বর্ষণের সেই রাতে পর্ব ৫০

#বর্ষণের সেই রাতে ❤
#লেখিকা: অনিমা কোতয়াল
#পর্ব- ৫০
.
সকালে সোফায় বসে নিউস পেপার দেখতে দেখতে চা খাচ্ছেন মানিক আবরার । আর মিসেস আবারার ওনার পাশে বসে টিভি দেখছেন। হঠাৎ কলিং বেল বাজতেই ভ্রু কুচকে দরজার দিকে তাকালেন মানিক আবরার। মিসেস আবরার উঠে ওরনাটা ঠিক করে দরজা খুলতে গেলেন। দরজা খুলে সামনে দাঁড়িয়ে থাকা ব্যাক্তিকে দেখে চমকে উঠলেন উনি। চোখ দুটো ছলছল করে উঠলো। ওনার সামনে ওনার ছেলে আদ্রিয়ান দাঁড়িয়ে আছে। আদ্রিয়ান হেসে মিসেস আবরারকে জরিয়ে ধরে বলল,

— ” কেমন আছো?”

মিসেস আবরার আদ্রিয়ানকে ছাড়িয়ে নিয়ে উল্টো ঘুরে অভিমানী কন্ঠে বলল,

— ” ছাড় আমায়। এতোদিন পর এসে এখন ঢং দেখাচ্ছে।”

আদ্রিয়ান ওর মাকে পেছন থেকে জরিয়ে ধরে বলল,

— ” এতোদিন পর এলাম তাও এভাবে কথা বলছো?”

মিসেস আবরার আবারো ওকে ঝাড়া দিয়ে ছাড়িয়ে নিয়ে বলল,

— ” কে বলেছে আসতে? চলে যা।”

আদ্রিয়ান মুখ ফুলিয়ে বলল,

— ” সত্যি চলে যাবো?”

মিসেস লিমা এবার ঘুরে আদ্রিয়ানের গালে একটা থাপ্পড় মেরে দিয়ে বলল,

— ” বাদর ছেলে, নিজের বাড়ি নিজের ঘর ছেড়ে এতোগুলো বছর ধরে বাইরে পরে আছিস। কোথাও আমি রাগ করবো তা না উনি নিজেই রাগ করছে।”

আদ্রিয়ান হেসে ওনাকে জরিয়ে ধরে বলল,

— ” আই মিসড ইউ। ”

মিসেস আবরারও আদ্রিয়ানকে জরিয়ে ধরে বলল,

— ” হ্যাঁ তাইতো এতোদিন পর আসার ইচ্ছে হলো।”

আদ্রিয়ান মিসেস আবরারের দুই কাধে হাত রেখে বলল,

— ” ভেতরে যেতে দেবে না নাকি এখান থেকেই ফেরত পাঠিয়ে দেবে?”

মিসেস আবরার ওর কান টেনে ধরে বলল,

— ” মারবো এক থাপ্পড় চল ভেতরে চল।”

মিসেস আবরার ভেতরে যেতে যেতে বললেন,

— ” এইযে শুনছো দেখো কে এসছে।”

মানিক আবরার পেপার নামিয়ে ভ্রু কুচকে বলল,

— ” কে এসছে?””

মিসেস আবরার খুশি হয়ে বললেন,

— ” এদিকে দেখো?”

মানিক আবরার ঘুরে তাকিয়ে অবাক হয়ে গেলেন। অবাক হয়ে দাঁড়িয়ে গেলো। আদ্রিয়ান মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে। মানিক আবরার গলাটা হালকা ঝেড়ে গম্ভীর কন্ঠে বললেন,

— ” তো এতোদিনে আসতে ইচ্ছে হলো?”

আদ্রিয়ান মাথা নিচু করেই বলল,

— ” না এলে খুশি হতে মনে হয়।”

মানিক আবরার শক্ত কন্ঠে বলল,

— ” হ্যাঁ এটাই তো পারো, উল্টো বুঝতে। নিজের বাবার একটা থাপ্পড় এতোটা গায়ে লাগল তোমার।”

আদ্রিয়ান মানিক আবরারের দিকে তাকিয়ে বললেন,

— ” তোমার অধিকার আছে আমাকে থাপ্পড় মারার। কিন্তু আমাকে বোঝাটাও কী তোমার কর্তব্য ছিলো না?”

মানিক আবরার এবার মাথা নিচু করে একটা শ্বাস ফেলে বললেন,

— ” হুম আমার ভুল ছিলো। কিন্তু ভুলটা সুধরে নেওয়ার একটা সুযোগ তো দেবে? তা না করে সম্পূর্ণ যোগাযোগ করে দিয়েছিলে।”

আদ্রিয়ান এবার মুখ ছোট করে মাথা চুলকে বলল,

— ” আচ্ছা সরি।”

মানিক আবরার মুখে হাসি ফুটিয়ে আদ্রিয়ানকে এসে জরিয়ে ধরে বলল,

— ” আমিও সরি। আমার তোমার ইচ্ছেকে গুরত্ব দেওয়া উচিত ছিলো।”

মিসেস আবরার খুশি হয়ে বললেন,

— ” এবার কিন্তু আমি তোকে আর কোথাও যেতে দিচ্ছিনা।”

আদ্রিয়ান ওর মায়ের দিকে ভ্রু কুচকে তাখিয়ে বলল,

— ” আরে এসছি কী যাওয়ার জন্যে নাকি? আজকে থেকে এখানেই থাকছি আমি।”

আদ্রিয়ান এর কথা শুনে মিস্টার আর মিসেস চৌধুরী দুজনেই খুশি হলো। মানিক আবরার একটা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে বলল,

— ” এতোদিনে আমার বুকের ওপর থেকে একটা পাথর নামলো।”

আদ্রিয়ান মুচকি হেসে বলল,

— ” আমি কিন্তু একা আসিনি সাথে বোনাস গিফট ও নিয়ে এসছি।”

মিসেস আবরার ভ্রু কুচকে বললো,

— ” বিয়ে করে বউ নিয়ে আসিস নি তো?”

আদ্রিয়ান মুচকি হেসে বলল,

— ” অনেকটা কাছাকাছি আছো। বউই এনেছি তবে হবু বউ। মানে তোমাদের বউমা।”

মানিক আবরার অবাক হয়ে বললেন,

— ” কী বলছো? কোথায় সে?”

আদ্রিয়ান মুচকি হেসে বলল,

— ” আছে গাড়িতে। আমি ফোন করলে ভেতরে আসবে।”

মিসেস আবরার উত্তেজিত হয়ে বললেন,

— ” আরে ওকে ভেতরে নিয়ে আয়। দাঁড়া আমিই যাচ্ছি।”

বলে যেতে নিলেই আদ্রিয়ান থামিয়ে দিয়ে বলল,

— ” ওয়েট ওয়েট। ওর সাথে দেখা করানোর আগে তোমাদের কিছু বলার আছে।”

মানিক আবরার ভ্রু কুচকে বললেন,

— ” কী বলবে? ”

আদ্রিয়ান একটা শ্বাস ফেলে বলল,

— ” বসো বলছি।”

আদ্রিয়ান এবার ওনাদের দুজনকে অনিমার ব্যাপারে কিছু কথা বলল, সব শুনে মিস্টার আবরার বললেন,

— ” ওই তাহলে।”

আদ্রিয়ান মাথা নেড়ে বলল,

— ” হ্যাঁ। সবতো শুনলে। এখন বুঝতেই পারছো ওর কেমন পরিবেশ চাই।”

মিসেস আবরার অধৈর্য হয়ে বললেন,

— ” আরে কতোক্ষণ মেয়েটাকে বাইরে রাখবি? এবার নিয়ে আয় ভেতরে।”

আদ্রিয়ান ওনাদের দুজনের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে ফোন বের করে কাউকে কল করে বলল,

— ” ভেতরে এসো।”

ফোন রেখে আদ্রিয়ান বেড়িয়ে এগিয়ে আনতে গেলো। কিছুক্ষণের মধ্যেই অনিমার হাত ধরে বাড়ির ভেতরে নিয়ে এলো আদ্রিয়ান। মানিক আবরার আর মিসেস আবরার দুজনেই অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো। অনিমা ওনাদের দুজনকেই সালাম দিলো। মিসেস আবরার অনিমার সামনে এসে ওর থুতনি ধরে বলল,

— ” এরকম মিষ্টি একটা মেয়েকেই তো আমার আদ্রিয়ানের জন্যে চেয়েছিলাম আমি। একদম আমার মনের মতো।”

বলে অনিমার কপালে একটি চুমু দিয়ে বলল,

— ” সব ঠিক আছেতো মা? আমার ছেলেকে নিয়ে কোনো অভিযোগ নেই তো?”

মিসেস আবরারের এসব কথায় বেশ লজ্জা লাগছে অনিমার। তবুও নিচু কন্ঠে জবাব দিলো,

— ” না আন্টি।”

মিসেস আবরার ভ্রু কুচকে বলল,

— ” আন্টি কী হ্যাঁ? আদ্রিয়ানের মা মানেতো তোরও মা। তাই আজ থেকে আমাকে মা বলেই ডাকবি। আজ থেকে তো তুই আমারই মেয়ে।”

অনিমা অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো। কাউকে মা বলে ডাকার সৌভাগ্য এর আগে ওর হয়নি। বুকের ভেতরে কেমন ভার ভার হয়ে আসছে। মানিক আবরারও এগিয়ে এসে বললেন,

— ” শুধু ওকে মা বলে ডাকলেই চলবেনা কিন্তু, আমাকেও বাবা বলে ডাকতে হবে। বলবেতো মামনী?”

মামনী ডাকটা শুনে চমকে গেলো অনিমা। ওর আব্বুও তো ওকে মামনী বলেই ডাকতো। এতোবছর পর আবার সেই ডাকটা শুনে আর নিজেকে সামলে রাখতে পারলোনা কেঁদে দিলো অনিমা। অনিমা কাঁদতে দেখে আদ্রিয়ান কিছু বলবে তার আগেই মিসেস আবরার অনিমাকে ধরে সোফায় বসিয়ে আলতো করে জরিয়ে ধরে বললেন,

— ” কাঁদেনা মা। বাবা মা তো চিরকাল কারো বেঁচে থাকে না। হ্যাঁ এটা সত্যি যে তোর বাবার মৃত্যুটা স্বাভাবিক ছিলোনা। কিন্তু নিজেকে তো শক্ত রাখতে হবে।”

মানিক আবরার অনিমার আরেকপাশে বসে ওর মাথায় হাত বুলিয়ে বলল,

— ” আদ্রিয়ান সব বলেছে আমাদের। নিজেকে একদম একা ভাববি না। আমরা আছি তো তোর সাথে, আর সবসময় থাকবো।”

আদ্রিয়ান হাত ভাজ করে দাঁড়িয়ে দেখছে তিনজনকে। মনে মনে এক অদ্ভুত শান্তি পাচ্ছে। অনিমাকে একটা পরিবার দিতে পেরেছে এটা ভেবেই মনটা অনেক হালকা লাগছে ওর।

এরপর খেতে বসে হলো আরেক ঝামেলা। মানিক আবরার আর মিসেস আবরার দুজনেই অনিমাকে খাইয়ে দেবে। আদ্রিয়ান অসহায় দৃষ্টিতে একবার নিজের বাবার দিকে দেখছে আরেকবার নিজের মায়ের দিকে তারপর বাচ্চাদের মতো করে বলল,

— ” এটা কিন্তু ঠিক না। এতোদিন পর আমি বাড়িতে এলাম অথচ আমার দিকে একটু ঘুরেও দেখছোনা তোমারা। উল্টে নিজের বউমা কে নিয়ে পরে আছো। আমাকেও কেউ একটু খাইয়ে দাও।”

মিসেস অাবরার বিরক্তিকর কন্ঠে বললেন,

— ” এই এতো বড় হয়েছিস খাইয়ে দিতে হবে কেনো রে? চুপচাপ নিজের হাত খেয়ে নে।”

মানিক আবরার ও স্ত্রীর কথায় সহমত হয়ে বললেন,

— ” তাইতো। নিজের হাতে খাও।#

আদ্রিয়ান বোকার মতো কিছুক্ষণ দুজনের দিকে তাকিয়ে থেকে বলল,

— ” বাহ বাহ। বিয়ের পর মেয়েরা পর হয়ে যায় শুনেছিলাম। কিন্তু হবু বউমা কে দেখার সাথে সাথে যে ছেলেরাও পর হয়ে যায় আজ দেখে নিলাম।”

অনিমা এতোক্ষণ বেশ ইনজয় করছিলো, আদ্রিয়ানের কথাটা শুনে ওও হেসে দিলো। আর মিস্টার এন্ড মিসেস আবরারও হেসে দিলো। মিসেস আবরার হাসতে হাসতেই বলল,

— ” ব্যাস অনেক হয়েছে। আয় তোকে আমি খাইয়ে দিচ্ছি।”

এরপর মানিক আবরার অনিমাকে আর মিসেস আবরার অাদ্রিয়ানকে খাইয়ে দিতে লাগলো। আজ ওইবাড়ি আনন্দে মেতে উঠেছে। এতোদিন পর ঘরের ছেলে বাড়িতে ঘরে ফিরে এসছে। সাথে ছেলের বউ। এরচেয়ে ভালো আর কী হতে পারে।

______________________

রিক নিজের রুমে বসে ফোন স্ক্রল করছিলো। দরজার কাছে স্নিগ্ধা এসে নক করে বলল,

— ” রিক দা আসবো?”

রিক ফোন থেকে চোখ সরিয়ে দরজার দিকে তাকিয়ে স্নিগ্ধাকে দেখে বলল;

— ” আয় ভেতরে আয়।”

স্নিগ্ধা ভেতরে এসে বসতেই রিক ফোনের চোখ রেখেই প্রশ্ন করলো,

— ” কিছু বলবি?”

স্নিগ্ধা কিছুক্ষণ চুপ থেকে তারপর ইতস্তত করে বলল,

— ” আসলে বাড়িতে বসে বোর হচ্ছিলাম। তাই বলছিলাম যে আমাকে একটু ঘুরিয়ে আনবে বাইরে থেকে। ”

রিক ফোন থেকে চোখ না সরিয়েই বলল,

— ” হঠাৎ ঘুরতে যাওয়ার শখ হলো?”

স্নিগ্ধা নিচু কন্ঠে বলল,

— ” ঐ যে বললাম বোর হচ্ছি বাড়িতে বসে তাই আর কী। তুমি যেতে না চাইলে সমস্যা নেই। আমি জোর করবো না।”

রিক কিছু না বলে নিজের মতো ফোন স্ক্রল করে যাচ্ছে। স্নিগ্ধা মন খারাপ করে উঠে চলে যেতে নিলেই রিক বলে উঠল,

— ” আধ ঘন্টার মধ্যে রেডি হয়ে নে। বেশি টাইম লাগালে আমি যাবোনা কিন্তু।”

স্নিগ্ধা তাড়াতাড়ি চলে গেলো রেডি হতে। এরপর দুজনে দুপুর পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গাতে ঘুরেছে। আজ রিক স্নিগ্ধাকে সেই আগের মতোই ট্রিট করেছে।

______________________

বিকেল বেলা অনিমা আদ্রিয়ানদের বাড়ির যেই রুমে ওকে থাকতে দেওয়া হয়েছে তার ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে একমনে আকাশের দিকে তাকিয়ে কিছু ভাবছে। হঠাৎ মাথায় কেউ টোকা দিতেই অনিমা পেছন ঘুরে দেখলো আদ্রিয়ান। আদ্রিয়ান মুচকি হেসে বলল,

— ” কী ভাবছো?”

অনিমা কিছু না বলে হেসে দিয়ে আদ্রিয়ানকে জরিয়ে ধরে বলল,

— ” থ্যাংক ইউ, থ্যাংক ইউ সো মাচ। ”

আদ্রিয়ানও অনিমাকে দুইহাতে জরিয়ে নিয়ে বলল,

— ” কেনো?”

অনিমা মাথা তুলে বলল,

— ” আমার জীবণে আসার জন্যে। ”

আদ্রিয়ান অনিমার কপালে কপাল লাগিয়ে বলল,

— ” থ্যাংকস্ টু।”

অনিমা ভ্রু কুচকে বলল,

— ” কেনো?”

— ” আমার লাইফে আসার জন্যে।”

দুজনেই দুজনের দিকে তাকিয়ে হেসে দিলো। আদ্রিয়ান অনিমার চুল ঠিক করতে করতে বলল,

— ” হুম এবার তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নাও তো।”?

অনিমা অবাক হয়ে বলল,

— ” কেনো?”

আদ্রিয়ান অনিমার দিকে তাকিয়ে একটা গম্ভীর শ্বাস নিয়ে বলল,

— ” তোমার বাবার মতো একজন মানুষকে যারা এতোটা নির্মমভাবে খুন করেছে তারাতো এভাবে খোলা নিশ্চিন্তে ঘুরে বেড়াতে পারেনা তাইনা? এমনিতেই ওদের শাস্তি দেওয়া যেতো কিন্তু তুমি চাও আইন ওদের শাস্তি দেক তাহলে সেটাই হবে”

অনিমা কিছু একটা ভেবে বলল,

— ” হুম বাট কী করতে চলেছি আমারা।”

আদ্রিয়ান রেলিং ও ভর দিয়ে বলল,

— ” ওদের সবাইকে একজায়গায় ডেকেছি আমি। আমরা যদি একটা টিম হয়ে কাজটা করি তাহলে অনেক সহজ হবে। আর আমাদের এই টিমে রিক ও আছে।”

অনিমা অবাক হয়ে তাকিয়ে বলল,

— ” রিক?”

আদ্রিয়ান মুচকি হেসে বলল,

— ” হ্যাঁ এবার দেরী করোনা তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নাও। ওরা ওয়েট করবে।”

অনিমা কথা না বাড়িতে রেডি হতে চলে গেলো আর আদ্রিয়ান নিজেও রেডি হতে গেলো।

______________________

একটা টেবিলের চরপাশে বসে আছে আদ্রিয়ান, অনিমা, রিক, স্নিগ্ধা, আদিব, আশিস, তীব্র, অরুমিতা, স্নেহা সবাই। তীব্র স্নেহা আর আশিস অরুমিতা যে একে ওপরকে এভোয়েট করছে সেটা বুঝতে পারলো অনিমা তবে আপাদত কিছু বললোনা। আদ্রিয়ান আদিবের দিকে তাকিয়ে বললেন,

— ” হাসান স্যার যেই আর্টিকেল করতে চেয়েছিলেন সেই আর্টিকেলের ওপর যেসব জার্নালিস্ট রা কাজ করছিলো তাদের বর্তমান নাম, এড্রেস, নাম্বার কালেক্ট করা শেষ?”

আদিব একটা কাগজ আদ্রিয়ানের দিকে এগিয়ে দিয়ে বলল,

— ” হ্যাঁ আতাউর, মুসফিক, মিতা,সম্পা, ইলিয়াস এই পঁচজন ছিলো। মিতা মেয়েটি এই কেসের একটা এভিডেন্স এর ছবি তুলতে গিয়ে খুন হয়। বাকিদেরটা দেওয়া আছে।”

আদ্রিয়ান কাগজটাতে চোখ বুলিয়ে বলল,

— ” আতাউর, মুসফিক, সম্পা আর ইলিয়াস। এই চাল জনের মধ্যে কেউ একজন নিউস লিক করতো। সবার আগে তাকেই ধরতে হবে। অনিমা আর্টিকেলের কিছু ডিটেইলস যেটা তোমার কাছে ছিলো সেই ফাইলটা বার করো।”

অনিমা সেই ফাইলটা বার করে আদ্রিয়ানের হাতে দিলো। আদ্রিয়ান নিজের পকেট থেকে একটা প্যাকেটে কিছু ছবি বের করে টেবিলে রেখে বলল,

— ” এই ছবিগুলো মিতা তুলেছিলো। ওরা মিতাকে মারতে পারলেও মরার আগে ছবিগুলো মিতা হাসান স্যারকে পাঠিয়েছিলেন।”

অনিমা অবাক হয়ে বলল,

— ” আপনি কোথায় পেলেন?”

আদ্রিয়ান অনিমার প্রশ্নকে এরিয়ে গিয়ে বলল,

— ” এই ফাইল আর ছবি এই কেসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এভিডেন্স। তাই এগুলোকে নিরাপদে রাখতে হবে। খুব সেভলি।”

এই কথাতে রিক বলে উঠলো,

— ” এগুলো আমি আমার কাছে রাখছি।”

সবাই রিকের দিকে তাকাতেই রিক ইতস্তত করে বলল,

— ” যদি তোমাদের কারো আমাকে বিশ্বাস করতে প্রবলেম না থাকে তো।”

আদ্রিয়ান মুচকি হেসে ফাইল আর ছবিগুলো রিকের হাতে দিয়ে বলল,

— ” তোমাকে অবিশ্বাস করার কারণ নেই। আই নো তুমি তোমার দ্বায়িত্য কী সেটা ভালোকরেই জানো।”

রিক ওগুলো নিয়ে আদ্রিয়ানের দিকে তাকিয়ে একটা মুচকি হাসি দিলো।

মিটিং শেষে যে যার যার বাড়িতে চলে গেলো। রঞ্জিত চৌধুরী আর কবির শেখ টেবিলে কাজ করছিলেন। রিক সোজা গিয়ে ঐ টেবিলের ওপর ঐ ফাইল আর ছবিগুলোর প্যাকেট দুটোই ঠাস করে রাখল। আওয়াজ পেয়ে দুজনেই তাকালেন টেবিলের দিকে।

#চলবে…

(

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here