#বেস্টু
#পর্ব_১৪
#Ariyana_Nur
সবাই মিলে এক সাথে সাদে বসে আছি।সবাই ভাবছি কি খেলতে পারি।একটু আগে আমরা তিনজন মিলে কেক কেটে সবাই সবাইকে খাইয়ে দিয়েছি।আহাদকে তো আমি আর তাহিয়া কেক দিয়ে ভূত বানিয়েছি।তারপর সবাই একসাথে সাদে খেলতে বসেছি।সাদটা আজকে ওরা অনেক সুন্দর করে সাজিয়েছে।আর তার সাথে মাথার উপরে চাদ মামা থাকার কারনে আরো বেশি সুন্দর লাগছে।আমরা বসে বসে ভাবছি কি খেলতে পারি।আমাদের ভাবার মধ্যে আহাদ বলল…
—চল গানের কলি খেলি।
তাহিয়া হাসতে হাসতে বলল…
—তুই খেলবি গানের কলি।আরে তুই যদি গান ধরিস তাহলে কেউ এখানে বসে থাকতে পারবে।
আহাদ রাগি শুরে বলল….
—আসছে আমারে কইতে।হুহ… তোর গানের গলা মনে হয় কত ভালো।তোর গান শুনলে তো কুত্তা পানিতে লাফ দিব।
শুরু হয়ে গেল ওদের মধ্যে যুদ্ধ।আমরা সবাই মাথায় হাত দিয়ে বসে রইলাম।
পরিস্থিতি সামলাতে আমি চিৎকার দিয়ে বললাম….
—চুউউ…পপপ…..
আর একটা কথা বললে তোদের দুইটারে সাদ থেকে ফেলে দিব।
আমার চিৎকারে ওরা চুপ করে রইল।
নিহাদ ভাইয়া আমার মাথায় গাট্টা মেরে বলল…
—ঐ এত জোরে কেউ চিৎকার দেয়।আমার কান মনে হয় গেছে আজ।
আমি তার দিকে তাকিয়ে একটা ভেংচি কাটলাম।আমি ভাবিকে বললাম…
—ভাবি তুমিই বল কি খেলবো।তুমি যেটা বলবে সেটাই ফাইনাল।কেউ আর কোন কথা বলবে না।
ভাবি কিছুক্ষন ভেবে বলল…
—চল আমরা ট্রুট অফ ডেয়ার খেলি।
আমরা ভাবির কথায় রাজি হয়ে গেলাম। কিন্তু সমস্যা হল এক জায়গায়। মি.টারহাম বলল…
—তোমরা সবাই খেল আমি খেলবো না।
সুমু শুর টেনে বলল…
—এমা…সেকি কথা জিজা….জি…..
আপনি খেলবেন না কেন???আপনি কি ভয় পাচ্ছেন???ভাবছেন যদি আপনার কোন পোল খুলে যায়।
সুমুর কথা শুনে উনি সুমুর দিকে রাগি চোখে তাকিয়ে রইলেন।
আমি সুমুকে বললাম…
—আরে রাখ তো।না খেললে নাই।পারলে তো খেলবে।তার খেলার দরকার নাই চল আমরা খেলা শুরু করি।
তিনি আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলল…
—তোমার আমার সাথে খেলতে মন চাচ্ছে আগে বললেই হত।এতো কান্না কাটি করার কি আছে।নিহাদ খেলা শুরু কর।আমি খেলবো।
তার কথা শুনে আমি হা করে রইলাম।কিসের থেকে কি বনিয়ে ফাললো।
____________________________
আমারা খেলছি আর হইচই করছি।
একে একে ভাইয়া, ভাবির পালা শেষ হল।ভাইয়া মাথা ব্যথার বাহানা দিয়ে নিচে চলে গেল।যাতে আমাদের খেলায় কোন ডিস্টাব না হয়।এবার পরল তাহিয়ার।তাহিয়াকে নিহাদ ভাইয়া জিগ্গেস করল ট্রুট না ডেয়ার।আমি ফট করে বললাম…
—ওর ডেয়ারি নিতে হবে।কেননা ওর সব কথাই আমরা জানি।
কি আর করার ও ডেয়ার নিল।আমি বললাম…
—আমি বলব তুই কি করবি।আমি একটু ভেবে বললাম…
—তুই আমাদের জিজুকে প্রপোজ করবি।
আমার কথা শুনে ও হা করে তাকিয়ে রইলাম।আমি ওকে হালকা ধাক্কা দিয়ে ফিসফিস করে বললাম…
—হা করে থেকে লাভ নাই।এই রহস্যের গন্ধ আমি আরো আগেই পেয়েছি। এই বলে ওকে এক চোখ মারলাম।
ও এখনো আমার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে।নিহাদ ভাইয়া কাপা কাপা গলায় বলল…
—তুই বুড়ি কি বলছিস???তোর জিজু মানে…
আমি আবার ওর কানের সামনে ফিসফিস করে বললাম…
—জানু আর ভেবোনা।একটু পর আমার ভাইয়া হার্ট ফেল করবে।দেখিয়ে দেও তোমার গুন্ডি রুপ।
তাহিয়া এবার আমার দিকে করুন চোখে তাকালো।আমি ওকে চোখ দিয়ে ইশারা করে ভরসা দিলাম।ও আশে পাশে তাকিয়ে গাছের একটা ডাল ভেংগে এনে নিহাদ ভাইয়ার সামনে হাটু গেড়ে বসে বলল…
—আমি জানিনা কিভাবে কাউকে প্রপোজ করতে হয়।আমি কখনো তোমাকে বলবনা তুমি আমার জন্য নিজেকে পালটিয়ে ফেলো।আমি কখনো তোমার স্বাধীনতায় বাধা দিব না।তুমি যেভাবে আমাকে রাখবে আমি সেভাবেই থাকবো তোমার সাথে।শুধু সারাজীবন আমাকে তোমার পাশে রাখবে।
আমরা ওর কথা শুনে সবাই হাত তালি দিলাম।আর ভাইয়া কিছুক্ষন ওর দিকে হা করে তাকিয়ে রইল।যেই না ভাইয়া ওর হাত থেকে ডালটা নিতে যাবে তখনি ও আবার বলতে লাগলো….
—কি ভাবছো আমি এগুলো বলবো।জ্বি…না….হুহ….
আমি তোমাকে বকবো,মারবো,কাটবো যাই করবো তারপরেও তোমার আমার কাছেই থাকতে হবে।আমার জ্বালা সহ্য করতে হবে।আমার সব বায়না পুরন করতে হবে।যদি কোন কিছু আমার মন মত না হয় তাহলে আমি তোমাকে কান ধরে উঠবস করাতে পারি আবার মুরগিও বানাতে পারি আমার ইচ্ছা।আর যদি আমি বাদে কোন মেয়ের পিছে ঘুরঘুর করতে দেখি তাহলে তোমাকে এই ডাল দিয়ে পিটিয়ে তোমার মাথার ভূত নামাবো।আর একটা কথা আমাকে ফিরিয়ে দিলে তোমার ঘার মটকাবো।এবার বল বিয়ে করবে আমায়???তোমাকে জ্বালালোর অধিকার দিবে আমায়???
নিহাদ ভাইয়া ওর দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে মুচকি হেসে ওর হাত থেকে ডাল নিয়ে বলল…
—হুম…
আর সাথে সাথে আমরা চিৎকার দিয়ে হাত তালি দিতে লাগলাম।আমি তাহিয়াকে জরিয়ে ধরে বললাম…
—ক্রংগ্রেচুলেশন মাই হবু ভাবি…
বাই দা রাস্তা তুই ভাইয়াকে প্রপোজ করছিলি নাকি থ্রেড দিচ্ছিলি।হুম…..
#বেস্টু
#পর্ব_১৫
#Ariyana_Nur
শিকদার বাড়িতে চোরের মত দরজা খুলে প্রবেশ করল তিনজন।সিড়ি দিয়ে উপরে যেতে নিলেই পিছন থেকে মিসেস শিকদার কঠোর গলায় বলল….
—দাড়াও….
কটা বাজে???এটা একটা ভদ্র লোকের বাড়ি।এ বাড়িতে এতো রাতে কোন সাহসে তোমরা ঢুকেছ???
তার কথা শুনে সবাই দাড়িয়ে রইল।ভয়ে কারো মুখ দিয়ে কোন কথা বের হচ্ছে না।
সুমু ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাদতে কাদতে বলল….
—মা..মুনি আ..মি তো তোমাকে বলেছি যে আসতে অনেক রাত হবে।
মামুনি সেই কঠোর গলায় বলল….
—তা না হয় তুমি বলেছ।বাকিরা…বাকিরা তো কিছু বলে নি।আর এই যে মাই ডিয়ার বাদর ছেলে…
তোমার তো আজ অফিসে একটা জরুরি মিটিং আছে যেখানে না গেলে তোমার অনেক বড় কিছু মিস হয়ে যাবে।তা মিটিং হয়েছে….
—মাম্মা…তুমি জেনে শুনে আমার নিয়ে লেগপুল করছ এটা কিন্তু ঠিক না।
মামুনি মুচকি হেসে তার কান মুলে বলল….
—আসছে আমারে ঠিক বেঠিক শিখাতে।তা মিঃ আরহাম শিকদার কবের থেকে মিথ্যা বলা শিখল শুনি।হুম…
আরহাম কন ধরে বলল…
—আহ্ মাম্মা লাগছে আমার।আর আমি কোন মিথ্যে বলি নি।আমার সত্যিই মিটিং ছিল।মিটিং শেষ করেই ওখানে গিয়েছি।
সুমু এবার ভ্যা ভ্যা করে কাদতে লাগল।আরহাম ওকে একটা ধমক দিয়ে বলল…
—ঐ কি হয়েছে তোর???ছাগলের মত ভ্যা ভ্যা করছিস কেন???
সুমু নেকা কান্না করতে করতে বলল…
—মামুনি তোমার এই পাজি ছেলেকে কিছু বল।আমাকে গাড়িতে এত্তগুলা বকা দিয়েছে।
আহাদ ওকে ব্যঙ্গ করে বলল…
—আমাকে এত্তগুলা বকা দিছে।হুহ..বকা খাওনের কাজ করছে আবার বেশি কথা।
সুমু ভেংচি কেটে বলল…
—মামুনি দেখলে আমাকে তোমার সামনে কথা শুনাচ্ছে।তাও আবার এই পাজিটার জন্য।
আহাদ তেড়ে গিয়ে বলল…
—এই তুমি পাজি কাকে বলছ।তুমি পাজি…
মামুনি ধমক দিয়ে বলল….
—চুপ…আর একটা কথাও না।তোমাদের পাপা আজ বাড়িতে।তাই আর কোন কথা বলবে না। অনেক রাত হয়েছে যে যার রুমে গিয়ে ঘুমাও।
সুমু গাল ফুলিয়ে বলল….
—আমাকে যে বকা দিল তুমি কিছু বলবে না।
মামুনি মুচকি হেসে বলল…
—ওর ভাইকে কিছু বললে তো আমাকেই ছাড়ে না।আমি আর কি বলল।
মামুনি সুমুর দিকে তাকিয়ে দেখে ও গাল ফুলিয়ে দাড়িয়ে আছে।তাই তিনি বললেন…
—ওদের কিছু বলবোনা কাল পিটুনি দিব।এবার খুশি…
সুমু খুশি হয়ে মামুনিকে জরিয়ে ধরে বলল…
—মামুনি তুমি অনেননককক ভালো।
মামুনি ওকে আদর দিয়ে বললেন…
—পাগলি…এবার ঘুমাতে যাও।
—ওকে…
আরহাম রুমে ঢুকে দরজা লাগাতে নিলেই আহাদ বলল…
—ভাইয়া….
আরহাম দরজা থেকে সরে এসে বলল….
—ভিতরে আয়।
আহাদ ভিতরে ঢুকে কাচুমাচু করে দাড়িয়ে রইল।
আরহাম ওর দিকে তাকিয়ে বলল….
—কিছু বলবি???
ও এখনো চুপ করে দাড়িয়ে আছে।মুখ দিয়ে কোন কথা বের হচ্ছে না।আরহাম ওর অবস্থা বুঝতে পেরে ওর কাধে হাত রেখে বলল….
—তোকে কিছু বলতে হবে না।আমার পুরো বিশ্বাস আছে তোর উপর।আর আমি জানি তুই আমার বিশ্বাস কখনো নস্ট করবি না।
আহাদ কিছু না বলে আরহামকে জরিয়ে ধরল।কেননা ও আরহামকে যা বলতে এসেছে আরহাম ওর মুখ দেখেই বুঝে নিয়েছে।
আহাদ প্রতিনিয়ত দোয়া করে আল্লাহ্ এর কাছে ওকে এতো সুন্দর একটা পরিবারের সদস্য বানানোর জন্য।
________________________
সময় আর স্রোত মনে হয় পাল্লা দিয়ে বয়ে চলে।কার আগে কে যেতে পারবে।আর একবার চলে গেলে তা আর হাজার চেষ্টা করেও ফিরে পাওয়া যায় না।হাসি খুশিতে আমাদের সবার দিন-কাল ভালই চলছে।নিহাদ ভাইয়া আর তাহিয়ার সম্পর্কের কথা বাড়ির সবাই জানে।আর সবাই ওদের সম্পর্কটা মেনেও নিয়েছে।ফুপি তো যেদিন জেনেছে সেদিন গিয়েই তাহিয়াকে আংটি পরিয়ে দিয়েছে।এখন শুধু ওর ফাইনাল পরিক্ষার পালা।ওর পরিক্ষা শেষ হলেই বড় করে অনুষ্ঠান করে তাহিয়াকে ফুপির বউমা বানাবে।
আমি রাস্তা দিয়ে মনের সুখে হাটছি।আর এটা ওটা চিন্তা করছি।হঠাৎ একজন আমাকে হেচকা টান দিল।আমি তাল সামলাতে না পেরে তার উপরে পরলাম।তিনি এখনো আমার হাতের বাহু ধরে রেখেছে।আমি ঝটপট তার হাত ছাড়িয়ে রেগেমেগে তার দিকে তাকাতেই আমার সব হাওয়া ফুস হয়ে গেল।কেননা আমার সামনে জমরাজ তার রক্ত চক্ষু দিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।আমি ভয়ে কাচুমাচু করতে লাগলাম।তিনি শান্ত গলায় বলল…
—রাস্তায় চলার সময় তোমার ধ্যান কোথায় থাকে???
তার এই শান্ত কথার মধ্যে যে কতখানি রাগ মিশানো আছে তা আমি ভালই বুঝতে পারছি।
আমি ভয়ে ভয়ে বললাম…
—আমি গাড়িটা খেয়াল করিনি।
তিনি সামনের দেয়ালে সজোরে ঘুষি দিয়ে বললেন….
—তাহলে কি খেয়াল করছিলে স্টুপিট।
তার হাত থেকে গরগর করে রক্ত পরছে।আমি কাপা কাপা গলায় বললাম…
—আ..পনার হা..ত থেকে তো রক্ত….
আমাকে আর কিছু বলতে না দিয়ে তিনি ধমকের শুরে বললেন…
—পরুক রক্ত তাতে তোমার কি???তোমার তো আমাকে মানুষ মনে হয় না।
এই বলে তিনি হনহন করে চলে গেল।
আর আমি হা করে তার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলাম।
__________________________
কলিং বেল বাজানোর একটু পর আহাদ দরজা খুলে দিল।সামনে তাকিয়ে দেখে আরহাম হাত ধরে দাড়িয়ে আছে।আহাদ বিচলিত হয়ে বলল…
—ভাই তোমার হাতে কি হয়েছে???এতো রক্ত পরছে কেন???কি করেছ???তুমি কি তোমার মাথাটা একটু ঠাণ্ডা রাখতে পারোনা।
এই বলে আহাদ ওকে সোফায় বসিয়ে দৌড়ে ফাস্টেড বক্স আনতে চলে গেল।
আহাদ আরহামের হাতে বেন্ডেজ করছে আর ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাদছে।
আরহাম মুচকি হেসে ওর মাথায় হাত দিয়ে চুলগুলো এলোমেলো করে দিয়ে বলল…
—আরে আমার বইন আর কান্না করিস না।আমি ঠিক আছি।মাহু ঠিকই বলে তুই একটা হাফ লেডিস।তা না হলে সামান্য একটা বিষয়ে কেউ এভাবে কাদে।আমারই ভুল হয়েছে কেন যে তোকে বলতে গেলাম।
আহাদ কিছু না বলে ভালোভাবে ওর হাতে বেন্ডেজ করে দেয়।তারপর ওকে জরিয়ে ধরে কাদতে কাদতে বলল….
—আই এম সরি ভাই।আমি আমার দায়িত্ব পালন করতে পারিনি।তুমি আমাকে মানহার দেখে শুনে রাখার দায়িত্ব দিয়েছিলে। কিন্তু আমি পালন করতে পারি নি।আমি মানহাকে সব বলে দিব কেন তোমরা ওর মতের বিরুদ্ধে তোমার সাথে ওকে বেধেছ।
আরহাম ওর মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বলল…
—না একদম না।তুই কিচ্ছু বলবিনা ওকে।আর কে বলেছে তুই তোর দায়িত্ব ঠিক ভাবে পালন করছিস না।আমি জানি তুর তোর দায়িত্ব কতটুকু পালন করছিস।ওকে বাচাতে গিয়ে যে দুইবার ব্যথা পেয়েছিস তা তুই না বললেও আমি জানি।সেদিন পিঠে ব্যথা পেয়ে যে দুদিন ধরে ঘর থেকে বের হও না তা কি আমি জানি না।আরেক দিন তো মরতে মরতে বেচেছিস।
আহাদ ওর দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে বলল…
—তুমি কিভাবে জানলে!!!
আরহাম ওর মাথায় গাট্টা মেরে বলল…
—তোর মত গাধার বুঝতে হবেনা।
আরহাম করুন শুরে বলল….
—আমি অনেক খারাপ তাই নারে???নিজের সাথ্যের জন্য তোকে এমন বিপদের মুখে ফেলে দিয়েছি???
—না ভাই।তুমি যা করছো তা তো ওর ভালোর জন্যই করছো।আর তাছাড়া আমি নিজেও চাই ও সেফ থাকুক।সুধু সুধু তুমি নিজেকে দোষারোপ দিচ্ছ।
ওদের কথার মাঝেই আরহামের ফোনটা বেজে উঠল।ও ফোন রিসিভ করে লাউডে দিয়ে দিল। ওপাস থেকেএকজন বলে উঠল…
—আসসালামু আলাইকুম ওহ রমাতুল্লাহ….
বিশিষ্ট শিল্পপতী শিকদার কম্পানির CEO মিস্টার আরহাম শিকদার ভালো আছেন???যাহ…আমিও যে কি বলি না যার প্রানভোমরা মরতে মরতে বেচে গেল সে ভালো থাকবে কিভাবে??এবার তো বাচিয়েছো পরের বার বাচারে কিভাবে।তুমি যে এত ভিতু তা আগে জানতাম না।আমার ভয়ে তুমি হুট করেই তাকে মিসেস শিকদার বানিয়ে ফেললে।তাও আবার কাজ সাজি করে। তোমার প্রানভোমরা যদি জানতে পারে তার বেস্ট ফ্রেন্ড তাকে ধোকা দিয়েছে তখন কি হবে??কখনো ভেবে দেখেছো….
আরহামের লোকটার কথা শুনে রাগে পুরো শরীর কাপছে ওকিছু না বলে ফোনটা কেটে দিল।কেননা এমন লোকদের সাথে কথা বলতেও ওর বিবেকে বাধছে।আরহাম রাগি শুরে বলল….
—আজ যেটা হল আমি তো মনে করেছিলাম এমনি একসিডেন্টলি হয়েছে।এখন দেখছি এখানে ওর হাত আছে।ওকে সেদিন এতো করে ওয়ানিং দেওয়ার পরেও যে আজ এমন একটা কাজ করবে তা আমি ভাবতে পারিনি।ওকে তো আমি….
আহাদ লোকটার কথা শুনে মনে মনে বলতে লাগলো…
—লোকটা তো খারাপ কিছু বলে নি।যদি ও জানতে পারে আমি ওর সাথে এমন করেছি ও আমাকে ভুল বুঝবে।আমাদের এতো দিনের বন্ধুত্ব সর্ব নস্ট হয়ে যাবে।
আরহামের ডাকে ও ভাবনার থেকে ফিরে আসল।আরহান ওকে অন্য মনস্ক দেখে জিগ্যেস করল….
—কি ভাবছিস???
আহাদ মনমরা হয়ে বলল….
—আমি মানহার বিশ্বাস ভেঙ্গেছি ভাই।ওকে ধোকা দিয়েছি।ওকি আমাকে কখনো ক্ষমা করবে???
—বিশ্বাস ঘাতক আর ধোকাবাজদের আমি কখন ক্ষমা করি না।
আমার কথা শুনে তারা দুজন পিছনে তাকিয়ে দেখে আমি দরজায় দাড়িয়ে আছি।
আহাদ আমাকে দেখে কাপা কাপা গলায় বলল….
—মা..নহা তু..ইইই….
আমি কোন কিছু না বলে ওর সামনে গিয়ে ওর গালে কষে একটা থাপ্পর দিলাম।
#চলবে
(