাল তার মায়াবী কে এই ভেবে দেখে নেশায় ডুবে গেছে।
.
–“উ..ম..ম কি করছো ছাড়ো। বেলা অনেক কষ্টে বলে ওঠে।
.
. সাঁঝ বেলা কে নিজের দিকে ঘুরিয়ে বেলার ঠোঁটে নিজের ঠোঁট ডুবিয়ে দেয়। বেলা একটু নড়েচড়ে ওঠে। তারপর সঙ্গ দেয় সাঁঝ কে। বেলার কোমর চেপে টেনে নেয় নিজের কাছে। কিছুক্ষণ পর ঠোঁট ছেড়ে কপালে ঠোঁট ছুয়ে রাখে সাঁঝ। বেলা একদম গুটিয়ে আছে সাঁঝ এর গায়ের ওপর। বড় বড় নিশ্বাস নিচ্ছে বেলা।
.
–“গুড মর্নিং জান । সাঁঝ বলে ওঠে।
.
–” এটা কি ছিল হ্যাঁ। চোখ মটকে তাকায় সাঁঝ এর দিকে ।
.
–“চুমু বেবি পাতি বাংলায় বলে শুদ্ধ ভাবে হল চুম্বন আর ইংলিশে হলো কিস। আমার গুড মর্নিং কিস বেবি । প্রতিদিন সকালে এটা আমার চাই। বুঝলে। সাঁঝ বেলার নাকে হালকা কামড় দিয়ে বলে ওঠে।
.
. বেলা কোনো কথা বলে না। তার মুখ লাল হয়ে গেছে। নাকে হাত বুলাচ্ছে। চোখ নিচু করে আছে। সাঁঝ তার পাগলির এর লজ্জা মাখা মুখ দেখছে। আরো বেশি করে নেশায় ডুবে যাচ্ছে সাঁঝ। আবারও কাছে আসতে নিলেই বেলা ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয় সাঁঝ কে। তারপরেই মুচকি হাসি দিয়ে ছুটে বেরিয়ে যায় রুম থেকে। এদিকে সাঁঝ বেলার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে হেসে ওঠে।

————–

–“আরে ইয়ার লেট হয়ে গেলো অনেক। জ্যামিং শুরু হবে কখন। এখন কিছু রেডি হয়নি কাল আমাদের সং প্রেজেন্ট করতে হবে। বেদ বিরক্তিকর ভাবে বলে ওঠে।
.
–” একদম ঠিক রুহি তোর জন্য লেট হয়ে গেলো। ওম বলে ওঠে।
.
–” চিল চিল। ঠিক হয়ে যাবে আমাদের বেলা আছে না। নিশান বলে ওঠে।
.
–“বাই দ্য ওয়ে বেদ ওম তাড়া টা কিসের আমাদের প্রোগ্রাম এর জন্য নাকি সারা জাকিয়া বেবি এর জন্য। রুহি টোন কেটে বলে ওঠে।
.
. বেদ হাতে থাকে ক্যান টা ছুড়ে মারে রুহি কে। রুহি বাইক টেনে সরে যায়। তারা পাশাপাশি বাইক নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। আর এতক্ষন বেদ আর ওম কে নিয়ে টোন করছিল। ওরা মজা করতে থাকায় সামনে খেয়াল করেনি তাই সাথে সাথে এক ধাক্কা। সামনের চার চাকার সাথে। জোরে ব্রেক কষে দুজনেই। নিশান এর সাথে ধাক্কা লেগেছে। নিশান জোরে ব্রেক করাতে একটু স্লিপ করেছে কিন্তু দাঁড়িয়ে গেছে ব্যালেন্স করে। গাড়ির গতি বেশি না থাকায়। ওরা কোনো হর্ন শোনে নি। সবাই দাঁড়িয়ে গেছে। নিশান হেকে ওঠে । রেগে যায় সবাই খুব।
.
. হটাৎ করে গাড়ির দরজা খুলে যায়। বেরিয়ে আসে প্রথমে পা। নিশান আসতে আসতে পা থেকে চোখ ওপরে দিকে নিয়ে যাচ্ছে। আর তার সাথে সাথে তার মনে গিটার ভায়োলেন বাজা শুরু হয়ে গেছে। নিশান এর কথা আটকে গেছে। চারিদিকে শুধু গিটার আর ভায়োলেন বাজার আওয়াজ পাচ্ছে। হওয়া বয়ে যাচ্ছে। সামনে দাঁড়ানো একটা মেয়ে। যার চুল গুলো হাওয়ায় এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে। শাড়ির আঁচল উড়ছে যার জন্য হওয়াতে সরে গিয়ে হাল্কা ঈষৎ ফোর্সা পেট দেখা যাচ্ছে। নিশান এর সব কিছু পুরোই এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে যেনো সামনে দাঁড়ানো মেয়েটি কে দেখে।
.
. এদিকে সবাই এখন নিশান এর অবস্থা দেখছে একবার আর সামনে দেখছে। একটু দূরে দাঁড়িয়ে রুহি পুরোটা ভিডিও বানাচ্ছে বিনোদন হিসাবে বেলা কে দেখানোর জন্য। নিশান এর অবস্থা পুরো ক্যাবলাকান্ত হয়ে গেছে। মুখ পুরো হা হয়ে আছে। বাইক এ বসে।
.
. মেয়েটা তাদের দিকেই এগিয়ে আসছে লাল শাড়িতে যেনো আগুন সুন্দরী লাগছে। হাঁটার সাথে সাথে চুল গুলো কিছু এসে মুখে পড়ছে। কোমর দুলছে। নিশান হাত দুটো দু দিকে বাড়িয়ে দিয়েছে পুরো। তার সাথে যেনো সত্যি সত্যি স্বপ্ন ঘটছে। সে যেনো স্বপ্নের দেশে ভেসে আছে।
.
.🎶 চান্দ মেরা দিল চান্দনি হো তুম
চান্দ সে হে দূর চান্দনি কাহা 🎶
.
. নিশান একটু গেয়ে ওঠে। বাইক থেকে পড়েই যাচ্ছিলো কিন্তু পাশে থাকা বেদ ধরে নেয়। মেয়েটি ওদের সামনে এসে দাঁড়িয়েছে।
.
–“এই যে ঠিক করে গাড়ি চালাতে জানেন না। রাস্তা জুড়ে যাচ্ছেন যে। আবার চিৎকার করছেন মেয়েটা এসে বলে ওঠে।
.
. এদিকে নিশান এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে মেয়েটার মুখের দিকে চোখ মুখ নাড়িয়ে কথা বলে যাচ্ছে। ঠোঁট দুটো নড়ছে এক দৃষ্টিতে সেই দেখছে নিশান যেনো ঘোরের মাঝে ডুবে আছে সে। এদিকে মেয়েটা তাদের ওপর চিৎকার করছে আসলে তারা মজা করতে টোন কাটতে কাটতে আসছিল অত খেয়াল করেনি তাই ধাক্কা লেগে গেছে। রুহি হয়তো মেয়েটা কে কিছু বলত। কিন্তু নিশান এর অবস্থা দেখে কিছু বলতে পারিনি। শুধু বাকিরা নিশান আর সামনে থাকা মেয়েটা কে দেখে যাচ্ছে। মেয়েটা খানিক টা বকা দিয়ে চলে যায়। আর এদিকে বাকিদের ধাক্কায় নিশান এর ঘোর কেটে যায়। দেখে কেউ নেই সাথে সাথে মুখ কালো করে ফেলে। আর বাকি গুলো মিট মিট করে হাসছে ।

————–
এদিকে বেলা কিচেনে কাজ করছে। আর তাকে জ্বালাতে আছে সাঁঝ। বেলা আসার পর পর চলে এসেছে। সেখান থেকে বেলা কে জ্বালিয়ে যাচ্ছে। বেলা কে শান্তি মত কাজ করতে দিচ্ছে না। রাগী চোখে তাকালে চুমু দিচ্ছে। আর রাগ কোথায় দেখাবে বেলা। সে নিজেই বুঝে উঠতে পারছে না যে এক রাতের মধ্যে আরো এক গাট বেড়ে গেছে রোম্যান্স এর ভূত। হ্যাঁ সেও পাগল ছিল। কিন্তু এখন তো দেখতে পাচ্ছে এ তো তার থেকে ও দু গুণ বেশি পাগল।
.
. তাঁকে পিছন থেকে জড়িয়ে রেখেছে। তার পিঠের থেকে চুল সরিয়ে দেয়। টপ এর পিছন চেন থাকায় সুবিধা হয় সাঁঝ এর। চেন নামিয়ে পিঠে চুমু বর্ষণ করছে।টপ কিছুটা তুলে হাত দিয়ে জড়িয়ে রেখেছে পেটে। সাঁঝ এর কাণ্ডে বেলা বেশ ঝামেলা পড়েছে না পারছে সইতে আর না পারছে সরাতে। তার সাথে পাগলামি শুরু করেছে যে। সামনে আগুন থাকায় গলা মুখ বাগে আনতে পারছে না সাঁঝ। তাই শুধু জড়িয়ে রেখেই ঘাড়ে পিঠে কানে চুমু খেয়ে। আর তার এই উষ্ণ আদর তার ভেজা ঠোঁটের স্পর্শে পাগল হয়ে যাচ্ছে বেলা।
.
–“বেলা ।
.
.বাইরে থেকে আওয়াজ পেয়ে বেলা চোখ খোলে। এখনও সাঁঝ তাকে জড়িয়ে রেখেছে। বেলা নিজেকে ছাড়তে চেয়ে ও পারছে না। সাঁঝ কে সরাতে পারছে না। তার মাঝেই ডুবে আছে সাঁঝ।
.
. বেলা কোনো কথা না বলে পিছন থেকেই হাত বাড়িয়ে সাঁঝ এর মুখে আলতো করে স্লাইড করতে থাকে। এর জন্য সাঁঝ বেলা কে ছেড়ে নিজের দিকে ঘোরাতে নিলেই বেলা হাতের বাঁধন আলগা পেয়ে ধাক্কা দিয়ে নিজের থেকে সরিয়ে দেয় সাঁঝ কে ছুটে বেরিয়ে যায় বেলা।
.
–“আরে কোথায় ছিলি ডাকছি কখন থেকে। ওম হেসে হেসে বলে ওঠে।
.
–” কিচেনে ছিলাম বল কি হয়েছে। বেলা নিজেকে ঠিক করে বলে ওঠে।
.
–“আরে তোকে একটা দুর্দান্ত খবর দেয়ার আছে। রুহি উত্তেজিত হয়ে বলে ওঠে।
.
. বাকিরা হেসে ওঠে। আর এদিকে বেলা লক্ষ করে নিশান কেমন একটা চুপ করে আছে। তাদের মধ্যে সব থেকে বেশি কথা নিশান বলে আর এখন সে কেমন আনমনা হয়ে আছে।
.
–” কি খবর আধিঘরওয়ালি। সাঁঝ এসে বেলার পাশে ঘেঁষে দাঁড়িয়ে বলে ওঠে।
.
. বেলা একবার কোনা চোখে সাঁঝ এর দিকে তাকায়। সাথে সাথে সাঁঝ বেলা কে ঠোঁট পাউট করে চুমু দেখায়। আর বাকি গুলো ও ফিচেল হাসতে থাকে বেলা সাঁঝ কে দেখে ।
.
–“হে গুড মর্নিং এভরিওয়ান। সারা ওদের দিকে আসতে আসতে বলে ওঠে।
.
. এদিকে সারা কে জড়িয়ে ঘুমে টলতে টলতে আসছে জাকিয়া। সিঁড়ি দিয়ে নামছে সারিফ গটগটিয়ে সেদিকে চোখ যায় রুহি সাথে সাথে চোখ টিপে দেয়।
.
–” আরে বললি না তো কি খবর। বেলা বলে ওঠে।
.
–“প্রেমের ঘন্টা বেজে গেছে। রুহি একবার ওর সামনে এসে দাঁড়ানো সারিফ এর দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে ।
.
–“অনেক আগেই বেজে গেছে। সারিফ বলে ওঠে।
.
–” মানে? বেলা বলে ওঠে।
.
. আর এদিকে বাকি গুলো মিট মিট করে হাসছে ।বেদ সারা জাকিয়া। সাঁঝ পা দিয়ে সবার চোখের আড়ালে বেলার পায়ে স্লাইড করছে।
.
–“একজন চান্দনির দেখা পেয়েছে বেদ হেসে বলে ওঠে।
.
. ওদের কথা শুনে সারা জাকিয়া সাঁঝ অবাক হয়ে দেখছে। কি বলছে বুঝতে পারছে না।
.
–” মেরি জান বেলা ।
.
. সবাই পিছন ফিরে তাকায়। বেলা তো পিছনে তাকাতে মুখে হাসি ফুটে ওঠে। চোখ মুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে মুখে হাসি। ছুটে এগিয়ে যায়। এদিকে সবাই অবাক হয়ে দেখছে।
.
–” টুসুন….
.
.
.
. 💝💝💝
.#তোর_আসক্তি_পাগল_করেছে_আমায়
#Sabiya_Sabu_Sultana(Saba)
#পর্ব_২২

–“টুসুন বেবী তুই এখানে। কবে ফিরেছিস?বেলা আনন্দ উত্তেজিত বলে ওঠে।
.
–” বেলা । পিছন থেকে ডেকে ওঠে।
.
–“দিয়া তুই। কেমন আছিস। বেলা আলিয়া কে জড়িয়ে বলে ওঠে।
.
. এদিকে তিনজন একসাথে জড়িয়ে আছে। বেলা জড়িয়ে ধরে লাফালাফি করছে আনন্দ উত্তেজনায়। এদিকে সবাই অবাক হয়ে দেখে যাচ্ছে ওদের কে। ওম বেদ রুহি অবাক হয়ে একবার সামনে আর একবার নিশান এর দিকে দেখছে। যে এই মুহূর্তে হ্যাবলার মত সামনে তাকিয়ে আছে।
.
–“বেদ ।আমি যা দেখছি তুই ও কি তাই দেখছিস। ওম বেদ কে ধাক্কা দিয়ে বলে ওঠে।
.
–” হুম আমিও দেখছি তাই। সকালের সেই মেয়েটা। বেদ গালে হাত দিয়ে বলে ওঠে।
.
. সারা জাকিয়া সারিফ সাঁঝ অবাক হয়ে দেখছে ওদের সামনে দাঁড়ানো বেলা আলিয়া আর টুসুন নামের মেয়েকে।
.
. নিশান তো আকাশে উড়তে শুরু করেছে। হাত টা আপনা আপনি গালে চলে গেছে। চোখের সামনে আবারো সেই হাওয়া আর ফুল পড়ছে। গিটার ভায়োলেন বাজছে। লাইক দিনের আকাশে তারা দেখার মত অবস্থা নিশান এর।
.
. বেলা ওদের কে নিয়ে সবার দিকে এগিয়ে আসে। টুসুন সামনে এগোতে দেখে সকালের সেই ছেলে মেয়ে গুলো। আর সেই ছেলেটা আবারও তার দিকে ক্যাবলার মত তাকিয়ে আছে। টুসুন রাগী চোখে তাকালে ও সেই আগের মত তার দিকে তাকিয়ে আছে।
.
–“মিষ্টি কে এনারা? জাকিয়া জিজ্ঞেস করে।
.
–“এ হলো শান্তা শান টুসুন। আমার কাজিন। আমার পিপিন একমাত্র বেবি। কানাডার বাসিন্দা। বলেই বেলা হেসে ফেলে।
.
–“আর এটা হলো আমার দিয়া। তোমরা তো সবাই চেন। আলিয়া কে জড়িয়ে বলে ওঠে।
.
–” মেরি জান আমাকে এটা বল তুই বিয়ে করলি কবে আর আমাকে একবার ও জানালি পর্যন্ত না। আমি আজকে তোকে সারপ্রাইজড করতে এসে নিজে সারপ্রাইজড হয়ে গেছি। মুখ বেকিয়ে বলে ওঠে।
.
. এদিকে সাঁঝ বিড়াল চোখে দেখে যাচ্ছে যা হচ্ছে। পকেটে হাত রেখে বেলার দিকে তাকিয়ে ভ্রু কুঁচকে ইশারা করে। বেলা একবার দেখে চোখ সরিয়ে নেয়।
.
–“আমি তো বাড়ি গিয়েছিলাম। ওখানে গিয়ে তোকে পেলাম না তোর মামী বললো তোর নাকি বিয়ে হয়ে গেছে। আমি তো আকাশ থেকে পড়লাম সোজা মাটিতে। আমি তো ভেবেছি তোর ওর মা কাম মামী তোর সাথে কোনো বুড়ো ভাম এর সাথে বিয়ে দিয়েছে। বাই দ্য ওয়ে। তোর বর কোথায় নিশ্চয়ই কোনো থুরথূরে বুড়ো ভাম হবে। সালা মেরে স্বর্গে পাঠিয়ে দেবো আমার বেবি কে বিয়ে করা দেখিয়ে দেবো। টুসুন চোখ মুখ মটকে হাত মুঠো করে বলে ওঠে।
.
–“হোয়াট! বুড়ো? সবাই একসাথে চিৎকার করে ওঠে।
.
. এদিকে বেলা সবার মুখ দেখছে আর টুসুন সবার চিৎকার করায় বড় বড় চোখ কিরে ফেলেছে আর বাকিরা তো বিস্ময় নিয়ে তাকিয়ে আছে।
.
. সাঁঝ তো হ্যাচকা টান মেরে বেলা কে নিজের বুকের ওপর এনে ফেলে। বেলার কোমরে হাত রেখে নিজের সাথে জড়িয়ে রাখে। এদিকে এইরকম একটা অ্যাকশন এর জন্য বাকি গুলোর মুখে হাসি ফুটে ওঠে আর শান্তার মুখ বড় হা হয়ে যায়।
.
–“লাইক সিরিয়াসলি বুড়ো ভাম। সাঁঝ ভ্রু নাচিয়ে বলে ওঠে।
.
. শান্তা মাথা নাড়া দেয়। তার অবাক হয়ে প্রশ্ন চোখে তাকায়।
.
–” তোমার মেরি জান এর বুড়ো ভাম হাজব্যান্ড। সাঁঝ বাঁকা হেসে বলে ওঠে।
.
. এদিকে সবাই সাঁঝ এর এমন কথা শুনে চিৎকার করে হেসে ওঠে। আর শান্তা বোকার মত দাঁড়িয়ে আছে। সাঁঝ হেসে এক হাত শান্তা কে টেনে নিজের সাথে এক হাত দিয়ে জড়িয়ে বলে ওঠে।
.
–” আধিঘরওয়ালি মে হুঁ তেরি জান কি হাজব্যান্ড। পাসান্দ আয়ে কেয়া ।
.
–” হুম । সরি। মুখ ফুলিয়ে বলে ওঠে শান্তা।
.
. এদিকে সবাই এত হাসাহাসি হলেও নিশান সেই একই পোজে দাঁড়িয়ে আছে।বেলা সবাই এর সাথে শান্তা কে পরিচয় করিয়ে দেয়।
.
–“বাই দ্য ওয়ে তুমি বিদেশে থেকে শাড়ি ওয়াও। সাঁঝ বলে ওঠে।
.
–“আসলে জিজ বেলার অনেক পছন্দের হল শাড়ি। আর আজকে বেলা কে সারপ্রাইজড করার জন্য পড়েছিলাম। ও সব সময়ে আমাকে শাড়ি পরে দেখতে চেয়েছিল। শান্তা হেসে বলে ওঠে।
.
–“ওহ ।হেসে বলে ওঠে সাঁঝ। তার মানে তোমার শাড়ি পছন্দের মনে মনে বলে ওঠে সাঁঝ।
.
. এদিকে নিশান এর সামনে এসে দাঁড়াতে নিশান এর ফেস রিয়্যাকশান দেখে অবাক হয়ে গেছে। সাথে সবাই অবাক হয়ে আছে। এতক্ষণ পর এবার সবাই খেয়াল করলো নিশান কে। আর এদিকে শান্তা বিব্রত বোধ করছে। নিশান এর দৃষ্টি দেখে যেনো খানিক লজ্জা ও পাচ্ছে কিন্তু কেনো বুঝতে পারছে না। নিশান এর দিকে তাকিয়ে জীব ভেঙায়।
.
–“তোমাকে খুব সুন্দর লাগে জীব ভেঙালে। নিশান ঘোরের মধ্যে বলে ওঠে।
.
–” হোওও।সবাই বলে ওঠে এক সাথে।
.
.
. 🎶 তুম ভি হো মে ভি হু
পাস আও তো কেহদু
আখির কিউ পাল মে ইউ
দিয়ানা মে হো গেয়া 🎶
.
. নিশান ওর সামনে দাঁড়ানো শান্তার হাত টেনে নিজের সাথে লাগিয়ে নেয়। কোমরে হাত রেখে ঘোরাতে থাকে। সে নিজেও বুঝতে পারছে না সে কি করছে। পুরো যেনো নেশায় বুঁদ হয়ে গেছে। শান্তা নিজেকে ছাড়াতে চাইলে ও পারে না। আর এদিকে বাকি গুলো সরে গিয়ে বসে বসে চোখের সামনে হওয়া রোমান্টিক সিন দেখছে।
.
. 🎶 তুমে জো মেইনে দেখা
তুমে জো মেইনে জানা

তুমে জো মেইনে দেখা
তুমে জো মেইনে জানা
জো হুস থা বো তো গেয়া
বাদান কি এ খুশবু জাগানে লাগে জাদু
তো হো কে বেকাবু দিল খো গেয়া 🎶
.
. নিশান শান্তা কে ঘুরিয়ে দিয়ে দূরে সরে গিয়ে দু হাত দু দিকে দিয়ে গেয়ে ওঠে।
.
. 🎶 তুমে জো মেইনে সোচা
তুমে জো মেইনে মানা
তুমে জো মেইনে দেখা
তুমে জো মেইনে জানা
জো হুস থা বো তো গেয়া 🎶
.
. নিশান হাঁটু গেড়ে মাটিতে বসে গালে হাত দিয়ে শান্তা এর দিকে তাকিয়ে আছে মিষ্টি হাসি নিয়ে। সবাই মিলে হাত তালি দিয়ে ওঠে এতেই ঘোর কেটে যায় নিশান উঠে দাঁড়িয়ে মুচকি হাসছে আর মাথা চুলকাচ্ছে।
.
–“ইয়ার নিশান বেবি । এটা কখন হল কি করে হল আর কোথায় হল। বেলা উত্তেজিত হয়ে নিশান এর কাছে গিয়ে বলে ওঠে।
.
–” জানি না বাস হয়ে গেলো। ইনোসেন্ট ফেশ বানিয়ে বলে ওঠে।
.
. বাকিরা হেসে ওঠে বেদ ওম বেলা রুহি একসাথে নিশান কে জড়িয়ে ধরে। আর এদিকে দাঁড়িয়ে থাকা সারা জাকিয়া সারিফ সাঁঝ আলিয়া হেসে ওঠে। আর শান্তা বিরক্ত রাগী বিব্রত হয়ে তাকিয়ে আছে। এদের এই মাঝে মাঝে যে যার জুড়ির হাসি মুখ খানি দেখছে মুগ্ধ চোখে আর ইশারায় কথা হচ্ছে। সারিফ কোনা চোখে রুহি কে দেখছে। ওম আর জাকিয়া ইশারা করে কথা বলছে। বেদ মাঝে মাঝে সারা দিকে তাকিয়ে চোখ টিপে দিচ্ছে। আর সাঁঝ তার এইসব কোনো লুকাছুপা সে বেলার দিকে দুষ্টু চোখে তাকিয়ে আছে আর বেলা তাকাতে ঠোঁটের ইশারা করে চুমু মত করছে।
.
–“ইয়ার আমাদের নিশান বেবি ও প্রেমে পড়েছে শেষ পর্যন্ত। তাও যেমন তেমন ভাবে নয় একেবারে গভীর ভাবে ডুবে হাবুডুবু খাচ্ছে। হায়। বেলা লাফিয়ে বলে ওঠে।
.
–” দেখ টুসুন নিশান কিন্তু তোকে প্রেম নিবেদন করে দিয়েছে। তাই ওকে একদম ঝুলিয়ে রাখবি না তাড়াতাড়ি নিজের গলায় ঝুলিয়ে নিবি। নিশান আমাদের লাকি বয়। বেলা ভাব নিয়ে শান্তা কে বলে ওঠে।
.
. সবাই এই কথাতে হেসে ওঠে। আর নিশান এবার সরাসরি তাকিয়ে মুচকি মুচকি হাসছে।
.
–“বলছিস তাহলে। শান্তা বলে ওঠে।
.
–” একদম ।বলেই হেসে ওঠে।
.
–“ওকে ।বলে শান্তা এগিয়ে এসে নিশান গালে একটা চুমু খেয়ে নেয়।
.
. নিশান এর চোখ গুলো পুরো বড় বড় হয়ে গেছে মনে হচ্ছে এখুনি বেরিয়ে আসবে। আর সাথে বাকিরা ও অবাক হয়ে গেছে শান্তা এর কাজ দেখে। নিশান ঠাস করে মেঝেতে পড়ে যায়। আর সাথে সবাই চিৎকার হেসে ওঠে।
.
.
–” আচ্ছা আচ্ছা অনেক হয়েছে হাসাহাসি এবার কাজের কথায় আসি আমাদের জ্যামিং শুরু করতে হবে। কালকে আমাদের নতুন ভাবে সং প্রেজেন্ট করতে হবে। কালকে স্বয়ং আর এম আসছে। ওম বলে ওঠে বাকিদের উদ্দেশ্য করে।
.
–” ইয়াহ রাইট। আমাদের সং তুলতে হবে। বেদ বলে ওঠে।
.
–“ইয়ার কাল যদি আমরা ঠিকঠাক ভাবে প্রেজেন্ট করতে পারি তাহলে আমাদের সাথে আর এম গ্রুপ রেকর্ড করবে রুহি এক্সাইটেড হয়ে বলে ওঠে।
.
–“ডোন্ট ওয়ারি। হয়ে যাবে সব। বেলা হেসে বলে ওঠে।
.
–“হোয়াট আর এম। সাঁঝ খানিকটা চিৎকার করে বলে ওঠে।
.
. এদিকে সবাই খুব অবাক হয়ে গেছে সাঁঝ এর এমন চিৎকার করাতে। এতক্ষণ সবাই হাসি খুশি হয়ে গল্প করছিলো কিন্তু সাঁঝ এমন চিৎকার আর ফেশ রিয়্যাকশান যা ভয় রাগ বিস্ময় মিশে থাকা দেখে সবাই অবাক হয়ে যায় বিশেষ করে বেলা।
.
–“হ্যাঁ আর এম কিন্তু কি হয়েছে আপনি এমন চিৎকার করে উঠলেন কেনো। বেলা জিজ্ঞেস করে ওঠে।
.
. এদিকে সাঁঝ এর মাথার রগ ফুলতে শুরু করেছে। মুখের এক্সপ্রেশন চেঞ্জ হতে শুরু করেছে। চোখ মুখ লাল হয়ে গেছে দেখে মনে হচ্ছে রেগে আগুন হয়ে যাচ্ছে। সাঁঝ কোনো কথা না বলে দুম দাম করে উঠে চলে যায়। আর এদিকে সবাই অবাক হয়ে রয়ে যায়। হটাৎ করে সাঁঝ এর যে কি হল কেউ বুঝতে পারছে না।

————-

–“ম্যাম কাজ হয়ে গেছে। ফোন কানে দিয়ে একজন লোক বলে ওঠে।
.
–” সব ঠিকঠাক মতো হয়েছেতো। দিশা ফোনের এপার থেকে বলে ওঠে।
.
–” ইয়েস ম্যাম আপনি চিন্তা করবেন না সব প্ল্যান মাফিক হয়ে গেছে। বিশ্রী হেসে বলে ওঠে।
.
–” ওকে মিস্টার মিশ্র আপনি আপনার পেমেন্ট পেয়ে যাবেন। দিশা বলে ওঠে।
.
–” ম্যাম পেমেন্ট নয় আমি প্রফেসর এর পোস্ট টা চাই। মিশ্র বলে ওঠে।
.
–” ওকে হয়ে যাবে। দিশা বাঁকা হেসে বলে ওঠে।
.
. ফোন রেখেই খানিক ক্ষণ শয়তানি হেসে ওঠে। সামনে পড়ে থাকা বেলার ছবি টা ধরে আগুনে ধরে। বাঁকা হেসে বলে ওঠে।
.
–“কাল তোর খেলা শেষ হবে বে…লা । খুব গান গাওয়ার ইচ্ছে না। আর তোর গান খুব ভালোবাসে সাঁঝ তাই না। কালকে সব কেড়ে নেবো তোর থেকে। সাঁঝ তোকে খুব ভালোবাসে না। দেখবি ওই সাঁঝ কালকে তোর থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে। তোকে ঘৃণা করবে। তাড়িয়ে দেবে সাঁঝ। সেই ব্যবস্থা করে রেখেছি। আর না হবে তোর গান গাওয়া আর না হবে বাঁচা। কালই তুই ভবলীলারসাঙ্গ হয়ে যাবি। আর তারপরেই হবে সাঁঝ আমার। শুধু আমার। বলেই বিশ্রী ভাবে হেসে ওঠে দিশা।
.
.
.
. 💝💝💝
.
. চলবে….
.
.
. ভুল ত্রুটি মার্জনা করবেন । সবাই নিজেদের মতামত জানাবেন। 😊 😊 😊

#
. চলবে….
.
. ভুল ত্রুটি মার্জনা করবেন রি-চেক করা হয়নি। সবাই নিজেদের মতামত জানাবেন। 😊 😊 😊

(একটু দেরি হয়ে গেলো। পার্ট টা একটু ছোটো হয়েছে জানি তবু ও 1500 ওয়ার্ড এর লিখেছি । আসলে আমি নিজে গল্প পড়ার মাঝে ডুবে ছিলাম তাই বুঝতে পারি নি কখন সময় পার হয়ে গেছে। ১০টার সময়ে লিখতে বসেছি। এইটুকু মধ্যে এত টুকু লিখতে পেরেছি জানি না কি খিচুড়ি লিখেছি। তাই ভুল ক্ষমার চোখে দেখবেন। গুনীত এভরিওয়ান 😊 😊 😊)

#

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here