#নারীর_সতীত্ব
#পর্ব_০৯
Wohad Mahmud
দুই ঘন্টা জার্নির পরে আমি বাড়িতে পৌঁছে কলিং বেল বাজালাম। কিছুক্ষণ পরে দরজা খুলে দেয়। দরজা টা আর কেউ না ভাবি খুলে দিচ্ছে। বুঝলাম না আজ অন্যরকম কেন হলো। ভাবি আজ প্রায় দুই বছর আমাদের এখানে আছে কোন দিন দেখলাম না গেট খুলে দিতে আজ হঠাৎ গেট খুলে দিচ্ছে বুঝলাম না। দরজায় দাঁড়িয়ে আমার পিছনে কি যেন খুঁজছে ট্যারা চোখে। আমি বললাম এভাবে চোরের মতো করে কী খুঁজছেন বাহিরে।
ভাবি বলল কিছু না এমনিতেই দেখলাম আর কেউ এসেছে কী তোমার সাথে। আর আমি চোরের মতো কই খুঁজছি। এখন আমাকে চোর বলার মানে কী। আমাকে দেখে কী চোর মনে হয়।
কিছু না ভাবি এমনিতেই বললাম। আমি মনে মনেই বললাম। আমি তো ভালোই বুঝতে পারছি কী হয়েছে ভাবি আর কিছু খুঁজছেন চোরের মতো করে। সাবনাজ কে খুঁজছেন আপনি। তারপর মুচকি হেসে চলে আসলাম।
তারপর সরাসরি আব্বুর রুমে চলে আসলাম। রুমে এসে দেখি আব্বু সেই। মা আর মাহমুদা বসে আছে। আমি বললাম বাবা কোথায় আছে। রুমে দেখছি না কেন? বাবা তো অসুস্থ তাহলে কোথায় গেল।
মাহমুদা বলল বাবা ওয়াশরুমে আছে।
আচ্ছা তাহলে বাবা আসুক আমি ততক্ষণে বাবার জন্য অপেক্ষা করি।
আরে না না , তুই অনেক পথ জার্নি করে এসেছিস ফ্রেশ হয়ে তারপর এসে বাবার সাথে দেখা করিস।
তারপর রুমে চলে আসলাম আমি। রুমে এসে ফ্রেশ হয়ে নিলাম আমি। তারপর আবার বাবার রুমে গেলাম। রুমে গিয়ে দেখি বাবা দিব্যি রুমের মধ্যে হাঁটাচলা করছে।
আমি বললাম এটা কী বাবা তোমার তো এক্সিডেন্টে হয়েছিল পায়ের হাড় সরে গিয়েছিল। এমন হলে তো তুমি হাঁটাচলা করতে পারবে না। কিন্তু এটা কীভাবে সম্ভব তুমি দিব্যি হাঁটাচলা করছ।
আমার দিকে তাকিয়ে হাসতে থাকে বাবা। তখন মা আর মাহমুদা ঘরে আসল। আমি মাহমুদা কে বললাম কিরে কী হয়েছে, আমাকে মিথ্যা কেন বললি। আমি ঠিক আছে কোনো এক্সিডেন্ট হয়নি।
মাহমুদা বলে তোর জন্য খুশির সংবাদ আছে ভাইয়া।
আমি বললাম কিসের খুশির সংবাদ আবার। এমনিতেই মিথ্যা বলে বাড়িতে নিয়ে এসেছিস আবার। এখন মনে হয় আবার মিথ্যা শান্তনা দিচ্ছিস খুশির সংবাদ বলে।৩০৮
এক সপ্তাহ আগে তুই একটা চাকরির জন্য ইন্টারভিউ দিয়েছিলি ভাইয়ার অফিসে মনে আছে?
হ্যাঁ মনে আছে। আর কতই তো ইন্টারভিউ দিলাম। শুধু টাকা চায়। কোনো রকম একটা চাকরি পেয়েছিলাম। কেন এটাও রিজেক্ট হয়ে গেছে?
আরে না অ্যাপার্টমেন্ট লেটার দিয়েছে। এক সপ্তাহ পরে থেকে জয়েন করতে বলেছে। তোর নতুন বিয়ে হয়েছে তাই বড় ভাইয়া কথা বলে এক সপ্তাহ পরে জয়েন করানোর কথা বলেছে। আর বাবাও এক্সিডেন্টে করেছিল। তেমন সমস্যা হয়নি অটোর সাথে ধাক্কা লেগেছিল। ঔষধ খাচ্ছে ব্যথা অনেক টা কমে গেছে।
রাতে সবাই একসাথে খাওয়া দাওয়া করছি। আর বাবা বাইরে গিয়েছে একটু চা খেতে। তখন ভাইয়া বলল তোর বড় ভাবি হয় একটু সম্মান দিয়ে কথা বলিস। চোর বলাটা ঠিক হয়নি তোর।
আমি মনে মনে হাসলাম বাহ ভাইয়া আসতে না আসতেই নালিশ করা হয়ে গিয়েছে। ভাবি সামান্য সামান্য বিষয় নিয়ে বড় বড় রিয়েক্ট করে। আমি হাসতে হাসতে ভাইয়া কে বললাম আরে আমি তো মজা করে বলছি। বড় ভাবি হয় আমার, আমি একটু ভাবির সাথে মজা করে কথা বলব নাতো কে বলবে। আমি এই বিষয় টা হেঁসে উড়িয়ে দিলাম। আমি বুঝতে পারছি এসব সামান্য বিষয় নিয়ে আমার আর ভাইয়ার মধ্যে একটা খারাপ সম্পর্ক তৈরি করার চেষ্টা করছে। আমাদের মধ্যে এই সুন্দর সম্পর্ক নষ্ট করতে চাচ্ছে। কিন্তু আমি তা কখনো হতে দিব না। ৪৯০
খাওয়া দাওয়ার মাঝামাঝি অবস্থায় ভাবি বলল সাবনাজ আসল না কেন মাহমুদ।
আমি জানতাম এই কথাটা বলবেই ভাবি। সাবনাজ কেন আসল না এটা জানতে চাইবে। আমি মুচকে হেঁসে বললাম। সাবনাজের আসার কী দরকার আজকে আবার। এমনিতেই তো দুই তিনদিন পরে চলে আসবে।
ভাবি তখন বলল তোমাকে তো বলা হয়েছে বাবা এক্সিডেন্ট করছে তাও কেন আসল না। বাবার এক্সিডেন্টের কথা শুনে তো আসা দরকার ছিল। বাবা কেমন আছে সেটা দেখতে সাবনাজের আসা দরকার ছিল।
আমি বললাম বলা হয়েছিল বাবার পায়ের হাড় সরে গিয়েছে কিন্তু সেটা তো হয়নি। মিথ্যা বলা হয়েছিল আমার সাথে, আমাকে সারপ্রাইজ দেয়ার জন্য।
তখন তো তুমি জানতে না মিথ্যা কথা বলা হচ্ছে। আসলে এমন একটা মেয়ের সাথে বিয়ে দেয়া হয়েছে যার আদব কায়দা কিছু শেখা নেই। এসব মেয়েগুলো কোথা থেকে যে আসে। এসব মেয়েদের কারণে আমাদের মতো মানুষের বদনাম।
আমি বললাম অনেক হয়েছে ভাবি আপনার এসব আজাইরা মার্ক কথা শুনতে শুনতে আমার ধৈর্য পার হয়ে গিয়েছে। আমি আসার সময় দরজা কেন খুলতে গেলেন আগে আগে বলেন তো আমকে।
ভাইয়া তখন বলে মাহমুদ মানুষের মতো কথা বল অমানুষের মতো না। গেট খুলতে গিয়েছে তো এখানে কী অপরাধ হয়েছে হ্যাঁ?
আমি মুচকি হেসে বললাম। অপরাধ কিছু হয়নি। আজ দুই বছরে তো এর আগে কখনো গেট খুলে নাই। আর গেট খুলে চোরের মতো দেখেছিল আমার পিছনে সাবধান আছে কী? মনে মনে চাচ্ছিল সাবনাজ যাতে না আসে। তাহলে বাড়ির সবার সাথে আমাদের নামে কাটি মেরে কথা বলার সুযোগ পেয়ে যাবে আর এখন বাবার প্রতি দরদ দেখাতে আসছে।
মা গালে থাপ্পর মেরে বলে তোর বড় ভাবি হয় এভাবে কথা বলতে লজ্জা করছে না। আর ঠিকই তো বলছে সাবনাজের মধ্যে কোনো আদব কায়দা নেই। শ্বশুরের এক্সিডেন্টের কথা শুনে, না এসে কীভাবে থাকতে পারল।
সামান্য বিষয় নিয়ে এমন কেন করছো তোমরা। সব সময় যেটা দেখা যায় সেটা হয় না, আর যেটা দেখা যায় না সেটা হয়। এখন সবকিছু দোষ আমাদের।
তোমার বড় ছেলে তার শালির পিছনে সব কিছু খরচ করে। যখন যা দরকার হয় দেয়। কিন্তু যখন নিজের বোনের বেলায় আসে তখন তোমার বড় ছেলের কাছে এক টাকাও থাকে না। ফরম ফিলাপ না করতে পারলে পরিক্ষা দিতে পারবে না এটাও জেনেও তোমার বড় ছেলের বউ বলে টাকা নেই এখন দিতে পারবে না। আর সেটা শুনেই তোমার ছেলে নিজের বোনের টাকা দিতে পারে না। কিন্তু তার পরেই শালির শপিং এর জন্য টাকা তো ঠিকই দিতে পারে। বেকার থেকেও বোনের ফরম ফিলাপ এর টাকা দিতে হয়। কিন্তু তোমাদের চোখে আমার কোনো মূল্যে নেই। সবকিছুর মূল্য পাবে বড় ছেলে বড় বউ। এটা বলেই উঠে পড়লাম আমার দেখাদেখি ভাইয়া ও উঠে পড়ল। তারপর আমাকে বলে —
আজকের ব্যবহার টা তুই অনেক খারাপ করলি মাহমুদ। বড়দের সম্মান দিতে শিখলি না।
বউ এর কথা শুনে চললে বউ এর পিছনে পিছনে চলে যে ছেলে নিজের পরিবার কে দূরে ঠেলে দেয় সে আবার সম্মানের কথা বলে। বিষয় খুব হাস্যকর হয়ে যায়। এসব করে সম্মানের কথা বাদ দিয়ে হাতে চুড়ি পরে ঘরে বসে থাকেন কাপুরুষের মতো।
ভাইয়া আমার দিকে এগিয়ে এসে থাপ্পড় মারতে যাবে ঠিক সেই সময় আমি ভাইয়ার হাত ধরে ধাক্কা দিয়ে রুমে চলে আসলাম।
রুমে এসে কিছুক্ষণ শুয়ে থাকলাম মন খারাপ করে। যতসব হয়েছে ভাবির জন্য। সাবনাজের কথা না তুললে এমনটা হতো না। ভাবি সবার মাথার মধ্যে বিষ ঢুকিয়ে দিয়েছে। আর সবাই তার কথা মতো চলছে। সবকিছু মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে সাবনাজ কে ফোন দিলাম কিন্তু কয়েকবার দেওয়া পরেও ফোন রিসিভ করছে না। মনে হয় অনুষ্ঠানে আছে। সাবনাজের ফোন কাছে নেই মনে হয়।
ছোট বোন দরজার কাছে দাঁড়িয়ে বলে আসব ভাইয়া।
আমি বুঝতে পারলাম আজকের ঘটনা নিয়ে ভয় পেয়ে আছে। আমি বললাম চলে আই।
মাহমুদা কান্না করতে করতে বলল সব দোষ আমার। তুই সত্যি টা বলে দিলি কেন?
আমি বললাম যেটা করেছি ভেবে চিন্তে করেছি। এমনিতেই বাসায় মা আর ভাবি আমাকে একদম সহ্য করতে পারে না। এর যদি আমি সত্যি টা বলে দিই তাহলে তুই ও তাদের চোখে খারাপ হয়ে যাবি।
ফ্লাশ ব্যাক। আজ সকালের ঘটনা। হ্যালো ভাইয়া আব্বুর কিছু হয়নি। তুই চাকরির ইন্টারভিউ দিয়েছিলি সেখানে তোর চাকরি টা হয়ে গিয়েছে সে জন্য তোকে সারপ্রাইজ দেওয়া জন্য আব্বা এই নাটক সাজিয়েছে।
আমি বললাম ওহ আচ্ছা তাহলে বিষয়। তবে আমি না গেলেও তো চলবে সমস্যা নেই।
না না আমি ভাইয়া তুই না আসলে বাবা বুঝে যাবে আমি সব বলে দিয়েছি তোকে।
আচ্ছা ঠিক আছে তবে আমি সাবনাজ কে নিয়ে আসছি না। যদি সত্যি সত্যি বাবা এক্সিডেন্ট করত তাহলে নিয়ে আসতাম। তারপর আমি মাহমুদার কথা শুনে হাসতে হাসতে বাইরে হাঁটতে গেলাম। আর ভাবলাম বাবা যখন আমার সাথে নাটক করছে আমিও একটু নাটক করি।
এটাই ছিল আজ বিকালে কাহিনী। আর আমি সেই জন্যই সাবনাজ কে কিছু বলি নাই আর সাথে করেও নিয়ে আসি নাই।
মাহমুদার সাথে কথা বলে আমি ঘুমিয়ে গেলাম। হঠাৎ সাবনাজের কলে আমার ঘুম ভেঙে যায়। ফোন রিসিভ কররা সাথে হঠাৎ নিচে চিল্লাচিল্লির শব্দ শুনতে পেলাম। তারপর তাড়াতাড়ি করে নিচে গেলাম।
#নরীর_সতীত্ব
#পর্ব_১০
Wohad Mahmud
এটাই ছিল আজ বিকালের কাহিনী। আর আমি সেই জন্যই সাবনাজ কে কিছু বলি নাই আর সাথে করেও নিয়ে আসি নাই।
মাহমুদার সাথে কথা বলে আমি ঘুমিয়ে গেলাম। হঠাৎ সাবনাজের কলে আমার ঘুম ভেঙে যায়। ফোন রিসিভ কররা সাথে হঠাৎ নিচে চিল্লাচিল্লির শব্দ শুনতে পেলাম। তারপর তাড়াতাড়ি করে নিচে গেলাম। নিচে গিয়ে দেখি ভাইয়া , মাহমুদা আর মা কান্না করছে বাবার রুমে। আমিও তাড়াতাড়ি করে বাবার রুম গেলাম। গিয়ে দেখি বাবার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে, বমি করার মতো করছে,বুক ধড়ফড় করছে আর গা দিয়ে ঘাম ঝড়ছে
আমার আর বুঝতে বাকি রইল না হার্ট অ্যাটাক করেছে বাবা। বাবার এমন অবস্থা দেখে আমিও থাকতে পারলাম না আমিও জোরে কান্না করে দিলাম।
ভাইয়াকে বললাম এ্যাম্বুলেন্সে খবর দিতে হবে তাড়াতাড়ি। ভাইয়া বলল দিয়েছি আমি। চলে আসবে অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই। তারপর বাবাকে ধরে রুমের বাহিরে নিয়ে আসলাম। বাবার মুখে হাওয়া দেয়ার চেষ্টা করলাম আর শক্ত জায়গায় শুইয়ে দিয়ে জামা টা খুলে দিলাম। বমি ভাব হওয়ার কারণে এক দিকে কাত করে দিলাম যাতে ভালো মতো বমি হয়ে যায়।আমার অনেক চিন্তা হচ্ছে এক ঘন্টার মধ্যে হাসপাতালে নিতে হবে না হলে বড় একটা সমস্যা হবে। আর বাসায় যা করার দরকার আমি সব করেছি। এখন জরুরি হাসপাতালে নিতে হবে।
দশ মিনিটের মধ্যে এ্যাম্বুলেন্স চলে আসে। তারপর বাবাকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে যাই। যেই ডাক্তার আমার বাবার চিকিৎসা করল সেই ডাক্তার আবার আমার শিক্ষক ছিলেন। স্যার আমাকে একপাশে ডেকে বললেন, তুমি একজন ডাক্তার কিন্তু তোমার দ্বারা এসব ভুল হওয়ার কথা না মাহমুদ।
আমি বললাম কেন স্যার? আমার দ্বারা কোনো ভুল হয়েছে কি স্যার।
তুমি কি জানতে তোমার বাবা সিগারেট খায়?
হ্যাঁ স্যার জানতাম আমি।
তাহলে তোমার উচিত ছির তোমার বাবাকে সিগারেট থেকে পরিত্রাণ কারানো। কারণ এই সিগারেট তোমার বাবার জীবন আস্তে আস্তে শেষ করে দিচ্ছে।
আমি বললাম স্যার অনেক বুঝিয়েছি আমি বাবাকে, যাতে সিগারেট না খায় বাবা। শুধু আমি না পরিবারের সবাই নিষিদ্ধ করছে। কিন্তু বাবা কথা শুনে না আগের থেকে কমিয়ে দিয়েছে প্রতিদিন একটার বেশী খায় না। অনেকদিনের অভ্যাস আমিও আর জোর করি নাই
স্যার বলল, আচ্ছা যা হয়েছে হোক আর যাতে সিগারেট না খাই সেদিকে লক্ষ্য রাখবে। রেস্টে থাকতে বলবে ভারি কাজ করতে দিবে না।
আমি বললাম আচ্ছা ঠিক আছে স্যার। আমি আমার দিক দিয়ে বাবাকে সুস্থ করার জন্য চেষ্টা করব। আর আল্লাহ যেটা করবে সেটাই হবে। আমি কি আজ বাবাকে সাথে করে বাসায় নিয়ে যেতে পারি।
হ্যাঁ আজ বিকালে নিয়ে যেতে পারো। সকাল তো প্রায় হয়ে গিয়েছে।
বিকালে বাবাকে নিয়ে বাসায় আসলাম। তারপর বললাম তুমি রেস্ট নাও তোমার সাথে কথা আছে।
সারারাত জেগে সারাদিন কাজে করে অনেক ক্লান্ত হয়ে গিয়েছি। আমিও ফ্রেশ হয়ে নিলাম তারপর তারপর রেস্ট নিব। ফোন টা হাতে নিয়ে দেখি ৫০ মিসড কল। সাবনাজ দিয়েছে সব কল। এতক্ষণে আমার মনে পড়ে কাল ফোন রিসিভ করেই কথা না বলে আমি নিচে গিয়েছিলাম। ফোন রিসিভ করেছিলাম কিন্তু কথা হয়নি। তারপর থেকে অনেক গুলো কল দিয়েছে সাবনাজ। অতঃপর একটা মেসেজ ও দিয়েছে। কল ধরে কথা বললে না এতগুলো কল দিলাম রিসিভ করলে না। মনে হয় কোনো সমস্যায় আছো। সময় হলে একটা কল দিও আমাকে।
আমি তো মনে করছিলাম আমার এমন করাতে সাবনাজ রাগ করবে কিন্তু এখানে দেখছি অন্যরকম। যাক ভালো হয়ে এমন সমস্যা বুঝতে পারা মানুষ আমার অনেক প্রয়োজন। আমি চেয়েছিলাম না আমার জীবনে এমন কেউ আসুক যে আমার সমস্যা না বুঝে উল্টা রাগ করবে। আমি চেয়েছিলাম কেউ আমার সমস্যা গুলো গভীর থেকে ভেবে দেখুক আর সেটাই পেয়েছি।
তারপর সাবনাজ কে ফোন দিলাম।
সাবনাজ ফোন ধরে। কেমন আছো মাহমুদ তুমি। সেই রাত থেকে ফোন দিচ্ছি। ফোন রিসিভ করো না আবার ব্যাক করো না। কোনো সমস্যা হয়নি তো। তুমি ঠিক আছো তো বাসায় সবাই ঠিক আছে?
আমি বললাম শান্ত হও তুমি আগে সব বলছি আমি আস্তে আস্তে। তুমি রাতে যখন ফোন দাও তখন ফোন রিসিভ করার সাথে সাথে নিচে হৈচৈ এর শব্দ শুনতে পাই। আমি তাড়াতাড়ি করে নিচে নেমে যাই। নিচে গিয়ে দেখি বাবা হার্ট অ্যাটাক করেছে। তাড়াতাড়ি করে বাসায় প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আসলে তোমাকে কিছু বলার সুযোগ পাইনি। হঠাৎ করে সব কিছু হয়ে গিয়েছে। আর কাছে ফোন ছিল না সে জন্যই তোমার সাথে যোগাযোগ করতে পারি নাই। আর তুমি ফোন দিয়েছে সেটাও জানি না। কিছুক্ষণ আগে বাসায় এসে ফোন হাতে নিয়ে দেখি তুমি অনেকগুলো ফোন দিয়েছ।
আচ্ছা এসব কথা বাদ দাও যা হওয়ার হয়েছে। আমি ও বুঝেছিলাম কোনো সমস্যা হয়েছে, কিন্তু এতোবড় সমস্যা হয়েছে বুঝতে পারি নাই। আচ্ছা বাবা কেমন আছে এখন?
আলহামদুলিল্লাহ। এখন কিছুটা ভালো আছে। যথা সময়ে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সাবধানে থাকতে বলছে।
আমি আজ তাহলে চলে আসছি মাহমুদ। বাবা অসুস্থ সেবাযত্ন করতে হবে।
আমি বললাম না থাক, আজ আসতে হবে না সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছে। আসতে আসতে অনেক রাত হয়ে যাবে। কাল সকালে গিয়ে আমি তোমাকে নিয়ে আসব। নিয়েই চলে আসব। বেশিক্ষণ থাকব না।
না মাহমুদ তোমাকে আসতে হবে না। তুমি বাবার কাছে থাকো। আমি আমার ছোট ভাইয়ের সাথে কালকে চলে আসতে পারবো। সমস্যা হবে না কোনো।
আমি আর জোর করলাম না। আমাকে বাবারা কাছে থাকতে হবে। তারপর সাবনাজের সাথে কথা শেষে করে, রেস্ট নিয়ে বাবার কাছে গেলাম। গিয়ে দেখি বাবা বসে আছে বালিশে হেলান দিয়ে। আমি বললাম এখন তোমার শরীর কেমন আছে বাবা?
আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছে। বুকে ব্যথা একটু আছে এখনো।
আমি বললাম ডাক্তার বলেছেন তুমি অনেক সিগারেট খাও। এই সিগারেট খাওয়া বন্ধ করতে হবে। তোমার জন্য না হয় অন্তত আমাদের সবার দিকে তাকিয়ে সিগারেট খাওয়া টা বন্ধ করে দাও। অনেক সিগারেট খেয়েছেন আরো খেলে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা ও আছে। তোমাকে ছাড়া আমরা সবাই অচল হয়ে যাব বাবা।
ভাবি পিছন থেকে বলে আর কত মাহমুদ এবার তো নিজের বউ কে নিয়ে আসবে। না কী এখানে আসতে ভয় করছে পরিবারের কাজ করতে হবে বলে। আমি বুঝিনা নিজের শ্বশুর তো বাবার মতো হয় এতো কিছুর পরেও কীভাবে না এসে থাকতে পারে। আর পরিবারের লোকজন বা কেমন নিজেরা না আসলে তো মেয়ে দিয়ে পেটাতে পারে।
আমি মনে মনেই বললাম এই মহিলার লজ্জা হবে না। কাল এতকিছু বলার পরেও ফটর ফটর করে কথা বলছে। লজ্জা বলতে কিছু নেই। আমি উঠে দাড়িয়ে বললাম। বাসায় তো আরো একটা বউ আছে। সে কী এই দেশের রানী? নিজের শ্বশুর তো বাবার সমতুল্য হয় তাহলে কই তাকে তো দেখলাম না শ্বশুর কে সাহায্য করতে। রাতে যখন বাবার হার্ট অ্যাটাক হয় তখন চোখ দিয়ে একফোঁটা পানিও পড়তে দেখলাম না। বাবার কাছে এগিয়ে আসতে দেখলাম না।
আর হ্যাঁ সাবনাজকে আমি কিছুক্ষণ আগে জানালাম বাবার এমন অবস্থার কথা। আমি ফোন দিয়েছিলাম না। কারণ রাতে তাড়াতাড়ি করে ফোন নিয়ে যেতে পারি নাই। কিছুক্ষণ আগে ফোন দিয়েছিলাম আজকে, এখনি আসতে চেয়েছিল কিন্তু আমি আসতে মানা করেছি অনেক রাত হয়ে যাবে আসতে। আমাকে বলেছে বাবার কাছে থাকতে। কালকে ওর ভাইয়ের সাথে আসবে। আমি আর কিছু বলতে চাই না। আবার এমন অবস্থা চিন্তা করলে বাবার পক্ষে সেটা ভালো হবে না।
রুম থেকে চলে আসব তখন মা বলে বাইরে অপেক্ষা কর মাহমুদ, মাহমুদা, বউমা তুমি থেকো। আমরা সবাই মায়ের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। কিছুক্ষণ পরে মা এসে বলে। মাহমুদা তোর বড় ভাইকে ডেকে নিয়ে আই। মাহমুদা গিয়ে বড় ভাইকে ডেকে নিয়ে আসে।
তারপর মা বলে কাল রাতে মাহমুদ যেটা বলল সেটা সঠিক।
বড় ভাইয়া বলে কোন কথা।
মা বলল ফর্ম ফিলাপ এর টাকা দিয়েছিলে না মাহমুদা কে?
ভাবি তখন বলে তখন টাকা ছিল না মা। থাকলে অবশ্যই দেয়া হতো।
আমি তখন হাসতে হাসতে বললাম তার পরেই তো বোনের শপিং এর জন্য টাকা দিলেন বিকাশ করে এটাও তো সঠিক, এটা কেন বলছেন না ভাবি মায়ের কাছে?
ভাইয়া কিছু বলতে যাবে ঠিক তখনি মা বলে,,,,,