#প্রণয়সন্ধি– ৩০ পর্ব
#তাসনিম_তামান্না
শানায়া রুমে এসে ব্যাগ গোছাতে লাগল। জুবরান এসে এসব দেখে মনে ভয় জমলো আতংকিত হয়ে বলল
–‘ ব্যাগ…ব্যাগ গুছিয়ে কোথায় যাচ্ছো?’
শানায়া ব্যাগ গোচ্ছাতে গোচ্ছাতে বলল
–‘ আমি এসব থেকে দূরে যেতে চাই। একটু শান্তি চাই। যা আপনার সাথে থাকলে কখনোই সম্ভব না। ‘
–‘ কী বলছ এসব মানলাম আমার তোমাকে ফেলে যাওয়া ঠিক হয় নি। তাই বলে এতো বড় শাস্তি দেবে আমাকে? আমি তোমার সাথে বাকীটা জীবন কাটাতে চাই’
–‘ সেটা সম্ভব না। সব কিছুর মূল কিন্তু বিয়েটা সেটা খেয়াল করেছেন? বিয়েতে ২টা সপ্তাহ হাসিখুশি ছিলাম (দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে বলল) বিয়ের পর থেকে আমার জীবনটা এলোমেলো হতে শুরু করল। বিয়েটা না হলে হয়তো আমার জীবনটা এখানে এসে দাঁড়াত না। অন্যরকম হতো… নিজের পছন্দ মতো মেয়ে খুঁজে নিয়েন। তার সাথে সুখে সংসার করেন। আমার সাথে সংসার করার আশা ছেড়ে দেন।’
জুবরান শানায়ার বাহু চেপে কাছে এনে কাতর কণ্ঠে বলল
–‘ কোথাও যাবে না তুমি। ভালোবাসি তোমায় ‘
–‘ যেখানে বিশ্বাস নাই, সেখানে কীসের ভালোবাসা! ভালোবাসলে তার খারাপ, ভালো সবটা দিয়ে বাসতে হয়। সে ভুল করলে তাকে শুধরিয়ে নিতে হয়। মাঝপথে হাত ছেড়ে পালাতে নেই। আর আপনি সেটার উল্টোটা করেছেন। আমাকে অবিশ্বাস করে, মাঝপথে হাত ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছেন। তারপর একটা খোঁজ ও নেন নি। ফোনে আমাকে নিয়ে কথা উঠলেই ফোন কেটে দিতেন। একপক্ষীক বিচার করে সবটা নিজেদের মতো ভেবে নিলেন? একটা বার আমার মতামত শোনার প্রয়োজন মনে করলেন না। কী লাভ এ সম্পর্ক থেকে? একবার যখন ভুল করেছেন আবার ভুল করবেন না সেটার কী মানে আছে?’
জুবরান কাতর কণ্ঠে বলল
–‘ আমাকে লাস্ট বার সুযোগ দাও। তোমাকে আর অভিযোগ দেওয়ার সুযোগ দিবো না। মানুষ জীবনে অনেক ভুলই করে। কিন্তু প্রিয় জিনিস হারানোর মতো ভুল একবার ই করে আর আমি সে ভুল আর করব না। প্লিজ জান আমাকে সুযোগ দাও’
শানায়া কিছু বলতে যাবে পাশের রুম থেকে জুবরানের বাবা-মা’র চিৎকার চেচামেচি ভেসে আসছে। দুজন দুজনের দিকে তাকিয়ে চোখে চোখে বলল ‘কী হচ্ছে?’ কেউ উত্তর দিলো না। দৌড়ে পাশের রুমে গিয়ে দেখলো জিনিয়া স্বামীর শার্টের কলোয়ার ধরে বলছে
–‘ আমার বোনকেও তোরা প্লান করে খু*ন করেছিস তাই না? তোদের নামে আমি কে**স করব’
জুবরানের বাবা স্ত্রীকে বোঝাতে চেয়েও ব্যর্থ হলেন। জুবরান আর নুবাহান গিয়ে মা’কে শান্ত করতে চাইল। শানায়া বলল
–‘ ওরা কিছু করে নি। আম্মুর মৃ*ত্যু এক্সিডেন্টলি হয়েছে। কারোর হাত নাই। আর না ওখানে কোনো তেল ফেলানো ছিল’
জিনিয়া শান্ত হলো বলল
–‘ তুই কীভাবে এতোটা নিশ্চিত হচ্ছিস?’
–‘ সেদিন আম্মুর পিছনে আমি ছিলাম। আম্মু দূর্বল শরীরে নিচে নামছিল মাথা ঘুরে পড়ে গিয়েছিল। আম্মুকে সেদিন ধরতে গিয়েও পারি নাই। ফুপি দেখছিল তাই সেদিন সব দোষ আমাকে দিয়েছিল। ক্ষোভে ওনি মনে করে তার মেয়ের জীবন নষ্ট হওয়ার জন্য আমি দায়ী অথচ ওতে আমার কোনো হাত নাই’
জিনিয়া বলল
–‘ সব জেনেও তখন চুপ ছিলি কেনো মা? আমাকে একটা বার জানাতে পারতি!’
–‘ আমার কথা শোনার কী তোমাদের সময় ছিল?’
জিনিয়া অপরাধীর মতো অসহায় চোখে তাকালো। শানায়া বলল
–‘ অনেক কাহিনী হলো অনেক রাত হয়েছে তোমরা ক্লান্ত নিশ্চয়ই? খাবে আসো। আমি সব রেডি করছি’
জুবরানের বাবা স্ত্রীর চোখে সবসময় ভালোবাসা, সম্মান, শ্রদ্ধা দেখে আসছে সারাজীবন এই বয়সে এসে স্ত্রীর চোখে ঘৃণা দেখে ভেতরটা দুমড়ে মুচড়ে গেলো। ভালোবাসা ভিতর থেকে বেশ করে টের পেল।
রাতের খাবাদাবা শেষ করে যে যার রুমে শোয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। কারোরই মন মেজাজ ভালো নেই।জুবরান রুমে এসে পাইচারি করছে মনটা স্থির করতে পারছে না কিছুতেই। এই কদিনে শানায়া ওর অভ্যাস হয়ে দাড়িয়ে যা একমুহূর্তের জন্যর ছাড়তে পারবে না। ছাড়লেই জেনো দম আটকে ম*রে যাবে। শানায়া রুমে এসে জুবরানকে অস্থির হয়ে পায়চারি করতে দেখে মনে মনে বেশ পৈশাচিক আনন্দ পাচ্ছে। জুবরান ওকে খেয়াল করল না আনমনে কী যেনো সব ভেবে যাচ্ছে। শানায়া ওয়াশরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে বের হতে জুবরানকে ওর দিকে তাকিয়ে মিষ্টি হাসি দিতে দেখে ভড়কে গেলো। পিটপিট করে তাকিয়ে বলল
–‘ সমস্যা কী? পাগল হয়ে গেছ নাকি?’
–‘ হ্যাঁ তোমার প্রেমে পাগল হয়ে গেছি।’
শানায়া চোখ ছোট করে বলল
–‘ ফ্ল্যাটিং টা ভালোই পারো। গুড জব চালিয়ে যাও। একদিন ফ্ল্যাটিংয়ের জন্য এ্যাওয়ার্ড পাবে!’
–‘ আমি শুধু বউয়ের সাথে ফ্ল্যাট করি…’
–‘ তোমাকে দেখে তো তা মনে হয় না। তার ওপরে আবার বাইরে থেকে পড়াশোনা করে আসছ…’
জুবরান হতাশ নিঃশ্বাস ছেড়ে বলল
–‘ তুমি আমাকে সন্দেহ করো? আমাকে বিশ্বাস করো না?’
–‘ তোমাদের বাড়ির কাউকেই আমি বিশ্বাস করি না। আসলে তোমাদের সাথে বিশ্বাস শব্দটা যায় না। বাই দ্যা ওয়ে ওদের কয়টা মেয়েকে টেস্ট করলে?’
শানায়ার শেষ কথাটা শুনে জুবরানের মাথায় আ-গুন ধরে গেলো। নিজেকে শান্ত করতে চেয়েও পারল না। তেড়ে এসে শানায়ার চিকন হাড্ডি ওয়ালা দেহখানা বিছানায় ফেলে। ওর দিকে ঝুঁকে দাঁতে দাঁত চেপে বলল
–‘ ওদেশে অনেক টেস্ট করেছি। এবার এদেশে তোকে দিয়ে ফাস্ট টেস্ট করা শুরু করব। আর ইউ রেডি মাই সুইট ইয়ামি ওয়াইফ!’
কী থেকে কি হয়ে গেলো। বুঝে উঠতে বেগ পেতে হলো শানায়ার। জুবরানকে একটু জ্বালাতে গিয়ে এখন যে নিজে ফেঁসে গেলো। ওর শেষের কথাটা শুনে শানায়া ভয়ার্ত চোখে তাকালো জুবরানের মুখপানে। জুবরান ওর দিকে শান্ত হয়ে তাকিয়ে বলল
–‘ এতোদিন ভার্জিন থেকে তোর মুখ থেকে এসব শুনে কী মনে করলি। তোকে ঘৃণাই ছেড়ে দিব? তোকে বিয়ে করেছি কিছু না করেই ছেড়ে দিব? এতো মহান আমি না’
শানায়া ভয়ে চুপসে গিয়ে বলল
–‘ দেখো… ‘
–‘ দেখা। এতোক্ষণ ভালোভাবে কথা বলছি তোর সব কিছু মেনে নিয়েছি বলে সব মেনে নিব? আমারই সামনে আমাকই চরিত্রে কালি লেপে দিচ্ছিস আর আমি মেনে নিব?’
শানায়া এবার শক্ত কণ্ঠে বলল
–‘ অসভ্যতা করছেন কেনো? ছাড়ুন… আমাকে। দেখুন আমি কিন্তু চিৎকার করব’
–‘ কর কে আসবে তোকে বাঁচাতে? ‘
শানায়া চুপ থেকে তাচ্ছিল্যে করে বলল
–‘ দেখিয়ে দিলেন তো নিজের আসল রূপ।’
জুবরান ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে রইলো। শানায়া মলিন হেসে বলল
–‘ যদি তুমি আমার দেহ ভোগ করে আমাকে সারাজীবনের জন্য ছেড়ে দেও তাহলে নাও ভোগ করো আমাকে। তারপর থেকে আমাদের দুজনের রাস্তা আলাদা রাস্তা দেখা হলেও অচেনা অপরিচিত মানুষের মতো মুখ ফিরিয়ে চলে যাবে আমাকে শান্তিতে থাকতে দিবে কথা দাও। ‘
জুবরান থমকানো দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো। উঠে দরজা খুলে ধড়াম করে লাগিয়ে বাইরে চলে গেলো। শানায়া সে শব্দে কেঁপে উঠল। চোখ দিয়ে অনর্গল অশ্রু ঝরতে লাগলো।
চলবে ইনশাআল্লাহ#প্রণয়সন্ধি– ৩১ পর্ব / শেষ পর্ব
#তাসনিম_তামান্না
সারারাত জুবরান বাড়ি ফিরল না। সেহেরিতে এসে দেখল শানায়া সব রেডি করছে তার চোখ মুখ ফোলা। জুবরান শানায়ার তাকালো না ওর দিকে। শানায়া ওর অগোছালো অবস্থা দেখে মনটা কেমন করে উঠল। জুবরান বলল
–‘ এতো আগ বাড়িয়ে কাজ করার কিছু নেই। এ বাড়িতে তুই অতিথি তাই অতিথি হিসেবে থাকলে খুশি হবো। আর কাল সকালে যেনো তোকে এবাড়িতে না দেখি’
শানায়া কিছু বলল না নিজের মতো কাজ করতে লাগল। খাবার দাওয়া শেষ করে। আবার যে যার রুমে চলে গেলো। আজান দিলে নামাজ পড়তে গেলো ছেলেরা। জুবরান এসে শুয়ে পড়ল। শানায়া আর ঘুমাল না আজ সারাদিনের রান্না করে। ব্যাগ নিয়ে বেড়িয়ে পড়ল বাড়ি ছেড়ে। এই ক’দিন এই বাড়ি, এই বাড়ির মানুষটার ওপরে বড্ড মায়া পড়ে গেছে ওর ছেড়ে যেতে ইচ্ছে করছে না আবার থাকতেও ইচ্ছে করছে না।
শানায়াকে দেখে মিরাজ হাসান, শায়লা হাসান খুশি হয়ে গেলো। শানায়া মলিন হাসি মুখে বাঁধিয়ে রেখেছে। টিউলিপ, ডেইজি বেশ অনেকটা বাংলা শিখে ফেলেছে। ওদের সাথে কথা বলতে শানায়ার বেশ মজা লাগছে। টিউলিপকে দেখে খুশি লাগছে আগে দিনের মতো বিষণ্ণতায় ছেঁয়ে নেই। তাকে দেখে প্রকৃত সুখী মনে হচ্ছে। শানায়া জিজ্ঞেসা করেই ফেলল
–‘ এতো খুশি যে নিউ মেম্বার আসছে না-কি? ‘
টিউলিপ লজ্জা পেলো ভাঙা বাংলায় বলল
–‘ টুমিও না কীযে বলো! টোমার ব্রাদার আমাকে আগের চেয়ে কট লাভ করে। কটো ভালোবাসে, আমিও ভালোবাসি। আমাকে প্রোয়োরিটি দেয়, টাইম দেয়। আগে তো শুধু মানি বুঝত। ইউ নোউ, টার আইসে আমি আমার জন্য কটো ভালোবাসা দেখি’
হাবিব টিউলিপ ভালোবাসে শুনে ভালো লাগলো। শানায়ার মনটা খুশিতে ভরে উঠল। শানায়া সারাদিন ঘুরে ফিরে জুবরানের কথা মনে পড়ছে। কিছুতেই লোকটাকে মাথা থেকে সরাতে পারছে না। ফোন নিয়ে বসে আছে মনে মনে চাইছে লোকটা ফোন দিক জোর করে নিতে আসুক কিন্তু আসল না। শানায়া লোকটাকে সরাতে পাপড়ির সাথে দেখা করতে গেলো। এখন সে শশুড়বাড়িতে থাকে রায়হানরা এখনে তাদের নিজেদের বাড়ি বানিয়েছে সেখানেই উঠেছে। বাড়ির কাজ অনেক দিন ধরেই চলছিল। তাই তারা কাছেপিঠে ভাড়ায় উঠেছিল পাপড়িদের বাসায়। পাপড়িকে হাসিখুশি দেখাচ্ছে সে খুশি। শানায়ার হিংসা হচ্ছে ওর লাইফে কেনো সুখ নাই? চাইলেও কিছু মেনে নিতে পারছে না। ইফতার করে শায়লা হাসান নামাজ পড়ে তাসবী পড়ছিলেন। শানায়া ওনার কোলে মাথা দিয়ে শুয়ে পড়ল। শায়লা হাসান ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগল। শানায়া বলল
–‘ মামণি সালুশন দাও। আমার সব কিছু কেমন এলোমেলো লাগছে কিছু ভালোলাগছে না।’
শায়লা হাসান বুঝেছিল শানায়ার কিছু হয়েছে নাহলে যে মেয়ে বাড়ি ছেড়ে চলে গেলো বলল আর আসবে না। কত জোড় করল সবাই মিলে কিছুতেই আনা গেলো না। সেই কিছু না বলে চলে আসল! তাই শানায়ার বলার জন্য অপেক্ষায় ছিল। বলল
–‘ আমি তো চিরকাল থাকব না। তুমি কবে নিজের সমস্যা গুলো সমাধান করতে পারবে?’
শানায়া অসহায় ছলছল চোখে তাকালো। বলল
–‘ একদম খারাপ কথা বলবে না। তুমি সবসময় আমার সাথে থাকবে। আমি হারাতে হারাতে ক্লান্ত’
–‘ কী হয়েছে? ঝগড়া করছ জুবরানের সাথে?’
শানায়া অবাক হলো না। ও জানে পাপড়ি সব বলে দিয়েছে শায়লাকে তাই সবটা বলে হালকা হলো। শায়লা হাসান বলল
–‘ দেখ আমার সবাই ভুল করি। তোমাদের বয়স তখন অল্প ছিল। তোমরা ভুল করেছ। বড়দের কথা বলছি না ওটা তোমার সিদ্ধান্ত। আমি তোমার আর জুবরানের কথা বলছি। তুমি ফিরে যা-ও, মানিয়ে না-ও, সংসার করো। তুমি ওকে ভালোবেসে ফেলছ। শুধু তোমার মধ্যে দ্বিধা কাজ করছে সবটা মেনে নিতে। কমতো শাস্তি পেলে না দুজনে! অনেক বছর আলাদা থেকেছ, অনেক কষ্ট পেয়েছ। ও যখন তোমার সাথে তোমার কষ্ট গুলো ভাগ করে নিতে চাইছে তাহলে ক্ষমা করে দিতে ক্ষতি কী? আমার মনে হয় ও তোমাকে ক্ষমা করে দিয়েছে নাহলে তোমার সাথে থাকতে চাইত না। আর তাছাড়া জুবরান যদি না ফিরত, ফিরে এসেও যদি খারাপ ব্যবহার করত তাহলে আমি তোমাকে অন্য জায়গায় বিয়ে দিতাম। আমি তোমাকে সুখী দেখে ম*রে শান্তি পেতাম। সুখ যখন নিজে পায়ে এসেছে তাহলে কেনো দূরে ঠেলে রাখছ?’
–‘ আমি ওদের কাউকে ক্ষমা করব না প্রশ্নই আসে না। ভয় হচ্ছে যদি জুবরান যদি আবার ঠ*কা-ই’
–‘ একটা কথা মাথায় রাখবি মানুষ সব পাপের শাস্তি ইহকালে পায় না পরকালে পায় তাই ধৈর্য্য ধর নিশ্চয়ই তাদের সকল শাস্তি পাবে। আর ন্যাড়া বেল তলায় কিন্তু একবারই যায়। যদি জুবরান এমন করে তোকে আমি অন্য জায়গায় ওকে দেখিয়ে দেখিয়ে বিয়ে দিব তোর বিয়ে তে জুবরান চিফগেস্ট হিসাবে থাকবে’
শানায়া ফিক করে হেসে ফেলল। শায়লাও তাল মিলালো। শানায়া দুই দিন এ বাড়িতে থাকল নিজেকে শান্ত করে ও বাড়িতে গেলো। জুবরান তখন অফিসে। শানায়া দুদিন খোঁজ নিয়েছে রাহাতের কাছ থেকে। জুবরান না-কি অফিসে খুব হমড়িতমড়ি করে সবাইকে দৌড়ের ওপরে রাখছে। অফিসের সবাই জুবরানকে গালি দিয়ে ধুয়ে দিচ্ছে। শানায়া বাবা, জুবরানের বাবা, নুবাহান বাসা ফিরে গেছে। জিনিয়া নাকি বলেছে ওবাড়িতে আর ফিরবে না ছেলের সাথে থাকবে। জুবরান বাসায় এসে শানায়াকে দেখে আশ্চর্য হয়ে গেলো। পরক্ষণে মনের ভুল ভেবে এড়িয়ে গেলো। শানায়ার ভ্রু কুঁচকে গেলো। রাগে মাথা দপদপ করে উঠল। জুবরান ফ্রেশ হয়ে এসে আবার মনে ভুল ভেবে চলে যাচ্ছিল। শানায়া জুবরানের টিশার্টের কলোয়ার টেনে ধরতেই জুবরান চমকে বলল
–‘ তুমি? এখানে? তুমি সত্যি এখানে?’
–‘ তো আমি নয় তো কী আমার ভুত? আমাকে ইগনোর করছ? ‘
জুবরান থতমত খেয়ে গেলো। শান্ত হয়ে কিয়ৎ তাকিয়ে থেকে। শানায়ার কোমড়ে চেপে নিজের কাছে টানল। শানায়া পিটপিট করে তাকিয়ে রইলো।
–‘ ফিরে আসলে কেনো? মিস করছে বুঝি?’
শানায়া ভেংচি কেটে বলল
–‘ আপনাকে না আপনার বাড়িটাকে ভিষণ মিস করছিলাম।’
–‘ ওহ আই সি!’
–‘ কী?’
–‘ তোমাকে হ**ট লাগছে!’
কথাটা বলে জুবরান শানায়ার গালে টপাটপ চু*মু খেলো। শানায়া বড়বড় চোখ করে তাকিয়ে বলল
–‘ ছিঃ রোজার মাসে এসব কী?’
–‘ শুকনো চু**মু খেলে কিছু হয় না’
শানায়া ইতস্তত করে বাচ্চা বাচ্চা ফেস করে বলল
–‘ আই পেয়ার ইউ। উইল ইউ পেয়ার মি?’
জুবরান গম্ভীর কণ্ঠে বলল
–‘ কী বললে? শুনতে পাই নি। আবার বলো!’
শানায়া রাগ করে জুবরানকে ধাক্কা দিয়ে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে বলল
–‘ শুনতে হবে না বয়রা মুরগি’
জুবরান ভ্রু কুঁচকে বলল
–‘ তুমি আমার কী পুরোনো ফর্মে চলে গেলে না-কি? গেলে আমারই ভালো। কেননা সেই আমার তুমি টাকেই আমি ভালোবেসেছিলাম’
শানায়া গম্ভীর কণ্ঠে বলল
–‘ আমার সাথে শুধু ভাব নেওয়া না?’
–‘ তো আমার একমাত্র বউ না? ভাব তো দেখাতেই হবে!’
শানায়া জুবরানকে জড়িয়ে ধরল জুবরান বলল
–‘ সরি… সরি ফর এভরিথিং’
–‘ সরি ঠু! এন্ড লাভ ইউ সো মার্চ…’
#সমাপ্ত