বেস্টু পর্ব ১০+১১

#বেস্টু
#পর্ব_১০
#Ariyana_Nur

সকাল বেলা দরজার খটখট শব্দে ঘুম ভেংগে গেল আহাদের।আহাদ ঘুম জরানো কন্ঠে বলল….

—দরজা খোলা আছে।

আহাদের শব্দ পেয়ে মিসেস শিকদার রুমে প্রবেশ করে বলল…

—কিরে তুই এখন পরে পরে ঘুমাচ্ছিস।নিধিরা যে আমাদের বাসায় আসবে সেই খবর আছে???

আহাদ ঘুম জরানো কন্ঠে বলল….
—মামনি প্লিজ মাএ ৫মিনিট।

—তোর এই ৫মিনিট আর শেষ হবে না।তারাতারি ওঠ।তা না হলে তোর ভাইকে ডাক দিব।

আহাদ তারাতারি করে উঠে বলল…
—কেন সকাল সকাল এই মাসুম ছেলেটাকে ভয় দেখাচ্ছ???
তোমার ঐ বজ্জাত ছেলে এখন যদি আমাকে ঘুমাতে দেখে তাহলে আমার খবর আছে।

—তা এতই যখন আমার ছেলে বজ্জাত তাহলে তাকে কিছু বললে উল্টো রাগ কেন করিস??

—আমার ভাইকে আমি বজ্জাত কেন আরো কিছু বলল কিন্তু কাউকে কিছু বলতে দিব না।হুহ….

মিসেস শিকদার হেসে বলল…
—ড্রামাবাজ এবার তারাতারি ফ্রেস হয়ে নিচে আয়।

—ওকে তুমি যাও আমি আসছি।

এতক্ষন আহাদ যার সাথে কথা বললেন তিনি হলেন মিসেস মুনিয়া শিকদার।আহাদ তার কাছেই থেকে পড়াশুনা করে।কেউ তাদের দেখলে বলবে না যে তারা মা ছেলে নয়।আহাদ তাকে মায়ের মতই সম্মান ও স্রদ্ধা করে।আর তিনিও আহাদ কে নিজের ছেলের চোখে দেখে।
দুনিয়াতে রক্তের সম্পর্ক ছাড়া কিছু কিছু সম্পর্ক আছে যার গাট অনেক মজবুত হয়।আর তাদের কাছে রক্তের সম্পর্কও ফিকে পরে যায়।

__________________________

আমি সেই কখন থেকে শাড়ি হাতে নিয়ে বসে আছি।কিন্তু পরিয়ে দেওয়ার মানুষ পাচ্ছি না।জানুকে কয়েক বার ফোন দিয়েছি প্রতিবারি বলছে ৫মিনিটের মধ্যে আসছি।আল্লাহয় জানে ওর ৫মিনিট কখন শেষ হবে।আমি জোরে চিৎকার দিয়ে বললাম….

—ভা…বি…..
তুমি যদি ২মিনিটের মধ্যে আমার রুমে না আসো তাহলে কিন্তু আমি তোমার সাথে যাব না।

আমার কথার একটু পরেই ভাবি রুমে প্রবেশ করে বলল…
—কি হয়েছে তোমার?? এভাবে ডাকছো কেন???

আমি রাগি শুরে বললাম…
—সেই কখন থেকে শাড়ি নিয়ে বসে আছি কেউ তো আমাকে পরিয়ে দিবে নাকি আমি যাব না।

ভাবি আমার মাথায় গাট্টা মেরে বলল…
—ভাই বোন দোনটা এক।রাগ মনে হয় তাদের নাকের ডগায় থাকে।

আমি আবাক হয়ে বললাম…
—ও…মা…
তুমি এক সপ্তাহে আমাদের চিনে ফেলেছ!!!

তিনি আবার আমার মাথায় গাট্টা মেরে বলল…
—আর ড্রামা করতে হবে না।এবার আস আমি শাড়ি পরিয়ে দেচ্ছি।

___________________

তাহিয়া তাড়াহুরো করে মানহাদের বাড়িতে প্রবেশ করছে আর একা একাই বিরবির করে বলছে…..

—জানু আজ তোর খবর আছে।বেবি সেই কখন বলেছে এসে ওকে শাড়ি পরিয়ে দিতে আর তুই এখন এলি।তোর কপালে আজ শনি,রবি সব আছে।

তাহিয়া তাড়াহুড়ো করে উপরে যেতে নিয়ে একজনের সাথে ধাক্কা খেল।তাহিয়া মাথা উঠিয়ে দেখে নিহাদ দাঁড়িয়ে আছে।তাহিয়া রাগি গলায় বলল…
—দেখে চলতে পারো না।তোমার জন‍্য আমি ব‍্যথা পেলাম।

আর এদিকে নিহাদ হা করে তাহিয়ার দিকে তাকিয়ে আছে।তাহিয়া সেটা দেখে ধমক দিয়ে বলল…

—হা করে তাকিয়ে আছ কেন???জীবনেকি আমাকে দেখনি???

নিহাদ আবাক হয়ে বলল…
—তুমি শাড়ি পরেছো???

—তোমার চোখ আজকে কই রেখে এসেছো???দেখতেইতো পারছো আমি শাড়ি পরছি।।

নিহাদ আবার বলল….
—সত‍্যিই তুমি শাড়ি পরেছো???

—আরে আশ্চর্য!!!দেখছো যখন বার বার কেন জিগ্গেস করছো।আর আমার দিকে তুমি এভাবে তাকিয়ে রয়েছ কেন??আজ কি আমাকে একটু বেশিই সুন্দর লাগছে।(ভাব নিয়ে)

তাহিয়ার কথা শুনে নিহাদ জোরে হাসতে লাগলো।
তাহিয়া ওকে হাসতে দেখে বোকা হয়ে গেল।তাহিয়া চোখ ছোট ছোট করে তাকিয়ে বলল…

—কি ব‍্যপার তুমি হাসছো কেন???

আহাদ হাসতে হাসতে বলল…

—যেই জোকার সেজেছো হাসবো না তো কি করবো।আসাব আগে একবার আয়নায় ভালো করে তাকিয়ে দেখেছো তোমাকে কেমন দেখাচ্ছে।পুরো জোকার লাগছে।

তাহিয়া এবার কাদো কাদো হয়ে বলল…
—আমি জানি আমার শাড়ি পরা ভালো হয়নি।তাই বলে আপনি এভাবে আমাকে বলতে পারলেন???হাসেন বেশি করে হাসেন যখন এই জোকার থাকবে না তখন তো আর হাসতে পারবেন না।

এই বলে তাহিয়া উপরে চলে গেল।আর নিহাদ থ’হয়ে দাড়িয়ে রইল।নিহাদ সব সময়ই তাহিয়ার সাথে মজা করে কিন্তু কখনো তাহিয়া কোন মাইন্ড করে না।তাহলে আজ কি হল???

______________________

কলিং বেল বাজাতেই আহাদ দরজা খুলে দিল।আমাদের দেখে বলল…
—কিরে আসতে এতো দেরি করলি কেন???

আমি আহাদকে ধমক দিয়ে বললাম…
—বেয়াদপ পোলা বাড়িতে মেহমান আসলে কিভাবে কথা বলতে হয় তা শিখস নাই।সর সামনের থেকে।

ও একটা ভেংচি কেটে বলল…
—হুহ…আসছেরে আমার মেহমান।দু’দিন পর এ….

আহাদকে আর কিছু বলতে না দিয়ে মামুনি(মিসেস শিকদার) বলল…
—আহাদ তুই পারিস ও বটে।আসতে না আসতেই মেয়েটার সাথে লাগছিস কেন।

আমি মামুনিকে দেখে দৌড়ে গিয়ে তাকে জরিয়ে ধরলাম।আর বললাম…
—মামুনি…কেমন আছ তুমি???জান তোমাকে কত…. মিস করেছি???

মামুনি আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলল…
—আমিও তোমাকে অনেক মিস করেছি মা।তা তুমি কেমন আছ???

—হুম…ভালো….তুমি???

—আমিও ভালো আছি।তা তোমরা দুজন কেন বাকিরা কোথায়???

—উফ…আর বলোনা তাদের জন‍্যইতো এতো দেরি হল।তাদের নাকি আরো দেরি হবে তাই আমরা চলে এসেছি।

আমাদের কথার মাঝেই তাহিয়া গাল ফুলিয়ে বলল….
—আমাকেতো মামুনি চোখেই দেখে না।বউকে পেয়ে মেয়েকে ভুলে গেছে।

মামুনি একটা মুচকি হাসি দিয়ে ওকে জরিয়ে ধরে বলল…
—ওমা…আমার মেয়ে দেখি রাগ করেছে।আমি আমার মেয়ে,বউ কাউকে ভুলি নি।রাগ তো আমার করার কথা তোমরা আমার সাথে একবার ও দেখা করতে আসো নি।

তাহিয়া মামুনিকে জরিয়ে ধরে বলল…
—আমি আসতে চেয়েছি।সব দোষ তোমার পোলার বউয়ের।ওই আসে নাই।

মামুনি আমাকে উদ্দেশ্য করে বলল…
—ও যা বলছে তাকি সত্যি???

আমি একটু ভেবে বললাম…
—হুম…একটু সত্যি একটু মিথ্যা।

মামুনি মুচকি হেসে বলল…
—পাগলি একটা।

মামনি আমাদের দুজনকে একসাথে দাড় করিয়ে বলল…
— মাশাল্লাহ্…আমার মেয়ে দুটোকেতো আজ পরির মত লাগছে শাড়িতে।আমিতো আগে খেয়ালি করি নি।আমার ছেলে দেখলে তো পাগল হয়ে যাবে।

আমি মামুনিকে জরিয়ে ধরে কান্নার শুরে বললাম….

—আর কইয়োনা গো শাশরী আম্মা….
আমি তো আমার না হওয়া জামাইরে দেখলামওনা।আর
তোমার পোলার বউরে এক রাক্ষস আইসা আংটি পরাইয়া দিয়া গেছে।এখন আমার না হওয়া জামাই এর কি হইবো গো….
আমার জামাইতো বউ ছাড়া বিধবা হইয়া যাইবো গো…..
#বেস্টু
#Ariyana_Nur
#পর্ব_১১

রাত ১২.৪৫ বাজে বিছানায় শুয়ে শুয়ে এপাশ ওপাশ করছি।চোখে ঘুমের ছিটে ফোটাও নেই।বার বার শুধু দুপুরের ঘটনার কথা মাথায় আসছে।ইস…কি লজ্জা টাই না পেয়েছিলাম।

মামুনিকে জরিয়ে ধরে ওসব কথা বলার পর সামনে তাকিয়ে দেখি ভাইয়া,ভাবি,নিহাদ ভাইয়া আর ঐ খচ্চর টা দাঁড়িয়ে আছে।আমার অবস্থা তখন হয়েছিল আল্লাহ্ জমিন ফাক করো ঢুকে যাই।আর সারাদিনতো তাহিয়া, আহাদ, নিহাদ ভাইয়ার আমাকে নিয়ে মজা করেছেই।

এসব ভাবছি এমন সময় ফোনটা বেজে উঠল।এতো রাতে ফোন আসায় কিছুটা বিরক্ত হলাম।প্রথম বার রিং হয়ে কেটে যাওয়ার পর ২য় বার এই ভেবে ফোন ধরলাম যে,কোন দরকারি কল ও তো হতে পারে।ফোন রিসিভ করে কোন কথা না বলে কানে ধরে রাখলাম।একটু পরে ওপাষ থেকে একজন বলল….

—এতো রাত পযর্ন্ত জেগে জেগে কি তোমার না হওয়া জামাই এর সাথে কথা বলছ???

কন্ঠ শুনে বুঝে গেলাম এটা কে হতে পারে।আমি রাগি গলায় বললাম…

—মদ তদ খেয়ে আমাকে ফোন দেন নাই তো???এতো রাতে ফোন দিয়ে কি উল্টাপাল্টা বকছেন???

—তাহলে এতো রাত পযর্ন্ত জেগে আছো কেন???

—আমার ইচ্ছা আপনারে বলতে যাব কেন।আর আপনাকে কে বলল আমি জেগে আছি।এতো রাতে আমার ঘুমের ১৩টা বাজিয়ে আবার বড় বড় কথা বলছেন।

তিনি রাগি শুরে বললাম…
—আমি তোমার এই ফালতু কথা শুনার জন‍্য কল দেই নি বুঝলে।

—তাহলে কেন ফোন দিয়েছেন আপনার ফালতু কথা শুনাতে???

—স্টুপিট মুখটা একটু বন্ধ কর।তা না হলে আমি বলব কিভাবে।

তার কথা শুনে আমি চুপ করে রইলাম।তিনি আবার বললেন…

—তুমি যখন কাউকে পছন্দই কর তাহলে কেন আমাকে আগে বলনি???

তার কথা শুনে মনে হয় আমি আকাশ থেকে পরলাম।আমি অবাক হয়ে বললাম…
—আমি আবার কাকে পছন্দ করি!!!

তিনি একটু চুপ করে থেকে বললেন….
—তখন যে বললে….
যাই হোক… তার মানে তুমি তাকে পছন্দ কর।তা না হলে তো আর কাউকে এভাবেই জামাই বলতে না।

তার কথা শুনে আমি হাসতে লাগলাম।আমার হাসি শুনে উনি আমাকে ধমক দিয়ে বললেন…

—এ মেয়ে তুমি এমন হাসছো কেন???আমি হাসির কি বললাম???

তার ধমক খেয়ে আমি আমতা আমতা করে বললাম….
—আপনি ভুল ভাবছেন।আমি কাউকে পছন্দ করি না।আমি তো মামুনির ছেলেকে কখন দেখিও নি।

—তাহলে…

—আরে… আমি তো এমনিই মামুনিকে শাশুড়ি বলে ডাকি।মামুনি সব সময় বলেন আমাকে তার ছেলের বউ বানাবে।তাই আমিও তাকে শাশুড়ি বলে ডাকি।আমি শুধু এতটুকু জানি মামুনির একটা ছেলে আছে আর সে বাহিরে থাকে।আর কিছুই জানি না।

—কখন তাকে জিগ্গেস কর নি তার ছেলের ব‍্যপারে???

—না….

—কেন???

—মন চায়নি তাই।আপনারে বলতে যাব কেন।আর আপনি আমার নাম্বার কই পাইছেন।এতো রাতে একটা মেয়েকে ফোন দিয়ে ডিস্টাব করছেন লজ্জা করে না।ফোন রাখেন…

তাকে কিছু বলতে না দিয়ে আমিই লাইন কেটে দিলাম।কপালে কি আছে আল্লাহ্য় জানে।

________________________

কলেজের মাঠে বসে আছি তিনজন।কথা বলছি এর একটু পর পর আমাদের সেলফি কুমারি সেলফি তুলছে।কথা কম আমরা মরামারি বেশি করছি।হঠাৎ করে আমাদের সামনে একটা মেয়ে এসে হাজির হল।আমরা একে ওপরের দিকে তাকিয়ে মেয়েটার দিকে তাকালাম।মেয়েটা কোন কথা না বলে আহাদের কলার ধরে দাড় করিয়ে বলল…

—মেয়ে মানুষ দেখলে মাথা তুলে তাকাতে পারো না।আর আমার সামনে তো কথাই বলতে পারো না।তাহলে এদের সাথে হেসে হেসে কথা বলছ কেন???

মেয়েটার কথা শুনে আমি আর তাহিয়া দুজন দুজনের দিকে হা করে তাকিয়ে রইলাম।তাহিয়া মেয়েটাকে বলল…
—এই মেয়ে কে তুমি???আর ওর কলার ধরেছ কেন???

মেয়েটা রাগি গলায় বলল…
—আপনাকে কেন বলব আমি কে।মেয়েটা আহাদকে ধমক দিয়ে বলল…
—আর তুমি আমার ফোন দুদিন ধরে ধরছো না কেন???

আহাদ তো এখন হা করে তাকিয়ে আছে।বেচারা মনে হয় শকড খেয়েছে।আমি মেয়েটার হাত ওর কলার থেকে ছাড়িয়ে বললাম….

—এই মেয়ে কে তুমি???আর তুমি ওর সাথে এভাবে কথা বলছ কেন???দেখে তো ছোট বাচ্চা মনে হচ্ছে।

মেয়েটি কিছুক্ষণ ভেবে বিরক্ত শুরে বলল….
—আমি আপনার সব প্রশ্নের উওর দিব।তার আগে আপনি বলেন আপনি কে???

আমি আহাদের এক হাত জরিয়ে ধরে বললাম…
—আমি ওর গার্লফ্রেন্ড।

আমার কথা শুনে মেয়েটা আমাদের দিকে ছলছল চোখে তাকিয়ে রইল।তারপর কাপা কাপা গলায় বলল…

—স..রি আপু…আমি আসলে জানতাম না যে ওর গার্লফ্রেন্ড আছে।

মেয়েটা চোখ মুছতে মুছতে বলল…
—মা..ফ করবেন।আপনাদের ডিস্টাব করার জন‍্য।এই বলে ও চলে যেতে নিলেই আমি ওর হাত ধরে বলল…

—আমরা কিন্তু আমাদের প্রশ্নের উওর পাই নি???

—আমি সুমাইয়া সুমা।

—আর….

মেয়েটা কিছু না বলে নিচের দিকে তাকিয়ে চোখের জল ফেলছে।

জানু মেয়েটাকে বসিয়ে পানির বোতল এগিয়ে দিয়ে বলল…
—তুমি এই বান্দরকে পছন্দ কর???

ও কিছু না বলে মাথা নিচু করে রাখলো।

আহাদ ধমক দিয়ে বলল…
—ঐ তুই কি শুরু করেছিস।আর সুমু তুমি বাসায় যাও।

আহাদের কথা শুনে মেয়েটি আবার কাদতে লাগলো।আমি ওকে ধমক দিয়ে বললাম…

—চুপ শয়তান আর একটা কথাও বলবিনা।আর আমাদের মিস্টি ভাবির সাথে তো আরো আগে না।

আমার কথা শুনে মেয়েটি আমার দিকে প্রশ্নবোধক দৃষ্টিতে তাকালো।আমি মিস্টি হেসে বললাম…

—আরে আমি তোমার শতীন না ননদ।আমরা ওর বেস্টফ্রেন্ড।

ও এখন আমাদের দিকে হা করে তাকিয়ে আছে।তাহিয়া মুচকি হেসে বলল…
—আমাদের আর কিছু বলতে হবে না।আমরা যা বুঝার বুঝে গেছি।আর আমি তাহিয়া আর ও মানহা।

মেয়েটি অবাক হয়ে আমাকে বলল…
—তুমি মানহা।মানে মানহা খান…

আমি মাথা নাড়িয়ে হ‍্যা বললাম।মেয়েটা আমাদের সবাইকে অবাক করে দিয়ে আমাকে জরিয়ে ধরে বলল…

—ভা…বি……
আমার সুইট কিউট ভাবি….
ভাইয়া যেমন বলেছে তার চেয়ে তুমি বাস্তবে দেখতে আরো বেশি সুন্দর।

সুমার কথা শুনে আমি হা করে রইলাম।আমি আবার ওর কোন কালের ভাবি হলাম!!!

_________________________

কেন্টিনে আমি আর তাহিয়া গালে,মাথায় হাত দিয়ে বসে আছি।কি আর করবো একটু আগে সুমুর থেকে বেচারির পুরো লাভ স্টরি শুনেছি।সুমু মামুনির ছোট বোনের মেয়ে।সুমু আহাদ কে মামুনিদের বাসায় প্রথম দেখে আর সেখান থেকেই পরিচয়।সুমু কয়েক বার আহাদকে প্রপোজ করেছে কিন্তু ও বার বার সুমুকে ফিরিয়ে দিয়েছে।তার পরেও সুমু ওর পিছে আঠার মত লেগেই থাকতো।ওকে ফোন দিয়ে বিরক্ত করতো আর বাড়িতে আসলে তো কোন কথাই নাই।কিন্তু এসবের কিছুই হারামিটা আমাদের জানায় নি।আর আরেকটা কথা মাথার মধ‍্যে বেশি ঘুরপাক খাচ্ছে ও আমাকে ভাবি বলল কেন???

আমাদের নিরবতা ভেংগে তাহিয়া কাদো কাদো শুরে বলল….
—বইন আমার জীবনে কি করলাম বলতো????

আমিও ওর মত করে বললাম….
—কি করুম বল!!!আমাদের কপালটাই খারাপ!!! জীবনে একটা গরুরেও তো নাকে দড়ি দিয়া ঘুরাইতে পারলাম না।

তাহিয়া আফসোস করে বলল….
—আরে…তুই তো তারপরেও একজন পাইছস নাকে দড়ি নিয়া ঘুরানোর।কিন্তু আমার কি হবে…
হায়…এই জীবন থাকার চেয়ে না থাকাই ভালো।(অভিনয় করে)

আমি ওর মাথায় একটা গাট্টা মেরে বললাম….

—যেইটারে পাইছি তারে আমি নাকে দড়ি দিয়া ঘুরাম না।উল্টো সেই আমারে নাকে দড়ি দিয়া ঘুরাইবো।তার পরে ওরে রাতের সব কথা বললাম।

আমার কথা শুনে ও হাসতে লাগলো।ওর হাসি দেখে আমি রেগে বললাম…
—ঐ এমন দাত দেখাইতাছোস কেন???তোর দাত যে হলুদ হইয়া রইছে তা মানুষরে দেখাইতে মন চাচ্ছে।

আমার কথা শেষ হতে না হতেই ও আমার পিঠে তাল ফালাতে লাগলো।আর সাথে তো বকা ফ্রি….

__________________________

হাসতে খেলতে কেটে গেছে কয়েক দিন।ঐ দিনের পর থেকে একদিন ও ঐ খচ্চরটা আমাকে একবার ফোন দেয়নি।আমারও ভালোই হয়েছে আমার আর কস্ট করে তাকে উল্টো পাল্টো কথা শুনাতে হয়নি।আর এই কয়দিনে আমি একটা নতুন রহস‍্য রহস‍্য গন্ধ পাচ্ছি।আর তা হল…..🤔
থাক ভুলে গেছি পরে বলব।😊
খাটে পা ঝুলিয়ে বসে এসব ভাবছি আর ললিপপ খাচ্ছি।এমন সময় ফোনটা বেজে উঠল।তাকিয়ে দেখি জানু ফোন দিয়েছে।আমি কলটা রিসিভ করে বললাম…
—হ‍্যা জানু বল….

অপর পাশের মানুষের কথা শুনে আমার হাত থেকে ফোনটা পড়ে গেল।আমার সারা দুনিয়া ঘুরতে লাগল।বসে থাকার শক্তিটুকু মনে হচ্ছে আমি পাচ্ছিনা।

#চলবে

(ভুলক্রটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।কালকে গল্প না দেওয়ার জন‍্য আবারো সরি বলছি।ধন‍্যবাদ)
#চলবে

(ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।ধন‍্যবাদ)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here