ভালোবাসি_বলেই_ভালোবাসি_বলিনা_2 পর্ব ৫

গল্পর নাম :#ভালোবাসি_বলেই_ভালোবাসি_বলিনা
#পর্ব_৫ : #মেরুন_রঙের_শার্টটা
লেখিকা : #Lucky

উনি আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বললেন, “I will be back soon.”
আমি কিছু না বলে আর পিঠের শার্ট খামচে ধরে রইলাম। চোখের কোনে পানি চিকচিক করছে।
যেতে দিতেই ইচ্ছে করছে না।
কিন্তু ওনাকে আটকাতেও চাইনা। কারণ আমি জানি কাজটা গুরুত্বপূর্ণ না হলে উনি এই অবস্থায় আমাকে রেখে যেতেই পারতেন না।
উনি নিজের হাতের বাধন আলগা করে মৃদুস্বরে বললেন, “I’ll miss you.”
আমি ওনাকে ছেড়ে হালকা সরে দাড়ালাম কিন্তু মাথা নিচু করে রইলাম।
বহু কষ্টে চোখের পানি চোখের কোনেই আটকে রেখেছি। উনি দেখলে মন খারাপ করে ফেলবেন।

কিন্তু উনি আমার মুখটা তুলে ধরলেন। অর্থাৎ শেষ অব্দি ধরা পরেই গেলাম।
আমি ওনার চোখের দিক থেকে চোখ সরিয়ে নিলাম। তখনি চোখের পানিগুলো গড়িয়ে পরলো।
উনি একটা গভীর নিঃশ্বাস ফেলে আমার চোখের পানি মুখে দিলেন।
“তাড়াতাড়ি আসবেন।” আমি তার চোখের দিকে তাকিয়ে বললাম।
“হুম।” মাথা নাড়ল ইথান।
“আর অন্য মেয়ের থেকে এক কিলোমিটার দূরে থাকবেন।” সরু চোখে তাকিয়ে বললাম।
ইথান নিঃশব্দে হাসলো।
“মজা করছি না আমি।” কড়া চোখে তাকিয়ে বললাম।
“তুমি ত এখান থেকে দেখতেই পাবা না!” আমাকে রাগাতে বলল ইথান।
“দূরে থাকবেন।” আমি মুখ ফুলিয়ে তার বুকে কিল বসিয়ে দিলাম।
“থাকবো। কিন্তু তার বদলে আমি কি পাব?” বলতে বলতে ইথান আমার দিকে এগিয়ে আসতে লাগল।
আমি চমকে পিছিয়ে যেতে লাগলাম।
“ক…কি চান আ..আপনি??”
বলতে বলতেই উনি আমার কাছে এসে পরলেন।
আমি তার চোখের দিকে তাকিয়ে আবার চোখ সরিয়ে নিলাম।
সে আমার দিকে ঝুকে আমার কপালে গভীর ভালোবাসার পরশ একে দিল।
আমি মুচকি হেসে তার দিকে তাকালাম।
“Take care.” আমার গালে এক হাত রেখে মৃদুভাবে বলল ইথান।
আমি হ্যা সূচক মাথা নাড়লাম।
উনি সরে দাড়াতে গেলেই আমি তার হাত ধরে নিলাম আর বললাম, একটা জিনিস চাইব। দেবেন?
ইথান প্রশ্নসূচক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ইশারায় বলল কি?
আমি এগিয়ে গিয়ে তার গায়ের মেরুন রঙের শার্টটার বোতাম খুলতে লাগলাম।
“কি করছ তুমি?” সে অনেক বেশিই স্তম্ভিত হয়ে গেল।
আমি কিছু না বলে শার্টের বোতাম খুলতে মনোযোগ দিলাম।
“এখন? মাথা ঠিক আছে তোমার?” বলেই ইথান আমার হাত সরিয়ে দিলো আর বোতাম আটকাতে লাগলো।
সাথে সাথে আমি চোখ পাকিয়ে তার হাত ধরে নিয়ে বললাম, “উফ! আপনার এই মেরুন রঙের শার্টটা লাগবে আমার।”
সে এবার প্রশ্নসূচক দৃষ্টিতে তাকালো।
“কেনো আপনি কি ভেবেছিলেন!” হাসি আটকে রেখে বললাম আমি।
উনি সরু চোখে তাকিয়ে তারপর নিজের শার্ট খুলতে লাগলেন।
আমি আড়চোখে তাকে দেখে যেতে লাগলাম।
“নেও।” বলেই সে সেটা আমার হাতে ধরিয়ে দিয়ে নিজের ল্যাগেজ খুলল।
সেই ফাঁকে আমি এগিয়ে গিয়ে নিজের ফোনটা নিলাম। তারপর ক্যামেরা অন করলাম। আর তার শার্ট পরার সময় তার কয়েকটা ছবি তুলে নিলাম।
যদিও সে বুঝতে পারল তাও কিছু বলল না।
|
|
উনি চলে যাওয়ার মুহুর্ত থেকে সবকিছু আবার অসহ্য লাগতে লাগল।
এতগুলো দিন কিভাবে গুনে শেষ করব কে জানে!
এখনি ত মন কেমন করছে। কিছুতে মন বসতেই চাচ্ছে না।
মাত্র দশ মিনিটও হয়নি উনি গেছেন। এর মধ্যেই যদি এমন হয়!
বিছানায় বসে একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছাড়লাম। সাথে সাথে ফোনটা বেজে উঠল।
আমি বিরক্ত হয়ে ফোনের দিকে তাকালাম। এই সময় কাস্টমার কেয়ার থেকেই সাধারণত কল আসে।
কিন্তু না! স্ক্রিনে বড় বড় করে ইথান লেখা ভেসে উঠেছে। অর্থাৎ সে ফোন করেছে।
দশ মিনিটের মাথায় যে সে ফোন করতে পারে আমি কল্পনাও করতে পারিনি।
আমি দ্রুতো ফোন তুলে কানে দিলাম।
“আপনি এত জলদি ফোন করবেন ভাবতেও পারিনি।” বললাম আমি।
“কারণ অতিরিক্ত বিজি হবার আগে তোমাকে পুরো সময়টা দিতে চাই।”
আমি বলার মত আর কিছু পেলাম না। যতই ওনাকে দেখছি অবাক হচ্ছি।
এই কি সেই ইথান!
“কি?”
ইথানের আওয়াজে আমার হুস হলো।
“আপনি ড্রাইভিং করছেন না?”
“হ্যা। কেনো?”
“আপনি জানেন না ড্রাইভিং করতে করতে ফোনে কথা বলতে হয় না।” শাসনের সুরে বললাম।
“তাইলে রেখে দেব?”
একটু মন খারাপ হয়ে গেলেও আমি নিজেকে সামলে নিয়ে বললাম, “হ্যা। যত কথা গিয়ে বলবেন। একদম কথা বলতে বলতে গাড়ি চালাবেন না।”
“ব্লুটুথ ইউজ করছি কোনো সমস্যা হবে না।” আশ্বাস দিয়ে বলল ইথান।
“তাও…”
“ভয় নেই এক্সিডেন্ট হবে না।” মজা করে বলল ইথান।
“উল্টোপাল্টা কথা কেনো বলছেন?” রেগে গেলাম আমি।
ইথান শুধু নিঃশব্দে হাসল। তাতে আমার রাগ কমলো না। বরং গলা ভিজে এলো।
“কেনো বললেন এভাবে? আ…আমার বাবাও এ…এভাবে…।” আমি আর বলতে পারলাম না।
ইথান বুঝতে পেরে গাড়ি ব্রেক কষলো আর ব্যস্ত হয়ে বলল,”ওকে রিল্যাক্স আর বলব না। সরি।”
যদিও সে সামনে নেই তাও বুঝলাম যে সে অনেক বেশিই সিরিয়াস হয়ে গেছে। আমার সামনে থাকলে হয়ত আমাকে জড়িয়েও ধরে নিত।
আমি চোখের কোনের পানি মুছতে মুছতে অল্প শব্দ করে হেসে দিলাম।
সেও একটা সস্তির নিঃশ্বাস ফেলে আমার মত হাসলো।
“তোমাকে একা রেখে আমি কোথাও যেতে চাই না। I want to be with you forever.” শান্ত গলায় বলল ইথান।
“আমাকে রেখে গেলেন কেনো তাহলে?” একটু ভাব নিয়ে বললাম।
“সকালে ত সব বললামই। তাছাড়া তোমাকে একশোবার explain করে বললেও তুমি আমারি দোষ দিবা, i know. কিন্তু চলে এসেছিলে ত নিজে আগে। মনে নেই?” একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে বলল ইথান।
আমি গলার স্বরে কোমলতা মিশিয়ে বললাম, “জলদি আসবেন। আর গাড়ি চালানোর সময় কারো সাথে কথা বলবেন না। প্লিজ।”
“yeah yeah.”
“টাটা, আর……. আমি রাতে আপনার কলের জন্য অপেক্ষা করবো।” নীচু আওয়াজে বলেই লজ্জায় ফোন কেটে দিলাম।
তারপর জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিতে লাগলাম।

জ্বর রাতের দিকে আবার বাড়তে লাগল। সত্যিই উনি আমায় রেখে গিয়ে ঠিকই করেছেন। নাহলে উনি শুধু শুধু আমার জন্য নিজের কাজও করতে পারতেন না।
তবে অসুস্থতার কথা ওনাকে জানালাম না। মাকেও জানাতে বারণ করে দিলাম।

মাকে আগেই বলেছিলাম আমি আজ একা ঘুমাব। প্রথমে রাজি না হলেও পরবর্তীতে জোরাজুরিতে রাজি হলো।
রাতে বেশ দেরি করেই উনি আমাকে ফোন করলেন। সাথে সাথে যেন মনের মধ্যে প্রশান্তিতে ভরে গেল।

“আপনার কথা অনেক মনে পরছিলো।” বললাম আমি।
“মনে পড়লে ত ফোন দেওয়া উচিত ছিল।” উনি মজা করে বললেন।
“আপনি বিজি মনে করে আমি আর…।”
“কাল থেকে বিজি। মাত্র পৌছালাম।”
“তাহলে ত আপনার আগে রেস্ট নেওয়া উচিত। আমাকে কেনো ফোন করলেন? এখনি রাখেন।” ব্যস্ত হয়ে বললাম আমি।
“Strange! গাড়িতে বসে ফোন দিতে পারবো না, পৌছেও ফোন দিতে পারবো না! কি চাচ্ছ তুমি?” গম্ভীর গলায় বলল ইথান।
আমি মুখ খুলে কিছু বলতে চেয়েও পারলাম না।
“কথা বলছ না কেনো?”
“আমি মনে করলাম আপনি অনেক কান্ত তাই বলেছিলাম।” মিনমিনে গলায় বললাম আমি।
“তুমি কি অসুস্থ?” ধরে ফেলল ইথান।
আমি হকচকিয়ে গেলাম।
আমি ত বুঝতে দেওয়ার মত কিছু করিনি। আর বুঝতে পারার কথাও ত না!
“কই! আমি ঠিকই আছি।” আরেকটু ভাল থাকার ভান করে বললাম।
“সত্যি?” সিরিয়াস হয়ে গেল ইথান।
“হ্যা সত্যি। ভুল মনে হচ্ছে আপনার। আমি একদম ঠিকই আছি।” আমতা আমতা করে বললাম আমি।
তারপর আরো বললাম, “আজ অনেক ক্লান্ত আপনি। কাল কথা বলবো।”
উনি আমার কথা চিন্তা করে রাজি হয়ে গেলেন। কারণ ওনার এখনো সন্দেহ হচ্ছে যে আমি অসুস্থ।

ভোর রাতের দিক থেকে অসুস্থতা ভালোই টের পেলাম।
মাঝে মাঝে আমি ভুলেই যাই যে আমার একবার জ্বর হলে সেটা আর ছাড়ার মত না, তাই জন্যই ত ভুলে গিয়েই ত ঠান্ডা লাগাই। এবারো ঠিক তাই হলো।
উনি চলে যাওয়ার চার পাচ দিন পর অব্দি একটু ভালো থাকলেও তারপর থেকে অবস্থা আবার খারাপের দিকে চলে গেলো।
এখন সত্যিই মনে হচ্ছে যে ঠান্ডা লাগানো উচিত ছিল না।


গুনে গুনে ১২ দিন শেষ হয়েছে। আপাতত অনেক বেশিই মিস করছি ওনাকে।
একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে বেলকোনির দোলনায় উঠে বসলাম।
শরীর এখনো অনেক দুর্বল। জ্বর আবার আসবে হয়তো।
ওনার সাথে অনেক বাহানায় দুইদিন কথা বলিনি। অনেক অসুস্থ ছিলাম। তাছাড়া উনি বুঝে গেলেও সমস্যা।
তবে আজ রাতে ফোন দিতেই হবে।
চিন্তা করতে করতে দোলনায় দুইপা হাটুভাজ করে উঠিয়ে হেলান দিয়ে শুয়ে পরলাম।

বিকেলে ঘুম থেকে হালকা সজাগ হতেই মনে হলো কেউ আমার পাশে বসে সামনের দিকে ঝুকে আছে।
দৃষ্টি স্পষ্ট হতেই আমি অবাক হয়ে গেলাম। কারণ ইথান এসেছে?!
আমি সোজা হয়ে বসতে বসতেই সে আমার দিকে ঘুরে তাকালো।
“আ…আপনি!” এটা কি স্বপ্ন নাকি সত্যি? হা হয়ে গেলাম আমি।
“এখানে ঘুমাচ্ছো কেনো? আর তুমি আমাকে কিছু জানানোর প্র‍য়োজন মনে করোনি?” সে রেগে তার তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল।
আমি চোখে বড়বড় পলক ফেলে তাকে দেখতে লাগলাম। মনে ত হচ্ছে বাস্তবই। তবে সপ্নও হতে পারে।
আমি হাত বাড়িয়ে তার গাল স্পর্শ করতে গেলাম কিন্তু সে মুখটা সরিয়ে নিয়ে রাগমিশ্রিত চোখে তাকিয়ে বলল,”I Won’t forgive you this time.”
আমি মৃদু হাসলাম। কারণ এতদিন পর এখন সবই ভাল লাগছে। তার বকা শুনতেই যেন ইচ্ছে করছিলো।
রেগে গেলে কত্ত কিউট ই না লাগে তাকে।

“হাসছ কিসের জন্য?” আরো রেগে গেল সে।
“আপনাকে অনেক মিস করেছি আমি।” মৃদুস্বরে বললাম।
এতে তার মুখোভাবের পরিবর্তন হলোনা।
বরং বিরক্ত হয়ে অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে নিলো।
আমি নিজের গায়ের থেকে কম্বলটা হালকা সরালাম। হয়তো ঘুমানোর পর সে ই গায়ে দিয়ে দিয়েছিল।
আমি হাসিমুখে বললাম, “কখন এসেছেন?”
সে কিছু না বলে উঠে দাড়ালো আর তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকালো।
“চলে যাব এখনি, তুমি যেহেতু জানানোর প্রয়োজন মনে করো না, তাহলে আমি তোমার কাছে থেকে কি করব!”
বলেই ইথান বেলকোনি থেকে বেরিয়ে গেল।
আমি আগের চেয়ে এখন আরো বেশি হা হয়ে গেলাম।
যার জন্য চুরি করি সেই বলে চোর!
আমি কম্বল কোনমতে সরিয়ে পা নিচে নামাতে না নামাতেই সে এসে আমাকে কোলে তুলে নিলো।
আমি রীতিমতো ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেলাম।
সে গম্ভীর মুখে আমার দিকে তাকালো।
“আ..আপনি যান নি?”
সে কোনো উওর না দিয়ে আমায় বিছানার নিয়ে এসে বসালো।
আমি আড়চোখে ইথানের দিকে তাকাতে লাগলাম। সে আমার গায়ে কম্বল টেনে দিতে দিতে বলল, শুয়ে পরো।
রেগে আছে তা বুঝা যাচ্ছে। তবে সেই রাগের মধ্যেও খেয়াল রাখছে।
ইথান উঠে দাড়াতেই আমি ওর হাতটা ধরে নিয়ে রিনরিনে গলায় বললাম, “ভুল হয়ে গেছে।”
সে তেমন পাত্তা না দিয়ে হাত ছাড়িয়ে নিয়ে ফ্রেশ হতে চলে গেল।
আমি ঠোঁট উলটে বসে রইলাম।
উফ সব দোষ এই জ্বরের।
সে কিছুক্ষণের মধ্যেই ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে এলো। তবে আমার দিকে তাকালো না।
আমি তার মতিগতি দেখতে লাগলাম।
সে আমার দিকে একপলক তাকাতেই আমি চোখ নামিয়ে নিলাম।
সে শার্টের হাতা গুটিয়ে নিয়ে আমার পাশে এসে দাড়ালো।
আমি একবার তার দিকে আর একবার মেঝের দিকে তাকাতে তাকাতে বললাম, “কি?”
“খাওয়া দাওয়া বন্ধ রেখেছ কেনো?” শক্ত মুখে বলল ইথান।
আমি হতভম্ব হয়ে গেলাম।
নিশ্চয় মা উল্টাপাল্টা বলেছে। আসলে আমি ত রুচিই পাচ্ছিনা। খেলেই বমি করে দিই।
ইথান বিরক্তির নিঃশ্বাস ফেলে রুম থেকে বের হয়ে গেল।
আমি বোকা সেজে বসে রইলাম।
তবে কিছুক্ষণের মধ্যেই সে খাবার নিয়ে হাজির হয়ে গেল।
“এতগুলো কে খাবে?” চোখ রসগোল্লার মত করে বললাম আমি।
“তুমি।” বলতে বলতে সে আমার সামনে প্লেট ধরল।
আমি কাদো কাদো চোখে তার দিকে তাকালাম।
তবে লাভ হলো না।
সে শক্ত মুখ আরো শক্ত করে ফেলল।
অর্থাৎ এসব গিলতেই হবে আমার।
নেও ঠেলা। এতদিন মায়ের অত্যাচার ত ছিলই, এখন মা সহ বরের অত্যাচারও শুরু।
.
অনেক কষ্টে খেলাম। খেয়েছি কিন্তু কখন বমি করে দিব বলা যায় না।
আপাতত বিছানায় হেলান দিয়ে তার দিকে চোখ পাকিয়ে তাকিয়ে আছি। তবে তিনি তার নিজের অফিসিয়াল কাজে ব্যস্ত।
অসহ্য লাগছে আমার।
অনেকক্ষণ হলো সে আমার দিকে তাকায়ও নি।
আমি আর না পেরে উঠে তার কাছে গিয়ে দাড়ালাম।
লেপটপের স্ক্রিন থেকে চোখ তুলে আমাকে দেখেই সে কপাল কুচকে ফেলল।
“রেস্ট নিতে বলেছি।”
“নেব না।”
সে কটমট চাহনির সাথে কিছু বলে ওঠার আগেই আমি সেদিনের মতো তার কোলে বসে পড়লাম। আর তাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম।
সে কিছুক্ষণ অবাক হয়ে বসে রইল কিন্তু কিছুই বলল না। পরে আবার নিজের কাজ করতে লাগল।
আমি মুচকি হেসে তাকে জ্বালানোর জন্য জড়িয়ে ধরে নড়াচড়া করতে লাগলাম।
“কি শুরু করেছ?” থমথমে গলায় বলল ইথান।
“কই কিছু না ত।” ঠোঁটে ঠোঁট চিপে বললাম আমি।
তবে কয়েক সেকেন্ডের মাথায় আমি আবার ওনাকে জ্বালাতে লাগলাম।
“এসব করে কোনো লাভ হবে না।” বলল ইথান।
আমি মাথা তুলে মৃদু হেসে তার চোখের দিকে তাকিয়ে বললাম, “আমি জানি হবে।”
“হবে না।”
“হবে।”
“হ…” ইথান কথাটা শেষ করার আগেই আমি এক হাত দিয়ে তার মুখ চেপে ধরলাম আর বললাম, “হবে মানে হবেই।”
বলেই একগাল হাসি দিলাম।
সে অপলক দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে রইল। আমি কিছু সময় তার চোখের দিকে তাকিয়ে চোখ সরিয়ে নিলাম।
হার্টবিট আবার বেড়ে যাচ্ছে।
উনি আমার হাতটা তার এক হাত দিয়ে ধরে নিজের মুখ থেকে সরিয়ে নিলেন।
আর অন্যহাত দিয়ে আমার গাল স্পর্শ করলেন।
আমি মাথা নিচু করে চোখ বন্ধ করে ফেললাম।
উনি কোমড় জড়িয়ে ধরে আমাকে একদম কাছে টেনে নিয়ে এলেন।
আমি চমকে তার চোখের দিকে তাকালাম। তবে সাথে সাথেই আবার চোখ নামিয়ে নিলাম।
নিঃশ্বাসও ভারি হয়ে এলো।

(চলবে…)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here