তোলপাড়
ইসরাত জাহান তানজিলা
পর্ব-২৯
______________
লঞ্চঘাট থেকে ট্যাক্সি নিলো অরূণীর মামার বাসার উদ্দেশ্যে।অরূণীর মামা নুরুল উদ্দিন থাকে পটুয়াখালী সদরে। ট্যাক্সি মিনিট পাঁচেক চলার পর রুদ্র কাজের ছেলে’টা কে প্রশ্ন করে, “যেতে কতক্ষণ লাগবে?”
– “তর সইছে না বুঝি?” কিরণের গলায় খানিক কৌতুকে সুর। কথাটা বলেই হাসলো কিরণ।
– “বিয়া করতে যাচ্ছি আমি না? একটু পর বাসর তাই আমার তর সইছে না?”
দুই জনের তর্কাতর্কির জন্য কাজের ছেলেটা আর কথা বলার সুযোগ পেলো না। ছেলের টার বয়স তেরো-চৌদ্দ হবে।গায়ের রং তামাটে।পরনের শ্যার্ট,প্যান্ট মলিন। পায়ের জুতা জোড়ারও ধুলোবালিতে বিবর্ণ। নাম সোলেমান। কিরণের সাথে তর্কাতর্কি শেষ হলে রুদ্র সোলেমান’কে ফের প্রশ্ন করে, “আর কতক্ষণ লাগবে যেতে?”
সোলেমান এক ঝলক হেসে উত্তর দেয়, “বেশিক্ষণ লাগবে না ভাই।”
রুদ্র’কে দেখে অরূণীর প্রতিক্রিয়া কেমন হবে ভাবতেই রুদ্রর মন উথাল পাতাল উত্তেজনায় মেতে ওঠে।অরূণীর জন্য পটুয়াখালী এসে পড়লো! নিজের এই পাগলামির কথা ভেবে মনে মনে হাসলো রুদ্র। হঠাৎ রুদ্র ভ্রু কুঁচকে ফেললো।যেন মহা দুশ্চিন্তায় পড়লো।অরূণী কি জেনেছে রুদ্র নুরুল উদ্দিনের বাসায় যাবে? কিরণ’কে ডাকলো, “এ্যাই কিরণ।”
রাতে লঞ্চে তেমন ঘুম হয় নি কিরণের।কিরণ হলো ঘুমকাতুরে মানুষ।ট্যাক্সিতে বসে ঘুম জড়ানো চোখে ঝিমুচ্ছে। রুদ্র কিরণের পিঠে চাপড় দিয়ে বলল, “আরে ভাই কি শুরু করলি তুই?ট্যাক্সিতে বসেও ঘুমাচ্ছিস?”
কিরণ ঘুম লেগে আসা চোখ দু’টো টেনে টেনে মেলল। আল্লাহ্ বলে হাই তুলে লম্বাটে হাত দু’টো টেনে। বিড়বিড় করে বলে, “কী ডাকিস কেন?”
– “ঘুমা ঘুমা। হঠাৎ দেখবি ট্যাক্সির ঝাঁকুনি’তে ট্যাক্সি থেকে পড়ে রাস্তায় চিৎপটাং হয়ে আছিস।”
কিরণের টনক নড়লো।সোজা হয়ে বসলো।গায়ের শার্ট’টা কুঁচকে ছিলো খানিক। সেটা’কে ঠিক করতে লাগলো।
– “রাতে তো ভাইয়া ফোন দিয়ে অরূণীর মামা’কে জানিয়েছে আমরা যাবো তাঁর বাসায়।সকালে আবার আমাদের নিতে মানুষ পাঠালো।অরূণী তো তাহলে আগে থেকেই নিশ্চয়ই জেনে গেছে।”
– “তুই হঠাৎ এত আবেগী হয়ে গেলি কেন?জানলে জানছে। তো কি হইছে?”
কিরণ আবার চোখ দুটো বন্ধ করে রইলো। রুদ্র সেদিকে বার কয়েক তাকালো খানিক বিরক্ত নিয়ে। চোখ বন্ধ রেখেই কিরণ বলল, “অরূণীর সংস্পর্শে তুইও অরূণীর মত হয়ে গেছিস। পটুয়াখালী এসে পড়া বাড়াবাড়ি রকমের পাগলামী না? ছোঁয়াচে রোগ দোস্ত, ছোঁয়াচে রোগ! তোর সাথে থাকতে থাকতে আমায়ও না জানি কবে পেয়ে বসে এই রোগে!”
বলেই অট্টহাসিতে ফেটে পড়লো কিরণ।কথা’টা যুক্তিসংগত বটে। রুদ্রও কিরণের সাথে হাসিতে যোগ দিলো। সোলেমানের কাছে অরূণীর কথা জিজ্ঞেস করবে?এসব ভাবতে ভাবতে হঠাৎ জিজ্ঞেস করে ফেলে, “সোলেমান, নুরুল আংকেলের বোনের মেয়ে অরূণী’কে চিনো?”
সোলেমান অবাক গলায় বলে, “চিনমু না মানে?হে তো এহন মোগো বাসায়ই।অরূণী আফায় এত্ত কতা কয়।আসতে আসতে পেটের চামড়া ব্যতা হইয়া যায়।”
সোলেমানের কথা বুঝতে রুদ্রের অসুবিধা হলো বেশ।কথা গুলো বোধগম্য হতে কয়েক মিনিট লাগলো।কিরণ হাসতে হাসতে বলল, “সোলেমান তুমি কি হিন্দিতে কথা বললা?”
– “আমি হিন্দি কথা কইতে পারি না।আমার বড় বইনে পারে।হে হারাদিন হিন্দি সিরিয়াল দেহে।হিন্দি এক্কালে মুখাস্ত হের।”
সোলেমানের কথা ঠিক না বুঝলেও মজা পাচ্ছে কিরণ। উৎসুক আর কৌতূহলী হয়ে একটার পর একটা প্রশ্ন করে যাচ্ছে সোলেমান’কে। হঠাৎ গাড়ি থামে। জড়তার কারণে রুদ্র সামনের দিকে ঝুঁকে পড়ল।আর একটু হলেই ট্যাক্সি থেকে পড়ে যেত। সোলেমান রুদ্রর অবস্থা দেখে ঠোঁটের নিচে দু পাটি মোটা দাঁত বের করে হাসে। রুদ্র কঠিন দৃষ্টিতে তাকাতেই হাসি মিইয়ে যায় সোলেমানের।গাড়ি থেকে নেমে সামনের দিকে তাকালো রুদ্র। তিন তলা একটা বিল্ডিং। সোলেমান বলল, “হ্যারা তিন তলায় থাহে।”
রুদ্রর খেয়াল নেই সোলেমানের কথার দিকে। রুদ্রর মনে চলছে অন্য কথা।কেমন একটা অস্বস্তি রুদ্র’কে জেঁকে ধরেছে। কিরণ রুদ্র’কে সামনের দিকে হাঁটার তাড়া দিয়ে চাপা গলায় বলল, “হাঁট শালা! এই বয়সে তোরে ভীমরতিতে পেয়েছে। একদম পটুয়াখালী চলে এসেছিস।”
রুদ্র সামনের দিকে হাঁটে। স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করে।কীসের জন্য অস্বস্তি লাগছে এই প্রশ্নে উত্তর খোঁজে। নিজের এই নাস্তানাবুদ অবস্থা দেখে রুদ্র নিজেই বিরক্ত হচ্ছে।
– “যে মেয়ে ফোন দিতো বলে সিম চেঞ্জ করে ফেলতি সে মেয়ের জন্য এখন একদম উন্মাদ হয়ে গেছিস।একেই বলে সময় বন্ধু।”
– “তুই থামবি?”
আসা’টা কী উচিত হয়ছে? তিনতলায় যাবার সিঁড়ি ভাঙতে ভাঙতে রুদ্রর মনে এসব চিন্তা জাগে। সোলেমান কলিং বেল বাজানোর সাথে সাথে চম্পা বেগম দরজা খুলে দেয়। নুরুল উদ্দিনের স্ত্রী চম্পা বেগম।বিয়ের সময় নুরুল উদ্দিনের সাথে বেশ কথাবার্তা হলেও চম্পা বেগম’কে দেখে নি বোধ হয়। দেখলেও অত মানুষের ভিতর খেয়াল নেই। রুদ্র হালকা হেসে সালাম দেয়।চম্পা বেগম সালামের জবাব দিয়ে হৃষ্টচিত্তে বলে, “কেমন আছো তোমরা?আসো,আসো।ভিতরে আসো।”
রুদ্র বাসার ভিতরে ঢুকে এদিক-ওদিক তাকাচ্ছে অস্থির চোখে।অরূণী কোথায়? নুরুল উদ্দিন রুদ্র আর কিরণের উদ্দেশ্যে বলল, “আগে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করো। তারপর কথা হবে।”
এসব কথার মাঝে কিরণ ইশারা-ইঙ্গিত বার বার রুদ্রর দিকে তাকিয়ে বলছে, “অরূণী কোথায়?”
রুদ্রর মনেও একই প্রশ্ন।দুইজন চোখ চাওয়াচাওয়ি করলো বার কয়েক। নুরুল উদ্দিন চম্পা বেগম’কে উদ্দেশ্যে করে বলল, “ওঁদের কে গেস্ট রুম’টা দেখিয়ে দেও।তোমরা ফ্রেশ হয়ে নেও।”
দু দন্ড থেমে নুরুল উদ্দিন চম্পা বেগমের উদ্দেশ্যে আবার বলল, “নাস্তা রেডি তো?”
চম্পা বেগম হ্যাঁ সূচক ভঙ্গিতে মাথা নাড়িয়ে রুদ্র আর কিরণ’কে উদ্দেশ্য করে বলল, “আমার সাথে এসো বাবা।”
রুদ্র গেস্ট রুমে ঢুকে খাটের উপর ধপ করে বসে পড়লো।বিলাপ করে বলল, “কিরণ আমারে সত্যি ভীমরতিতে পাইছে রে।”
রুদ্রর কন্ঠস্বর ক্লান্ত।কিরণ তেতো মেজাজ, “ধুর শালা!অরূণী কই?না-কি তোকে দেখে পালিয়েছে?”
রুদ্র কি যেন ভেবে হঠাৎ করে বলে উঠলো, “আচ্ছা কিরণ আমার মাথায় কী ভুত চাপছে?আমি ঢাকা থেকে পটুয়াখালী এসে পড়েছি! আমি ঠিক আছি তো?”
– “না তোর মাথায় পেতনি চাপছে। এখন আমার কিছু ভাবতে ইচ্ছে করছে না।পেট ক্ষুধায় চোঁ চোঁ করছে।”
কিরণ খাট ছেড়ে উঠে ওয়াশরুমে ঢুকে পড়লো। রুদ্র গা ছাড়া ভাব নিয়ে খানিকক্ষণ শুয়ে থাকলো। কিছুক্ষণ পর অরূণী’কে খোঁজার উদ্দেশ্যে রুমের দরজার কাছে যায়।
গেস্ট রুমের পাশের রুম থেকে অরূণী বের হলো।হাতে ব্রাশ,চুল গুলো উস্কো খুস্কো। বোঝা গেল মাত্র ঘুম থেকে ওঠলো। রুদ্র দরজার সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে তাকিয়ে আছে অরূণীর দিকে।কেবল আস্তে করে ডাকলো, “অরূণী।”
অরূণী যেন ভুল কিছু শুনেছে। আশেপাশে তাকাচ্ছে। হঠাৎ অরূণীর দৃষ্টি আটকে গেল রুদ্রের দিকে। বিস্ফোরিত চেহারা নিয়ে তাকালো কয়েকবার। হাতের ব্রাশ’টা আচমকা ছুঁড়ে ফেলে গলা ফাটিয়ে চিৎকার দিয়ে দৌড় দিলো।ভয়ার্ত আর ত্রাসিত হয়ে কাঁপা কাঁপা গলায় ডাকলো, “মামা, মামা,মামা।”
নুরুল উদ্দিন আর চম্পা বেগম দৌড়ে গেল অরূণীর কাছে। এভাবে চিৎকার চেঁচামেচি শুনে কিরণও ওয়াশরুম থেকে বেড়িয়ে আসলো।রুদ্র বেকুব হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। কিরণ অস্থির গলায় প্রশ্ন করে, “কিরে কি হলো?”
রুদ্র উৎফুল্ল চিত্তে হাসতে হাসতে বলল, “আমি জানতাম অরূণী আমায় দেখলে ভুত ভেবে ডাক-চিৎকার দিবে।”
– “ভাবারই তো কথা।অরূণীর জায়গায় যে কেউ হলেই এমন করতো।অরূণী তাহলে থেকে জানতো না আমরা আসবো।”
কিরণ থেমে তীব্র উৎসুক হয়ে জিজ্ঞেস করে, “দোস্ত কি হয়েছিলো?”
– “আমি দরজার সামনে আসতেই দেখি অরূণী পাশের রুম থেকে বের হচ্ছে।আমি ওঁর নাম ধরে ডাকলাম। আমায় দেখে কয়েকবার বিস্ফোরিত চোখে তাকিয়ে দৌড় দিলো।”
কিরণ এবার হাসতে লাগলো।অরূণীর শরীর ঈষৎ কাঁপছে।চেয়ার বসে আছে স্তম্ভিত হয়ে। নুরুল উদ্দিন আর চম্পা বেগম বার বার জিজ্ঞেস করছে, “অরূ কী হয়েছে?কী দেখে ভয় পেয়েছিস?”
অস্থির গলায় প্রশ্ন করছে সবাই।অরূণী ফ্রীজের ঠাণ্ডা পানি ঢকঢক করে খাচ্ছে। রুদ্র আর কিরণ রুম থেকে বের হয়ে সেদিকে আসতে লাগলো।অরূণী আবার দেখলো রুদ্র’কে।সাথে কিরণ।অরূণী ফাঁকা মস্তিষ্ক নিয়ে তাকিয়ে রইল। কিছুই বুঝতে পারলো না। অস্ফুট স্বরে নুরুল উদ্দিনের দিকে তাকিয়ে বলল, “মামা আমি যা দেখি তোমরাও কি তা দেখো?”
নুরুল উদ্দিন আর চম্পা বেগম দুই জন দুই জনের দিকে তাকালো।চম্পা বেগম চিন্তিত মুখে বলল, “পেতনি ভর করেছে না-কি?”
রুদ্র আর কিরণ’কে দেখে নুরুল উদ্দিন অরূণীর প্রসঙ্গ’টা থেকে বেরিয়ে এসে বলল, “চম্পা ওঁদের নাস্তা দেও।”
অরূণীর মূর্তির ন্যায় ঠাঁয় বসে রইলো। রুদ্র অরূণীর দিকে তাকিয়ে হাসলো।স্বাভাবিক গলায় জিজ্ঞেস করল, “অরূণী কেমন আছো?”
অরূণী কিছু বলতে গিয়েও গিলে ফেলল। রুদ্র এখানে কেন?স্বপ্ন এসব?চম্পা বেগম কিছু’টা বিরক্ত হয়ে অরূণীর উদ্দেশ্য বলল, “আরে অরূণী হয়েছে’টা কী তোর? কথা বলছিস না কেন? রুদ্র’কে চিনিস না?আরে নিম্মির দেবর।”
কিরণ’কে দেখিয়ে চম্পা বেগম ফের বলল, “ও হচ্ছে কিরণ। রুদ্রর বন্ধু।”
অরূণী অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো। নিজের গায়ে নিজে জোরে জোরে চিমটি কাটতে লাগলো। আস্তে করে বলল, “চিনি।”
রুদ্র হেসে বলে, “চিনবে না কেন?আমি তো ও’কে পড়াই।”
নুরুল উদ্দিন অবাক গলায় বলল, “তাহলে তো আমাদের থেকেও ভালো পরিচয়।”
রুদ্র মাথা নাড়ে।কিরণ রুদ্রের দিকে তাকিয়ে ইশারা ইঙ্গিতে কৌতুক করছে।
নুরুল উদ্দিন অরূণীর দিকে তাকিয়ে অধৈর্য হয়ে বলল, “কী হয়েছে বলবি তো? চিৎকার দিলি কেন?”
অরূণী উত্তর দিলো না।চম্পা বেগম বলল, “অরূ যা ফ্রেশ হয়ে আয়।”
অরূণী অতি কষ্টে নিজেকে সংযত করে। চোখে-মুখে অবিশ্বাসের রশ্মি বিচ্যুত হতে লাগলো। রুদ্রর দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করে, “রুদ্র ভাইয়া আপনি এখানে?”
নুরুল উদ্দিন বলে ওঠল, “আহা অরূণী কি পাগলের মত কথা বলছিস?বেড়াতে এসেছে ওঁরা”
অরূণীর অপ্রতিভ কন্ঠস্বর, “তা তো বুঝলাম। কিন্তু এভাবে হঠাৎ?”
– “মানুষ কী তিন দিন আগে চিঠি পত্র লিখে, ঢাক-ঢোল বাজিয়ে বেড়াতে আসে?”
অরূণী ওয়াশরুমে গিয়ে মাথায় পানি দিতে লাগলো। কয়েক মিনিট ধরে মাথায় পানি দিলো।অরূণীর মামাতো বোন আরিফা এখনো ঘুমাচ্ছে।অরূণী ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে আরিফা’কে ডেকে তুলে। অদ্ভুত এক প্রশ্ন করে বসে, “আরিফা আমি কী এখনো ঘুমাচ্ছি?”
সকাল বেলার সুমধুর ঘুম ভাঙিয়ে এমন অবন্তর প্রশ্ন করায় আরিফা তীব্র বিরক্ত হয়ে তাকায়।অরূণী ধাতস্থ হলো কিছুক্ষণ পর।বুঝতে পারলো এসব স্বপ্ন না।সত্যিই এসেছে রুদ্র।অরূণীর বুকের ভিতর চিনচিনে ব্যথা হতো লাগলো। বিষণ্ণ মুখে দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলল। এখানে এসেছে সবকিছু ভুলে যেতে। কিন্তু এখন কী হলো?অরূণীর যন্ত্রনা আরো গাঢ় হয়। চম্পা বেগম খাবার রুম থেকে ডাকে অরূণী’কে। অনেকক্ষণ ধরে ডাকা সত্ত্বেও অরূণী কোনো সাড়া না দেওয়ায় চম্পা বেগম সোলেমান’কে দিয়ে অরূণী’কে ডেকে পাঠায়।অরূণীর আবার সবকিছু অসহনীয় লাগতে লাগলো। টেবিলের কাছে গিয়ে দেখে রুদ্র আর কিরণের খাওয়া শেষ। নুরুল উদ্দিনের সাথে বসে খোশগল্প করছে। নুরুল উদ্দিন মানুষের সাথে ভাব জমাতে দক্ষ। অরূণীর গলা দিয়ে খাবার নামছে না। কিছুক্ষণ খাবার নেড়েচেড়ে পানি দিয়ে উঠে রুমের দিকে যেতে উদ্যত হয়। রুদ্র হঠাৎ সোফা ছেড়ে উঠে বলল, “রুমে যাচ্ছি।কাজ আছে একটু।”
নুরুল উদ্দিন বলে, “যাও,যাও।”
এই বলে কিরণের সাথে কথা বলায় ব্যস্ত হয়ে যায়। কিরণ শুধু একবার রুদ্রর দিকে তাকিয়ে রহসো হাসি দিলো। রুদ্র দ্রুত পায়ে হেঁটে অরূণীর কাছে গেল। আশেপাশে তাকালো।সবাই খাবার রুমে।আর খাবার রুম থেকে এই জায়গা’টা দেখা যায় না। রুদ্র ডাকলো, “অরূণী শুনো।”
অরূণী তাকায় রুদ্রর দিকে, “কি শুনবো?”
– “কথা আছে। ছাদে চলো।”
অরূণী ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে রইলো। রুদ্রর আচরণ অস্বাভাবিক লাগছে খুব।রুদ্র কী কথা বলবে?এই চিন্তাটা অরূণী’কে অস্থির করে তোলে। অরূণী আশেপাশে তাকিয়ে বলল, “কেন ছাদে যাবো?কী কথা আপনার?বাসায় কত মানুষ।আপনার সাথে ছাদে গেলে কী ভাববে?”
– “কেউ দেখবে না।আসো তুমি।”
অরূণীর সবকিছু এলোমেলো মনে হচ্ছে। কিছু বুঝতে পারছে না।রুদ্র আচমকা অরূণীর হাত ধরে বলল, “চলো, ছাদে চলো!কথা আছে।”
(চলবে)
Wow… very nice…. পরবর্তী পার্ট গুলোর জন্য অপেক্ষায় রইলাম আপু…..
Hay you miss or mrs writter , if you can’t continue your story then why you are post this . That will be very good you can store your story in your note book , don’t post like this cearless .
You have a responsibility for your reader , but you are ieresponsible 😡😡😡