ভালোবাসি_বুঝে_নাও-2 পর্ব ২৫+২৬

#ভালোবাসি_বুঝে_নাও-2🍁🍁
#সুমাইয়া_সুলতানা_সুমী( writer)
#২৪_পর্ব
.
মাহি খুব সাবধানে পা টিপে টিপে মেহরাব এর রুমের সামনে গেলো,, অনেক্ক্ষণ আড্ডা দিয়ে প্রায় রাত ১২টার দিকে ঘুমাতে গিয়েছে মেহরাব আর মাহি এটারই অপেক্ষায় ছিলো,, মেহরাব এর রুমে আজকে ওনার সব বন্ধু প্লাস ওনি ঘুমিয়েছে,।
মাহি দরজায় আস্তে করে ধাক্কা দিতেই দরজাটা খুলে গেলো এতে খুশি হওয়ার কথা হলেও মাহি খুশি হলো না,, মাহি মনে মনে চাইছিলো যে মেহরাব এর রুমের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ থাকবে আর মাহির কাজটা করা লাগবে না কিন্তু সেটা আর হলো কই।

মাহি ভিতরে গিয়ে হা হয়ে গেলো,, কেননা ভিতরে পুরাই বাজার বসে গেছে, রুমের মধ্যে ডিম লাইট জ্বলছে তাতে হালকা আলোয় মাহি দেখলো যে খাটের ওপর দুইজন সোফায় একজন আর মেঝেতে দুইজন সবাই চাদর মুড়ি দিয়ে এলো মেলো হয়ে ঘুমাচ্ছে।

ওহ আল্লাহ এদের মধ্যে মেহরাব ভাই কোনটা কে জানে এখন আমি কি করবো,, (মনে মনে বলল মাহি)

আচ্ছা মেহরাব ভাই তো নিজের বেড কারো সাথে শেয়ার করে না,, তো তাহলে মেহরাব ভাই কোনটা হতে পারে, বেডে তো দুইজন আর মেঝেতেও দুইজন কেবল সোফাতেই একজন হুম এটাই মেহরাব ভাই হবে,,
এটা ভেবে মাহি সোফার দিকে যেতে গেলে মেঝেতে ঘুমিয়ে থাকা একজনের পায়ের উপর পারা দিয়ে দিলো, আর মেঝেতে থাকা লোকটা চেঁচিয়ে উঠল।

ওহ শিট আমি তো খেয়ালই করিনি,,, মাহি আস্তে করে দরজার পাশে গিয়ে লুকিয়ে পড়ল,, ভ্যাগিস কেউ উঠে পরিনি আল্লাহ বাঁচাইছে,, এই বলে মাহি সোফায় থাকা লোকটার মুখে অন্ধকারে সাথে করে যা যা মেকাপ আনছিলো সব কিছু একেবারে ঢেলে দিয়ে মাহি চলে গেলো ভালো করে দেখলো ও না সোফায় আদেও মেহরাব নাকি অন্য কেউ।

এদিকে মেহরাব এর ঘুম হচ্ছে না, সাথে কেউ থাকলে ঘুম হয় না তার উপর আবার একটা গায়ে পা তুলে দেয় তো আরেকজন জাপটে ধরে এভাবে কি ঘুমানো যায় নাকি,, এই জন্য মেহরাব এর ঘুম আসছিলো না তাই ও বেলকনিতে গিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলো, তখনি ভিতর থেকে কারো চেঁচানোর আওয়াজ শুনে ভিতরে এসে দেখলো তেমন কিছুই হয়নি মেঝেতে রনি আর রাকিব ছিলো তো রনি রাকিব এর চুল টেনে ধরেছে ঘুমের ঘরে তাই চেঁচিয়েছে মেহরাব বেলকনিতে থাকা চেয়ারে বসে একটু ঘুমানোর চেষ্টা করলো।

,,,সকালে,,,,

কালকে গায়ে হলুদ এই জন্য সকাল থেকে সবাই কাজে ব্যাস্ত বাইরে বাগানে গায়ে হলুদের স্টেজ সাজানো হচ্ছে,, আর সবাই সবার কাজে ব্যাস্ত, মাহি সোফায় বসে ফল কাটছিলো তখনি মেঘলা এসে বলল।

আরে ভালো করে দেখে কাট হাত কেটে যাবে তো (মেঘলা)

ওহ হা আচ্ছা (মাহি)

এই মাহি তোকে রাতে বিছানায় দেখলাম না কোথায় গিছিলি,,একটু ভেবে এই তুই কি সত্যি ইপ্সা ভাবির কথা মতো ভাইয়ার রুমে গিছিলি??(চিন্তিত হয়ে বলল মেঘলা)

মাহি ডান হাতে ছুড়ি আর বা হাতে ফল নিয়ে মুখটা করুন করে মেঘলার দিকে তাকিয়ে হ্যাঁ বলল।

কিহ?? এবার তুই শেষ এতো মানুষের সামনে ভাইয়া যদি ওমন সং সেজে আসে তাহলে ভাবতে পারছিস কি হবে(মাথায় হাত দিয়ে সোফায় বসে বলল মেঘলা)

ওনি কি খুব রাগ করবে??(কাঁদো কাঁদো ফেস করে বলল মাহি)

খু,,,,ব(একটু টেনে বলল মেঘলা)

এই তোমরা কি কথা বলছো?? এই জানো আমি না তোমাদের শুভ ভাইকে বলেছি যে ওনি বাবা হবে,, কি খুশি হয়েছে কি বলবো,, আরে মাহি তোমার মুখটা এমন হয়ে আছে কেনো কি হয়েছে??(ইপ্সা)

কি হয়েছে বুঝতে পারছো না আপু মাহিতো তোমার দেওয়া ডেয়ার টা কমপ্লিট করে ফেলছে (মেঘলা)

সত্যি??(ইপ্সা)

হুম।

আরে আমি তো এমনি বলছিলাম ভাবছিলাম তুমি করবে না,, কিন্তু তুমি তো দেখছি সত্যি করে ফেলছো, শুভর থেকে শুনেছি মেহরাব ভাই নাকি অনেক রাগি এসব মজা একেবারেই পছন্দ করে না,, তাহলে এখন কি হবে,,(চিন্তিত হয়ে মাহির পাশে বসে বলল ইপ্সা)

কোথায় সাহস দিবে তা না করে ভয় দেখাচ্ছো কেনো আপু,, আমি তো দেখছি ওনাকে দেখার আগেই শুধু তোমাদের কথা শুনে স্টক করে ফেলবো (মাহি)

আচ্ছা সবাই চুপ যা হওয়ার তা তো হয়েই গেছে এখন এতো কথা না বলে সবাই চুপ করে বসে থাকো আর ভাইয়া আসার অপেক্ষা করো ওকে(মেঘলা)

হুম আমি বসে বসে অপেক্ষা করি কখন ওনি আসবে আর আমার গালটা মেরে খাল করে দেবে (মনে মনে বলল মাহি)

এরপর ওরা সবাই বসে অপেক্ষা করতে লাগল কখন মেহরাব আসবে,, আরো অনেক্ক্ষণ পর মেহরাব উপর থেকে নিচে নামলো,, মুখটা গম্ভীর করে,, রাতে ভালো করে ঘুম হয়নি তাই উঠতে একটু দেরি হয়ে গেলো,,, সিঁড়ি দিয়ে নেমে এসে মা কে কফি দিতে বলে একটা সিঙ্গেল সোফায় বসলো,, তারপর পাশে তাকিয়ে দেখলো, মাহি মেঘলা আর ইপ্সা হা করে চোখ গুলো বড় বড় করে ওর দিকে তাকিয়ে আছে,, আজব এভাবে তাকিয়ে থাকার কি আছে মেহরাব নিজের দিকে তাকিয়ে দেখলো না সব তো ঠিকি আছে তাহলে এভাবে তাকানোর মানে কি। তারপর রুপালি কফি দিয়ে গেলে মেহরাব ভ্রু কুঁচকে মাহিদের দিকে তাকালে ওরা চোখ অন্যদিকে নিয়ে নেয়,, মেহরাব ও কফিটা নিয়ে বাইরে চলে গেলো, স্টেজ কতটা সাজানো হয়েছে সেটা দেখতে।

এটা কি হলো?? কিছুই তো বুঝলাম না, আকাশ টা পরিষ্কার আবার আবহাওয়া ও এতো ভালো এটা কীভাবে সম্ভব (মেহরাব কে উদ্দেশ্য করে বলল মাহি)

আমার কি মনে হয় বলতো, এখন অনেক মানুষ তো তাই তোকে কিছু বললো না, পরে হয়ত তোকে গাছের সাথে ঝুলায়ে রাম ধুলায় দিবে শিওর (মেঘলা)

কি বলো শিওর??(নখ কামড়ে বলল মাহি)

একদম 100% শিওর (মেহরাব এর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে বলল মেঘলা)

এই তোমরা ওদিকে দাখো (অবাক হয়ে সিঁড়ির দিকে ইশারা করে বলল ইপ্সা)

ইপ্সার কথা শুনে মাহি মেঘলা আর ডয়িং রুমে থাকা সবাই সিঁড়ি দিয়ে তাকিয়ে হু হা করে হাসা শুরু করলো, কেননা অনিক (মেহরাব এর বন্ধু) এর সারা মুখে মেকাপ দিয়ে ভর্তি পুরাই জোকার জোকার লাগছে,, অনিক কিছু বুঝতে না পেরে হ্যাবলার মতো ওখানেই দাড়িয়ে আছে।

এই কি হয়েছে রে সবাই এমন হাসছে কেনো(অনিক)

আরে গাধা রুমে গিয়ে নিজের মুখটা ভালো করে দ্যাখ তোকে পুরাই জোকার লাগছে (রাকিব)

কিহ?? এ বাবা আগে বলবি তো,, অনিক যলদি করে উপরে চলে গেলো।

একদম কানের গোড় দিয়ে বেঁচে গেছি ভ্যাগিস ওটা মেহরাব ভাই ছিলো না,, উফ আল্লাহ বাঁচাইছে (মাহি)

বিকেলে,,,,,,

মাবিয়া সব সময় মাহির উপর নজর দাড়ি করছে,, মাহির ভুল খুঁজার জন্য,,কেননা একটু কোনো ভুল পেলেই এই বাড়ি ভরা মেহমান দের সামনে অপমান করবে, এতে একটু হলেও রাগ কমবে,,, কত আশা ছিলো মেহরাব এর সাথে মীরার বিয়ে দেবো কিন্তু এই আশায় এক বালতি পানি ঢেলে মাহি এই বাড়ির বউ হলো, এটা তো কোনো ভাবেই মেনে নেওয়া যায় নাহ।

মাবিয়া সুযোগ খুঁজছিলো কিভাবে মাহিকে সবার সামনে অপদস্ত করা যায়, তখনি দেখলো মাহি মেহরাব এর একটা বন্ধু কে নিয়ে রুমে ঢুকলো তারপর ভিতর থেকে দরজা বন্ধ করে দিলো ব্যাস তাতেই হয়ে গেলো।

মেহরাব মেহরাব কই তুই জলদি আয় দেখে যা কেমন মেয়ে বিয়ে করেছিস তুই যে সে তোর চোখের অগচরে পর পুরুষ নিয়ে রুমে ঢুকে (চিৎকার করে বলল মাবিয়া)

মাবিয়ার চিৎকারে সবাই ডয়িং রুমে জরো হয়ে গেলো আর উৎসুক দৃষ্টিতে মাবিয়ার দিকে তাকিয়ে থাকলো।

কি হয়েছে খালা মনি এভাবে চিৎকার করছো কেনো(মেহরাব)

চিৎকার করবো না তো কি করবো,, তুই জানিস ও না তোর চোখের আড়ালে কি হয়, কেমন মেয়ে বিয়ে করলি তার বেপ্যারে একটু খোঁজ ও নিলি না।

কেনো কি হয়েছে, মাহি কি করেছে??

কি করেনি তাই বল, দ্যাখ এখানে এতো মানুষ কিন্তু তোর বউ এখানে নেই আরে থাকবে কি করে সেতো এখন অন্য কাজে ব্যাস্ত তোর বন্ধুর সাথে।

মুখ সামলে কথা বলো খালা মাহি তো মেঘলার সাথে।

না ভাইয়া মাহি তো আমার কাছে নেই ও বললো ওর কি কাজ আছে তাই উপরে চলে গেলো (মেঘলা)

আগেই বলেছিলাম আমি,, আয় আমার সাথে আজকে হাতে নাতে তোর বউয়ের কুকৃর্তি তোকে দেখাবো৷

এই বলে মাবিয়া মেহরাব এর হাত ধরে টেনে উপরে চলে গেলো,, সবার দৃষ্টি এখন উপরের রুমে,,

প্লিজ আল্লাহ খালার কথা যেনো মিথ্যা হয়, আমি জানি আমার মাহি এমটা কখনোই করবে না,, আমার বিশ্বাস আছে তবুও কেনো জানি ওকে হারানোর ভয় মনে জেঁকে বসেছে,, প্লিজ দরজার উপারে যেনো মাহি না থাকে (মনে মনে বলল মেহরাব)

মাবিয়া মেহরাব কে নিয়ে দরজার সামনে গেলো তারপর দরজায় টুকা দিলে প্রায় একটু সময় পর অনিক এসে দরজা খুলে দিলো আর ওর পিছনে চুল বাঁধতে বাঁধতে মাহি আসলো।

মাহি!(অবাক হয়ে বলল মেহরাব)#ভালোবাসি_বুঝে_নাও-2🍁🍁
#সুমাইয়া_সুলতানা_সুমী( writer)
#২৫_পর্ব
.
কে এসেছে অনিক ভাইয়া?? কাওকে রুমে ঢুকতে দিবেন না বলে দিলাম,এই চুল গুলোও না সব সময় খালি খুলে যায় আম্মু কে বললাম বেধে দিতে কিন্তু সেতো কাজেই ব্যাস্ত (মাহি বলতে বলতে দরজার কাছে আসলো)

আরে দাখো এসব(অনিক)

কি বেহায়া মেয়ে,,এটা বেহায়াপনা করার জায়গা নাহ, দেখলি তো মেহরাব আমি আগেই জানতাম এই মেয়ের চরিত্র ভালো না (মাবিয়া)

সবাই নিচে কানাঘুষা করছে, মেহরাব তো পলকহীন ভাবে মাহির দিকে তাকিয়ে আছে যেনো ও বিশ্বাসই করতে পারছে না,, আর এদিকে মাহি কিছুই বুঝতে পারছে না কি হচ্ছে এসব তখনি রুমের ভিতর থেকে মীরা বলল।

কি হয়েছে তোরা এতোক্ষণ ধরে বাইরে কি করছিস(রুমের ভিতর থেকে বলতে বলতে দরজার কাছে আসলো মীরা)

তুই?? (মেঘলা)

হুম আমি কেনো কি হয়েছে?? (মীরা)

এখানে তুইও আছিস?? খালা মনি আরো বলছিলো যে মাহি রুমের ভিতর একা অনিক ভাইয়ের সাথে (মেঘলা আর বলতে পারলো না মাথা নিচু করে নিলো)

মেঘলার কথাশুনে মাহি টলমল চোখে মেহরাব এর দিকে তাকালো,, এতোগুলো মানুষ ওকে ভুল বুঝেছে এতে ওর কোনো কিছু যায় আসে না কিন্তু ওর মেহরাব ওকে অবিশ্বাস করেছে এটাই ওকে অনেক বেশি কষ্ট দিচ্ছে,, এতোদিন যে চোখে অপার ভালোবাসার সমুদ্র দেখেছে আজকে একটু সময়ের জন্য হলেও সে চোখে মাহির জন্য একরাশ অবিশ্বাস ছিলো।

মাহি আমি (মেহরাব কে বলতে না দিয়ে নিজের মুখ চেপে কান্না আটকে মাহি ওখান থেকে দৌড়ে চলে গেলো)

মাহি যাওয়ার পর মেহরাব রেগে রুমের ভিতর গিয়ে দেখলো ভিতরে মেঘলার কিছু বান্ধবী, কাজিন আর মেহরাব এর দুইজন বন্ধু ও আছে আর সবাই মিলে কাগজ নিয়ে কিছু একটা বানাচ্ছে আর কেউ কেউ বেলুন ফুলাচ্ছে।

কি হচ্ছে এখানে (রেগে বলল মেহরাব)

আরে মেহরাব তুই এখানে মাহি তোকে আসতে দিলো??(রাকিব)

মানে?? (না বুঝে বলল মেহরাব)

আরে আমাদের পিচ্চি কর্তা মানে মাহি প্লান করেছে যে বর আসার সময় বরের গায়ে রাস্তা থেকে একদম বাড়ি অবধি ফুল ছিটানো হবে,, আর বরের জুতা চুরি করা হবে আর তোরা তো শুধু সুন্দর করে গায়ে হলুদের স্টেজ সাজাচ্ছিস বেলুন লাগাচ্ছিস না তাই স্টেজে মাহি বেলুন লাগাবে আর এই রঙিন কাগজ গুলো দিয়ে নাকি বাসর সাজাবে বউ ভাতের অনুষ্ঠানের দিন তাই আমাদের কাজে লাগিয়ে দিছে আর সবাইকে বলছে এই গুলা যাতে কাউকে না বলে,, ও সবাইকে সারপ্রাইজ দিবে,, জানিসই তো পিচ্চি তুই যেদিন থেকে ওর সাথে আমাদের পরিচয় করিয়ে দিয়েছিস ও তো আমাদের সব সময় ভাইয়া ভাইয়া বলে পাগল করে দেয় পাগলি একটা (রাকিব)

হ্যাঁ আর কাল রাতে ভুল করে আমার মুখে মেকাপ দিয়ে ভূত বানিয়েছিলো বলে আমাকে ডেকে নিয়ে এসে সরি ও বলেছে, আর ওদের টিমে আমাকে নিয়েছে (অনিক)

ওদের কথাশুনে মেহরাব রেগে চোখ লাল করে মাবিয়ার দিকে তাকিয়ে বলল।

আই সয়ার খালা মনি এখানে যদি তোমার জায়গায় অন্য কেউ হতো তাহলে আম শিওর সে এতোক্ষণে হসপিটালে থাকতো,, আমার মাহির সম্পর্কে এভাবে কথা বলার সাহস কারো নেই,, আর তুমি না একটা মেয়ে তাহলে একটা মেয়ে হয়ে আরেকটা মেয়ের সব থেকে দুর্বল জায়গা তার চরিত্র নিয়ে এভাবে বাজে কথা কীভাবে বলতে পারো তুমি?? আগে নিজের দিকে দাখো তারপর অপরকে বলতে আসবে,, আমি যতদূর জানি তুমি বিয়ের আগে অনেক কিছু করে বেড়াতে তোমার ভাগ্য ভালো যে আমার খালুর মতো মানুষ তোমাকে বিয়ে করেছে নয়ত এতোদিন তোমার তো থাক সেসব কথা নাই বা বললাম।

মেহরাব তুই কিন্তু বেশি বেশি বলছিস ভুলে যাস না আমি তোর খালা হই (রেগে বলল মাবিয়া)

সেটাই তো সম্যসা তুমি আমার খালা নয়ত, একটা কথা কান খুলে শুনে রাখো শুধু তুমি নয় এখনে উপস্থিত সবাইকে বলছি, মাহি আমার বউ, এটা ওর বাড়ি ও এখানে যা খুশি করতে পারে কারো বলার কোনো রাইট নেই, আর আমি জানি আমার মাহি কখনো কোনো খারাপ কিছু করবে না,, আর খালা মনি বিয়েতে এসেছো মজা করো খাওয়া দাওয়া করো দেন বাড়ি চলে যাও আর যদি তা করতে না পারো তাহলে ওই যে সামনে আমাদের সদর দরজা খুলাই আছে চলে যেতে পারো। (মাবিয়া কিছু বললো না শুধু মাথা নিচু করে শুনলো, আর বলবেই বা কি বলার মতো মুখ আছে নাকি)

কথা গুলো বলে মেহরাব মাহির মায়ের কাছে গেলো।

আমায় ক্ষমা করে দিও ফুপি আমি আমার মাহিকে আগলে রাখতে পারলাম না তুমি তোমার মেয়েকে ভুল মানুষের হাতে তুলে দিয়েছো(মাথা নিচু করে বলল মেহরাব)

কে বলেছে?? আমি একদম ঠিক মানুষের হাতেই আমার মেয়েকে তুলে দিয়েছি,, আমি জানি আমার মেয়ে কোথায় কেমন থাকবে,, তা তোর বউ কিন্তু এখানে নেই, সে কিন্তু অনেক অভিমান করেছে যা তার অভিমান ভাঙ্গিয়ে নিয়ে আয় নইলে কেঁদে একদম বন্যা বানিয়ে দেবে আমি কিন্তু আবার সাঁতার জানি না বাবা (মাহির মা মেহরাব এর মাথায় হাত রেখে বলল)

ফুপি তুমিও না,, আর তোমার মেয়ে টাও হয়েছে কিছু নাই হতে কেঁদে ভাসিয়ে দেয় (মেহরাব)

কি করবি বল তোরই তো বউ,, যা যা নিয়ে আয় সন্ধে হতে চলল না জানি আমার মেয়েটার এতোক্ষণে কি হাল হয়েছে।

হুম যাবো তো একেবারে বেঁধে নিয়ে আসব, যতই হোক আমার বউ বলে কথা।

এই বলে মেহরাব চলে গেলো,, ও জানে তার পিচ্চি বউ এখন কোথায় আছে,, সত্যি নিজের কাছেই নিজেকে ছোট মনে হচ্ছে আমি তো জানি আমার মাহি কেমন তারপরেও আমি খালার কথায় ওকে ভুল বুঝলাম কি করে,, নাহ এর জন্য আমার শাস্তি পাওয়া উচিত আর শাস্তিটা আমার বালিকা বধূই দিবে আমাকে।

মেহরাব সোজা মাহিদের বাড়ি চলে গেলো তারপর সিঁড়ি বেয়ে উপরে ছাঁদে চলে গেলো গিয়ে দেখলো মাহি ছাঁদের এককোনায় গুটিসুটি মেরে বসে কান্না করছে,, গোধূলির বিকেলের লাল সূর্যের শেষ আলো টুকু ওর মুখে পরেছে, কান্না করতে করতে মুখটা লাল হয়ে গেছে তার উপর সূর্যে আলো পরে মুখটা একদম রক্তাক্ত লাল গোলাপের মতো লাগছে,, নাহ এখন ওর কাছে ক্ষমা চাইলে ও আরো উত্তেজিত হয়ে যাবে আরো বেশি কান্না করবে হুম।
মেহরাব আস্তে করে গিয়ে মাহির পাশে পা মিলে দিয়ে বসল,,, মাহি কারো আসার আভাস পেয়ে মাথাটা তুলে একবার দেখে নিয়ে আবার নামিয়ে নিলো।

কেউ কি আমার উপর রেগে আছে?? (মাহিকে উদ্দেশ্য করে বলল মেহরাব)

কিন্তু মাহি কোনো উত্তর দিলো না একিভাবে বসে রইল।

হুম বুঝলাম এটা রাগ নয় কেউ একজন আমার উপর খুব বেশি অভিমান করে আছে (মেহরাব)

কেউ যেনো আমার সাথে কথা না বলে আমি তো খারাপ, আর খারাপ মানুষের সাথে কথা না বলায় ভালো (কাঁদো কাঁদো সুরে বলল মাহি)

হুম এটাও ঠিক খারাপ মানুষের সাথে কথা না বলায় ভালো, এই জন্যই তো আর খারাপ মানুষের সাথে কথা বলবো না। মেহরাব মাবিয়াকে উদ্দেশ্য করে কথাগুলো বলল।কিন্তু মাহি ভাবলো ওকে বলছে তাই মাথা নিচু করেই আরো বেশি কান্না করে দিলো।

মেহরাব মাহির কান্নার কারণ টা বুঝে কিঞ্চিৎ হেসে মাহির সামনে হাঁটু গেরে বসে ওকে শক্ত করে বুকে জরিয়ে নিলো,,, আর মাহি হাত পা ছুঁড়া ছুড়ি করছে আর বলছে।

ছাড়ুন আমায় যখন খারাপ মানুষের সাথে কথা বলবেন না তখন তাকে জরিয়ে ধরেছেন কেনো ছাড়ুন(কান্না করতে করতে বলল)

ওমমম আমি তো আমার পিচ্চি বউ কে জরিয়ে ধরেছি তাতে তোর কি,, তুই বারণ করলেই আমি শুনবো বুঝি,, শুনতে আমার বয়েই গেছে (মাহিকে আরো শক্ত করে বুকে জরিয়ে ধরে,, যেনো বুকের সাথে একদম মিশিয়ে নেবে)

আমি জানি আমি ভুল করেছি,,, কেননা আমি একটু হলেও আমার ভালোবাসাকে ভুল বুঝেছি, আমার মনে চুল পরিমাণ অবিশ্বাসের জন্ম নিয়েছিলো,, এটাই আমার অনেক বড় ভুল আমার উচিত ছিলো আমার ভালোবাসার উপর বিশ্বাস রাখার, কিন্তু আমি তা করিনি,, তাই আমার শাস্তি পাওয়া উচিত, আমি চাই তুই আমায় শাস্তি দিবি তবে সেটা আমার কাছে থেকে (মাহিকে বুকে নিয়েই বলল মেহরাব)

হুম মেহরাব ভাই আপনি ভুল করেছেন আর আপনার শাস্তি পাওয়া উচিত অবশ্যই আমি আপনাকে শাস্তি দেবো (মেহরাব এর বুকের সাথে মিশে বলল)

হুম তো বলুন মহারাণী আমাকে কি শাস্তি দিবেন।

চলবে,,,,,,??

চলবে,,,,,,??

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here