#মেঘের_দেশে_তারার_মেলা 💚
#Mishka_Moon (লেখনীতে)
#পর্ব_৭
~ তো বল!?
~ আসলে বলছিলাম কি,,,,
আহির এবার বিরক্ত হয়ে বলে~ আমি শুনবো না তুই বের হ।
~ এমন করছেন কেন?
~ কি সমস্যা ভাই বলবি তুই?
~ একটা মেয়েকে ভাই কেনো বলছেন?
~ ভুল হয়ে গেছে আমার তুই থাক আমি চললাম।
আহির রুম থেকে বের হয়ে বসার রুমে চলে গেলো। পিছু পিছু পিহুও আসলো। আহির এবার সিরিয়াস ভাবে বললো~ কিছু বলার থাকলে বল নইলে বিরক্ত করিস না।
পিহু আর কিছু না বলে চলে যেতে লাগলো। হঠাৎ পেছন থেকে আহির ডাক দিয়ে বললো~ বাড়ি যাবি?
খুশি মনে পেছনে তাকিয়ে হ্যাঁ বলতে গিয়েও কিছু একটা ভেবে বললো না। খাবার দিচ্ছি খেয়ে নিবেন আসুন। আহির বুঝতে পারে না মাঝে মাঝে মেয়েটার কি হয়। রাতের খাবার খেয়ে পিহু আবার পড়তে বসে আর আহির শুয়ে পরে। মাঝ রাতের দিকে শুয়ে পরে পিহু। সকালে পিহু আগে উঠে আহিরের জন্য কিছু ঝটপট রান্না করার কিচেন এ চলে যায়। সকালে খেতে খেতে আহির পিহু কে বলে ~ কি রে ইদানীং লক্ষী বউ হয়ে গেছিস দেখছি ব্যাপার কি বলতো?
~ কিসের আবার ব্যাপার হবে! মানুষের ভালো করতে নেই।
~ তুই আর ভালো? সেদিন একটু বকা দেওয়ার জন্য কি করেছিলি মনে নেই?
~ কি এমন করেছি! তোর থুক্কু আপনার চায়ে একটু থু*তা মিশিয়ে দিয়েছিলাম এমন ভাবে বলছেন মনে হয় মানুষ খু*ন করছি।
~ তার থেকেও বেশি কিছু ভালো হয়ে যা পিহু।
~ আমি ভালোই এর চেয়ে বেশি ভালো হওয়া যায়না। এখন খেয়ে আমাকে উদ্ধার করুন বিনাপয়সার কাজের লোক পাইছেন তো।
~ একদম উল্টো পাল্টা বলবি না কাজের লোক তুই রাখতে দিস নি।
~ কেমনে দিতাম বলেন তো! যেদিন কাজের লোক ঠিক করলেন সেই দিন সকালেই খবরে দেখলাম কাজের লোকের হাতে বাড়ির মালিক খু*ন।
~ এতো ভয় নিয়ে পুলিশ হবি কি করে?
~ ভয় নয় এটা সর্তক পুলিশ হওয়া কঠিন নয় আপনি চুপ থাকেন। যেদিন আপনি বিপদে পরবেন সেদিন এই পিহুই আপনাকে বাঁচাতে যাবে।
~ তাহলেই হয়েছে আমাকে বাঁচাতে নয় তাহলে মার*তেই যাবি।
~ তোর নাস্তা বন্ধ বের হু,,
~ খাওয়া হয়ে গেছে চলেই যাচ্ছি।
আহির রেডি হয়ে বেরিয়ে পরে। পিহু যতই ভালো ব্যবহার করতে চায় ততই রাগিয়ে দেয় আহির। পিহুও খেয়ে সব গুচ্ছিয়ে বেরিয়ে পরে। কোচিং এ পিহুর দুটো ফ্রেন্ড হয়েছে প্রিয়া আর প্রিয়ান। যমজ ভাই বোন ওরা তবে বলতে গেলে কোনো মিলই নেই তাদের অলওয়েজ মা*রা মা*রি ঝগড়া লেগেই থাকে। অল্প দিনেই পিহুর সাথে তাদের ভালোই বন্ধুত হয়ে গেছে। প্রথম পিহু একা একা বসতো কাউকে চিনতো না। একদিন ক্লাসে প্রিয়া আর প্রিয়ান পিহুর সাথে বসে ছিল। হঠাৎ করে দুই ভাই বোন মা*রা মা*রি শুরু করলে স্যার দুজনকেই দাঁড়াতে বলে তারপর জিজ্ঞেস করে ~ এতো কথা কিসের! ক্লাসে কোন টপিক পড়াচ্ছিলাম বলেন তো?
প্রিয়া আর প্রিয়ান কি বলবে? ওরা তো ক্লাসে মনোযোগই দেয়নি তারপরে আবার বসেছে পেছনে তখন পিহু চুপিচুপি বলে দেয় টপিকটা। সেদিন থেকে ওদের তিনজনের বন্ধুত শুরু হতে থাকে। এখন তো একজন অন্যজনকে তুই করে বলে৷ প্রথম প্রথম তুমি বলতো আজকে হঠাৎ প্রিয়া বলে~ দোস্ত চল আমরা আজকে কফি শপে যাই। একটু আড্ডা দেওয়া যাবে কোচিং টাইমে তো তেমন কথাই বলতে পারিনা মন খুলে।
~ আচ্ছা চল হাঁটতে থাকি।
প্রিয়ান বলে~ আচ্ছা দোস্ত তুই এখনি বিয়ে কেনো করলি?
~ আমি করিনি আব্বু জোর করে দিয়েছে।
~ আর আমায় দেখ আমি বিয়ে করতে চাই আমার পড়াশোনা করতে ভালো লাগে না কিন্তু আমাকে বিয়ে দেয়না।
প্রিয়া টিটকারি মে*রে বলে~ তোর মতো টিকটিকি রে কে বিয়ে করবে রে?
~ তুই কিন্তু বেশি বলছিস।
এক কথা দু কথা থেকে দুজনের আবার ঝগড়া লেগে যায়। কফি শপের সামনে চলে আসে ঝগড়া করতে করতে। পিহু এবার বিরক্ত হয়ে বলে~ তোরা থামবি নাকি আমি চলে যাবো।
~ না দোস্ত থামছি।
ভেতরে গিয়ে হঠাৎ একটা টেবিলে চোখ যায় পিহুর। সেখানে আহির এর সাথে একটা মেয়ে বসে আছে। কি সুন্দর হেসে হেসে কথা বলছে। কই আমার সাথে তো এমন করে কথা বলে না? পিহুর মনটা অটোমেটিক খারাপ হয়ে গেলো। কিন্তু কেনো সে নিজেই বুঝতে পারছে না। একটু পরে দৃশ্যটা প্রিয়ারাও দেখে ফেলে আহিরের ছবি তারা পিহুর ফোনে দেখেছে। যদিও একটাও ভালো ছবি না আহিরকে জ্বালানোর জন্যই ওমন হাস্যকর ছবি গুলো তুলে ছিল। কিন্তু প্রিয়াদের চিনতে কোনো সমস্যা হয়নি। আর পিহুর মুখ দেখে আরো নিশ্চিত হয়ে যায় এটাই আহির। প্রিয়া বলে~ দোস্ত ওটা তোর বর না?
~ হুম।
~ কিন্তু সাথে এই মেয়েটা কে?
~ জানিনা।
~ তুই ফোন দিয়ে জিজ্ঞেস কর কোথায় সে!
~ না থাক।
~ তুই দিবি কিনা?
~ দিচ্ছি।
পিহু আহির কে ফোন দেয় চার পাঁচ বার রিং হওয়ার পর রিসিভ করে পিহু কে বলে~ এতো বার ফোন দিচ্ছিস কেন দেখছিস যখন ধরছি না। পিহু অন্য কিছু না বলে জিজ্ঞেস করে ~ আপনি কোথায়?
~ আমি রাস্তায় ব্যস্ত আছি রাখ। কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে কেটে দেয়।
পিহু অবাক চোখে আহির আর সেই মেয়েটার দিকে তাকিয়ে আছে। মিথ্যা কেনো বললো তাকে পিহু আর দেরি না করে বলে~ আজকে আর কফি খেতে ইচ্ছা করছে না চল চলে যাই। পিহুর মন খারাপ বুঝতে পেরে তারা আর কিছু না বলে আহির কে এটা সেটা বলতে বলতে চলে যায়। তবে পিহুর মুখে কোনো কথা নেই। বাসায় গিয়ে ফ্রেশ না হয়ে যেভাবে ছিল সেভাবেই শুয়ে পরে।
এদিকে আহির খবর পেয়েছিল আজকে কফি শপে কিছু বে*আইনি লোকেরা তাদের বাড়তি ইনকামের গোপন মিটিং করবে। তাই ছদ্মবেশ নিয়ে একটা লেডি পুলিশ অফিসার কে নিয়ে এসেছে। এমন ভাবে এসেছে দেখে যাতে মনে হয় গার্লফ্রেন্ড বয়ফ্রেন্ড। চারপাশে নজর রাখছিল এমন সময় পিহুর মন আশা করে নি সত্যি বললে অনেক কিছু জিজ্ঞেস করতো পিহু, তাই কোনো মতো কিছু একটা বলে রেখে দিয়েছে।
♪
♪
♪
আহির বাড়ি আসতে আসতে দশটা বেজে যায়। এই কেসটা নিয়ে সে একটু বেশিই ব্যস্ত আছে। বাড়ি ফিরে কলিং বেল না দিয়ে ডুবলিকেট চাবি দিয়ে লক খুলে ভেতরে যায়। অন্ধকার দেখে একটু অবাকই হয়। কারণ পিহু দিনের বেলাও জানালা না খুলে লাইট দিয়ে রাখে আর এখন তো রাত। কয়েকটা ডাক দেওয়ার পর সারা না পেয়ে নিজেই লাইট দেয়। রুমে গিয়ে দেখে পিহু চুপচাপ শুয়ে আছে।
~ কি রে কখন থেকে ডাকছি শুনছিস না কেন?
~ এমনি।
~ রাতে খেয়েছিস?
~ হুম খাবার টেবিলে রাখা খেয়ে নিয়েন।
~ তোর কি শরীর খারাপ?
~ নাহ।
~ পড়া বাদ দিয়ে শুয়ে আছিস কেন তাহলে?
~ পড়া শেষ কথা বলতে ইচ্ছা করছে না আপনি যান।
~ কি হয়েছে তোর?
~ সব কিছু কি আপনাকে বলতে হবে?
~ হ্যাঁ হবে। ভুলে যাবি না তুই আমার বউ।
~ তাহলে অন্য মেয়ে নিয়ে কফি শপে কি করিস?
আহির এবার বুঝতে পারে পিহু কোনো ভাবে তাদের বিকালে দেখে ফেলেছে। তাই পিহু কে আরেকটু রাগাতে বলে ~ তোর এতো জ্ব*লছে কেনো রে পিহু?
~ আমার,,,,,,,,
#চলবে?😔