বেস্টু পর্ব ১২+১৩

#বেস্টু
#পর্ব_১২
#Ariyana_Nur

রাস্তা দিয়ে পাগলের মত দৌড়াচ্ছি।আশে পাশে সবাই আমার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে।সেদিকে আমার কোন ভুক্ষেপ নাই।আমার একটাই চিন্তা কতক্ষনে আমি আমার গন্তব্যে পৌচ্ছাব।

তখন তাহিয়ার নাম্বার থেকে ফোন দিয়ে আহাদ জানিয়েছে,তাহিয়া নাকি সুইসাইড করেছে।এটা শুনার পর আমার হাত থেকে মোবাইল পরে গিয়েছে।তারপর কাপা কাপা হাতে ফোন উঠিয়ে ওকে আবার ফোন দিয়ে জানতে পারি ও বাসাই আছে।

এটা শুনার পর আমি দৌড়ে বাসা থেকে বের হয়ে যাই।আমার মাথায় শুধু একটা কথাই ঘুরপাক খাচ্ছে ও ঠিক আছে তো।

____________________________

তাহিয়াদের বাসা আমাদের বাসার সামনেই।১০মিনিটের মধ‍্যে ওদের বাসায় পৌচ্ছে গেলাম।আসার পর কলিং বেল বাজানোর পর তাহিয়া দরজা খুলে বলে সারপ্রাইজ…..

আমার কানে কোন কথাই ঢুকছেনা আমি ওকে জরিয়ে ধরে বললাম….

—জানু তুই ঠিক আছিস???তোর কিছু হয় নি তো??কেন সুইসাইড করেছিলি??কোন সমস‍্যা হলে আমাকে বলতি আমি সমাধান করে দিতাম।

আমি ওকে জরিয়ে ধরেই পাগলের মত এটা ওটা বলতেই আছি আর কান্না করছি।আমি যে কি বলছি তা আমি নিজেও জানি না।

আসলে আমাদের কাছের মানুষের কোন বিপদ হয়েছে শুনলে আমরা আমাদের হিতাহিত বিবেক বুদ্ধি হারিয়ে ফেলি।

তাহিয়া আমাকে ওর থেকে ছাড়িয়ে জোরে ধমক দিয়ে বলল….

—চুপ…

আর একটা কথা বললে লাগাবো একটা।ভালোভাবে চেয়ে দেখ আমি ঠিক আছি।

এতক্ষনে আমার হুস হল।ও যদি সুইসাইড করে তাহলে ও আমার সামনে কেন??আমি কাপা কাপা গলায় বললাম…
—তুই ঠিক আছিস!!তখন যে আহাদ বলল…..

আমি অবাক হয়ে ওর দিকে তাকিয়ে আছি ওর উওর শুনার জন‍্য।ও কাচুমাচু করে বলল…

—আসলে আজ আমাদের সাথে আহাদের বন্ধুত্তের ৫বছর পূর্ণ হল।তাই আহাদ তকে সারপ্রাইজ দেওয়ার জন‍্য ঐ কথা বলে এখানে এনেছে।তুই যে….

ও আর কিছু বলার আগেই ওর গালে একটা থাপ্পড় মারলাম।ও চুপ করে দাড়িয়ে আছে।আহাদ আমার সামনে এসে বলল…

—বেবি তুই….

ওকে আর কিছু বলতে না দিয়ে চিৎকার করে বললাম…
—চুপ…

কেউ আর একটাও কথা বলবিনা।কি মনে করিস তোরা আমাকে হ‍্যা…কি মনে করিস???
তোদের কোন ধারনা আছে ঐ কথাটা শুনার পর আমার অবস্থা কেমন হয়েছিল???যদি তোদের বিন্দু মাএ ধারনা থাকতো…

তাহিয়া আমার সামনে এসে বলল…
—বেবি তুই এতো হাইপার হচ্ছিস কেন???আরে আমরা তো মজা করছিলাম???

এই বলে আমার হাত ধরতে গেলে আমি সরে গেলাম।তারপর আবার চিৎকার করে বললাম…

—ছুবিনা আমায়।তুই আমাকে জিগ্গেস করছিস আমি কেন হাইপার হচ্ছি।হাহ্…তোদের তো আমাকে মানুষ মনে হয় না।আমি সবসময় তোকে বোনের চোখে দেখিছি।তুই আমার বেস্টু সাথে বোনও।আর সেই তুই আমার সাথে এমন করতে পারলি।তোর সুইসাইড এর কথা শুনে…

আমি একটু থেমে আবার বললাম….
—কি দেখতে চেয়েছিলি???বল কি দেখতে চেয়েছিলি???
তোর মরার খবর শুনে আমি নাচতে নাচতে আসবো তোদের বাড়িতে।তারপরে মেলোড্রামা করে একটু কাদবো।এটাইতো মনে করেছিলি না তোরা।তোদের যদি একবার আমার জায়গায় দাড় করাতে পারতাম তখন বুঝতি আমার তখন কেমন লেগেছিল।আমা….

আমি আর কিছু বলতে পারলাম না।আমার হাত পা কাপছে।মাথা ঘুরছে।আমি নিজের বেলেন্স আর রাখতে পারলাম না।মাথা ঘুরে পরে গেলাম।

জ্ঞান ফেরার পর নিজেকে বিছানায় পাই।এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখি ভাইয়া, নিহাদ ভাইয়া,ভাবি বসে আছে।আমাকে উঠে বসতে দেখে ভাবি আমার সামনে এসে আমার মাথায় হাত বুলিয়ে বলল…
—এখন কেমন লাগছে তোমার???

আমি আস্তে করে বললাম…
—ভালো।

ভাইয়া ভাবিকে বলল…
—নিধু যাও ওর জন‍্য কিছু খাবার নিয়ে আস।

ভাবি চলে যেতে নিলেই আমি বললাম….
—আমি খাব না।

আমার কথা শুনে ভাবি থেমে গেলেন।ভাইয়ার দিকে অসহায় ফেস করে তাকালেন।ভাইয়া চোখ দিয়ে ইশারা করে খাবার আনতে যেতে বলল।

_________________________

একটু আগে ভাইয়া আমায় জোর করে খাবার খাইয়ে দিয়েছে।খাবার খেয়ে একটু রেস্ট নিয়ে আমি ভাইয়াকে বললাম….
—ভাইয়া বাসায় যাবো।

ভাইয়া একটা লম্বা নিশ্বাস নিয়ে আমাকে বলল…
—তুই তো অবুঝ না বুড়ি মাফ করে দেনা ওদের।কতক্ষন ধরেই তো তোকে বলতেছি।

ভাবি আমার পাশে বসতে বসতে বলল…
—একদম মাফ করবেনা।এসব নিয়ে কেউ মজা করে।

ভাইয়া ভাবির দিকে তাকিয়ে বলল…
—তোমার আবার কি হল???কেন তুমি আবার আগুনে ঘৃ ঢালছো??

ভাবি রেগে বলল….
—কি…অমি আগুনে ঘৃ ঢালছি।ওরা যা করেছে তা তো খুব ভালো করেছে।

ভাইয়া ভাবিকে ইশারা করে চুপ থাকতে বলল।যা আমার চোখ থেকে এড়ালো না।একটু পর ভাইয়া আর ভাবি রুম থেকে বের হয়ে গেল।

তারা বের হওয়ার পর আমি বেড থেকে নামতে নিলেই নিহাদ ভাইয়া বলল…
—খবরদার বেড থেকে নামবিনা।যদি বেড থেকে নামিস তাহলে তোর জামাইর একদিন আর আমার যে কয়দিন লাগে।

আমি ওর কথা না শুনে বেড থেকে নেমে দরজার দিকে যেতে নিয়ে আবার মাথা ঘুরে পরে যেতে নিলেই একজন ধরে ফেলে।আমি ভাইয়া মনে করে কথা না বলেই হাত সরাতে নিলেই খেলাম এক রাম ধমক।তিনি বললেন…
—একদম সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে থাক স্টুপিট।সব সময় শুধু ঘাস ফড়িং এর মত ফরফর করে।

আমার আর বুঝতে সমস‍্যা হল না কে এটা।আমি সোজা হয়ে দাড়িয়ে নিহাদ ভাইয়ার দিকে রাগি চোখে তাকাতেই ভাইয়া একটা মুচকি হাসি দিয়ে বলল…

—বাহ্ কেয়া সিন হায়।আগে ফ্লিলমে দেখতাম হিরোইন পরে যাওয়ার আগে হিরো এসে ধরে ফেলে এখন তো বাস্তবে দেখতে পারছি।

উনি ভাইয়ার দিকে রাগি চোখে তাকিয়ে বলল…
—তোর জোকস শেষ হয়েছে এবার যা ভাগ এখান থেকে।

—ঐ শালা আমাকে তাড়িয়ে দিচ্ছিস কেন।তুই আবার আমার বো….

উনি ভাইয়ার দিকে রাগি লুকে তাকাতেই ভাইয়া থেমে গিয়ে একটা শুকনো ঢোক বলল…
—যাচ্ছি তো ভয় দেখাস কেন।বাচ্চা কা জান লেগা কেয়া।

উনি বিরবির করে বললেন…
—ড্রামাবাজ।যেমন ভাই তেমন বোন।

আমি শুনেও না শুনার ভান করে দাড়িয়ে রইলাম।আসলে এখন আমার কোন কথা বলার বিন্দু মাএ ইচ্ছা নাই।আর তার সাথে তো আমার কথার থেকে ঝগড়া বেশি হয়।

উনি আমাকে বেডে বসিয়ে দিয়ে আমার পাশে বসলেন।আমি তো ভিতরে ভিতরে দোয়া দুরুদ পরছি।তার যেই রাগ।কখন নাকি আমাকে উওম মধ‍্যম ধোলাই দেয়।তিনি আমাকে অবাক করে দিয়ে নরম সুরে বললেন…

—দেখ…ওরা যা করেছে আমি মানছি ওরা ভুল করেছে।ওরা তোমাকে সারপ্রাইজ দিতে গিয়ে আবেগের বসে এমন ভুল একটা কাজ করে ফেলেছে।অনেক সময় আমরা কাছের লোকদের মুখে হাসি ফুটাতে গিয়ে আমরা ভুল করে তাদের মনে আরো কষ্ট দিয়ে ফেলি।আমরা মনে করি তারা খুশি হবে।কিন্তু না…তাতে তারা আরো বেশি কষ্ট পায়।

ওরা পায় এক সপ্তাহ ধরে কিভাবে কি করবে তার প্লান করছে।তোমার পছন্দ মত সবকিছু ওরা সাজিয়েছে।এই সব কিছু করেছে তোমাকে খুশি করার জন‍্য।তুমি ওদের যতোটা ভালোবাসো আমার মনে হয় ওরাও তোমায় ততটা ভালোবাসে।আজ কাল সবাই মুখে মুখেই ফ্রেন্ড হয়।তোমাদের মত ফ্রেন্ডসিপ খুব কম দেখা যায়।তুমি জানো তুমি অজ্ঞান হওয়ার পর তাহিয়া কি পাগলামিটা করেছে।হাত কেটেছে ।ভাগ‍্য ভালো নিহাদ দেখে ফেলার কারনে বেশি কাটে নি।ওরা তো তোমার প্রিয়জন তুমি ওদের মাফ করে দাও।

আমি চোখ মুছে তার দিকে ছলছল চোখে তাকিয়ে বললাম….

—আমি যদি আপনার সাথে এমন মজা করতাম তখন আপনি কি করতেন???

তিনি অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে রইল।
#বেস্টু
#পর্ব_১৩
#Ariyana_Nur

“বন্ধু” এই ছোট্ট একটা শব্দের গভীরতা যে কত বড় তা কি কখনো মাপা যাবে???

“বন্ধু” এই ছোট একটা শব্দের মধ্যে রয়েছে আস্তা,ভরসা আর এক রাস বিশ্বাস।আমাদের বন্ধুত্বের সম্পর্ক যখন ধীরে ধীরে গভীর হয়ে যায় তখন আমরা তার আরেকটা নাম দেই বেস্ট ফ্রেন্ড,বেস্টু।আমাদের বন্ধুতো অনেক থাকে কিন্তু সবাই তো আর আমাদের বেস্ট ফ্রেন্ড হয় না।

আমরা অনেক সময় আমাদের মনের কথা ফেমিলির কারো কাছে বলতে পারিনা।হয়তো পরিস্থিতির কারনে অথবা জড়তার জন‍্য।কিন্তু আমাদের না বলা সেই কথাগুলো আমরা আমাদের বেস্ট ফ্রেন্ড দের কাছে বলি।তাদের কাছে আমরা আমাদের সুখ,দুঃখ,ভালো লাগা,খারাপ লাগা সব কথাই সেয়ার করি।কখনো কখনো মনের বোঝ হালকা করার জন‍্য অথবা কখনো কখনো কোন সলিউশন পাওয়ার জন‍্য।

আমাদের সবাইর কম বেশি বন্ধু তো অনেক আছে।কিন্তু কয়জনের বন্ধুত্ব বাধ‍র্ক‍্য বয়স পযর্ন্ত থাকে??কয় জনের বন্ধু একে অপরের বিপদের সময় তার পাশে থাকে???

বন্ধুত্ব তো এমন হতে হবে যে সুখে,দুখে,বিপদে,আপদে পাশে থাকবে।একজনের চোখের পানি দেখলে আরেক জনের চোখে পানি এসে পরবে।একজনের সুখে আরেক জনের মুখে হাসি ফুটবে।একজন ভেংগে পরলে আরেকজন আস্তা হয়ে তার পাশে থাকবে। বন্ধুত্ব তো এমন হওয়া চাই যে তার সব উইকনেসে তাকে ভরসা দিবে।হাজার বন্ধু থাকার চেয়ে যদি এমন একজন বন্ধু থাকে তাহলে সেই হবে লাকি ব‍্যাক্তি।

( বন্ধুত্ব নিয়ে অনেক বড় বড় ডায়লগ দিয়ে ফেলেছি।যদি কিছু ভুল বলে থাকি তাহলে ক্ষমা করবেন)

নিচে গিয়ে দেখি সবাই মন খারাপ করে বসে আছে।তাহিয়া আর আহাদ সোফায় এক সাথে বসে আছে।আমি কোন কথা না বলে ওদের মাঝখানে গিয়ে বসলাম।তাহিয়া আমার দিকে ছলছল চোখে তাকিয়ে থেকে আমাকে জরিয়ে ধরে কাদতে লাগল।আহাদের দিকে তাকিয়ে দেখলাম ওর চোখের কোনেও পানি।আহাদ ও আমাদের দিকে একটু তাকিয়ে থেকে এক হাত দিয়ে আমাদের জরিয়ে ধরল। আমরা তিনজনই কান্না করছি।কিছুক্ষন এইভাবে বসে কান্না করার
পর পরিস্থিতি সামলাতে আমি চোখ মুছে কাপা কাপা গলায় বললাম….

—আ.রে.. এমন.. ম.রা.. কান্না করতাছোস কেন থাম এবার।আমি মরি নাই বাইচ্চা আছি।আর এখন যদি এতো কান্না করোস তাহলে বিয়ার সময় কান্না করার জন‍্য চোখের পানি পাবি না। আর তুই কেমন রে সেই কখন থেকে তোদের বাড়িতে খালি মুখে বসাইয়া রাখছোস।কিছুতো খাওয়া কিপটা ছেরি।

তাহিয়া নাক টেনে বলল…
—একটু আগে ভাবি কারে ঠুইসা ঠুইসা খাওয়াইলো।তোর জামাইরে….

আমি বিরবির করে বললাম….
—আরে ঐগুলো তো একজনের ভাষন শোনার সাথে সাথেই হজম হইয়া গেছে।

—কি….

—কিছুনা।যা তো আমার জন‍্য চা বানাইয়া নিয়া আয়।বেশি পেচাল পারিস না।এমনেই তোর কান্না দেইখা আমার মাথা ধইরা গেছে।

—আহারে আসছে আমার বুবুজান।নিজে বানাইয়া খা চা।আমি পারুম না।

—ঐ আমি না তোর বাসার মেহমান।কেমন মানুষ তুই মেহমানরে কস চা বানাইয়া খাইতে।

ও ভেংচি কেটে বলল…
—হুহ….আসছে আমার মেহমান।ঐ যে দরজা ঐ দিকে।যা ফট এখান থেকে।

আমি আহাদের মাথায় গাট্টা মেরে বললাম….
—মুখে কি আঠা লাগাইছোস বদমাইশ।দেখতাছোস না আমারে অপমান করতাসে।কিছু কস না কেন???

ও ওর চোখের পানি মুছে বলল…
—তোর মানসম্মান আছে যে তোরে অপমান করব।

আমি রাগি শুরে বললাম…
—কি বললি তুই।আমার জামাই যদি জানতে পারে তোরা আমারে আপমান করছোস তাহলে তোদের শুলে চড়াইব।

তাহিয়া খোচা দিয়ে বলল…
—তোর জামাই কেরে???হুম….

আমি ওর দিকে রাগি চোখে তাকাতেই ও হেসে বলল…

—এক কাজ কর তুই তোর জামাইরে বল তোর জন‍্য চা বানাইতে।দেখি কত দরদ।আমি পারুম না।

আমি ওর পিঠে একটা তাল ফালিয়ে বললাম…

—কি মনে করস হ‍্যা।আমার জামাইরে যদি কই আমার জন‍্য সাত সমুদ্র তের নদীর পানি দিয়ে চা বানাইয়া দিতে তাহলে তাও দিব।

নিহাদ ভাইয়া শুর টেনে বলল…
—ও..মা..গো.. ট্টুরু.. লাভ..!!!!

সামনে তাকিয়ে দেখি সবাই আমাদের দিকে হা করে তাকিয়ে আছে।আমরা একে অপরের দিকে তাকিয়ে হেসে দিলাম।আমাদের হাসতে দেখে তারা ও হেসে দিলেন।

হাসতে হাসতে সাইডে তাকিয়ে দেখি মি.খচ্চর আমার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে।এখন আমার নিজের মাথা নিজেরি ফাটাইটে মন চাচ্ছে।কেন যে কথা বলার সময় দেখে শুনে কথা বলি না।

কি ভাবছেন🤔????
আমরা কেই কাউকে সরি না বলে কিভাবে আবার আগের মত নরমাল বিহেব করছি???

আসলে আমাদের বন্ধুত্ব টাই এমন।আমরা একে অপকে কখনো সরি বা tnx বলি না।ঐ যে কথায় আছে না…
দোস্তি মে নো সরি নো tnx।আমরাও তেমনটাই করি😁
আমাদের মধ্যে কেউ কোন ভুল করলে সরি বলতে হলে অথবা কাউকে ধন‍্যবাদ দিতে হলে আমরা একে আপরকে জরিয়ে ধরে আমরা তা প্রকাশ করি।

_________________________

আমরা কথা বলছি আর এটা সেটা নিয়ে খুনসুটি করছি।এমন সময় ঝড়ের গতিতে একজন এসে আমাকে জরিয়ে ধরে বলল….

—ভাবি….কেমন আছ তুমি???

আমার আর বুঝতে বাকি রইল না এটা কে হতে পারে।আমি মুচকি হসে বললাম….

—ভালো।তুমি ভালো আছো??আর ভাবি আমি না তুমি হবে আমার।

ও আমাকে ছেড়ে দিয়ে মুচকি হেসে বলল…

—সে যেই হোক আমিতো তোমাকে ভাবিই বলব।দরকার পরলে তোমার বরকে ভাই ডেকে তোমাকে ভাবি বানাবো।

আমি মুচকি হেসে বললাম…
—পাগলি….

আহাদ আমার দিকে রাগি চোখে তাকিয়ে বলল….
—সুমুকে তুই খবর দিয়েছিস না???

আমি মাথা নাড়িয়ে না বললাম।

ও আবার বলল…

—চুপ থাক বান্দর ছেরি।কেন তুই ওরে এই জায়গায় আসতে বলছোস।কেউ ওরে দেখলে কি ভাববে??আর আমার তো ১৪টা বাজাইয়া দিব ভ…

ওকে আর কিছু বলতে না দিয়ে সুমু বলল…

—খবরদার তুমি আমার ভাবিকে বকবে না।একটা বারও তো তুমি আমাকে বললেনা তোমরা আজ পার্টি করছো।আবার বড় বড় কথা।আর আমাকে ভাবি দাওয়াত দেয় নি আমাকে আমার বেয়াইন দাওয়াত দিয়েছে।তোমার মত না যে বিনে দাওয়াতে মুখ উঠিয়ে চলে যাব।হুহ….

আহাদ সুমুর দিকে তাকিয়ে দাতে দাত চেপে বলল…
—করো বেশি করে পকর পকর করো।একটু পর যখন সব হাওয়া ফুস হয়ে যাবে তখন বুঝবে ঠেলা।আর ভুলেও তুমি কাউকে কোন উল্টাপাল্টা কিছু বলবেনা।কেউ কিছু জিগ্গেস করলে বলবে শুধু, তুমি আমার কাজিন।

ওর কথা শুনে সুমু গাল ফুলিয়ে বলল…
—বয়েই গেছে তোমাকে আমার জামাই বলতে।হুহ..

আহাদ রাগি শুরে বলল…
—দেখ আমি কিন্তু মজা করছি না।তু….

তাহিয়া ওকে ধমক দিয়ে বলল….
—ঐ কুত্তা চুপ থাকতো।আর ঘেউ ঘেউ করিস না।সুমু তুমি চল তোমাকে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দেই।

আমরা সুমুকে নিয়ে আরেক রুমে দিকে গেলাম।যেখানে বড়রা বসে আছে।যেতে যেতে তাহিয়া বলল…
—আমাদের বাড়িতে আজ আমরা আমরাই আছি।বাবা,মা আমাদের মধ্যে যাতে কাবাবে হাড্ডি না হয় তাই তারা এক আত্মীয় এর বাসায় বেড়াতে গিয়েছে।

__________________________

সুমুকে একে একে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছি।সুমু মেয়েটা আসলেই অনেক মিশুক।আসতে না আসতেই সবার সাথে কত ফ্রি হয়ে কথা বলছে।একটু পর বেলকেনি থেকে মি.খচ্চর ফোনে কথা বলতে বলতে রুমে আসল।তিনি কথা বলা সেই করতেই তাহিয়া তাকে দেখিয়ে সুমুকে বলল….
—সুমু এই হল আমাদের হোনে ওলে জিজাজি…।আর আমাদের মানহার উ…নি….

সুমু তার দিকে তাকিয়ে সাথে সাথে চোখ নামিয়ে ফেলল।
আর বসে বসে কাচুমাচু করতে লাগলো।
আর তিনিও যে সুমুকে দেখে অবাক হয়েছে তা তার চেহারা দেখেই বুঝা যাচ্ছে।

#চলবে

(ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।আর গল্পটা কেমন হচ্ছে জানাবেন।যদি গল্পটা আপনাদের ভালো না লাগে তাহলে আমি গল্পটা তারাতারি শেষ করে দিব।ধন‍্যবাদ)
#চলবে

(ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।ধন‍্যবাদ)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here