#নীলাম্বুর_গহীনে
লেখা – জান্নাতুল ফেরদৌস মাটি
পর্ব – ৩
( কপি করা সম্পূর্ণ নিষেধ।)
.
.
চোখ বুজেই পেছন ঘুরে দাঁড়ালাম। চোখ তুলে তাকাবার সাহস পর্যন্ত পাচ্ছিলাম না। হাত পা থরথর করে কাঁপছিল। যেন একটা ঘোরে পড়ে গিয়েছিলাম আমি। তবে সেই ঘোর টা বেশিক্ষণ স্থায়ী হলো না। ঘোর ভাঙল সামনে থাকা মানুষটির কন্ঠস্বর শুনে। বিচলিত চোখে তাকালাম। নাহ, আমায় স্পর্শ করা মানুষটি সমুদ্র নয়। সে তো আফরোজার বড় ভাই সাদিক। আমি ইতস্ততবোধ করে দ্রুত হাতটি ছাড়িয়ে নিলাম। এতে সাদিক ভাইয়াও বেশ অপ্রস্তুতকর অবস্থায় পড়ে গেলেন। আর আমতা আমতা করে বলেন ,
” ভেবেছিলাম তুমি শাড়ি সামলাতে না পেরে হোঁচট খেয়ে পড়ে যাচ্ছিলে । তাই আর কি….”
তাঁর অস্পষ্ট কথার ধরন শুনে আমি স্পষ্ট বুঝতে পেরেছিলাম উনি মিথ্যে বলেছেন। আর কারণে নয়া, অকারণেই উনি আমার হাত ধরেছেন। তবুও হাসি মুখে বলেছিলাম,
” সমস্যা নেই ভাইয়া। তবে আমি পড়ে যাচ্ছিলাম না, স্টেজ থেকে নেমে যাচ্ছিলাম। ”
” ও…. ছবি তুলবে না?”
” তুলেছি ভাইয়া।”
” কোথায় আমি তো দেখলাম না। এসো ছবি তুলবে। বন্ধুর বিয়েতে এসেছ আর ভালো করে ছবি তুলবে না তা কী হয়?”
” ভাইয়া আমি সত্যি তুলেছি। বিশ্বাস না হলে আফরোজাকে জিজ্ঞেস করুন।”
সাদিক ভাইয়া নিচু গলায় বলেন,
” আমার সাথে তো তোলনি।”
বলেই ক্যামেরা হাতে থাকা তার চাচাতো ভাই হানিফকে ডাক দিলেন। বলেন,
” ভাই, ছবি কিন্তু বেস্ট হওয়া চাই। ”
আমি ভ্রু কুচকে তাকিয়ে রইলাম সাদিক ভাইয়ার দিকে। কী বলছেন উনি এসব! উনি আমার পাশে দাঁড়িয়ে বলেন,
” ছবির রিলের কিন্তু অনেক দাম। ভ্রু কুচকে ছবি নষ্ট করলে চলবে না। এক ছবি তো আর ডাবল তোলা যাবে না। আর তুললেও কেউ আমাকে ছেড়ে কথা বলবে না।”
আমি আর কিচ্ছু বললাম না। অযথা কথা বাড়িয়ে তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকার ইচ্ছে মোটেও করছিল না। তাই চুপচাপ দাঁড়িয়ে পড়লাম সাদিক ভাইয়ার পাশে। উনিও আমার কাঁধ ঘেঁষে দাঁড়ালেন। ছবি তোলা হতেই উনি বলেন,
” হানিফ, আরেকটা ছবি তোলো তো। পাশাপাশি যখন দাঁড়িয়েছি একটি ছবিতে মন ভরবে না।তুলে ফেলো আরেকটা। ”
হানিফ মুখ ভার করে বলল,
” ভাই,রিল তো প্রায় শেষের পথে। আরও অনেকের ছবি তোলা বাকি। আজ না তুললেই কী হতো না?”
” আরে একটা ছবিই তো, তুলে ফেলো। কেউ কিছু বললে আমি দেখে নেব।”
হানিফ অগত্যা কথা না বাড়িয়ে ছবি তুলে নিল। সামনে থেকে কয়েকটি ছেলে বলে উঠল,
” ভাইয়ের পছন্দ আছে। পুরোই মাখন।”
সাদিক ভাইয়া হাসল। আমার বুঝতে আর বাকি রইলো না, তাঁর নজর আমার উপর ঠিক কীরকম। আগেও অবশ্য একবার আফরোজার থেকে কিছুটা হিন্স পেয়েছিলাম তবে মাথায় নেইনি। কিন্তু সেদিন মাথায় না নিয়েও উপায় ছিল না তাঁর গা ঘেঁষা ব্যবহার দেখে। অন্যদিকে ওই ছেলেদের নোংরা উক্তি। ইচ্ছে করছিল সবগুলোর গালে কষিয়ে চড় বসিয়ে দেই। কিন্তু মেয়ে মানুষ হয়ে জন্মেছি। তাই ইচ্ছের প্রাধান্য দেয়া মানায় না। রাগে চোখে জল টলমল টলমল করছিল। কিন্তু কাউকে কিছু বলতে পারছিলাম না। সাদিক ভাইয়ার থেকে দু পা পেছনে এসে কেবল দাঁড়িয়ে ছিলাম। হঠাৎই কানে এলো সমুদ্রের শব্দ। চোখ তুলে তাকালাম। সমুদ্র দাঁড়িয়ে আছে আমার সামনে। শক্ত করে আমার হাত চেপে কিছুটা সামনে এসে বলল,
” আপনারা হয়তো সাদিক ভাইয়ার বন্ধু। এখন যেহেতু সাদিক ভাইয়া আমার বড় তাহলে আপনারাও অবশ্যই আমার বড় হবেন। সেই সুবাদে আপনাদের ভাইয়া বলেই ডাকছি। তো যেটা বলতে চাচ্ছিলাম, আপনারা হয়তো সাদিক ভাইয়া আর ইউশরার সম্পর্ক নিয়ে ভুল ভেবেছেন। আরে ভাই আপনারা যে বাঙালি কেন বারবার এভাবে প্রমাণ দেন বলেন তো? একটা ছেলে আর একটা মেয়ে একসাথে দাঁড়ালে, ছবি তুললে কিংবা একে অপরের সাথে কথা বললেই কি প্রেমিক প্রেমিকা হয়ে যায়? ভাই বোন হতে পারে না? সাদিক ভাইয়া কি আফরোজার সাথে কথা বলেনি? ছবি তোলে নি? তুলেছ তো, তাহলে কী তারাও………. ”
আমি সহ সবাই ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছে সমুদ্রের দিকে। আর সাদিক ভাইয়া তো পুরোই শকড। সমুদ্র আবারও বলল,
” আমি জানি সাদিক ভাইয়া আফরোজাকে বোন হিসেবে যতটা স্নেহ, আদর করে তদ্রূপই ইউশরাকে করে। নিজের বোন হিসেবে সম্মান করে।আর আপনারা….আমার তো ভাবতেও অস্বস্তি লাগছে। সাদিক ভাইয়ার কেমন লাগছ আল্লাহ মালুম। আর হ্যাঁ, আপনাদের বিশ্বাস করাতে আরেকটা কথা না বললেই নয়। ইউশরা আমার would be wife… সো প্লিজ ওকে সাদিক ভাইয়ার নামের সাথে জড়াবেন না। ”
বলামাত্রই সমুদ্র আমার হাত চেপে আমায় সহ নিজেও স্টেজ থেকে নেমে গেল। সবার অবস্থা যেনতেন হলেও সাদিক ভাইয়ার মুখ দেখে বড্ড হাসি পাচ্ছিল আমার। যেন কেউ ফুটন্ত গরম পানির কড়াইতে সবেই ভাইয়ার মুখখানি চুবিয়েছে। যেমন টকটকে লাল, তেমনি ফোলা। সমুদ্র আমাকে নিয়ে ছাদের এক কোণে চলে এলো। আর পেছন পেছন এলো আফরোজা বাদে পুরো ফ্রেন্ড সার্কেল। সবার প্রশ্ন তখন একটাই ছিল। ‘ কী রে, তোদের বিয়ে ঠিক হলো কবে?’ সমুদ্র চড়া গলায় বলল,
” যে মাসে শুক্রবার দিন নেই সেই মাসে ঠিক হয়েছে। ”
” আহা…বল না। ”
“তোরাও মজা করছিস? দেখেছিস না, ওই সাদিক হারামি ইউশরার সাথে কীরকম বিহেভ করছিল। তারউপর ওই ছেলে গুলোর কথা। জাস্ট মাথায় রক্ত চড়িয়ে দিয়েছিল। আফরোজা বিয়ে প্লাস ওর ভাই বলে কিছু বলিনি। নাহলে…..”
” নাহলে মেরে টেরে হিরো হয়ে যেতি তাই তো?”
বলেই সবাই হাসতে লাগল। তার মধ্যে থেকে সমুদ্রের সবচেয়ে কাছের বন্ধু ওসমান বলল,
” এই তোরা কী শুরু করেছিস বল তো? দেখছিস ওদের দু’জনের মুড অফ তারপরও কথা পেচাচ্ছিস। দুষ্টুমি করছিস। সবসময় কিন্তু সবকিছু ভালো লাগে না। হোক যতই ফ্রেন্ড। মনমানসিকতা বলেও কিছু আছে।”
সবাই হাসি ঠাট্টা থামিয়ে চুপ হয়ে গেল। বলল,
” আচ্ছা বাবা সরি। আর ফাজলামো করব না যাহ….”
সমুদ্র কড়া নজরে আমার দিকে তাকালো। বলল,
” ছবি যখন তুলতে এসেছিল না করিস নি কেন? আফরোজার থেকে আগে কখনো শুনিস নি তাঁর ভাই তোকে কোন নজরে দেখে? কী চায়? তারপরও দাঁত কেলিয়ে দাঁড়িয়েছিলি কীভাবে? ”
সমুদ্রের এরকম ধাঁচের কথা শুনে আমিসহ উপস্থিত থাকা সকলেই শকড। কারণ সবার থেকে যেরকম সবকিছু আশা করা যায় না। তেমনি সমুদ্রের থেকেও এরকম কেয়ারিং কথা আশা করা যায় না। সমুদ্র আবারও বলল,
” কী হলো? কথা বলছিস না যে? রাজি হয়েছিলি কেন ছবি তুলতে? আর কোমর খুলে বিছা দেয়ারই বা কী দরকার ছিল? কোমর বের না করে কী শাড়ি পড়া যায় না? আমার মা, কাকীরা কী পড়ে না? ”
সমুদ্রের ধমকের সুর শুনে যতটা না অবাক হয়েছিলাম, তার থেকে কয়েকগুন বেশি উত্তেজিতও হয়ে গিয়েছিলাম ওর রগচটা বিহেভে। দাঁত কিড়মিড়িয়ে বলেছিলাম,
” আমি রাজি হয়েছি আমার ইচ্ছায়। তাতে তোর কী? তোর বাপের কী? তুই আমাকে কেন এভাবে জেরা করছিস? আমি তোর খাই না পড়ি আমি?”
আমার এরকম জবাবে সমুদ্র কিছুটা হকচকিয়ে গেল। কিছু সময় থেমে আচমকাই মুচকি হেসে শান্ত গলায় বলল,
” সরি রে…আসলে প্রয়োজনের থেকে বেশি তোকে, তোদের আপন ভেবে ফেলেছিলাম। তাই আর কি….. জোর খাটিয়ে ফেলেছি। মাফ করে দিস। ”
বলেই বড় বড় পা ফালিয়ে চলে গেল সমুদ্র। সবাই ওকে আটকানোর চেষ্টা করলেও পারল না। ও দাঁড়ালোই না। এদিকে আমি তো পুরোই ‘থ’ মেরে গেলাম। কী থেকে কী হয়ে গেল কিছুই বুঝতে পারলাম না। সবাই আমার উপর রাগারাগি করলেও আমি টুশব্দটি আর করিনি। সেদিনের অনুষ্ঠান ঠিকই সম্পন্ন হলো। আর আমাদের উপস্থিতিও ছিল। যদিও ভদ্রতার খাতিরে। সেচ্ছায় নয়। তবে হ্যাঁ, সেদিনের পর কিন্তু আর সাদিক ভাই আমায় নিয়ে ভাবেনি। কাছে এসে কথা বলার চেষ্টা করেনি। এমনকি আফরোজা কেও কিছু বলেনি। হয়তো সে ভেবে নিয়েছিল সত্যিই সমুদ্র আমার হবু বর।”
বলেই হাসতে লাগল ইউশরা। রুবাইয়া গুমোট মুখে বলল,
” কাজটা তুমি মোটেও ঠিক করো নি মা। এভাবে কেউ কথা বলে? উনি তো তোমার জন্যেই কথা বলেছিল। আর তুমি……”
” অল্প বয়স ছিল। তারউপর আমিও প্রচুর রগচটা ছিলাম। তাই নিজেকে সামলাতে পারিনি রে। তবে, আফসোস কিন্তু ঠিকই করেছিলাম। ”
” যতই রগচটা থাকো না কেন, আমি তোমার এই বিষয়টা সাপোর্ট করতে পারলাম না মা। ”
ইউশরা কিছুই বলল না। আচমকা রুবাইয়া উৎসুক কন্ঠে বলল,
” আচ্ছা মা, রিল কী? ছবি তোলা নিয়ে কীসব রিলের কথা বলছিল, আমি ঠিক বুঝিনি। ”
” ও…..রিল ছিল সেই আমলে ছবি তোলার মূখ্য উপাদান। লম্বা, কালো নেগেটিভের মত। রিল ছাড়া ছবি তোলা যেত না। আর প্রচুর দামও ছিল রিলের। ”
” মানে? রিল ছাড়া যদি ক্যামেরাই না চলে, এখন রিল ছাড়া কীভাবে চলে? আমি যে ক্যামেরা ইউজ করি,কই আমার তো রিল লাগে না। তাহলে তখন কেন লাগত?”
” আরে পাগলী মেয়ে ওটা তো আরও ২৭ বছর আগের ঘটনা। ওই যুগের ক্যামেরা আর এই যুগের ক্যামেরা কী এক? তোরা তো ডিজিটাল যুগে বাস করিস। চাইলেই মোবাইল চেপে ছবি তুলতে পারিস। ক্যামেরার প্রয়োজন পড়ে না। আর যদি কখনো প্রয়োজন হয়ও, রিল লাগে না। ইচ্ছে হলেই ছবি তুলতে পারিস। কিন্তু সেই যুগে তো এগুলো ছিল না। আমরা চাইলেই ছবি তুলতে পারতাম না। পুরো বছর জুড়ে অপেক্ষা করা লাগত যেকোনো অনুষ্ঠানের। আর অনুষ্ঠান হলেই কেবল ছবি তোলার সুযোগ হতো আমাদের। তাও আবার একটি কি দুটি। এর উপর তো কখনোই না। আর মোবাইল…. সেটা তো ছিল স্বপ্নেরও বহির্ভূত। দুষ্কর বস্তু। যা স্বপ্নে দেখাও হারাম। অবশ্য তখন কেও স্বপ্নে মোবাইল দেখতও না। যোগাযোগ টিকিয়ে রাখার মাধ্যমই ছিল কেবল ল্যান্ড লাইন আর চিঠির আদান প্রদান। তবে ল্যান্ড লাইনও কিন্তু সহজলভ্য ছিল না। খুব কম সংখ্যক ঘরেই ল্যান্ড লাইন ছিল। চিঠি আদান প্রদানই বহুল প্রচলিত ছিল।”
” ও….. তাহলে তো অনেক প্যারা ছিল সেই যুগে। মেয়েদের না ছিল ঘর থেকে বের হওয়ার সুযোগ, আর না ছিল ফোন। রিলেশন টিকে থাকত কীভাবে? এখনকার যুগে তো তিন বেলার মধ্যে এক বেলা কথা না বললেই ব্রেকাপ। তখন তাহলে কীভাবে কী হতো? ”
ইউশরা মুচকি হাসল। বলল,
” তোদের যুগ আর আমাদের যুগের মধ্যে আকাশ পাতাল তফাৎ। তোদের যুগ হলো রোবট ন্যায় ভালোবাসার যুগ। কথা বলতে হবে মানে বলতেই হবে। মন মানসিকতা বিচার বিশ্লেষণ করে না। আর আমাদের যুগ ছিল অনুভূতি প্রবণ ভালোবাসার যুগ। যেখানে দেখা সাক্ষাৎ তো দূরের কথা মাসের পর মাস কথা বলা ছাড়াও ভালোবাসা দিন দিন গাঢ় থেকে প্রগাঢ় হতো। একটি চিঠির অপেক্ষায় মাসের পর মাস পথের পানে চেয়ে থাকত। তবে এ অপেক্ষার মাঝেও সবাই সুখ খুঁজে পেত দুঃখ না। ভালোবাসা টিকিয়ে রাখতে যোগাযোগ টাই মুখ্য না, মনের অনুভূতি গুলোই মুখ্য। ”
রুবাইয়া দুষ্টু হাসি দিয়ে বলল,
” হাও রোমান্টিক! অপেক্ষা…… আহ! আমার তো সেই যুগেই চলে যেতে ইচ্ছে করছে। যেখানে অপেক্ষা করতে করত্র অনুভূতিরা আমাকে ঝাপটে ধরবে চারিপাশ দিয়ে।”
ইউশরা ভ্রু নাচিয়ে বলল,
” কেন? রুবাইয়ার মুখে এই কথা কেন? রুবাইয়া কি তাহলে অপেক্ষার পালায় নিজেকে জড়িয়ে ফেলেছে? ”
রুবাইয়া লজ্জা পেয়ে প্রসঙ্গ পরিবর্তন করে বলল,
” ওসব কথা বাদ দাও তো। আমি এমনি বলেছিলাম। এখন তুমি বলো, তারপর কী হলো? ”
ইউশরা স্মিত হাসল। বলল,
” শীত কালের শেষের দিকের কথা। ক্লাস শেষে কলেজ ক্যাম্পের সামনে রোদ পোহাতে বসেছিলাম সবাই। আফরোজা তখন দু’মাসের অন্তঃসত্ত্বা। ঘন্টা খানেক পরপরই কিছু না কিছু মুখে দিতে হয় তাঁর। ইচ্ছে করে না খেতে। বমি চলে আসে তারপরও খেতে হয়। নয়তো হাত পা কাঁপুনি দিয়ে উঠে। আফরোজা বসে বসে আলুভাজি দিয়ে রুটি খাচ্ছিল। আর তা দেখে সারা বলে উঠল,
” বিয়ের জন্য লাফাতিস না? এখন বোঝ বিয়ে কত মজা। একে তো কষ্ট হয় খেতে, অন্যদিকে না খেলেও কষ্ট। কী একটা ঝামেলা। ”
আফরোজা বলল,
” আরে আগে যদি এত কষ্ট হবে জানতাম,জীবনেও বিয়েসাদীর নাম নিতাম না। জীবন আমার এ দু মাসেই শেষ। বাকি দিনগুলো যে কীভাবে যাবে আল্লাহ মালুম।”
ওসমান বলল,
” তুই বিয়েসাদীর নাম নিতে না চাইলে কী হবে? ফ্যামিলি আছে না নাম নেয়ার জন্য। তারা যথেষ্ট আমাদের কিংবা তোদের মতামতের প্রয়োজন হয় না।”
” হ্যাঁ, তা ঠিক বলেছিস। নিজেদের স্বাধীনতা বলতে কিছুই নাই। টোটালি জিরো। ”
” তবে আমি একটা জিনিস প্রায় ভাবি আফরোজা। আমাদের ফ্রেন্ড সার্কেলের সব মেয়েদেরই বিয়ে হয়ে গেল। কেবল সারা আর ইউশরা বাদে। ওরা কী জাদু টাদু জানে না-কি? ফ্যামিলিকে মনে হয় বিয়ে না করানোর জাদু করেছে।”
বলেই হাসতে লাগল ওসমান। সেই সাথে তাল মেলালো বাকি সবাই। সারা চোখ মেরে বলল,
.
.
চলবে…..
(