প্রণয়ের সূচনা পর্ব -২৬

#প্রণয়ের_সূচনা
#লেখিকা_Nazia_Shifa
#পর্ব_২৬
___________________________
ভেন্যু থেকে কিয়ৎকাল আগেই ফিরেছে প্রণয়।ঘেমে নেয়ে বেচারার একাকার অবস্থা।দুই হাত দুইদিকে মেলে দিয়ে চোখ বন্ধ করে আয়েশ করে শুয়ে ছিল বিছানায়।তাকে ফিরতে দেখে হন্তদন্ত হয়ে রুমে ঢুকলো সূচনা। কোনো দিক না দেখে সোজা জিজ্ঞেস করে বসলো-

–‘ নিষাদের হাতে কী হয়েছে? কীভাবে ভাঙ/লো?

সূচনার দৃষ্টি প্রণয়ের দিকেই,জবাবের আশায় আছে কিন্তু প্রণয় নিশ্চুপ। কোনোরকম সাড়া শব্দ নেই।আচ্ছা সে কী ঘুমিয়ে পড়েছে? এক মূহুর্তের জন্য কথাটা ভাবলেও সেই ভাবনায় ইতি টানল সূচনা।পুনরায় গলা উঁচিয়ে বললো-

–‘শুনছেন?বলছেন না কেন?

আঁখি জোড়া বদ্ধ অবস্থায় ই কপাল কুচকে এলো প্রণয়ের।উন্মুক্ত হলো আখি,সেখানে একরাশ ক্লান্তি।উঠে বসলো প্রণয়।সূচনার মায়া হলো ভাবল -সে ভুল করেছে, এখন এভাবে ডাকাডাকি করে প্রশ্নের উত্তর টা তো পরেও চাওয়া যেত,এমনিতেই কাজ করতে করতে বেচারার অবস্থা কা/হিল তারওপর তার বোনের বিয়ে ভাই হিসেবে নিশ্চয়ই তার জন্য অনুভূতি টা কষ্টের আর সে কিনা এসব করে আরও মাথা খাচ্ছে। নিজের ওপর নিজেরই রা/গ হচ্ছে তার।

–‘ কী হলো এখন চুপ কেন?বলো কী জানতে চাও?

সূচনা মাথা নিচু করে কাচুমাচু ভঙ্গিতে বললো-

–‘ কিছু না।

–‘কেন একটু আগেই তো জিজ্ঞেস করছিলে হাত কিভাবে ভাঙ/লো?কী হয়েছে? এখন জানতে চাও না?

সূচনা হ্যা না কিছু ই বলল না।চুপ করে রইলো।প্রণয় বাম হাত চুলে চালাতে চালাতে বললো-

–‘এদিকে এসো।

সূচনা আসলোনা।দাঁড়িয়ে রইলো মূর্তি/র ন্যায়।বু/কের ভেতর তার ধুকপুক ধুকপুক করছে। গতরাতে প্রণয় আর তার ঔ অতটুকু মূহুর্ত স্মরণে আছে তার। প্রণয়ের থেকে পাওয়া দ্বিতীয় স্পর্শ, তার বলা বাক্যটুকু এখন ও কর্ণকুহরে ঠেকছে যেন।এই যে মনে হচ্ছে প্রণয় এখন ও কালকে রাতের মতো তাকে বলছে-

–‘সদ্য স্ফুটিত কোনো পুষ্পের ন্যায় পবিত্র প্রণয়ী,নিজেকে অপবিত্র ভাবার দুঃসা/হস যেন না করে সে।তার অন্তর,কায়া গভীর থেকে গভীর ভাবে স্পর্শ করার অধিকার শুধু তার প্রণয়ের।সেই দুঃসাহস শুধু দেখাবে প্রণয়ীর প্রণয়ই।

ইশশশ এত সুন্দর করে বুঝি বলতে হয়।প্রণয় তো জানে না তার এই কথাটা যে তাকে অস্থির করে তুলেছে,সাথে লাজরাঙা ও।ভাবনার সুতোয় টান পড়ল সূচনার। হাতে টান পড়ায় কোনো প্রতিক্রিয়া দেখানোর আগেই আরেক দফা অবাক হয়ে গেল সে।প্রণয় হাত ধরে টান দিয়ে তার কোলে বসিয়ে দিল সূচনাকে।সূচনা পাথর হয়ে গেল একেবারে। ওঠার কথাটাও যেন ভুলে গেছে।প্রণয় সূচনার ছাই রঙা শাড়ির ওপর দিয়ে ই আঁকড়ে ধরল তার কো’মর।কো’মরে স্পর্শ পেতেই তার দিকে মুখ ঘুরা’লো সূচনা।মুখোমুখি হলো তারা,নিঃশ্বাস আছ’ড়ে পরছে একে অপরের মুখে,মিল’ন ঘটলো যেন তাদের।প্রণয় কো/মরে হালকা চা’প দিতেই সূচনা তার ডান হাত রাখল প্রণয়ের হাতের ওপর।নিজের কোমর হতে প্রণয়ের হাত সরাতে সূচনা মৃদু চেষ্টা চালালো।কিন্তু হাত যেন চলছে না তার। হাসফাস করছে সে। হুট করে এক অপ্রত্যাশিত কাজ করল প্রণয়। বাম হাত দিয়ে সূচনার গাল চেপে ধরে তার বাম গা/লে অধর ছোঁয়ালো।অতঃপর যেভাবে টান দিয়ে কোলে বসিয়েছিল সেভাবেই নামিয়ে বিছানায় বসিয়ে দিল। সূচনা সম্বিত ফিরে পেল ঝাঁ/কুনি তে।এতক্ষণের অস্থিরতা, হাসফাস দুটোর পরিমাণ টাই কমেছে খানিক। কেন?তার সংস্পর্শে আসায়?কিন্তু তার স্পর্শ ই তো এলোমেলো করেছে তাকে,অস্থিরতার যোগান দিয়েছে।তাহলে?চোখ ছোট ছোট করে তাকিয়ে রইলো সূচনা।প্রণয় শার্টের হাতা গোটাতে গোটাতে কাবার্ডের দিকে গেল।সূচনা চোখ গোল গোল করে অবাক কণ্ঠে বললো –

–‘এটা কী হলো? কী করলেন আপনি?

প্রণয় কিছু না বোঝার ভান করে বললো-

–‘কই কী হলো? কী করলাম আবার?

–‘আপনি আমাকে স্পর্শ করেছেন আমার অনুমতি ছাড়া।

–‘ আমি কখন স্পর্শ করলাম?আশ্চর্য!

–‘আশ্চর্য, আপনি মি/থ্যা বলছেন কেন? একটু আগে যা করেছেন সেটা কী ছিল?

–‘ ও ওটা

–‘হ্যা

–‘কিন্তু ওটা তো আমার দো/ষ না।আমার হাত আর ঠোঁটে/র দো/ষ।আসলে কী জানো তো তোমাকে দেখলে আমার কোনো কিছুই আমার কন্ট্রোল এ থাকেনা। একটু আগে যা হয়েছে সেটাও আমি করিনি।এই যে হাত(হাত উঁচিয়ে) আর এই যে ঠোঁ/ট (ঠোটে আঙুল দিয়ে) এদের দো/ষ। এখন তুমি বলো এদের কি শা’স্তি দেয়া যায়? তবে শাস্তি যা ই দাও না কেন আমাকে স্পর্শ করতে হবে।কি বলো রাজি?

সূচনা আহা/ম্মকের ন্যায় তাকিয়ে রইলো প্রণয়ের দিক। এ কেমন যুক্তি? এক সময় এমন আজাই/রা যুক্তি তো সে দেখাত।আর প্রণয় কি না তাকে আজকে সেই জা/লেই ফা/সালো। সূচনা কি বলবে না বলবে বুঝতে না পেয়ে বললো-

–‘ আমার সাথে ফা/জলামো করছেন?আমাকে দেখলে আপনার ফাজ/লামো করার শখ হয় সেটাও বলেন।

প্রণয় মুখ বা’কিয়ে জিজ্ঞেস করলো-

–‘তুমি আমার সমবয়সী?

সূচনা ভ্রু কুটি করে জিজ্ঞেস করলো-

–‘ মানে ?

–‘মানে এটাই তুমি আমার সমবয়সী ও না আমার বান্ধবী ও না,তাহলে তোমার সাথে ফাজলামো করব কোন দুঃখে?তুমি আমার বউ আর বউকে দেখলে বরদের আদর আদর লাগে ফাজলামো করবে কেন?বউ কি ফাজলামো করার জিনিস? বউ হচ্ছে আদর করার জিনিস। বুঝেছ?

প্রণয়ের কথা শুনে সূচনা অবাক হয়ে গোল গোল চোখে তাকিয়ে রইলো।সে দিকে তোয়াক্কা না করে প্রণয় কাবার্ড থেকে একটা ব্যাগ বের করে সূচনার হাতে দিয়ে বললো-

–‘সুন্দর করে এটা পড়ে তৈরি থেকো।আমি গেস্ট রুমে যাচ্ছি শাওয়ার নিতে।এখন জ্বর আছে হালকা,তোমার তো এমনি শীত বেশি এজন্য শাওয়ার না নিয়ে এসে পড়ো না।শীতকালে সপ্তাহে দুইদিন শাওয়ার নেয়ার প্ল্যান থাকলে সেটাও ভুলে যাও।আই হেট দিজ।গট ইট?

সূচনা মুখ বা’কিয়ে বললো-

–‘ আমি আপনার মতো না শীতকালেও সপ্তাহে চারদিন শাওয়ার নেই। হুহ

প্রণয় নাক মুখ কুচকে বললো –

–‘ছি/হ মানে বাকি দুই দিন শাওয়ার না নিয়েই থাকো?ই/য়াক।

আবার মুখ বা/কালো সূচনা।বললো-

–‘ শাওয়ার নেই না,, ফ্রেশ তো হই।আমার উনিশটা শীতকাল আমি সারাদিন শুয়ে,বসে কাটিয়ে/ছি।ছোট বেলায় ছোট ছিলাম আর বড় হওয়ার পর আলসেমিতে।আর এমন একটা ভাব নিচ্ছেন যেন চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে বাইশ ঘন্টাই আপনি শাওয়ার নিতে থাকেন।যতসব।

–‘আমি জানতাম তুমি অলস কিন্তু অলসতায় যে শাওয়ার ও নেও না সেটা ধারণায় ছিল না।

সূচনা একটু কাচুমাচু মুখ করে বললো-

–‘ শুধু কী শাওয়ার,,,খেতে,বসতে,চুল আচ/রাতে, শাওয়ার নিতে, পড়তে বসতে সবকিছু তে আলসে/মি লাগে শুধু ঘুমানো ছাড়া।

প্রণয় হতাশ চোখে তাকিয়ে রইলো সূচনার দিকে। সূচনা একটু নড়েচড়ে বসলো। কী ভাববে সে কেমন এক অলস মেয়েকে বিয়ে করেছে। কিন্তু সূচনাকে অবাক করে দিয়ে প্রণয় কয়েক কদম এগিয়ে আসলো সূচনার দিক।সূচনা নজর রাখল প্রণয়ের দিকে।বরাবরের মতে মুখে বা’কা হাসি দখল করেছে প্রণয়ের ওষ্ঠদ্বয়।সূচনা তাকাতেই প্রণয় চোখ টিপ দিয়ে বললো-

–‘ তোমার রেগুলার শাওয়ার নেয়ার ব্যবস্থা করব এবার,আর সেটা হয়ে গেলে কাজ বেড়ে যাবে তোমার তখন আলসেমি ও লাগবে না।

কথাটা বলেই রুম থেকে চলে গেল প্রণয়। সূচনা ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে রইলো।কিছু বোধগম্য হয়নি তার।কী বললো প্রণয়? অত ঘাটালো ও না।কোলের ওপর রাখা ব্যাগটার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসল।
__________________________________
–‘এটা কেমন শাড়ি পড়েছ?

আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে হিজাব পড়ছিল সূচনা।তখনই প্রণয়ের স্বর কানে এল।সূচনা পেছনে ঘুরে প্রশ্ন সূচক দৃষ্টিতে তাকালো। জিজ্ঞেস করলো-

–‘কেন কী হয়েছে?

–‘ তুমি জানো না কি হয়েছে?

সূচনা একটু অবাক হয়ে গেল,বুঝতে পারলোনা প্রণয় কি বলছে।তাই মাথা নাড়িয়ে বললো-

–‘ আমি বুঝতে পারছি না কী বলছেন আপনি।

প্রণয় বড় বড় পা ফেলে এগিয়ে এসে দাড়ালো সূচনার সম্মুখে।সূচনা পেছাতে যেয়েও পারলনা,তার আগেই প্রণয় দু হাটু মুড়ে বসে তার কোমর আঁকড়ে ধরেছে।প্রণয়ের এহেন কান্ডে সূচনা ভর/কে গেল। স্তব্ধ হয়ে দাড়িয়ে রইলো। প্রণয়ের দেয়া সবুজ রঙের সার্টিন সিল্ক শাড়ী টাই পড়েছে সূচনা। শাড়ীর কুঁচি গুলো এলোমেলো হয়ে গেছে, এক পাশ দিয়ে কিঞ্চিৎ উন্মুক্ত হয়েছে উদর। সেটা দেখেই রে/গেছে প্রণয়।শাড়িটাও ঠিক ভাবে পড়তে পারবে না কেন?আবার নিজেই নিজেকে বক/লো কে বলেছিল তাকে সিল্কের শাড়ী কিনতে?জামদানী বা বেনারসি কিনলে তো এই ঝামে/লা হত না।লেপ্টে থাকত সুন্দর করে। পরমুহূর্তেই ভাবলো এই ঝা/মেলা না হলে তো সে এত কাছে ও আসতে পারত না।এলোমেলো কুঁচি গুলো সন্তপর্ণে ঠিক করে দিল যেন পে/টে হাত না স্পর্শ করে।মাথা উঁচিয়ে সূচনার দিকে তাকালো।চোখমুখ খিঁচে বন্ধ করে রেখেছে সে।এই মুহুর্তে তাকে ছুয়ে দিলে কি প্রণয় বড় কোনো ভুল করে ফেলবে?সে তো চাইছে ভুল করে তার আঙুলের স্পর্শ লাগুক তার উন্মুক্ত উদরে।কিন্তু হাত জোড়া এখনও তার নিয়ন্ত্রণে নেই।এই যে কত সুন্দর করে ঠিক করে দিল অথচ স্পর্শ লাগল না।হাহ,,মাথা থেকে সব ভাবনা ঝেড়ে ফেলে দিয়ে কুঁচি গুলো একহাতে নিয়ে সূচনার উদ্দেশ্যে বললো-

–‘ নাও গুজে দাও।

এতক্ষণ যেন কোনো এক ঘোরের মধ্যে ছিল সূচনা।প্রণয়ের গলা পেতেই সম্বিত ফিরে পেল। কা’পা কা’পা হাতে কুচিগুলো গুজে নিল।উঠে দাঁড়ালো প্রণয়।সূচনার কানের সামনে এসে দাঁতে দাঁত চেপে বললো-

–‘ আমার জিনিস শুধু আমি দেখব।অন্য কেউ কেন দেখবে?আজ যদি বাইরে এভাবে চলে যেতে না I swear আর কোনোদিন শাড়ী পড়ে বাইরে বেরোতে দিতামনা। শাড়ী পড়তে এমন ভাবে ই তারপর আমি ঠিক করে দিতাম।শাড়ী পড়ে রুমের মধ্যে ই ঘোরাঘুরি করতে আর আমি দেখতাম।তারপর খুলে রেখে দিতে ব্যস শেষ কাহিনি।কথা বোঝা গেছে?

একে তো প্রণয় এতটা কাছে তারওপর রে/গে আছে বিধায় ভ/য় পেয়ে গেল সূচনা। ঢোক গিলে বললো-

–‘বু,,,বুঝেছি।

প্রণয় হাসল।সূচনার হিজাবটা দুদিক দিয়ে টেনে ঠিক করে দিতে দিতে বললো-

–‘দেট’স লাইক মাই ওয়াইফ।

নিজের হাতের মুঠোয় সূচনার হাতটা নিয়ে তার দিকে তাকিয়ে বললো-

–‘চলো যাওয়া যাক।

ড্রয়িংরুমে আসতেই দেখা গেল ইরা আর তনয়া কে।ফিহা,তিথি তৃণা দিনার সাথে পার্লারে গিয়েছে।ইরা আর তনয়া দুজনই তৈরী।মিসেস আফিয়া সূচনাকে দেখেই বললেন-

–‘মাশা আল্লাহ অনেক সুন্দর লাগছে, আমার ছেলের পছন্দ আছে বলতে হয়।শাড়ী আর শাড়ী যে পড়েছে দু’জনই সুন্দর।

মিসেস আফিয়ার কথায় সূচনা লজ্জায় মাথা নিচু করল। মিসেস আফিয়া হাসতে হাসতে বললেন –

–‘ইশশশ এত লজ্জা পাচ্ছিস কেন? সুন্দর কে সুন্দর বলবনা?যদি মিথ্যা প্রশংসা করতাম তখন না লজ্জা পাওয়ার কথা।যাক ওরা তো পার্লার থেকে সোজা ভেন্যু তে আসবে,আমরা তাহলে এখনই বেরোই। যেতেও সময় লাগবে তাই না প্রণয়।

–‘হ্যা মামা চলে গেছে?

–‘হ্যা চলে গেছে।

–‘ ঠিক আছে।
.
.
–‘হাত কা/টল কিভাবে? কী করতে গিয়েছিলে? চুপচাপ এক জায়গায় বসে থাকতে পারো না?

কর্কশ গলায় উক্তি টুকু করলো প্রণয়।আশেপাশের অনেকেই তাকিয়ে আছে তাদের দিকে। সূচনা টলমলে চোখে হাতের দিকে তাকিয়ে আছে।ছোট্ট মনে অভিমান জমলো তার প্রণয়ের প্রতি।এভাবে সবার সামনে না ব/কলে হত না।মানুষ কিভাবে তাকিয়ে আছে তার দিকে। এত বড় মেয়ে হাত কে/টে ফেলেছে সেজন্য বরের কাছ থেকে ব/কা শুনছে? ছি/হ। অত বড় কিছু না হলেও কেন যেন চোখ থেকে কান্নারা উপচে পড়ছে। পিছিয়ে গেল সে লাগবে না তাকে দেখানো, এভাবেই থাকুক, কিছু করবেনা।

#চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here