আট্রাসনোগ্রাফির রিপোর্ট টা দেখে ২০ বছর বয়সী ঝুমঝুমকে ডাক্তার সরাসরিই বলে দিলো আপনার ফিজিক্যাল রিলেশন করতে হবে।এটাই একমাত্র ইজি Solution.
ঝুমঝুম ডাক্তার রেহানার কথা শুনে চমকে গেলো।
ঝুমঝুম-কি লিখা আছে এই রিপোর্টে?
ডাক্তার রেহানা-আপনার জরায়ুতে সিস্ট আছে।যদিও এটা তরল পানি জাতীয় ঠোসার মত।কিন্তু অনেক দিন হয়ে যাওয়ায় এগুলো বড় আকার ধারণ করেছে।এই জন্যই আপনার তল পেটে ব্যথা হয়,আর পিরিয়ডের সময় অতিরিক্ত ব্লিডিং হয়।
ঝুমঝুম-এখন আমি কি করবো ডাক্তার?
ডাক্তার রেহানা-ওই যে বললাম,আপনার ফিজিক্যাল রিলেশন করতে হবে।ফিজিক্যাল রিলেশনের পর যদি এই ঠোসা গুলো আপনি আপনি গলে যায় তবে আর কোন সমস্যা নেই আপনার।
আমরা মেডিসিন দিবো,নিয়মিত খেলে ঠিক হয়ে যাবে।
কিন্তু যদি এই ঠোসা না গলে,তবে অপারেশন করতে হবে।
আর এই অপারেশনে প্রচুর রিস্ক আছে।যদি কোন রকম প্রবলেম হয় তবে আপনি আর কোন দিন মা হতে পারবেন না।কিংবা আপনি মারাও যেতে পারেন।
তাই এই সিস্ট থেকে মুক্তি পাবার সব থেকে সহজ উপায় হচ্ছে ফিজিক্যাল রিলেশন।শুনলাম আপনি এংগেইজড,তো তাকে যত দ্রুত সম্ভব দেশে এসে বিয়ে করে নিতে বলুন।
ডাক্তারের কথা শুনে ভার্সিটিতে পড়ুয়া ঝুমঝুম আর ওর বান্ধবী ঝুমুর বাসায় ফিরে এলো।
ঝুমঝুম বাসায় গিয়ে ওর মাকে সব খুলে বল্লো।ছোট বেলা থেকেই ঝুমঝুম ওর মায়ের সাথে খুব ফ্রী।তাই কথা গুলো বলতে ওর তেমন কষ্ট বা লজ্জা হয়নি।আর পৃথিবীতে সব থেকে বড় বন্ধুই তো মা।তাই মায়ের কাছে বলতে লজ্জাই বা কিসের।
ঝুমঝুমের বিয়ে ঠিক হয়ে আছে ওরই বাবার বন্ধুর ছেলে জিহানের সাথে।এংগেজমেন্ট
ও হয়ে আছে।ছেলে প্রবাসী।ছেলে দেশে আসলেই বিয়ে।ছেলে গ্রীণ কার্ড পাচ্ছেনা বলে দেশেও আসতে পারছেনা।
ঝুমঝুমের মা ঝুমঝুমের সব কথা শুনে জিহানকে ফোন দিলো।ফোন দিয়ে সব কিছু খুলে বল্লো।আর বল্লো,বাবা তুমি তাড়াতাড়ি দেশে চলে আসো।এসে বিয়েটা করে নাও।
জিহানঃদেখুন আন্টি!আমি এখন আসতে পারবোনা।তাছাড়া আমার প্রোমোশনের কথাও চলছে।এই অবস্থাতে কোনমতেই আমার আসা সম্ভব না।
ঝুমঝুমের মাঃতাহলে আমরা কি করবো বাবা?ঝুমঝুম যে দিন দিন অসুস্থ হচ্ছে।
জিহানঃতা আমি কি করে বলবো?আমি কি ডাক্তার নাকি!ডাক্তারের সাথে কথা বলুন।
ঝুমঝুমের মা ডাক্তারের সাথে গিয়ে কথা বল্লো।ডাক্তারও সেই আগের কথা গুলোই ঝুমঝুমের মাকে বল্লো।
ঝুমঝুমের মা কিছুই বুঝতে পারছেনা কি করবে।
রাতে হঠাৎ ঝুমঝুমের মোবাইলে রিং বেজে উঠলো।রনক ফোন দিচ্ছে আর ঝুমঝুম বার বার লাইন কেটে দিচ্ছে।
অনেক বার লাইন কেটে দেয়ার পর রনকের মেসেজ দেখে রিসিভ করে।
ঝুমঝুমের ভয়েজ শুনেই রনক বুঝে যায় ঝুমঝুমের মন খুব খারাপ।
রনক ঝুমঝুমকে জিজ্ঞেস করে কি হয়েছে।
ঝুমঝুম বলেনা।রনকের অনেক জেদের পর ঝুমঝুম রনককে মেসেজে লিখে পাঠায় ডাক্তার যা বলেছে,আর জিহান যা বলেছে।
ঝুমঝুম কাঁদছে।রনক কিছুতেই ঝুমঝুমের কান্না থামাতে পারছেনা।রাতে দুজনের কথা শেষে দুজন ঘুমিয়ে পড়লো।
রনক হচ্ছে ঝুমঝুমের বন্ধু,শুভাকাঙ্ক
্ষী,ভালবাসা।
ঝুমঝুম আর রনকের পরিচয় প্রায় ৭ মাস।বন্ধুত্ব,তারপর একে অপরকে মনের অজান্তেই ভালবেসে ফেলে।
দুজনের পরিচয় ফেসবুকের মাধ্যমে।দুজন দুজনকে ভালবাসা সত্বেও ঝুমঝুম বাবার পছন্দের ছেলেকে বিয়ে করতে যাচ্ছে।কারণ ওর বাবা ওকে সরাসরি বলে দিয়েছে,জিহানকে বিয়ে না করলে সে এ মুখ আর কাউকে দেখাবেন না।
রনকও প্রবাসী।ওদের দুজনের সামনা সামনি এখনো দেখা হয়নি।
ঝুমঝুমকে রনক বলেছে ও ঝুমঝুমের শুভাকাঙ্ক্ষী হয়ে বা বন্ধু হয়ে থাকতে চায় ওর জীবনে।তবুও ওকে হারাতে চায়না।
তাই ওদের যোগাযোগটা এখনো আছে।
পরের দিন ঝুমঝুম ফেসবুকে ঢুকতেই দেখে রনকের আইডি ডিএকটিভ।নাম্বারও বন্ধ।
মনে মনে খুব কষ্ট পেলো।নিজের মনকে সান্ত্বনা দিলো,যেখানে জিহানেরই কোন গুরুত্ব নেই ওর অসুখে।সেখানে রনকই বা কি গুরুত্ব দিবে।
ঝুমঝুম দিনকে দিন অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে।পেটে অসহ্য ব্যথা।চুল পড়ে যাচ্ছে।কিছুতেই কিছু হচ্ছেনা।ঠোসা না গলে যাওয়া অব্ধি কোন কিছুতেই সুস্থ হওয়া সম্ভব না ওর।
তিন দিন পর হঠাৎ করেই একটা আননোন নাম্বার থেকে কল।ঝুমঝুম রিসিভ করছেনা।কিছু ক্ষণ পর একটা মেসেজ আসলো,
“ঝুমঝুম আমি রনক,রিসিভ করো”
ঝুমঝুম মেসেজ দেখে আঁতকে উঠলো,এটা তো বাংলাদেশের নাম্বার।তাহলে কি রনক এখন বাংলাদেশে?ভাবতে ভাবতেই ঝুমঝুম ফোন রিসিভ করে।
-হ্যালো।
-এত বার ফোন দিচ্ছি রিসিভ করছো না কেন?
-তুমি জানোনা আমি আন নোন নাম্বার রিসিভ করিনা?আর তুমি আইডি নাম্বার সব অফ করে রেখেছো কেন?
-এই যে তুমি যে রিসিভ করোনা,কখনো প্রয়োজনীয় কলও তো আসতে পারে।আচ্ছা বাদ দাও, ওমুক জায়গায় যেই নদীটা আছে সেখানে চলে আসো।আর এক্ষনি চলে আসবে।
-মানে কি?নদীতে কি?ওখানে আসবো কেন?
-নদীতে মাছ!মাছ ধরবো।তাই আসবে।তাড়াতাড়ি এসো।
-তুমি মাছ ধরবে মানে?তুমি কি নদীর ধারে নাকি?দেশে আসলে কবে?
-আরে বাবা এত কথা না বলে এসো তো তাড়াতাড়ি।না আসলে কিন্তু আমি সারাদিন সারা রাত এখানে অপেক্ষা করবো।সো তাড়াতাড়ি আসো।বাই।
এই কথা বলে রনক ফোন রেখে দিলো।
ঝুমঝুম তাড়াতাড়ি করে একটা নীল শাড়ী পরে নিলো ওর এক ভাবীর কাছে গিয়ে।হাতে নীল চুড়ি,কপালে ছোট্ট একটা নীল টিপ।নীল রনকের প্রিয় রঙ।রেডি হয়ে চলে গেলো নদীর ধারে।
গিয়ে দেখে পেছন ফিরে একটা ছেলে দাঁড়িয়ে আছে।কাঁধে একটা ব্যাগ ঝুলানো।ঝুমঝুম কাছে গিয়ে দাঁড়াতেই রনক ঘুরে দাঁড়ালো।ঝুমঝুমের দিকে তাকাতেই রনক যেন সেন্সলেস হবে,এমন উপক্রম।অপলক চেয়েই আছে রনক,ঝুমঝুমের দিকে।
ঝুমঝুম হাল্কা একটা কাঁশি দিয়ে জিজ্ঞেস করলো,কেমন আছো?
-এইতো আছি।তুমি?
-এইতো বেঁচে আছি।
-নীল শাড়ীতে তোমায় অনেক সুন্দর লাগছে।ঠিক যেন অপ্সরী।
-থাক আর ফোলাতে হবেনা,এমনিতেই দিন দিন ফুলে যাচ্ছি।তুমি দেশে যে?তুমি না দেশে চলে আসলে আর যেতে পারবেনা ওখানে?দু বছর পর না আসতে চাইলে?তবে হুট করে চলে আসলে যে?
-এমনিই,তোমাকে কাছ থেকে খুব দেখতে ইচ্ছে করছিলো তাই তোমাকে দেখতে আর সারপ্রাইজ দিতে চলে আসলাম।
ঝুমঝুম মনে মনে ভাবছে,রনক আমার জন্য নিজের জব ফেলে দেশে চলে আসলো।যেখানে ও জানে যে একবার চলে আসলে ২য় বার আর যেতে পারবেনা।আর জিহান?ওর তো হবু বউ আমি।ও আমার জীবনের পরোয়াও করলোনা।ওর কাছে প্রমোশনটাই বড় হয়ে গেলো!
ভাবতে ভাবতে চোখ বেয়ে দু ফোটা অশ্রু ঝরে পড়লো ঝুমঝুমের চোখ থেকে।
-এই ঝুমঝুম,কি হয়েছে?
-কিছুনা।
-চলো আজ আমরা সারাদিন ঘুরবো।
-না আমি বাসায় যাবো।সবাই চিন্তা করবে।
-তুমি আজ আমার সাথে ঘুরবে।কোত্থাও যাবেনা তুমি।তোমার মনে আছে?আমি তোমার জীবন থেকে একটা দিন তোমার কাছে আবদার করেছিলাম?বলেছিলাম একটা দিন তুমি আমাকে দিবে।সেই দিন টা শুধুই আমার হবে আমার।সেই দিন্টার উপর তোমার কোন দাবী থাকবেনা।আজকে দিন টা তোমার কাছে চেয়ে নিচ্ছি।ফিরিয়ে দিওনা।
ঝুমঝুম রনকের মিনতিতে রাজী হলো।রাজী হলো সারাটা দিন রনকের সাথে ঘুরতে।হয়তো আজই ওদের শেষ দেখা আর আজই শেষ ঘুরা।
ঝুমঝুম আর রনক জায়গায় জায়গায় ঘুরে বেড়াচ্ছে।দেখার মত সুন্দর সুন্দর জায়গা গুলোতে।পা বাড়িয়েছে অজানা গন্তব্যে।যেখানে মন চায় ছুটে বেড়াচ্ছে।
ঘুরতে ঘুরতে হঠাৎ করেই বৃষ্টি শুরু হয়ে গেলো।সাথে তো বিদ্যুৎ চমকানো আছেই।দৌড়ে ওরা একটা বাসায় ঢুকলো।দরজা নক করতেই এক বৃদ্ধা মহিলা এসে দরজা খুলে দিলো।
-কারা তোমরা?কাকে চাও?
রনক-বাইরে খুব বৃষ্টি হচ্ছে আর বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে তাই একটু আশ্রয়ের জন্য এসেছি।বৃষ্টি কমলেই আমরা চলে যাবো।
-কি হও তোমরা?
ঝুমঝুম মাত্রই বলতে যাবে আমরা বন্ধু।
রনক ঝুমঝুমকে থামিয়ে দিয়ে বল্লো,আমরা সদ্য বিবাহিত স্বামী-স্ত্রী।
বুড়ি মা ওদের ঘরে ঢুকতে বল্লো।
বাসায় বুড়ি মা আর তার বর থাকেন।বর বাজারে গিয়েছে।বৃষ্টির জন্য ওখানেই আটকা পড়েছে।আর তাদের সন্তানেরা সবাই প্রবাসী।তারা দেশের বাইরে থাকে।
বুড়ি মা ওদের শরীর মোছার জন্য তোয়ালে বের করে দিলো।আর ঝুমঝুমকে তার জুয়ান কালের একটা লাল রঙের শাড়ী বের করে দিলো।রনককে দিলো তার বরের একটা পাঞ্জাবী আর লু্ঙ্গী।হাতে একটা জ্বলন্ত মোমবাতি দিয়ে বল্লো তোমরা ওই রুমটাতে যাও।ওটা আমার ছেলের আর বউ এর রুম।ওখানে গিয়ে তোমরা কাপড় চেঞ্জ করে নাও।অনেক টা ভিজে গেছো।দুজন কোন কথা না বাড়িয়ে চলে গেলো রুমটাতে।
রুমে ঢুকে দুজন দু দিকে ঘুরে দাঁড়িয়ে আছে।কারো মুখে কোন কথা নেই।হয়তো লজ্জায় নয়তো সংকোচে।
কিছু ক্ষণ পর রনক-শাড়ীটা চেঞ্জ করে নাও জ্বর এসে যাবে।ঠান্ডা লেগে যাবে।
ঝুমঝুম-লাগুক।
রনক-প্লিজ এমন করেনা।পরে নাও শাড়ীটা।বৃষ্টি কমলেই আমরা চলে যাবো।রাগ করোনা প্লিজ,আমি আমাদের পরিচয় স্বামী-স্ত্রী দিয়েছি বলে।
অন্য কিছু বললে উনারা মাইন্ড করতো।হয়তো রুমেও ঢুকতে দিতোনা।
*নতুন নতুন রোমান্টিক গল্প পেতে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: “নিঃস্বার্থ ভালোবাসা”*
ঝুমঝুম-আমি রাগ করিনি।ইটস ওকে।
রনক-তাহলে শাড়ীটা পরছোনা কেন?
ঝুমঝুম-আমি যে শাড়ী পরতে পারিনা তুমি জানোনা?আসার সময় ভাবী পরিয়ে দিয়েছে।
রনক-আমি পরিয়ে দেবো?না মানে চোখ বন্ধ করে রাখবো।আমার বউ তো আর হবেনা তুমি যে নিজ হাতে সাজাবো,শাড়ী পরাবো,খোঁপায় বেলী ফুলের মালা পরাবো,যখন ইচ্ছে হয় তখন।(রনকের চোখে জল) হবেনাতো আমার সন্তানের মা তুমি।শুনতে পারবোনাতো তোমার সন্তানের মুখ থেকে বাবা ডাক আমি।হায়রে জীবন।কতই না স্বপ্ন ছিলো।আমার স্বপ্ন দেখাও পাপ।
ঝুমঝুম-এই নাও শাড়ী।পরিয়ে দাও।(ঝুম ঝুমের চোখ ছলছল করছে)
রনক ইউটিউব দেখে শাড়ী পরানো টা শিখে ছিলো।কারণ ঝুমঝুম একদিন রনককে বলেছিলো,
এই যে শোনেন!বিয়ের পর আপনিই কিন্তু প্রতিদিন আমাকে শাড়ী পরিয়ে দিবেন।
রনক সম্মতি জানিয়েছিলো।
আজ সেই ঝুমঝুমকেই রনক শাড়ী পরিয়ে দিচ্ছে।
হঠাৎ করেই খুব জোরে বিদ্যুৎ চমকে উঠলো।ঝুমঝুম ভয়ে অর্ধ শাড়ী পরা অবস্থাতেই রনককে জরিয়ে ধরলো।
রনক ঝুমঝুমকে ধরতে চেয়েও ধরছেনা।
কিছু ক্ষণ পর বিবেক আর ভালবাসার মধ্যে হাড্ডা হাড্ডি লড়াই এর পর রনকও ঝুমঝুমকে জড়িয়ে ধরলো।
ঝুমঝুমের কপালে রনক তার কাঁপা কাঁপা ঠোঁটে ভালবাসার টিপ পরিয়ে দিলো।
রুমের বাতিটা নিভে গেলো।দুজন পরিপূর্ণ হলো দুজনায়,দুজনের ভালবাসায়।
কিছু ক্ষণ পর বুড়ি মা দরজায় নক করে বল্লো,ফ্রেশ হয়ে এসো তোমরা।আমি খাবার বাড়ছি।
দুজনি গোসল করে ফ্রেস হয়ে বুড়ি মার রুমে আসলো।
তত ক্ষণে বুড়োও এসে গেছেন।বুড়োর সাথে বুড়ি মা ওদের পরিচয় করিয়ে দিলো।চার জন খাওয়া দাওয়া শেষে কিছু ক্ষণ গল্প করলো।
তারপর ঝুমঝুম বল্লো,এবার আমরা উঠি বুড়ি মা।বৃষ্টি কমে গেছে।তাছাড়া বাসায় সবাই অপেক্ষা করছে।চিন্তাও করবে।
বুড়োর আর বুড়ি মার মন খারাপ হয়ে গেলো।এত ক্ষণ তাদের ভালোই লাগছিলো।কিন্তু একটু পরই আবার বাড়ীটা ফাঁকা হয়ে যাবে।
রনক-এই এই মন খারাপ করেনা।একদম মন খারাপ করেনা।আমরা আবার আসবো।দুজনের সাথে গল্প করতে।
বুড়ো-বুড়ির মুখে হাসি ফোটে।
ঝুমঝুম রনকের দিকে নিশ্চুপ তাকিয়ে আছে।
ঝুমঝুম আর রনক দুজনের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে রাস্তায় বের হলো।কেউ কারো সাথে কোন কথা বলছেনা।
ঝুমঝুম বাড়ীর কাছাকাছি চলে এসেছে।
রনক-থেকে গেলে হয়না পাগল টার জীবনে?
ঝুমঝুম-আজই আমাদের শেষ কথা,শেষ দেখা।ভালো থেকো।
এই কথা বলে ঝুমঝুম দৌড়ে বাসায় চলে যায়।
দুদিন পর খেয়াল করে ঝুমঝুমের আর পেটে ব্যথা করছেনা।
ডাক্তার রেহানার কাছে যায় ঝুমঝুম।
ডাক্তার রেহানা আলট্রাসাউন্ড করে দেখেন,ঝুমঝুমের সিস্ট গুলো গলে গেছে।সে অবাক হয়।মিরাকল ভেবে ঝুমঝুমকে বলে,তুমি বেঁচে গেছো,তোমার সিস্ট গুলো গলে গেছে।
ঝুমঝুম চমকে গিয়ে সেই বৃষ্টির কথা মনে করে।মনে করে রনকের কথা।
ডাক্তার কিছু মেডিসিন দিয়ে দেন আর বলেন,এখন আর তোমার কোন সমস্যা নেই।এক মাস এই মেডিসিন গুলো খাও।তারপর আমার সাথে দেখা করবে।
ঝুমঝুম বাসায় চলে আসে।ওর মাকে এসে বলে,সিস্ট গুলো গলে গেছে।চিন্তা করো না আর আমার জন্য।ওর মা খুশিতে আত্মহারা।জিহানকে ফোন দিয়ে জানায়।
কেটে যায় অনেক গুলো দিন।ঝুমঝুম ওর আইডি ডি এক্টিভ করে দিয়েছে সেদিন বাসায় এসে।আর নাম্বারও চেঞ্জ করে ফেলেছে তাই রনক আর সেদিনের পর ঝুমঝুমের সাথে কোন রকম যোগাযোগ করতে পারেনি।
জিহান গ্রীণ কার্ড পেয়ে গেছে।আজ সে দেশে আসছে।
আগামী পরশু ঝুমঝুমের গায়ে হলুদ।আর তারপরের দিন বিয়ে।
আইডি লগিন করে ঝুমঝুম রনক কে একটা মেসেজ লিখে,
”আমার জীবন বাঁচানোর জন্য ধন্যবাদ।
শুক্রবারে আমার বিয়ে।জীবন টাকে নতুন ভাবে সাজিয়ে নিও।আমাদের স্বপ্ন গুলোকে অন্য কারো সাথে পূরণ করো।ভালবাসি”
মেসেজ টা দিয়েই ঝুমঝুম আইডি ডিএক্টিভ করে দেয়।
আজ ঝুমঝুমের গায়ে হলুদ।সবাই ঝুমঝুমকে হলুদ দিয়ে গেছে।সবার সাথে জিহানও এসেছিলো ঝুমঝুমকে হলুদ দিতে।জিহানের মুখে কি সুন্দর হাসি।
কিন্তু ঝুমঝুম এই হাসিটাকে সহ্য করতে পারছেনা।কারণ যার কাছে ঝুমঝুমের জীবনের কোন মূল্যই নেই।তার হাসি তো বিষাক্ত মনে হবেই।
ঝুমঝুম মনে মনে ভাবছে,এই মানুষটার সাথে আমি সারাজীবন সংসার করবো কি করে!
ছেলে পক্ষ হলুদ দিয়ে চলে গেছে।
মেয়ে পক্ষ হলুদ দেয়া শুরু করেছে,হঠাৎ ঝুমঝুম স্টেজ থেকে দৌড়ে চলে গেলো।
বেসিনে গিয়ে বমি করতে শুরু করলো।
ঝুমঝুম বুঝতে পারছেনা কেন এমন হচ্ছে।
আজ ঝুমঝুমের বিয়ে,সকাল থেকেই হঠাৎ করেই মাথাটা ঘুরছে।আবার বমি বমি লাগছে।ফ্রিজ থেকে আচার বের করে আচার খাচ্ছে ঝুমঝুম।
হঠাৎ এক দাদী এসে ঝুমঝুমকে বল্লো,
এখন এত আচার খাওয়া লাগবেনা।আর কয় দিন পর এমনিই আচার খাবা।
ঝুমঝুম হঠাৎ করে আঁতকে উঠলো।খেয়াল করলো,এ মাসে এখনো তার পিরিয়ড হয়নি।ডেইটের অনেক দিন পাড় হয়ে গেছে।আবার মাথা ঘুরছে,বমি বমি লাগছে।তবে কি ঝুমঝুম……..
#রিমঝিম
পর্ব_১
#শতাব্দী_নাওয়ার