#দূর_আলাপন
পর্ব-৩
অদ্রিজা আহসান
নিনাদ সামনে এসে ভুরু কুঁচকে তিহার দিকে তাকাল। রাগি স্বরে বলল,’লিলি কি বলতে এসেছিল ওকে ?’
তিহা ফ্যাকাসে মুখে বলল, ‘কি আবার! তার যা কাজ। ফোন নাম্বার নিতে এসেছিল।’
-‘তোর বোন কি করলো? দিয়ে দিল ফোন নাম্বার ? ‘
-‘হ্যাঁ, আমি ওকে ইশারায় নিষেধ করেছিলাম। কিন্তু ও তো কিছু বুঝলই না।’
নিনাদ এবার রুষ্ট হয়ে বলে উঠল,’বাহ! তাহলে তো আর কথাই নেই।এবার তাহলে রং নাম্বার থেকে কল এলে বলিস তোর বোনকে জমিয়ে পিরিত করতে !’
তিহা বলল,’ধুর বাদ দে তো।লিলির স্বভাবই তো অমন। এর ওর জন্য মেয়ে খুঁজে বেরানো। কেউ ডিস্টার্ব করলে তখন দেখা যাবে। তুই তো আছিস ই। দেখবি তখন ব্যাপার টা। এই মেয়ের চক্করে পরে আমার খাওয়াটা ঠিকঠাক হলো না।জানিস! ‘
-‘কতো আর খাবি? সেই কখন থেকেই তো দেখছি খেয়ে যাচ্ছিস শুধু। তোর আর খেতে হবে না। বাকিটা আমায় দে।কামলা খাটতে খাটতে দুপুর গড়িয়ে বিকেল করে ফেললাম ।এখনো কিছু খেতে দিলো না আমাকে ওরা।ভেবে দেখ একবার। পাপড়িটারও হুশ নেই। ছবির পোজ দিতে দিতে মুখ বেঁকে যায় যায় অবস্থা।পুরাই আজীব এরা সব !’ এই বলে তিহার আধখাওয়া প্লেট এক প্রকার জোর করে নিয়ে ঘুরে বসতে যেতেই ভয়ানক ঘটনা ঘটে গেল।তিতিক্ষা হাত ধুয়ে এদিকেই আসছিল। নিনাদ খেয়াল করে নি।ওদিকে তিতিক্ষা ভেবেছিল সে এখানে অর্থাৎ নিনাদের পেছন দিকটায় দাঁড়িয়ে থাকবে যেন নিনাদের সাথে তার চোখাচোখিটা কোনো মতেই না হয়।নিনাদ এভাবে হঠাৎ ঘুরে বসতে পারে সে ভাবেই নি।ফলাফল দুজন মুখোমুখি হতেই ভয়ানক এক সংঘর্ষ ঘটে গেল।নিনাদের হাতে থাকা খাবারের প্লেট গিয়ে পড়লো তিতিক্ষার গায়ের ওপর।নিনাদের সাথে ধাক্কা খেতে যাচ্ছে দেখে আগেই সে চোখ বুজে দু’হাতে মুখ ঢেকে ফেলেছিল।এবার সে চোখ খুলে যা দেখলো তাতে তার কান্না পেয়ে গেল।দুধ-চা রঙা তার সুন্দর বোরকাটা মাংসের লাল ঝোলে চিকচিক করছে।কয়েকটা পোলাও ও লেগে আছে বোরকায় সেই ঝোলের সাথে।নিনাদ বিস্ময়ে কিংকর্তব্যবিমুঢ় হয়ে তার দিয়ে তাকিয়ে আছে।
কি অঘটন সে ঘটিয়েছে বুঝতে পারা মাত্রই নিনাদ ব্যাস্ত হয়ে উঠল।টেবিল থেকে একসাথে অনেক গুলো টিস্যু টেনে নিয়ে আচমকা তিতিক্ষার পায়ের কাছে বসে পরলো।তিতিক্ষা চমকে লাফিয়ে উঠে হঠাৎ সরে যেতে গিয়েও পারলো না।নিনাদ তার বোরকার নিচের অংশ টেনে ধরেছে। টিস্যু দিয়ে মুছে দিচ্ছে।আর বারবার বলে চলেছে সে খুবই দুঃখীত।তার পেছনেই যে তিতিক্ষা ছিল সে একদম খেয়াল করে নি।তিতিক্ষা এবার কাঁদোকাঁদো মুখে বোনের দিকে তাকালো।তিহা তখনো সম্বিত ফিরে পায় নি।তাকিয়ে আছে হা করে।
আশেপাশে একটা শোরগোল পড়ে গেল। যে যেখানে ছিল সেখান থেকেই তাকিয়ে ব্যাপার টা উপভোগ করছে।একটি মেয়ে আড়ষ্ট হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।তার সারা পোশাক মাংসের লাল ঝোলে মাখামাখি। তার খুব কাছে একটি আকাশী-নীল রঙা পাঞ্জাবি পড়া গাঢ় শ্যামলা বর্ণের, বড় বড় চুলওয়ালা ছেলে বসে ব্যাস্ত ভঙ্গিতে সেসব পরিষ্কার করছে।কেউ কেউ তাদের স্বামী-স্ত্রী ভেবে নিনাদকে উদ্দেশ্য করে বললো, ‘লাভ নেই ভাই।এভাবে পরিষ্কার হবে না। ভাবিরে নিয়ে বাসায় যান।’
একটুকু হলেও বোধহয় চলতো।কিন্তু তিহার বন্ধুমহলের সবাই যখন একসাথে এসে জুটলো তখন তাদের কথা শুনে তিতিক্ষার কান গরম হয়ে উঠল। আগে থেকেই নিনাদ, তিতিক্ষাকে নিয়ে কৌতুক করতে তারা পছন্দ করতো।এবার সুযোগ পেয়ে তা চরম মাত্রায় এসে পৌঁছালো! কথার সাথে সাথে কেউ কেউ আবার শিস বাজাতে শুরু করলো। তিতিক্ষা শেষ বারের মতো বোনের দিকে তাকালো।তিহা এখনো বুঝতে পারছে না সে কি করবে। এই নিতান্ত স্বাভাবিক একটা বিষয় যে নিনাদ-তিতিক্ষা কে কেন্দ্র করে হতেই এতো অস্বাভাবিক হয়ে উঠবে বেচারি ভাবেনি বোধহয়। নিনাদ উঠে দাঁড়ালো। ছাড়া পাওয়া মাত্র আর কারো পরোয়া না করে তিতিক্ষা গটগট করে হেটে বাইরে চলে গেল। তৎক্ষনাৎ তিহা ছোটনের হাত ধরে বোনের পিছু পিছু ছুটল।
বাড়ি ফিরেই তিতিক্ষা সেদিন দ্বার রুদ্ধ করলো।অনেক ধাক্কাধাক্কিতেও সে দ্বার খুললো না।মারুফ সাহেব খানিক পর পর এসে মেয়ের ঘরের সামনে চিন্তিত মুখে ঘুরে বেড়াতে লাগলেন।মেয়েকে তিনি জানতেন।তাই ডাকার সাহস বা আগ্রহ কোনোটাই ঠিকঠাক সঞ্চয় করতে পারলেন না। শেষে বড় মেয়ের কাছে গেলেন। এই ভেবে যে সে হয়তো তার এই অভিমানী কন্যার হঠাৎ হওয়া অভিমানের কারণ জানে। তিহা বাবাকে চিন্তামুক্ত করতে হেসে ব্যাপার টা খুব হালকা ভাবে উড়িয়ে দিল।কিন্তু সবকিছু ওড়ালেই যে তারাও মুক্ত বিহঙ্গের স্বাদ নিতে বাধ্যগত হয়ে আকাশে উড়াল দেয় ব্যাপার টা তা নয়! সেদিনের ঘটনার রেশ সহজে কাটলো না। রয়ে গেল বেশ কিছুদিন। তিতিক্ষা এ’ কদিন প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বেরোলো না একদমই। তারপর একদিন ফজরের সালাতের পর তিহা রান্নাঘরে চা করছিল।সহসা তিতিক্ষা সেখানে এসে দাঁড়ালো। শীতল স্বাভাবিক কণ্ঠে বললো, ‘আজকের আবহাওয়া টা বেশ! হাটতে যাবে বুবু?’
তিহা মনে মনে ভয়ানক খুশি হলো। মুখে প্রকাশ করলো না তার একভাগও! দুখী দুখী চেহারা করে বললো, ‘ হাটতে যাবি? আচ্ছা চল। দ্বারা চা’টা খেয়ে নে আগে।’ বোনের এই চতুরতা তিতিক্ষা বুঝলো না।বুবুর নিষ্প্রভ মুখখানি দেখে তার মনে ততক্ষণে করুণা জাগ্রত হয়ে উঠেছে। এ’ কটাদিন বুবুর সাথে সে খুব সাবধানে দূরত্ব বজায় রেখে চলেছে।বুবু হয়তো কষ্ট পেয়েছে ভীষণ!
তিতিক্ষা ভাবলো, ছি! সে এমন কিভাবে করতে পারলো। এই কি তার শিক্ষার যথাযথ পরিচয় ? তার দ্বীন কি কখনো তাকে এই আদব শিক্ষা দিয়েছে? তিতিক্ষা অনুতপ্ত হলো। বুবুর হাত ধরে হাটতে বেরোলো। ঘুরে বেড়ালো ভোরের স্নিগ্ধ-শীতল শান্তিময় আবহাওয়ায় এক পথ থেকে অন্য পথে । দুদিনের অবিরত বর্ষণে ধানমন্ডি লেকের স্বচ্ছ পানি তখন আরও স্বচ্ছ, ঝলমলে হয়ে উঠেছে।ভোরের তরুণ সূর্য পুরো লেক জুড়ে ছড়িয়ে রেখেছে তার সোনালী আলোর ঝিলিক।তারা সেখানে হেটে বেরালো অনেকক্ষণ । বাড়ি ফিরে সেদিন তিতিক্ষা আবার আগের মতো হাসিখুশি, প্রানবন্ত হয়ে উঠল।
________________________
সেদিনের বিয়ে বাড়ির ঘটনার পর একমাস কেটে গেছে। এরমধ্যে একবারও নিনাদ তিতিক্ষাদের বাড়িমুখো হবার সাহস দেখায়নি।সেদিনের ঘটনাটা খুব বড় কিছুই ছিল না। তিতিক্ষার জায়গায় অন্য যেকোনো মেয়ে হলে হয়তো হেসেই উড়িয়ে দিতো ব্যাপার টা।তবে দূর্ভাগ্যবশত মেয়েটা তিতিক্ষা ছিল এবং সেখানে বন্ধু রূপী কিছু শত্রুর উপস্থিতিও ছিল। তাদের কথাগুলো জ্বলন্ত অগ্নিতে ঘৃতাহুতির কাজ করলো। যদিও নিনাদের বন্ধুরা শুধুমাত্র কৌতুক করেই কথাগুলো বলছিল।কিন্তু তাদের হয়তো ধারণা ছিল না সে কথাগুলো কারো অন্তঃকরণে এতো গভীর আঘাত হানতে পারে। নিনাদও অনুতপ্ত হয়েছিল।অপরাধ সে জেনে-বুঝে কিছুই করেনি।তবু হয়তো সে আর কখনো তিহাকে একটা কল দিতেও সাহস করতো না । এমনই এক গভীর ছায়া পরেছিল তার মনে।তবে এই সবকিছুই স্বাভাবিক করে দিল একটা ফোন কল।
তিহার স্বামী রওশান বান্দরবান থেকে ফিরে তিহার মুখে সবকিছু শুনলো।নিনাদ কে সে বিশেষ পছন্দ করতো। নিনাদের সোজাসাপ্টা কথা বলার ধরনের জন্য। তাছাড়া ভার্সিটিতে তুখোড় মেধাবী হিশেবে যথেষ্ট সুনাম থাকলেও আচরণে তার কিছু অপরিপক্কতা রয়েই গেছিলো।সেই দূর্বলতা দিয়ে সে খুব সহজে অন্যের হৃদয়ে স্থান করে নিতে পারতো। তদতিরিক্ত! যে সুদর্শন, মেধাবী, বাক্যে পটু অথচ নীতিতে সরল। অন্যের ভালোবাসা অর্জনে তার কিই বা বাঁধা !
রাতে রওশান তিহা,ছোটনকে নিয়ে ছাদে গেল। ছাদের মাঝখানে কাঠের বেঞ্চি পাতা ।রওশান তিহা দুজন দু’দিকে বসলো। মাঝে ছোটন তার ছোট ছোট হাত দিয়ে বাবা-মা দুজনেরই হাত চেপে ধরে বসে রইলো। তার মুখ দেখে মনে হল এ পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী শিশুটি সে।
অনবরত কল বেজে চলেছে। কেউ ফোন কানে তুলছে না।রওশান ভাবলো কল টা বোধহয় অসময়ে করেছে সে।এর আগে তিনবার রিং বেজে বেজে কেটে গেছে ।এবার সে নিজেই কল কেটে দেয়ার কথা ভাবলো। তখনই ওপাশ থেকে একটা ক্লান্ত বিষন্ন গলার স্বর ভেসে এলো,’আসসালামু আলাইকুম। কি অবস্থা ভাইয়া?’
রওশান সালামের জবাব দিয়ে আমুদে ভাব নিয়ে বললো, ‘তোমার সহচার্য যার নিত্য অভ্যাস, তার সাথে মানুষ যেমন অবস্থায় থাকতে পারে আমিও তেমন অবস্থায়-ই আছি।হাটছি, ফিরছি, খাচ্ছি, ঘুরছি। আর মুখ দিয়ে তার’ অপছন্দনীয় কথা কিছু বের হওয়া মাত্রই পিঠে আঘাত অনুভব করছি।এইতো! ‘
তার কথা শেষ হওয়া মাত্র তিহা হেসে পিঠে তার একটা চিমটি কাটলো।রওশান সাথে সাথে ফোনের ওপাশের জনকে উদ্দেশ্য করে বললো , ‘এইতো! মাত্রই সে আবারো আমার কথার সত্যতা প্রমাণ করে দিল।পিঠে আঘাত অনুভব করলাম আমি ! ‘
নিনাদ আর মুখ গোমড়া করে থাকতে পারলো না। ওপাশ থেকে হাসির শব্দ ভেসে এলো। রওশান উৎফুল্ল হয়ে বললো, ‘যাক! অবশেষে মেঘ কাটলো। এই ভাগ্যবান শ্রবণেন্দ্রিয় জোড়া তোমার সুমধুর হাসির শব্দ শুনতে পেল!’
নিনাদ ফের হাসলো। বললো, ‘ভাই, আর লজ্জা দিয়েন না।ঢাকায় এলেন কখন ? কবে দেখা করছেন সেটা বলুন।’
-‘আমার আর আসার সময়-অসময়! যখন মন চাচ্ছে তখনই হুট করে চলে আসছি।এখন আর আগের মতো পাহাড় দেখলেই কবিতা আসে না। ওখানে থেকে কি করি বলো !
ছাড়ো এসব। আমার কথা বাদ দাও।তোমার আলাপ বলো।আমার রেজিস্ট্রি করা সত্যিকারের ছোট গিন্নির সাথে নাকি কিসব গন্ডগোল বাঁধিয়েছ? একেবারে নাকি ফিল্মি ব্যাপার স্যাপার? ‘
নিনাদের কাটা ঘাঁয়ে নুনের ছিটা পড়ার মতো অবস্থা হলো। সে লজ্জিত হয়ে চুপ করে রইল। বলার মতো কিছুই খুঁজে পেল না।’
ব্যাপার টা বুঝতে পেরে ফোনের এপাশে রওশান মিটিমিটি হাসতে লাগলো। তিহাও যোগ দিল সে হাসিতে।ছোটন একমনে আকাশের তারা গুনছিল।এবার সে তারা গোনা বাদ দিয়ে তাকিয়ে দেখলো তার মা বাবা ফোনের ওপাশে নিনাদকে কিসব বলে খুব হাসছে। অতএব সে হাসিতে যোগ দেয়াকে সে নিজের কর্তব্য বলেই ভাবলো। এবং কর্তব্য পালনে গুরুতর ভাবে হাসিতে যোগ দিল!
স্বামীর সাথে হাসিতে যোগ দিলেও তিহা বুঝল কথাটা নিনাদের বেজেছে খুব।তাই সে এবার নিজেই ফোন টেনে নিয়ে কথা শুরু করলো। প্রথমেই নিনাদকে বিশাল আকারের একটা ঝারি দিল আজকাল তার দেখা পাওয়া এমন অসম্ভব হয়ে উঠেছে কেন তা জানতে চেয়ে । তারপর তুললো ট্যুরের কথা। বললো এবার শীতে তারা বান্দরবানে ট্যুর দেবে।রওশান তো সেখানে আছেই।সে-ই তাদের সবাইকে ঘুরে ঘুরে দেখাবে সব। নিনাদ এবিষয়ে কোন মন্তব্য করলো না। নিরবে সায় দিয়ে মাত্রাতিরিক্ত গাম্ভীর্যের সাথে শুধু বললো,’হু’। তিহা অবাক হলো সাথে অপ্রতিভ ও। নিনাদ আর যাই করুক, তার ওপর যত ঝড়ই বয়ে যাক এতটা নির্লিপ্ত সে কখনো থাকে না। তিহা রাগত্ব স্বরে বলল, ‘কিরে, হু বললি যে শুধু ? কিছু তো বল।’
নিনাদ শীতল স্বরে বলল,’কি বলবো? তোরা প্ল্যান কর।’
-‘প্রতিবছর তো তুই-ই সবকিছু প্ল্যান করিস।বরং আমরাই থাকি চুপচাপ। এবার উল্টো নিয়ম কেন ? কি এমন হয়েছে হঠাৎ ? ‘
-‘কি হবে ? কিছুই না।তোরা প্ল্যান চালিয়ে যা।’
-‘সত্যি করে বলতো নিনাদ কি হয়েছে তোর ? কথা এমন ভাবে বলছিস যেন এবার আমাদের ট্যুর আসার আগেই তুই দেশ ছেড়ে উড়াল দিবি !’
নিনাদ স্থির কণ্ঠে বলল, ‘হতেও পারে। ‘
-‘ফাজলামো ছাড়। আসল কথাটা বল।অনেকক্ষণ ধরেই মনে হচ্ছে খুব বড় কিছু একটা তুই আমাদের থেকে লুকোচ্ছিস।’
নিনাদ দীর্ঘশ্বাস ফেলে ভাবলো তিহা জানে না নিজের অজান্তেই কখন সে নিনাদের না বলা কথাটা বলে ফেলেছে।
রাত বারছে।সেই সাথে ধীরে ধীরে বারছে রাতের বাতাসের শীতল ভাব।শ্রাবণের অনাকাঙ্ক্ষিত স্বচ্ছ রাতের আকাশে ছোট বড় অসংখ্য তারা জ্বলজ্বল করছে।পশ্চিম আকাশ থেকে ভেসে আসা সাদা মেঘের আড়ালে মাঝে মাঝে ঢাকা পড়ছে তারাগুলো। কি আশ্চর্য সুন্দর এই মধ্যরাতের আকাশ, পৃথিবী ! শুধুমাত্র এই সৌন্দর্য দেখার জন্য কি কেউ কখনো জাগতে পারে? রাতের পর রাত? যে পারে সে নিশ্চয়ই প্রেমিক! প্রেমিক ছাড়া আর কার চোখই বা এই রাতের কাব্য বোঝে!
তিহা আর রওশান দুজনেই এবার বুঝলো কিছু একটা গন্ডগোল নিশ্চয়ই আছে নিনাদের সাথে।তার কথাগুলো খাপছাড়া,বড় এলোমেলো।অতএব স্বামী স্ত্রী দুজনে মিলে নিনাদকে ধরলো।যে করেই হোক নিনাদের গোপন কথাটা আজ তারা জেনে তবে ছাড়বে। তিহা তো ফোনেই প্রায় নিনাদের গলা চেপে ধরতে চাইল যেন! নিনাদ ভয় পেল,হার মানলো।বুঝলো এরা নাছোড়বান্দা।না বললে আর এই যন্ত্রণার মুক্তি নেই।ফলাফল, সে রাতে নিনাদ তাদের দুজন কে একটা বিস্ফোরক তথ্য দিতে বাধ্য হল!
চলবে………