যদি_জানতে পর্ব ৭

#যদি_জানতে
Part:07 with a bonus part
Written by: Shawon

আহিন নিজের কেবিনে বসে কাজ করছিল।হঠাৎ করে অফিসের সবাই তার কেবিনে এসে তাকে ফুল দিয়ে ওয়েলকাম জানায়,আহিন অবাক হয়ে যায় সবাই এত সুন্দর করে ওয়েলকাম জানানোয়।
মিস্টার সাদাফ নিজের কেবিনে বসে থেকে সব দেখছিলো।কিন্তু কিছু বললো না,কারণ আহিন অনেক খুশি হয়েছে।আহিনের কেবিন থেকে সবাই চলে গেলে সাদাফ আহিনের ল্যান্ডলাইনে কল করে।আহিন কল ধরে বলে….
-“হ্যালো,কে বলছেন?”
-“অফিসের সবাই জানে এটা কার নাম্বার আর তুমি আমাকে জিজ্ঞেস করছো আমি কে?”
-“আমি অফিসে নতুন,তাই আমি কিছু জানি না।যদি আপনি দয়া করে আপনার পরিচয়টা দিতেন!”
-“আমি এই অফিসের বস বলছি!”
-“ওহহ,সরি।সরি স্যার আমি বুঝতে পারিনি আর তাছাড়া আমি নাম্বারটা চিনি না।”
-“ইট’স ওকে,আমার কেবিনে আসো তারাতাড়ি।”
সাদাফ একটু কড়া গলায় কথাটা বললো।আহিন ভয় পেতে লাগলো,না জানি ওর জবটা আজকে প্রথমদিনই চলে যায়।সে মিস্টার সাদাফের কেবিনের সামনে গিয়ে নক করে বললো….
-“ভিতরে আসতে পারি?”
-“হুম,আসো”
সাদাফ ফাইল চ্যাক করছিল,আহিন’কে ভিতরে আসতে বলে ফাইল চ্যাক করা বন্ধ করে দেয়।আহিন সাদাফের টেবিলের সামনে দাড়িয়ে বলে….
-“স্যার,আপনি আমায় ডেকেছিলেন?”
-“কল যেহেতু করেছি সেহেতু ডেকেছিই।যায়হোক তোমার কেবিনে কি হচ্ছিল?এত ভীড় কিসের?প্রথমদিনেই কাজে ফাঁকি দেওয়া হচ্ছে।আমি কিন্তু ফাঁকি দেওয়া একদম পচ্ছন্দ করিনা।”
-“আসলে স্যার,ওরা আমাকে প্রথমদিনের শুভেচ্ছা জানাতে এসেছিল,আর আমি ঠিক কি কাজ করবো তাও বুঝতে পারছিলাম না।”
-“শুভেচ্ছা জানানো হোক বা শোক তা সবসময় ফ্রী টাইমে জানাবে কাজের সময় না।আশা করি আমার কথাগুলো বুঝতে পেরেছো,আর আমার একেকটা কথা মানে একেকটা নিয়ম।”
-“জ্বী,স্যার।আমি বুঝতে পেরেছি।”
-“হুম,তুমি কি বলেছিলে,কি কাজ করবে বুঝতে পারছিলে না!!তুমি ঐ সোফায় বসো আমি তোমাকে দেখিয়ে দিচ্ছি।”
মিস্টার সাদাফ সোফা’র দিকে এগিয়ে যেতে লাগলো।আহিন বললো….
-“আমি অন্য কারো থেকে বুঝে নিবো।আপনার কষ্ট করতে হবে না।”
-“অন্য কারো কাজের সময় নষ্ট করার অধিকার নেই তোমার।তোমার জন্য অন্য কারো কাজের সময় নষ্ট হোক তা নিশ্চয়ই তুমি চাও না।তাই বলছি চুপচাপ এখানে এসে বসো,আমি তোমাকে দেখিয়ে দিচ্ছি!!”
আহিন একদম চুপ হয়ে গেল,আর মিস্টার সাদাফের পাশে গিয়ে বসলো,যথেষ্ট দূরত্ব আছে দুজনের মাঝে।মিস্টার সাদাফ কতগুলো ফাইল নিয়ে কাজ বুঝাতে লাগলো।কাজ বুঝানো শেষ করে দিয়ে বললো….
-“আমার মনে হয় আমি তোমাকে বুঝাতে সক্ষম হয়েছি।”
-“জ্বী,স্যার।”
-“খুব ভালো,যদি বুঝতে পেরে থাকো তাহলে এই ফাইলগুলো এক ঘন্টা’র মাঝে আমাকে করে দেখাও,!!”
১০-১৫ টা ফাইল আহিনের হাতে ধরিয়ে দিয়ে মিস্টার সাদাফ এই কথা বললো।এতগুলো ফাইল প্রথমদিন এক ঘন্টার মাঝে করতে দেওয়ায় আহিন চোখ চড়কগাছ হয়ে যায়।মুখটাকে ছোট বানিয়ে জিজ্ঞেস করে….
-“এতগুলো ফাইল,এক ঘন্টার মাঝে!!”
-“হ্যা,কেন কোনো সমস্যা?”
-“আব না,কোনো সমস্যা না।”
-“তাহলে এখানে দাড়িয়ে না থেকে,নিজের কেবিনে গিয়ে ফাইলগুলো কমপ্লিট করে নিয়ে আসো।আর হ্যা কোনো ফাঁকি দেওয়া চেষ্টা করবে না।মনে রেখো আমার কেবিন থেকে তোমার কেবিনে যা যা করো সবকিছুই দেখা যায়।যাও এখন”
মিস্টার সাদাফের কথা শুনে ভয়ে ভয়ে কেবিন থেকে বের হয়ে গেল।আহিন চলে যাবার পর মিস্টার সাদাফ হাসতে শুরু করে দিলো।আর নিজেকে নিজেই বলতে লাগলো….
-“সরি মিস অনুভূতি,আমি চায়নি এতটা কড়া ব্যবহার করতে,কিন্তু কি করবো বলো এখন থেকে যদি একটু শাসনে না রাখি পরে আর শাসন করতে পারবো না তোমার ভালোবাসায়।তাই আগে একটু শাসন করে নেই,তারপর নাহয় ভালোবাসায় ভরিয়ে দিবো।”

সাদাফ নিজের চেয়ারে বসে পরলো,আর চোখজোড় আটকে রাখলো আহিনের কেবিনে।আহিন কাজ করছে,মুখটাকে একেকবার একেক ভঙ্গি করছে।চুলগুলো সামনে চলে আসছিল বলে বার বার ফু দিয়ে সরাচ্ছিল কিন্তু তাও যখন বারকে বার সামনে চলে আসে তখন কলমের মুখ দিয়ে চুলগুলো আটকে দেয়।মিস্টার সাদাফ আহিনের কান্ডগুলো দেখে অজান্তেই হাসতে লাগলো তখনি কেউ একজন নক করলো…..
-“স্যার,আসবো???”
-“নীরা আসো!!”
-“ধন্যবাদ স্যার,আসলে আপনাকে একটা নোটিশ করতে এসেছিলাম।আপনি এমডি হিসেবে জয়েন করেছেন আজকে পাঁচ মাসের উপরে হয়েছে এখন পর্যন্ত আপনি কোনো পিএ নেন নি!!এইবারও কি নিবেন না!!!”
-“হুম,তুমি অফিসের সবার ডিটেইলস আমার কেবিনে রাখো,আমি সবারগুলো চ্যাক করে তোমাকে কাল সকালে জানিয়ে দিবো।”
-“ওকে,স্যার।আমি তাহলে এখন আসি।”
-“হুম।”
নীরা চলে গেল,সাদাফ তার অনুভূতির দিকে আবার নজর আটকে দিলো।
এদিকে শাহরিয়ার নিজের কেবিনে বসে কাজ করছিল হটাৎ করে তার ফোন বেজে উঠলো।ফোন স্কিনে তাকিয়ে দেখে বাড়ির নাম্বার থেকে কল করা হয়েছে।শাহরিয়ার ফোন রিসিভ করে যা শুনলো,তাতে ওর মুখ একদম শুকিয়ে গেল,কপাল থেকে ঘাম পরতে লাগলো।শাহরিয়ারের বাবা স্ট্রোক করেছে,শাহরিয়ার অফিসের সবকাজ ফেলে রেখে ছুটে গেল হসপিটালে।
হসপিটালের কেবিনে ঢুকতেই তার মা তাকে জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করে দিলো।শাহরিয়ার নিজেও স্বানতা দেওয়ার ভাষা খুঁজে না পেলেও মাকে স্বানতা দিতে লাগলো।শাহরিয়ারের বাবা একটু ধীরে দীরে বললো…..
-“তোরা অযথা চিন্তা কেন করছিস?আমি একদম ঠিক আছি।”
শাহরিয়ারের মা একটু রাগে কন্ঠে বললো….
-“কেমন ঠিক আছোতো দেখতেই পারছি,আর যদি একটা কথা বলো তাহলে কবর আছে।চুপচাপ শুয়ে থাকো।”
শাহরিয়ারের মা এর ধমক শুনে বাবা চুপ হয়ে গেল।শাহরিয়ার কোথাও আহিন’কে দেখতে না পেয়ে তার মাকে জিজ্ঞেস করলো….
-“আর কাউকে দেখছি না,ওরা কোথাও?”
-“আরাফ তো বাসায় গেছে ওর ইউভার্সিটি তে খুব দরকাটি কাজ আছে,তোর আসার একটু আগেই ও গেছে।”
-“ওহহ,আর আহিন?”
-“নাহ,ওকে খবর দেওয়া হয়নি।আমি একবার চেয়েছিলাম ফোন করতে কিন্তু আজকে ওর অফিসে প্রথমদিন তাই আর কল করে জানায়নি।জানালে সবকিছু ফেলে রেখে চলে আসবে।”
শাহরিয়ারের মা’র কথা শুনে শাহরিয়ার আর কিছু বললো না।কারণ কথাটা’র মাঝে যৌক্তিকতা আছে।একটু পরেই কাইফা আর তার মা আসলো।কাইফা’র মা তার ভাবীকে জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করে দিল।কাইফা এক কোনায় দাড়িয়ে চোখের পানি মুছছিল শাহরিয়ার তার দিকে রুমাল এগিয়ে দিল।
সন্ধ্যায় আহিন বাসায় এসে কয়েকবার কলিংবেল বাজালেও কেউ দরজা খুলছিলো না।আরেকবার বাজাতে নিবে তখনি দরজা খুলে যায়।আর কাইফা কে দরজার সামনে দেখতে পেয়ে অনেকটা অবাক হয়ে যায়।
-“তুই এখানে?”
-“হুম,অবাক হয়েছিস নাকি?আর অবাক হতেই পারিস,তোর স্বামীর সংসারে আমি এটা ভেবে।আর তাছাড়া তুইতো সবটা জানিস তাও এতটা াবাক হওয়ার কিছু নেই।”
-“আর তুইও সবটা জানিস,তাহলে আমার সাথে এভাবে কেন কথা বলছিস?”
-“হুম সবটা জানি বলেই তোর সাথে এভাবে কথা বলছি।কারণ তুই এখন আমার থেকে আমার ভালোবাসা দূর করে নিতে চাচ্ছিস।কি মনে করেছিস,আমি কিচ্ছু জানতে পারবো না!!!আমি সব জানি,তুই ঐদিন পার্টিতে কি কি করেছিস সব জানি।আর কেন করেছিস তাও জানি।কারণ তুই শাহরিয়ার কে নিজের করে চাস!!!কি আমি সত্যি বলছি তো???
-“হুম,সব সত্যি বলছিস তুই।আমি শাহরিয়ার কে নিজের করে চায় কারণ ও আমার স্বামী।আমার সবটুকু অধিকার আছে ওর প্রতি,আর তুই আমাদের মাঝে থার্ড পার্সন হয়ে আছিস।”
-“ওহহ তাই!!আমি তোদের মাঝে থার্ড পার্সন নাকি তুই আমাদের মাঝে থার্ড পার্সন হয়ে এসেছিস কোনটা?”
-“যায় হোক,মানুষের অতীতে অনেকেই থাকে,কিন্তু বিয়ের পর সবকিছু বাদ দিয়ে দিতে হয়।আজকে থেকে আমিও আমার স্বামীকে আমি আমার মতো করে নিবো।”
-“তুই কি তোর দেওয়া কথা ভুলে যাচ্ছিস?”
-“কাকে দেওয়া কথা,যে আমাকে দিনের পর দিন ভুল বোঝে,যে আমার মুখের কোনো বিশ্বাস করেনা।”
-“আচ্ছা,তাহলে তুইও শুনে রাখ আমিও আমার শাহরিয়ার’কে নিজের করেই ছাড়বো আর তোকে এই বাড়ি ছেড়ে দূর করে দিবো।”
কাইফা কথাগুলো বলে কিচেনে চলে গেল,আহিন সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠে গেল।রুমে এসে শাহরিয়ারকে দেখতে পেয়ে জিজ্ঞেস করলো…..
-“কাইফা এখানে কি করছে?”
-“মানে!!ওর মামা’র বাসা ও যেকোনো সময় আসতে পারে।এমন অদ্ভুত প্রশ্ন করছো কেন?”
-“কারণ আমি আপনার স্ত্রী,আমার সম্পূর্ণ অধিকার আছে এসব জানার।আর আমি আপনাকে কাইফা’র সাথে দেখতে চায় না।”
আহিন শাহরিয়ারের ল্যাপটপ লাগিয়ে দিলো কথাগুলো বলেই।এবার শাহরিয়ারেরও রাগ উঠে গেল সে আহিনের হাত চেপে বললো….
-“তোমার সাহস কি করে হয় আমার সাথে এভাবে কথা বলার?আমার আর কাইফা’র মাঝখানে এসব বলার।তুমি সবটা জানার পরও কোন অধিকার খাটাতে আসো?অধিকার খাটাতে চাও!!তাহলে চলো আগে বিছানায় চলো,আমিও আমার অধিকার খাটায়।”
শাহরিয়ার চোখ রাঙ্গিয়ে কথাগুলো বললো,এই কথাগুলো বলার সাথে সাথেই আহিন থাপ্পড় বসিয়ে দেয়।তারপর চিল্লিয়ে বলে….
-“আপনার মতো ছেলেদের এসবই মানায়,আপনারা মেয়েদের মন নয় দেহটাকে ভালোবাসেন,আপনার আসল চরিত্র টা আজকে আমার চোখের সামনে তুলে ধরলেন।আপনি ভালো জানেন,কাইফা আর কত মেয়ের সাথে কখন কোথায় কি করছেন।”
এই কথাগুলো বলার সাথে সাথে কেউ একজন আহিনের হাত ধরে টেনে পিছনে ফিরিয়ে কষিয়ে তার গালে থাপ্পড় মারে।আহিন তাল সামলাতে না পেরে বিছানায় পরে যায়,আহিন সামনে তাকিয়ে
দেখে কাইফা ওর দিকে রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।
আহিন’কে টেনে তুলে দাড় করিয়ে বললো…
-“তোর সাহস কি করে হয় শাহরিয়ারকে এসব বলার??তুই কতটা চিনিস ওকে,কতদিনের পরিচয় ওর সাথে তোর??তুই কিভাবে ওর ব্যাপারে এসব বলতে পারিস।ও যেমনই হোক না কেন ওর চরিত্রে কোনো দাগ নেই।ও আজ পর্যন্ত আমাকে একটাবারের জন্যও বাজে ভাবে স্পর্শ করেনি,উল্টো আমি ওকে কিছু বললে ও আমাকে সবসময় বলছে’সবকিছু হবে কিন্তু বিয়ের পর’ আমাদের দুবছরের সম্পর্কে একদিনও লিপকিস হয়নি কিন্তু ঐদিন আমি,আমি জোর করে ওর ঠোঁটে কিস করি।শুধু মাত্র…..”
কাইফা আর কিছু বললে না কারণ শাহরিয়ার সামনে,শাহরিয়ার আহিন আর কাইফার পূর্ব পরিচয় কিছু জানে না।আহিন কাইফা’র কথা শুনে থমকে দাড়ায়,কাইফা’ আর একমুহূর্ত সেখানে না থেকে দৌড়ে নিজের রুমে চলে যায়।শাহরিয়ারও আহিনের দিকে তাকিয়ে ছাদে চলে যায়।আহিন ফ্লোরে থপ করে বসে পরে,কারন সে আজকে কি বলেছে তা নিজেও বুঝতে পারেনি।ও আজকে না জেনে না বুঝে শাহরিয়ার আর কাইফা কে নিয়ে এতগুলো বাজে কথা বললো অথচ তাদের মাঝে এত গভীর কিছুই হয়নি।এসব কথা মনে হতেই কান্নায় ভেঙে পরলো আহিন।
এদিকে কাইফা নিজের রুমে এসে দরজা লক করে বিছানায় শুয়ে কান্না করতে লাগলো।কারন সে আজকে নিজের সেই পুরনো বান্ধবীর গায়ে হাত তুলেছে,যাকে সে আগে অন্যের কথা শুনা থেকে বাঁচাতো সে আজকে নিজেই তার গায়ে হাত তুলেছে।কিন্তু ও কি করতো?নিজের চোখের সামনে নিজের আর নিজের ভালোবাসার মানুষ কে নিয়ে এত বাজে কথা ও সহ্য করতে পারছিল না।নিজের কথা বাদই দিলো কিন্তু শাহরিয়ারের মতো একজন ছেলেকে ও এত বাজে কথা বলেছে,আর যায়হোক একজন প্রেমিকা হয়ে এসব সে শুনতে পারছিল না।সে যে প্রচন্ড ভালোবাসে শাহরিয়ার’কে।
শাহরিয়ার ছাদে এসে দাড়িয়ে আছে।সে বুঝতে পারছে না।আজকে হটাৎ করে কেন এমন করলো আহিন?আহিন কি তাহলে তাকে পচ্ছন্দ করতে শুরু করেছে?নাহ এটা হতে পারে না কারণ আহিন তো সব জানে,সব জেনে কেন আহিন এমন একটা ভুল করতে যাবে।আর যদি তেমন কিছু হয়ও তাহলেও শাহরিয়ার কিছু করতে পারবে না কারণ সে কাইফা কে অনেক ভালোবাসে।
সকাল হয়ে গেছে,সারারাত তিনটা মানুষ না ঘুমিয়েই কাটিয়ে দিলো।আহিন সারারাত জেগে এই সিদ্ধান্তই নিয়েছে যেখানে ওর নিজের কোনো দাম নেই তাহলে সে আর সেইখানে যাবে না।সে এই বাড়ি ছেড়ে চলে যাবে,আর চলে যাবে তাদের দুজনের মাঝখান থেকে।
এদিকে কাইফা সিদ্ধান্ত নিয়েছে,আমি ওকে ভালোবাসি আর শাহরিয়ারও আমাকে ভালোবাসে।যেখানে দুজন দুজনকে ভালোবাসি সেখানে আর ঢ়ে কেউ আসুক আমি পিছু পা হয়ে যাবোনা।
শাহরিয়ারের সিদ্ধান্ত যতদিন এই বাড়িতে আহিন আছে ততদিন সে আহিনের শর্ত অনুযায়ী।ওর শর্ত অনুযায়ী কেউ কারো বিষয়ে কোনো কথা বলবে না।এমনকি এখন থেকে ও আহিনের সাথে একা কথাও বলবে না।সবার সামনে যতটুকু নাটক করতে হয়,যতটুক কথা বলতে হয়।ঠিক ততটুকুই বলবে।
আহিন তিনজনের জন্য কফি বানিয়ে কিচেন থেকে বের হচ্ছিল তখনই কাইফা কিচেনে ঢুকলো।কাইফাকে দেখে আহিন বললো….
-“তোর সাথে আমার কিছু কথা আছে।”
-“আর তোর কোনো কথা শুনতে আমার ইচ্ছে হচ্ছে না।”
-“আজকের পর থেকে আমার কোনো কথাও আর তোকে শুনতে হবে না।ড্রয়িং রুমে চল তোদের দুজনের সাথেই আমার কিছু কথা আছে।”

আহিন কাইফা’র হাত ধরে ড্রয়িল রুমে নিয়ে আসলো।শাহরিয়ার’কে ডাকতে যাবে ঠিক তখনি শাহরিয়ার নিচে নামে।আহিন বলে…
-“আমি আপনাকেই ডাকতে উপরে যাচ্ছিলাম আর আপনিই নিচে নেমে আসলেন।যায়হোক যা বলার জন্য আপনাদের এখানে ডাকা।আসলে আমি এই মিথ্যে নাটক টা আর করতে চাচ্ছি না।আমি আজকেই এই বাড়ি ছেড়ে চলে যাবো।আমি জানি এজন্য আমাদের দুজনকেই অনেক প্রশ্নের স্মোমক্ষীন হতে হবে তাও আমি আর এই নাটক করতে পারছি না।”
আহিনের কথা শুনে শাহরিয়ার আর কাইফা দুজনেই অবাক হয়ে যায়।আহিনের কথা কথাগুলো বলতে খুব কষ্ট হচ্ছিল তা ওর বার বার কথা আটকে যাওয়ার মধ্যেই বোঝা যাচ্ছে।আহিন কথাগুলো বলে উপরে চলে যেতে নিলে শাহরিয়ার একটানে ওকে সোফায় ফেলে দেয়।আহিন চোখ তুলে তাকিয়ে দেখে শাহরিয়ার রাগী চোখে ওর দিকে তাকিয়ে আছে,চোখগুলে গোল গোল হয়ে আছে।আহিন আর কাইফা দুজনেই ভয় পেয়ে গেল,কারণ এর আগে কখনোই শাহরিয়ারকে এতটা রাগতে কেউ দেখেনি।

#চলবে!!!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here