প্রেম পিয়াসী পর্ব -৯+১০

#প্রেম_পিয়াসী❤️
#লেখিকা_মুহতারিযাহ্_মৌমিতা
#পর্ব____৯.

রাদ-ইলহাম বাসায় ফিরতেই বেশ উৎসাহ ঘেরা কন্ঠে বলে উঠলেন মান্নাত বেগম,

—-“রাজিয়া ফোন করেছিলো। বলল,অনন্যার বিয়ে পাকা করেছে ছেলেপক্ষের সাথে কথা বলে। শুনে কি যে ভালো লাগছে বোঝাতে পারবোনা। কত কাঠখড় পো/ড়া/নোর পর অবশেষে কিনা মেয়েটার বিয়ে ঠিক হলো।”

রাদ অনাগ্রহ ভঙ্গিতে তাকালো মায়ের পানে। মান্নাত বেগম হাস্যজ্বল মুখে চেয়েছিলেন তার দিকেই। অবশ্য একটা উত্তরের আশায়। কিন্তু রাদ তার সেই আশায় ছোট্ট একটা দীর্ঘশ্বাস উপহার দিয়ে সোফায় বসলো।
পড়নের ব্লেজারটা খুলতে খুলতে একবার তাকালো অদূরে দাঁড়িয়ে থাকা তার প্রিয়দর্শিনীর দিকে। ততক্ষণে মান্নাত বেগম বলসেন তার পাশে। তার দৃষ্টি অনুসরণ করে সেও একবার তাকালেন ইলহামের পানে। মা-ছেলেকে একত্রে তাকাতে দেখে ইলহাম ইতস্ততবোধ করে একটু নড়েচড়ে উঠলো। সে বুঝলো, এই মুহুর্তে তার এখানে থাকাটা একদমই ঠিক নয়। তাই চলে যাওয়ার জন্য উদ্যত হতেই রাদ তাকে আটকালো। বলল,

—-“কোথায় যাচ্ছো?”

—-“ফ..ফ্রেশ হবো।”

ইলহাম ছোট্ট শব্দে উত্তর দিলো। রাদ গুরুত্বহীন স্বরে বলল,

—-“ বাইরে থেকে এসেছো,একটু বসো। জিরিয়ে নাও। তারপর না হয় ফ্রেশ হবে।”

ইলহাম ঘাড় কাত করে সম্মতি জানিয়ে পূণরায় যাওয়ার জন্য পা বাড়ালো। কিন্তু এবার রাদের পূর্বে বাঁধ সাধলেন মান্নাত বেগম।

—-“ইলহাম? মা তোমায় এক্ষনি কোথাও যেতে হবেনা। আগে রাদের সিদ্ধান্ত শুনো, তারপর ফ্রেশ হয়ে নাও।”

মান্নাত বেগমের কথায় ইলহাম একবার তাকালো রাদের পানে। রাদ নিশ্চুপ। ইলহাম পূর্বের ন্যায় ঘাড় কাত করে দাঁড়িয়ে রইলো। ঠিক তখনই রা-‘গা’ন্বি’ত হয়ে বলে উঠলো রাদ,

—-“মা, তুমি জানো আমার সিদ্ধান্ত কি হতে পারে। তারপরেও কেন সেই একই কথা বলে যাও বুঝিনা আমি।”

—-“দেখ বাবা, ভুল তো মানুষই করে। আর ওরাও না হয় করেছে একটা ভুল। তাই বলে সারাজীবন এর ভুক্তভোগী থাকবে? মানুষকে ক্ষমা করাও একটা মহৎ গুন কিন্তু।”

—-“আমি এতো মহৎ নই মা।”

রাদ মৃদু স্বরে চেঁচিয়ে বলল কথাটা। মান্নাত বেগম বড় করে দীর্ঘশ্বাস ছাড়লেন। ছেলেকে আরও একবার বোঝাতে বললেন,

—-“বাবা, অনন্যা আর অন্তুর কি দোষ বলতো?”

ইলহাম বেশ মনযোগ দিয়েই শুনছিলো মান্নাত বেগমের কথা। কিন্তু তাকে আকস্মিক থমকাতে হলো “অন্তুর” নামটা শুনে। আর যখন অন্তু এবং অনন্যার নমটা পাশাপাশি উচ্চারিত হলো, তখন তার আর বোঝার বাকি রইলো না মান্নাত বেগম কাদের কথা বলছেন। মাথাটা ভনভন করে উঠলো ইলহামের। তখন রাদ এবং অন্তুর কথা বলার ধরনেও অবশ্য অবাক না হয়ে পারছিলো না সে। বারবার মনে হচ্ছিলো দু’জনের মাঝে কোনো না কোনো সম্পর্ক ঠিকই আছে।

—-“ওরা কি করেছে? আর বিয়েটা কার বল? অনন্যার তো। আমাদের ছোট্ট অনন্যার। এতো রা-গ করে না বাবা। চল না যাই! রাজিয়া, মিলাদ না হোক! অনন্যা আর অন্তু আমাদের দেখলে কতটা খুশি হবে ভাব? আমাদের ছোট্ট অনন্যাটার বিয়ে হয়ে যাচ্ছে! আর ওর বিয়েতে যদি আমরা উপস্থিত থাকি তাহলে কতটা আনন্দ পাবে মেয়েটা। আমাদের ওখানে যাওয়ার থেকে বড় পাওনা হয়তো ওর জন্য আর কিছুই হবেনা।”

মান্নাত বেগম আবারও বলে উঠলেন। ইলহামের দম বন্ধ লাগলো কয়েক মুহুর্তের জন্য। এখানে হঠাৎ কেন ওদের ব্যাপার নিয়ে কথা হচ্ছে তারই একটা উদ্ভট চিন্তা ভর করেছে মাথায়।

—-“মা.. মা, আমি এতো সহজে ভুলতে পারোনা ঐ দিন গুলোর কথা। আমাদের পথে পথে দিন পার করার কথা গুলো তুমি এতো সহজে ভুলতে পারোনা। সেদিন কোথায় ছিলো তোমার রাজিয়া আর মিলাদ? একবারও তাকিয়েছিলো আমাদের দিকে? বাবাকে হারিয়ে ঠিক কতটা অসহায় হয়ে পড়েছিলাম আমরা? ঠিক কতটা ভে/ঙে পড়েছিলে তুমি! সব ভুলে গেলে? মা, আমি তোমায় বলছি! আজ আমাদের এতো সব দেখে কাকিয়া নিজের কু/ৎ/সি/ত লোভ সামলাতে পারেনি। তার মাথা ঘুরে উঠেছে। তাই সে এসেছে, নিজ থেকে ফোন করে ডাকছে! একবার ভাবো মা? যদি কোনো ভাবে আমাদের সেই পূর্বের অবস্থা থাকতো, তবে কি কাকিয়া এভাবেই তোমায় কল করে আজ্ঞা আজ্ঞা করতো? তোমার কি তাই মনে হয়!”

ইলহামের বুকের ভেতরটা ধক করে উঠলো। “কাকিয়া”! অন্তুর মা-কে রাদ কাকিয়া বলে সম্মোধন করেছে। হ্যাঁ, সে ঠিকই শুনেছে।

—-“ছাড় না বাবা। কে,কবে, কোথায় আমাদের হেলায় ঠেলে কথা বলেছে সেই কথা কি সারাজীবন আগলে ধরে বসে থাকবো? আমি বাপু পারবোনা ওসব। আমার দ্বারা হবেও না। তোরা ছেলে মানুষ, তোদের বয়সটাই ওমন। কিন্তু যেদিন আমার বয়সে এসে ঠেকবি সেদিন ঠিকই ভাববি, এই যে হিংসা-বি-দ্বে-ষ, রে-ষা-রে-ষি,কাউকে কটূক্তি করা এসব কেবলই কিছু সময় এবং কিছু সুন্দর মুহুর্তকে অপচয় করা। আমি পার করে এসেছি তোর এই বয়সটা। আমি বুঝি তোর মনের কথা। তাই আমি বলবো, এসব মনে রেখে কেবল ক-ষ্ট, রা-গ আর ঘৃনা ছাড়া কিছুই হবেনা, বাবা। ভুলে যা সব। সবটা ঠিক করে নে আবার নতুন করে। মানুষ থাকেই বা ক’দিন বল? কেন অযথা সামান্য ব্যাপার গুলো জটিল করে রাখবো? ভুলে যা। কোনোদিন যদি আমিও না থাকি তখন কিন্তু আপন বলতে তোর কাকিয়া আর তোর বাবাই-ই থাকবে। তখনও কি মুখ ফিরিয়ে থাকবি?”

—-“মা!(মৃদু স্বরে চেঁচিয়ে) এসব আজেবাজে কথা আমি শুনবো না কিন্তু! কেন বলো এসব কথা?”

মান্নাত বেগম হেসে উঠলেন। ডান হাতটা তুলে ছেলের মুখশ্রী ছুঁয়ে আদুরে কন্ঠে বললেন,

—-“পাগল ছেলে। মানুষ কি চিরদিন থাকে নাকি?”

—-“না থাকুক, কিন্তু আমি কখনও তোমায় আমার আগে ছাড়ছিনা। তোমার কিছু হয়ে গেলে দেখবে তার পূর্বেই আমি হার্ট অ্যা;টা;ক করেছি!”

—-“ছি ছি! ওসব কি কথা?”

বকার সুরে জোরেশোরে বলে উঠলেন মান্নাত বেগম। ইলহাম বুকের ভেতরের চাপা উদ্বেগ গুলো একপ্রকার ভুলে গেলো মান্নাত বেগমের কথাগুলো শুনে। আচ্ছা, সব মা-ই কি এই মানুষটার মতো হয়? এতোটা মনোজ্ঞ, মনোমুগ্ধকর! কত সহজ এবং সাবলীল ভাষায় নিজের বদরাগী, রগচটা ছেলেকে বুঝিয়ে দিলেন কথাগুলো। আর সেও কত সহজে বুঝে নিলো মায়ের কথাগুলো। ইলহামের ইচ্ছে করলো মান্নাত বেগমকে কয়েক মুহুর্তের জন্য জড়িয়ে থাকতে। নিজের মাকে-তো কখনো কাছে পাওয়া হয়নি। তাই ভীষণ লোভ জাগলো এই মা-কে ঠিক নিজের মায়ের মতো আপন করে নিতে। আহা, কি অসাধারণ তুমি মা।

—-“আচ্ছা যাবো। যাবো তো বাবা। এবার তো একটু হাসো?”

মা গাল ফুলিয়ে রাগ করেছেন। রাদ মায়ের রাগ ভাঙ্গাচ্ছে। তা দেখে নিজের অজান্তেই ইলহামের ঠোঁটের কোনে ফুটে উঠলো অভাবিত হাসি। মিষ্টি হেসে তাকিয়েই ছিলো মা-ছেলের পানে। চোখ জুড়াচ্ছিলো তাদের অভাবনীয় মুহুর্ত দিয়ে।

____________________________________________

অবশেষে ঠিক হলো, তারা সবাই মিলে যাবে অনন্যার বিয়ে এটেন্ড করতে। এবং হাতে বেশ সময় নিয়েই বেরিয়ে পড়লো বিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে। ইলহাম অবশ্য অনেক জোরাজোরি করলো না যাওয়ার জন্য। এভাবে বিনা-পরিচয়ে একে তো পড়ে আছে রাদের বাড়িতে। এবং তার-উপর আজ থেকে আবার গিয়ে হাজির হবে আরেকজনের বাড়িতে। এসব তার জন্য মোটেও স্বস্তিজনক নয়। আর তার চেয়েও ভ/য়ানক ব্যাপার হলো, ওটা অন্তুর বাড়ি। অন্তু যে মেঘ না চাইতেই জল পেয়ে বসবে। তার উদ্ভট,অ-শালীন, অ-শিষ্ট কু-রুচিপূর্ণ আচরণ গুলোর মাত্রা ক্রমশ বাড়তে থাকবে। যেসব থেকে সে এতোদিন পালাতে চেয়েছে অবশেষে তারই সম্মুখীন হতে হবে। সবটা ভেবে দীর্ঘশ্বাসের পর দীর্ঘশ্বাস ব্যতীত আর কিছুই মিললো না তার অদৃষ্টে।

—-“সুইটহার্ট? কি ভাবছো?”

মান্নাত বেগমদের গাড়িটা আগে বের হয়ে গেলে তার পেছন পেছন বেরিয়ে যায় রাদের গাড়িটা। রাত এখন ১০টা। পৌঁছাতে ঘন্টা খানিক লাগবে বলে আশা করা যায়। রাদ দু’হাতে গাড়ির স্টিয়ারিং ঘোরাতে ঘোরাতে আঁড়চোখে তাকালো ইলহামের পানে। ইলহামকে সেই দুপুরের পর থেকে দেখে আসছে বেশ অন্যমনস্ক। তাই নিজের ভেতরের অদম্য কৌতুহল গুলোকে চেপে রাখতে না পেরে পূণরায় বলে উঠলো।

—-“মন খারাপ?”

প্রথম প্রশ্নে ঘোর কাটলো না ইলহামের। তাই রাদ পূণরায় জিজ্ঞেস করলো। এবার তার ঘোর কাটলো। চমকে উঠে উদ্বিগ্ন মনে আওড়ালো,

—-“ক..কি হয়েছে?”

রাদ অবাক হয়। কি এতো ভাবছে তার প্রিয়দর্শিনী? কোনো বাহ্যিক দুশ্চিন্তায় চিন্তিত হচ্ছে না তো সে? কি বিষয়ে এতো নিমগ্ন হয়ে আছে?

রাদ আকস্মিক গাড়ি পার্ক করলো। যা দেখে ভড়কানো গলায় বলে উঠলো ইলহাম,

—-“ক..কি হয়েছে? গাড়ি থামালেন…”

ইলহাম কথাটা পরিপূর্ণ করার পূর্বে গাড়ির দরজা খুলে বেরিয়ে এলো রাদ। ইলহাম ভ/য়ার্ত দৃষ্টিতে দেখছিলো তাকে। আর ভাবছিলো, হঠাৎ কি হলো?

—-“বাইরে এসো।”

রাদের গম্ভীর স্বরটি কর্ণকুহরে প্রবেশ করতেই চমকে উঠলো ইলহাম। তার ভাবনার ইতি ঘটলো রাদের ছোঁয়া পেয়ে। রাদ তাকে হাত ধরে নামিয়ে আনলো গাড়ি থেকে। অনন্তর, বেশ শব্দ করে গাড়ির দরজাটা লাগিয়ে দিলো। ইলহাম প্রতি ঘটনাতেই ভড়কাতে লাগলো। রাদের আচরণ তার কাছে ঠিক লাগছে না।

—-“চুপটি করে দাঁড়াও এখানে। আমি আসছি।”

রাদ ইলহামকে নিয়ে গেলো ব্রিজের একদম পাশটাতে। যেখান থেকে নীচে তাকালেই দেখা যায় বিশাল এক মহাসাগর। ইলহাম রীতিমতো অবাকের চূড়ান্তে এসে পৌঁছালো চারপাশের প্রকৃতি দেখে। তারা এই মুহুর্তে দাঁড়িয়ে আছে বিশাল এক সমুদ্রের উপর। ছলাৎ ছলাৎ শব্দে বারবার শোনা যাচ্ছে সমুদ্রের গান। শা শা শব্দ করে প্রতিধ্বনি তুলছে প্রকৃতির ভীষণ আদুরে ঐ নির্মল হাওয়া। কি নিদারুন সৃষ্টি রবের। নীচে বিত্তীর্ন, বিপুল সমুদ্র অথৈজলে ছলাৎ ছলাৎ শব্দে গান গেয়ে চলেছে। আর উপরে প্রখন্ডিত অম্বরে নিশিকান্তের প্রান জুড়িয়ে আসা রশ্মি। যার অধিকাংশ ঢেলে পড়েছে সমুদ্রের ঠিক মাঝ বরাবর। ফলে,সমুদ্রের নীলকান্ত রঙিন জল আরও প্রগাঢ় হয়ে উঠেছে।

—-“আই থিংক,ইউ উইল লাইক ইট!”

দু’হাতে দু’টো পো/ড়ানো ঝালঝাল ভূট্টা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে রাদ। ইলহাম হা সূচক দৃষ্টিতে তাকালো তার পানে। অবাক না হয়ে পারলো না যেন। সে কি করে বুঝলো, এই মুহুর্তে সে এমন কিছুই প্রত্যাশা করছিলো!

—-“দ্যাট ওয়ান। নাকি দুটোই চাই?”

একটা এগিয়ে দিতে দিতে পরশ্রীকাতর হয়ে বলল রাদ। ইলহাম না চাইতেও হেসে পড়লো। হাসলো রাদও। ইলহাম নিজের বিস্ময় ভুলে অতি জলদি একটা ভূ্ট্টা নিয়ে নিলো রাদের হাত থেকে। লোভ সামলাতে না পেরে কামড় দিবেই, তবে তার পূর্বে বলে উঠলো রাদ,

—-“প্রথমত অধিক গরম এবং দ্বিতীয়ত একটু বেশিই ঝাল। দেখে খাবে। এই লোকগুলো সব কিছুতে এতো ঝাল কি করে খায়, আমি সত্যি বুঝতে পারিনা।”

ইলহাম কানেই তুললো না রাদের কথা। সে হলো ঝালের পোকা। আর ঝাল পোকার সামনে যেকোনো ঝালই মিষ্টির ন্যায়। তাই আর সময় নষ্ট করলো না। গরম টাকে উপেক্ষা করেই চেটেপুটে খেলো সবটা। তার খাওয়া শেষ হতে হতে রাদ তখন কেবল গুনে গুনে দু’টে কামড় বসিয়েছিলো ভূট্টায়। ইলহামকে এমন মজা করে খেতে দেখে সে ভুলে গেলো তার খাওয়া। হা করেই তাকিয়ে ছিলো এক ধ্যানে। ইলহাম অবশ্য আঁড়চোখে দেখেছে তাকে। কিন্তু পাত্তা দেয়নি। কেননা, এই মুহুর্তে তাকে পাত্তা দিতে গেলে খাওয়ার বারোটা বেজে যেতো।

—-“আরেকটা চাই?”

রাদ প্রশ্ন করলো। ইলহাম জিহ্বা দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে আঁড়চোখে তাকালো। কিছু বলল না। রাদ ঠোঁট টেনে হেঁসে নিজেরটাই এগিয়ে দিলো ইলহামের পানে। ইলহাম ড্যাবড্যাব করে তাকালো। ঠোঁট উল্টে না সূচক মাথা নাড়লো। রাদ ঠোঁটের হাসিটুকু প্রশস্ত করে বলল,

—-“আমি ঝাল খেতে পারিনা। তোমার খাওয়া দেখে ভেবেছিলাম ঝাল বোধ-হয় এই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ টেস্টি খাবার। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে তার উল্টো। সো, এটাও তোমার।”

ইলহাম ভাবার জন্য এক দন্ডও সময় নিলোনা। হাত বাড়িয়ে নিয়ে নিলো রাদেরটাও। অতঃপর পূর্বের ন্যায় দিগুণ টেস্ট করে খেতে লাগলো। এদিকে রাদ হাস্যজ্বল মুখে এক ধ্যানে তাকিয়ে দেখতে লাগলো তাকে। খাওয়া শেষের পর্যায়। ঠিক এমন মুহুর্তে রাদ বলে উঠলো,

—-“তুমি তো ভীষণ স্বার্থপর! একবার সাধলেও না আমায়!”

শেষ কামড়ে ইলহাম পুরো মুখ ভর্তি করে নিলো ভূট্টায়। আর অমনি রাদের কথাটা কর্ণকুহরে প্রবেশ করলে থেমে যায় তার খাওয়া। মুখ ভর্তি ভূট্টা নিয়ে সে গোল গোল চোখ পাকিয়ে তাকায় রাদের পানে। রাদ অসহায় মুখ করে তাকিয়ে থাকে তার দিকে। মুখ ভর্তি খাবার নিয়ে কথা বলা তো সম্ভব নয়। তাই যত দ্রুত পারলো সমস্তটা গিলে খেয়ে বাচ্চাসুলভ কন্ঠে বলল,

—-“আপনি তো খেতে চাইলেন না।”

—-“তাই বলে তুমি সাধবেও না! এটা কেমন অনাচার!”

—-“আমি আরেকটা এনে দেই?”

—-“না!”

—-“ক..কেন?”

—-“আমি তোমার এটা থেকেই খাবো!”

—-“কিন্তু এটা তো শেষ!”

রাদ ঠোঁট বাঁকিয়ে হাসলো।

—-“উহু! আমি খেলে তোমারটা থেকেই খাবো।”

—-“হ্যাঁ, কিন্তু..”

ইলহাম কথাটা সম্পূর্ণ করার পূর্বেই তার আপাদমস্তক জমে গেলো রাদের স্পর্শে। রাদ কিছু না বলেই চুম্বকের মতো লেপ্টে গেলো ইলহামের ওষ্ঠদ্বয়ের পাশ ছুঁয়ে। ইলহাম খেতে খেতে খেয়াল করেনি দুই তিনটা ভুট্টার দানা লেগে ছিলো তার মুখে। রাদ অধর মিলিয়ে সেটা উঠিয়ে নিলো নিজের মুখে। অনন্তর সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে বলল,

—-“এর চেয়ে অধিক স্বাদের ভূট্টা দোকানী কখনও দিতে পারবেনা। সরি।”

রাদের কথাটা শ্রবণগোচর হয়নি ইলহামের। সে এখনও স্তব্ধ, পলকহীন চোখে চেয়ে আছে।

#চলবে——–#প্রেম_পিয়াসী ❤️
#লেখা_মুহতারিযাহ্_মৌমিতা
পর্ব_________১০.

রাত পৌঁনে বারোটা। ছিমছাম অন্ধকার হাতড়ে গাড়ি এগোচ্ছে অন্তুদের বাড়ির উদ্দেশ্য। পথ যত কমছে ইলহামের শ/ঙ্কা, ভ/য়-ভীতি ক্রমশ বেড়ে চলেছে। একই সঙ্গে একরাশ অস্বস্তির জাতাঁকলে পিষে আছে। অন্তু তাকে দেখলে ঠিক কেমন রিয়াক্ট করবে জানেনা সে। এমনকি যে কটা দিন সে থাকবে এ বাড়িতে আদৌও কখনোও তাকে শান্তিতে থাকতে দিবে কি না সেকথাও জানেনা! তার মস্তিষ্ক অকেজো হয়ে পড়ছে। কেন যে রাদের জোড়াজুড়িতে আসতে গেলো? বেশি না আর একটু বেঁকে বসলে রাদ নিশ্চয়ই তাকে এতোটাও জোর করতো না।

আচমকা গাড়ি থামতেই ইলহামের ভাবনাদের ছুটি মিলল। পূর্বে চমকে উঠতেই অবশ্য এতো আটঘাট বেঁধে ছুটি দিতে পারলো তাদের। হঠাৎ গাড়ি থামাতে গিয়ে রাদ নিজেও কিঞ্চিৎ বিরক্ত হলো। বিরক্তিসূচক দৃষ্টিতে বাইরের ছোট্ট মিরোরটার দিকে তাকিয়ে নিঃশ্বাস ছাড়লো।

—-“এটা হলো প্রাথমিক ইঙ্গিত, যে এ বাড়িতে না আসাটাই বেটার হতো। (বিরবির করে) এই যে ম্যাম, নামতে হবে। আমরা এসে গেছি।”

সরু গলিতে দাঁড়িয়ে আছে তাদের গাড়ি। রাদ ইলহামের দিকে না তাকিয়েই বলল কথাটা। অতঃপর নেমে গেলো সে। ইলহাম ভাবুক মনে দেখছিলো সামনের দিকে। ভাবছিলো, এই সরু গলিতে থাকে অন্তু? কিন্তু রাদের বিরক্ত সূচক কন্ঠে কপাল কুঁচকে তাকায়। নামতে নামতে জানতে চায়,

—-“আমরা পৌঁছে গেছি?”

রাদ চেকিং করছিলো তার গাড়ি। হয়তো ইঞ্জিনে সমস্যা দেখা দিয়েছে। ইলহামের প্রশ্নে ঠোঁটে ঠোঁট চেপে অন্য মনস্ক ভঙ্গিতে জবাব দেয়,

—-“উমম.. না! হ্যাঁ, পৌঁছেছি। তবে একদম কাছাকাছি। এই যে গলি পেরিয়েই চাচিদের বাসা।”

—-“তাহলে আমরা এখানে কেন নামলাম?”

ইলহামের বোকা গলায় রাদ পূর্ণ দৃষ্টি নিক্ষেপ করে তাকালো ইলহামের পানে। ইলহাম তখন চারপাশ খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখায় ব্যস্ত। রাদ দুুরন্ত হাসলো। গাড়ির ডিকিটা খুলতে যেয়েও খুললো না। ঠোঁটের কোনে বাঁকা হাসি এঁটে কদম ফেলে সামনে এসে দাঁড়াল ইলহামের। রাদ আকস্মিক সামনে এসে দাঁড়াতে চোখ বড় বড় করে তাকায় ইলহাম। তার ড্যাবড্যাব করা চাহনি দেখে রাদ মনেমনে হাসে। আকস্মাৎ তার কোমর চেপে কাছে টেনে এনে ফিসফিসিয়ে বলে,

—-“রোমান্স করবো বলে!”

ইলহাম অষ্টম আশ্চর্যের ন্যায় চমকে ওঠে। হতভম্বের ন্যায় কতক্ষণ তাকিয়ে থেকে ছিটকে পড়ে তার থেকে। কাঁপা কাঁপা স্বরে আমতাআমতা করে বলে,

—-“ক..কি! আ..আমি কিন্তু যাবোনা আপনার সাথে, এই বলে দিলাম।”

ইলহামের রিয়াকশনে হো হো শব্দ করে হেসে ওঠে রাদ। ইলহাম অসহায় মুখ করে তাকিয়ে থাকে তার পানে। হাসতে হাসতে রাদ পেট চেপে ঠেস দিয়ে দাঁড়ায় গাড়ির সাথে। বড় বড় করে বার কয়েক নিঃশ্বাস ফেলে থামাতে চেষ্টা করে হাসিটুকু। অতঃপর বলে,

—-“তুমি এতো কিউট না, সুইটহার্ট। এর জন্যই বারবার প্রেমে পড়ি তোমার। একটা সেকেন্ডও ঠিকঠাক অতিবাহিত হতে পারেনা। ওকে, আর ভয় পেতে হবেনা। গাড়ির ইঞ্জিনে প্রবলেম হয়েছে। তাই হঠাৎ গাড়ি বন্ধ হয়ে গেছে। মনে হয়না ঠিক হবে। চলো, বাকি পথ টুকু হাঁটা ধরি।”

রাদের বর্ননায় মুখ কুঁচকে যায় ইলহামের। কি পাঁজি লোক রে বাবা! ইচ্ছে করছে হাতুড়ির এক বারিতে ঘিলু হাতে ধরিয়ে দিতে।

—-“উমম.. বাই দ্য ওয়ে, হেঁটে যেতে প্রবলেম নেই তো? নাকি কোলে তুলে নিবো?”

রাদ দুষ্ট হেসে ভ্রু নাচায়। ইলহাম আঁ;তকে ওঠে। আ;তংকিত স্বরে চেঁচিয়ে বলে,

—-“ন..ননন-না! আমি প..পারবো।”

রাদ আবারও হেসে ওঠে সশব্দে। উপর নীচ করে মাথা নাচিয়ে বলে,

—-“কোলে তুলে নিতে হলে মাইন্ড করতাম না, সত্যি!”

ইলহামকে ক্ষেপানোর জন্যই বলল কথাটা। ইলহাম ক্ষেপলো ঠিকই। তবে জবাব দিলো না। তাকে পিছে রেখে জোরেজোরে হাঁটা শুরু করলো। পেছন থেকে এখনও রাদের হাসির শব্দ ভেসে আসছে। যাতে ইলহামের রাগ বাড়ছে বৈ কমছে না।

____________________________________________

কলিং বেল চাপতেই দরজা খুললো অন্তু। রাদের সাথে রাগ করে হেঁটে আসতে আসতে ইলহাম ভুলেই গিয়েছিল অন্তুর কথা। অন্তুকে দেখতেই বুকের ভেতরটা মোচড় দিয়ে উঠলো তার। ভেতরের ভ*য়ানক রা*গ এবং ঘৃ*না একত্রেই যেন উপচে পড়লো।

ইলহামের পরনে সাদা কূর্তি এবং সাদা প্লাজু। লাল ওড়নাটা বেশ মার্জিত আকারেই পড়ে আছে সে। লম্বা বিনুনিটা ঝুলছে ডান কাঁধের উপর। অন্তু, বাঁকা নজরে দেখলো পুরোটাই। ইলহামের অস্বস্তিতে গা গুলিয়ে উঠলো। ইচ্ছে থাকলেও ভেতরে যেতে পারছেনা। কেননা, এটা রাদের বাড়ি নয়। যতটা কমফোর্ট সে ওখানে পায়, এর এক চিমটিও এখানে নেই। অবশ্য তার কারন, সে আজই প্রথম এসেছে এখানে।

—-“শুভ্রপরী লাগছে তোমায়। মনে হচ্ছে তোমার সাথে ব্রেকআপ করার পর থেকেই আরও বেশি কাম্য হয়ে উঠেছো তুমি!”

ইলহামের শরীরে কাটা বসলো অন্তুর এহেম কথায়। বি*স্ফো*রিত নয়নে তার দিকে তাকানোর মাঝেই তার পেছন থেকে এসে দাঁড়ালো রাদ। রাদকে সে না দেখলেও অন্তু বেশ ভালো করেই দেখলো। তাই মুহুর্তেই পাল্টে ফেললো নিজের ভোল। তড়িঘড়ি করে বলে উঠলো,

—-“বললেন না তো ভাবি? কেমন আছেন? আরে রাদ! অনেক অপেক্ষা করিয়েছিস ব্রো! কি, ভাবিকে নিয়ে কি লং-ড্রাউভে যাওয়া হয়েছিলো নাকি?”

শেষোক্ত প্রশ্নটা অন্তু ইলহামের দিকে দৃষ্টি রেখে বলল। রাদের নাম শুনতেই ছোট্ট করে দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে নিজেকে স্বাভাবিক করে নিলো ইলহাম। সে চায়না, নিজের কাছের মানুষের কোনো খারাপ দিক রাদের সামনে চলে আসুক। আর যার দ্বারা সে, ক*ষ্ট পাক।

রাদ ছোট্ট শব্দে হাসলো। এগিয়ে এসে ভেতরে প্রবেশ করতে করতে বলল,

—-“যেহেতু মোক্ষম সুযোগ ছিলো, সেহেতু লং ড্রাইভ তো বানতা হ্যায়। আর ম্যাডামের মুড অফ ছিলো, তাই একটু..”

—-“কেন কেন? ভাবি, কোনো সমস্যা?”

অন্তুর কন্ঠে বেশ আগ্রহ দেখা গেলো। তবে ইলহামের কপালে জুটলো তার বিশ্রী দৃষ্টি,এবং উর্বর মস্তিষ্কের প্রমান। রাদ আশেপাশে দেখলো। কাউকে দেখতে না পেয়ে বলল,

—-“কাউকে দেখছি না যে? আমাদের বুড়ি কই?”

❝ভাইয়া!❞

বুড়ির নাম নিতেই বুড়ি হাজির। অর্থাৎ, অনন্যা। সিঁড়ির উপর থেকে এক দৌড়ে নেমে এলো, রাদকে ডেকে। রাদ তার ডাক পেয়ে গাল ভরে হাসলো। অনন্যা ছুট্টে এসে ঝাপটে ধরলো তাকে। অভিমানী সুরে অভিযোগ করলো,

—-“তোমার এতো রা/গ আমাদের উপর? এভাবে আমাদের পর করে রাখলে? পারলে বলো? ক/ষ্ট হয়নি?”

রাদ অনন্যাকে বুকে আগলে ধরে মাথায় হাত রাখলো। আহ্লাদ করে বলল,

—-“ধুর পা/গলি! কিসের রা/গ? তুই তো আমার অর্ধেক জান। কেবল, তোর কথা ভেবে তোর জন্যই আমি চলে এসেছি দেখ! এরপরও বলবি, আমি রে/গে আছি।”

—-“আমি জানি ভাইয়া, বড় মা-র কথা ফেলতে পারোনি বলে এসেছো তুমি। নয়তো..”

—-“মোটেই না। আমি আসতে চেয়েছি বলেই এসেছি। আর আমার একমাত্র বোনটার বিয়েতে তার ভাই আসবে না, এটা তুই ভাবলি কেমন করে?”

অনন্যা রাদকে ছেড়ে সোজা হয়ে দাঁড়ালো। গাল ফুলিয়ে বলল,

—-“এসব তুমি আমার মন রাখার জন্য বলছো। আমি জানি। ওমা.. ওটা কে গো? আমাদের ভাবি?”

ভাবি নামটা নিতেই আনন্দ যেন উপচে এলো অনন্যার কন্ঠ থেকে। রাদ পাশ ফিরে তাকালো ইলহামের দিকে। ইলহাম হাস্যজ্বল মুখে তাদের পানেই তাকিয়ে ছিলো। কি সুমিষ্ট সম্পর্ক দুই ভাই-বোনের। দেখেও চোখ জুড়িয়ে আসে যেন।

তবে তার ধ্যান ভাঙে অনন্যার উৎসাহ ঘেরা কন্ঠের ডাকে। রাদ স্মিত হেসে মাথা নাড়ে। অনন্যা দিগুণ উৎসাহ নিয়ে ছুট্টে যায় ইলহামের দিকে। কিছু না বলেই আচমকা একবার জড়িয়ে ধরে তাকে। ইলহাম ভড়কে যায় অনন্যার কাজে। তবে নিজকে সামলে নিতে নিতে বুঝে নেয়, এটা অনন্যার ন্যাচার।

—-“ইশশ! কি মিষ্টি গো ভাইয়া। এমন ভাবি কোথায় পেলে বলো তো?”

রাদ হাসে। হাসে ইলহামও। অনন্যা আকস্মিক ইলহামের চুল টেনে বলে,

—-“ওমা! এতো বড় চুল.. ভাবি এটা কি রিয়েল?”

ইলহাম না পেরে হেসে ওঠে শব্দ করে। হ্যাঁ সূচক মাথা নেড়ে বলে,

—-“একদম রিয়েল।”

—-“সরি গো। কিছু মনো করোনা( দাঁত কেলিয়ে হেসে)।”

ইলহাম হেসে পড়লো অনন্যার হাসিতে। হাসলো রাদও। ঠোঁটের কোনে মৃদু হাসির রেখাটা ধরে রেখেই এগিয়ে এসে দাঁড়ালো ইলহামের পাশে। একবার বিমুগ্ধ নয়নে তার প্রিয়দর্শিনীর দর্শন দিয়ে অনন্যার দিকে তাকিয়ে বলল,

—-“তোর মতো একই কৌতুহল আমারও ছিলো। এতো লম্বা চুল। চোখ ধাঁধিয়ে আসার মতো। বিশ্বাসই হচ্ছিলোনা যেন। তারপর একদিন চেক করার জন্য দিলাম এক টান। টান দিয়ে নিজেও বোকা বনে গেলাম। চুলে হঠাৎ টান পড়াতে ইলহাম সামলাতে না পেরে এরকম পড়ে গেলো আমার উপর। তারপর আর কি? মাথায় মাথায় সংঘর্ষন! আমি ভাবলাম ব্যা’থা পেলো বোধহয় খুব! কিন্তু না, সে উঠে দাঁড়িয়ে গাল ফুলিয়ে বাচ্চাদের মতো করে বলছে, এবার যদি আমার মাথায় শিং গজায়? এর দায় কে নিবে? আপনি!”

রাদের কথা শুনে শব্দ করে হাসতে আরম্ভ করলো অনন্যা। তাল মেলালো রাদও। এদিকে ইলহাম রাদের কথায় লজ্জায় লাল হয়ে উঠলো। এই তো সেদিনের ঘটনা। তার মাথার চুলগুলো আসল কিনা দেখতে ঠিক বাচ্চাদের মতো কান্ড করে বসলো রাদ। দিলো সজোরে এক টান। আর অমনি ইলহাম টাল সামলাতে না পেরে এসে পড়লো রাদের উপর। অতঃপর রাদের মাথায় বারি খেয়ে অবস্থা পুরোই খারাপ।

—-“রাদ?”

ভাইবোনের হাসাহাসির মধ্যে দূর থেকে ভেসে আসে রাজিয়া বেগমের গলা। ডাক পেয়ে রাদ পেছন মুড়ে রাজিয়া বেগমকে দেখতেই তার মুখের হাসিটুকু উবে যায় যেন। পুরোনো কিছু স্মৃতি আর চাপা আর্তনাদগুলো মনে পড়ে যায় তৎক্ষনাৎ। তার মলিন মুখখানা দেখতে মলিন হয়ে ওঠে মান্নাত বেগমের মুখখানাও। একই সাথে ইলহামেরও। ইলহাম ভাবনায় নিমজ্জিত হয়,

—-“কি এমন অতীত আছে, যার জন্য মানুষটা এতো অপছন্দ করেন নিজের চাচা এবং চাচীকে?”

#চলবে_____

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here