সত্যি তোকে অনেক ভালোবাসি পর্ব -১৫

#সত্যি_তোকে_অনেক_ভালোবাসি
#Part: 15
#ইসরাত_জাহান_প্রভা

মালিহার রুমে,

মিরা: আসতে পারি??(দরজায় নক করে)

মালিহা: আরে ভাবি।।এসো এসো।।পারমিশন নিতে হয় নাকি??

মিরা: হয় গো।।(মালিহার পাশে বসে)

মালিহা: নাহ।।তুমি আর পারমিশন নেবে না।।ঠিক আছে??

মিরা: আচ্ছা বোন ঠিক আছে।।(হেসে)এই নাও নিলয় কী জানি একটা চিঠি লিখছে তোমাকে দিতে বলেছে।।(মালিহার হাতে চিঠি দিয়ে)

মালিহা: আমাকে লিখেছে?(আশ্চয হয়ে)

মিরা: হুম।।আচ্ছা থাকো কাজ আছে অনেক আমি যাই তাহলে।।

মালিহা: আচ্ছা ভাবি।।

মিরা চলে গেলে মালিহা চিঠিটা পড়া শুরু করলো।।

চিঠিতে এই লেখা ছিলো যে,

প্রিয় মালিহা,
রূপের যাদুর আণবিক ভর বলতে হয়তো কিছুই নেই,
ভর এসে মিলে খোলা চুলে পিএইস মানের হাসিতেই।।
উত্তপ্ত করলে চুনাপাথর বিয়োজন ঘটে ঘটুক না,
হয়তো কালো কালো চোখে চাষ হয়ে যায় পুদিনা।।
আলোর রেশ কাটতেই চায়না জারন বিজারনের খেলার মাঝে,
ভালোবাসাটুকু খুঁজে নেই আমি সকল বিক্রিয়ার কাজে কাজে।।
ফুল গুলোতে আলো এসে পড়ে বেগুনী রশ্নী তো পড়ে না,
হালকা মায়া, মিষ্টি হাসি, ভালোবাসা ছাড়া তো আর চলে না।।
ভালোবাসা পেতে জীবন মরন বিক্রিয়ায় আমি মারিয়া,
সত্যি তোমায় অনেক ভালোবাসি আমার প্রানের প্রিয় ডালিয়া।।

মালিহা: চিঠি দিলো আমাকে ভালোবাসলো ও ডালিয়াকে?কে এই ডালিয়া??নিলয় আজ তোরে খাইছি আমি।।আসতেছি আমি।।(রাগের মাথায় বের হতে হতে)

…..

নিলয়ের রুমে,

নিলয়: ধুর পড়তেই ইচ্ছা করছে না।।কখন মালিহা আসবে??(মাথায় হাত দিয়ে)

হুট করে মালিহা রুমে এসে নিলয়ের কলার টেনে তাকে তুললো।।

নিলয়: ওআপুগো ভুতে আমারে তুইলা ধরছে।।কোথায় তুই?(ভয়ে চোখ বন্ধ করে মালিহাকে না দেখে)

মালিহা: ঐ বেয়াদপ পোলা আমি ভূত লাগি?চোখ খোল।।(ধমক দিয়ে)

নিলয় চমকে উঠে চোখ খুলে বললো,ওহ!মালিহা তুমি।একটু কলারটা ছাড়ো আমরা বসে কথা বলি।।(ভয়ে)

মালিহা নিলয়কে ছেড়ে দিয়ে বললো,ডালিয়াটা কে রে?(প্রচন্ড রাগে)

নিলয়:কে ডালিয়া?কোন ডালিয়া?তোমার কী বোন হয়?

মালিহা প্রচন্ড রেগে বিছানা ঝাড়া ঝাড়ু টা হাতে তুলে নিয়ে বললো,বল তুই ডালিয়াকে কবে থেকে ভালোবাসিস?আমার সাথে ধোঁকামি কেনো করলি??

নিলয়: সত্যি বলছি মালিহা আমি ডালিয়া বলে কাউকে চিনি না।।আর আমি তো তোমাকে ভালোবাসি..যাক বাবা বলেই ফেললাম!!(মাথা চুলকাতে চুলকাতে)

মালিহা নিলয়ের কথা শুনে এতটা খুশি হলো যে বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছে।।কিন্তু আবার প্রচন্ড রেগে ঝাড়ু তুলে বললো,মিথ্যুক ছেলে।।লেটারে তো বলেছিস তুই ডালিয়াকেই ভালোবাসিস।।

নিলয়: কৈ দেখি।।(মালিহার কাছে থেকে লেটারটা নিয়ে)আরে এটা তো ছন্দ মেলাতেই লিখেছি।।তোমার নাম তো মালিহা আর শেষ লাইনের আগে শেষে ছিল মারিয়া তাই বলে দিয়েছি ভালোবাসি ডালিয়া।।সুন্দর লিখছি না??(দাঁত বের করে)

মালিহা প্রচন্ড রেগে নিলয়ের কালার টেনে নিজের কাছে নিয়ে বললো,তুই আমার নামি লিখতি তোকে ছন্দ মেলাতে কে বলছে??আর সুন্দর!একদম ফালতু হয়েছে লেটার টা।।তোকে না বলছি আমার সামনে পড়াশোনার কথা বলবি না।।তাও কেনো লিখেছিস?

নিলয়: সরি।।(ভয়ে,দুঃখে)

হঠাৎ মালিহা নিলয়ের বুকে তার মাথা গুজে নিলয়কে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো।।নিলয়ের সারা শরীরে যেনো ঝটকা লেগে গেলো।।দরজার আড়াল থেকে মিরা,পায়েল,অনু লুকিয়ে লুকিয়ে দেখছে।।

মালিহা: এত দিনে তুমি বুঝলে নিলয়?তুমি খুব খারাপ।।আমি তোমাকে একদম ভালোবাসি না।।(খুশিতে কান্না করতে করতে)কিন্তু তবুও আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি নিলয়।।প্লিজ আমাকে ছেড়ে ডালিয়া,ফালিহা কে কখনো ভালোবেসো না।।তাহলে আমি তোমাকে মেরে ফেলবো তারপর আমাকেও মেরে ফেলবো।।

নিলয়ঃ (আমাকে মেরে ফেলবে!! নিজেও মরবে!! কী মেয়ে রে বাবা!!!ভাগ্য ভালো ভালোবাসি বলছি নাহলে তো আজ ডেড বডিটাও আমার পাওয়া যেতো না)

মালিহা: আগলে নেবে না আমায় নিলয়?(মায়া নিয়ে)

নিলয় মালিহাকে দুহাত দিয়ে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বললো,এইতো নিলাম।।আমিও তোমাকে অনেক ভালো বাসি ডালিয়া।।

এ কথা বলতেই জিহ্বা কামড়ে ধরলো নিলয়।।চট করে মালিহা নিলয়কে ছেড়ে দিয়ে রাগে নিলয়ের পায়ে জোড়ে পাড়া দিলো।।নিলয় চিল্লাতে লাগলো।।পায়েল,অনু,মিরা হাসতে হাসতে লুটিয়ে পড়লো।।

মালিহা: আবার ডালিয়া বলিস তুই!!

নিলয়: সরি মালিহা বলতে ডালিয়া বলেছি।।আমাকে ছেড়ে দাও মালিহা।।খুব লাগছে পায়ে।।ও আপু গো।।

মালিহা: চুপ।।একদম চুপ।।বল এবার যে আমাকে ভালোবাসিস বল।।(ধমক দিয়ে)

নিলয়: অনেক অনেক ভালোবাসি তোমাকে মালিহা।।(চিল্লায়ে)

মালিহা নিলয়ের বুকে আবার জড়িয়ে গেলো।
মিরা,অনু আর পায়েল দরজার আড়াল থেকে বের হয়ে হাত তালি দিতে লাগলো।।চমকে উঠে নিলয় আর মালিহা দূরে ছিটকে গেলো।।

মিরা: অবশেষে আমার বোকা ভাইটা প্রোপজ করলো!

পায়েল:ভাবতেই পারছি না।(হাসতে হাসতে)

মিরা:কী রে ভাই এত রোমান্টিকতা কোথায় থেকে শিখলি?

নিলয়: “Tum Hi H0h” গানটা থেকে(হাসি দিয়ে)

পায়েল: বাহ!!তলে তলে দুলাভাই এত রোমান্টিক??একটা জ্যাকেট লাগতো তো।।(হাসি দিয়ে)

মিরা: জ্যাকেট তো নেই।।ওড়না তো আছে।।

মিরা দৌড়ে একটা ওড়না নিয়ে নিলয়ের হাতে দিয়ে বললো,ভাই এই নে।।আমরা গেলাম।।

তিনজনেই দৌড়ে চলে গেলো।।মালিহা লজ্জায় কিছু বলতেই পাড়ছে না।।

নিলয়: আচ্ছা ওড়না দিলো কেনো?(মালিহাকে প্রশ্ন করে)

মালিহা: জানো না??

নিলয়: না তো।।

মালিহা আবার রেগে গিয়ে নিলয়ের হাত থেকে ওড়না টা কেড়ে মাথায় উপর দিয়ে নিলয়কে টেনে এনে এক ওড়নার নিচে দুজনে দাঁড়ালো।।

নিলয়: কী করেতেছো??কিছুই তো দেখতে পারছি না??(এদিক সেদিক তাকিয়ে)

মালিহা: চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকো।।

নিলয়: কিছুই তো বুঝতেছি না মালিহা।।

মালিহা: এভাবে ওড়নার নিচে দুজন প্রেমিক প্রেমিকা থাকলে কী করে বলোতো??

নিলয়: বুঝেছি।।

মালিহা: কী বুঝেছো?(লজ্জায়)

নিলয় পকেট থেকে তার ফোনটা বের করে ফ্লাশ জ্বালিয়ে মালিহার মুখের দিকে ধরে বললো,অন্ধকারেও তোমাকে অনেক সুন্দর লাগে।।এটাই তো!!আমি জাতনাম।।😁😁😁

মালিহা রাগে ওড়নাটা সরিয়ে ফেলে দিয়ে বললো,তুমি আমার কচু জানো।।👿👿

মালিহা নিলয়ের কাছে এসে নিলয়ের কলার টেনে ঠিক যখনি নিলয়ের ঠোঁটে ঠোঁট মিলাতে যাবে নিলয় মাথা নিচু করে মালিহাকে ছাড়িয়ে দূরে সরে যায়।।

নিলয়: কী করছো এসব??এগুলো কেউ করে??এগুলো পাপ।।(হাঁপাতে হাঁপাতে)

মালিহা: এত সাধু তুমি??(আশ্চায হয়ে)কাছে এসো একটু।(মজা করে নিলয়ের কাছে আসতে আসতে)

নিলয় একদম ঠেকে গেছে দেয়ালে মালিহা চোখ বন্ধ করে পা উঁচু করে ঠোঁট দুটো পাউট করেছে।নিলয় আস্তে করে সরে গিয়ে “ও আপু গো বাঁচাও” আমার বলে এক দৌড়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো।
মালিহা চোখ খুলে হাসতে লাগলো।

মালিহা: এতটা সরল কেনো তুমি??অনেক ভালোবাসি তোমাকে নিলয়।।অনেক বেশি ভালোবাসি।।

মালিহা বের হয়ে খুশিতে নাচতে নাচতে নিজের রুমের দিকে যেতে লাগলো।।

চলবে,,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here