লাভার নাকি ভিলেন পর্ব ৩৪+৩৫+শেষ

#লাভার_নাকি_ভিলেন?
#পার্টঃ৩৪
#লেখিকাঃ Snigda Hossain Mona

মেঘলাঃএত কিছুর পরেও আমি আপনার মত একটা ভিলেন কে বিয়ে করব না।মেয়েরা কারোর হাতের পুতুল নয় যে যখন তখন জোর করে তাদেরকে বিয়ে করা যায়।
আমি করব না আপনাকে বিয়ে।
কি হবে বিয়ে না করলে? লোকে আমায় নস্টা বলবে? সমাজ আমার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবে? নিক তবুও আমি এমন জঘন্য একটা ছেলেকে বিয়ে করব না। যে কিনা মেয়েদের সম্মান করতে জানে না।

কি ভেবেছেন জোর করে রেপ করে মেয়েদের বউ বানানো যায়? না মিঃ আকাশ এমন জঘন্য কাজ করে ঘৃনার পাত্র হওয়া যায় মনের মানুষ হওয়া যায় না….!!!




আকাশঃ মেঘলা এমন করিস না প্লিজ আমি আর সহ্য করতে পাড়ব না…

উপস্থিত সবাই অবাক হয়ে মেঘলা আর আকাশের কথা শুনছিল হটাৎ ভীড়ের মাঝখান থেকে হাত তালির আওয়াজে সবাই সেদিকে তাকাল।

নাবিল হাত তালি দিতে দিতে এসে বলল সাবাস মেঘলা।মেয়েদের আসলে এমনেই হওয়াই উচিত।অন্যায়ের সাথে আপোস করা একেবারেই উচিত নয়। তুমি একদম ঠিম বলেছো যে ছেলে মেয়েদের সম্মান করতে জানে না তার ভালবাসা পাওয়ার কোন অধিকার নেই।

নাবিলের কথা শুনে আকাশ হতবাক হয়ে গেল,
আকাশঃ নাবিল তুই এসব কি বলছিস?

নাবিলঃ আমি একদম ঠিকি বলছি আকাশ চোধুরী ওরফে মিঃ রেপিস্ট।
Now you are a big loser.
আজকের এই খবরটা কাল সবগুলো নিউজ পেপারের হেডিং হবে।
আমাদের দলের সদ্য নির্বাচিত ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান the yong star আকাশ চৌধুরী একজন রেপিস্ট… ভাবতে পাড়ছিস কেমন টুইসট হবে বিষয় টা?
তোর ক্যারিয়ার এখানেই শেষ হয়ে যাবে।
তোর রাজত্বের পতন হবে আর তার সাথে সাথে তুই বেঁচে থাকতেও মরে যাবি যাকে বলে জীবন্ত লাশ। সবাই তোর থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিবে।যেই মেয়েগুলি তোর সাথে একবার কথা বলার জন্য দিনের পর দিন অপেক্ষা করত তারাও তোকে ঘৃনা করবে।
রাস্তায় বের হলে সবাই তোকে দেখে বলবে ওই দেখো চৌধুরী বাড়ির রেপিস্ট ছেলে যাচ্ছে যারা তোর দিকে তাকানোর সাহস পেতো না তারাও তোর দিকে আংগুল তুলবে….
আর জানিস তো রাজনীতি চলে জনগনের পাওয়ারে তারা যখন তোর দিক থেকে মুখি ফিড়িয়ে নিবে তুই তোর পদ হারাবি।কাল থেকে তোর না থাকবে কোন রানী না থাকবে সাম্রাজ্য?

আকাশঃ আমি বিশ্বাস করতে পাড়ছি না নাবিল তুই এগুলি বলছিস?জীবনে যে ২ জনকে আমি বুকের বাম পাশে জায়গা দিয়ে ছিলাম সেই ২ জনেই আমার সাথে ছলনা করল?কেউ আমায় ভালবাসল না?কেন নাবিল আমার ভালবাসা কি এতই ফালতু ছিল?

নাবিলঃ জানি আকাশ তোর খারাপ লাগবে
এগুলি হজম করতে তোর কস্ট হবে,বিশ্বাস কর তোকে এসব বলতে আমারো খারপ লাগছে কিন্তু এছাড়া যে কোন পথ দেখতে পাচ্ছি না সবভাবেই তো দেখলাম কিন্তু মেঘলার জেদ ভাংতে পাড়লাম না এবার তোকে আঘাত করে দেখি তাতে যদি মেঘলা মুখ খোলে।দেখি মেঘলা তোর কস্ট কতক্ষন সহ্য করতে পাড়ে পরে না হয় তোর কাছে ক্ষমা চেয়ে নিব (মনে মনে)

জানিস আকাশ ক্লাসে সবসময় আমি ফার্স্ট হতাম হুট করে কোথা থেকে তুই উড়ে এসে জোড়ে বসলি তুই আমার জায়গাটা নিয়ে নিলি অনেক চেস্টা করেও তোকে আর ডাউন দিতে পাড়লাম না আস্তে আস্তে স্যারদের কাছে তুই আমার চেয়ে বেশি প্রিয় হয়ে গেলি যদিও আমি তোকে প্রতিদন্ধি ভাবতাম না কিন্তু কেন জানি না সবসময় সবাই তোর সাথে আমার তুলনা করত।তখন থেকেই জেদ ছিল তোর উপড়, তারপর রাজনীতি তেও তুই এগিয়ে গেলি তোর হয়ে মারামারি করতাম আমি আর নাম হত তোর।আমি এসব কিছুতেই মানতে পাড়ছিলাম না।
আজ সুযোগ পেলাম তাই কাজে লাগালাম।
আমি জানতাম মেঘলা তোকে বিয়ে করবে না আর এই জঘন্য কাজ টা করলে তো আরও করবে না। তাই তোর আবেগের সুযোগ নিয়ে এমন একটা জঘন্য কাজেই তোকে সাপোর্ট দিলাম ভুল করছিস জেনেও তোকে এগিয়ে দিলাম।আর তুই সেই ফাঁদে পা দিলি।

নাবিল ভিলেনি হাসি দিয়ে বলল তুই বড্ড বোকারে আকাশ তুই আমার সাজানো গোলকধাঁধায় হারিয়ে গেছিস।সেখান থেকে আর বের হতে পাড়বি না।
You are finish….!!

থ্যাংকস মেঘলা আমাকে এত বড় সুযোগ করে দেওয়ার জন্য।
আর একদম চিন্তা করো না আমি তোমাকে বিয়ে করে বউ এর সম্মানেই দিব রেপ হয়েছো বলে দূরে ঠেলে দিব না।

কথাটা বলার সাথে সাথেই মেঘলা নাবিলের গাল লাল করে একটা থাপ্পড় বসিয়ে দিয়ে বলল লজ্জা করছে না এসব বলতে?যে আকাশ নাবিল ছাড়া এক পা ও বাড়ায় না যে আকাশ তোমাকে অন্ধের মত বিশ্বাস করে তাকে এভাবে ফাঁসাতে বুক কাঁপল না?

আকাশ এবার বলতে শুরু করল।নাবিল আর তোর মধ্যে কি পার্থক্য মেঘলা? তোর লজ্জা না করলে ওর কেন করবে? আর নাবিল তো কিছু করে নি তোকে বিয়েতে বাধ্য করতে এসব করার প্লেন আমারেই ছিল।নাবিল তো শুধু সুযোগ নিচ্ছে নাবিল কিছু করেনি।যা করার তুই করেছিস মেঘলা। আমি এখন বোঝতে পাড়ছি জীবন্ত লাশ কাকে বলে দেখ আমার নিজের বাবা মা আমার দিকে ঘৃনার চোখে তাকিয়ে আছে আমার সবচেয়ে কাছের বন্ধু,যে কিনা সমস্ত বিপদে নিজের জীবন বাজি রেখে আমার পাশে ঢাল হয়ে দাঁড়াত আজ সেও আমার হাত ছেড়ে দিয়েছে।আমার ক্ষমতা সমাজের অবস্থান সব এক নিমিশেই মাটিতে মিশে গেছে।আমি আর কোনদিন কারো সামনে মাথা উঁচু করে কথা বলতে পাড়ব না সবাই আমাকে নিয়ে বাজে কথা বলবে। পৃথিবীর সকল মেয়ে আমাকে ঘৃনা করবে।
তোর কি মনে হয় আমি পাগল? আমি কি জানতাম না আমি এই কাজটা করলে আমার সাথে কি কি ঘটবে? আমি সবি জানতাম জেনে বোঝেই করেছিলাম।আমি জানতাম আমি আমার অবস্থান হারাব কিন্তু এটা জানতাম না যে কথাগুলি নাবিল আমায় বলবে…

সারাজীবন ধরে একজনকে ভালবাসার বিনিময়ে এর চেয়ে বড় পুরুষ্কার আর কি হতে পাড়ে?
আমি আজ খুব খুশি মেঘলা সবকিছুর বিনিময়েও আমি তোকে চেয়েছিলাম।আমি স্বার্থপর নই আমি সব হারাতে রাজি ছিলাম শুধু বিনিময়ে তোকে চেয়েছিলাম কিন্তু ভাগ্যটা এতই খারাপ যে তোকেও পেলাম না আর বাকি সব কিছুও হারালাম।কিন্তু তুই যা চেয়েছিলি তাই হয়েছে।এবার তুই খুশি তো মেঘলা….???

মেঘলা কাঁদো কাঁদো কন্ঠে বলল আমি এসব চাই নি আকাশ….

আকাশঃ তুই এটাই চেয়েছিলি…. দেখ মেঘলা দেখ তোর ছলনার জন্য একটা জীবন কিভাবে নস্ট হয়ে গেল কেন ঠকালি আমাকে?এত ভালোবাসার পর আমার কি এসব প্রাপ্য ছিল আমি কি সত্যিই এসবের উপযুক্ত ছিলাম?এখানে এত এত আপনজনদের মাঝে আজ আমার পাশে কেউ নেই।আমি হেরে গেছি মেঘলা…

নাবিলঃ ইসস আকাশ তোর জন্য না বড্ড মায়া হচ্ছে কিন্তু কি করব বল তোর পদ টা আমার চাই। আসলে কি জানিস লোভ জিনিস টা সবাইকে বদলে দিতে পাড়ে যেমন এই বেইমান মেয়ে টাকেও বদলে দিয়েছে।সম্পত্তির জন্য তোর সাথে মিথ্যা ভালবাসার অভিনয় করে তোকে নিঃস্ব করে দিয়েছে এরকম মেয়ের জন্য সব মেয়েদের দুর্নাম হয়।এরা শুধু কেড়ে নিতে জানে কিছু দিতে জানে না।শুধুমাত্র কিছু টাকার জন্য বিক্রি হয়ে যায়।এই মেয়েটা কখনো তোর ভালবাসার যোগ্য ছিল না। এদের তো টাকা দিলেই বিছানায় নেওয়া যায় ভালবাসার মত পবিত্র কিছু পাওয়ার যোগ্যতা এদের নেই। দুনিয়ায় বহুত বেইমান দেখেছি কিন্তু এর মত একটাও দেখি নি। ছোট থেকে ওকে যারা বড় করল তাদের পরিবারকে ধ্বংস করে দিতেও ২ বার ভাবল না।তোর কথা ভাবলই না তোর বাবার কথাও ভাবল না আজ তদের বিয়ে না হলে তোর বাবার দিকেও তো সবাই আংগুল তুলবে সেটাও চিন্তা করল না এদের আসলে বেঁচে থাকার এই কোন যোগ্যতা নেই।মিথ্যাবাদী, বেইমান,স্বার্থপর লোভি মেয়ে…

মেঘলাঃ একদম ঠিক বলেছেন ভাইয়া… আমি সত্যিই মিথ্যাবাদী,বেইমান…আমি কেড়ে নিতে জানি তাই তো দাদির কাছ থেকে সব সম্পত্তি হাতিয়ে নিয়েছি।

কিন্তু আকাশ আপনার মনে কি একবারো প্রশ্ন জাগলো না, দুনিয়ায় এত রেস্টুরেন্ট থাকতে আমি ডেটিং করতে কেন সেই রেস্টুরেন্ট এ গিয়েছিলাম।আর যদি যাওরেই থাকত সেদিন সেই সময়েই কেন? বাড়ির সবাই তো জানত আপনার মিটিং আছে,কোথায় আর কোথায় মিটিং সেটাও সবাই জানত তাহলে নিশ্চুই আমিও জানতাম। জেনে শুনে সেদিন সে সময়েই আমি কেন সেখানে গিয়েছিলাম?

আর নাবিল ভাই আপনাদের কারোর জানতে ইচ্ছে করল না? যে মিটিং এ আকাশ ছিলই না সেই মিটিং কি করে আকাশ পদ পেল? যদিও সে যোগ্য ছিল তবুও সিনিয়র মেম্বারদের বাদ দিয়ে ও কি করে দলের দায়িত্ব পেল?
ওহ আপনারা তো আমার মত বেইমান নন তাই এসব মাথায় আসে নি তাই না?

তাহলে আমিই বলি।
আমি রেস্টুরেন্ট এ গিয়েছিলাম প্রেম করতে নয়,আকাশের স্বপ্ন কিনতে ।সেদিন আমি দাদীর দেওয়া সমস্ত সমত্তি বিক্রি করে আকাশের স্বপ্ন কিনেছিলাম।আর টাকাগুলি দিয়ে ফিরে আসার সময় আকাশের মুখোমুখি হয়ে গিয়েছিলাম আকাশ ফোনে কথা বলছিল তাই আমায় দেখে নি কিন্তু আমি দেখেছিলাম আমি জানতাম আকাশ আমায় যখন দেখবে হাজারটা প্রশ্ন করবে আর সত্যিটা জেনে যাবে আমি চাই নি আকাশ সত্যিটা জানুক তাই সেখানে বসে থাকা একজনকে রিকুয়েষ্ট করেছিলামা আমার বিএফ হওয়ার অভিনয় করতে।
বেইমান না হলে কি এই কথাগুলি এতদিন লুকাতে পাড়তাম?মিথ্যাবাদী না হলে কি গুছিয়ে বলতে পাড়তাম যে বিক্রি করে দেওয়া সম্পত্তির মালিক আরো ৩ বছর পর হব।মিথ্যাবাদী না হলে কি এফএম স্টেশনে কল দিয়ে সারারাত গল্প শুনে বলতে পাড়তাম যে বয়ফ্রেন্ডের সাথে কথা বলছি?
জানেন আমি না খুব লোভি,লোভি না হলে কি ২ টা রিং এর জন্য সাঁতার না জেনেও ডোবায় ঝাঁপ দিতে পাড়তাম? লোভি জন্যই পেড়েছিলাম। আমি বেইমান,মিথ্যাবাদী, লোভি কিন্তু জানে ভাইয়া এমন বেইমান সচারাচর পাওয়া যায় না।

নাবিলঃ কিন্তু এত কিছু করার পড়েও তুমি বলো নি কেন?

মেঘলাঃ স্বার্থপর তাই,আমি পাড়ি নি যাকে নিজের চেয়েও ভালবাসি তাকে কস্ট দিতে। যাকে ভালবাসি তাকে কস্ট দেওয়া মানেই তো নিজেকে কস্ট দেওয়া আমি পাড়ি নি এত উদার হতে…..

কথাটা বলার সাথে সাথে আকাশ দৌড়ে এসে নাবিলকে জড়িয়ে ধরল

আকাশঃ নাবিল তুই শুনলি মেঘলা আমাকে ভালবাসে বলল….তুই শুনলি নাবি…
আমি তোকে কি বলে কৃতজ্ঞতা জানাব বোঝতে পাড়ছি না থ্যংকস দোস্ত আমি এতদিন এত অত্যাচার করেও মেঘলাকে দিয়ে যা বলাতে পাড়ি নি তুই পেড়েছিস তোর কাছে আমি সারাজীবন কৃতজ্ঞ থাকব তুই চিন্তা করিস না আমি নিজে গিয়ে পদ থেকে অব্যাহতি দিব। আমার টাকা পয়সা বাড়ি গাড়ি কিছু চাই না রে, মেঘলার একটা কথাতেই জীবনের সব পেয়ে গেছি।নাবিল তুই আমার ইচ্ছা পুরন করেছিস এবার আমিও তোর সব ইচ্ছা পূরন করব আমি সারাজীবন তোর পাশে তোর ঢাল হয়ে থাকব চাই না আমার বাড়ি,গাড়ি,ক্ষমতা।

নাবিলঃ শান্ত হ আকাশ তুই মেঘলার একটা কথা শুনতে গিয়ে বাকি গুলি মিস করে গেছিস এতকিছু করার পড়েও মেঘলা কেন সব আড়াল করল সেটা জানতে হবে….এর পিছনে কে আছে?নাবিল ইরার দিকে তাকিয়ে বলল এর পিছনে তোর দাদী বা অন্যকেউ নেই তো?

মেঘলাঃ আমি আজ সব বলে দিব অনেক হয়েছে আর না আমিও এবার একটু ভাল থাকতে চাই আর কিছু লুকাব না….

।#লাভার_নাকি_ভিলেন?
#পার্টঃ৩৫
#লেখিকাঃ Snigda Hossain Mona

নাবিলঃ মিথ্যাবাদী, বেইমান,স্বার্থপর লোভি মেয়ে…

মেঘলাঃ একদম ঠিক বলেছেন ভাইয়া… আমি সত্যিই মিথ্যাবাদী,বেইমান…আমি কেড়ে নিতে জানি তাই তো দাদির কাছ থেকে সব সম্পত্তি হাতিয়ে নিয়েছি।

কিন্তু সেদিন আমি রেস্টুরেন্ট এ গিয়েছিলাম প্রেম করতে নয়,আকাশের স্বপ্ন কিনতে ।সেদিন আমি দাদীর দেওয়া সমস্ত সমত্তি বিক্রি করে আকাশের স্বপ্ন কিনেছিলাম।আর টাকাগুলি দিয়ে ফিরে আসার সময় আকাশের মুখোমুখি হয়ে গিয়েছিলাম আকাশ ফোনে কথা বলছিল তাই আমায় দেখে নি কিন্তু আমি দেখেছিলাম আমি জানতাম আকাশ আমায় যখন দেখবে হাজারটা প্রশ্ন করবে আর সত্যিটা জেনে যাবে আমি চাই নি আকাশ সত্যিটা জানুক তাই সেখানে বসে থাকা একজনকে রিকুয়েষ্ট করেছিলামা আমার বিএফ হওয়ার অভিনয় করতে।
বেইমান না হলে কি এই কথাগুলি এতদিন লুকাতে পাড়তাম?মিথ্যাবাদী না হলে কি গুছিয়ে বলতে পাড়তাম যে বিক্রি করে দেওয়া সম্পত্তির মালিক আরো ৩ বছর পর হব।মিথ্যাবাদী না হলে কি এফএম স্টেশনে কল দিয়ে সারারাত গল্প শুনে বলতে পাড়তাম যে বয়ফ্রেন্ডের সাথে কথা বলছি?
জানেন আমি না খুব লোভি,লোভি না হলে কি ২ টা রিং এর জন্য সাঁতার না জেনেও ডোবায় ঝাঁপ দিতে পাড়তাম? লোভি জন্যই পেড়েছিলাম। আমি বেইমান,মিথ্যাবাদী, লোভি কিন্তু জানে ভাইয়া এমন বেইমান সচারাচর পাওয়া যায় না।

নাবিলঃ কিন্তু এত কিছু করার পড়েও তুমি বলো নি কেন?

মেঘলাঃ স্বার্থপর তাই,আমি পাড়ি নি যাকে নিজের চেয়েও ভালবাসি তাকে কস্ট দিতে। যাকে ভালবাসি তাকে কস্ট দেওয়া মানেই তো নিজেকে কস্ট দেওয়া আমি পাড়ি নি এত উদার হতে…..
কিন্তু আজ সব বলে দিব অনেক হয়েছে আর না আমিও এবার একটু ভাল থাকতে চাই আর কিছু লুকাব না….

মেঘলাঃ আচ্ছা ভাইয়া যদি কখনো জানতে পাড়েন কিছুদিন পর আপনার ফাঁসি হবে। শত ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও আপনি সেটা ফিরাতে পাড়বেন না তাহলে সেই বেঁচে থাকার মুহুর্ত গুলি আপনি করে কাটাতে চাইবেন?
নিশ্চুই সবসময় হাসিখুশি আর আপনজনদের ভালবাসা পেতে চাইবেন তাই না?
কিন্তু আমি চেয়েছিলাম অন্য একজন কে ভাল রাখার একটা ব্যবস্থা করতে।কারন আমি জানতাম আমার অবর্তমানে সে হয় পাগল হয়ে যাবে নয়তো বা সোসাইড করবে,তাই মন কে পাথর করে ছোট থেকে তিল তিল করে গড়ে তুলা আত্মার বাঁধন টা আলগা করে দিয়েছিলাম। ইচ্ছা করে নিজের শরীর থেকে প্রান টা আলাদা করে দিয়ে তার উপড় সংসারের দায়িত্ব চাপাতে চেয়েছিলাম।
আমি জানতাম তার মন থেকে নিজের নাম টা মুছার ক্ষমতা আমার নেই। তারপড়েও চেয়েছিলাম বউ নামক একটা দায়িত্ব তার ঘাড়ে চাপিয়ে দিতে। যাতে সে অন্যকাউকে ভালো না বাসলেও অন্তত তার দিকে তাকিয়ে হলেও যেন বেঁচে থাকে।

নাবিলঃ কিন্তু তোমাকে ফাঁসি কে দিবে…???

মেঘলা ইতিমধ্যে কেঁদে দিয়েছে।
চোখের জলে গাক ভিজিয়ে বলতে লাগল না ভাইয়া,আপনি যেমন ভাবছেন তেমন কিছু না।
ইরা আপু, দাদি বা আকাশের ভাইয়ের পরিবারের কেউ আমার বদলে যাওয়ার পিছনে কারন ছিল না,আর আমাকে কেউ ফাঁসিও দিবে না কিন্তু আমি কবে মারা যাব সেটা আমি জানি….

নাবিলঃ কিসব পাগলের মত কথা বলছো? কে কবে মরবে সেটা কেউ জানে নাকি?

মেঘলাঃ হ্যা আমি জানি কারন আমার মৃত্যুটা কোন স্বাভাবিক মৃত্যু হবে না।আমার ২ টা কিডনিই নস্ট হয়ে গেছে তাই ডাক্তার বলে দিয়েছে যদি কিডনী ডোনেট না করা আমি ৩ মাস এর মধ্যেই মারা যাব,
আমি যে বাঁচার চেস্টা করি নি তা নয় বিশ্বাস করুন খুব চেস্টা করেছিলাম,কিন্তু ডাক্তার বলেছিল আমাকে বাঁচাতে ২ টা কিডনীই লাগবে ১ টা দিয়ে হবে না আর সেই কিডনী সেইম ডোনারের কাছ থেকেই নিতে হবে।কিন্তু এমন কোন ডোনার পাওয়া যায় নি যে কিনা নিজের জীবনের বিনিময়ে আমাকে বাঁচাবে।
তাও খুঁজতাম কিন্তু কপাল টা এতটাই খারাপ যে সব আশায় বৃথা হয়ে গেল, আমার রক্তে হাই কলেস্টরল থাকায় এই অপারেশন করা সম্ভব না অপরেশন করলে অপারেশন চলাকালিন স্ট্রোক হওয়ার সম্ভবনা ৯০%। ডাক্তার খুব চেয়েছিলেন ১ টা কিডনী দিয়ে ট্রাই করতে কিন্তু আমিই চাই নি কারন আমার কাছে এই তিনটা মাসের মুল্য অনেক। কারন এই দিন গুলির মধ্যেই আকাশের জীবন থেকে মেঘলাকে সরিয়ে দিতে চেয়েছিলাম আমি।ভেবেছিলাম হয়ত আমি পেড়েছি।
কিছুক্ষন আগে পর্যন্তও ভেবেছিলাম এই পরীক্ষায় আমি জিতে গেছি। আমি পেরেছি আমার অসম্পুর্ন কাজ টা সম্পন্ন করতে। আকাশকে সামলে রাখার মত কাউকে তার পাশে রেখে যেতে পেরেছি।

আমি হয়ত সবার মত হতে পাড়ি নি তাই জীবনের শেষ কটা দিন নিজেকে ভাল না রেখে আকাশের জীবনটা সাজাতে ব্যাস্ত ছিলাম। ইচ্ছে করে নিজের ভালবাসাকে দূরে ঠেলে দিয়েছিলাম। প্রতিদিন একটু একটু করে নিজেকে আকাশ এর কাছ থেকে সরিয়ে নিয়েছিলাম।

যানেন, নিজের ভালবাসাকে অন্যের করে দিতে আমারো খুব লেগেছিল
আকাশ যখন ইরা আপুকে আদর করত আমার খুব কস্ট হত। রাতে যখন শরীর খারাপ লাগত স্বপ্ন দেখতাম আকাশ যদি একবার এসে মাথায় হাত রাখত।একটু ঘুম পাড়িয়ে দিত।
সবার মত আমারো ইচ্ছে করত জীবনের শেষ কয়েকটা দিন আকাশের ভালবাসায় সুখে থাকতে কিন্তু নিজের ইচ্ছে গুলিকে মনের মধ্যেই কবর দিয়ে দিয়েছিলাম কারন আমি আমাকে নয় আকাশকে ভালবাসি।
তাই প্রতিটা দিন মৃত্যু যন্ত্রনা সহ্য করেও আকাশের মুখের হাসি ফুটাতে চেয়েছিলাম।
আমি ভেবেছিলাম আজকে বিয়ের পর আকাশ দায়িত্বের শিকলে আটকা পড়ে যাবে।সে ভুলে যাবে তার মেঘলাকে কিন্তু আমার জানা ছিল না আকাশের বুক থেকে মেঘলাকে সরানো অসম্ভব।

এখন বোঝতে পাড়ছি আমি ভুল ছিলাম আকাশও কখনো নিজেকে ভালবাসে নি। আকাশ শুধু মেঘলাকেই ভালবাসে। তাই সে আজ মেঘলার জন্য নিজের সব বিসর্জন দিতেও দ্বিধা করছে না।

আচ্ছা ভাইয়া আপনি কি বলতে পাড়েন জীবন এত অদ্ভুত কেন?মানুষের চাওয়া পাওয়া গুলি হটাৎ করেই বদলে যায় কেন?
এতদিন যখন খুব কস্ট হত আকাশের ব্যবহার সহ্য করতে পাড়তাম না তখন একা একা বসে প্রার্থনা করতাম আমার বেঁচে থাকার দিনগুলি যেন তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যায়।

মেঘলা নাবিলের কাছে গিয়ে ২ হাত ধরে বলতে লাগল জানেন ভাইয়া আমার না দম নিতে কস্ট হচ্ছে,মাথা ঝিমঝিম করছে চারদিক কেমন ঝাঁপসা হয়ে যাচ্ছে,চোখ বন্ধ হয়ে আসছে আমি বোঝতে পাড়ছি আমার সময় শেষ। কিন্তু এখন যে আমার বাঁচতে ইচ্ছে করছে….
আমি বাঁচতে চাই নাবিল ভাইয়া। আকাশের জন্য না আজ আমি আমার জন্য বাঁচতে চাই আকাশের এত ভালবাসা ছেড়ে আমি যেতে চাই না আমি সত্যিই বাঁচতে চাই…….
কথাগুলি বলতে বলতে নাবিলের কোলে ঢলে পড়ল।

মেঘলার বাঁচার আকুতি দেখে উপস্থিত সবার চোখেই পানি জমে গেছে।

আকাশের মা বাবা দৌড়ে এসে মেঘলাকে ধরল
নাবিল তো প্রায় পাগল হয়ে গেছে।
নাবিল মেঘলাকে ঝাকিয়ে ঝাকিয়ে বলতে লাগল উঠো মেঘলা প্লিজ উঠো…. তোমাদের ভালবাসাকে এভাবে হেরে যেতে দিও না চোখ খোল মেঘলা…
তুমি বাচবে মেঘলা কিচ্ছু হবে না তোমার আমি তোমাদের ভালবাসাকে হেরে যেতে দিব না।

সবাই মেঘলাকে নিয়ে ব্যাস্ত হয়ে পড়ল একমাত্র আকাশ ছাড়া।আকাশ যেখানে দাঁড়িয়ে ছিল সেখানেই দাঁড়িয়ে আছে এক চুলও নড়ে নি একটা কথাও বলে নি। এমন কি মেঘলার দিকে তাকায়ও নি নিচের দিকে তাকিয়ে আছে।

নাবিল এসে আকাশে ধরে বলতে লাগল আকাশ তুই দাঁড়িয়ে আছিস কেন মেঘলাকে হাসপাতালে নিতে হবে গাড়ি বের কর।

আকাশের কোন রেস্পন্স নেয়…

নাবিল আকাশ কে ঝাকি দিয়ে বলল আকাশ তুই কি শুনতে পাড়ছিস?তাকিয়ে দেখ মেঘলা অজ্ঞান গেছে আকাশ…. তুই কিছু বল আকাশ এভাবে পাথর হয়ে যাস না।

আকাশ থপাস করে মাটিতে বসে পড়ল। আর চিৎকার করে কেঁদে উঠল। আকাশের চিৎকারে বিয়ে বাড়িও যেন থমকে গেল আশে পাশের বাতাস ভারি হয়ে উঠল।
আকাশ পাগলের মত আবল তাবল বকছে,কথা জরিয়ে যাচ্ছে আকাশের সে বাচ্চাদের মত কাঁদতে কাঁদতে বলল নাবিল মেঘলা এগুলি কি বলল নাবিল? ও আমাদের সাথে মজা করছে তাই না? আমি ওকে এত দিন কস্ট দিয়েছি তাই আমাকে কস্ট দিচ্ছে তাই না?তুই বল ও সব মিথ্যা বলেছে অভিনয় করছে তাই না নাবিল ? তুই ওকে উঠতে বল নাবিল এই দেখ আমি কথা দিচ্ছি আর কখনো ওকে কস্ট দিব না। ভুল করলেও একটুও বকা দিব না সত্যি বলছি তুই ওকে উঠতে বল নাবিল…….

আকাশের অবস্থা দেখে নাবিলও কেঁদে ফেলেছে সে আকাশকে জড়িয়ে ধরে বলল শান্ত হ আকাশ কিচ্ছু হবে না মেঘলার। ও একদম সুস্থ হয়ে যাবে আমি ওকে কিডনী দিব তবুও তোদের ভালবাসাকে হারিয়ে যেতে দিব না।

নাবিল মেঘলাকে কোলে নিয়ে বাইরের দিকে যেতে লাগল…..


।#লাভার_নাকি_ভিলেন?
#অন্তিম_পর্ব
#লেখিকাঃ Snigda Hossain Mona

নাবিল মেঘলাকে কোলে নিয়ে বাইরে যাচ্ছে সেই ফাঁকেও আকাশ গ্যারেজে থেকে গাড়ি বের করে গেইটের সামনে অপেক্ষা করছে।

মেঘলার নিথর শরীরটা কোলে করে নিয়ে আসছে নাবিল…
আকাশ অপলক দৃষ্টিতে মেঘলার দিকে তাকিয়ে আছে।

নাবিলের পিছু পিছু অন্য সবাই আসছে।কিন্তু সেখানে সবাই থাকলেও ইরার উপস্থিতি নেই। তবে আপাতত ইরাকে নিয়ে ভাবার মত সময় কারো কাছে নেই। সবার দৃষ্টি জুরে আছে শুধু মেঘলা।

কিন্তু মেঘলাকে নিয়ে গাড়ির কাছে যাওয়ার আগেই নাবিল হটাৎ থমকে দাঁড়াল।
সে মেঘলার দিকে একবার তাকিয়ে,
মেঘলাকে কোলে রেখেই চিৎকার করে মাটিতে বসে পড়ল আর ডুকরে কেঁদে উঠল।

নাবিলের থমকে যাওয়া দেখে আকাশের হাত পা ঠান্ডা হয়ে গেছে মনে হচ্ছে।তার হৃদস্পন্দন যেন বন্ধ হয়ে গেছে।কি হয়েছে জানতে
আকাশ নাবিল কে জিজ্ঞাস করতে চাচ্ছে ,কিন্তু আকাশের মুখ থেকে কোন শব্দ বের হচ্ছে না।
সে এই দুঃসংবাদ সহ্য করতে পাড়বে না…

কিন্তু নাবিলের অবস্থা দেখে বোঝা যাচ্ছে বিশাল কিছু একটা ঘটেছে….

নাবিল এতক্ষন বেশ স্ট্রং ছিল আকাশ সহ অন্যদের শান্তনা দিচ্ছিল সে। কিন্তু এখন নাবিলেই বেশি ভেংগে পড়েছে সে মাটিতে বসে কান্না করছে আর চিৎকার করে বলছে না।

এটা হতে পাড়ে না….কিছুতেই হতে পাড়ে না
আমি মানি না এসব মিথ্যা…. এই দৃশ্য দেখার আগে তুমি আমাকে অন্ধ করে দিলে না কেন? কিভাবে সহ্য করব এসব….খোদা তুমি এত অবিচার করতে পাড়ো না।

নাবিলের মা এসে বলল নাবিল তুই কি পাগল হয়ে গেছিস ওকে হাসপাতালে নিতে হবে এখন কাঁদার সময় না।

নাবিল মুখ তুলে তাকিয়ে মেঘলার ঘাড়ের একটা কাটা দাগ তার মাকে দেখাল যা দেখে নাবিলের মাও চিৎকার করে বলে উঠল নাদিয়া…..
নাবিল ও আমার নাদিয়া… ??

নাবিলঃ হুম মা ওই আমাদের হারিয়ে যাওয়া নাদিয়া। যাকে আমি রাস্তায় ফেলে দিয়েছিলাম।

আকাশের বাবা অবাক হয়ে বলল কি বলছিস এসব নাবিল?

নাবিলঃ হুম আংকেল আমার যখন ৫ বছর তখন নাদিয়া হয়।নাদিয়া ছোট বলে সবাই নাদিয়াকে আদর করত। মা আর আমার পাশে ঘুমাত না আমাকে খায়িয়ে দিত না সারাদিন ওকে আদর করত তাই আমি ওকে সহ্য করতে পাড়তাম না।সুযোগ পেলেই মারতাম ও এতই ছোট ছিল কথা বলতে পাড়ত না সেই সুযোগে আমি নাদিয়াকে মারতাম।
এমনকি একদিন আমি ওকে কোলে নিয়ে ইচ্ছা করেই সিড়ি থেকে ফেলে দিয়েছিলাম।তখন ও এই ব্যাথাটা পেয়েছিল ৩ টা সিলাই লেগেছিল ছোট্ট নাদিয়ার।
নাবিলের কথা শেষ হওয়ার আগেই আকাশ নাবিল কে ডাকল
আকাশ দূর থেকে নাবিলকে ডাকতেই নাবিল মেঘলাকে নিয়ে চলে গেল।

এদিকে আকাশের বাবা নাবিলের মাকে জিজ্ঞাস করল আপনাদের মেয়ে হারাল কিভাবে?

নাবিলের মাঃ নাবিল আর নাদিয়াকে নিয়ে আমরা মেলায় ঘুরতে গিয়েছিলাম বাসায় ফিরার সময় গাড়িতে নাবিল নাদিয়াকে কোলে নিতে চেয়েছিল নাদিয়ার বয়স তখন কেবল ৭ মাস। আমরা গাড়ির সামনে বসেছিলাম নাবিল নাদিয়াকে নিয়ে পিছনে বসে ছিল। আর রাস্তায় আসতে আসতে আমার চোখ লেগে যায় আমি ঘুমিয়ে যাই। ওর বাবা নাকি গাড়ি থামিয়ে রাতের খাবার কিনতে গিয়েছিল সেই ফাঁকে নাবিল নাদিয়াকে রাস্তায় রেখে চলে আসে।
নাবিল নাদিয়াকে হিংসা করত তাই এমন করেছিল পড়ে যদিও নাবিল নিজের ভুল বোঝেছিল কিন্তু নাদিয়াকে আর পাওয়া যায় নি আমরা অনেক খোজেছিলাম পুলিশ কেস ও করেছিলাম কিন্তু নাদিয়াকে পাওয়া যায় নি।

আকাশের বাবাঃ আমিও মেঘলাকে রাস্তায় কুড়িয়ে পেয়েছিলাম।তখন অবশ্য আপনাদের সাথে পরিচয় ছিল না দেখুন একেই শহরে, এত কাছে থেকেও নিজের মেয়েকে চিনলেন না আর আজ এত সংকট মুহুর্তে ওর পরিচয় পাওয়া গেল।সবি নিয়তির লিখা।

আকাশের মা নাবিলের মা কে শান্তনা দিয়ে বলল কাঁদবেন না ভাবি মেঘলার কিছু হবে না চলুন আমরা হাসপাতালে যাই।





এদিকে নাবিল এসে মেঘলাকে নিয়ে গাড়ির পিছনে বসল আকাশ ড্রাইভ করছে।

নাবিলঃ আকাশ জানিস মেঘলা কে?

আকাশঃ এখন জানার প্রয়োজন মনে করছি না।

নাবিল তবুও বলল ও আমার একমাত্র ছোট বোন আকাশ যার কথা আমি তোকে বলেছিলাম।

আকাশঃ কি বলছিস নাবিল এই তোর হারিয়ে যাওয়া বোন যার জন্য তুই নিজেকে অপরাধী ভাবিস, এখনো চোখের জল ফেলিস?

নাবিলঃ হ্যা আকাশ আমি ওর জীবনটা নস্ট করে দিয়েছিলাম ওকে যে খুজে পাব কোনদিন ভাবি নি। আজ যখন পেলাম ওর এই অবস্থা….

আকাশঃ একেই বলে রক্তের টান তুই খেয়াল করেছিস নাবিল মেঘলা তোকে খুব বিশ্বাস আর ভরসা করে…

নাবিলঃ হ্যা লক্ষ্য করছি।আজকেউ আমার হাত ২ টি ধরে বলছিল ভাইয়া আমি বাঁচতে চাই…
আজ যদি কিছু হয়ে যায় আমি বাঁচব না আকাশ।এতদিন পর পেয়েছি ওকে আর হারাতে পাড়ব না।আমি না জেনেও ওকে অনেক পছন্দ করতাম তাই যখন শুনলাম ওর কিডনী লাগবে সবার আগে মাথায় আসল কিডনী পাওয়া না গেলে নিজে কিডনী দিব তাও ওকে বাঁচাব।

আকাশ ফুল স্পীডে গাড়ি চালাচ্ছিল হটাৎতেই একটা ছেলে হেলতে দুলতে গাড়ির সামনে চলে আসল আকাশ কোন রকমে পাশ কাটিয়ে গেল।

নাবিলঃসাবধানে চালা আকাশ…

আকাশ হটাৎ করেই গাড়ির ব্রেক চাপল।

নাবিলঃকি হয়েছে আকাশ গাড়ি কেন থামালি?

আকাশ গাড়ির গ্লাসের মধ্যে মেঘলার দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে তারপর বলল হাসপাতালে যাব না তাই….

নাবিলঃআকাশ এটা মজা করার সময় নয়….
তুই না যেতে চাইলে যাস না আমাকে যেতে দে।আমি একাই নিয়ে যাব ওকে।আজ যদি নিজের কিডনী দিয়ে ওকে বাচাতে হয় আমি তাই করব।

আকাশঃ গভীর দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল তোর কি মনে হয় মেঘলা সত্যিই অসুস্থ? বা অজ্ঞান হয়েছে?

নাবিলঃ আকাশ তোকে কিক মারতে ইচ্ছা করছে এখন এসব ফাউল প্রশ্ন করার সময়? অজ্ঞান হয় নি তো কি নাটক করছে?

আকাশঃ নাটক করছে না আবার অজ্ঞান ও হয় নি অন্য কিছু হয়েছে সন্দেহ টা আগেই হয়েছিল এখন রাস্তার ছেলেটাকে দেখে ক্লিয়ার হল…

নাবিলঃ আকাশ তুই পাগল হয়ে গেছিস ওই ছেলের সাথে মেঘলার কি সম্পর্ক?

আকাশঃ অনেক সম্পর্ক আছে,গাফলা আছে বোঝেছিলাম কিন্তু এতবড় গাফলা সেটা বোঝি নি…বলে আকাশ গাড়ি ঘুরিয়ে নিল।

নাবিল রেগে গিয়ে বলল আকাশ মেঘলার কিছু হয়ে গেলে তোর হয়ত কিছু যাবে আসবে না কিন্তু ও আমার একমাত্র বোন….

আকাশঃ ধুর শালা চুপ থাক।

নাবিলঃখুব খারাপ হয়ে যাচ্ছে আকাশ আমার সাথে মারামারি করার ইচ্ছা থাকলে করিস আমার আপত্তি নেই কিন্তু আগে ওকে হাসপাতালে নিতে দে।

আকাশঃ যাক বাবা ক্ষেপছিস কেন মেঘলাকে বিয়ে করার পর তো তুই শালাই হবি অগ্রিম বল্লাম রাগ করিস কেন?

বলতে বলতে,আকাশ একটা রেস্টুরেন্ট এর সামনে গিয়ে গাড়ি থামাল।

নাবিল অবাক হওয়ার সাথে সাথে রেগেও যাচ্ছে।
আমরা এখানে কি করছি আকাশ? তুই এত হার্টলেস কবে হলি? একটা মেয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছে আর তুই রেস্টুরেন্ট এ এসেছিস?

আকাশঃ অপেক্ষা পড়ে একটা মজার জিনিস দেখাব বলেই গাড়ির চাবি নিয়ে চলে আকাশ।

নাবিল মেঘলাকে নিয়ে যখন নেমে যেতে চাইল
তখন ২টা বোতল নিয়ে হাজির হল আকাশ।

এসেই মেঘলাকে ডাকতে লাগল আকাশ।

নাবিল আর সহ্য না করে আকাশকে থাপ্পড় মারল।

আকাশঃ আহ ডিস্টার্ব করিস কেন?মেঘলা কি আমার কেউ না নাকি?
আর কি আমার ভাই রে…এসেছে দরদ দেখাতে দুধের বাচ্চাকে রাস্তায় রেখে চলে যায় পড়ে আবার বোনের বিএফ কে বুদ্ধি দেয় বোনকে রেপ করতে এখন আবার দর

নাবিলঃ সেসব পরিস্থিতির শিকারব হয়ে কত ছিলাম

আকাশঃ এখনো পরিস্থিতির শিকার হয়েই কিছুক্ষন থাকনা দেখ কি হয়?মেঘলা আমার কলিজা বোঝেছিস?

নাবিল আর কিছু বলল না।

আকাশ একটা বোতল থেকে পানি নিয়ে মেঘলার মুখে পানি ছিটা দিল সাথে সাথে মেঘলা মিটমিট করে উঠল নাবিল অবাক হল।

আকাশ মেঘলার মুখ খুলে অন্য একটা বোতল থেকে একটু পানি ঢেলে দিল সাথে সাথে মেঘলা ডেকুর তুলল আর তার জ্ঞানও ফিড়ে আসল।

নাবিল হতবাক হয়ে বলল কি হল এটা…??

আকাশ হাসতে লাগল আর কিছু বলল না।

মেঘলা চোখ মেলে বলে উঠক আমি বেঁচে আছি?

আকাশঃ না মরে গেছিস তোকে পরকালে পৌছে দিতে এসেছি আমি আর নাবিল।

মেঘলা বোকার মত তাকিয়ে আছে সাথে নাবিল

আকাশ হাতের বোতল টা এগিয়ে দিয়ে বলল পানি খা।

মেঘলাও হাতে নিয়ে মুখে দিল কিন্তু সাথে সাথে নাক ছিটকে ফেলে দিলে চাইল আকাশ আগেই বোঝেছিল মেঘলা এটা খাবেনা তাই মুখে দেওয়ার সাথে সাথেই আকাশ মেঘলার মুখ চেপে ধরল।

মেঘলা বাধ্য হল বিশ্রি পানি টা গিলতে।

আকাশঃ যা এবার বমি কর আমি নাবিলের সাথে একটু কথা বলি।

মেঘলার সত্যি সত্যি বমি পাচ্ছে সে গাড়ি থেকে নেমে বমি করতে লাগল।

নাবিলঃ কি হচ্ছে এসব আকাশ? তুই ওকে কি খাওয়ালি?

আকাশঃ মেঘলার সাথে কেউ একটা জঘন্য গেম খেলেছে নাবিল।
মেঘলা প্রায়েই অস্বাভাবিক ভাবে যেখানে সেখানে হুট হাট ঘুমিয়ে যেত। আমার সন্দেহ হয়েছিল কিন্তু পড়ে ভেবিছিলাম কাজ করে ক্লান্ত হয়ে হয়ত ঘুমিয়ে যায় কিন্তু এখন বোঝলাম ওকে কেউ নিয়মিত ড্রাগস দেয়। যার ফলে ওর এই অবস্থা।
দেখ লেবুপানি খেয়ে কেমন বমি করছে? এখুনি সব নেশা কেটে যাবে।

নাবিলঃ তার মানে ও অসুস্থ নয়?

আকাশঃ একদমি না….আরে যে মেয়ে ১ মাস পর মরে যাবে সে কি করে এত মার সহ্য করে? কিভাবে সারাবাড়ির কাজ করে? আর ওকে যখন আমি জোর করছিলাম আমি অনুভব ছিলাম ওর কি পরিমান শক্তি…
এটা কোন অসুস্থ মেয়ের হতেই পাড়ে না।
অসুস্থতার কথা বলে ইমোশনাল করে,কেউ ওকে আমার কাছ থেকে সরিয়ে দিতে চেয়েছিল খুব সম্ভবত এটা আমার ভাবির কাজ।উনি ইরার সাথে আমার বিয়ে দেওয়ার জন্য মেঘলাকে কাজে লাগিয়েছে।
বিয়ে হওয়ার পর যদি মেঘলা জানতে পাড়ত ও সুস্থ তাহলে তখন আমার বা মেঘলার কারোরেই কিছু করার থাকত না।আমার ইরার সাথেই থাকতে হত।এটার প্ল্যানেই করছিল কেউ।

আর মেঘলা যাতে নিজেকে অসুস্থ ভাবে তার জন্য ওকে নিয়মিত ড্রাগস দেওয়া হয়ত।
দাঁড়া মেঘলা আসুক তাহলেই জানা যাবে।

কিছুক্ষন পর মেঘলা আসল,
মেঘলাঃ আপনি কি কখনো ভাল হবেন না সারাজীবন ভিলেন থাকবেন? কি খাইয়েছেন বমি করতে করতে জীবন শেষ হয়ে যাচ্ছে…

আকাশঃ দেখ নাবিল নেশা কেটে গেছে আর ম্যাডামও নিজের ফরমে ফিড়ে এসেছে।নিজের জগরাটে রুপ প্রকাশ করতে শুরু ক…

মেঘলাঃ ওই একদম গলাটিপে দিব।

আকাশঃ না বাবা আমার ঘাড়ে কয়টা মাথা? যে আপনাকে আপনার ভাইয়ের সামনে কিছু বলব? আমি কিছু বলি নি।

নাবিল কেঁদে দিল।
মেঘলাঃ ভাইয়া কাঁদছেন কেন?
আকাশ মেঘলাকে সব খুলে বলল।
মেঘলা দৌড়ে গিয়ে নাবিল কে জড়িয়ে ধরে বলল আমি তাহলে জারজ নই আমারো পরিচয় আছে?

নাবিলঃ তুই আমার একমাত্র ছোট বোন নাদিয়া
নাবিল,মেঘলা ২ জনেই কাঁদছে।

নাবিলঃ তুই আমায় ক্ষমা করে দে নাদিয়া আমি সেদিন না বোঝে যে অন্যায় করেছিলাম তার পড়ে আমাকে ক্ষমা করাটা কস্টকর জানি,তবুও ক্ষমা পাড়লে করে দিস আমাকে।

মেঘলাঃ তুমিও তো তখন অনেক ছোট ছিলে তাই তোমার উপর আমার কোন অভিযোগ নেই।তোমার জন্যই আমি আকাশ কে পেয়েছি।সেদিন আমি না হারালে কি আকাশ কে পেতাম?

আকাশঃ আমি তো এটা ভেবে পাচ্ছি না নাবিল না হয় ভুল করেছিল তাই কাঁদছে ওর হয়ত হালকার উপড় ঝাপসা ভাবে তোর কথা কিছু মনে আছে কিন্তু তুই কেন কাঁদছিস মেঘলা?তোর তো ওকে নিয়ে কোন স্মৃতিই মনে নেই তাহলে বোকার মত কাঁদছিস কেন?

মেঘলাঃ মা বাবা ভাইকে পেয়েও আমি তাদের সাথে বেশিদিন থাকতে পাড়ব না তাই…

আকাশঃ আরে তাই তো তুই তো মরে যাবি ভুলেই গিয়েছিলাম।আচ্ছা মেঘলা তুই যে মরবি এটা কোন ডাক্তার বলেছে তোকে?

মেঘলাঃ কেন ডাঃ আহমেদ

আকাশঃ ডাক্তারের কাছে কে নিয়ে গিয়েছিল?

মেঘলাঃবিপাশা ভাবি নিয়ে গিয়েছিল।

আকাশঃ ওয়াও গ্রেট তা কয়টা ওষধ দিয়েছে?

মেঘলাঃ ১ টা

আকাশঃ ওষধ টা না খেলে খারাপ লাগে আর খেলে ঘুম পায় তাই না?

মেঘলা অবাক হয়ে বলল অপনি কি করে জানলেন?

আকাশঃ হারামজাদি তোর কোন অসুখ করে নি তুই এতদিন ধরে ড্রাকাস নিয়েছিস বোঝেছিস? ইচ্ছা করছে থাপ্পড় মেয়ে সব কয়টা দাঁত ফেলে দেই।ভাবি তোকে বোকা বানাল আর তুই বোকাও হলি হাহ কপাল আমার….

মেঘলাঃ তারমানে আমার কোন অসুখ নেই? আমি মরব না?আমার কিছু হয়নি?

নাবিলঃ না হয় নি.

মেঘলাঃ এটা সত্যি?

আকাশঃ কারোর বড় কোন অসুখ হলে না সে বিছানা থেকে উঠতে পাড়ে না। কিডনীর সমস্যা হলে কিডনী যন্ত্রনা করত শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিত তোর ত সেসব কিছুই হয় নি তাহলে অসুস্থ কেমনে হোস? যদিও আমি শিওর তবুও ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাব কাল।

মেঘলাঃখুশি লাগছে….

আকাশঃ আমার রাগ উঠছে,তোকে বলেছিলাম না যাই ঘটুক আমাকে বলবি তাহলে এটা কেন বল্লি না?

মেঘলাঃ আপনি কস্ট পাবেন তাই বলিনি।

নাবিলঃ হুম নাদিয়া এটা খুব অন্যায় করেছে এর জন্য শাস্তি পাওয়া উচিত।

আকাশঃ তোর কি মনে হয় ছেড়ে দিব? বাসায় গিয়ে প্রথমে প্রমান বের করব তারপর ভাবিকে বাসা থেকে বের করব ভাবি আর ইরা ২ জন কেই পুলিশে দিব তারপরে ডাঃ আহমেদের ব্যবস্থা করব আর সবশেষে মিস মেঘলার পালা….

নাবিলঃ হুম এতে আমিও বাধা দিব না।চল এখন বাসায় যাই।

আকাশঃ হুম চল তুই ড্রাইভ কর…

নাবিল ড্রাইভ করছে….আর বলছে আকাশ জানিস তুই না খুব বুদ্ধিমান মেঘলা ড্রাকস নিয়ে এমন করেছে আমি তো ভাবতেই পারিনি।ভেবেছিলাম সত্যিই অসুস্থ।

আকাশঃ থাক পাম দিয়ে আর ফুলাইস না।

নাবিলঃ কিন্তু এখন যদি মেঘলার এটা নেশা হয়ে গিয়ে থাকে তখন?

আকাশঃ মারের ভয়ে ভুত পালায় আর নেশা ভুলাতে পাড়ব না কি যে বলিস?

মেঘলাঃ আমাকে মারবেন?

আকাশঃ অবশ্যই ভুল করলে কোন কথা নেই সোজা মাইর।
আকাশ মেঘলার ঠোঁটের দিকে তাকিয়ে বলল
ইসস খুব জোরে কামড় দিয়েছিলাম তাই না…??এদিকে আয় দেখি…

মেঘলাঃ উফফ কি করছেন এসব? ভাইয়া আছে তো…

আকাশঃ ওই শালা থাকলেই বা কি?
ও তো নিজেই বুদ্ধি দিয়েছে তোকে রেপ করে বিয়ের জন্য রাজি করাতে…

নাবিলঃ আমি কি এখনো মানা করছি নাকি?তুই পাড়লে এখুনি করে ফেল।আমার কোন আপত্তি নেই।আমি তো আকাশ কে চিনি, আকাশ হয়ত খুন কর ফেলতে পাড়বে কিন্তু কোন মেয়ের সম্মানে হাত দিতে পাড়বে না।

নাবিলঃ আকাশ তোর মনে নেই আমি বলতাম আমার একটা বোন থাকলে তোর কাছে বিয়ে দিতাম।মেয়েদের থেকে দূরে থাকত তাই এতটাই পছন্দ করতাম ওকে।এখন তো বোন ও পেয়ে গেলাম

আকাশঃ মনে আছে….কিন্তু জানিস নাবিল তোর মত বন্ধু পাওয়াটা সত্যিই ভাগ্যের বিষয়। আজ তুই না থাকলে সব ওলট পালট হয়ে যেত।

গল্প করতে করতে ৩ জন মিলে বাসায় আসল।
আর এদিকে বাসার সবাই এদের হাসপাতালে খোজে না পেয়ে নিরাশ হয়ে বাসায় এসেছে।

আকাশরা ঘরে ঢুকতেই
মেঘলাকে সুস্থ দেখে সবাই খুব অবাক হল।

নাবিল মেঘলাকে তার মা বাবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিল তারা মেঘলা কে খুজে পেয়ে খুব খুশি।

আকাশের বাবাঃ আজ আমি খুব খুশি মেয়েটা এতদিনে তার পরিচয় পেল। কিন্তু আফসোস একটাই মেঘলার অপারেশন….

আকাশঃ আরে বাবা টেনশন করো না কিডনী পাওয়া গেছে…

আকাশের বাবাঃ আলহামদুলিল্লাহ কিন্তু কে সেই ব্যাক্তি?

আকাশঃ কেন আমাদের ইরা….

কথাটা শুনে সবাই আকাশ থেকে পড়ল…

বিপাশাঃ ইরা কেন কিডনী দিবে?

আকাশঃ ওমা দিবে না কেন সেটা বলো? তোমাদের বাবার যে পরিমান লোন হয়েছে উনি সেসব পরিশোধ না করতে পাড়লে উনার সোসাইড ছাড়া কোন উপায় নেই। পাওনাদার রাও ছাড়বে না উনাকে।টাকার জন্য কবে কে মেরে দিবে জানতেও পাড়বে না।
এখন তুমি বলো কাকে বাঁচাতে চাও বাবা নাকি ইরা?
আর আমি এতদিনে ইরাকে যে পরিমান টাকা দিয়েছি আমিও সেগুলির জন্য মামলা করব…তোমার বাবা সেগুলি দিতে ফিরত দিতে পাড়বে তো?কিন্তু ইরা কিডনী দিলে আমক সেসব কিছুই হবে না।
একটা সুযোগ দিতে পাড়ি ইরা একা দিতে না পাড়লে তুমি আর ইরা ২ জন মিলে দাও।
বাবার জন্য এইটুকু পাড়বা না?

কালকেই অপারেশন আমরা সব ব্যবস্থা করে এসেছি। এই দেখো এপয়েন্ট করে এসেছি।
বিপাশা হাসপাতালের কাগজ দেখে ভয়ে মুখ ফসকে বলে ফেলল এটা কি করে সম্ভব? মেঘলার তো কিছু হয় নি।

আকাশঃ তাই নাকি?তাহলে বাকিটা তুমই বলো।

বিপাশাঃ হ্যা টাকার জন্যই আমি আর ইরা এই প্লেন করেছিলাম। বিশ্বাস করো টাকার দরকার না হলে এমন করতাম না।ভেবেছিলাম একবার বিয়েটা হয়ে গেলে সব বলে দিব।

আকাশঃ তাই বলে একটা মেয়ে কে তোমরা ওষধের নাম করে ড্রাকস দিলে…???

যা করেছো তো করেছো তাই এখন ২ বোন মিলে একটু মামা বাড়ি থেকে ঘুরে এসো। নাবিল পুলিশ ডেকে বিপাশা আর ইরাকে ধরিয়ে দিল।

মেঘলাঃ ওদের ক্ষমা করে দেওয়া যায় না?

আকাশঃ না যায় না।চিন্তা করিস না আংকেলের সব ঋন আমি শোধ করে দিব কিন্তু এরা একটু শাস্তি পেয়ে আসুক।

নাবিলঃ হয়েছে এবার মেঘলাকে নিয়ে ঘরে যা তুই।মেঘলার উপড় দিয়ে অনেক দখল গিয়েছে।

আকাশঃ হুম ঠিকি বলেছিস মেঘলা চল।

আকাশ মেঘলাকে নিয়ে যেতে যেতে ফিসফিস করে বলল তখন যেটা পাড়ি নি এখন ঠিক পাড়ব…

মেঘলাঃ উহু বিয়ের আগে এসব হবে না।

আকাশ মেঘলাকে ঘরে নিয়ে গিয়ে বলল মেঘলা চোখ বন্ধ কর তো….

মেঘলা চোখ বন্ধ করতেই আকাশ একটা রিং পড়িয়ে দিল।

মেঘলা চোখ খোলে বলল এটা তো আমার সেই আংটি টা সেদিন যে ডোবায় ফেলে দিয়েছিলেন…??আপনার কাছে আসল কি করে?

আকাশঃ হুম অনেক খোঁজার পর পেয়েছি কিন্তু আর একটা পাই নি।

মেঘলাঃ আমিও একটা পেয়েছি অন্যটা পাই নি।
আপনি দাঁড়ান আমি নিয়ে আসছি বলে মেঘলা নিজের ঘরেএ দিকে দৌড় দিল আকাশ ও পিছু পিছু গেল।

মেঘলা রিংটা দিতেই আকাশ হেসে মেঘালাকে টেনে এনে কপালে চুমু এঁকে বলল কি করে ২ জনের এত মিল… এত অপমানের পরেও তুই যে রিং খোজতে যাবি স্বপ্নেও ভাবি নি।

মেঘলাঃ এই যে মিস্টার আমি ভালবাসতে পাড়ি
কিন্তু আপনাকে দেখে বোঝার উপায় নেই আপনি ভালবাসছেন নাকি ভিলেনি করছেন তাই মাথার মধ্যে সব সময় একটা গভীর প্রশ্ন ঘুরাপাক খায়…

আকাশঃ কি প্রশ্ন?

মেঘলাঃ আপনি আসলে কি?
লাভার নাকি ভিলেন?

আকাশ আর মেঘলা ২ জনেই হেসে দিল



সমাপ্ত
******

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here