#ভালোবাসি_বলেই_তোমাকে_প্রয়োজন
লেখক-এ রহমান
পর্ব ১৪
রোদের তেজে শরীর বেয়ে ঘাম ঝরছে। গুমোট হয়ে আছে পরিবেশ। গাছের পাতা নড়ছেই না যেন। সেই তপ্ত রোদেই শারমিন আর সারিয়া বেরিয়েছে মাহিনের সাথে দেখা করতে। বাইরে রোদের এতো তেজ তাদের ধারনা ছিল না। বেরিয়েই বিষয়টা বুঝতে পেরেই সারিয়া বলল
–আপু অনেক গরম। মাথাটা ধরে আসছে।
শারমিন করুন চোখে তাকাল। তার কিছুই করার নেই। তপ্ত শ্বাস ছেড়ে বলল
–সামনেই রেস্টুরেন্ট। ওখানে গেলেই আর গরম লাগবে না।
সারিয়া মেনে নিলো তার কথা। কিন্তু অস্থিরতা তো কিছুতেই কমছে না। অনেকটা পথ হেটে যেতে হল রেস্টুরেন্টে। ভেতরে ঢুকতেই এয়ারকন্ডিশনের শীতল হাওয়া ঘর্মাক্ত শরীরে শিরশিরে কাপন তুলে দিলো। এক অদ্ভুত আরাম অনুভুত হল। সারিয়া ওখানেই দাড়িয়ে পড়লো। শারমিন এগিয়ে গিয়েও থেমে পেছনে ঘুরে বলল
–কি রে? ওখানে দাঁড়ালি কেন?
সারিয়া ক্লান্ত গলায় বলল
–আমি এখানেই দাড়াই আপু। তুমি কাজ শেষ করে আসো।
শারমিন বেশ বিরক্ত হল। ভারী গলায় বলল
–তুই এখানে দাড়িয়ে থাকলে মাহিন কি ভাববে? চল।
সারিয়া শারমিনের কথা বুঝতে পারল। কিন্তু তবুও তার বেশ বিরক্ত লাগছে। ভীষণ ক্লান্ত সে। বাইরে যে এতো গরম জানলে সে শারমিনের সাথে আসতোই না। আর শারমিন মাহিনের সাথে দেখা করতে এসেছে। মাস খানেক বাদে তাদের বিয়ে। সেখানে সারিয়ার কি কাজ সে ভেবেই পাচ্ছে না। অনিচ্ছা সত্ত্বেও বোনের সাথে গেলো। কিছুদুর এগিয়ে গিয়ে দেখে মাহিন একটা টেবিলে বসে আছে। শারমিন সারিয়াকে টেনে সেখানে নিয়ে গেলো। মাহিন তাদেরকে দেখেই চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ালো। মুচকি হেসে বলল
–বসো।
শারমিন মাহিনের পাশের চেয়ারটাতে বসে পড়লো। সারিয়া একা একপাশের চেয়ারে বসে পড়লো। মাহিন একটু চিন্তিত সরে বলল
–দেরি হল যে?
শারমিন মুখ ফুলিয়ে একটা শ্বাস ছেড়ে বলল
–রিক্সা পাচ্ছিলাম না। তাই দেরি হয়ে গেলো।
সারিয়া এদিক সেদিক অস্থির ভাবে তাকাচ্ছে। মাহিন বিষয়টা খেয়াল করেই বলল
–সারিয়া? কি হয়েছে? কোন সমস্যা?
সারিয়া ক্লান্ত ভঙ্গীতে দুই হাত টেবিলে রাখল। একটু ঝুঁকে বলল
–তোমরা দুজন ডেটিং এ আসবে সেখানে আমাকে আনার কি দরকার ছিল বল তো। আমি বোর হয়ে যাচ্ছি।
মাহিন উচ্চ শব্দে হেসে উঠলো। বলল
–হবু শ্যালিকা তুমি আমার। তোমার সাথে দেখা না করলে কি আমার মন শান্ত হবে?
মাহিনের কথা শুনে সারিয়া হেসে ফেললো। তার হাসির মাঝেই মাহিন উঠে দাড়িয়ে বলল
–অবশেষে তুই আসলি। আমি তো ভেবেছিলাম না জানি আজ কতক্ষন অপেক্ষা করতে হবে।
সারিয়া ঘাড় ফিরিয়ে তাকাল। অরন্য এগিয়ে এসে তার পাশের চেয়ারটা টেনে নিয়ে বসে পড়লো। অরন্যকে দেখে সারিয়া কয়েক মুহূর্তের জন্য থমকে গেলো। এলোমেলো অনুভূতিগুলো হুট করেই কেমন দমকা হাওয়ায় বিছিয়ে গেলো। শুরু হল তাণ্ডব। হৃদ স্পন্দন দিগুন হয়ে গেলো। ঘোর কাটল অরন্যর কথায়।
–সরি রে। আরও আগেই আসতাম। রাস্তায় একটু কাজ পড়ে গিয়েছিল যাই হোক তোরা কখন এসেছিস?
মাহিন মৃদু হেসে বলল
–আমি অনেক আগেই এসেছি। শারমিন আর সারিয়া মাত্র এলো।
অরন্য খুব স্বাভাবিক ভাবেই ‘ওহ’ বলেই শারমিনের দিকে তাকাল। হেসে বলল
–তারপর কেমন আছ? বিয়ের প্রস্তুতি কেমন চলছে?
শারমিন লাজুক ভঙ্গীতে হাসল। বলল
–ভালো আছি ভাইয়া। আপনি কেমন আছেন?
অরন্য নিচের দিকে তাকাল। উদাসীন কণ্ঠে বলল
–এই তো।
বলেই থেমে গেলো। সারিয়া তার দিকেই তাকিয়ে আছে। অপেক্ষা করছে তার সাথে কথা বলবে। কিন্তু আশ্চর্য জনক ভাবে কথা বলল না। শারমিন আর মাহিনের সাথে কথা বলতেই ব্যস্ত সে। আকাশ সমান অভিমানে ভরে গেলো মন। চোখে পানি ছলছল করে উঠলো। প্রচণ্ড ইচ্ছা করছে নিজের আত্মসম্মানবোধ বিসর্জন দিয়ে একবার অরন্যর সাথে কথা বলতে। কিন্তু কোথাও একটা বাধা কাজ করছে। আর অরন্য তার সাথে এমন কেন করছে সেটাই বুঝতে পারছে না সে। সে তো কোন অপরাধ করেনি। তাহলে তাকে এভাবে শাস্তি দেয়ার মানে কি? সারিয়া আর বসে থাকতে পারল না। উঠে দাঁড়ালো। শারমিনের দিকে তাকিয়ে ধরা গলায় বলল
–তোমরা কথা বল আপু। আমি বাসায় যাচ্ছি। আমার ভালো লাগছে না।
কাউকে কথা বলার সুযোগ না দিয়েই বের হয়ে গেলো। শারমিন বেশ কয়েকবার পেছন থেকে ডাকল। কিন্তু শুনল না। অরন্য পেছন ফিরে একবার তাকাল। হতাশ শ্বাস ছেড়ে চোখ বন্ধ করতেই শারমিন বিরক্তিকর স্বরে বলল
–আপনি কেন এমন করছেন ভাইয়া? ওর সাথে কথা বলছেন না কেন? ঠিক মতো খাওয়া দাওয়া করে না। কারো সাথে তেমন কথাও বলে না। একদম নিশ্চুপ হয়ে গেছে। মনের মধ্যে কি চলছে সেটা আমি ভালো করেই বুঝতে পারছি। আপনি একদম ঠিক করছেন না এটা।
অরন্য চোখ খুলে ফেললো। দুই হাতে মাথার চুল টেনে একটা শ্বাস ছেড়ে বলল
–ওর সাথে কথা বলতে গেলে এখন আমাকে ওর হাজারটা প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। এমন কিছু কথাও উঠবে যা হয়তো কারো জন্যই ভালো হবে না। তাই ওকে ফেস করতে চাইছি না। সব সত্যটা সামনে আসলে সবার থেকে বেশী ক্ষতিটা হবে ওর। সেটা তুমি বুঝতে পারছ। আর আমি জেনে শুনে কিভাবে তাকে এই পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে দেই। আর তাছাড়াও সারিয়া যদি আমাকে ভুল বোঝে তাহলে দূরত্ব তৈরি হবে। দূরত্ব কমাতে শত শত মাইল পাড়ি দিয়ে এসেছি। আবার সেই দূরত্ব? আমি যে আর পারব না মেনে নিতে। এই দূরত্বকে বড্ড ভয় পাই।
অরন্যর কথা শেষ হতেই মাহিন প্রতিবাদী স্বরে বলল
–এখন তাহলে কি হচ্ছে? আর এটা কোন সমাধান নয় অরন্য। একদিন না একদিন সবটা জানতে পারবে সারিয়া। এখন জানলে যা হবার তখনও তাই হবে। পরিস্থিতির তো কোন পরিবর্তন হবে না। আর তোর যদি এরকমই মনে হয় তাহলে কেন তুই সামনে এলি? কেন ওর জীবনের সাথে জড়ালি? জানতিস তুই সামনে আসলেই সবটা সত্যি সামনে চলে আসবে। কোনভাবেই আটকাতে পারবি না। তাহলে কেন এই নাটকটা করলি?
অরন্য অসহায়ের মতো বলল
–আমি এরকম কিছু না করলে সারিয়ার জীবনটা নষ্ট হয়ে যেতো। সীমান্ত কোনদিক থেকেই ওর যোগ্য নয়। ওই ছেলের সাথে বিয়ে হলে সারিয়া কষ্ট ছাড়া আর কিছুই পেত না। আর সীমান্ত সারিয়াকে যে কোন উপায়ে বিয়ে করেই ছাড়ত। সেটার কারণটা সবার কাছেই স্পষ্ট। কিন্তু মামা সেসব কোনদিনও বুঝবে না। আর মামার মতো লোভী মানুষ খুব সহজেই সীমান্তর ফাদে পা দেবে। নিজের মেয়ের জীবনটা তো নষ্ট করেই ফেলত। সাথে নিজের বিপদও ডেকে আনত। আমাকে মোটামুটি বাধ্য হয়েই এমনটা করতে হয়েছে।
–বাধ্য হয়ে করেছিস এখন তো আর কোন সমস্যা নেই। কাজ শেষ ডিভোর্স দিয়ে দে। তাহলেই তো ঝামেলা থাকছে না। না তোকে ওর সামনে যেতে হচ্ছে আর না তোকে ওর কোন প্রশ্নের উত্তর দিতে হচ্ছে। আর সারিয়া সত্যিটাও জানতে পারছে না। সব কিছুর সমাধান তো হয়েই গেলো।
মাহিনের এমন কথা শুনে অরন্যর ভীষণ রাগ হল। দাঁতে দাঁত চেপে বলল
–বাজে কথা বলবি না একদম। আমি কি ডিভোর্স দেয়ার জন্য বিয়ে করেছি?
মাহিন দাঁত কেলিয়ে বলে
–তাহলে কি সংসার করতে চাস সারিয়ার সাথে?
অরন্য থেমে গেলো। এই প্রশ্নটার উত্তর তার নিজের কাছেই নেই। মাহিন আবারো বলল
–এসব এক্সকিউজ অরন্য। সত্যি কথা হচ্ছে তুই সারিয়াকে ভালোবাসিস। আর ওর সাথেই সুখে থাকতে চাস। এতদিন যা কিছু বলতে ওর সামনে আসতে চাস না, ওকে পরিচয় দিতে চাস না, সব কিছুই তোর মনের ভয় থেকে। কিন্তু এখন আর কোন ভয় নেই। তবুও তুই নিজে থেকেই দূরত্ব তৈরি করে নিচ্ছিস। অজথা। অনেক হয়েছে এসব নাটক। এখন আর নয় অরন্য। সব কিছু ঠিক করে নে।
অরন্য একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলল
–আমাকে ভাবতে একটু সময় দে। আর পরশু তোদের এঙ্গেজমেন্ট। তার আগে যেন এসব নিয়ে আর কোন কথা না ওঠে।
শারমিন আবেগি কণ্ঠে বলল
–আপনি সেদিন আসবেন না ভাইয়া?
অরন্য মৃদু হাসল। বলল
–নাহ! মামাকে বলেছি নিজে থেকে যেদিন আমাকে ডাকবে সেদিন আমি তোমাদের বাসায় যাবো।
শারমিন তাচ্ছিল্য হেসে বলল
–বাবার মতো মানুষ আপনার কাছে কোনদিন নত হবে না। সেটা আপনি জানেন। বাবা নিজের জেদ আর ইগোর কাছে কখনো হার মানে না। নিজের জেদ বজায় রাখতে সে কি কি করেছে সেটা সবাই আগেই দেখেছে। নতুন করে বলার কিছু নাই।
অরন্য এবার প্রশস্ত হাসল। বলল
–তোমার বাবার এই জেদ আর ইগো খুব অল্প সময়ের মধ্যেই উড়ে চলে যাবে। তার জানার বাইরেও এমন কিছু ঘটনা আছে যা পুরো ঘটনার মোড় ঘুরিয়ে দিতে সক্ষম। তখন তোমার বাবার সমস্ত অহঙ্কারের পতন হয়ে যাবে।
কথা শেষ করেই অন্যমনস্ক হয়ে গেলো সে। উদাসীন কণ্ঠে বলল
–কিন্তু আমি ভাবছি সারিয়াকে সামলাতে পারব তো? সে যে ভেঙ্গে পড়বে।
—————
পুরো বাড়ি জুড়ে মসলার তেজি ঘ্রান ছড়িয়ে পড়েছে। নাকে এসে ধরছে। সারিয়া নাক ডলতে ডলতে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো রান্না ঘরে। শারমিন রান্না করছে বেশ মনোযোগ দিয়ে। সে পেছনে গিয়ে দাঁড়াতেই শারমিন পাশ ফিরে তাকাল। নরম কণ্ঠে বলল
–কিছু লাগবে রিয়া?
সারিয়া মাথা নাড়ল। যার অর্থ তার কিছুই লাগবে না। চুপচাপ দাড়িয়ে গেলো এক পাশে। এদিকে সারিয়াকে এভাবে রান্না ঘরে দাঁড়াতে দেখেই শারমিনের বুকের ভেতরে কাপন শুরু হয়ে গেলো। কারন সে বুঝতে পারছে সারিয়া এখন তাকে প্রশ্ন করবে আর তাকে সব উত্তর দিতে হবে। রেস্টুরেন্ট থেকে সারিয়া আগেই বাসায় চলে এসেছিলো। আর শারমিন কথা শেষ করে কিছু কেনাকাটা ছিল সেগুলো করে তবেই এসেছে। কিন্তু আসার পর থেকে সারিয়া তার সাথে একটা কথাও বলেনি। সুযোগের খোঁজে ছিল। তাই সব প্রশ্ন জমে রেখেছিল।
–আপু কি রান্না করছ?
শারমিন চমকে উঠলো। অপ্রস্তুত কণ্ঠে বলল
–মুরগির মাংস। তোর জন্য।
সারিয়া পাশেই তাকের উপরে উঠে বসে পড়লো। বলল
–আমাকে একটা সত্যি কথা বলবে?
শারমিন ভীত চোখে তাকাল। দম ফেলে বলল
–কি?
সারিয়া খুব সহজ স্বাভাবিক ভাবে বলল
–অরন্যর সাথে আমাদের পরিবারের একটা গভীর সম্পর্ক আছে। সেই সম্পর্কটা তুমিও জানো। কিন্তু সেটা এখন আমিও জানতে চাই।
শারমিন হাফ ছেড়ে বাঁচল। তার মানে সারিয়া আরও বেশী কিছু এখনো জানতে পারেনি। এতটুকু তাকে জানানো যেতেই পারে। তাই হতাশ গলায় বলল
–তোকে বলেছিলাম না বাবার একটা বোন ছিল।
সারিয়া মাথা নাড়িয়ে ভ্রু কুচকে তাকাল। শারমিন আবার বলল
–অরন্য ভাইয়া সেই ফুপুর ছেলে। ছোটবেলা থেকে আমাদের সাথে তাদের কোন সম্পর্ক ছিল না। কিন্তু মাহিনের সাথে আমার বিয়ে ঠিক হওয়ার পর থেকেই অরন্য ভাইয়ার সাথে পরিচয় হয় নতুন করে। ভাইয়া আর মাহিন খুব ভালো বন্ধু।
শারমিন থেমে যেতেই সারিয়া গম্ভীর গলায় বলল
–এই কথাটা এতদিন পর্যন্ত আমি কেন জানতাম না? আর সেদিন যখন অরন্য বাড়িতে এসেছিলো তখনও কেউ আমাকে বলেনি। সবাই তোমরা এমন আচরন করলে যেন প্রথমবার দেখছ।
শারমিন চোখ নামিয়ে ফেললো। অপরাধীর ভঙ্গীতে বলল
–বাবা তোকে বলতে নিষেধ করেছিল। বাবা চায়না তোকে এসব জানাতে।
–কেন বাবা ফুপুকে পছন্দ করে না আপু?
সারিয়ার কথা শেষ হতেই শারমিন বলল
–বাবার অমতে বিয়ে করেছিল। অরন্য ভাইয়ার বাবার সাথে ফুপুর দীর্ঘদিনের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু তখন তিনি মাত্র পড়ালেখা শেষ করে চাকরি খুঁজছিলেন। প্রতিষ্ঠিত হতে পারেন নি। আর এদিকে বাবা ফুপুর বিয়ে ঠিক করেছিলেন। বাবার অবর্তমানে বড় ভাই হিসেবে সমস্ত দায়িত্ব পালন করার জন্য বাবা প্রস্তুত ছিলেন। বিরাট বড়লোকের এক ছেলের সাথে বাবা বিয়ের আয়োজন করেন। কিন্তু তখন ফুপু সেই সিদ্ধান্ত মেনে না নিয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। তার কারনে বাবাকে অনেক কথা শুনতে হয়। বাবা তখন থেকেই ফুপুর সাথে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করে ফেলেন। আর বাড়িতে নাকি কড়া আদেশ দেন কেউ তার সাথে কোন যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তার সাথেও সম্পর্ক থাকবে না। তাই কেউ আর কোন যোগাযোগ করার চেষ্টা করেনি। আমি নিজেও তাকে আজও দেখিনি। এসব আমি শুনেছি মায়ের কাছ থেকে।
সারিয়া গভীর ভাবনায় ডুবে গেলো। তাহলে কি এই কারনেই অরন্য তাকে ইগনোর করছে? কারন তার বাবার যা জেদ তাতে এই সম্পর্ক কোনভাবেই মেনে নেবে না। আর নতুন করে আবার যাতে একই ঘটনা না ঘটে সেই কারনেই তাহলে অরন্য তার সাথে কথা বলছে না। কিন্তু তাতেই বা কি লাভ? বিয়ে তো হয়েই গেছে। রান্না ঘর থেকে বেরিয়ে দ্রুত ঘরে চলে গেলো। ব্যাগ হাতড়ে কার্ডটা বের করে আরেফিন অরন্যর বাড়ির ঠিকানা দেখে নিলো। তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে শারমিনের কাছে এসে বলল
–আপু আমি একটু বাইরে যাচ্ছি।
শারমিন ভীষণ অবাক হয়ে বলল
–বাইরে জাচ্ছিস মানে? কোথায় জাচ্ছিস?
–একটু কাজ আছে। আসছি।
বলেই আর অপেক্ষা করলো না। বেরিয়ে গেলো কাঙ্ক্ষিত মানুষটার বাড়ির উদ্দেশ্যে তার সাথে কথা বলতে। তার বাড়িতে গিয়েই কথা বলা একমাত্র মাধ্যম। তাছাড়া অরন্যর সাথে কথা বলার উপায় নাই। আজ অরন্যকে সব প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। প্রশ্নের উত্তর না নিয়ে সারিয়া কিছুতেই শান্ত হবে না।
চলবে……