লাভার নাকি ভিলেন পর্ব ২৮+২৯

#লাভার_নাকি_ভিলেন?
#পার্টঃ২৮
#লেখিকাঃ Snigda Hossain Mona

আকাশের মন খারাপ থাকলেও আকাশের সাকসেস এর জন্য তার বন্ধুরা পার্টি দিয়েছে আকাশ সেখানে গেল আর একটু রাত করেই বাড়ি ফিড়ল।

আকাশের বাড়িতেও আজ খুশির রব কারন আকাশ এত ভাল একটা অবস্থান পেয়েছে…

আকাশ বাড়ি ফিরে মা বাবার সাথে আনন্দ ভাগ করে নিয়ে তারপর নিজের রুমে ঢুকে দেখল মেঘলা এখুনো তার ঘরেই ঘুমিয়ে আছে মেঘলাকে দেখেই আকাশের মেজাজ খারাপ হয়ে গেল। এদিক ওদিক না ভেবে ঘুমের মধ্যেই এক ধাক্কায় মেঘলাকে নিচে ফেলে দিল।

মেঘলার শরীরে এমনেতেই আঘাত ছিল এখন আবার আঘাত পেয়ে ঘুম থেকেই চিৎকার করে উঠল মেঘলা।

মেঘলার চিৎকারে আকাশের মন কেঁদে উঠল।
কিন্তু মন খারাপ টা তার জেদের কাছে মন হার মানল।

মেঘলা নিচে পড়ে কাতরাচ্ছে চেস্টা করে উঠতে পাড়ছে না।এটা দেখেও আকাশ তাকে সাহার্য্য করল না।উল্টে বলল মেঘলা তুই কি জানিস তোকে দাদী যে সম্পত্তি দিয়েছে সেগুলি তোর ২১ বছর হওয়ার আগে তুই পাবি না? তাই ততদিন তুই ফকিন্নি ফকিন্নিই থাকবি…মানে আমার কাজের মেয়ে যদি ইচ্ছা হয় তোকে রক্ষিতাও বানাতে পাড়ি।
এতদিন এত ভালবাসলাম কিন্তু তোর তো ভাল লাগল না তাই এখন থেকে তুই এই বাড়ির কাজের মেয়ে হয়ে থাকবি….

আর শোন আমি খুব তাড়াতাড়ি বিয়ে করছি,বিয়ের আগে যদি আমার ইচ্ছা হয় তাহলে তোর সাথে একটু ফুর্তি করব বোঝেছিস অবশ্য ইচ্ছা হয়ত হবে না কারন আগামীকাল ইরা আসছে বিয়ের আগ পর্যন্ত এখানেই থাকবে।

মেঘলা ফেল ফেল করে তাকিয়ে আছে আকাশের দিকে।

আকাশঃ জানিস ইরাকে বিয়েতে আমি কি কি দিচ্ছি?

মেঘলা……

আকাশঃ নগদ ১ কোটি টাকা ১ টা ফ্লেট আর ওর পছন্দমত যত অলংকার চায় ততগুলি অলংকার।
ভাবছি একটা গাড়ীও দিব। আর কি দেওয়া যায় বলতো মেঘলা?

মেঘলা কিছু বলছে না…

আকাশঃ নিশ্চুই ভাবছিস বাবার কাছ থেকে টাকা নিব তাই না? আরে না বাবার কাছে এত টাকা আছে নাকি যে দিবে? বাবার কাছ থেকে বা দাদির কাছ থেকে নিব না।এবার জিজ্ঞাস কর আমি এত টাকা কোথায় পাব?
আসলে পার্টি থেকে দিয়েছে আজকেই ডিল হলো…

মেঘলা জিজ্ঞাসু দৃস্টিতে আকাশের দিকে তাকাল।

আকাশঃ হুম যা ভাবছিস তাই,তুই ঠিকি ধরেছিস এগুলি সৎ পথের ইনকাম না।কাল একটা বস্তি ভেংগে দিব সবাইকে উচ্ছেদ করে দিব তার জন্য অগ্রিম ডোনেশান দিয়েছে।

মেঘলা অবাক হয়ে বলল আপনি কিছু টাকার জন্য এতগুলি মানুষকে ঘর ছাড়া করবেন? আপনার খারাপ লাগবে না?

আকাশঃ হা হা হা আজব কথা বলছিস সামান্য কিছু সম্পত্তি যদি তোকে বদলাতে পাডে আমাকে পাড়বে না?এখন টাকার জন্য শুধু ঘরছাড়া কেন মুহুর্তের মধ্যে কয়েকডজন লাশ ফেলতেও আমি ২ বার ভাব্ব না।
আসলে টাকা ইনকামের খুব ইচ্ছা হয়েছে আর আমার জীবনে তো স্পট আছে তাইনা?
ছ্যাকা খাওয়া একটা ছেলেকে কোন মেয়ে বিয়ে করবে তাই এগুলো দিতেই হবে ইরাকে…

ইরার তো কোন খুঁত নেই দেখতে যেমন সুন্দরী তেমনি ভাল মনের মেয়ে ওকে বিয়ে করতে কিছু খরচা তো করতেই হবে তাই না…আমি তো শুধু ভাবছি আর কি দেওয়া যায়……??

মেঘলাঃ অসহায় মানুষগুলির স্বপ্ন গুলি এভাবে ভেংগে দিয়েন না প্লিজ।কারোর স্বপ্ন ভেংগে সুখি হওয়া যায় না।

আকাশঃ ঠিক বলেছিস সে জন্যই তুই কখনো সুখি হবি না।স্বপ্ন দেখার অধিকার সবার নেই, আর আমি কখনো কারো স্বপ্ন পূরন হতে দিব না।
সে যাই হোক তুই আপাতত এখান থেকে বিদায় হ…কাল থেকে তোর ডিউটি শুরু…

যাওয়ার কথা বলার পড়েও মেঘলা বসে আছে দেখে আকাশ ধমক দিয়ে বলল কি বল্লাম তোকে…??ও আচ্ছা ভাল কথা ভাল লাগে না তাই না?বলে আকাশ মেঘলার চুল ধরে টেনে তুলে দরজার বাইরে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিল।

মেঘলা গিয়ে দেওয়ালের উপড় পড়ল কপালে ব্যাথা পেল।

মেঘলা আহ বলতেই আকাশ এসে মেঘলার মুখ চেপে ধরে বলল এটা তো কেবল শুরু আমার কথার সাথে সাথে কাজ না করলে তোর কি দশা হবে নিজেই জানিস না।আকাশকে চিনতে তোর এখনো অনেক বাকি। তোকে আমি এখুনো মারার মত করে মারি নি এবার থেকে প্রতিটা ভুলের শাস্তি কতটা ভয়ানক হবে তুই কল্পনাও করতে পাড়ছিস না মেঘলা।
আর একটা ওয়ার্নিং দেই এখান থেকে পালানোর চেস্টা ভুলেও করিসনা। যদি করিস পা ২ টা এমন ভাবে ভাংগব যে সারাজীবন ব্যাথা করবে।

মেঘলাঃ ভাংগার বাকি কি রেখেছেন? যদি হাঁটতে পাড়তাম তাহলে কি এতক্ষন আপনার ঘরে থাকতাম কখন চলে যেতাম।

আকাশঃ আমার মুখে মুখে কথা বলার সাহস হয় কি করে তোর? আকাশ আবার মেঘলাকে টেনে তুলে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিল মেঘলা কিছুটা দূরে গিয়ে পড়ল আকাশ আবার তুলে বলল কি রে ঘরে যেতে পাড়বি? নাকি লাথি মারতে মারতে নিয়ে যাব?

মেঘলা কিছু বলল না তাই আকাশ আবার ধাক্কা মারল।

মেঘলাঃ ব্যাথা পেয়ে কেঁদে উঠল আর বলল আপনার কি একটুও মায়া দয়া নেই?আমি ব্যাথা পাচ্ছি দেখতে পাচ্ছেন না?

আকাশ হা হা করে এসে বলল ভাল লাভার তো হতে পাড়লাম না এবার না হয় ভাল ভিলেনই হই
কিন্তু তুই আমার সাথে কথা বলার সাহস পাচ্ছিস কি করে?

বোঝেছি তুই যাবি না নিয়ে যেতে হবে…

আকাশ মেঘলাকে টানতে টানতে নিয়ে যাচ্ছে দেখে তার মা দৌড়ে এসে বলল কি করছিস এসব? আকাশ ছাড় ওকে ওর লাগছে তো…

আকাশঃ আমি জানি কাকে কিভাবে আর কোথায় মারলে তার কতটা লাগে তাই চিন্তা করো না বড় কোন দুর্ঘটনা ঘটবে না আর ঘটলেও আমি ফাঁসব না যদি মার সহ্য করতে না পেরে মরে যায় ওকে পিস পিস করে কেটে নদীতে ভাসিয়ে দিব মাছে খেয়ে নিবে ঝামেলা মিটে যাবে….

রাবেয়া বেগমঃ আকাশ তুই এসব কি বলছিস তোর মুখে আটকাচ্ছে না?ছাড় ওকে…

আকাশঃ সময় খুব নির্মম মা কিছুক্ষন আগের আকাশ আর এখনের আকাশ মানুষটা এক হলেও তাদের মাঝে অনেক তফাত তাই বলছি মা সামনে থেকে সরে যাও।তানা হলে এমন কিছু ঘটবে যা সহ্য করতে পাড়বে না। নিজের বিপদ নিজে ডেকে এনো না।এই ফালতু মেয়েটস মরলেও তোমার কোন ক্ষতি হবে না কিন্তু আমাকে রাগালে কি হতে পাড়ে আশা করি যানো…
এ বাড়িতে আজ থেকে আমার হুকুম চলবে আমি যেটা বলব সেটাই হবে এখানে বোঝেছো? তানাহলে সবাইকে ঘাড় থাক্কা দিয়ে বের করে দিব।
দুনিয়াতে জোর যার মুল্লক তার। আমি চাইলে তোমাদের এখুনি রাস্তায় দাঁড় করাতে পাড়ি।
তুমি আমার মা তোমার সাথে আমার নাড়ির টান তাই কেউ না জানলেও তুমি জানো আমি এই মেয়েটাকে কত ভালবাসি কিন্তু আজ ওকে মারতে আমার একটুও খারাপ লাগছে না তাই অন্যকাউকে মারতেও যে আমার একটুও মায়া লাগবে না সেটা বোঝতেই পাড়ছো? ভাল ভাবে বলছি মা যাও এখান থেকে আমার উপড়ে কথা বলার সাহস দেখিও না।

আকাশের কথায় আকাশের মাও ভয় পেয়ে গেল। আকাশ হাতের কাছে সাজানো ফুলদানি টা হাতে নিয়ে ছুড়ে টুকরা টুকরা করে দিয়ে চিৎকার করে বলল যাও এখান থেকে।

আকাশের মা বোঝল এখন কিছু বলে লাভ নেই তাই চলে গেল।

মেঘলাও ভয় পেয়ে বলল আমি একা একাই যেতে পাড়ব ভাইয়া..
আকাশঃ খুব ভাল যা তাহলে।

মেঘলা চেষ্টা করল কিন্তু হাঁটতে পাড়ল না।

আকাশ এসে মেঘলাকে কোলে নিয়ে হাঁটতে লাগল।
মেঘলাঃ এই তো মারছিলেন এখন আবার কোলে নিলেন কখন যে কি করে?(মনে মনে)

আকাশঃ ভুলে যাচ্ছিস আমি তোর মনের কথাও শুনতে পাই তাই বাজে বকা বন্ধ কর না হলে কোল থেকে ফেলে দিয়ে কোমর ভেংগে দিব।

মেঘলা ভয়ে ঢুক গিলল।

আকাশ মেঘলাকে রুমে নিয়ে বিছানায় বসিয়ে কয়েকটা ট্যাবলেট হাতে দিয়ে বলল এগুলি খা…

মেঘলা তাকিয়ে আছে দেখে
আকাশ শক্ত করে মুখ চেপে ধরে ট্যাবলেট মুখে দিয়ে বলল খেয়ে নে। কথা না শুনলে কি করব বোঝতেই পাড়ছিস।বলে আকাশ চলে গেল।

মেঘলা মনে মনে ভাবছে আকাশ কি করে এত ভয়নায়ক হয়ে গেল? আমাকে মেরে পিস পিস করে কেটে নদীতে ফেলে দিব কি ভয়ানক কথা বাবা।ভাবতে ভাবতে মেঘলা ঘুমের দেশে পাড়ি দিল।

এদিকে আকাশ ভাবছে মেঘলা তোর জীবন যদি নরক না বানাতে পাড়ি আমিও আকাশ নই।কষ্ট কত প্রকার ও কি কি আমি তোকে বোঝাব।



রাত ২ টা….
আকাশের চোখে ঘুম নেই আকাশ মেঘলার ফোনে ফোন দিল। দিয়ে দেখল না আজ ওয়েটিং এ কথা বলছে না আর অনলাইনেও এক্টিভ নেই।

আকাশঃ আজ কেন বলছিস না?এবার কথা বল দেখি কত পাড়িস।আজ বেঁচে গেলি আজ যদি ওয়েটিং এ পেতাম হয়ত খুন তোকে করতাম।
আকাশ ঘুমের চেস্টা করল কিন্তু ঘুম আসছে না।

আমার ঘুম হারাম করে তুই শান্তিতে ঘুমাবি মেঘলা? না না না এটা তো হতে পাড়ে না। ওকে এত শান্তি তো দেওয়া যাবে না বলেই আকাশ মেঘলার ঘরে গেল।

মেঘলা হাঁটতে পাড়ে না তাই আকাশ ওকে বিছানায় দিয়ে যাওয়ার পর দরজা না লাগিয়েই ঘুমিয়েছিল।

আকাশ ঘরে গিয়ে ধমকের সুরে ডাকতে লাগল,

আকাশঃমেঘলা এই মেঘলা… হারামজাদি কুটনি বুড়ি উঠ বলছি….

কিছুক্ষন পর আদো আদো ঘুমে মেঘলা চোখ খুলে তাকাতেই আকাশ…….

।#লাভার_নাকি_ভিলেন?
#পার্টঃ২৯
#লেখিকাঃ Snigda Hossain Mona

আকাশঃ মেঘলা এই মেঘলা… হারামজাদি কুটনি বুড়ি উঠ বলছি….

এত ডাকার পরেও মেঘলার ঘুম ভাংগার নাম নেই
কিছুক্ষন পর আদো আদো ঘুমে মেঘলা চোখ খুলে তাকাল কিন্তু কি হচ্ছে বোঝতে পাড়ছে না।

আকাশঃ উঠ বলছি….

মেঘলাঃ এই তো শোয়েছি এখুনি সকাল হয়ে গেল কি করে?

আকাশঃ সকাল হয় নি,আমার চা খেতে ইচ্ছা হয়েছে…উঠ গিয়ে যা চা বানা।

মেঘলা ঘড়ির দিকে তাকিয়ে বলল মনে হয় আপনার মাথা খারাপ হয়ে গেছে ।রাত ২ টা বাজে কেউ চা খায় নাকি? নিচে চিনি আছে শরবত বানিয়ে খেয়ে ফেলুন তাহলে মাথা ঠান্ডা হয়ে যাবে।

আকাশঃআমাকে কি তোর জোকার মনে হচ্ছে? মজা করিস আমার সাথে ফাযিল মেয়ে…

মেঘলাঃ যান তো এখান থেকে,আমাকে ঘুমাতে দিন…

আকাশঃ আমি যে ঘুমাতে পাড়ছি না সেটা কি তোর চোখে পড়ছে না?

মেঘলাঃ চা খেলে আরও ঘুমাতে পাড়বেন না।

আকাশঃ তাহলে শরবত বানিয়ে দে।

মেঘলাঃ আমার খুব ঘুম পাচ্ছে তো…

আকাশঃ পানি ঢেলে দিলেই আর ঘুম পাবে না দিব নাকি?

আপনার জীবনেও ভাল হবে না বলতে বলতে আকাশের দিকে ২ হাত বাড়িয়ে দিল মেঘলা।

আকাশঃ কি করব? হাত ২ টা ভেংগে দিব নাকি?

মেঘলাঃ যতসব আজেবাজে কথা কোলে নিন…নাহলে নিচে যাব কি করে পায়ে ব্যাথা তো??

আকাশঃ যন্ত্রনা… আচ্ছা কি আর করা যাবে চল নিয়ে যাচ্ছি…

আকাশ মেঘলাকে কোলে নিয়ে নিচে গেল…
এই মুটকি কে কোলে করে আনার চেয়ে তো নিজে করে খাওয়ায় ভাল ছিল…

মেঘলাঃআপনি যে আমার ঘুম ভাংগানোর জন্য নিয়ে এসেছেন বোঝি না মনে করেছেন? দেখেন এবার আপনাকে আমিও কেমন মজা বোঝাই? (মনে মনে)

এই খবরদার আজেবাজে কথা বলবেন না আমি মোটেও মুটকি না।নিজের শরীরে শক্তি নেই আবার আমাকে বলছে আমি নাকি মোটা…

আকাশঃ হইছে চুপ থাক…
মেঘলাকে নিয়ে আকাশ টেবিলে বসিয়ে দিল মেঘলা টেবিলে বসে বসে আকাশ কে অর্ডার দিচ্ছে।

মেঘলাঃ এই যে শুনোন,রান্না ঘরে ছুড়ি আছে আর ফ্রিজে লেবু এনে কেটে দিন।লবন আর চিনিটাও নিয়ে আসুন।

আকাশঃ একটা থাপ্পড় মারব আমি এসব করব কেন?তুই কর…

মেঘলাঃ তাহলে কোলে করে নিয়ে যান আমি নিয়ে আসছি।

আকাশঃএই মোটকি কে কোলে নেওয়ার চেয়ে নিজে করে নেওয়া ভাল।কিন্তু সব আমি করলে তিনি করবেনটা কি খোদা জানে?

মেঘলাঃ আপনি তো একটা গাদা তাই চিনি পানি একসাথে মিশাতে পাড়েন না। চিনি গুলতে আমাকে নিয়ে আসলেন।

আকাশঃ তোর সাথে সময় কাটাতে যে আমার ভাল লাগে সেটা তুই বোঝিস না মেঘলা( মনে মনে)

এই ডাইনী আমাকে কথা শুনানোর সাহস পাস কোথা থেকে?

মেঘলাঃ উফফ… যান তো সবকিছু নিয়ে আসুন আমার ঘুম পাচ্ছে খুব।

আকাশ বাধ্য হয়ে সবকিছু এনে দিল।

মেঘলাঃ এক বয়াম মরিচ আর মুটো ভর্তি লবন দিতে পাড়লে বেশ ভাল হত (মনে মনে)

আকাশঃ পরিমান টা একটু কম হয়ে গেল না?

মেঘলাঃ কিসের?

আকাশঃ লবন আর মরিচের…

মেঘলাঃ কি সাংঘাতিক ব্যাপার আপনি সত্যি আমার কথা বোঝে ফেলেন কি করে?

আকাশঃ শুধু আমি না সবাই বোঝবে।
কুটটি বুড়ি তো এসবেই চিন্তা করবে তাই না?

মেঘলা বিড়বিড় করতে করতে সরবত বানিয়ে আকাশ কে দিয়ে বলল নিন খেয়ে উদ্ধার করুন..

আকাশ খেয়ে চলে যেতে চাইল,

মেঘলা বলে উঠল ওমা একা একা কোথায় যাচ্ছেন আমাকে নিয়ে যাবে না?

আকাশ তাছিল্যের হাসি দিয়ে বলল আমি কি তোর বডিগার্ড নাকি যে তোকে কোলে করে ঘুরে বেড়াব? ইচ্ছা করে আমাকে দিয়ে কাজ করিয়েছিস আমি কি বোঝি নি?
আর আগে তোকে দরকার ছিল তাই নিয়ে এসেছিলাম ছিলাম এখন আর নিয়ে যাওয়ার দরকার মনে করিছি না…বসে বসে ঘুমা এখানে

মেঘলাঃ ভাইয়া এই ভাইয়া একটু শুনুন না…. আমার খুব ঘুম পাচ্ছে আমাকে নিয়ে যান প্লিজ এখানে খুব ঠান্ডা কি করে ঘুমাব।

আকাশ হাসতে হাসতে চলে গেল।

মেঘলাঃ আস্ত একটা ভিলেন হয়েছেন। আমি আপনাকে অভিশাপ দিব হুম….

আকাশঃ আমি কোলে করে নিয়ে গেলে তুই সুস্থ কি করে হবি?আমি রেখে চলে এসেছি তাই এখন একা একাই আসার চেস্টা করবি।জানি কস্ট হবে ।চেস্টা করলেই হাঁটতে পাড়বি কিন্তু সুস্থ হয়ে যাবি
(মনে মনে)

মেঘলা আকাশ কে ডাকতে ডাকতে ক্লান্ত হয়ে নিজেই হাঁটার চেস্টা করল কিন্তু প্রথমেই পড়ে গেল হাঁটতে পাড়ল না। আবার চেস্টা করল তারপর একটু একটু করে হাঁটতে লাগল।এখন আর আগের মত ব্যাথা লাগছে না তাই একটা একটা করে সিঁড়ি পাড় হল। কিন্তু ঘুমে তার চোখ বন্ধ হয়ে আসছে সে রুম পর্যন্ত আর যেতে পাড়ল না ঘরের বাইরেই শুয়ে ঘুমিয়ে পড়ল।

আকাশ মেঘলার কান্ড দেখে অবাক হল।আজব এভাবে কোন মানুষ ঘুমাতে পাড়ে? এভাবেই যদি ঘুমাবি তাহলে এত কস্ট করে উপড়ে আসলি কেন যতসব ফাযলামি।
আসলে আমাকে শান্তি দিবি না এটাই বড় কথা। আকাশ রাগ করতে করতে গিয়ে মেঘলাকে কোলে নিয়ে বিছানায় শুয়িয়ে দিল তারপর আঘাতের জায়গায় মলম লাগাতে শুরু করল।মলম দেওয়ার পর মেঘলার মাথায় হাত বুলিয়ে দিল।কিন্তু মেঘলা তা দেখতে পাচ্ছে না কারন সে গভীর ঘুমে আছন্ন।

আকাশঃ কি আজব এভাবে কেউ ঘুমাতে পাড়ে এত কিছু করছি তাও টের পাচ্ছে না?ঘুমাচ্ছে নাকি ঘুমের অভিনয় করছে?কিন্তু দেখে তো মনে হচ্ছে সত্যিই ঘুমোচ্ছে অভিনয় তো মনে হচ্ছে না।কিন্তু যদি অভিনয় হয়….
না না ওকে কিছুতেই বোঝতে দেওয়া যাবে না যে আমি এখুনো ওর প্রতি দুর্বল। এখান থেকে এখনি চলে যেতে হবে বলেই আকাশ চলে গেল।




পরদিন সকালে নিজেকে বিছানায় আবিষ্কার করে মেঘলা অবাক হল।তারপর উঠতে গিয়ে দেখল ব্যাথাও অনেক কমে গেছে হাঁটতে কস্ট হচ্ছে না তাও সে বিছানায় বসে থাকল।

কিছুক্ষন পর এক প্লেট খাবার নিয়ে মেঘলার ঘরে আসল আকাশ।
আকাশঃ ভুলেও চিন্তা ভাবিস না যে আমি তোকে আদর করে খাওয়াতে এসেছি।একদমি তা না আজ আমার বউ আসবে আর তার সব কাজ তোকে করতে হবে তাই ওষধ দিতে এসেছি।তাড়াতাড়ি যেন সুস্থ হতে পাড়িস তাই ন্যাকামি না করে চুপচাপ খা।

মেঘলাঃ খাব না… কি করবেন?

আকাশঃ কি আবার করব? অবশ্যই থাপ্পড় মারব… আমার এত সময় নেই যে বলব সোনা মনা খাও প্লিজ..

মেঘলাঃ আমাকে সোনা মনা বল্লেও খাব না,

আকাশঃ হারামজাদি খা বলছি….

মেঘলাঃ উহু…

আকাশ সত্যি সত্যি মেঘলাকে থাপ্পড় মারল…

মেঘলাঃ আহ আগে তো এত জোরে মারতেন না এখন এত মারেন কেন?

আকাশঃ আবার বাড়তি কথা বলছিস? খেতে বলছি না?আকাশ মেঘলার মুখ চেপে ধরে খাবার দিয়ে দিল।

মেঘলাঃ ইয়াক…. খাব না আমি, বমি পাচ্ছে….

আকাশঃ তাই নাকি বিয়ের আগেই বাচ্চার মা হয়ে যাচ্ছিস?ভাল,ভাল খুবি ভাল কিন্তু বাচ্চার বাবাকে চিনিস তো? নাকি কার বাচ্চা সেটাও গুলিয়ে ফেলেছিস? অবশ্য জানবি কি করে তোর ত আর একটা আশিকি না অনেকগুলি আশিকি কবে কার সাথে ছিলি কি করে মনে রাখবি?

মেঘলাঃ ছি…কিসব বাজে কথা বলছেন?আমি বলছি খাবারটা ভাল লাগছে না তাই বমি পাচ্ছে…
যাতা বলতে থাকেন মুখে একটুও আটকায় না।

আকাশ মেঘলার কয়েকটা চুল ধরে আস্তে করে টেনে বলল আবার কথা বলছিস?নিচের দিকে তাকিয়ে খা বলছি…

মেঘলার খাওয়ার কোন লক্ষন নেই দেখে আকাশ নিজের হাতেই মেঘলাকে জোর করে খাইয়ে দিল তারপর ওষধ খাইয়ে ঘর থেকে চলে গেল।

মেঘলাঃ এমন আচারন থাকলে জীবনেও কোন মেয়ে প্রেমে পড়বে নাকি? ভাল করে বল্লেই তো খেতাম।খচ্চর ভিলেন একটা।





মেঘলা ঘরে শুয়েছিল কিছুক্ষন পর নিচে হাসির আওয়াজ শুনে মেঘলা ঘর থেকে বেড়িয়ে দেখল,সত্যি সত্যিই ইরা এসে হাজির।

ইরার খুশি যেন আর ধরছে না…আকাশ ও প্রচুর খুশি ইরা আসতে না আসতেই তাকে নিয়ে হুলস্থুল শুরু করে দিয়েছে আকাশ।

আকাশ গলা ছেড়ে ডাকতে শুরু করল।
মেঘলা…..মেঘলা আরে এই ডাইনি মেঘলা কোথায় তুই?এত ডাকছি শুনতে পাচ্ছিস না?

মেঘলা উপড় থেকে আকাশ আর ইরার কাজকর্ম দেখছিল আকাশ যে তাকে ডাকছে সেটাও শুনছে কিন্তু ইচ্ছা করেই নিচে নামছে না।

মেঘলাঃ দুনিয়ায় কি মেয়ের অভাব পড়ছিল যে এই সাকচুন্নিটাকে বিয়ে করতে হবে…?? আমার একদম পছন্দ না এই ফাউল মেয়েটাকে। অন্য কেউ যদি বউ হতো ভাক হত…
(মনে মনে)

আকাশঃ আরে এই মেঘলার বাচ্চা মেঘলা… যদি শরীরের হাঁড়গুলি ভাংগতে না চাস এক্ষুনি নিচে আয়…

মেঘলা এবার নিচে আসল।

মেঘলাঃ সমস্যা কি বাড়িতে ডাকাত এসেছে মনে হচ্ছে?

ইরাঃ তোমার এত বড় সাহস আমাকে তুমি ডাকাত বলছো?

মেঘলাঃ দিন দুপুরে বাসায় ডাকাত আসবে না সেটা বোঝেছিলাম কিন্তু কোন জঞ্জাল যে এসেছে সেটা তো বোঝতেই পেড়েছি।

আকাশঃওই কাকে কি বলছিস?ইরা আমার হবু বউ।এত সাহস কি করে হয় আমার বউ কে তুই জঞ্জাল বলিস?

মেঘলাঃ আজব তো আমার কি খেয়ে দেয়ে কাজ নেই নাকি?আমি কেন কাউকে কিছু বলব?
আসলে বউ বাড়িতে আসলে সবাই খুশি হয় শুনেছি কিন্তু আপনি যেভাবে চেঁচাচ্ছেন শুধু আমি না যে কেউ শুনলে ভাববে বাড়িতে ডাকাত পড়েছে।মেঘলা ইরার দিকে তাকিয়ে ভেংচি কাটল



আকাশঃ বাহ বাহ… তারমানে মেঘলা ম্যাডাম এই ইরাকে সহ্য করতে পাড়ছে না।তারমানে উনি আমার প্রতি দুর্বল কিন্তু স্বীকার করতে চান না। তাহলে তো এই সুযোগটাকে কাজে লাগাতে হয়।কাঁটা দিয়েই আমি কাঁটা তুলব মেঘলা। আমি তোকে স্বীকার করিয়ে ছাড়ব তুই আমাকে ভালবাসিস।

চলবে
(যাদের ভাল লাগে না দূরে থাকুন তর্ক করতে আসবেন না)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here