#সেদিন_বসন্ত_ছিল
#রাহনুমা_রাহা
#পর্বঃ৩৪
দিবসের প্রাতঃকালে গৃহে গীতবাদ্য বাজছে। নাহ্; উচ্চ শব্দে, ডামাঢোল বাজিয়ে নয়। বাজছে মনের অন্দরমহলে, অতি সন্তর্পণে। সদ্য প্রেমে ডুবে আনারি প্রেমিকা হাবুডুবু খাচ্ছে প্রেম সায়রে। তারই ছন্দপাত প্রকাশ পাচ্ছে হৃদয় নামক গৃহে।
ইভানা বিছানা ছেড়ে আলতো পায়ে বারান্দায় গিয়ে দাঁড়াল। মসৃণ হাতে রেলিং ছুঁয়ে বলল,
“বাবা কি বলেছিল সেদিন?”
আবরার মুচকি হেসে বলল,
“বাবা! বাবা সেদিন তাকিয়ে ছিলেন বেশ কিছুক্ষণ আমার দিকে। তারপর কি বললেন জানো? বললেন -তুমি ফ্রি আছো এখন? এক কাপ চা নিশ্চয়ই খেতে পারি তোমার সঙ্গে। এই সুযোগে জম্পেশ সাক্ষাৎকারও হয়ে যাবে।”
ইভানা বিদ্যুৎ চমকানোর ন্যায় চমকাল। কণ্ঠে উত্তেজনা প্রকাশ করে বলল,
“আর ইউ সিরিয়াস? বাবা এটা বলল! কোনো বাবা এটা বলতে পারে? কেন বলেছিল? তারপর কি হলো?”
আবরার মুচকি হাসল। শব্দহীন সেই হাসি। অথচ ইভানা স্পষ্ট টের পেল সেই হাসির ঝংকার।
“এক কাপ চা। সময় বোধহয় মিনিট দশেক। অথচ সেই সময়টুকুতেই একজন উঠতি বয়সী ছেলেকে একজন বাবা তার জীবনের সিদ্ধান্ত নিতে এক ধাপ এগিয়ে দিয়েছিলেন। এগিয়ে দিয়েছিলেন স্বপ্নের দিকে আরও এক সিঁড়ি উন্নীত হতে।”
ইভানা জবাব দিল না। নীরবতাই শ্রেয় মনে হলো। তাই আপন করল নীরবতাকেই।
আবরার আবেগ মিশ্রিত ঘন গলায় পুনরায় বলল,
“সেদিন একজন সচেতন, সাবধানী বাবা জানতে চেয়েছিলেন তার মেয়ের জন্য জমে থাকা একজন প্রেমিকের সুপ্ত অনুভূতির সত্যতা। জানতে চেয়েছিলেন আমার মনের গহীনে লুকায়িত প্রেমানুভূতির সারসংক্ষেপ। তোমাকে পেতে ঠিক কি করতে পারি এবং তোমাকে পেলে কিভাবে তোমাকে ভালো রাখতে পারি সবটা জানতে চেয়েছিলেন তিনি। জানতে চেয়েছিলেন তোমাকে পাওয়ার জন্য আমি নিজেকে কতটা যোগ্য মনে করি। আসলেই আমি যোগ্য ছিলাম কি-না। সবটা খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখে নিয়েছেন তিনি। শুধু সেদিন নয় কাঁচাগোল্লা, বাবা আমাকে খেয়াল করেছেন তারও কিছুমাস আগে থেকে। অথচ তুমিই দেখলে না। আফসোস!”
ইভানা মুচকি হেসে বলল,
“আমার বাবা তো। তাই জিনিয়াস। কিন্তু তারপর কি হলো? এটা তো অনেক আগের কথা। বাবা রাজি হয়েছিল সেদিন?”
“বাবা আমাকে পছন্দ করতেন না এটা বলব না। জানিনা কেন তার পছন্দের তালিকায় পড়ে গিয়েছিলাম আমি।সেদিন আমায় বুঝিয়েছেন আমার অবস্থান। বাবাহীন পরিবারের দায়িত্ব নিতে উৎসাহিত করেছেন, উৎসাহ দিয়েছেন আমার বর্তমান পজিশনে আসার পথে আরও একপা বাড়াতে। আমি আগে থেকেই এখানে আসার পরিকল্পনা করছিলাম। এই কাজটা আমার স্বপ্ন ছিল ইভানা। অথচ আমি তোমায় ছোঁয়ার লোভে সেই স্বপ্ন ছেড়ে দেওয়ার মত সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিলাম। সেটা বাবা জানার পর দুমিনিট স্থির দৃষ্টিতে দেখেছিলেন আমায়। অতঃপর খুবই সন্তর্পণে কথা দিয়েছিলেন তোমাকে আমার করে দেওয়ার। আমি যেন আমার স্বপ্ন ছুঁই। তবেই অধিকার পাব তোমায় ছোঁয়ার, তোমার ভালবাসা ছোঁয়ার।”
ইভানা দ্বিধাগ্রস্থ গলায় বলল,
“কিন্তু বাবা এত সহজে কেন কথা দিয়ে ফেলল? আমার বাবা তো না হুজুগে সিদ্ধান্ত নেওয়ার মানুষ নন। কতদিন চিনত বাবা আপনাকে?”
“আসলে ইভানা তোমার বাবা আর আমার বাবা এক সময় একই অফিসে কাজ করতেন। তিনি সেটা জানতেন না আগে। আমাকে কিছুদিন ফলো করে ব্যাপারটা নিশ্চিত হয়েছেন এবং আমাকে জিজ্ঞেস করেছেন ওই অল্প সময়েই। দুজনের মাঝে নাকি বেশ সখ্যতা ছিল। কিন্তু সেটা শুধু দুজনের মধ্যেই। পরিবারের মধ্যে না। তারপর হঠাৎ একদিন আমার বাবা চলে গেল। আমাদের ছোট্ট পরিবার ছন্নছাড়া হয়ে গেল। যদিও মা সামলে নিয়েছে আমি নোভাসহ সবকিছু। তারপর থেকে আর চেনাজানা নেই তোমার বাবার সঙ্গে। আমার বাবার পরিচয় জানার পর হয়তো বাবার মনটা একটু ভরসা করতে সাহস পেয়েছিল। সেই সুত্রেই অলিখিত কথা দিয়ে ফেলেছিলেন তিনি। তারপর মা কিভাবে কিভাবে যেন তোমাকে পেল। একদিন হুট করেই তোমার ছবি পাঠাল। বলল তোমাকে পছন্দ তার। ছেলের বউ বানাতে চায়। বিশ্বাস করো সেদিন আমার সৃষ্টিকর্তার অপার মহিমায় বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। কিভাবে সম্ভব এতটা কাকতালীয় ব্যাপার? তারপর ভাবলাম হয়তো এটাই নিয়তি।”
“আমি এসবের কিছুই জানতাম না। যদি ততদিনে আমি অন্য কাউকে ভালবেসে ফেলতাম, তবে? কি করতেন আপনি? এরকম বোকামি কেউ করে? বাবা তো আমায় কিছু জানায় নি। শুধু বলেছিল গ্রাজুয়েশন শেষ হওয়ার আগে যেন কোনো দিকে না তাকাই। আমিও মেনে নিয়েছিলাম। কিন্তু, তবুও যদি কেউ এসে যেতো তখন কি হতো আবরার? এই নিয়মের বাইরে গিয়ে ভালবাসতে পারা মানুষটা থেকে বঞ্চিত হতাম আমি। বঞ্চিত হতাম তার অমূল্য ভালবাসা থেকেও। তার দায় আপনি নিতেন?”
আবরার মুচকি হাসল ইভানার পাগলামিসূচক কথা শুনে। মোবাইল ঠোঁটের সাথে লাগিয়ে ফিসফিস করে বলল,
“ভালবাসি তো পাগলি।”
ইভানা শিহরণে চোখ বন্ধ করে ফেলল। শক্ত করে ধরে রাখা ফোনটা কানের সাথে চেপে ধরে ভেজা গলায় বলল,
“আরেকবার, প্লিজ।”
আবরার সুখী হাসল। সবুরে ফলানো মেওয়া যে তার মিষ্টত্ব বিলাতে শুরু করেছে।
পুনরায় নিচু অথচ ঘন গলায় বলল,
“ভালবাসি আমার আরাধ্যের মানিক। আজীবন ভালবাসব। যতদিন নিশ্বাস চলবে জেনে নিও এই আবরার তোমায় প্রতিটি নিশ্বাসের সঙ্গে স্মরণ করছে। পাগলের মত ভালবাসছে।”
“নোভা তোর শাড়িটা আমায় দিবি?”
রিফাতের কণ্ঠে এহেন বিস্ময়কর কথা শুনে নোভা গালি গলায় বিষম খেল। খুকখুক করে কেশে বিস্ময়ভরা কণ্ঠে বলল,
“এই রক্তমাখা শাড়ি দিয়ে তুমি কি করবে?”
রিফাত চোখ রাঙিয়ে তাকাল। শাসানোর ভঙ্গিতে বলল,
“তুই বাচ্চা বাচ্চার মত থাক। এত প্রশ্ন কিসের। চাইছি আমি শাড়িটা। তাই ফটাফট খুলে দিয়ে দে।”
নোভা ভ্রু কুঁচকে, ঠোঁট উল্টে তাকিয়ে থেকে বলল,
“ঠিক আছে। পাঁচ মিনিট অপেক্ষা করো। আসছি আমি।”
চলবে…
বিঃদ্রঃ কি যে হয়েছে লিখে আগাতে পারছি না। আগে কখনো এরকম হয় নি লিখতে গিয়ে। অসহ্য অসহ্য ফিলিংস।#সেদিন_বসন্ত_ছিল
#রাহনুমা_রাহা
#পর্বঃ৩৫
কেটে গেছে বেশকিছু সময়। বদলেছে মাস, বদলেছে ঋতু। বদলেছে প্রকৃতির রূপের মাধুর্য। বসন্ত পেরিয়ে গ্রীষ্ম, গ্রীষ্ম শেষে বর্ষা এসেছে মেঘেদের ভেলায় চড়ে।
প্রকৃতির সাথে সাথে বদলে গেছে আবরার ইভানার মুঠোফোনের সংসার। একটু একটু করে আসতে আসতে তল্পিতল্পা গুটিয়ে এসে ঝেকে বসেছে ভালবাসারা। সাজিয়েছে প্রেমের পশরা।
এরই মাঝে বিবাহবন্ধনে বাঁধা পড়েছে সায়মা এবং শ্যামল। প্রণয়ের সঙ্গ গিয়ে ঠেকেছে দায়িত্বে, সম্মানে, মর্যাদায়।
একই সমীকরণে বয়ে যাচ্ছে কেবল নোভা রিফাতের ব্যক্ত অব্যক্ত প্রেমের রূপকথা। সমান্তরালে বইছে তাদের প্রণয় কাব্য। বইছে দুটি মন, দুটি দেহ। একই বিন্দুতে মিলিত হওয়ার অপেক্ষায় যেন দুটি সত্তা। অথচ মিলনের সেই অতিদীর্ঘ সময় যেন ক্রমশ হাতছানি দিয়ে ডাকছে আর সমানতালে পিছু হটছে। সেই সাথে মরিচিকার ন্যায় ছুটছে দুটি প্রাণ। একপা বাড়িয়ে যেখানে জীবন ছোঁয়া যায় সেখানে অবুঝ প্রেমিক হৃদয়দুটি ছুটছে অজানার দিশায়।
রিফাত আজকাল আর আসতে চায় না ফাহিমা করিমের ডাকে। আসতে চায় না সময়ে অসময়ে। ভালবাসা এড়িয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে সফল হতে গিয়ে সম্পর্কগুলো থেকেও ক্রমশ দূরে চলে যাচ্ছে সে। দূরে যাচ্ছে আপন মানুষগুলো থেকে। অথচ তারা দু’হাত বাড়িয়ে তাকে আঁকড়ে ধরার অপেক্ষায়।
প্রায় মাস খানেক পর রিফাত ফাহিমা করিমের অনুরোধে বাড়ি মুখো হয়েছে। সাথে অবশ্য আরও একটা জোরদার কারণ রয়েছে। আবরার! দীর্ঘ ছয়মাস পেরিয়ে তার সময় হয়েছে নীড়ে ফেরার। কাল ফিরবে সে! ফিরবে আপনজনের কাছে। আপনজনের সান্নিধ্যে।
মিনিট কতক চুপচাপ থাকার পর রিফাত ফাহিমা করিমের মেলে রাখা পায়ের কাছে বসল।
ছোট বাচ্চাদের মত পা টিপে দেওয়ার মত করে বলল,
“আন্টি আমি কি কিছু করেছি? কোন ভুল করেছি? তুমি কথা বলছ না কেন আমার সাথে? ইভানা বলল, তুমি আসতে বলেছো। অথচ তুমি তাকাচ্ছো না পর্যন্ত আমার দিকে। কি করেছি আমি?”
ফাহিমা করিম পা থেকে হাত সরিয়ে দিল। অন্য দিকে তাকিয়ে বললেন,
“কেউ যেন এখন ভনিতা না করে। এতদিন যখন আমাকে দেখতে আসার কথা মনে হয় নি, তখন আজও প্রয়োজন নেই। সে আসতে পারে।”
রিফাত পুনরায় পা টিপে দিতে দিতে বলল,
“লক্ষী আন্টি রাগ করে না। আমি অফিসে প্রচুর ব্যস্ত ছিলাম। বুঝোই তো। রাগ করো না। এখন থেকে রোজ আসব। প্রয়োজনে এখানেই থাকব। এই তোমার পায়ের কাছে।”
ফাহিমা করিম তৎক্ষনাৎ রিফাতের হাত ধরে বললেন,
“থাকবি তো এখানে? কথা দে।”
রিফাত হেসে ফেলল এহেন কান্ডে। মুচকি হেসেই বলল,
“এটা সমাজ ভালো চোখে দেখবে না আন্টি। তোমার বাড়িতে দুটো যুবতী মেয়ে আছে। এখানে পর পুরুষ থাকলে লোকে কলঙ্ক রটাবে যে। তারওপর নেই কোনো পুরুষ মানুষ।”
“আবরার তো আসবে। এ ক’টা দিন নাহয় থাক। আমি আমার দুই ছেলেকে ফিরে পাই। আর মেয়ে আছে বলে সমস্যা তোর? ঠিক আছে ; আমি তোর বিয়ে দেব। তারপর বউ নিয়ে থাকবি। আসুক আবরার। এবার তোরও বিয়ে দেব আমি।”
রিফাত হেসে বলল,
“আমার মত কাইল্লারে কে বিয়ে করবে!”
ফাহিমা করিম পা থেকে হাত সরিয়ে দিয়ে কড়া চোখে তাকালেন। বললেন,
“এই পা ছাড় তুই। ছুঁবি না শয়তান ছেলে।”
‘আষাঢ় শ্রাবণ মানে না তো মন
ঝরঝর ঝরঝর ঝরেছে
তোমাকে আমার মনে পড়েছে ‘
গুনগুন করে চাপা স্বরে বলল ইভানা। অপর প্রান্তে আবরার মৃদুস্বরে বলল,
‘আগে কত বৃষ্টি যে দেখেছি শ্রাবণে
জাগে নি তো এত আশা ভালবাসা এ মনে’
ইভানা সরু গলায় বলল,
“আপনি মিথ্যে বললেন কেন? এর আগের শ্রাবণে, তার আগের শ্রাবণে, ইনফ্যাক্ট গত আটটি শ্রাবণে আপনার ভালবাসা জাগে নি? যদি না-ই জাগে তাহলে আপনি কিসের প্রেমিক?”
আবরার ঠোঁট উল্টে কিঞ্চিৎ বিস্ময়ভরা গলায় বলল,
“তুমি কি ঝগড়া করতে শিখে গেছো বউ?”
ইভানা থামল কিন্তু ভড়কাল না। কণ্ঠে যথেষ্ট ঝাঁজ রেখেই বলল,
“আমি মানুষের সাথে ঝগড়া করি। ভেড়ার সাথে না। যে পাক্কা দুই বছর পেছনে থেকেও ভালবাসি তো দূর সামনে এসে খোমাটা পর্যন্ত দেখাতে পারে নি তার সাথে আবার কিসের ঝগড়া? যায় এটা, আপনিই বলুন?”
আবরার স্মিত হেসে বলল,
“কতবার বলবে? উঠতে বসতে খেতে শুতে সব সময় তো জপ করেই চলেছো। ক্লান্ত হও না তুমি, না?”
ইভানা দ্বিগুণ তেজে বলল,
“যতদিন এ দেহে প্রাণ আছে, ততদিন আমি এটাই জপ করব। আপনি, আপনি আমার আট বছর নষ্ট করেছেন। ভাবুন তো কাল যদি মরে যাই তাহলে ছ’মাসের ভালবাসা নিয়ে মরতে হবে। আর আগে বললে আটবছর ছ’মাসের ভালবাসা নিয়ে যেতাম। এটা ঠিক করেছেন আপনি?”
আবরার কঠোর গলায় বলল,
“ইভানা! কতবার বলেছি এভাবে মরার কথা বলবে না তুমি। কথা কেন শোনো না বলো তো?”
ইভানা থামল। কিঞ্চিৎ সময় পর বলল,
“আপনি দূর থেকে অজান্তে ছবি তুলে ঘরের কোণে লুকিয়ে রাখতে পারলেন। অথচ একটা বার সামনে এসে বলতে পারলেন না?”
আবরার চমকাল। আচমকা নিজের অতীতের গড়া সুন্দরতম স্মৃতি সামনে আসায় পুলকিত হলো। উৎফুল্ল হয়ে বলল,
“তুমি উদ্ধার করে ফেলেছো ছবিটা? আমি আসার সময় একটা রেখে এসেছিলাম আমার শূন্য ঘরে। যাতে আমার ঘরটাও তোমায় ভুলে না যায়।”
ইভানা লাজুক হাসল। ঠোঁটে হাসির রেশ রেখেই বলল,
“আমি নই, মা উদ্ধার করেছেন এবং বহুবছর আগেই।”
আবরার খানিক সময়ের জন্য থমকে গেল। থমথমে গলায় বলল,
“মা?”
ইভানা ঠোঁট কামড়ে অস্ফুটে বলল,
“হুম।”
“কিভাবে?”
“আপনার ব্যবহারেই মা ধরতে পেরেছিল ব্যাপারটা। অতঃপর আপনি যাওয়ার পর সূচ খোঁজা চলে আপনার ঘরে। সেখানেই মিলল সব রহস্যের সমাধান। মায়ের ছেলের মন হারানোর গল্পের শেষ দৃশ্যপটটা মা’ই সৃষ্টি করেছেন। একদিন তার ছেলের বিয়ে করাতে চাইলেন। দেখা হলো এই নাদান বাচ্চার সাথে। মিলে পেল সেই গল্পের নায়িকার ছবির সঙ্গে। ব্যস তারপর দুইয়ে দুইয়ে চার। কবুলে কবুলে বিবাহ।”
আবরার মুচকি হেসে বলল,
“সেজন্যই তো ভাবি এতটা কাকতালীয় কিভাবে হলো! প্রথম কোনো মেয়ের ছবি দিল মা। সেটাও আবার আমার রাণীর। এই তবে ছিল রাজমাতার মনে!”
কিয়ৎক্ষণ পর আবরার কণ্ঠে দুষ্টুমি মিশিয়ে শুধালো,
“বউ, ও বউ।”
ইভানা সন্দীহান গলায় বলল,
“আপনার মাথায় কি ভূত চেপেছে বলুন তো।”
আবরার ঠোঁট কামড়ে ধরে অস্ফুটে বলল,
“তোমায় ছোঁয়ার ভূত।”
হয়তো ইভানা শুনতে পেল, হয়তো না। কিন্তু শীতল রক্তস্রোত নেমে গেল মেরুদণ্ড বেয়ে। শিহরিত হলো সমস্ত লোমকূপ।
চলবে….