শিশির ভেজা রোদ্দুর পর্ব -৬৬

#শিশির_ভেজা_রোদ্দুর
#Weeding_Special
#Writer_NOVA

বাইরে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে,”বর এসেছে, বর এসেছে”।কথাটা কানে আসতেই এক চিলতে হাসি ফুটে উঠলো। সাজ পুরো কমপ্লিট। পার্লারের মেয়েটা হাতে গ্লিটার দিয়ে ডিজাইন করছে।এদিকে শীতের মধ্যেও আমার অস্থির লাগছে। লেহেঙ্গাটা অনেক ভারী। গোল্ডেন পাথরের ভারী কাজ করা। সাধারণত বিয়েতে লাল, খয়েরী রঙ বেশি পরা হয়। কিন্তু আমার লেহেঙ্গাটা এনাজের ফেভারিট আকাশি রঙের। এনাজেরও সেম কালারের শেরওয়ানি। ভেবেছিলাম আকাশিতে আমাকে মানাবে না। কিন্তু এখন দেখছি ভালোই লাগছে। অনন্যা আমার কাছে এসে জিজ্ঞেস করলো,

— খালামণি, ফিতা কোথায়?

— কিসের ফিতা?

— গেইট আটকাবো সেই ফিতা।

— দেখ তো ওয়ারড্রবের দ্বিতীয় ড্রয়ারে নাকি।

— আচ্ছা, আমি দেখছি। লেখা কার্ডগুলো কোথায়?

— কোন কার্ড?

— ঐ যে ছন্দ লেখা কার্ডগুলো।

— টেবিলের ওপরে ইভা রাখছিলো। সেখানেই তো থাকার কথা।

— ওহ পাইছি।

— ওরা কি চলে আসছে?

— মসজিদের ঐখানে আছে।

— ফিতা পেয়েছিস?

— হুম, এই সবুজ রঙের এটাই তো।

— হ্যাঁ এটাই। আঙ্কেল তোমায় কল দিয়েছিলো?

— গাড়িতে থাকতে একবার দিয়েছিলো। আমি সাজতে ছিলাম তাই বেশি কথা বলতে পারিনি।

— তুমি যাবা?

— কোথায় যাবো?

— তুমি নাকি ইভাকে বলছো তোমার বিয়ের গেইট তুমি ধরবা।

— হু বলছি।

— তাই জিজ্ঞেস করছি যাবা?

— তোরা যা আমি আসতেছি।

অনন্যা ফিতা নিয়ে চলে গেল। আমি পার্লারের মেয়েটার দিকে তাকাতেই দেখি মেয়েটা আমার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম,

— কিছু বলবেন আপু?

— আপনি গেইট ধরবেন?

— হ্যাঁ, কেন?

— গ্রামের মানুষ কি বলবে?

— কে কি বলবে তার তোয়াক্কা এখন আমি করি না।

— হঠাৎ আপনার এমন আজগুবি ইচ্ছে কেন জাগলো আপু?

— একটা ভিডিওতে দেখছিলাম বউ গেইট ধরে।তখব থেকে জাগছে। আপনি একটু তাড়াতাড়ি হাতের কাজটুকু শেষ করেন।

বেচারী আমার দিকে বিস্মিত চোখে এখনো তাকিয়ে আছে। আসলে তার হজম হচ্ছে না যে বিয়ের কনে বরের গেইট আটকাবে। তন্বী, নূর আপি, ইভার চেচামেচি শোনা যাচ্ছে। গেইট আটকানোর দায়িত্বে তারা আছে। আমি পার্লারের মেয়েটাকে তাড়া দিয়ে বললাম,

— আপু একটু তাড়াতাড়ি করেন না। ঐদিকে ওরা চলেও আসছে বোধহয়।

মেয়েটা দ্রুত হাত চালাতে লাগলো। আমি ছটফট করছি। কতখনে এখান থেকে যেতে পারবো। ইভা দৌড়ে আমার কাছে এসে বললো,
— বোইনে ভাইয়ারা চলে আসছে। জলদী আসো।

আমাকে আর পায় কে? আমি মেয়েটার থেকে আমার হাত সরিয়ে নিয়ে চট জলদী লেহেঙ্গা উঁচু করে দিলাম দৌড়। আসার সময় স্যান্ডেল জুতা পরে চলে আসছি। থাক গে লেহেঙ্গার নিচে দেখা যাবে না। গেইটের সামনে এসে সবাইকে উদ্দেশ্য করে বললাম,
— দেখি, দেখি আমাকে একটু সাইড দাও তো।

উপস্থিত সবাই আমাকে দেখে হতভম্ব। এনাজের চোখ চড়কগাছ।তায়াং ভাইয়া কপালে একটা চাপর মেরে বললো,

— তোর দ্বারাই এসব সম্ভব।

আমি ভাইয়াকে একটা ভেংচি কেটে ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বললাম,

— গেইটের টাকা নিয়ে কোন ঝামেলা করা যাবে না। আমার বোনেরা যা চেয়েছে তা দ্রুত দিয়ে দেন।

নূর আপি আমার সাথে তাল মিলিয়ে বললো,
— বর দিতে না পারলে বরের বন্ধুদের ধরবো।

তায়াং ভাইয়া মুখটাকে কুচোমুচো করে বললো,
— আমি মেয়েপক্ষের লোক। আমাকে তোদের দলে নিয়ে যা।

তন্বী চোখ পাকিয়ে বললো,
— একদম না। যেখানে দাঁড়িয়ে আছো সেখানেই দাঁড়িয়ে থাকো। সুবিধাবাদী লোক। টাকা চেয়েছি বলে এখন দল বদলের চিন্তা করছো? একটুও না। এতো ভালো আমরা নই।

ইভা চেচিয়ে বললো,
— দশ হাজার না দিলে গেইটের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকবেন। জলদী টাকা দেন।

সবার হাতে নানা ছন্দ লেখা মাঝারি সাইজের কার্ড। প্রথমে তন্বী ওর হাতের কার্ডে লেখাটা জোরে চেচিয়ে বললো,
—এক বড় না, দুই বড়,এনাজ ভাইয়ের মন বড়।

ইভা ওর হাতে থাকা বড় কার্ডটাকে পড়তে লাগলো।
—-এই যে আইছেন দুলাভাই
আস্তে আস্তে তুলবেন হাই!
পায়েশ দিমু ল্যাটকাইয়া, ছবি তুলবেন ভ্যটকাইয়া
আগে টেহা পরে বউ, মেয়া আমগো মৌটুসি মৌ
গরম গরম টেহা দিবেন, তাহলেই বউ নিতে পারবেন।

নূর আপি চেচিয়ে তায়াং ভাইয়াকে উদ্দেশ্য করে বললো,
—-আসসালামু আলাইকুম N
বর আসছে বিয়ে করতে আপনারা আসছেন কেন?

তায়াং ভাইয়া চোখ দুটো ছোট করে নূর আপির দিকে তাকাতেই নূর আপি ভেংচি কাটলো।ইভা চেচিয়ে বললো,

—আমাদের দাবি মানতে হবে,
দাবি মানলে আপুকে পাবে।

তন্বী আবারো বললো,
— এক বড় নাকি দুই বড়

সবাই একসাথে চেচিয়ে বললো,
— এনাজ ভাইয়ের মন বড়।

তন্বী ফের বললো,
— টাকা থাকলে পকেটে

সবাই চেচিয়ে বললো,
— বউ আসবে রকেটে।

তন্বী থামতেই নূর আপি বললো,
— বুকে চিনচিন করছে হায়

সবাই সমস্বরে চেচিয়ে বললো,
মন খালি টাকা চায়।

ইভা আমাকে খোঁচা মেরে বললো,
— তুমি কিছু বলো বোইনে।

— আমি কি বলবো?

— বলো কিছু।

— আচ্ছা বলছি।

এনাজের দিকে তাকিয়ে মিটমিট করে হেসে বললাম,
—জাগো ভাই-বোনেরা জাগো,
আমার জামাই টাকা না দিলে,
জামাই-এর পাগড়ি লইয়া ভাগো।

এনাজ চোখ দুটো রসগোল্লা বানিয়ে আমার দিকে তাকালো। তারপর শয়তানি হাসি দিয়ে বললো,
—আমার বউ আমি নিবো,
গেইটে কেন টাকা দিবো।

সবাই একসাথে “ওহো” করে চেচিয়ে উঠলো। আমি তার দিকে চোখ পাকিয়ে তাকাতেই সে এক চোখ মেরে দিলো। রওনক তন্বীর দিকে তাকিয়ে জোরে চেচিয়ে ছন্দের সুরে বললো,

—বাইচ্ছা নিবো দেইখা নিবো।
বউ নিবো না শালি নিবো,
একদাম ৫০০০ দিবো।

আমার চাচাতো ভাই মুহিন তার বিপরীতে চেচিয়ে বললো,
— দশ হাজারের এক টাকাও কম নয়।
Without টিয়া,No প্রিয়া।

তন্বী কিছু সময় থেমে আবারো চেঁচানো শুরু করলো।
—টাকা দেন তারাতারি

সবাই চেচিয়ে বললো,
—ঢুকে যান শশুর বাড়ি

এনাজ ফের চেচিয়ে বললো,
— আমার বউ আমি নিবো।

তার বন্ধুরা সব চিৎকার করে বললো,
— গেইটে কেন টাকা দিবো।

আমি সবাইকে হাত দিয়ে থামিয়ে বরের সাথের লোকগুলোকে বললাম,
— জলদী জলদী টাকা দিয়ে দেন। ওদের পাঁচ হাজার। বাকি পাঁচ হাজার আমার।

নূর আপি চেচিয়ে বললো,
— তুই কোথা থেকে আসছিস। যা ভাগ। এগুলো সব আমাদের।

অবশেষে অনেক ধানাইপানাই করে পাঁচ হাজারে দুই পক্ষ সম্মত হলো। পাঁচ হাজার দিতেই ওরা কাঁচি এগিয়ে দিলো। এনাজ ফিতা কাটার সাথে সাথে পার্টি স্প্রে, ফুলের পাপড়ির বর্ষণ শুরু হলো। আমি আর বেশি সময় এখানে থাকতে পারবো না।তাই লেহেঙ্গা উঁচিয়ে তাদের আগেই মারলাম দৌড়। ভাগ্যিস দুইপক্ষের মধ্যে কোন মুরব্বি ছিলো না। নয়তো এতখনে নানা কথা রটে যেতো। দরজার পাশের সোফায় গিয়ে বসলাম। এনাজ ও তার বন্ধুরা স্টেজে উঠেই নাচতে শুরু করলো।আমার জামাইটা খুশিতে না মান-সম্মান মেরে ফেলে। আমি তায়াং ভাইয়াকে হাতের ইশারায় ডাকলাম৷ ভাইয়া সামনে এসে বললো,

— কি হয়েছে? কিছু বলবি?

— তোর বন্ধুকে থামা। বিয়ের খুশিতে তো পাগল হয়ে গেছে। স্টেজে উঠে লজ্জাশরমের মাথা খেয়ে কিভাবে নাচছে দেখ?

— পাগলনীর জামাই তো পাগল হবেই। তুইও তো একটু আগে নিজের বিয়ের গেইট নিজে ধরছিস। তাহলে ও কেন নিজের বিয়েতে নাচতে পারবে না।

আমি দাঁত চেপে ওর দিকে রাগী লুকে তাকালাম। ভাইয়া ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে চলে গেল। একটু পর দেখি তায়াং ভাইয়া নিজেই স্টেজে উঠে বন্ধুদের সাথে নাচছে। আমি আমার কপালে একটা চাপর মেরে রুমে চলে গেলাম।

💖💖💖

খাওয়া-দাওয়ার পর্ব শেষ। আমাকে ইভা কয়েক লোকমা খাবার খাইয়ে দিয়েছিলো। এতটুকুই আমার চালান।এখন কাজী বিয়ে পরাবে। এনাজকে আমার পাশে বসানো হলো। এনাজের প্রত্যেকটা বন্ধুর বাবা আসছে। শুধু তায়াং ভাইয়া আব্বু মানে আমার খালু ছাড়া। কাজী দেখেই আমি ফুপিয়ে ফুপিয়ে কান্না শুরু করলাম। পুরো রুমে মুরব্বিদের আনাগোনা। কাজী তার মতো করে বিয়ে পরানো শুরু করলো। এনাজকে কবুল বলতে বললে এক দমে তিনবার কবুল বলে ফেললো। ওর কবুল বলার স্প্রিড দেখে আমি কান্নার মধ্যেও ফিক করে হেসে উঠলাম। মাথা নিচু করে এনাজের হাতে একটা চিমটি কাটলাম। সে আহ্ করে উঠতেই সবাই আমাদের দিকে একসাথে তাকালো। আমার বড় চাচ্চু জিজ্ঞেস করলো,

— কি হয়েছে বাবা?

এনাজ একবার আমার দিকে তাকিয়ে চাচ্চুকে বললো,

— কিছু না।

কাজী আমাকে কবুল বলতে বলছে। কিন্তু কান্নার দরুন আমার গলা বন্ধ হয়ে আসছে। আমি শুধু ফোঁপাচ্ছি। আব্বু আমার সামনে এসে বিষন্ন মনে বললো,

— কবুল বলো মা।

আব্বুকে দেখে আমার কান্নার বেগ বেড়ে গেলো। আমার কান্নার শব্দে আব্বুর চোখ টলমল করছে। কাঁদতে কাঁদতে কবুল বলে দিলাম। রেজিস্ট্রার পেপারে সই করে কান্নায় ভেঙে পরলাম। একে একে বাকি কাজগুলো সুষ্ঠুভাবে সমাধা হলো। মোনাজাত নিয়ে মিষ্টিমুখ করার ধুম পরলো। মুরব্বিরা হাঁক দিলো এবার বের হতে হবে। বউকে বের করো। ব্যাস এতটুকু ছিলো। একটু কান্না থেমেছিলো সেটাও বেড়ে গেলো। কান্না করা অবস্থায় বড় ভাবী আমাকে সাথে নিয়ে দরজায় দাঁড় করালো। একটা নতুন কাপড় ধরে সাক্ষ্যিদের সাথে কি কি জানি বলালো এনাজকে দিয়ে। দরজা দিয়ে বের হতেই আব্বু সামনে এলো। তাকে জড়িয়ে ধরে সেকি কান্না। আম্মু তো এর মধ্যে দুইবার অজ্ঞান হয়ে গেছে। ইভা,অনন্যা,অর্থি,তন্বী,নূর আপি সবাই চোখ মুছছে। একে একে সবার থেকে বিদায় নিলাম। এখন আমি ফুপিকে জড়িয়ে ধরে দাঁড়িয়ে আছি। আমার একটাই কথা। আমি যাবো না। এদিকে সন্ধ্যা গড়িয়ে আসছে। তায়াং ভাইয়া এগিয়ে এসে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে কাঁদতে বললো,

— আমার এখনো মনে হচ্ছে না তুই আমাদেরকে ছেড়ে যাবি। যেদিন তোকে এই বাসায় রেখে গিয়েছিলাম তখন মনে হচ্ছিলো প্রতিবারের মতো কিছু দিন পর তোকে এসে নিয়ে যাবো। কিন্তু এবার তোকে নিতে আসবো না। বাসায় কেউ আমার সাথে ঝগড়া করবে না। কেউ আমার সাথে লেগে থাকবে না। দুষ্টুমীর জন্য আম্মুর কাছে আর বকা খাবো না। তুই একদিন বলছিলি না এই সুখটা আমার সহ্য হবে না। আজ আমি সত্যি উপলব্ধি করতে পারছি। তোরা বিরক্ত না করলে আমি একটুও ভালো থাকবো না।বাসাটা আগের মতো চুপচাপ হয়ে যাবো। এই ভালোটা আমার সহ্য হচ্ছে না রে বোন। আমার কলিজা ফেটে যাচ্ছে।

ভাইয়া হাউমাউ করে কেঁদে উঠলো। ভাইয়াকে এভাবে কাঁদতে আমি কখনো দেখিনি। ইভা কাঁদতে কাঁদতে হেঁচকি তুলে ফেলছে। ভাইয়া আমাকে ছাড়তেই ও ঝাপিয়ে পরলো আমার ওপর। কান্না জড়ানো কন্ঠে বললো,

— বোইনে যাইয়ো না তুমি। আমি তোমার নামে আম্মুর কাছে একটুও বিচার দিবো না। তোমার সবকাজ করে দিবো। তুমি যা বলবে তাই শুনবো। তোমার কোন কথার অবাধ্য হবো না। তবুও তুমি থেকে যাও।

তন্বী এগিয়ে এসে দুই হাতে আমাদের দুজনকে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে লাগলো। ঐদিকে বরপক্ষের মুরব্বিরা যাওয়ার জন্য তাড়া দিচ্ছে। তন্বী নাক টেনে কাঁদতে কাঁদতে বললো,

— অনেক মিস করবো তোমাকে নোভাপু। এতদিন তুমি আমাদের সাথে ছিলে। আমার কাছে মনে হয়েছে আমার একটা বড় বোন ছিলো আমার সাথে। এখন থেকে আমাকে একা কলেজ যেতে হবে। কোন ভুল করলে বড় বোনের মতো করে কেউ বকবে না। কেউ বলবে না এটা কেন করেছিস, ঐটা কেন করছিস? আমি তোমাকে সত্যি অনেক মিস করবো। অনেক মিস করবো।

অর্থি, অনন্যা এসে সামনে দাঁড়িয়ে মুখ আটকে কান্না করছে। ওদের দুজনকে ছেড়ে অনন্যা, অর্থিকে জড়িয়ে ধরলাম। অনন্যা হু হু করে কেঁদে উঠলো। কাঁদতে কাঁদতে বললো,

— এখন থেকে নানা বাসায় আসলে তোমাকে অনেক মিস করবো খালামণি। তুমি তো থাকবে না।

অর্থি আমার চোখের পানি মুছিয়ে দিয়ে বড়দের মতো করে বললো,

— আর কান্না করো না খালামণি। তুমি কান্না করলে সবাই কাঁদবে। আগামীকাল আমরা তোমাকে গিয়ে নিয়ে আসবো। এখন কান্না বন্ধ করো।

একে একে নূর আপি, শাহীনুর আপু, সামাদ ভাইয়া, মুহিন, তিন ভাবী সবাইকে জড়িয়ে ধরে আরেকদফা কান্না করলাম। আম্মু এগিয়ে এসে আবার জড়িয়ে ধরতেই জোরে চিৎকার শুরু হয়ে গেলো। তায়াং ভাইয়া এগিয়ে এসে টেনে নিতে লাগলো। আমি ভাইয়ার হাতে ইচ্ছে মতো থাপ্পড় দিতে লাগলাম। চেচিয়ে বললাম,

— ভাইয়া আমাকে ছাড় আমি যাবো না।

— পাগলামি করিস না বোন।

— আমি যাবো না। আমি এখানেই থাকবো।

— কালকে এসে পরবি তো।

আমি ভাইয়ার কথা শুনতে নারাজ। ভাইয়া শেষে বাধ্য হয়ে আমাকে কোলে তুলে নিলো। তাও আমি ছটফট করে নিজেকে ছাড়াতে ব্যস্ত। সাথে ভাইয়ার বাহুতে কিল-ঘুষি তো আছেই। ভাইয়া আমাকে নিয়ে দ্রুত চলতে লাগলো। চিৎকার করে কাঁদতে কাঁদতে গলা ভেঙে ফেলছি। শরীরে শক্তিও পাচ্ছি না। গাড়ির সামনে এনে ভাইয়া দরজা খুলে ভেতরে বসিয়ে দিলো। আমার মাথা ভনভন করে ঘুরছে। তাও বাইরে যাওয়ার জন্য উঠতে নিলে এনাজ দুই হাতে কোমড় জড়িয়ে ধরে আটকে নিলো। ভাইয়া দরজা আটকে দিলো।আমার সারা পৃথিবী ঘুরছে। ধীরে ধীরে মাথাটা এনাজের কাঁধে এলিয়ে দিয়ে জ্ঞান হারালাম।
#শিশির_ভেজা_রোদ্দুর
#Part_66
#Writer_NOVA

মুখে পানির ঝাপটা পরতেই পিটপিট করে চোখ খুললাম। তাকিয়ে দেখি খালামণি মিষ্টি হেসে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। খালামণিকে দেখে দুঃখ উঠে গেলো। তাকে জড়িয়ে ধরে হু হু করে কেঁদে উঠলাম। খালামণি মাথায় আশ্বাসের সুরে বললো,

— কান্না করিস না। আমরা এখানে আছি তো। আমি আছি তোর তায়াং ভাইয়া আছে। মন খারাপ করে থাকিস না। তায়াং ওকে একটু ধর। তায়াং, এই তায়াং।

এনাম ভাইয়া বললো,
— তায়াং ভাইয়া এখনো আসেনি। কোথায় আছে বলতে পারছি না। কল করে দেখছি।

খালামণি পাশে থাকা মোহনাকে বললো,
— মোহনা যাও গিয়ে ওকে ধরে একটু দাঁড়াও। আমি বরণডালা নিয়ে আসছি।

মোহনা এগিয়ে এসে আমাকে ধরলো। এনাজ ওকে সরিয়ে দিয়ে ইশারায় বুঝালো আমি ধরতে পারবো। মোহনা মুচকি হাসি দিয়ে সরে গেলো। এনাজ এক হাতে আমাকে জড়িয়ে ধরলো। খালামণি যত নিয়ম আছে সব পালন করে বরণ করে নিলো। বাসায় ঢোকার পর সোফায় নিয়ে বসালো। এখন নাকি আবার ভিডিও হবে। বসে থাকতে থাকতে আমি শেষ। কোমড় ব্যাথা শুরু হয়ে গেছে। সব ফ্ল্যাটের মানুষ এসেছে নতুন বউ দেখতে। ভীড় কমতেই আমি সোফায় হেলান দিয়ে চোখ দুটো হালকা বন্ধ করে ফেললাম।

— নে শরবতটুকু খেয়ে নে।

খালামণি আমার সামনে এক গ্লাস শরবত বাড়িয়ে দিলো। আমারও বড্ড তেষ্টা পেয়েছিলো। তাই কোন কথা না বলে চুপচাপ খেয়ে নিলাম। খালামণির হাতে গ্লাসটা ফেরত দিতেই সে গ্লাস নিয়ে টি-টেবিলের ওপর রাখলো। এনামকে ডেকে জিজ্ঞেস করলো,

— তায়াং আসছে এনাম?

— না আন্টি। আমি কল দিয়েছিলাম। ভাইয়া বললো একটু বাসায় গেছে। সেখান থেকে ফ্রেশ হয়ে তারপর আসবে।

— আবার বাসায় গেছে কেন?

— তাতো জানি না।

— ওহ আচ্ছা। ঐদিকে বাসরঘর সাজানো হয়েছে? মেয়েটা এভাবে আর কতখন বসে থাকবে? সারাদিন ধরে বসে আছে।

— দুই দিন তো একটু কষ্ট করতেই হবে। ভাবীকে বসে থাকতে থাকতে হাঁপিয়ে গেলে চলবে না।

— গিয়ে দেখ সব কমপ্লিট হয়েছে কিনা।

— সাজানো বহু আগেই হয়ে গেছে। ভাবীকে রেখে আসেন। আমি ফ্রেশ হতে চলে গেলাম।

এনাম চলে গেলো।সোফার ওপর দুই পা মুড়ে বসে ছিলাম। এনাজের দুটো বন্ধুকে দেখে দ্রুত পা নামিয়ে সুন্দর করে বসলাম। এদেরকে আগে কখনো আমি দেখিনি। আমাকে দেখে রাখার জন্য মোহনাকে রেখে খালামণি কিচেনের দিকে চলে গেল। দুই বন্ধুর মধ্যে একজন সামনে এসে মুখ টিপে হেসে বললো,

— ভাবী,আজকে কি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ হবে নাকি?

আমি প্রথমে তাদের কথা বুঝলাম না। পরে বুঝতে পেরে আমি চোখ দুটো গোল গোল করে সামনের এনাজের দিকে তাকালাম। এনাজের গাল দুটো লাল টমেটো হয়ে আছে লজ্জায়।সে দ্রুত পায়ে সামনে এসে যে কথাটা বলেছে তার পিঠে এক চাপর মেরে বললো,

— শালা, চুপ কর। কোথায় কি বলতে হয় তা জানিস না? ছোট বোন আছে সামনে।

মোহনা হয়তো কথাটা শুনতে পাইনি কিংবা শুনলেও বুঝতে পারেনি৷ তাই অবাক চোখে আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে। আমি মাথা নিচু করে মিটমিট করে হাসতে লাগলাম। আবারো ছেলে দুটো কিছু বলার জন্য মুখ খুলেছিলো। এনাজ দুইজনের মুখ চেপে বাসার বাইরে টেনে নিয়ে গেলো। আমি ফিক করে হেসে উঠলাম। আমার থেকে এনাজ বেশি লজ্জা পেয়েছে। মোহনা আমাকে হাসতে দেখে বললো,

— কি হয়েছে ভাবী?

— কিছু না।

— কিছু লাগলে বলো।

— আচ্ছা।

— বাসার বাকি সবাই গেলো কোথায়?

— আর কাউকে দেখছি না যে? ইমরান হাশমি ভাইয়া, শাহেদ ভাইয়া, রায়হান ভাইয়ার বোনকেও তো দেখছি না। তারা আসেনি?

— এসেছে তো। কোথায় আছে জানি না। আমাকে তোমার পাহারাদার হিসেবে নিযুক্ত করছে। তাই অন্য কোথাও যাওয়া মানা। আমি কোথাও গেলে সেই ফাঁকে যদি তোমাকে কেউ কিডন্যাপ করে নেয়। তাহলে এনাজ ভাইয়া হার্ট অ্যাটাক করবে।

আমি মিটমিট করে হাসলাম। কোন উত্তর দিলাম না। এনাজ মহাদোয়ের দেখা নেই। কি লজ্জাটা না পেয়েছে বেচারা। তার লজ্জা রাঙা মুখটা মনে পরতেই আমার হাসি আসছে। খালামণি কিচেন থেকে এসে বললো,

— মোহনা যাও তোমার ভাবীকে এনাজের রুমে বসিয়ে দিয়ে এসো।

— আচ্ছা আন্টি।(আমার দিকে তাকিয়ে) চলো ভাবী তোমাকে তোমার রুমে রেখে আসি।

মোহনার পিছু পিছু ধীর পায়ে সামনের দিকে এগুতে লাগলাম। যত এগুচ্ছি ততই ভয় করছে। আজকের থেকে নতুন জীবনের নতুন অধ্যায়, নতুন করে পথচলা তাও প্রিয় মানুষটার সাথে।

💖💖💖

বিশাল এক ঘোমটা টেনে বাসরঘরে বসে আছি। শীতের মধ্যেও কুলকুল করে ঘামছি আমি। আমাকে এখানে বসিয়ে মোহনা চলে গেছে দশ মিনিট ধরে। মনের ভেতর শয়তানি বুদ্ধি ঘুরছে। একবার ভাবছি কাজে লাগাবো। আরেকবার ভাবি দরকার নেই। তা নিয়ে এখন দ্বিধাদ্বন্দে ভুগছি। কিছু সময় ভেবে শয়তানি করতে মন সায় দিলো। মনে মনে বললাম,

—সরি এনজিও সংস্থা, আপনার বাসর করা আজ হবে না। মাফ করে দিয়েন।

খট করে ছিটকিনি খোলার শব্দ পেতেই নড়েচড়ে বসলাম। লেহেঙ্গা খামচে শক্ত করে ধরলাম। অভিনয় শুরু করতে হবে। বেচারার জন্য একটু মায়াও হচ্ছে। তবু আমি নিরুপায়। সে ধীর পায়ে আমার সামনে এগিয়ে আসছে। যত এগিয়ে আসছে তত ভয় বাড়ছে। চট জলদী উঠে তাকে দেখে ভয় পাওয়ার ভঙ্গি করে কিছুটা পিছিয়ে গিয়ে বললাম,

— একদম আমার কাছে আসার চেষ্টা করবেন না। দূরে যান বলছি।

হঠাৎ আমার এই আচরণে বেচারা পুরোই ভরকে গেল। বিস্ফোরিত চোখে আমার দিকে তাকিয়ে যেখানে দাঁড়িয়ে ছিলো সেখানে দাঁড়িয়ে রইলো। মুখটাকে কুচোমুচো করে বললো,

— কি করছি আমি?

— কিছুই না। যেখানে দাঁড়িয়ে আছেন সেখানে দাঁড়িয়ে থাকেন। একদম কাছে আসার চেষ্টা করবেন না।

— বউকে যদি স্পর্শ করতে না পারি তাহলে বিয়ে করে লাভ কি আমার?

—ওতো লাভ-লোকসানের হিসাব আমি বুঝি না। যা বলছি তা করেন।

— আমার অপরাধ?

— ওয়েট খুঁজতেছি।

এনাজ কপাল কুঁচকে আমার দিকে তাকালো। আমি এদিক সেদিক তাকিয়ে পুরনো স্মৃতির ঝুলি খুলে বসলাম। কিন্তু এনাজের কোন দোষ খুঁজে পাচ্ছি না। তাই (😁) এই ইমোজির মতো করে একটা হাসি দিয়ে বললাম,

— আসসালামু আলাইকুম। পা ধরে সালাম করা গুনাহ। তাই মুখে সালাম দিলাম।

— ওয়া আলাইকুমুস সালাম। এবার এই বান্দার অপরাধটা যদি একটু বলতেন মহারাণী। তাহলে বড় উপকৃত হতাম।

— বলছি, একটু ভেবে নেই।

— হু ভাবতে ভাবতে সারারাত কাটিয়ে দিন। আমি নিচে বসে বসে মশা মারি।

আমি খাট থেকে লাফ দিয়ে নেমে তার সামনে এসে দুই হাত কোমড়ে রেখে বললাম
— বিয়েতে অনেক সুন্দর সুন্দর মেয়ে এসেছিলো। তাদের দিকে ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে ছিলেন। এই আপনার অপরাধ।

— এতবড় মিথ্যা বললে?আমি এক নারীতে আসক্ত। তাই অন্য কারো দিকে তাকাতেও ইচ্ছে হয়নি।

ধরা পরে গেলাম। কি এক ঘাটোরা আইডিয়া খুঁজেছি। তার দিকে অপরাধী দৃষ্টিতে তাকিয়ে নখ কামড়াতে লাগলাম। সে এক পা দু পা করে আমার সামনে এগিয়ে আসছে। আমি কেঙ্গারুর মতো করে পেছাতে নিলেই সে এক হাতে আমার কোমড় জড়িয়ে ধরে আমাকে তার সাথে মিশিয়ে নিলো। তার ঠান্ডা হাতের স্পর্শ কোমড়ে পেতেই চোখ দুটো রসগোল্লা বানিয়ে তার দিকে তাকালাম। বুকের ভেতর ঢিপঢিপ করে হাতুড়ি পিটচ্ছে কেউ। সে নেশাক্ত চোখে আমার দিকে তাকিয়ে লো ভয়েজে বললো,

— আর কোন অপরাধ আছে?

— না মানে হু আছে।

দ্রুত মাথা নাড়াতে দেখে উনি মুচকি হাসলেন। আমি তার হাত আমার কোমড় থেকে সরানোর জন্য মোচড়ামুচড়ি আরম্ভ করলাম। উনি হাত না সরিয়ে আরো শক্ত করে ধরলো। আমি নিজেকে সংকুচিত করে নিলাম। সে আমার ঠোঁটের দিকে ঠোঁট এগিয়ে দিলো। যেই মুহুর্তে অধর যুগল ছোঁয়াবে সেই মুহুর্তে আমি এক হাতে মুখ আটকে ফেললাম।সে কপাল কুঁচকে জিজ্ঞেস করলো,

— সমস্যা কি?

— কিছু না।

— তাহলে মুখ আটকালে কেন?

— এমনি।

— আমি তোমার হাসবেন্ড টিডি পোকা।

— আমি জানি।

— তাহলে এতো মোচড়ামুচড়ি করছো কেন?

— আমার একটু সময় লাগবে এনজিও সংস্থা।

— কোন সময় দিতে পারবো না।

— প্লিজ একটু মেনে নিন। এতদিন যখন অপেক্ষা করতে পারছেন তাহলে আরেকটু করে নিন।

— তখন আমার বউ ছিলে না তুমি। কিন্তু এখন শরীয়ত মোতাবেক তুমি আমার বউ।

— তাহলে আমাকে পনেরো মিনিট সময় দিবেন। আপনি একটু রুমের বাইরে যান প্লিজ।

উনি ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করলো,
— কেন?

— আমার খুব অস্বস্তি লাগছে। ড্রেস পাল্টাতাম। বেশি না যাস্ট পনেরো মিনিট।

— আমি রুমে থাকলে কি সমস্যা?

— কোন সমস্যা না। আমি একটু একা থাকতে চাইছি। প্লিজ মানা করেন না।

এনাজ কিছু সময় কপাল কুঁচকে ভাবলো। তারপর কপালের ভাজ স্বাভাবিক করে বললো,
— আচ্ছা আমি যাচ্ছি। তবে অনলি পনেরো মিনিট। এরপর কিন্তু আমি ছাড়ছি না।

আমি বিরবির করে বললাম,
— সেই সুযোগ দিলে তো।

উনি চোখ দুটো ছোট ছোট করে বললো,
— কি বললে তুমি?

— কিছু না।

— মনে রেখো পনেরো মিনিট।

কোমড় ছেড়ে কপালে টাইট করে একটা চুমু দিলো। আমি তার থেকে ছাড়া পেয়ে বড় করে একটা দীর্ঘ শ্বাস ছাড়লাম। উনি দরজা অব্ধি গিয়ে আবার ফিরে এলো। আমি মুখে প্রশ্নবোধক চাহনিতে তাকিয়ে রইলাম। উনি পকেট থেকে একটা লকেট সহো চেইন বের করে গলায় পরিয়ে দিলো।

— এটা আমার মায়ের পক্ষ থেকে ছোট উপহার। চেইনটা আম্মুর ছিলো। সবসময় আম্মু বলতো এটা তিনি নিজ হাতে তার বড় ছেলের বউকে পরিয়ে দিবে। কিন্তু আজ আম্মু নেই বলে আমিই পরিয়ে দিলাম। শত বিপদেও আমি এটা বিক্রি করিনি। কারণ এটা আমার মায়ের দেয়া তার বউমার জিনিস। এটার ওপর আমার কোন অধিকার নেই। এটা সবসময় তুমি পরে থাকবে।

তার গাল বেয়ে দুই ফোঁটা অশ্রু গড়িয়ে পরলো। আমি তার চোখের পানি মুছিয়ে দিতেই সে গালে আলতো করে চুমু দিয়ে হনহন করে বেরিয়ে গেলো। উনি যেতেই আমি ধপ করে খাটে বসে পরলাম। গলার চেইনটা হাতে নিয়ে দেখলাম ফুলের লকেট। আমার শ্বাশুড়ির চিহ্ন। সুতির একটা ড্রেস নিয়ে সোজা ওয়াশরুমে চলে গেলাম। ওয়াসরুম থেকে এসে মাথাটা কোনরকম আঁচড়িয়ে বালিশে মাথা হেলিয়ে দিতেই সারাদিন ক্লান্তি এসে ঘিরে ধরলো। কোমড় ব্যাথা করছে অনেক। আমি ঘুমাতে চাইনি। কিন্তু ক্লান্তির দরুন মিনিট চারের মধ্যেই ঘুমের রাজত্বে চলে গেলাম।

মাথায় কারো হাতের স্পর্শ পেতেই জেগে গেলাম। স্পর্শ আমার বহু চেনা। কিন্তু উঠলে আমি শেষ। তাই ঘুমের ভান করে পরে থাকাই বেটার। আজকে আমি আর কিছু পারবো না। বলছিলাম একটু সময় দিতে। তাতো ভালো লাগলো না। এখন বুঝুক মজা!এনাজের কথা শুনে আমার পেট ফেটে হাসি আসার জোগাড়। হালকা করে এক চোখ খুলে দেখতে পেলাম সে এক হাত গালে দিয়ে ফ্লোরে বসে আছে। বিরবির করে কান্নার ভান করে বলছে,

— আহা, কি ঘুম! আমার বাসররাত চম্পট করে দিয়ে আমার বউ কি শান্তিতে ঘুমাচ্ছে! মনে মনে এই প্ল্যান করছিলে তাই না? আমিও এগুলো মনের ডায়েরিতে লিখে রাখবো। সবকিছু সুদসুদ্ধ উসুল করবো। কি আর করবো আমি? ঠাস ঠাস করে মশা মারি। না আজকে মশাও নেই। তাহলে কি বাসর করতে না পারার শোকে ফিট খেয়ে পরে থাকবো? আইডিয়া মন্দ নয়। কিন্তু আমার বউ এমনটা না করলেও পারতো। দিলো রে দিলো, আমার বাসররাতটা নষ্ট করে দিলো।আমার বাসররাত😭।

আমার হাসি আটকে রাখা দায় হয়ে যাচ্ছে। তবুও খুব কষ্টে মুখ চেপে রাখছি। কম্বল মুড়ি দেওয়ায় রক্ষা।আহা,কি আনন্দ আকাশে-বাতাসে 💃।আমার জামাইয়ের বাসররাতের তেরটা বাজিয়ে দিয়েছি।

#চলবে
#চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here