#বস_বর (পর্ব-১১ ও ১২)
পর্ব-১১
Writer : Eti Chowdhury
.
ইতি অনেক্ষণ সেভাবেই ছিলো। থেমে গিয়ে রোদের কপালের সাথে কপাল লাগিয়ে দাড়িয়ে রইলো ইতি। জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিচ্ছে ইতি। রোদ এখনো ইতির কোমড়টা জোরেই চেপে ধরে রেখেছে। ইতি লজ্জায় আর রোদের দিকে তাকাতে পারলো না। লজ্জায় পালিয়ে গেলো ইতি রোদের কাছ থেকে।
– আহ….
ধরার চেষ্টা করেও ধরতে পারলো না রোদ ইতিকে। মেয়েটা পালিয়ে গেলো লজ্জা পেয়েছে।
ইতি দৌড়ে পালিয়ে গেলো। ইসস……এতো লজ্জা। এখনো মেয়েটার বুক ধরফর ধরফর করছে। মনে হচ্ছে বুকটা ফেটেই যাবে আরেকটু হলে।
রোদ বসে বসে হাসছে। মনে মনে বলছে পাগলীটা আমার। ভালোবেসে ফেলেছি পাগলীটাকে। এসব ভাবছে আর হাসছি রোদ।
ইতির এখনতো রোদের সামনে যেতেও লজ্জা করছে। কিভাবে যাবে সে রোদের সামনে এমন একটা লজ্জাজনক কান্ড ঘটিয়ে।
প্রায় ১ সপ্তাহ বিশ্রাম নেয়ার পর রোদ সুস্থ হলো। পরের দিন সকালে,
ইতির ঘুম ভাংতেই দেখে রোদ পাশে নেই। গেলো কোথায় আবার সে। ইতি ফ্রেস হতে যাবে উঠে গিয়ে দেখে রোদ রেডি হয়ে বের হলো। হা করে চেয়ে রইলো ইতি রোদকে দেখে। একজন পুরুষমানুষ এতো সুন্দর হয় কিভাবে। চোখ সরাতে পারছে না সে। বেহায়ার মত তাকিয়েই আছে সে। ইতির মুখটাও হা হয়ে আছে। নেভী ব্লু কালারের সুট কি যে মানিয়েছে মানুষটাকে। ইতি বার বার রোদের প্রেমে পড়ে যাচ্ছে।
রোদ ইতির কান্ড দেখে মিটমিট করে হাসছে। পাগলীটা তাকে হা করে দেখছে। মনে হয় যেন গিলে খাবে। রোদ তার এক আঙ্গুল ইতির থুতুনিতে দিয়ে মুখটা বন্ধ করে দিলো আর বলল,”বললাম মশা যাবে”।
ইতি আবার লজ্জা পেলো। রোদের সামনেই কেনো যে এতো বিব্রতকর অবস্থায় পরতে হয় মেয়েটাকে আল্লাহই জানে। তবু নিজেকে সামলে নিয়ে ইতি বলে,
-আপনি রেডি হয়ে কোথায় যাচ্ছেন ?
– কোথায় আবার অফিসে।
– কিন্তু…
– আর কোন কিন্তু নেই। আমি বিশ্রাম নিতে নিতে ক্লান্ত। তুমি বাধা দিলেও আর শুনছি না।
– আচ্ছা বাবা আমিও যাবো।
– আমি তোমার বাবা নাকি…?
বলেই দুষ্টুমির হাসি দিলো রোদ।
– ইসস…. আবার দূর।
লজ্জা পেয়ে চলে গেলো ইতি রেডি হতে। আর দাঁড়িয়ে থাকলে না জানি তাকে আবার কোন লজ্জায় পরতে হয়।
অফিসে,
সবাই স্যারকে দেখে অনেক খুশি। সবাই তাকে ওয়েলকাম জানাচ্ছে। খোজ খবর নিচ্ছে এখন কি অবস্থা ইত্যাদি।
অনেক দিন পর রোদ অফিস করছে। শরীর অনেকটা দূর্বল এখনো তবুও ভালো ভাবেই দিনটা গেলো।
রোদ এখন অনেকটাই সুস্থ। মাঝে কিছু দিন ভালোই কাটলো। লজ্জা আর টুকরো টুকরো ভালেবাসার জন্ম নিতে থাকলো ইতি আর রোদের মাঝে।
এখন অফিসে কাজের অনেক চাপ তাই সবাই অনেক ব্যস্ত।
অনেক্ষণ হলো ইতি রাফসানের কেবিনে বসে কাজ করছিল। রোদকে দেখে না অনেক্ষন হলো। নিজের কেবিনে থাকলে তো মাথা উঁচু করলেই ইতি তার মানুষটাকে দেখতে পায় কিন্তু রাফসানের কেবিন তো করিডরের অন্য সাইডে। ইতি মনে মনে রোদের ভাবনায় ভেসে রয়েছে। তা লক্ষ করে রাফসান বলে,
– কি ভাবছো ?
– নাহ কিছু না।
– তার কথা ভাবা হচ্ছে তাই না।
– জ্বি না। আমার কি কাজ নেই যে শুধু তার কথা ভাববো। হুহ…..
– আচ্ছা তাই ?
রাফসান একটা মুচকি হাসি দিলো। ইতি বললো,
– জ্বি তাই….
বলেই ইতি উঠে হাটা ধরলো রোদকে একটু দেখে আসবে তাই। ইতিকে চলে যেতে দেখে রাফসান বলে,
– ওই কোই যাও ?
– কলিজাটা শুকিয়ে গেছে পানি দিয়ে আসি।
বলেই ইতি বেরিয়ে গেলো।
রাফসান পিছনে হাসতে লাগলো।
ইতি নিজের কেবিনে চলে এলাম। সরাসরি কোন কাজ ছাড়া রোদে কেবিনে যাওয়াটা কেমন যেন দেখায় তাই নিজের কেবনে চলে যায় আগে কিছু একটা ফাইল নিয়ে রোদের কাছে যাবে। কিন্তু রোদ আর ইতির কেবিনের মাঝের কর্টেনগুলো লাগানো তাই রোদকে দেখতে পারছে না ইতি। কলিজায় পানি দিবে কিভাবে সে এখন। রোদের উপর মাথা গরম হয়ে গেলো। “হুহ……উনি না”। এমনি তো সব সময় খুলে রাখে আজ কি হলো। এমনি সময় হাজার বার ডাকে রোদ ইতিকে আজ একবারও ডাকেনি। নাহ আর অপেক্ষা করতে পারলো না। নিজেই উঠে গেলো রোদের কাছে।
রোদের কেবিনে ডুকতেই পাথর হয়ে গেলো ইতি। এটা সে কি দেখছে। ইতির সমস্ত শরীর শক্ত হয়ে গেলো। না পারছে দাঁড়িয়ে থাকতে না পারছে চলে যেতে। পা গুলো মনে হচ্ছে অবশ হয়ে গেছে ইতির। রোদ একটা মেয়ের সাথে তাও প্রাইভেট মমেন্টে। ইতির নিজের দেখা চোখকে বিশ্বাস হচ্ছে না।
রোদ মেয়েটাকে বলছে,
– এখন ঠিক লাগছে ?
– হ্যাঁ, আরে ভাবী যে।
রোদের সাথের মেয়েটা আর কেউ নয় লিজা।
রোদ পিছনে ঘুড়ে দাঁড়িয়ে দেখে ইতি তার পিছনেই দাঁড়িয়ে আছে। সে বলে,
– তুমি কখন এলে ?
ইতি কোন জবাব দেয় না। ইতি চোখগুলো লাল হয়ে গেছে। রোদ ইতিকে দেখেই বুঝতে পারছে কিছু একটা হয়েছে। রোদ ভাবছে “ওকি কিছু ভুল বুঝলো। এমন লাগছে কেনো ওকে”। রোদ ইতির কাছে যেতে নিলো। তা দেখে ইতি সাথে সাথে দৌড়ে রোদের কেবিন থেকে বেরিয়ে গেলো।
রোদ ইতির নাম ধরে ডাকতেই চোখের পানি আটকে রাখতে পারলো না সে। তাই দৌড়াতে লাগলো। আপাততো রোদের আশেপাশে সে থাকতে চায় না।
রাফসান কেন্টিনের দিকে যাচ্চিলো আর দেখে ইতি দৌড়ে ছুটে যাচ্ছে।
– ইতি…..
রাফসান তাকে ডাকও দিলো কিন্তু ইতি কিছুই বললো না।
-মেয়েটা এভাবে দৌড়াচ্ছে কেন ? হুট করে আবার হলো কি ? ইতি দাড়াও। ইতি প্লিজ দাড়াও। স্যারের রুম থেকে এভাবে বেরিয়ে এলো কেন সে ? কি হলো আবার। ছাদে কেনো যাচ্ছে মেয়েতা ?
রিমি রোদের কেবিনে যেতে নিয়ে এসব কান্ড দেখে হা করে দাড়িয়ে রইল। কিছুই বুঝতে পারছে না। রাফসান বেশি কিছু না ভেবে ইতির পিছন পিছন চলে গেলো।
ইতিকে এভাবে চলে দেখে রোদ বুঝতে পারে রোদ যা ভাবছিলো তাই ঠিক ইতি তাকে বুঝেছে।
একটু আগের ঘটনা।
রোদ কেবিনে ছিলো। আজ অনেক কাজ অফিসে সবার। একটু নিঃশ্বাস নেয়ারও সময় পাচ্ছে না রোদ। ইতিকেও দেখেনি অনেক্ষণ হলো। তখনি কে যেনো এলো।
নক নক…
– কাম ইন। আরে লিজা তুই ?
– হ্যাঁ, তোমাকে মিস করছিলাম তাই চলে এলাম। তুমি তো এখন আর আগের মতো বাসায় যাও না। আমার কথা তোমার মনেও পরে না।
লিজার গায়ে পরা কথা শুনে রোদের কথা শুনে বিরক্ত লাগছিলো। বিরক্তি নিয়ে সে বলে,
– দেখ আমি কাজে ডিস্টার্ব একদম পছন্দ করি না। বোস তুই কফি দিতে বলি।
লিজার সাথে কথা বলতে বলতেই হঠ্যাৎ
– আহ….
বলেই লিজা চোখে হাত দেয়। তা দেখে রোদ বলে,
– কি হলো ?
– তাকাতে পারছি না চোখে কি যেনো গেলো।
রোদ উঠে গিয়ে লিজার সামনে দাঁড়ায়। রোড লিজার দিকে নিচু হয়ে ওর চোখ পরিষ্কার করছিলো। চোখ দেখে দিয়ে বলে,
– এখন ঠিক আছে ?
– হ্যাঁ, আরে ভাবী যে।
রোদ পিছনে ফিরেই দেখে ইতি। পিছন থেকে দেখে ভুল বুঝলো মেয়েটা রোদকে।
রোদ ভাবছে,
– নাহ… মেয়েটা কোই গেলো আবার এভাবে।
রোদ বের হবে ইতির কাছে যাওয়ার জন্য কিন্তু লিজা তার হাত ধরে বাধা দিলো। তা দেখে রোদ চোখ বাকা করে বলে,
– কি ব্যাপর লিজা ?
– তুমি আমাকে রেখে কোই যাচ্ছো ? ও গেছে ভালো হইছে। ঝামেলা একটা।
ঠাসসসসসসসস….. রোদ লিজার গালে একটা থাপ্পর বসিয়ে দিয়ে বলে,
– তোর সাহস হলো কিভাবে আমার বউকে ঝামেলা বলার ? তোকে কিছু বলি না বলে এর মানে এই না যে আমি বুঝি কিছু না। ফারদার যেন তোকে আমার আশেপাশে না দেখি ইভেন আমার ইতির আশেপাশেও থাকবি না। বের হয়ে যা।
রোদ ঝাড়ি দিয়ে লিজার হাত থেকে নিজের হাত ছাড়িয়ে নিয়ে পিছনে ঘুরেই দেখে রিমি তার কেবিনের দরজায় দাঁড়িয়ে। সে সব দেখেছে হয়ত।
রিমি হা করে রয়েছে। সব যেন তার মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে। হচ্ছে কি কিছুই বুঝতে পারছে না। “ইতি ম্যাম ওভাবে কেন গেলো। এখানে রোদ স্যার কি সব বলছে” মনে মনে ভাবছে রিমি।
রোদ রিমিকে দেখে জিজ্ঞেস করে,
– ইতি কোথায় রিমি ?
– ছা… ছাদের দিকে যেতে দেখলাম।
রোদ নিজেও বেড়িয়ে গেলো। এতোক্ষণে তার পাগলীটা হয়ত কান্নাকাটি শুরু করে দিয়েছে।
।
কান্না করতে করতে মাটিতে বসে পরলো ইতি।
– কেনো ? কেনো ? কেনো আপনি আমার সাথে অভিনয় করলেন। কেনো এলেন আমার কাছে ? কেনো ?
রাফসনা সিড়ি দিয়ে দৌড়ে উঠে হাপিয়ে গেছে। উপড়ে উঠে জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিচ্ছে সে। ছাদে ডুকতেই দেখে ইতি ফ্লোরে বসে আছে,
– ইতিইইইইইইই…..
রাফসান ইতির সামনে বসে পরলো। জিজ্ঞেস করল,
– কি হয়েছে ? এভাবে কেনো এলে ?
ইতি কাঁদতে কাঁদতে রাফসানের বুকে মাথা রাখে। রাফসান এক হাত ইতির মাথায় দিয়ে বলে,
– কি হয়েছে আমাকে বলো। প্লিজ। এমন করছো কেনো ? কি হয়েছে ?
– সব অভিনয় সব সব সব
– প্লিজ আগে শান্ত হোও। আমার কথা শুনো
ইতি কিছুটা শান্ত হলে রাফসান বলে,
– স্যার কি কিছু বলেছেন ?
ইতি রাফসানের দিকে তাকিয়ে রইলো কিছুক্ষণ। নিঃশব্দে চোখের পানি পরছে মেয়েটার। রাফসান বলে,
– বলো কিছু কি বলেছেন?
– সব বলা লাগে না। আর আমি তো নিজের চোখে দেখে এলাম। উনি আমার সাথে এমনটা করবে আমি ভাবতে পারিনি। এভাবে ঠকাবেন বিশ্বাস করো রাফসান আমি বুঝতে পারি নি। উনার সবটাই সাজানো ছিলো।
রাফসান মনে মনে ভাবছি এখন হাজার কিছু বললেও লাভ হবে না আগে মেয়েটা শান্ত হোক পরে বুঝাবে সে। তাই বললো,
– কাঁদো কেঁদে শান্ত হোও।
রাফসাব আর ইতিকে বাধা দিলো না। কাঁদুক মেয়েটা ওর ভালো লাগবে। ইতির রাফসানের বুকে মাথা রেখেই কাঁদছে। জড়িয়ে ধরেনি। ইতি নিজের লিমিট জানে। কেবল ভালো বন্ধু হিসেবে রাফসানের বুকের সাথে নিজের মাথাটা লাগিয়েছে আর কিছু নয়।
অনেক্ষণ কান্না করায় ইতির কিছুটা হালকা লাগছে। তাও চোখের পানি থামতেই চাইছে না মন শুধু রোদ রোদ করছে। কেনো করলো এমন সে ইতির সাথে। ইতি তো শুধু ভালোই বেসে ছিলো তাকে। মুখ দিয়ে কোন শব্দ বের হচ্ছে না ইতির চোখ দিয়ে অনবরত পানি পরছে।
রোদ রাগে লাল হয়ে গেছে। রাগে কটমট করছে সে। ইতিকে রাফসানের বুকে দেখে রোদ যেন সহ্য করতে পারছে না। রোদ নিজের রাগ কন্ট্রোল করতে পারছে না কিছুতেই। তাই পিছনে ঘুড়ে দাড়ালো সে।
এখন ইতি অনেকটা শান্ত হয়েছে। তাই রাফসান বলে,
– চলো নিচে যাই।
– হুম
ইতি আর রাফসান নিচে যাওয়ার জন্য ছাদের গেইটের সামনে এসেই থমকে গেলো। হুট করে রোদকে দেখে রাফসানের মুখ দিয়ে বেরিয়ে গেলো,
– স্যার আপনি ?
রাফসানের আওয়াজ পেয়ে রোদ ঘুড়ে দাড়ালো। রাফসানকে উদ্দেশ্য করে রোদ বলে,
– রাফসান আমি কি একটু ইতির সাথে কথা বলতে পারি ?
– জ্বি স্যার অবশ্যই। জিঙ্গেস করার কি আছে ?
– একান্তে
– এক্সকিউজ মি প্লিজ।
বলেই সেখান থেকে রাফসান চলে গেলো। মনে মনে ভাবে ভালোই হয়েছে দুজনে কথা বললে সব ঠিক হয়ে যাবে। সব ভুল বুঝাবুঝি ঠিক হয়ে যাবে।
ইতি মাথা নিচু করে দাড়িয়ে রইলো। লজ্জায় নয়। কারণ লজ্জা পাবার মতো কিছু ইতি করেনি। এখন রোদের দিকে তাকাতে ইচ্ছে করছে না ইতির।
রোদ তালি দিলো। দিয়ে বললো,
– বাহ….
ইতি রোদের তালি দেবায় শব্দ পেয়ে কপাল কুঁচকে তার দিকে তাকালো। রোদ বললো,
– বাহ….আমি কি ভাবছিলাম আর এখানে তো খুবব ভালোই চলছে দেখলাম। আমি তো ভেবেছিলাম তুমি আর রাফসান জাস্ট কলিগ অর ফ্রেন্ডস বাট এখন তো দেখছি কাহিনি অন্য কিছু।
ইতি হা করে রইলো রোদের কথা শুনে। রোদ ভাবছে ইতির রাফসানের সাথে কোন সর্ম্পক আছে।
– ছিঃ আমি ভাবতেই পারিনি তুমি এতোটা ডাবোল স্টেন্ডার্ড। পরিস্থিতিকে কিভাবে কাজে লাগাতে হয় খুব ভালো করে জানো তুমি।
রোদের প্রতিটা কথা এসে ইতির বুকে ছড়ির আঘাতের মতো লাগছে। তবু রোদ থামে না,
– আজ না দেখলে তো বুঝতেই পারতাম না। আমি কি বোকা হয়ে গেলাম তাই না। আমি ভেবেছিলাম তুমি কতো ভালো একটা মেয়ে। কিন্তু তুমি ? হাহ…..নিজের চোখে না দেখলে কেউ বললেও হয়ত আমি বিশ্বাস করতাম না। তুমি….তুমি এমন মেয়ে।
– ইনাফ ইজ ইনাফ মিস্টার রোদ চৌধুরী। হ্যাঁ, আপনি যা ভাবছেন আমি তাই। ইয়েস, আই এম ডাবোল স্টেন্ডার্ড। হ্যাঁ, খেলেছি আমি আপনার সাথে বিকজ আমি এমনি। ঠিকি দেখেছেন আপনি। রাফসানের সাথে আমার সর্ম্পক আছে। আপনিও তো আমাকে ভালেবেসে সংসার করতে বিয়ে করেননি। ভুলে যাবেন না আপনি আপনার স্বার্থে আমাকে বিয়ে করেছেন। আর যেহেতু আমি বলেছি আপনাকে হেল্প করবো। কাজটা হয়ে গেলেই আমি আপনাকে ছেড়ে চলে যাবো।
ইতির কথা শুনে থ মেরে যায় রোদ মনে মনে ভাবে “ও আমাকে ছেড়ে চলে যাবে”। ইতির কথাগুলো ধাক্কার মতো লাগে রোদের কাছে।
– ভুলে যাবেন না এক বছর হতে আর মাত্র ৭ মাস বাকি। অনলি সেভেন মানথস।
বলেই ইতি রোদকে পাশ কেটে চলে গেলো।
রোদ সেখানেই দাঁড়িয়ে রইলো। নিজের সাথেই বললো রোদ,
– আমার পরিবারই আমার রইল না আর তুমি তো……
অনেক কষ্ট হচ্ছে রোদে মেনে নিতে। সে তো ইতিকে নিয়ে সুখে স্বপ্ন বোনা শুরু করে দিয়ে ছিলো। ইতির যাওয়ার দিকে তাকে রোদ বলে,
– কতো সহজে বলে দিলে আমাকে ছেড়ে চলে যাবে। কিভাবে থাকবো আমি তোমাকে ছাড়া। আমি যে ভালোবাসি তোমাকে।
ইতির অফিসে দমবন্ধ হয়ে আসছে তাই অফিস থেকে বেড়িয়ে গেলো সে। রাস্তার আইলেন ধরে হাটতে লাগলো। গন্তব্য জানা নেই। অন্য মনষ্ক হয়ে হাঁটছে ইতি। হাঁটতে হাঁটতে একটা নির্জন জায়গায় চলে গেলো ইতি। রোদের বলা প্রতিটা কথা ইতির কানে বাজছে। কান ধরে বসে পড়লো ইতি।
-নাহ……
বলে একটা চিৎকার দিলো ইতি।
.
.
চলবে………….
.
.
.
#বস_বর
পর্ব-১২
Writer : Eti Chowdhury
.
ইতির অফিসে দমবন্ধ হয়ে আসছে তাই অফিস থেকে বেড়িয়ে গেলো সে। রাস্তার আইলেন ধরে হাটতে লাগলো। গন্তব্য জানা নেই। অন্য মনষ্ক হয়ে হাঁটছে ইতি। হাঁটতে হাঁটতে একটা নির্জন জায়গায় চলে গেলো সে। রোদের বলা প্রতিটা কথা ইতির কানে বাজছে। কান ধরে বসে পড়লো ইতি।
-নাহ……
বলে একটা চিৎকার দিলো সে।
রোদ অফিস থেকে সোজা বাসায় চলে গেলো। নিজের রাগটা সে কোনভাবেই কন্ট্রোল করতে পারছে না। রাগে ভাংঙ্গ চুর শুরু করে দিলো সে।
-নাহ…… কিভাবে থাকবো আমি তোমাকে ছাড়া।
বুক ফেটে চিৎকার আসছে রোদের। ইতিকে ছাড়া যে সে আর থাকতে পারবে না। রুমের সব কিছু ভাঙ চুর করতে লাগলো। নিজের হাতটাও যে কেটে রক্ত ঝরছে সে দিকে রোদের কোন খেয়ালই নেই। বুকের ভেতরের কষ্ট আর যন্ত্রণাটার কাছে হাতের কেটে যাইয়া ক্ষতটা কিছু মনে হচ্ছে না রোদের কাছে। সে মাটিতে বসে পড়লো। কাঁচে কাঁটা হাত দিয়ে ফ্লোরে বারি দিতে লাগলো। কাটা জায়গাটা আরও ক্ষতবিক্ষ হয়ে যাচ্ছে। চোখের পানি যেন আজ আর বাঁধ মানছে না তার। ইতিকে হারানো ভাবনাটাই রোদকে পাগল করে দিচ্ছে। আর যখন সে সত্যি সত্যি চলে যাবে তখন সে কি নিয়ে বাঁচবে। কিভাবে বাঁচবে।
ইতি রাস্তায় বসে বসে অঝরে চোখের পানি ফেলছে। কিছু বলা তো দূরের কথা কিছু ভাবার সক্ষমতাটাও যেন হারিয়ে ফেলেছে সে আজ। শুধু বুকটা ঝুরে রোদের জন্য খা খা করছে। অনেক জ্বালা অনুভব করছে সে আজ। “অনেক দূরে চলে যাবো। চাইলেও আমাকে দেখতে পারবেন না আর। চলে যাবো আমি”। ভাবতে ভাবতেই চোখের পানি মুছে উঠে দাড়ালো ইতি।
“তোমাকে মুক্ত করে দিবো কথা দিলাম”। ভাবতে ভাবতেই চোখ মুছে নিলো রোদ।
এঁকে অপরের সুখের কথা ভেবে দুজনেই দূরে যেতে রাজি হয়ে গেলো। কিন্তু একজনও ভাবছে না তারা এঁকে অপরকে ছাড়া কিছুতেই থাকতে পারবে না।
প্রায় অনেকটা রাত করেই ইতি বাসায় ফিরলো। যদিও তার কোন ইচ্ছাই ছিলো না রোদের সামনে যাওয়ার। কিন্তু কি করবে মানুষটা যে শুধু কষ্ট ছাড়া কিছুই পায়নি তার পরিবারের থেকে তাই তাকে দেয়া শেষ কথাটা রাখবে ইতি। রোদকে দেয়া কথাটা রেখে তারপর দূরে কোথাও চলে যাবে সে। ভাবতে ভাবতেই রুমে ডুকে হা হয়ে থাকে ইতি। সারা রুম গ্লাস ভাংগা দিয়ে ছড়ানো। বেকায়দায় না দেখে পা রাখতেই ইতির পায়ে গ্লাসের টুকরো ডুকে যায়।
-আহ…..
চিৎকার দিতে গিয়েও নিজের মুখ নিজেই চেপে ধরে ইতি। শক্ত করে পা রাখে ইতি কাঁচদন্ডের উপর। চোখ বন্ধ করে অনুভব করার চেষ্টা করে বুকের ভিতর যে কষ্ট সেটা বেশি না পা কাটাটা বেশি কষ্টের। ইতি অনুভব করে বুকের ভেতরের কষ্টটার কাছে পায়ে গ্লাস ডোকাটা অতি সামান্য মনে হয় ইতির কাছে। এমন হাজারটা কাঁচের টুকরো যদি তাকে ক্ষত দেয় তাও তার বুকের ভিতেরর কষ্টটার সমান হওয়া তো দূরের কথা তার কাছেও যেতে পারবে না। এক ফোঁটা পানি পরে গেলো ইতির চোখ দিয়ে। পুরো রুম গ্লাস ভাংগা গিয়ে ভরা। এক পা দু পা করে ইতি ভিতরে গেলো। চারিদিকে চোখ দিতেই দেখে রোদ বিছানায় শুয়ে আছে উপুর হয়ে। ইতি গিয়ে রোদের পাশে বসলো। একবার তাকে ছুয়ে দিতে মন চাই খুব ইতির। হাত বাড়াতেই চোখ পরলো বিছানায় অনেকটা অংশ লাল হয়ে আছে। তা দেখে ভয় পেয়ে যায় ইতি। ভালো ভাবে তাকাতেই দেখতে পায় রোদের হাত কেটে রক্ত পরেছে অনেক। নিজের চোখের পানি ধরে রাখতে পারেনি সে। নিঃশব্দে কেঁদেই দিলো মেয়েটা। নিজের ওড়না ছিড়ে নিলো ইতি। রোদের হাত বাঁধতে নিয়ে থেমে গেলো। উঠে গিয়ে ফাস্ট এড বক্স এনে রোদের হাতটা খুব সাবধানে নিয়ে ব্যান্দেজ করে দেয় হয়ত রোদের উপর তার কোন অধিকার নেই বলেই নিজের ওড়না ছিড়া দিয়ে বাঁধল না। খুব সাবধানে ব্যান্ডেজ করে যেন রোদ উঠে না যায়। উঠে গেলে হয়ত আবার যা তা শুনাবে মেয়েটাকে। রোদের হাতটা সাবধানে রেখে দুদন্ড মানুষটাকে দেখে নেয় সে মন ভোরে। মন তো ভোরে না তাও ভরিয়ে নিতে হয়। কিছুদিন পর হয়ত এতটুকুও দেখতে পারবে না। তবু বেঁচে থাকতে হবে ইতিকে।
ইতি গিয়ে বারান্দায় রকিং চেয়ারটায় হেলান দিয়ে গা এলিয়ে দিলো। শরীরটা যে চোখের পানি ফেলতে ফেলতে ক্লান্ত। ভালোবাসার মানুষটা তো বুঝলোই না কতটা ভালোবাসে তাকে। এখন যে শরীরটাও সঙ্গ দিচ্ছে না। চোখ দুটো বন্ধ করতেই কল্পনার রাজ্যে হারিয়ে গেলো ইতি। যেখানে কেলব তার রোদ আর তার সুখের গল্প ছাড়া কোন কষ্ট নেই। কোন দূরত্ব নেই। সেখানে সে কেবল রোদ কাছে, অনেক কাছে।
হঠ্যাৎ রোদের ঘুম ভেংগে যায়। গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে তার। উঠতে নিতেই নিজের হাতটা ভার অনুভব করে। হাতের দিকে তাকিয়ে দেখে হাতটা ব্যান্ডেজ করা। চারিদিকে দেখতে লাগলো সে। হাত ব্যান্ডেজ করল কে। চোখদুটো মনে হয় কাউকে খুঁজছে। বারান্দায় চোখ পরতেই কারো উপস্থিতি অনুভব করতে পারে রোদ। না চাইতেও পা দুটো ঐদিকে হাঁটা শুরু করলো। চোখ দুটো শুধু চাইছে এ যেন তার ভালোবাসার মানুষটাই হয়। বারান্দা গিয়ে থমকে দাড়ালো রোদ ইতিকে দেখে। অনেক্ষণ চেয়ে রইলো মেয়েটার দিকে। মুখটা কেমন মলিন হয়ে গেছে। রোদের কেবল মনে হচ্ছে তার বুকের কষ্ট গুলো যেনো ইতির চেহারায় ভেসে উঠেছে। কাছে গিয়ে ইতির সামনে বসে পরলো সে। মেয়েটার চেহারায় এতো মায়া কেনো ? এ মায়া কি শুধু রোদই দেখতে পায় ? অন্যরা পায় না দেখতে ? এ মায়া কি কেবল রোদের জন্য ? হঠ্যাৎ হাটুর কাছে কিছুটা পিচ্ছিল অনুভব করে রোদ। হাত দিয়েই দেখতে পায় রক্ত জাতীয় কিছু। পাগলের মতো দেখতে লাগলো ইতির কিছু হয়নি তো। চোখ আটকে গেলো ইতির পায়ের দিকে। মেয়েটার পায়ে কতগুলো কাচের টুকরো আটকে আছে। একটা মলিন হাসি দিলো রোদ। রোদের হাতে ব্যান্ডেজ করে দিলো কিন্তু নিজের যে লেগেছে সে দিকে কোন খেয়ালই নেই। ধীরে ধীরে পায়ের কাচ গুলো বের করতে লাগলো রোদ। হালকা নড়ে উঠলো ইতি ব্যাথায়। পরম আদরে ইতির পা ব্যান্ডেজ করে দিলো রোদ। ইতির গালে হাত দিয়ে ধরে বসে বসে দেখলো তাকে কিছুক্ষণ। তারপর ইতিকে কোলে তুলে নিয়ে রুমে এসে বিছানায় শুইয়ে দিলো। শুইয়ে দিতেই রোদ ইতির অনেকটা কাছাকাছি চলে আসে। কাছ থেকে মেয়েটাকে আরো মায়াবি লাগে দেখতে। মুখটা কপালের কাছে নিয়ে একটা চুমু দিয়ে উঠে আসে রোদ। ঘুমের ঘোরেই ইতি রোদের হাত খামচে দরে। সেই পাগল করা অনুভূতি পায় রোদ। সেই রাতের কথা মনে পরে যায়। সেই সুখের কথা মনে পরে যায়। কিন্তু হঠ্যাৎ ইতির বলা কথাহুলো মনে পরে গেলো” আমি চলে যাবো”। কথাটা বার বার রোদের কানে বাজছে। হাতটা ছাড়িয়ে নিয়ে উঠে গেলো রোদ।
সকালে,
রোদ সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে দেখে ইতি নেই। রাতে এতো ভাংগ চুর হলো। কিন্তু এখন কেউ দেখলে বলতেই পারবে না রাতে এতো কিছু হয়েছে। রোদ ফ্রেস হতে চলে গেলো। রেডি হয়ে রুম থেকে বের হতেই দেখে ডাইনিং টেবিলে খাবার দেয়া। বুঝতে বাকি রইল না সব ইতি করেছে। রোদ নাস্তা করে বেরিয়ে পরলো। ড্রাইভার অপেক্ষা করছে। রোদ মনে মনে ভাবছে। ইতি কি গাড়ি নিয়ে যায়নি।
-ড্রাইভার।
-জ্বি স্যার ?
-আপনার ম্যাডাম কে কি অফিসে দিয়ে এসেছেন ?
-বউমণি তো একাই গেলেন। আমি কত করে বললাম আমি নিয়ে যাই শুনলই না। বলল উনার একলা পথ উনি একাই চলতে পারবে। তাকে একলাই চলতে হবে। সে যেতে পারবে কিন্তু আপনাকে যেন একা না ছাড়ি।
– হুম……
মনে মনে ইতির কথা ভাবতে বিভর হয়ে পরলো রোদ।
অফিসে,
রোদ অফিসে ডুকতেই দেখে ইতি রাফসানের সাথে হাসাহাসি করছে। কিছু না বলেই রোদ নিজের কেবিনের দিকে চলে গেলো। ইতির মুখের হাসিটাও থেমে গেলো।
রাফসান বলে,
-আমি তোমাকে কিছু জিঙ্গেস করছি তুমি সেটার উত্তর না দিয়ে ওহেতুক হাসছো কেন ?
“উনাকে দেখাতে হবে যে ইতি রোদকে ছাড়া ভালো আছে তাই এই অহেতুক হাসি। মনে মনে ভাবছে ইতি।
-কি হলো ? আবার কোথায় হারিয়ে গেলে ? বলো।
– কি বলবো বলো ?
– কাল স্যার তোমায় কিছু বলে ছিলো ? ওভাবে না বলে চলে গেলে যে ?
– কিছুই বলেনি। একটু কাজ ছিলো তাই বেরিয়ে গিয়ে ছিলাম।
– সব ঠিক আছে তো ?
ইতি রাফসানের দিকে তাকিয়ে রইলো তারপর বলল,
– সব ঠিক আছে।
ইতি আর রাফসানকে কোন ঝামেলায় ফেলতে চায় না তাই মিথ্যে বলল। ইতি খোরায় খোরায় হাটতে লাগলো। রাফসান হাত ধরে আটকালো তাকে। দূর থেকে রোদ রাফসানের ইতির হাত ধরাটা দেখেই চলে গেলো।
রাফসান ইতিকে বাঁধা দিয়ে বলে,
– কেনো মিথ্যে বলছো আমায় ? তোমার পায়ে ব্যান্ডেজ স্যারের হাতে ব্যান্ডেজ। আমি কি কিছুই বুঝি না ?
ইতি একটা মলিন হাসি দিয়ে রাফসানের হাত থেকে হাত ছাড়িয়ে নিয়ে চলে গেলো। আর কিছুই বলল না।
রিমি হা করে রাফসানের দিকে তাকিয়ে রইলো। সব কিছুই দেখছিলো আর শুনছিলো।
– হা করে কি দেখছো ? রাগি শুড়ে বলল রাফসান।
– না মানে…..
– কি মানে মানে করছো। কোন কাজ আছে কিছু বলবা ?
– নাহ
বলেই মাথা নিচু করে ফেললো মেয়েটা।
– কাজ না থাকলে যাও গিয়ে নিজের কাজ করো। হা করে তাকায় থাকে মনে হয় গিলে খাবে কিছুই বুঝে না বাচ্চা।
এখন প্রয়োজন ছাড়া ইতি আর রোদ একে অপরের সাথে তেমন একটা কথা বলে না।
কথা বলা তো দূরের কথা সামনেই যায় না।
রোদকে দেখলে ইতি ইচ্ছে করে রাফসানের সাথে বেশি বেশি হাসাহাসি করে। যেন রোদ ভুল বুঝে। যেন রোদ যা ভাবছে তাই সত্যি এমনটাই বুঝেতে যায় স তাকে।
একদিন অফিসে অনেক বেশি কাজ থাকায় অনেক দেরি হয়ে যায় সবার। রোদ বেরিয়ে গিয়ে গাড়িতে অপেক্ষা করছে। ইতিকে বের হতে দেখেই একটা দরজা খুলে দিলো। তা দেখে ইতি রাফসানকে বলে,
– রাফসান তুমি কি আমাকে একটু বাসায় পৌছে দিবে ?
ইতি এমনভাবেই বলে যেন রোদ তা শুনতে পায়। রাফসান ধীরে ধীরে বলে,
– হচ্ছে কি এসব ইতি স্যার অপেক্ষা করছে আর তুমি আমার সাথে যাবা ?
– লিফ্ট দিলে দাও না দিলে আমি একাই যেতে পারবো।
– আরে বাবা রাগ করছো কেনো ? আচ্ছা দিচ্ছি পৌছে। এসো।
ইতি রোদ কে দেখিয়ে রাফসানের বাইকের পিছনে গিয়ে বসলো।
বাসায়,
ইতি বাসায় এসে ফ্রেস হয়ে খাবার রেডি করা শুরু করে দিলো। ইতি আসার কিছুক্ষণ পরেই রোদ আসে। সে এসেই ফ্রেস হয়ে শুয়ে পরলো। রাতে কিছু খেলো না। ইতির মন চাইছিলো রোদকে একবার খাবারের জন্য ডাকবে। কিন্তু ডাকলো না।
পরেরদিন অফিসে,
ইতি অফিসে ডুকেই বলে,
– রিমি কোথায় ?
– ম্যাম রিমি তো আজ আসে নি।
– ওকে। বাট পেপারগুলো তো সাইন করাতে হবে।
এভাবেই ইতি রোদকে এভয়েড করে। কোন কাজ থাকলে রিমিকে পাঠায় নিজে যায় না। আজ কি করবে সে। রাফসানের কথা মনে পরতেই সে তার কেবিনে যায়।
রাফসানের কেবিনে,
– একটা কাজ ছিলো।
– কি ?
– এই পেপারগুলোতে এমডি স্যারের সাইন লাগবে। একটু সাইন করায় আনবা ?
রাফসান ভ্রু কুচকে তাকালো ইতির দিকে। ইতি বলে,
– এভাবে তাকাচ্ছো কেনো ?
– অনেকদিন ধরে দেখছি এসব। কিছু বলছি না তোমাদের প্রাইভেট ব্যাপার ভেবে। বাট এটা ঠিক হচ্ছে না। এভাবে এভয়েড করলেই সব সমাধান হয় না। ইউ হেভ টু টেক এ স্টেপ।
– উফফ…..
রাফসান টাও না একটা বিরক্ত। বাধ্য হয়ে ইতির নিজেকেই যেতে হলো।
নক নক…
– কাম ইন।
অনেকদিন পরে ইতি রোদের কেবিনে ডুকলো। আশেপাশে না দেখে ইতি সোজা কাজের কথায় চলে গেলো,
– স্যার এই পেপারগুলো সাইন করতে হবে।
– দেখি?
রোদ পেপারগুলো দেখছে। ইতি সামনেই বসে আছে। অনেকদিন পর ইতি রোদকে এতটা কাছ থেকে দেখছে। রোদ সাইন করে দিলো সাথে সাথে ইতি পেপারগুলো নিয়ে বেরিয়ে গেলো।
কেবিনে এসে ইতি বার বার রোদের কথাই ভাবতে লাগলো। কতদিন পর ইতি রোদকে এতোটা কাছ থেকে দেখছে।
রাতে রাফসান রিমিকে ফোন দেয়। রিমি রিসিভ করতেই বলে,
– আজ এলেনা কেনো ?
– হালকা জ্বর ছিলো স্যার।
– ঔষুধ খাইছো ?
– হুম
দুজনই কিছুক্ষন চুপ করে রইল। রিমি বলে,
– কিছু বলবেন স্যার ? কিছু কি হয়েছে ?
– হুম
– আপনি কি কিছু নিয়ে চিন্তিত স্যার ?
– ইতির জন্য চিন্তা হচ্ছে। মেয়েটা নিজের জীবনটা এতো বেশি বেশি কমপ্লিকেডেট করে নিয়েছে যে কি বলবো।
– আপনি চিন্তা করবেন না সব ঠিক হয়ে যাবে স্যার।
– হুম…..তাই হোক।
– একটা কথা জিঙ্গেস করি ?
– বলো।
– ম্যাম আর এমডি স্যারের মাঝে কি কিছু চলছে ? না মানে আমি না বাকি সবাই কি কি বলে আর….
– তুমি এসব নিয়ে ভেবো না। যে যা ইচ্ছা বলুক। তোমাকে আমি সব পরে বলবো। এখন রাখছি।
– জ্বি।
– নিজের খেয়াল রেখো।
অফিসে,
– এই তুমি উপরে কি করছো ?
– কাজ করছি ফাইল নামাই দেখছো না ?
– তাই বলে তুমি কেনো ? অন্য কাউকে বলতে পারতে। পরে যাবে তো।
– আরে না পরবো আআআআআ….
পরে গেলো মেয়েটা।কিন্তু রাফসান ধরে ফেলল। ইতি এসে রাফসানের কোলে পরলো। ভাগ্যিস রাফসানটা ছিলো।
রোদ পিছনেই দাড়িয়ে ছিলো।
রাফসান আর ইতি দুজনেই হেসে দিলো। রাফসান বলে,
– আমি না থাকলে কি হতো ?
– হাহাহা…আমি তো জানি তুমি সবসময় আমার পাশে আছো। আমাকে ছেড়ে কোথায় যাবে তুমি।
ইতি দেখে ফেলেছে রোদ পিছনে দাড়িয়ে আছে। তাই ইচ্ছা করে কথাগুলো বলল যেন রোদ শুনতে পায়। আবার দুজন হাসতে লাগল।
রোদ চলে গেলো। কিছু বলল না।
৩দিন পর রিমি অফিসে জয়েন করে,
– আসবো ম্যাম ?
– এসো। বসো রিমি।
– ম্যাম আপনাকে একটা কথা বলার ছিলো।
– হ্যা বলো।
– না আসলে। আমি কিভাবে বলবো..
– কি হয়েছে রিমি ?
– সে দিন আপনি স্যারকে ভুল বুঝেছেন ম্যাম।
ইতি অবাক হয়ে তাকালো রিমি দিকে।
-মানে?
– ওই দিন ওই মেয়েটার চোখে কি যেন পরে ছিলো স্যার তাই দেখছিলেন। আর আপনি পিছন থেকে দেখে ভুল ভাবলেন। তাও স্যার যখন আপনাকে আটকাতে আপনার পিছনে যেতে নিলেন তখন ওই মেয়েটা স্যারকে আটকায় আপনার নামে যা তা বলায় স্যার মেয়েটাকে থাপ্পর দেয়। বলে তার সাহস হয় কি করে তার বউয়ের ব্যাপরে কথা বলার। তাকে আর আপনাদের আশেপাশে আসতেও নিষেধ করে দেয়। ওই মেয়েটাকে বের করে দেয় স্যার। পরে আপনাকে খুজতে আপনার পিছনে যায়। ম্যাম আমি জানি না আপনাদের সর্ম্পক কি ? বা কেনো কি হয়েছে। শুধু আমার মনে হয়েছে আপনি স্যারকে ভুল বুঝেছেন আর ওই ঘটনাটা আমার চোখের সামনেই ঘটে তাই অনেক চিন্তা করে আর উপায় না পেয়ে আজ বলেই দিলাম। আপনাদের পারসোনাল ব্যাপারে কথা বলার জন্য আই এম সরি ম্যাম। আসলে আপনি আর স্যার হচ্ছেন অফিসের জান যখন দেখলাম আপনারা এমন নিশ্চুপ হয়ে গেছেন সত্যি মেনে নিতে পারলাম না তাই বাধ্য হয়ে আজ মুখ খুললাম।
কথা গুলো বলেই রিমি বেরিয়ে গেলো। ইতি অবাক হয়ে বসে রইল। “কি বলে গেলো মেয়েটা। আর আমি উনাকে এতো কষ্ট দিলাম”। বিস্ময় যেনো কাটছেই না ইতির। সারাদিনে আর কোন কাজ করতে পারলো না সে।
বাসায় এসে বারান্দায় রকিং চেয়ারটায় বসে আছে ইতি।
রোদ সকাল থেকেই ইতিকে লক্ষ করছে।
– মেয়েটাকে আজ এতো উদাস লাগছে কেনো ? কি হয়েছে ওর। নিশ্চই রাফসানের সাথে কিছু একটা হয়েছে। তাই হয়ত মন খারাপ।
এসব ভেবে সরে যায় রোদ। ইতিকে আর কিছু জিজ্ঞেস করে না।
– না যেনে উনাকে এভাবে কষ্ট দিলাম। উফ কেনো জানলাম না। কেনো এভাবে বিয়েক্ট করলাম।
কিছুই ভালো লাগছে না ইতির। রিমির কথা শুনার পর থেকে এসব নিয়েই ভেবে যাচ্ছে ইতি।
রোদ দু দিন ধরে লক্ষ করছে ইতি সারাক্ষণ শুধু আপসেট থাকে। উদাস হয়ে থাকে। কিছু বলতে চায় কিন্তু পারছে না।
আজ আবার ইতি রোদের কেবিনে এসেছে। রিমি অফিসে আছে তাও নিজে এসেছে।
– মে আই কাম ইন স্যার ?
– ইয়েস, কাম
– এই পেপারগুলো একটু দেখে সাইন করে দিন।
রোদ পেপারগুলো দেখে সাইন করে দিলো। কিন্তু ইতি দাড়িয়েই আছে। রোদ ইতির দিকে তাকিয়ে দেখে ইতিকে অন্য মনষ্ক লাগছে। না পেরে মুখ খুললো রোদ,
– কিছু বলবে ?
রোদের কথায় হুস ফিরলো ইতির বলে,
– জ্বি ?
– কিছু বলবে ?
ইতি কিছুক্ষন চুপ করে থেকে বলল,
– না কিছু না।
বলেই বেরিয়ে গেলো ইতি।
রাফসানও লক্ষ করলো ইতি বেস চুপচাপ ইদানিং। কিন্তু কেনো তা জানা নেই।
রোদ ভাবে,
– একবার কি রাফসানের সাথে কথা বলবো ? কিন্তু কি বলবো ?
বাহিরে হইচই শুনে রোদ বেরিয়ে এলো নিজের কেবিন থেকে।
– কি হচ্ছে টা কি ?
রাফসান বলে,
– সরি স্যার আমরা আসলে ইতির মন ভালো করার চেষ্টা করছিলাম।
রোদকে দেখে ইতি সেখান থেকে চলে যায়। রোদ বলে,
– তো পারসোনাল কাজ অফিসে কেনো ?
– পারসোনাল!!!
খানিকটা অবাক হয় রাফসান।
– জ্বি। আপনার গার্লফ্রেন্ডের মন খারাপ তাকে বাহিরে নিয়ে যান। এটা আমার অফিস কোন রেস্টুরেন্ট অর কেফে নয়।
রাফসান হা হয়ে রইলো,
– আমার গার্লফ্রেন্ড ?
রোদ রাফসানের দিকে তাকিয়ে রইলো।
– কে আমার গার্লফ্রেন্ড ?
– হাহ,,,,,
তাছ্যিলের হাসি দিলো রোদ। দিয়ে বলল,
– সেটা আমায় বলে দিতে হবে? প্রেম করছেন আপনারা। সর্ম্পক আপনাদের আর বলে দিবো আমি ? ইটস সাউন্ডস রিয়েলি ফানি মিস্টার রাফসান।
বলেই রোদ চলে যেতে নেয়। বাঁধা দিয়ে রাফসান বলে,
– ওয়েট এ মিনিট স্যার। আপনি কি বলতে চাইছেন আমার আর ইতির মাঝে কিছু আছে ?
– কেনো নেই ? অবশ্য আপনার বলার প্রয়োজন নেই। আপনাদের হাসাহাসি, মাখামাখি দেখলেই সব বুঝা যায়। আর সেদিন তো নিজের চোখেই দেখলাম সব। ছাঁদে যা হচ্ছিলো।
– হাহাহা……
রাফসান হেসে দিলো। রাফসানকে হাসতে দেখে রোদ বলে,
– আমি নিশ্চয়ই হাসার মতো কিছু বলিনি ?
– সরি স্যার না হেসে পারলাম না। সত্যি বলতে আপনার কথায় আমার একদম খারাপ লাগছে না বরং আপনার জন্য মায়া হচ্ছে। আপনি ওই দিনের ঘটনায় ভাবছেন আমাদের মাঝে কিছু আছে। আপনি একবারো জানার চেষ্টা করলেন না কি হয়ে ছিলো ? একবারো জানতে চাননি কেনো মেয়েটা আমার বুকে মাথা রেখে কাঁদলো। এই বিশ্বাস আপনার নিজের বউয়ের প্রতি ? নাহ সরি ইতি তো আপনার বউ না। বউ হলে আপনি ওকে অবিশ্বাস করতে পারতেন না। একবার হলেও জানতে চাইতেন।
– রাফসান…..আপনি সীমা অতিক্রম করছেন।
– সরি স্যার জানলে আরো আগে করতাম। সর্ম্পকের কথা বলছে ? হ্যাঁ, সর্ম্পক আছে সেটা শুধুই ভালো বন্ধুর। সেদিন যখন আপনার কেবিন থেকে দৌড়ে বেরিয়ে এলো মেয়েটা। তখন বন্ধু হিসেবে আমার বুকে আশ্রয় নিয়ে ছিলো। কারণ কেলব আমি জানি ইতি আপনাকে……
বলতে নিয়েই থেমে গেলো রাফসান আর বলল না।
– আমাকে কি ?
– যা বোঝার ক্ষমতা আপনার নেই তা অন্যের মুখে শুনে কি লাভ স্যার।
– তাহলে তোমাদের মাঝে….
– জ্বি আমাদের মাঝে কোন প্রেমের সর্ম্পক নেই। জানতে চান আমি কাকে পছন্দ করি। একটু প্লিজ। রিমিইইই…..এই রিমিইইই….
রিমি দৌড়ে এলো।
– জ্বি স্যার ?
রিমির হাতটা ধরে সামনে দাড় করালো রাফসান। দাঁড়িয়ে বলে,
– এই মোটা চশমা তুমি কি কিছুই বুঝ না ?
– স্যার লাগছে হাতে।
– লাগুক। এতো অবুঝ কেন তুমি ? আমাকে নিয়ে ইতির সাথে সবাই এতো মন্তব্য করে তুমি প্রতিবাদ কর না কেন ?
– আমি কি বলবো ?
– তুমি বলবা রাফসান শুধু তোমার। এই মোটা চশমা তুমি বুঝনা আমি তোমাকে কতটা পছন্দ করি। তোনাকে কেউ মোটা চশমা বলে ডাকলেও আমার সহ্য হয় না তুমি জানো না ?
– জানি তো কিন্তু….
– কিন্তু কি ?
– আমি তো ভাবতাম আমার মতো মোটা চশমা পরা বোকা মেয়েকে কি আপনার মতো হেন্ডসাম ছেলের চোখে লাগবে নাকি কখন তাই কিছু বলিনি।
– পাগলী একটা।
রাফসান সেখানেই হাটু গেরে বসে পরে বলে,
– তুমি জানো আমি ফুসকা একদম পছন্দ করি না আর ১০টা ছেলের মতোই। কিন্তু যে দিন প্রথম দেখলাম তুমি বাচ্চাদের মতো ফুসকা খাও সেদিন আমি ফুসকার প্রেমে পরে যাই। তোমার প্রেমে তো অনেক আগেই পরে যাই। তুমি কেনো বোঝ না। আমি হাজার বাহানায় তোমাকে কল দেই শুধু তোমার কন্ঠ শুনব বলে। তুমি কি বুঝ না মোটা চশমা আই লাভ ইউ।
রিমি রিতি মতো ধাক্কা খেলো। যাকে মনে মনে এতোটা পছন্দ করে সেই কিনা তাকে ভালোবাসে।
রাফসান রোদকে উদ্দেশ্য করে বলে,
– থ্যাংকিউ স্যার। আজ আপনি এভাবে না বললে হয়ত ওকে বলা হয়ে উঠতো না ভালোবাসার কথা। কিন্তু আপনি দেরি করে ফেললেন স্যার।
বলেই রিমিকে নিয়ে সেখান থেকে রাফসান চলে গেলো।
রোদ সেখানেই দাঁড়িয়ে রইল।
– এটা আমি কি করলাম ? এত বড় একটা ভুল বুঝলাম। মেয়েটার কোন দোষ ছিলো না ওকে যা তা বললাম আমি।
রোদের অনেক অনুশুচনা হলো। কি করবে এখন সে।
রাফসান রিতি মতো রাগে কাঁপছে। ইতির উপর খুব রাগ হচ্ছে তার। এই সব ভুল ধারনা ইতি তৈরি করেছে ইচ্ছে করে তা রাফসান বুঝতে পারছে। এখন ইতিকে সামনে পেলে ইচ্ছা মতো বকে দিতো সে।
রিমি চলে যেতে নিলে রাফসান বাঁধা নিয়ে বলে,
– কোই যাও ?
– ওই কথা গুলো আপনি স্যারকে শুনানোর জন্য বলেছেন না ?
– তুমি আসলেই একটা মোটা চশমা। কিছুই বুঝো না। কেন যে বাচ্চা মেয়ের প্রেমে পরলাম।
বলেই রাফসান চলে গেলো।
রিমি মন খারাপ করে ইতির কাছে গেলো। রিমি প্রায় কান্না করে দেয়ার মতো তা দেখে ইতি জিজ্ঞেস করে,
– কি হয়েছে চোখে পানি কেনো ?
রিমি হুট করেই ইতিকে জড়িয়ে ধরলো। তা দেখে ইতি আরো অবাক হয়,
– কি হয়েছে রিমি ?
– স্যার রাগ করেছেন।
– স্যার? কোন স্যার ? এমডি স্যার?
– নাহ, রাফসান স্যার।
– ওহ….কাজে ভুল হয়েছে বুঝি ?
– নাহ
– তাহলে ?
– আমি বুঝি না তাই।
– কি বলেছে ? (ইসস রাফসানটা মনে হয় অনেক বকেছে মনে মনে ভাবছে ইতি।)
– আমি বাচ্চা তাই আমার প্রেমে পড়ে উনি ভুল করেছেন।
– ওহ…..এ্যা !!! প্রেম ? ম… মানে ?
রিমির দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকায় ইতি। রিমির কান্না আরো বেড়ে যায়।
– আচ্ছা থামো আগে বলো কি হয়েছে।
রিমি সব খুলে বলল।
– ম্যাম আপনিই বলেন আমি কিভাবে জানবো উনি আমাকে ভালোবাসে কখনও বলেনি তো। আর আমি কি তাকে অপছন্দ করি নাকি। শুধু ভয় পাই বলে বুঝতে দেইনি কখনো। এখন কি করবো।
– এখন কান্না থামাও দেখছি কি করা যায়।
সব শুনে ইরি মনে মনে ভাবে, “ইসস….রাফসান রাগ হয়েছে আমার উপর। স্যার ও তো সব জেনে গেলেন এখন কি হবে”। চিন্তায় পরে গেলো ইতি।
অফিস টাইম শেষ।
অফিস থেকে বের হতে হতে ইতি রাফসান আর রিমিকে বলে,
– তোমরা দুজন ফুসকা খেতে যাও। আর নিজের মাঝে সমজতা করে নাও।
– তুমি আমার সাথে কথা বলবা না।
– আচ্ছা বলবো না তোমরা যাও। আর নিজেদের সব প্রবলেম ঠিক করে নাও।
– ম্যাম আপনিও চলেন না প্লিজ।
– ওই মাইয়া তোমরা যাবা ডেটিং এ আমি গিয়ে কাবাবমে হাড্ডি হবো কেন। যাও। আসলেই বাচ্চা মেয়ে তো।
রিমি মন খারাপ করে নিলো।
রাফসান রিমি হাত ধরে বলল, “এই মোটা চশমা চলো”। আর ইতি কে বলল, “তোমার নিজের সমজতা করা দরকার সেটা কি বুঝ তুমি। এখনো সময় শেষ হয়ে যায়নি ইতি। একবার বলে দাও”।
টুং করে মেসেজ টোন বেজে উঠলো ইতির। ফোন হাতে নিয়ে তাকিয়ে রইলো সে।
রোদ ম্যাসেজ করেছে,
গাড়ি নিয়ে অপেক্ষা করছি শুধু তোমার জন্য।
– তোমার বস_বর
ইতি কি বলবে ভেবে পাচ্ছে না। নিচে নামতেই দেখে রোদ গাড়ি নিয়ে অপেক্ষা করছে। ইতি কে দেখতেই গাড়ির দরজা খুলে দিলো সে। রোদ তার একটা হাত বাড়িয়ে দিলো ইতির দিকে। আর বলল, “আফটার ইউ মাই লেডি”।
ইতি রোদের হাতটা ধরা থেকে নিজেকে বঞ্চিত করতে পারলো না। তাই সে রোদের হাত ধরে গাড়িতে বসে পরলো। কেউ কোন কথা বলছে না। দুইজনেই নিশ্চুপ। রোদ ড্রাইভ করছে। গাড়ি যাচ্ছে কোন ওজানা গন্তব্যে। আজ ইতি জানতেও চায় না রোদ তাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে। এই পথ যেখানে যাবে রোদের সাথেই ইতিও যাবে দূর অজানায়।
.
চলবে…………….