#প্রেম_ছোয়ালে Part:01 Writer:Suvhan Årag (ছদ্মনাম) ভাবতেও খুব অদ্ভুত লাগে আজকে তাদের তৃতীয় বিবাহ বার্ষিকী আর আজ নিজের প্রিয়তম স্ত্রী কে তুলে দিতে যাচ্ছে আহসান অন্য কারোর হাতে।অথচ যেই কে নিয়ে কতো স্বপ্ন ছিল তার।চার বছর অপেক্ষা র অবসান এর পর সে নীলিকা কে পেয়েছিল নিজের করে ।কিন্তু নিয়তি র কি অদ্ভুত খেল আজ নিজের রিদয়ের রক্ত ঝরিয়ে তাকে তুলে দিতে যাচ্ছে অন্য কারোর হাতে সামনে সরু রাস্তা দিয়ে আঁকা বাকা পথে গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছে আহসান ।বাইরের দিকে তাকিয়ে ধেয়ে চলা গাছপালা আর মৃদু বাতাস উপভোগ করছে নীলিকা তার পাশে বসে ।নীলিকার উড়ন্ত খোলা চুল আহসানে র মুখে যতো এসে পড়ছে চোখের পানি গুলো যেন ততোই বেশি অবাধ্য হয়ে যাচ্ছে একটু পর পর আড়চোখে দেখে নিচ্ছে নিজের প্রিয়তমা কে ।হয়তো এটাই শেষ বার।আজকের পর থেকে যে তার কাছের মানুষ টি অন্য কারোর হয়ে যাবে।গভীর রাতে মেঘের গর্জন শুনে সে ভয়ে মুখ লুকাবে ঠিকই কিন্তু অন্য কারোর বুকে –নীলি ,,,, –হুমম –তোমাকে আজকে খুব সুন্দর লাগছে –কেন আগে সুন্দর ছিলাম না বুঝি –না তা নয়।আজ যেন তোমাকে বেশি ই প্রাণবন্ত লাগছে।মনে হচ্ছে ভোরের শিশিরে ভেজা সদ্য ফুটে ওঠা গোলাপের কড়ি প্রতিউওরে নীলিকা একটু মুচকি হাসলো –ধন্যবাদ ।আচ্ছা আপনি এতো কাব্যিক কথা কোথায় পান –আচ্ছা তুমি কখনো প্রেমে পড়েছো প্রশ্ন শুনে নীলিকা হকচকিয়ে ই উঠলো।কারণ সে যে প্রেমে পড়েছিল সেটা আহসানে র অজানা নয়।কিন্তু হঠাত্ শুধু শুধু এই অহেতুক প্রশ্ন করে নীলিকা কে কেন সে বিব্রত করছে সেটাই নীলিকা বুঝতে পারছে না –কি হলো বললে না যে –কেন প্রেমে পড়লে কি হবে — প্রেমে পড়লেই বোধ হয় মনে সাহিত্যের বীজ অঙ্কুরিত হয়।তৈরী হয় শব্দ ।এক একটা অক্ষর ।যেটা শুধু প্রেমিকা নয় প্রত্যেকটি বস্তুকে নিয়ে ভাবতে শেখায় প্রেমের দৃষ্টিতে ।সেখানে খড় কেও তোমার মনে হবে প্রেমের উপকরণ –আপনার কথার কোন অর্থ ই আমি বুঝি না।আমার মনে হয় ব্যাংকের চাকরি বাদ দিয়ে আপনার কবিতা লেখা উচিত।অসহ্য মাথাটা খারাপ করে দেয় সব সময় –আচ্ছা নীলি যদি কখনো দূরে যাই,খুব দূরে,তুমি কখনো খুঁজবে আমায়।কোন বিকেলের একলা সময়ে তোমার কি কখনো মনে পড়বে আমার কথা আহসানের কথা শুনে নীলি কি বলবে বুঝতে পারছে না।বিয়ের পর থেকে প্রতি বছর বিবাহবার্ষিকী তে আহসান তাকে জোর করে ঘুরতে নিয়ে যায় ।এক সপ্তাহ আগে থেকে কানের কাছে ঘ্যান ঘ্যান করে একটা কথাই বলে—-আচ্ছা নীলি একদিন দেবে আমাকে ।শুধু একটা দিন।যেদিন প্রতি মূহুর্তে প্রতি মিনিটে আমি তোমার সাথে থাকবো,দুজনে যাব অনেক দূরে,যেখানে কেউ থাকবে না আমি তুমি ছাড়া, শুধু তোমার হাত ধরে একটু বুক ভরে শ্বাস নেব মুক্ত বাতাসে কিন্তু এই বিবাহ বার্ষিকী তে আহসান একটি বারের জন্য ও এই কথাটা বলেনি –এই নীলি, কি ভাবছো? –হ্যাঁ, কিছু না –আজ যে হলুদ রঙের শাড়ি পড়লে।এটা ও কি আশফির প্রিয় রং –হুম আহসানের মুখে একটা স্মিত হাসি ।প্রতি বছর বিবাহবার্ষিকী তে নীলিকা আশফির পছন্দ মতো রঙের শাড়ি পড়ে।এমনি বাড়ি তেও সব তাই।কি অদ্ভুত আজ তাকে পড়তে হলো হলুদ শাড়ি ।অথচ আজ ই আহসানে র সাথে তার শেষ দিন।এতোদিন কতো বার করে আহসান চেয়ে ছিল তার হলদে পাখিটা কে হলুদ সাজে দেখার।যেমন টা দেখেছিল সেই শুরুতে প্রেমের প্রথম পরশে এদিকে সামনে গোল টেবিল ।দুপাশে দুটো চেয়ার ।তার একটাতে বসে আছে আশফি।বার বার তাকাচ্ছে ঘড়ির দিকে।কাটা যেন ঘুরছেই না।সেই কখন থেকে আশফি নীল পানজাবি পড়ে বসে আছে।তার নীলি যে তাকে নীল পানজাবি তে দেখতে খুব পছন্দ করে।আর সেও তার নীল পরিকে সেভাবে ই দেখার অপেক্ষা তে আছে গাড়ি যতোই সামনের দিকে এগোচ্ছে ততোই ওদিকে আশফির মনে হচ্ছে তার সবচেয়ে প্রিয় জিনিসটি তার কাছে চলে আসছে।আর আহসানের বুকের ব্যথা টা বেড়ে যাচ্ছে ।তার প্রিয় মানুষটিকে হারানোর সময় ততোই এগিয়ে আসছে আর অপেক্ষা তে আছে নীলিকা ও।আজ তার প্রিয় মানুষটিকে সে বলবে তার সব কথা।তার সবচেয়ে বড় মনের কথা—– “”প্রেম যে জীবনে একবারই আসে,এসে ছুঁয়ে রাঙিয়ে দিয়ে যায় সবটা,কিন্তু প্রেম তো আমার জীবন এ বার বার এসেছে,যা আমার কলঙ্ক টাকে ঢেকে দিয়েছে,রাঙিয়ে ছে আমাকে প্রেম ছোয়াতে”” বিদ্র:আপনাদের সাড়া পেলেই পরবর্তী পর্ব আনবো চলবে————