#মৈথিলী (দুইপর্বের গল্প)
– আমার নাম সাজিদ বখতিয়ার। মূলত চব্বিশ বছর আগে আপনার ওয়াইফ আমার সাথেই স্বেচ্ছায় পালায়… এখন মনে পড়ে?
সাজ্জাদ সাহেব হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে আছেন। মুখ থেকে কোন আওয়াজ আসছে না। সামনে বসা ভদ্রলোক কন্ঠ সামান্য না কাপিয়ে কত স্বাভাবিক ভাবে কথাটা বলল।কিছুক্ষণ আগে তার পুত্রবধু নিজেই নিয়ে এসেছে। তাকে বলে রাখা হয়েছিল সাজ্জাদের স্কুলের বন্ধু দেখা করতে আসবেন তার সাথে। তনিমা আন্দাজে এই ভদ্রলোককে নিয়ে এসেছেন।শুরুর দিকে টুকটাক কথায় সাজ্জাদের মনে হলো এই লোক আসলেই পরিচিত। বেশ অনেক কিছু জানে সাজ্জাদের অতীতের । কিন্তু কিছুতেই মনে করতে পারছিলেন না কোথায় দেখেছেন। আজকাল অসুস্থতার জন্য কেমন এলোমেলো লাগে। সেদিন পুত্রবধু বলছিল ঘুমের ঘোরে মিথি মিথি করে কাকে যেন ডাকছিলেন।
“মিথি কে বাবা?বিশেষ কেউ নাকি? ”
তনিমা বর্তমান যুগের ফুর্তিবাজ মেয়ে। শ্বশুরের সাথে কথার সহবত শেখেনি, উল্টো সাজ্জাদ বিব্রতবোধ করছেন। যে অধ্যায় জীবন থেকে শুধু বন্ধই করা হয়নি উপড়ে ছিড়ে ফেলা হয়েছে, সেইখানের ভুলে যাওয়া একটা নাম এত এত দিন পরে মুখে আসার কোন যুক্তি নেই। আসলে প্রেশার আর ডায়বেটিসটা উঠা নামা করছে বড় বেশি রেগুলার ফিজিশিয়ান দেশের বাইরে আছেন, দুই দিনের মধ্যে আসবেন ।কিন্তু এই কয়দিনে সমস্যা আরও বাড়ছে উল্টাপাল্টা বলছেনই না অনেক উল্টাপাল্টা দেখছেনও। সেদিন মর্নিং ওয়াক থেকে ফিরে গেস্টরুমের কোনায় যেন শায়নের ছোটবেলা দেখলেন,। সেই ছোটকালের মতো হাত-পা ছড়িয়ে একা ঘরে ভয় পেয়ে চিৎকার করে কাঁদছে। সাজ্জাদ সাহেব লাঠিতে ভর করে এগিয়ে যেতেই দেখেন কেউ নেই। পাশের বাসার বেলকনিতে একটা বিড়াল চেচাচ্ছিলো শুধু। হতে কী পারে এই লোকেরও আসলে কোন অস্তিত্ব নেই, পুরাটাই কল্পনা?
-আমাকে চিনতে পারছেন না মানলাম কিন্তু নিজের স্ত্রী মিথিলাকেও ভুলে গেছেন আশ্চর্য কথা! মিথিলা আপনার পুত্রের মা, যাকে আপনি..
– শাট- আপ! গেট দ্যা হেল আউট অফ হিয়ার!
সাজিদ হাসলো নির্লিপ্ত গলায় বললেন- কাম ডাউন সাজ্জাদ সাহেব, উত্তেজিত হবেন না, আপনার শরীরের জন্য ভালো না। যদিও আপনার উত্তেজনা দেখে আমি খুবই ইনজয় করছি। তবুও এই মুহূর্তে উত্তেজনা পরিহার করেন। মাত্র মাত্র ছেলের বিয়ে দিয়েছেন ঘরে ফুটফুটে সুন্দর ছেলেবউ! এতো দ্রুত পারিবারিক কেলেঙ্কারির কথা তার কানে গেলে ব্যাপারটা কী ভালো হবে?
– তুমি কী চাও?
– তেমন কিছু না, অসুস্থ মানুষ কখন মরে-টরে যান, ভাবলাম আপনার ওয়াইফকে সেদিন কিডন্যাপ কেন করলাম সেটার একটা ছোট্ট ব্যাখ্যা দিয়ে যাই!
– তুমি আমার বাড়ি থেকে বের হও, আমি কিছু শুনতে চাই না।
– আপনি না শুনলে সমগ্র পৃথিবী শুনবে, সেটা মনে হয় আপনার “সো কল্ড” সম্মানের জন্য আরও খারাপ হবে। বেটার ইউ মেক ইউর চয়েস সাজ্জাদ সাহেব।
সাজ্জাদ সাহেব চুপ করে গেলেন মাথা এলোমেলো লাগছে, ঘাড়টা ধরে আসছে প্রেশার কী বাড়লো? নার্স মেয়েটা কই গেল? সাজ্জাদ সাহেব অসহায়ের মতো কলিংবেলটা খুঁজছেন। সামনে বসা সাজিদ নির্বিকার ভঙ্গিতে বলল,
” ভয় নাই এতো সহজে মরবেন না সাজ্জাদ সাহেব। আপনার মতো ক্যারেক্টারদের ব্যাপারে যমেরও অরুচি আছে! কবরে একটা পা রেখে চি চি করবেন তবু আজরাইল সাহেবের দয়া হয় না। মূলত ঘেন্নাবোধ তারও প্রবল কিনা,।যাহোক, আজ যখন দেখা হয়েই গেল কিছু নির্মম সত্যি কথা আপনাকে বলা দরকার। বিগত দিনের কষ্টকর অতীত যে একটা বিষময় ফসল যার বীজ বপনকারী আপনি।
সাজ্জাদ সাহেব নীরবে তাকিয়ে আছেন। সাজিদ কিছুক্ষণ তাকে নিরীক্ষণ করে মৃদু গলায় বলল,
“আপনার ওয়াইফ চাপ্টারে পরে আসি, আগে নাহয় তিথিকে নিয়ে কথা বলি, ?আপনি তখন বুয়েটে পড়তেন, সিভিলে থার্ড ইয়ারে মনে হয়। সে আপনার ছাত্রী ছিল৷ ছাত্রী,বা অনুরাগী, কিংবা ভক্ত, আসক্ত, এক বোকাসোকা অষ্টাদশী! মনে পড়ে তিথিকে?
সাজ্জাদ সাহেব চাইছেন না তবু মনে পড়লো,এতো এতো দিন পরেও মুখটা স্পষ্ট হচ্ছে স্মৃতির চোখে। গাঢ় শ্যামবর্ণের বেশ স্বাস্থ্যবতী, বড় বড় চোখ, চ্যাপ্টা নাক পুরুঠোট৷ গোলগাল মুখের বোকা বোকা চেহারার মেয়েটা। পড়াশোনায় দারুণ কাচা। লক্ষ্মীবাজারে বেশ বড় চারতালা বাড়ি ছিল, বাবা মায়ের অনুরোধ যেকোনো মুল্যে অংকে পাশ করাতে হবে। সাজ্জাদ সাধারণত কোচিংয়ে ব্যাচে পড়াতো, কিন্তু এই ছাত্রীটাকে সময় করে বাড়িতে গিয়ে পড়াতে হতো। তার ব্যাবসায়ী বাবা বিশাল মাইনেতে সাজ্জাদকে রাজি করিয়েছিল। সাজ্জাদ বাধ্য হয়েছিল টাকার অংক শুনে। তবে পড়াতে গিয়ে বুঝেছিল সবই অরণ্যে রোদন। এই মেয়ের সাথে ফিজিক্সের সূত্র বোঝানো আর হিব্রুতে কবিতা শোনানো এক কথা ছিল। অসহ্য বিরক্ত লাগতো তবু টাকাগুলোর আলাদা আকর্ষণ ছিল।
” শুধু টাকার আকর্ষণে আপনি তাকে পড়াতে যেতেন না, এই ব্যাপারটা তার মৃত্যুর পরে পরিবার জেনেছিল পরে”
সাজ্জাদ সাহেব শান্ত গলায় বললেন, ” তিথির মাথায় তেমন মগজ ছিল না, । তবে আমি চেষ্টার ত্রুটি করিনি, কিন্তু আই এ তে উত্তির্ণ হতে পারেনি। সুইসাইড করে বোকামি করে বসলো…
” সুইসাইড করেছিল ঠিকই কিন্তু কিন্তু ফেল করার জন্য না, ” সাজিদের কন্ঠ থমথমে, ” তিথি বোকামি করেছিল আপনাকে বিশ্বাস করে, নিজের সব কিছু উজাড় করে দিয়ে, আপনি যার মর্যাদা রাখেন নি! ওর সুইসাইড নোটটা এখানও সংরক্ষিত আছে সাজ্জাদ সাহেব।”
সাজ্জাদ সাহেবের মনে হলো শিরদাঁড়া দিয়ে কেমন হিমশীতল স্রোত নিচে নামছে। এই সত্যি সম্পর্কে তিনি এত বছর ধরে অবগত ছিলেন না কিছুতেই না। তবে তিথি মৃত্যুর খবর তাকে কেমন স্বস্তি এনে দিয়েছিল। নিজেকে অদ্ভুত নির্মম লাগছিল সেদিন.. .
*******
তনিমা ভেজানো দরজার ফাক দিয়ে লক্ষ্য করলো, অতিথির সাথে তার শ্বশুর মাথা দুলিয়ে কথা বলে যাচ্ছেন। তনিমা লোকটাকে চেনে না তবে পরিচ্ছদে দেখতে বেশ অভিজাত। বাবার বয়সী হলেও তাকে আদব লেহাজে কোথায় যেন একটা এন আর বি গন্ধ মেশানো ছিল।ড্রইংরুমে তনিমাকে দেখেই চট করে উঠে দাঁড়ালো, এই ভদ্রতা বিলেতি কেতার। দীর্ঘদিন বিদেশে ছিলেন বোধহয়। যাক একদিকে ভালো হলো, তার শ্বশুর কথা বলার একটা লোক পেলেন। কিন্তু তিনি শুরুতে চিনতে পারছিলেন না।
শায়নকে একটু ফোন করে জিজ্ঞেস করা যায় সে সাজিদ নামে তার বাবার কোন বন্ধুকে চেনে কি না,।
শায়নের ফোন বেজে যাচ্ছে শায়ন ফোন তুললো না। অথচ তার পি এ বলেছে লাঞ্চ আওয়ারেই শায়ন বেরিয়ে গেছে। তনিমা লক্ষ্য করছে কয়েকদিন ধরেই শায়ন কেমন যেন অস্থির। ঠিক মতো না খাচ্ছে না, কথা বলছে না ।তাদের বিয়ের পুরাপুরি এক বছরও হয়নি আচরণে হঠাৎ এই পরিবর্তন তনিমা ঠিক নিতে পারছে না। সে ছোটকাল থেকে বেশ স্বাধীনচেতা, এই বিয়েতে তার সিদ্ধান্ত নিয়ে কেউ ঝামেলা করেনি। করার সাহসই পায়নি৷ শায়নের যোগ্যতাই এমন প্রকৌশলী বাবার প্রকৌশলী ছেলে, সুদর্শন স্মার্ট অনেক নারীর আকাঙ্খা। তবু বিয়েতে তনিমার মা একটু ঘ্যানঘ্যান করেছিলো, ” সবই ভালো কিন্তু ছেলেটার মায়ের চরিত্র যুতের না মা,পাঁচবছরের বাচ্চাকে রেখে পালিয়েছিল এমন ধরনের বাচ্চাদের নিজের মনও স্থিতিশীল হয় না, রক্ত বলে কথা । আর একটু ভেবে দেখ…”
তনিমার ঝাঝালো কথার ধারে মায়ের কোন যুক্তি টেকেনি। তবে এখন কেমন কেমন দুশ্চিন্তা ভর করেছে। যদিও শায়ন তেমন কিছু করলে বারোটা বাজিয়ে দেবে।তবে এটা সত্যি যে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিয়েও যুদ্ধে নামার ইচ্ছা হয়তো কোন সৈনিকই রাখে না । বিয়ের পরে এই বাড়িতে এসে তার শাশুড়ী মায়ের কোন ছবি বা কোন স্মৃতি তনিমা পায়নি। এটাই স্বাভাবিক, একজন মহিলা যে এতো ভালো স্বামী আর মাত্র পাঁচবছরের ফুটফুটে বাচ্চাকে রেখে প্রেমিকের হাত ধরে পালিয়ে যেতে পারে তার কোন চিহ্ন রাখার মানে হয় না। তবে কিছুদিন আগে বাড়ির গোডাউনে পুরান এলবামে কিছু ছবি উদ্ধার হয়েছে। বাড়ির পুরান ঝির সাহায্যে জেনেছে তার পরিচয় আর হতভম্ব হয়ে গেছে। এইই তিনি? এই অপ্সরাদের মতো রূপবতী মহিলা। শায়নের বাবাও যুবককালে বেশ সুপুরুষ ছিলেন কিন্তু মহিলার তুলনায় যেন অনেকটাই ফিকে। লালশাড়ি পরা বধুবেশে মেয়েটার শরীর থেকে যেন আলো বিচ্যুরিত হচ্ছে । তনিমা তাকে মনে মনে সুন্দরীই আশা করেছিল, কিন্তু এমন নিষ্পাপ কিশোরী মুখের মেয়েটা কি আসলেই দ্বিচারিণী ছিল? মুখোশের আড়ালের আসল মানুষটা অবশ্য আড়ালেই রয়ে যায় তাদের আসল চেহারা দেখতে খুব কাছাকাছি যেতে হয়। আর পৃথিবীর সব মুখোশই দেখতে সুন্দরই হয়।
শায়ন বেশটুকু তার মায়ের মতো দেখতে। ছোটকালে নাকি এই ছবি দেখিয়েই শায়নের কান্না বন্ধ করানো হতো। তাই ছবিগুলো নষ্ট করা হয়নি।তনিমার মায়ায় বুকটা ভরে যায় কথাগুলো শুনলে,। আবার কেমন যেন একটা খচখচানি জেগে উঠে। তনিমা সুন্দর হলেও এই মহিলার সৌন্দর্যর ধারেকাছেও নয়। তখন এতো মেকাপের কারিগরি ছিল না তবুও কতটা অপরূপা। শায়নের নিজের মায়ের তুলনা করে যদি নেশা কেটে যায়? বলা ত যায় না, যদি..
বান্ধবী নিতার একটা টেক্সট ম্যাসেজ এলো , একটা ছবি, শায়নের। তার সাথে বসে আছে জিনস টি শার্ট পরা আধুনিকা। ছিপছিপে গড়ন কাটাকাটা চোখমুখ দুধে আলতা গায়ের রঙ।
” আজ নিউ মার্কেট গিয়েছি কাপড় কিনতে তখন দেখলাম ইনাদের। এই হুরপরীর পরিচয় কি রে? তোর সাহেবের খবর রাখিস?”
তনিমা স্তম্ভিত হয়ে তাকিয়ে আছে ছবিটার দিকে।
******
শায়ন শান্ত চোখে তাকিয়ে আছে মেয়েটির দিকে। মেয়েটার আচার আচরণ কিছু ধরতে পারছে না। সে হাসিমুখে কয়েকদিন ধরে তার জীবন দূর্বিষহ করে তুলছে। এখনো খুব আগ্রহ নিয়ে একটা ফুচকা হাতে তুলে উল্টে পাল্টে দেখছে,
– এই সেই লিজেন্ডারি ফুচকা যেটার এতো গল্প আমি আমার মায়ের কাছে শুনেছি,
” প্লিজ! আমি তোমার মায়ের কোন গল্প শুনতে চাচ্ছি না! ”
” শুনতে না চাইলে শুনবেন না, কথাগুলো আমি নিজের সাথে বলছি আপনার কাছে আমি যা চাচ্ছি সেটা আপনি জানেন ,
” তুমি যা করতে চাইছো তাতে কোন লাভ নেই, তুমি কিছু করতে পারবে না
মেয়েটা হাসিমুখে মাথা দুলিয়ে বলল, ” লাভ আছে কি না সেটা তো রিপোর্ট বলে দেবে যেটা দিতে বিকাল চারটা বাজবে। দেখেন মিস্টার শায়ন, আমার আপনার ক্ষমতা দেখা হয়ে গেছে। আপনি আমাকে কিছু করতে চাইলে তখনই করতে পারতেন যখন আমি প্রথম আপনার সাথে দেখা করতে এসেছি। তবে আমি ক্যানাডা থেকে যখন এসেছি গুছিয়েই এসেছি। আমার কাছে এইসব হম্বিতম্বি করা বন্ধ করেন। আপনি নিজেও জানেন আপনি একটু ভেজাল করলে জেলে চলে যাবেন বেটার ইউ কাম ডাউন এন্ড লিসেন টু মি।
” ওয়াট ডু ইউ ওয়ান্ট ফ্রম মি”.শায়ন চিবিয়ে চিবিয়ে বলল
” আই ওয়ান্ট ইউ টু রিড দ্যা লেটার ”
শায়ন তার সামনে রাখা বাদামী খামের দিকে তাকালো ক্ষিপ্র গতিতে উঠালো, ইচ্ছা করছে ছিড়ে ফেলে,
” নো নো নো শায়ন ডোন্ট ইউ এভার থিংক এবাউট দ্যাট মিস্টেক! ” মেয়েটা মিটিমিটি হাসছে।
“যদিও আমার মন চাইছে না এটা আপনার হাতেও দিতে কিন্তু আমি আমার অসুস্থ মাকে কথা দিয়েছিলাম। ইট ওয়াজ হার লাস্ট উইশ! এই চিঠি আমি আপনার হাতে পৌঁছে দেব!এই চিঠি একজন মানুষ তার তীব্র অসুস্থতা অগ্রাহ্য করে একটু একটু করে লেখেছে, কেমো থেরাপির উইকনেস, তীব্র জ্বর, ব্যাকপেইন সব ভুলে যেত যখন সে লেখত… এন্ড দিজ থিংকস মেইড মি ফিল সো জেলাস, ইউ নো? বাট দ্যা ফ্যাক্ট ইজ, দ্যা লেটার বিলংকস টু ইউ! সো বেটার ইউ রিড ইট এন্ড গিভ মি ব্যাক।
মেয়েটার কন্ঠে কেমন একটা আর্দ্র আহবান শায়নের বুকটা কাপিয়ে দিল। এর আগ পর্যন্ত প্রচন্ড বিতৃষ্ণা হচ্ছিল এখন কেমন যেন একটা অযাচিত মায়ায় আচ্ছন্ন হয়ে কাঁপা হাতে ইনভিলপটা খুলল। গোটাগোটা ঠাস বুনটে লেখা চিঠি আজকাল দেখাই যায় না। কালো কালো অক্ষর গুলো যেন মায়ার কালিতে ঢোবানো।শায়নের বুক কাঁপছে, প্রাণপণ শান্ত মুখে পড়া শুরু করলো
শায়ন,
কেমন আছো আব্বু?জানি তোমার মনে আমার উপর অনেক অভিমান। কিংবা হয়তো অভিমান নয় ভালোবাসার দাবী মুছে গেলে সেথায় রাগ আর ক্ষোভ জমে থাকে অভিমান নিঃশেষ হয়ে যায়। এটাই স্বাভাবিক। পাঁচবছরের ঘুমন্ত বাচ্চাকে রেখে যে তার প্রেমিকের হাত ধরে পালিয়ে যায় সে কখনো কোন সমবেদনার যোগ্য নয়। আমি তোমার কাছে সমবেদনা চাই না বাবা । তবে কী জানো, জীবনের শেষপ্রান্তে এসে কখনো কখনো খুব ভয় হয় আমার এই নীরবতা তোমার নিজের মধ্যের ক্ষোভটাকে বাড়িয়ে না দেয়। ফলশ্রুতিতে তোমার কখনো নিজের ক্ষতি না করে বস। আমায় তুমি যত অস্বীকার কর যত ঘৃণাই কর এই ঘৃণা তোমার ভেতর বিষ ছড়িয়ে দিক, এ আমি চাই না।
আমি এমন একটা সিদ্ধান্ত কেন নিলাম সেটা জানার জন্য তোমাকে আমার কিছু আগের জীবনের ঘটনা বলতে হবে। নয়তো তুমি বুঝবে না।
ভয় নেই বাবা আমি আমার কাজকে বৈধতা দেবার জন্য তোমার কাছে কোন যুক্তি দাঁড় করাবো না। শুধু কিছু ব্যাখ্যা দেবার জন্য তোমার জীবনের পরিচিত কিছু মানুষকে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেব। তার মাঝে সবচেয়ে আগে আসেন তোমার বাবা। যখন আমি মাত্র অঅষ্টাদশী তখন তার সাথে আমার পরিচয়। মনে আছে কী দারুণ ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম সেদিন তাকে দেখে।সবে মাত্র আই এস সির পাঠ চুকিয়ে পেরিয়ে মেডিকেল কলেজের চৌকাঠ মাড়িয়েছি । নতুন পরিচয় নতুন অনাগত দায়িত্ব আমায় বিগত দিনের ছেলেমানুষী ভোলাতে পারেনি। কৈশোর যৌবনের সন্ধিক্ষণের সেসব দিনে বৃষ্টি দেখলে পাগল পাগল লাগতো ছুটে চলে যেতাম ছাদে। ঝপঝপ ভিজে শান্ত করতাম উচ্ছ্বসিত তরুণ প্রাণটাকে। তখনও জানতাম না তোমার নানার বাড়িতে ছাদের ঘরটা বুয়েটের ছাত্ররা ভাড়া নিয়েছে ।
সেদিন এক ধোঁয়া তোলা বাদল ঝড়ে তোমার বাবাকে হঠাৎ দন্ডায়মান দেখে কঠিন ভাবেই হোঁচট খেয়েছিলাম ছাদের শক্ত পিচ্ছিল মাটিতে।কে জানে ভাগ্য হয়তো এই আগন্তুক দেখিয়ে সাবধান করতে চেয়েছিল আমিই সেই ইশারা বুঝিনি। উল্টো অজানা সর্বনাশের কাছে সপে দিয়েছিলাম নিজেকে। মচকে যাওয়া পায়ে আহত আমায় সে নির্দ্বিধায় কোলে নিয়ে নিচে নেমে আসলো। আমি তখন ভেবে পাচ্ছিলাম না ব্যাথা পেয়ে আমি কল্পনার রাজ্য থেকে পৃথিবীতে এসেছিলাম নাকি আরও বেশি কল্পনায় ডুবে গিয়েছিলাম। শুধু বুঝেছিলাম আমার জীবন পাল্টে যাচ্ছিল প্রতি মুহূর্তে। পড়াশোনায় একনিষ্ঠ আমি ডাক্তার বাবার হবু ডাক্তার কন্যার চোখে তখন পরিকল্পিত সব স্বপ্ন ম্লান হয়ে স্পষ্ট হচ্ছিল শুধু একজন সুদর্শন যুবক …
*******
” তিথির আমি কোন ক্ষতি করিনি সাজিদ, ” সাজ্জাদ সাহেব ঠান্ডা গলায় বললেন
” কোন ক্ষতি করেননি, শুধু তার ভেতরের নারীসত্তাকে গুড়িয়ে দিয়েছিলেন। তার হৃদয়টা একটা পিংপং বলের মতো খেলে ছুড়ে ফেলে দিয়েছিলেন। ”
সাজ্জাদ ঘাড় সোজা করে কিছু বলতে গিয়ে আশা ছেড়ে দিলেন। অনেক দিন পরে একটা না মেলানো হিসাব একটি একটু করে মিলছে আর তিনি আরও বেশি অসুস্থবোধ করছেন। তাহলে এ-ই সে ছিল যে মিথিলাকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল উদ্দেশ্য প্রতিশোধ নেওয়া । গোয়েন্দা পুলিশ দিয়ে এর পরিচয় শত চেষ্টা করেও বের করতে পারেননি তাকে তুলে নেওয়া শয়তানগুলো মুখই খোলেনি। মিথিলাও কিছু বলেনি।কিন্তু মিথিলা একে চিনিতো কী করে? আসলেই কী চিনতো? না কি সেটা সত্যি দূর্ঘটনা ছিল? ….!
তার অস্থির বোধ হচ্ছে এতো দিন পরে প্রায় ভুলে যাওয়া কর্মের দায়ের ওজন সাজ্জাদ নিতে পারছেন না। নতুন করে আবার হিসাবে বসতে হচ্ছে। তিথি মেয়েটা পড়াশোনায় গাধী ছিল। তার প্রবণতা তরুণ গৃহশিক্ষকের প্রতি আলাদা ছিল এটা সাজ্জাদের বুঝতে অসুবিধা হয়নি। সাজ্জাদ এসবে অভ্যস্ত ছিল মেধাবী সে ছিলই সাথে ব্যাক্তিত্ব আর চেহারাটা প্রথম দেখায় মেয়েদের বুকে ঝড় তুলে দেবার জন্য যথেষ্ট ছিল । সেসব দিনে কিছু একাকিত্বে কাটছিলো, ক্লাসে সুন্দরী মেয়ে বলতে তেমন কেউ ছিল না,। কেন যেন নবযৌবনপ্রাপ্ত তিথির সাথে সময় কাটানোর খোলা সুযোগকে অবহেলা করতে ইচ্ছা করেনি। সাজ্জাদের হিসাব বেশ স্পষ্ট ছিল হৃষ্টপুষ্ট কদাকার বড়লোকের মেয়ে, বোকা যার কারণে বেশি ঝামেলা করবে না বাবার অগাধ আছে,একমাত্র অকর্মা ভাই বিদেশে থাকে , পরিবারে বেশি শিক্ষার প্রসার নেই যার কারণে নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে। এম এসসিটা দেশের বাইরে করার জন্য টাকা দরকার শ্বশুরবাড়ির খরচে উঠে যাবে। সব কিছু গুছিয়ে আগাচ্ছিলো।সাজ্জাদের পক্ষ থেকে তিথি একটু একটু প্রশ্রয় পেয়ে স্বপ্ন দেখা শুরু করেছিলো। পারলে নিজের ক্ষমতায় রাজভান্ডার খুলে দেয় সাজ্জাদের সেবায়। বন্ধুরা টিটকিরি করতো বড় গাছে লাউ বেধে সাজ্জাদ বিরাট লাভে আছে। ভালো বেতনের সাথে, সাজ্জাদের টেবিলের ড্রয়ারে জমা পড়ছিল দামি ঘড়ি, দামি শার্ট, বিদেশি পারফিউমের মতো উপহার। তবে এই সব কিছুর আকর্ষণ একটা ঝুম বৃষ্টির সন্ধ্যায় শেষ হয়ে গেল।
এক বিকালে নতুন বাড়িওয়ালার সদ্য মেডিকেলে ভর্তি হওয়া কন্যাকে প্রথম দেখায় বাকরূদ্ধ হয়ে গিয়েছিল সাজ্জাদ। এতো নিখুঁত কেউ কিভাবে হয়?যেন শ্বেত মর্মরের জীবন্ত কোন গ্রীক ভাস্কর্য। কোথায় তিথি কোথায় তার পরিকল্পনা বৃষ্টির পানিতে সব ধুয়ে গেল মুহুর্তে। যুক্তি দিয়ে চিন্তা করে দেখলো যে বিয়ে ব্যাপারটা অনেক টেকনিক্যাল ব্যাপার। রূপ গুণ মেধা সব কিছু বিচারে আগানো বেশি দরকার। যাকে বিয়ে করবে সে সাজ্জাদের বংশধরকেও জন্ম দেবে। যেমন তেমন মৈনাকপর্বতকে বিয়ে করলে তার থেকে মাথায় গোবর ভরা ছোট ছোট টিলাই বের হবে অন্যকিছু না।
” আরেক রূপবতী নারী কি পেলেন তিথিকে ভুলে গেলেন? বিয়েই যদি না করতেন এতো স্বপ্ন কেন দেখালেন? তাকে হেয় তুচ্ছ করলেন, সেটাও ঠিক ছিল কিন্তু এতো অপমান এতোটা নীচ অপবাদ কী তার আসলেই প্রাপ্য ছিল? ” সাজিদ তার চোখ জোড়া ছোট ছোট করে তাকিয়ে আছে।
” আমি ওকে এমন কোন কথা দেইনি, কখনো তাকে বলিনি যে তাকে বিয়ে করবো ও নিজে নিজেই…
” দেবতাকে তুষ্ট করতে নৈবেদ্য দিতো আপনি তা গ্রহণ করে তাকে আরও প্রশ্রয় দিতেন।দেবেনই ত ফুটানি করতে উপড়ি টাকা ধারের নামে পকেটে যেতো। সেই বোকা মেয়েটা আপনার চাল বুঝলো না। নিজের মতো স্বপ্নের জাল বুনতে লাগলো। সেই জাল এতো বড় হলো যে তার ধ্যান জ্ঞানে পরিণত হয়ে গেল। তখন আপনি বিশাল এক কাজ করলেন তাকে বাস্তব আয়না দেখালেন। অথচ সেদিন তার বাড়ির লোকেরা অধির হয়ে অপেক্ষা করছিল আপনার সাথে পরিচিত হতে…” সাজিদ থমথমে গলায় বলল।
সাজ্জাদের মনে আছে, আই এ পরিক্ষা শেষের পরেও তিথিকে এড়ানো যাচ্ছিল না। হাবাগোবা মেয়েটা তার জীবনটা দূর্বিষহ করে দিচ্ছিলো। সাজ্জাদ যেখানে যেত সে চলে আসতো। বন্ধুরা তাকে দেখে হাসাহাসি টিপ্পনী করে, সাজ্জাদের শরীর জ্বলে যায়। তিথি কেমন মরা কান্নার মতো শুরু করতো তার পুরা পরিবার নাকি তার ব্যাপারে জানে..! কিন্তু কী জানে? জানার মতো কী ছিল, বেশি কিছুর সুযোগই হয়নি সামান্য একটু মিষ্টি কথা আর হাত ধরাধরি । তবুও একই প্যানপ্যানানি, টি এস সির বন্ধুদের আড্ডায় কি বুয়েটের ক্যান্টিনে,কি বন্ধুর বাসায় সব জায়গায় এসে উপস্থিত।
সাজ্জাদের মিথিলার সাথে যোগাযোগ মাত্র জমে উঠেছে। মেয়েটা যেমন মেধাবী তেমনি সুন্দরী স্বভাবও দারুণ মিষ্টি।ক্রমে আকর্ষণ বাড়ছে এই মেয়ে না হলে চলছেই না। মাত্র রেজাল্ট আউট হয়েছে তখন কয়েকটি কোম্পানিতে ইন্টারভিউ দিয়েছে । মিথিলাকে পুরাপুরি পেতে ভালো একটা চাকরি খুব জরুরি। কীভাবে কি করা যায় প্রতিদিন বসে প্ল্যান হয়। এমন একদিন তিথি বন্ধুর বাড়ির সবার দাওয়াতে অনুষ্ঠানে এসে উপস্থিত। তার বাবা বিদেশ থেকে ফিরেছে দেখা করতে হবে।সাজ্জাদের মাথায় যেন রক্ত চড়ে গেল হঠাৎ।
” তোমার সমস্যাটা কি তোমার আব্বা আসছে তো আমি কী করব?”
” আব্বা অপেক্ষা করছে আপনি বলছিলেন দেখা করবেন..
” সেটা আমি জেনুইনলি বলসিলাম আমি কি বলসিলাম যে তোমাকে বিয়ে করব? ঠিক ভাবে বলো তো, নিজের এই জাম্বুরার কোয়ার মতো ঠোঁট জলহস্তির মতো বডি নিয়ে এতো স্বপ্ন দেখ কী হিসাবে?বিচার বুদ্ধি যাই থাক সাহস তো মাশাল্লাহ। একবার ভেবে দেখস আমার পাশে তোমাকে মানাবে? গায়ের রঙ দেখস নিজের? ঈশ্বরদিতে আমাদের বাড়ি ঝিও তোমার চেয়ে ফর্সা আর সুন্দর । না চেহারা, না বুদ্ধি, না মেধা আমি তোমাকে বিয়ে করব কেন? একটা কারণ বল আমাকে। আর মেয়েরা এতো ছ্যাবলা হয়? এখান থেকে যাওরে বাবা, এই সব আচরণ দেখে তোমার বাবা এমনিতেই তোমাকে ভালো পাত্রস্থ করতে পারবে না, শুধু শুধু বদনাম হবে বুঝলা? ”
তিথির গুছিয়ে কথা বলতে সময় নিতো। এমন কড়া বাক্যবাণে ভ্যাবাচেকা খেয়ে তাকিয়ে ছিল। কঠিন কথার সামনে তার কন্ঠরোধ হয়ে গিয়েছিল
তার চোখে আহত হবার বেদনার চেয়ে বিস্ময়বোধটা প্রকট ছিল। । সাজ্জাদের বিরক্তিতে করা উচু আওয়াজে সব বন্ধুরা চলে এলো। বড় বড় করে তাকিয়ে ছিল তিথির দিকে। তিথি এরপর আর কথা বাড়ায়নি। নীরবে প্রস্থান করেছিল।
সাজ্জাদ বিষয়টা ঠান্ডা মাথায় ভেবেছিল। এতো কড়া ভাষায় কথা না বললেই কী হতো না? হয়তো আরেকটু কোমল গলায় একটু সংবেদনশীল ভাবে….। তখনই মনের আরেক অংশ দৃঢ়গলায় বলে উঠে,” এভাবেই বলা উচিত। সাজ্জাদের নিজের ভালো থাকার জন্য কাজটা কঠিন ভাবেই করা দরকার ছিল। নয়তো কাঠালের আঠা পিছু ছাড়তো না মিথিলার দিকেও সাজ্জাদ আগাতে পারতো না । মিথিলার আকর্ষণ দিনে দিনে দুর্বার হয়ে যাচ্ছিল।
” আপনার চোখে সে জলহস্তির মতো হতে পারে, আমাদের কিন্তু খুব আদরের ছিল। জানেন, প্রথম যখন শুনি বিশ্বাসই হয়নি পাগলিটা আর নাই। ওই দিনই বিকালের ফ্লাইটে আসছিলাম আমি। যখনই আসতাম সব সময় একটা লাগেজ ভরা ওর পছন্দের চকলেট থাকতো। সেইবারও ছিল কিন্তু সেগুলো খাওয়ার মানুষ আপনার অপমানে ভবলীলা সাঙ্গ করে আগেই চলে গেছে। আমার আব্বা পরিবারের সম্মানের কথা চিন্তা করে তার সুইসাইড নোট গোপন করলেন। নয়তো মানুষ তো খারাপই, সত্যের সাথে মিথ্যার চমকদার মশলা মেশানো মানুষের নেশা। প্রেমের কারণে সুইসাইড শুনে হয়তো আরও কতো কী বানিয়ে ফেলতো। তাই সবাই জানলো তিথি দ্বিতীয়বার ফেল করে ধাক্কাটা নিতে পারেনি। কিন্তু আমি যে রাগে দুঃখে পাগল হয়ে যাচ্ছিলাম,।অন্যকে আঘাত করতে অস্ত্র জিনিসটা মানুষ শুধু হাত দিয়েই চালনা করে না; মানুষের মুখ থেকে এমন ধরনের কিছু কড়া কথা বের হয় সেগুলো অদৃশ্য ধারালো অস্ত্রের মতো ।সেগুলো চোখের সামনে কচকচ করে হৃদয়টা এফোড় ওফোড় করে দেয়। মানুষ আপাতদৃষ্টিতে সোজা দাঁড়িয়ে থাকে ভেতর থেকে অঝোর ধারায় রক্তপাত হতে থাকে। আপনি এই কাজটা এত নিখুঁত ভাবে করেছিলেন যে ওর আত্মবিশ্বাস,নিজের প্রতি ভালোবাসাটা সেই দিনই মরে পচন ধরে গিয়েছিল, আত্মহত্যাটা তো সময়ের ব্যাপার ছিল … ।
বোনকে দাফন করে আমি আপনার খোঁজে সারা বাংলাদেশ চষে ফেললাম। তবে আপনার টিকির সন্ধান পেলাম না।শুনলাম বিয়ে করে কোথাও গা-ঢাকা দিয়েছিলেন।কোন বড়ঘরের মেয়ে ভাগানোর জেরে হুলিয়া জারি হয়েছিল আপনার জন্য। আমার কর্মকান্ড জেনে বাবা আমায় জোর করে আবার ক্যানাডা পাঠিয়ে দিলেন। কিন্তু আমার ভেতরের কৌতূহল কমলো না। পৃথিবী তিথির কথা ধীরে ধীরে ভুলে গেল। কিন্তু আমারতো তাকে দেখা লাগতো যাকে পেয়ে আপনি আমার বোনকে এতোবড় আঘাত দিতে কুন্ঠা বোধ করেননি ।আমি জানতে চেয়েছিলাম এমন কী আছে তার মধ্যে। ছয় বছর পরে মনে এই প্রশ্ন নিয়ে ফিরে আবার এলাম দেশে, সুযোগ মতো দেখলাম তাকে। মানতে হবে সাজ্জাদ সাহেব টেস্ট আছে আপনার। তখন সে এক বাচ্চার মা তবুও কি যেন ছিল, আমার চোখই সরলো না … ”
সাজিদের ঠোঁটে ক্রুর একটা হাসি ফুটে উঠলো। সাজ্জাদ শক্ত মুখে তাকিয়ে আছে। সাজিদ হঠাৎ ঝুকে এলো সাজ্জাদ সাহেবের দিকে,
” জানতে চান তাকে আমি কিডন্যাপ কীভাবে করলাম? আর তিনদিনের মধ্যে তার সাথে একাকি এমন কীইবা করলাম যাতে সে স্বাধীন হয়েও ফিরে এলো আমার কাছে? জানতে চান? ”
(চলবে)
সবাইকে শুভেচ্ছা
#শারমিন_আঞ্জুম
কমেন্টে নেক্সট লেখলে আমার নিয়ম হলো ব্লক করা । কাজেই যারা পড়তে চান প্লিজ ফলো করুন পোস্ট সেভ করুন নেক্সট লেখবেন না ,বিশেষ অনুরোধ 🙂