#তোলপাড়💓
#সিজন২
#পর্বঃ০৯
#শান্তনা_আক্তার(Writer)
(কোনো ক্রমেই কপি করবেন না কেউ)
রিমি ক্লাস শেষ করে কথামতো আহসানের জন্য অপেক্ষা করছে। বারবার ফোন চেক করে সময় দেখছে রিমি। মেজাজ বেশ চটে আছে ওর। অপেক্ষা করতে কার ভালো লাগে? অপেক্ষা জিনিসটা সবচেয়ে বেশি অসহ্যকর। এক প্রকার মরণ যন্ত্রণা। যা জীবন্ত মানুষকে মরীচিকার পেছনে ছুটতে অনায়াসে বাধ্য করতে পারে। অপেক্ষার প্রহর কতটা অসহনীয় তা শুধু যে করে সেই বোঝে। রিমিও হারে হারে টের পাচ্ছে। নাক মুখ ইতোমধ্যে লাল বর্ণ ধারণ করেছে রিমির। নাকের ডগাটা স্বাভাবিকের তুলনায় অতিরিক্ত লাল। মনে হচ্ছে কেউ লাল রঙ লেপে দিয়েছে। আহসান দূর থেকে রিমিকে দেখে মিটিমিটি হাসছে। আহসান রিমির আগে থেকেই এখানে এসে অপেক্ষা করছিল। কিন্তু ওর প্লান রিমিকে একটু অপেক্ষা করাবে। তাইতো বাহিরে না বেড়িয়ে গাড়ির ভেতরেই ঘাপটি মেরে বসে আছে। এদিকে রিমির রাগে মাথা ফেটে যাচ্ছে।
‘স্পষ্ট করে বললাম ১২টার মধ্যে থাকবো আমি। এখনো আসার নাম নেই। এতক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে ভালো লাগে? বড়লোক বলে কি কথা দিয়ে রাখার প্রয়োজনবোধ করে না নাকি? লেজ কাটা লোক,শামুকভাঙা হাসের খাদ্য, ধানের সার, বিচুটি পাতার বীজ একটা।’ রিমি মুখে যা আসছে বলে যাচ্ছে। আচমকাই আহসান পেছন থেকে বলে ওঠে, ‘আমাকে বলছেন নাকি এসব?’
রিমি আহসানের কন্ঠে সোজা হয়ে গেল। তারপর ঢোক গিলে আস্তে আস্তে পেছনে ফিরে তাকায়। আহসান একটা ভ্রু উঁচিয়ে তাকিয়ে আছে রিমির দিকে। রিমি আড়ষ্ট গলায় বলল, ‘আমি আপনাকে কেন বলবো? আমি তো ওই, ইয়েকে বলেছিলাম।’
‘ইয়েকে বলতে কিয়েকে? কার কথা বলছেন?’
‘ওইতো ওইযে টাক্কু লোকটাকে বলেছিলাম।’
‘কিহ! টাক্কু আবার কি?’
‘টাক্কু মানে বেলমাথা, নেড়া। ওইতো মুলো হাতে বসে আছে দেখুন। রাস্তার ওপারে তাকান।’
আহসান রাস্তার অপজিটে তাকিয়ে দেখলো একজন নেড়া মাথার লোক সবজি বিক্রি করছে। তার হাতে তাজা সাদা সাদা মুলা।
আহসান চেহারায় বিরক্তি ছাপ টেনে বলল,
‘আপনার চোখ কি হাওয়াতে ভেসে বেড়ায় নাকি সর্বত্র?’
‘কেন, কেন?’
‘তাহলে এতো দিকে চোখ যায় কিভাবে?
‘এটা আমার ছোট বেলার স্বভাব। কে নেড়া, কে ঘাড়ত্যাড়া কে বা চোখ ট্যারা, সব খেয়াল রাখি বুঝলেন? আমার বোন আর আমি রাস্তায় মানে বিচিত্র প্রাণীর খোঁজে হারিয়ে যাই।’
‘ব্যাড হ্যাবিট! খুব খারাপ। আমার দাদিয়া বলে নিজের চরকায় তেল দেওয়া ভালো। অন্যকে নিয়ে মাতামাতি করলে দেখা যাবে একদিন নিজেকেও সেরকম কোনো সিচুয়েশনে পড়তে হয়। তাই অন্যের খুদ দেখতে নেই।’
‘খুদ কি আর স্বাদে দেখছি? কিছু মাথায় আসছিল না বলেই যেটা পেরেছি বলে দিয়েছি।’-বিরবির করে বলল রিমি।
‘কি বলছেন আপনি?’
‘না কিছুই না। আপনি বলুন আমাকে এতো অপেক্ষা করানোর মানে কি?’
‘চোখ রাঙানি? তাও আবার আমাকে? ছিনতাই করে আবার চোখ রাঙাচ্ছেন? ছিনতাইকারীর এলোপাথাড়ি চেনেন?’ আহসান কথা বলছে আর রিমির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আর রিমি ভয়ে পিছাচ্ছে।
‘দেখুন এটা হাটবাজার। এখানে অবিবাহিত ছেলে মেয়ে এভাবে কথা বললে একেক জন একেক কথা বলবে। এটা নিশ্চয়ই ভালো না।’
আহসান থেমে গিয়ে বলল, ‘ঠিক, তো চলুন অন্য কোথাও গিয়ে কথা বলা যাক।’
‘ক ক কোথায় যাব আ আ আমি?’
‘বাহ! আপনি তোতলালে তো আপনাকে বেশ কিউট লাগে।’
রিমি আহসানের কথায় হা করে তাকিয়ে রইলো আহসানের দিকে।
‘এখন আবার হা করে তাকিয়ে আছেন! এভাবে না তাকিয়ে চলুন আমার গাড়ি নিয়ে এসেছি। আপনি শুধু জায়গার নাম আর ডিরেকশন বলবেন আমি নিয়ে যাচ্ছি।’
‘কিন্ত আপনি অচেনা একজন। আমি কিভাবে যাব আপনার সাথে?’
‘ওহ! অচেনা একজনকে বিয়ে করার স্বপ্ন দেখেন, সেটা চলবে। কিন্তু তার সাথে ঘুরে বেড়াতে প্রবলেম?’
রিমি নিজের প্রশ্নের জালেই আটকা পড়ে গেল। রিমি পারছে না নিজের চুল একটা একটা করে ছিড়তে। কেন যে মনের কথা শেয়ার করতে গিয়েছিল ও সেই আফসোস টাই করছে এখন।
‘আপনি কি চাইছেন বলুনতো?’
‘কি আবার? প্রশ্নটা অহেতুক হয়ে গেলনা? আমি তো ক্লেয়ার করে বলেছি যে আপনাকে ছিনতাই করার শাস্তি দেব। তাও আবার নিজ হাতে। নইলে পুলিশের শরণাপন্ন হতে বাধ্য হবো।’
‘কি বলছেন? না থাক। আপনিই শাস্তি দেন। আমরা তাহলে পাশেই একটা শিশু পার্ক আছে সেখানে যাই কেমন?’
‘এবার লাইনে এসেছেন। হুম চলুন।’
ওরা দুজন শিশু পার্কে টিকিট কেটে ঢুকলো। চারিদিকে সকল রাইডে বাচ্চা আর বাচ্চা। শিশু পার্ক বলে কথা। আহসান হাটতে হাটতে দূরে একটা মাঠে গেল রিমিকে নিয়ে। তারপর বেঞ্চে গিয়ে বসে রিমিকেও বসার জন্য বলল। কিন্তু রিমি মাথা নাড়িয়ে না বলল। অর্থাৎ সে বসবে না। আহসান ঠোঁটের স্মিত হাসি ফুটিয়ে বলল,
‘ওকে, তো কি খাবেন বলুন?’
‘আপনি আমাকে খাওয়াতে এনেছেন বুঝি?’
‘না তবে আমার একটা রুলস আছে। সেটা হলো কাউকে শাস্তি দেওয়ার আগে পেট ভরে খাইয়ে নেই। তো আপনার বেলায় কেন নয়?’
‘আমি কিছু খাব না।’
‘ওকে তাহলে মূল কাজেই যাই। তো আপনার শাস্তি হলো আপনি আপনার বলা কথাটা রাখবেন। মানে যেটা আমাকে বলেছিলেন সেটা করবেন এখন।’
‘কথা রাখবো? আমি আবার কি কথা দিয়েছি আপনাকে?’
‘কথা দেননি ঠিক। বাট বলেছিলেন। আপনার গোলাপ বিছানো ঠোঁট জোড়া দিয়ে উচ্চারণ করেছিলেন। মনে করুন।’
‘কি বলেছি? মনে পড়ছে না সঠিক। আপনিই বলুন।'(দাঁত কামড়ে বলল রিমি)
‘এইযে আহসানকে সামনে পেলে প্রপোজ করবেন সেটা। এইতো আমি সামনে বসে আপনার। তো করে ফেলুন প্রপোজ।’
রিমির দম আটকে আসলো। রকেট গতিতে হৃদ স্পন্দন স্পন্দিত হতে লাগলো। গলার স্বর ছোট হয়ে গেল। তাই কিছু বলতে গিয়েও আটকে গেল।
#তোলপাড়💓
#সিজন২
#পর্বঃ১০
#শান্তনা_আক্তার(Writer)
(কোনো ক্রমেই কপি করবেন না কেউ)
রিমি বিস্মিত চোখে বলল,
‘আমি প্রপোজ করবো! কিন্তু আমি কিভাবে করবো?’
‘জ্বি আপনি প্রপোজ করবেন। কিভাবে করবেন না করবেন তা টোটালি আপনি জানেন। দ্যাট’স নান অব মাই বিজনেস।’
আহসানের ভাব ভঙ্গি দেখে রিমির কলিজায় এক ফোঁটা পানি থাকলেও তা শুকিয়ে কাঠ প্রায়।
‘আমি তো কখনো প্রপোজ করিনি কাউকে। অন্য কিছু বলুন।’
‘উহু, যা বলেছি তাই। কেন আপনি আমাকে বলেননি যে আপনি আহসানকে দেখা মাত্রই প্রপোজ করবেন?’
‘ইয়ে হ্যাঁ, মানে না।’
‘আপনি বলেননি?’ আহসান চোখ পাকিয়ে গলার স্বর গাঢ় করে বলল। তাই দেখে রিমি ভয় পেয়ে বলল, ‘ হ্যাঁ বলেছি তো।’
‘তো সমস্যা কোথায়?’
‘সমস্যা হচ্ছে আমি তখন জানতাম না আপনি আহসান।’
‘এখন তো জানলেন।’
‘তা জানলাম। কিন্তু তখনকার সিচুয়েশন আর এখনকার সিচুয়েশন এক নয়।’
‘কেন তা জানতে পারি?’
‘আসলে আমি ছোট বেলায় স্বপ্ন দেখতাম আপনার বাড়ির বউ হবো। আপনাকে বিয়ে করবো। কিন্তু,,
‘কিন্ত কি?’
‘সেই স্বপ্ন আপনার সাথে পরিচয় হওয়া অবধি ছিল। তবে দুদিন যা সব ঘটনা ঘটে গেল, তাতে আমার সব স্বপ্ন কিভাবে কিভাবে যেন মাথা থেকে গায়েব হয়ে গেল।’
‘সেটা তো আমি শুনবো না। আপনি বলেছেন তাই করে দেখাতে হবে। আর আমি কিন্তু বলেছি এটা আপনার শাস্তি।’
‘এটা খুব কঠিন শাস্তি।’
‘আমি ১-৩ দিন গুনবো। এর মধ্যে তৈরি করুন নিজেকে, নইলে আমার একটা কল আর পুলিশ হাজির হয়ে যাবে। আর আপনি যদি ভাবেন আপনি পুলিশকে কার্ড ছিনতাই এর কথা বলে বেঁচে যাবেন তাহলে ভুল ভাবছেন। কারণ সিসি ক্যামেরায় দেখা যায়নি আপনি কি নিয়ে পালিয়েছেন। সেখানে দেখা গিয়েছে আপনি পকেট থেকে কিছু একটা নিয়ে দৌঁড়েছিলেন। এতো দ্রুত সব করেছিলেন যে আপনি ফেঁসে যেতে বাধ্য। যেকোন পুলিশ আপনার নামে অনায়াসে মামলা করতে বাধ্য। এখন আপনি বলুন কোনটা এক্সেপ্ট করবেন? প্রপোজ নাকি জেল?’
‘না, আমি প্রপোজ করবো।’
‘গুড তো করুন।’
রিমি চোখ অফ করে বলল, ‘যেদিন প্রথম আপনাদের বাড়ির সামনে দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় আমি খুব ভালো করে আপনাদের বাড়িটা পর্যবেক্ষণ করেছিলাম, সেদিন এক অন্যরকম একটা চাওয়া অনুভব হচ্ছিলো। বলেছিলাম, ইশ বাড়িটা যদি আমার হতো! ধিরে ধিরে আমি বাড়িটার ভেতরে যাওয়ার স্বপ্ন দেখি। তারপর একদিন আপনাকে দেখতে পেয়েছিলাম মস্ত একটা গাড়ির ভেতর। আমার স্বপ্নের বাড়িটা দিয়ে বের হতে। সেদিন দারোয়ান দাদুটাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম যে ছেলেটা কে? তখন জানতে পারি আপনি আহসান তালুকদার। রঞ্জিত তালুকদারের ছেলে। সেই থেকে ভাবতে শুরু করি আপনাকে আমি বিয়ে করবো। ইচ্ছেটা তীব্র আকার ধারণ করে আমার বেড়ে ওঠার সাথে সাথে। বিশ্বাস করুন আপনার আসার কথা শুনে আমি খুব খুশি হয়ে গিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম আপনার সাথে দেখা করবো। খুব বেশি এক্সাইটেড ছিলাম আপনাকে দেখার জন্য। কিন্তু আমি ভাবিনি আপনার সাথে খুব অদ্ভুত ভাবে দেখা হয়ে যাবে আমার। আমি যে কিভাবে বলবো আপনাকে? আমি আসলে আপনার বাড়ির বউ হতে চেয়েছিলাম ঠিকই তবে শুধুই আপনার বাড়ির বউ হওয়ার জন্য। এর থেকে বেশি কিছু ভাবিনি আমি। ছোট বেলার স্বপ্নটা যে একটা কঁচি পাতার মতো নরম অপরিপক্ক এতোদিন তা বুঝতে পারিনি। আজ বুঝলাম ওটা আমার ভ্রম ছিল। আমি সেটা একরাতেই বুঝে গিয়েছি। যা ১২টা বছর বুঝিনি তা এক রাতই আমাকে বুঝিয়ে দিল। আমি প্রপোজ কিভাবে করবো জানি না। তবে প্রপোজ করার মতো অনুভূতি জাগাতে পারছি না। আপনি কি বুঝতে পারছেন আমি কি বলতে চাইছি?’ রিমি চোখ খুলে আহসানের দিকে তাকালো। ভেবেছিল আহসান খুব রেগে যাবে রিমির কথায়। কিন্তু আহসান ঠোঁট বাকিয়ে হাসছে। তা দেখে রিমির সব ভাবনা যেন মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে। রিমি আবার বলল, ‘আপনি হাসছেন কেন?’
‘তো কি করবো? আমি সফল হয়েছি বলেই হাসছি।’
‘মানে বুঝলাম আমি! সফল হয়েছেন কিভাবে?’
‘এইযে আপনি বুঝতে পারলেন রিয়ালিটিটা। সেভাবে।’
‘বুঝিয়ে বলবেন প্লিজ?’
‘ওকে। আপনি যে আমার প্রতি নয়, আমার বাড়ি গাড়ির প্রতি ইন্টারেস্টেড তা আমি প্রথম পরিচয়েই বুঝে গিয়েছিলাম। যে মেয়ে আহসানের সাথে সামনাসামনি কথা না বলে, কেমন দেখতে তা না জেনে ছোট বেলার জের ধরে প্রপোজের কথা বলে,বিয়ে করার স্বপ্ন দেখে। আমি গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারবো সেই মেয়ে ছেলেটাকে নয়, বরং তার স্বপ্নের জন্য বিয়ে অবধি চলে গিয়েছে। মেয়েটির মনে প্রাসাদের প্রিন্স নয়, প্রাসাদটাই মূখ্য মনি। আর এই জিনিসটাই বোঝাতে চেয়েছি আমি। কিন্তু আপনি যে নিজে থেকেই বুঝে গিয়েছেন এটা জেনে খুব খুশি হলাম। তো আমার সফলতার কারণ টা ক্লেয়ার তো?’
‘আপনি যে পুলিশের ভয় দেখালেন সব নাটক ছিল?’
‘ইয়েস ম্যাম। তবে আপনার জায়গায় অন্য কেউ হলে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই এফআইআর করতাম।’
‘আর ওইদিন একজন সাধারণ মানুষের বেশভূষা ধারণ করার মানে কি? ওটাও কি প্ল্যানের মধ্যে পড়ে? মানে আপনি আমার সম্পর্কে আগে থেকেই জানতেন?’
‘না এটার পেছনে অন্য এক কারণ। আমি আপনাকে চিনতাম না। ছোট বেলায় কবে দেখেছি না দেখেছি মনে পড়ছে না।’
‘তো কারণটা কি?’
‘খুব সিম্পল একটা কারণ। আমরা সব কাজিন ট্রুথ ডেয়ার গেম খেলছিলাম। আমি ডেয়ার নেওয়ায় আমাকে মধ্যবিত্ত সাজার টাস্ক দেওয়া হয়। সেটা করতেই আজ এইখানে নিয়তি নিয়ে আসলো।’
‘কিহ! ডেয়ার নিয়ে মধ্যবিত্ত সাজা! দারুণ তো।’ বলে ফিক করে হেসে দেয় রিমি। রিমির আচমকা হেসে ওঠার দৃশ্যটা একদম আহসানের মনের দেয়ালে গিয়ে ধাক্কা খেল। এক অপূর্ব অনুভূতির সৃষ্টি হলো। আহসান এর হাত দুটো বুকের সাথে বেঁধে বলল,
‘আপনার বয়স কত?’
আহসানের অদ্ভুত প্রশ্নে রিমির হাসি থেকে গেল। ও ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে বলল,’বয়স জেনে কি করবেন?’
‘জানার ইচ্ছে হলো কারণ আপনি বয়সের তুলনায় খুব ইমম্যাচিউর। আই থিংক আপনার ছোট বোন কি যেন নাম? তিয়াসা। রাইট?’
‘হুম তো?’
‘তো আমার মনে হয় তিয়াসা আপনার থেকে ম্যাচিউর। তাই বয়স জানতে চাওয়া। আমার মনে হয় আপনার বার্থ সার্টিফিকেট বদলানো উচিত। সেখানে দিন তারিখ আগের জায়গায় রেখে সাল কমিয়ে আনলে তাহলে যদি আপনার সাথে যায়।’
‘কি বলতে চান?’
‘নাথিং, চলুন আপনার বাড়িতে ড্রপ করে দিয়ে আসি।’
‘আমার এখন খুব খিদে পেয়েছে। টেনশনে ফেলে এখন কিপ্টামি করে আমাকে বাড়িতে দিয়ে আসতে চান?’
‘তাই? ওকে বলুন কি খাবেন? ওইতো একটা রেস্টুরেন্ট দেখা যাচ্ছে। যাওয়া যাক সেখানে।’
‘আমি কি বলেছি রেস্টুরেন্টে খাব?’
‘তো?’
‘এইখানে আসার সময় আমি ভুট্টার গাড়ি দেখেছি। বৃষ্টিমহল চারিদিকে। তো ভুট্টা খাব আমি।’
‘আচ্ছা তাই হবে।’ ওদের কথার মাঝেই একজন লোক একটা বাচ্চা কোলে বলল,
‘আজব অভিভাবক তো আপনারা দুজন? বাচ্চাকে হাতি ঘোড়ায় চড়িয়ে এখানে এসে রোমান্স করছেন?’
‘আপনি কি বলতে চান হুম?’ রিমি বলল।
‘কি বলবো আমি? আপনাদের বাচ্চা কোথায় খেয়াল আছে নাকি ভুলে গেছেন চারিদিকের মহল দেখে? এসব এখানে করছেন কেন? সরকার কি প্রেমিক প্রেমিকাদের জন্য পার্ক বানায়নি যে বাচ্চাদের পার্ক চোখে পড়লো? যান বাচ্চার কাছে যান।’
‘বাচ্চা কোথা থেকে আসবে? আপনি না জেনে কি যা তা বলছেন ভাই?’
রিমি আর লোকটার মধ্যে তুমুল ঝগড়া বেধে গেল। আহসান প্রথমে মিটমিটিয়ে হাসলেও পরবর্তীতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক না দেখে ব্যাপার টা সামলে নিল। আর রিমিকে নিয়ে চলে আসলো।
‘আপনি এতো ঝগড়া করতে পারেন? আমার তো মাথা খারাপ হয়ে যেত আরেকটু হলেই।’
‘তো কি করতাম? আমাদের কি বললো শুনলেন না? আমরা কি বাচ্চা নিয়ে এসেছি?’
‘আপনি থাকতে আবার বাচ্চা?’
‘কি বললেন?’
‘না ভুল হয়েছে। আপনি বাচ্চা নন। আপনি তো একজন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ঝোগড়ুটে মেয়ে। আমি আবার এই ঝগড়া লাইক করি না।’
‘এখন আপনার সাথে ঝগড়া করতে উসকানি দিবেন না বলে দিলাম!’
‘নাহ, আমার সেই দুঃসাহস নেই। চলুন আপনার ভুট্টার কাছে যাওয়া যাক।’
#চলবে,,