এখানে আকাশটা ভালোবাসার পর্ব ৩১

#এখানে_আকাশটা_ভালবাসার
#লেখিকাঃ নয়নতারা নাতাশা
#পর্বঃ ৩১
.
পরিকল্পনা মতোই বিয়ে হয়ে গেল তানহা আর সায়ানের।
কোনো রকম আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই।
কারণ কেউই চায়নি মায়ার উপর কোনো প্রভাব পড়ুক। অনুষ্ঠান করলে হয়তো মায়ার উপর কোনো না কোনো প্রভাব পড়ত।
তানহা জেনেবুঝেই রাজি হয়েছে বিয়েতে।
কারণ তানহার বারবার মনে হয়েছে সে ভাল থাকবে।
কারোর প্রথম ভালবাসা হতে পারলেই ভালবাসা পাওয়া যায় বেশি এই যুক্তিতে তানহার বিশ্বাস নেই।
তানহা ভালবাসতে জানে।
আর যে ভালবাসতে জানে তার বিপরীতে যদি অপর মানুষটি সত্যিকারের মানুষ হয় তবে সেও ভালবাসতে বাধ্য হবে।
তানহা চায় সবচেয়ে ভাল বউ হতে।
এখন সময় বলবে তানহা রিদিমার জায়গা নিতে পারবে কিনা।
মায়া আর রিদিমার ব্যাপারে ভালভাবে জেনেছে নওশির থেকে।
তবে তানহার বিশ্বাস সে পারবে।
বাসায় ফিরে মায়া তানহাকে দেখল।
সায়ান মায়াকে কাছে নিয়ে এলো,
“মামনি কেমন বেড়ালে?”
“খুব ভাল বাবা” এটা বলে মায়া জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকাল তানহার দিকে।
“আমি মা সোনা” তানহা জবাব দিলো।
তানহার কথা শুনে খুব ভাল লাগল মায়ার।
“সত্যিই তুমি মা?”
“হ্যাঁ সোনা, আমি মা” বলে তানহা জড়িয়ে ধরল মায়াকে।
মায়াও নতুন মাকে জড়িয়ে ধরল খুব সাবলীলভাবে।
সেই মুহূর্তে পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর দৃশ্য মনে হয় এটাই।
“মায়া চলো ফ্রেশ হয়ে নেবে, ভাবি আমাকে দাও, আর তুমিও ফ্রেশ হয়ে এসো” এটা বলে রোশনি মায়াকে নিতে গেলে মায়া বলে,
“আমি মায়ের সাথে যাব!”
অবাক হয়ে হেসে ফেলে রোশনি।
“কিন্তু মা তো ক্লান্ত সোনা”
তানহা বলে,
“আচ্ছা থাক না রোশনি, আমিই নিয়ে যাব”
“হুম আমি মায়ের সাথে যাব” আবার জোরের সঙ্গে বলে মায়া।
“ওকে ওকে ওকে, ওকেএএইই মিস রাফসানা সায়ান মায়া! আমি যাচ্ছি আপনি মায়ের সাথে থাকুন”
মায়ার কপালে একটা চুমু দিয়ে বেরিয়ে যায় রোশনি।
মায়ার চুলে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে তানহা।
ঘুমিয়ে গিয়েছে।
সায়ানের সাথে খুব বেশি কথা হয়নি তানহার।
সে জানে তাকে মানিয়ে নিতে একটু সময় লাগবে। লাগুক, সে অপেক্ষা করতে রাজি।
এমন সময় নওশি আসল রুমে।
“মেয়েটা ঘুমালো তাই আসলাম, রাফসানা ঘুমিয়েছে ভাবি?”
মায়ার দিকে একবার তাকিয়ে তানহা বলল, “হ্যাঁ”
“তানহা….. নাহ ভাবি বলি তোমাকে”
“আরে সমস্যা না, বান্ধবীই তো”
“আচ্ছা দুটোই বলব, তারপর ও আমার ভাইয়ের বউ তুমি!” মুচকি হাসল নওশি।
“আচ্ছা কি বলছিলে যেন”
“ও হ্যাঁ, একটু বারান্দায় চলো তোমার সাথে কথা বলব কিছু, কাল আবার আমি চলে যাব, ঈশানের কলেজ আছে।”
“আচ্ছা চলো”
“ভাবি শুনো, তোমার এখন অনেক দায়িত্ব।
শুধু একটাবার এই বাড়ির মানুষগুলোর মনে জায়গা নাও এরা তোমায় মাথায় করে রাখবে”
“হুম বুঝেছি নওশি”
“ভাবি তোমাকে এই বাড়ির বউ করার পিছনে সবচেয়ে বেশি দায়িত্ব নিয়েছি আমি, তাই আমার কথা ভেবো। আমার ছোট ভাবি সানজানা কিন্তু প্রচন্ড ভাল মেয়ে।
ভাবি তুমি হাসিমুখে রাখবে তো সবাইকে?” কান্না চোখে বলল নওশি।
“চেষ্টা করব নওশি”
“ভাবি তুমি সব বুঝো তাও বলছি, তুমি যেন শুধু রাফসানার মা হয়ে থেকো না, আমার ভাইয়ের স্ত্রী হয়ে উঠার চেষ্টা করো।
আমার ভাইয়ের ভালবাসার খুব দরকার।
ভাবি আমার ভাইয়া কতটা হাসিখুশি ছিল তা তো তোমাকে বলেছিই।
আর এখন…!” দীর্ঘশ্বাস ফেলে নওশি।
“আমি আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা করব”
“ভাবি এখন কিছুটা ভালবাসা দিয়ে এদের মন জয় করে নাও পরে দেখবে এরা ভালবাসা তোমার জীবনটা ভরিয়ে দিবে”
“দোয়া করো নওশি”
“ভাবি আমি যাই তাহলে”
নওশি চলে যাওয়ার কিছুক্ষন পর জাহরা আর সাহরাফ তানহাকে ঠিক এই কথা গুলোই বলল।
.
“মায়া ঘুমিয়েছে?”
রুমে ঢুকে দরজা লাগাতে লাগাতে সায়ান প্রশ্ন করল তানহাকে।
“জ্বি”
“আপনি ফ্রেশ হয়েছেন?”
“আমাকে তুমি করে বলবেন প্লিজ!”
“ওহ, আচ্ছা ঠিক আছে। কিন্তু সেটা তোমার জন্যও কিন্তু প্রযোজ্য”
“জ্বি ফ্রেশ হয়েছি”
“আচ্ছা… আমরা কি একটু বারান্দায় বসতে পারি?”
“নির্বিঘ্নে!”
সায়ান দুটো চেয়ার টেনে নিয়ে বারান্দায় নিলো, হঠাৎ মায়া নড়ে ওঠায় দৌড়ে গেল মায়ার দিকে। ধীরে ধীরে মায়া আবার গভীর ঘুমে তলিয়ে গেল।
তানহা অবাক হয়ে সায়ানের দিকে তাকিয়ে রইল।
তানহার অবাক চোখ দেখে সায়ান বললো,
“মায়া আমার জান”
কিছুক্ষণ পর সায়ান বলল,
“চলো বসি”
“হুম চলুন”
“আবার আপনি?”
“আস্তে আস্তে হয়ে যাবে”
“ওকে”
সায়ান চেষ্টা করছে তানহার সাথে স্বাভাবিক হতে কিন্তু বাধোবাধো লাগছে কেন যেন।
সায়ান হঠাৎ বললো,
“দেখ তানহা, আমার হয়তো তোমাকে…”
“বুঝেছি আমি…!”
মাঝপথে থামিয়ে দিল তানহা।
“কি বুঝেছো?”
“আপনি মানে তুমি এখনো ভালবাসো রিদিমাকে, আমাকে মেনে নিতে তোমার দেরি হবে! তাইতো?”
অবাক চোখে তাকিয়ে থাকল তানহার দিকে।
আচমকা একটা কাজ করে বসল তানহা,
বারান্দায় ফুটে থাকে একটা সাদা নয়নতারা ফুল তুলে সায়ানের দিকে এগিয়ে দিয়ে বলল,
“জানি আমাকে ভালবাসতে তোমার অনেক দেরী, আমি অপেক্ষা করতে শুধু আমায় ভালবাসতে দাও…! প্লিজ”
সায়ান অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল তানহার দিকে।
এমন করবে বুঝতেই পারেনি সায়ান।
তানহা আবার ফুলটাকে ইশারা করল।
সায়ান ফুলটা হাতে নিতেই
তানহা তার সায়ানের হাত ধরে বলল,
“আমি শুধু মায়ার মা হয়ে থাকতে চাই না, আমি তোমার স্ত্রী ও হতে চাই, দেবে না?”
সায়ানের হাত ধরে মুখের দিকে তাকিয়ে রইল তানহা।
সায়ান তানহার চোখের দিকে তাকিয়ে রইল,
যারা ভালবাসতে জানে তারা সত্যিকারের ভালবাসা চিনতেও পারে।
সায়ান ঠিক বলবে বুঝতে পারছে না।
নিজের কাছেই প্রশ্ন করল,
‘আমি কি এই মুহূর্তেই ভুলে গেলাম রিদিমাকে?’
তানহা আবার বলে,
“আমি তোমায় ভালবাসতে বলছি না এখনই, কিন্তু ভালবাসতে তো দেবে!”
কথাটাতে তেমন বিশেষ কিছু ছিল না।
কিন্তু সায়ান শিহরিত হয়ে উঠল।
তার কেন যেন মনে হচ্ছে এই মেয়েটাকে ভালবাসা যায়।
এসব চুপচাপ ভাবছিল সায়ান।
সায়ানকে তবুও চুপ থাকতে দেখে তানহার খুব খারাপ লাগছিল।
তাই মনে হলো হয়তো তাকে মোটেই পছন্দ হয়নি সায়ানের।
তবে সায়ানের মুখ থেকে সত্যি কথাটা শোনার জন্য
“আচ্ছা বেশ আমি তবে শুধু মায়ার মা হয়েও থাকব”
বলেই তানহা চলে যাচ্ছিল।
সায়ান হাত টেনে ধরে বলল,
“উত্তর না শুনেই চলে যাচ্ছ যে?”
তানহা ফিরে তাকাল একবার হাতের দিকে আরেকবার সায়ানের চোখের দিকে।
সায়ান বলল,
“বেশ সুযোগ দিলাম ভালবাসার, তবে সুযোগ টা কি আমিও পাবো?”
তানহা এক মুহূর্তে সায়ানের বুকে মাথা রাখল।
সায়ান কিছু না বলে চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইল।
তানহা এক অন্য ভাল লাগা তৈরি করে দিয়েছে সায়ানের মনে।
সায়ান দোমনা হয়ে পড়েছে, রিদিমার জায়গা অন্য কাউকে দেবে?…
তারপর মনে হলো,
তানহা তো কোনো দোষ করেনি।
তারপর হঠাৎ তানহাকে প্রশ্ন করে বসল,
“আচ্ছা তানহা তুমি এই কথা গুলো আমাকে আরো পরে বলতে পারতে, তোমার নিজেরও তো মানিয়ে নেওয়ার জন্য একটা সময় দরকার ছিল?”
তানহা সায়ানের বুকে মাথা রেখেই বলল,
“আমি আমাদের এই সুন্দর সম্পর্কটার একটা মুহূর্তও নষ্ট করতে চাইনা।
আমি নওশিকে চিনি, শুনেছি তোমায় নিয়ে অনেক, আমি নিজেও বিবাহিতা ছিলাম, সত্যিকারের ভালবাসা চিনি
তাই তোমার মত মানুষকে আমি কষ্ট দিতে চাইনি, এতে আমার ভুল হতে পারে,
কারোর মনে হতে পারে আমি বাড়াবাড়ি করছি,
কিন্তু আমার নিজের তা মনে হয় না।
আমি শুধু ভালবাসতে চেয়েছি।”
তানহার কথা শুনে সায়ান শুধু অবাক হচ্ছেই।
চুপচাপ রইল।
তাদের এই চুপচাপ থাকা হয়তো হাজারো না বলা কথা বলে দিচ্ছে।
ভালবাসা না পাওয়া মানুষ দুটো আজ নতুন করে ভালবাসতে চাইছে।
এর থেকে ভাললাগার বিষয় আর কি হতে পারে।
হোক না শুরু আরেকটা ভালবাসার পথচলা! সায়ান তানহা!
.
বেশ কিছুদিন কেটে গেছে সবকিছুই গুছিয়ে নিয়েছে তানহা।
ঠিক বিপরীতে রিদিমা ভাল নেই।
রিদিমার কিছুই ভাল লাগছে না।
তার জীবনের সমীকরণগুলো সে মেলাতে পারছে না কিছুতেই।
সে যা চেয়েছিল তাই পেয়েছে।
কিন্তু সে তো চেয়েছিল তার লক্ষ্যে পৌঁছে বাকি সব পাবে।
কিন্তু সত্যিকারের ভালবাসা আর মানুষকে অধিকার থেকে বঞ্চিত করে মানসিক প্রশান্তি কখনো আসে না- এই ভাবনা টা রিদিমার মাথায় কখনো আসেনি।
রিদিমা আজ মায়ার স্কুলে যাবে।
নিজের মেয়ে সম্পর্কে খোঁজ নিতে গিয়ে অবাক রিদিমা।
স্কুলে টপ স্টুডেন্ট মেয়েটা। এভারেজ নাম্বারেও।
স্কুলে গিয়ে পরিচয় না দিয়ে মায়ার সম্পর্কে জানার উপায় ছিল না।
তাই অনেক বিতর্কের পর রিদিমা যখন বলল,
“আমি মায়ার মা”
সবাই তখন অবাক চোখে তাকিয়েছিল রিদিমার দিকে।
রিদিমার মুখ নীলবর্ণ হয়ে গিয়েছিল, যেন রক্ত শূন্য!
রিদিমা বুঝতে পেরেছিল মায়ার ব্যাপারে সবাই জানে।
ঠিক সেই মূহুর্তে রিদিমা মনে মনে একটা কথাই বলেছিল,
“ধরণী তুমি দ্বিখন্ডিত হও, আমি তোমার মাঝে নিজেকে লুকাবো”
তবুও মাতৃত্ববোধ যে বড় আলাদা!
তাই হাজার অপমান সয়ে রিদিমা এখন মায়ার স্কুলের সামনে।
“মিস প্লিজ একটা ঘন্টার জন্য মায়াকে দিন আমার কাছে। আপনার স্কুলের কোনো রুমে বসে কথা বলব!”
“অসম্ভব” মিস জানেন তিনি কথা বলছেন স্বনামধন্য ব্যবসায়ী মাঝে একজনের সাথে কিন্তু তবুও তিনি কঠোর না হয়ে পারলেন না। আবারো বললেন,
“মায়ার দিকে সবসময়ই নজর রাখা হয়, আলাদা ভাবে টেক কেয়ার করা হয়,
কারণ মায়া প্রচন্ড মেধাবী মেয়ে আর দ্বিতীয়ত ওর বাবার একান্ত অনুরোধ।
তাই তাকে না জানিয়ে আমি মায়ার সাথে কথা বলার অনুমতি দিতে পারি না।”
“প্লিজ মিস, আপনিও তো মা”
“হুম কিন্তু আমার কখনো নিজের সন্তানের সাথে কথা বলার জন্য অনুমতি প্রয়োজন হয়নি, অপরাধবোধ ও জাগেনি” শক্ত মুখে জবাব দিলেন মিস।
থতমত খেল রিদিমা।
এই কথার বিপরীতে সে কি বলবে!
কিন্তু এতটা অপমানিত যখন হয়েছেই মায়াকে না দেখে কিছুতেই যাবে না সে। কোনোভাবেই না।
“মিস প্লিজ! একবার! ওর বাবা জানলে দেখা করতে দেবে না আমায়”
“সরি!”
“দেখুন আমি পাপ করলেও তো আমি মা, নয়টা মাস ওকে গর্ভে তো রেখেছি, অন্তত সেখান থেকে একটা অনুরোধ করছি, প্লিজ!” করুন মুখে বলল রিদিমা।
এ পর্যায়ে আর কোনো কথা বললেন না মিস।
তিনি নিজেও একজন মা। হয়তো অনেক কিছু বলতে পারতেন কিন্তু বললেন না।
“ওকে আপনি যখন বলছেন আমি সর্বোচ্চ ৩০ মিনিট দিতে পারি।”
খুশিতে চোখ দুটো চকচক করে উঠে রিদিমার।
“ওকে মিস, থ্যাংক ইউ, থ্যাংক ইউ সো মাচ!”
“হুম” গম্ভীরমুখে জবাব দিলেন তিনি।
পিয়নকে দিয়ে ডেকে পাঠালেন মায়াকে।
“রাফসানা…?”
“জ্বি মিস, আমাকে ডেকেছেন?”
“তোমার সাথে একজন দেখা করতে এসেছেন, ওয়েটিং রুমে আছেন।
তুমি ৫ নাম্বার রুমে যাও, আমি তাকে পাঠিয়ে দিচ্ছি”
“কিন্তু কে মিস?”
“তুমি যাও”
মায়া আর কোনো কথা না বাড়িয়ে ৫ নাম্বার রুমের গিয়ে বসল।
মিনিটখানেক পর ও যখন কেউ আসলো না, মায়া উঠে জানালার ধারে গিয়ে দাঁড়ালো।
মিস না বললে সে এখান থেকে যেতেও পারছে না।
আচ্ছা কে দেখা করতে এলো?
আজ তো কারোর আসার কথা নয়।
এমন এলোমেলো প্রশ্ন ঘুরছে মায়ার মনে
আর তখনই…
“মায়া মামনি…!”
চমকে তাকাল মায়া।
এ যেই চোখ সেই মুখ! কে ইনি? তার কি কিছু হন ইনি?
রিদিমা একপ্রকার দৌড়ে এসে জড়িয়ে ধরল মায়াকে।
“আমার সোনা মেয়েটা” বলে কাঁদতে লাগল।
এটা মা? তার মা? আর নিজের মা?
এতদিন যে তার খোঁজ ও নেয়নি সেই মা?
রিদিমা এবার মায়ার হাত দুটো জড়িয়ে ধরে বলল,
“ক্ষমা করে দে আমায়! আমি তোর মা নামের কলঙ্ক”
এতক্ষণ পর্যন্ত মায়া কোনো কথা বলেনি।
বুঝতে পারছে না কি করবে!
“আপনি এখানে?”
“আমাকে আপনি করে বলিস না মা, আমি সহ্য করতে পারছি না”
“হুম” মায়া কিছু বলেও বলতে পারছে না।
কিছু বলতে ইচ্ছে করছে কিন্তু কথা যোগাচ্ছে না।
অস্বস্তি হচ্ছে খুব।
রিদিমা ধীরে ধীরে সব বলল মায়াকে।
নিজের ভুল গুলো
মায়ার ভাল লাগছিল না এসব শুনতে।
কিন্তু কি বলবে বুঝতে পারছে না।
বাবার প্রতি শ্রদ্ধা বেড়ে গিয়েছিল অনেক বেশি।
বয়স হিসেবে খুব বোঝে মায়া।
নিজের মায়ের সাথে প্রথম দেখাটা কেমন সাদামাটা হয়ে গেল,
আচ্ছা মা কেন দেখা করল?
এসব এলোমেলো ভাবনা আসছে তার মনে।
“কি মা কি ভাবছিস?”
“কিছু না”
রিদিমা কথা বলতেই ব্যস্ত।
খুব ইচ্ছে করছে মেয়ের মুখে একবার মা ডাক শুনতে কিন্তু….!
এভাবেই কিছুসময় পর একজন মহিলা এসে বলল,
“রাফসানা ম্যাম তোমাকে ক্লাসে যেতে বলেছে।”
“আপু দুটো মিনিট”
“সরি”
“রাফসানা চলো”
রিদিমা তাড়াতাড়ি মেয়ের দিকে তাকিয়ে বলল,
“মা তোর মিসের কাছে একটা গিফট রাখা আছে নিয়ে যাস!”
মায়া চলে গেল।
রিদিমা সেখানেই বসে পড়ে কান্না করতে লাগল।
….
(চলবে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here