পর্ব ১৩+১৪
#হৃদয়ের_শুভ্রতা🌸🌸
পার্ট-১৩(প্রেমময় পর্ব❤)
#ফাবিহা_নওশীন
🍁🍁
ভয়ে রোজের হাত-পা জমে যাচ্ছে।গলা বারবার শুখিয়ে যাচ্ছে।
টেডি কোলে নিয়ে টেডির মধ্যে মুখ গুজে বসে আছে আর বারবার ভাইয়ের দিকে তাকাচ্ছে।
হৃদ বাচ্চাদের মতো কাগজ দিয়ে নৌকা বানাচ্ছে রোজের রুমে বসে।
রোজের মাথায় ঢুকছে ভাইয়ের কার্যকলাপ।যদি কিছু বলার হয় এভাবে নিশ্বাস আটকে না রেখে বলে ফেলুক।আর যদি নৌকা বানানোর ইচ্ছে হয় তাহলে নিজের রুমে গিয়ে বানাক।
রোজ এখান থেকে উঠে যেতেও পারছেনা।
রোজ টেডি রেখে উঠতে নিলেই হৃদ নৌকার দিকে গভীর মনোযোগ দিয়ে বললো,
—–যাচ্ছিস কোথায় তোকে যেতে কে বলেছে?
রোজ আমতা আমতা করে বললো,
—-ভাইয়া,তোর কিছু বলার থাকলে বলে ফেল।এভাবে বসে থাকতে পারছিনা।
হৃদের নৌকা বানানো শেষ।
—–একটা নৌকা বানানোর জন্য এত এনার্জি ব্যায় হলো?ছোটবেলায় তো এক চুটকিতেই বানিয়ে ফেলতাম।বড় হয়ে ছোট ছোট জিনিসগুলো ভুলে গেলাম।অদ্ভুৎ।
তারপর রোজের দিকে তাকিয়ে বললো,
—–কতদিন চলছে?
রোজ ঢুক গিলে বললো,
—–এইতো কিছুদিন।
হৃদ ভ্রু নাড়িয়ে বললো,
—–পাপা জানে, তুই তার ভার্সিটিতে তার নাকের ডগার নিচ দিয়ে প্রেম করছিস?নাকি আমি বলবো?
—–ভাইয়া!!(অসহায় ফেস করে)
হৃদ ভ্রু নাচিয়ে বললো,
—–পাপা আর মাম্মা যদি জানে তুই দুদিন যাবত ভার্সিটি গিয়ে প্রেম করছিস কি হবে?
—–তুই কি আমার ভাই না শত্রু?
—–আপাতত শত্রু।
—–ভাইয়া,,,
—–তবে হ্যা,যদি আমার একটা কাজ করে দিস আমি কাউকে বলবোনা,
তোকে সাপোর্ট করবো এবং অরিত্রকে গিয়ে ভদ্রভাবে সরি বলবো।
(নৌকা ঘোরাতে ঘোরাতে)
—–তুই আমাকে ব্ল্যাকমেইল করছিস?
ওকে ডান। বল কি করতে হবে?
হৃদ নৌকা ঘুরানো বন্ধ করে রোজের দিকে তাকালো।
~~~~
শুভ্রা অফিসে গিয়ে জানতে পারলো ইশানকে ফায়ার করা হয়েছে।নিউ মডেল নিয়োগ দেওয়া হবে।রিজন হলো কেউ একজন ইশানের হাত ভেঙে দিয়েছে।সে অসুস্থ তাই শুট করতে পারবেনা।
শুভ্রা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললো,
—–আই নো ইট ওয়াজ ডান বাই হৃদ।
বেশ হয়েছে ইশানের এমন একটা শাস্তি প্রাপ্য ছিল।
শুভ্রা কয়েক কদম আগাতেই দেখে অনু একটা ছেলের সাথে হাসতে হাসতে আসছে।হাতে কার্ড মনে হচ্ছে।এমপ্লয়িদের ডেক্সের সামনে আসতেই সবাই উঠে দাড়ালো।
শুভ্রা কৌতুহল বশত সামনে এগিয়ে গেলো।অনু সবাইকে বিয়ের কার্ড দিচ্ছে আর সবাই ওকে কংগ্রেস করছে।
—কংগ্রাচুলেশন মিস অনু।এইবার তাহলে বিয়েটা করেই ফেলছেন।
—-জ্বি দোয়া করবেন।
অনু শুভ্রাকে দেখে শুভ্রার দিকে এগিয়ে গেলো।
—-মিস.শুভ্রতা আমার বিয়েতে অবশ্যই আসবেন।স্যারের কাছে কার্ড দিয়ে এসেছি আপনারা ফ্যামিলির সবাই যাবেন তাহলে আমি খুব খুশি হবো।
শুভ্রা মুখে হাসি ফুটিয়ে বললো,
—-অবশ্যই যাবো।উনি কে?
—–আমার উডবি।এনগেজমেন্ট হওয়ার পর থেকেই অফিসের সবাই দেখতে চেয়েছিলো।তাই আজ বিয়ের কার্ড দিতে এসে ওকে সাথে নিয়ে এলাম।
—–এংগেজমেন্ট কবে হয়েছে?
—-ওমা!আপনি দেখি কিছুই জানেন না।একমাস আগে।
—-ওহ।আচ্ছা দোয়া করি সুখী হন।
—-ধন্যবাদ।
শুভ্রা যেতে যেতে ভাবছে এনগেজড একটা মেয়েকে নিয়ে আমি এসব ভেবেছি।ছিহ শুভ্রা ছিহ।
.
রাতের বেলায় শুভ্রা ডিনার শেষে বিছানায় গা এলিয়ে দিলো।আর তখনই রোজ শুভ্রার হাত ধরে টেনে তুললো।
—–আপু চলো ছাদে যাবো।
শুভ্রা ভ্রু কুচকে বললো,
—–এই রাতের বেলায় ছাদে কেন?
—–আরে রাতেই তো মজা ছাদে।না দিনের বেলায় রোদের মধ্যে ছাদে মজা করবে?চলো চলো।
—–এখন ঘুম পাচ্ছে।
—–প্লিজ প্লিজ।
শুভ্রা অনিচ্ছা সত্ত্বেও উঠে দাড়ালো।রোজ শুভ্রাকে আয়নার সামনে নিয়ে দাড় করালো।তারপর চুলগুলো আচড়ে ঠিকঠাক করে দিলো।
—–ওই আমরা ছাদে যাচ্ছি বেড়াতে না।
—–আপি সেল্ফি তুলবো তো।এভাবে এলোমেলো চুলে সেল্ফি সুন্দর হবে না।
শুভ্রা দরজা দিয়ে ছাদে ঢুকতেই রোজ ভিতর থেকে দরজা লক করে দিলো।শুভ্রা শব্দ পেয়ে পিছনে তাকাতেই দেখে দরজা বন্ধ আর রোজ নেই।শুভ্রার বুঝতে বাকি নেই এটা রোজের কাজ।রোজ ওর সাথে মজা করছে।ভয় দেখাতে চাইছে।শুয়া থেকে তুলে এনে এমন মজা করার কোনো মানে হয়।
শুভ্রা দরজা ধাক্কাতে ধাক্কাতে বললো,
—-রোজের বাচ্চা দরজা খোল।রাতের বেলায় এমন মজা করার মানে কি?তুই কি ভেবেছিস আমি অন্ধকারে ভয়ে কান্নাকাটি শুরু করে দেবো।নেভার।আমি এখন আর অন্ধকার ভয় পাইনা।
রোজ দরজা খোল।
রোজের সাড়াশব্দ নেই।ছাদ পুরো অন্ধকার।সুইচ হাততে অন করলো কিন্তু লাইট জ্বলছে না।আশেপাশের বাড়ির দিকে তাকালো সেখানে তো কারেন্ট আছে তাহলে ছাদে কি হলো।তারপর হাতের ফোন দিয়ে ফ্ল্যাশলাইট অন করলো।
অন করতেই পুরো ছাদ আলোকিত হয়ে গেলো।তবে ওর লাইটের আলোতে নয়।পুরো ছাদে লাইটিং করা।শুধু লাইটিং না পুরো ছাদ সাজানো।শুভ্রা পুরো ছাদে চোখ বুলিয়ে একজায়গায় চোখ আটকে গেলো।হৃদ।
ব্লাক প্যান্ট,রেড টিশার্ট পড়ে দুহাত বুকে ভাজ করে দাঁড়িয়ে আছে।
শুভ্রা এগিয়ে গিয়ে বললো,
—-আপনি?
সাথে সাথেই ছাদের দরজার লক খোলার শব্দ পেলো।কিন্তু দরজা খোলেনি।
—-হ্যা আমি।আমি কিছু কথা বলবো।যদি ভালো না লাগে তবে দরজা খোলা আছে আমি আটকাবোনা।
শুভ্রা চুপ করে হৃদের কথা শুনছে।হৃদ এগিয়ে এলো শুভ্রার কাছে তারপর হাটু গেড়ে বসে একটা ছোট বক্স বের করে।শুভ্রা অবাক হয়ে ওর কার্যকলাপ দেখছে।
হৃদ বক্স খোলে শুভ্রা বক্সে একটা রিং দেখতে পায়।হৃদ বললো,
—–এটা আমি লন্ডন থেকে আসার সময় নিয়েছিলাম।ভেবেছিলাম তোমাকে দেবো কিন্তু সিচুয়েশন তেমন ছিলো না তাই দেওয়া হয়নি।
আমি যখন থেকে ভালোবাসার মানে বুঝেছি সেদিন থেকেই ভালোবেসেছি তোমাকে কিন্তু কখনো বলা হয়নি আজ বলছি “শুভ্রা তুমি আমার হৃদয়ের শুভ্রতা”।
আমাকে কি আরেকবার চান্স দেওয়া যায়না?আমাকে কি ভালোবাসা যায়না?সব রাগ,অভিমান কি মুছে ফেলা যায়না?আমি সেই ছোট্ট শুভ্রা আর শুভ্রার পাগলামিগুলো অনেক মিস করি।প্লিজ একসেপ্ট মি।
” ওইল ইউ মেরি মি?”
শুভ্রা চেয়েছিলো হৃদ আগে ওকে সরি বলুক।ওর হৃদয়ের ক্ষত দূর করুক।কিন্তু কেন জানি হৃদের প্রপোজাল ওকে দূর্বল করে দিচ্ছে।যতই রাগ,অভিমান,ক্ষোভ থাকুক না কেন?ভালো তো বাসে।
শুভ্রা গলে যাচ্ছে।শুভ্রার মন বলছে একসেপ্ট করতে কিন্তু ব্রেইন বলছে ফিরে যেতে।শুভ্রা দরজার দিকে তাকিয়ে এক পা আগাতেই হৃদ হতাশ হলো।ওর মনে তোলপাড় শুরু হয়ে গেলো।
“শুভ্রা তুমি আমাকে ফিরিয়ে দিতে পারো তবে আজ যদি ফিরিয়ে দেও,তবে আমি আর কোনোদিন তোমার সামনে এসে দাড়াবোনা”
হৃদের এই কথা শুনে শুভ্রার বুকে মোচড় দিয়ে উঠে।৭টা বছর সহ্য করেছে হৃদের দূরে থাকা।কিন্তু আর কি পারবে সহ্য করতে? সে শক্তি আছে শুভ্রার? শুভ্রা হৃদকে উপেক্ষা করতে পারছেনা।
শুভ্রা হৃদের দিকে ঘুরে ওর সামনে হাটু গেড়ে বসে পড়লো।শুভ্রার চোখ বেয়ে পানি পড়ছে।ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাদছে।হৃদ শুভ্রাকে জড়িয়ে নিলো।
—–তুমি অনেক খারাপ।আমাকে অনেক কষ্ট দিয়েছো।
—-আর দেবোনা।কখনো না।সব সুখ তোর কাছে এনে দেবো,শুধু আমাকে ভালোবাসবি।
শুভ্রা মুখ তুলে হৃদকে দেখছে।হৃদের চোখেও পানি।শুভ্রা আজ সেই হৃদকে দেখছে।শুভ্রা হৃদের গালে হাত রাখে।হৃদ চোখ বন্ধ করে নেয়।শুভ্রা হৃদের মুখে হাত বুলাচ্ছে।।কতদিন পর হৃদকে ছুতে পারছে।মুখ থেকে হাত চুলে গেলো।শুভ্রার ছোটবেলার কথা মনে পড়ছে।কতবার হৃদের গাল টেনেছে।কতবার হৃদের এই চুলে ঝুটি করে দিয়েছে।আর এজন্য হৃদ ওকে কত মেরেছে।ওসব মনে পড়তেই শুভ্রার হাসি পাচ্ছে।তবে একটা চাপা অভিমান কাজ করছে।
হৃদ চোখ খোলে শুভ্রার দিকে তাকালো।হৃদ শুভ্রার চোখে ওর জন্য ভালোবাসা দেখতে পাচ্ছে।আর শুভ্রা হৃদের চোখে নেশা দেখতে পাচ্ছে।হৃদের গরম নিশ্বাস শুভ্রার মুখের উপর পড়ছে।হৃদ দুজনের মাঝের দূরত্ব কমিয়ে দিচ্ছে।শুভ্রা বুঝতে পারছে ভয়ংকর কিছু হতে যাচ্ছে।
শুভ্রা মাথা নাড়িয়ে একটু দূরে সরে গেলো।হৃদ ভ্রু কুচকে তাকালো।
শুভ্রা তোতলাতে তোতলাতে বললো,
—–মশা কামড়াচ্ছে অনেক,আমি নিচে যাচ্ছি।তুমিও এসো।
হৃদ কিছু বলার আগেই শুভ্রা উঠে পগারপার।
হৃদ রেগে একাই বলছে,
“ছোবড়া,তোকে মশা কামড় দিয়েছে তাই না!”
.
.
.
(রোদ,ফুল,শাওরিন,রাহাতকে মিস করছি ওদের প্রেম একটু দিয়ে দিলাম।😌)
শুভ্রা মাম্মা শাওরিন রাতের সব কাজ সেরে রুমে এলো।শুভ্রার পাপা রাহাত ফোনে কিছু একটা করছে।শাওরিন ফ্রেশ হতে গেছে।রাহাত এই সুযোগে রিমোটটা নিজের বালিশের নিচে রেখে বালিশে আধশোয়া হয়ে রইলো।শাওরিন ফ্রেশ হয়ে এসেই টিভির রিমোট খোজছে।কিন্তু পাচ্ছেনা।যেখানে যেখানে রাখার খোজে ফেলেছে কিন্তু পাচ্ছেনা।
—–এই শুনছো রিমোট দেখেছো?
—–না।
—-তোমার বালিশটা সরিয়ে দেখো তো পাও কিনা।
রাহাত বালিশ না সরিয়েই বললো,
—–বালিশের নিচে রিমোট নেই।দেখ কোন চিপা চাপায় পড়ে আছে।
—-কোথাও নেই আমি চেক করেছি।তুমি সরো আমি দেখছি।
—-উফফ শুধু শুধু আমাকে বিরক্ত করছিস।বললাম নেই।ঢাকা শহরে বানর বেড়ে গেছে।খোলা বারান্দা দরজা খোলা থাকে দেখ বানরে নিয়ে গেছে।
—-হ্যা ঠিক বলেছো।একটা সাদা বানরে নিয়েছে।আর সেই বানরটা তুমি।
—–তুই আমাকে বানর বললি?
—–আমি কোথায় বললাম,তুমি নিজেই বলেছো।এখন বালিশের নিচ থেকে রিমোট দেও,টিভি দেখবো।
রাহাত নড়েচড়ে বললো,
—–টিভিতে এতো কি দেখবি?আমাকে দেখ।
শাওরিন বললো,
—-মেয়ে বড় হয়েছে তাও ঢং যায়না তোমার।
রাহাত শাওরিনের হাত ধরে বুকে ফেলে বললো,
“আচ্ছা মেয়ে বড় হয়েছে কিন্তু আমাদের ভালোবাসা কি কমেছে?”
শাওরিন ভাবছে,”তাই তো”
শাওরিন এর উত্তরে রাহাতকে আরো গভীরভাবে জড়িয়ে নিলো।
~~~~
হৃদের মাম্মা ফুল বারান্দায় বসে বসে চুপিচুপি আইসক্রিম খাচ্ছে। হটাৎ বারান্দার দিকে কারো পায়ের আওয়াজ পেয়ে তাড়াতাড়ি আইসক্রিম লুকিয়ে ফেলে।
হৃদের পাপা রোদ বললো,
—–আমার বউটা এখানে বসে
বসে কি করে?
ফুল দ্রুততার সঙ্গে বললো,
—-আকাশ দেখি।
রোদ বসতে বসতে বললো,
—-তাই নাকি?আমাকে ছাড়া একাই আকাশ দেখছিস?
—-না মানে..
রোদ ফুলের ঠোঁটে লেগে থাকা আইসক্রিম হাত দিয়ে মুছে বললো,
—-হুম আমার বউয়ের সাথে তো আইসক্রিম আছে আমাকে আর কি প্রয়োজন।
ফুল ধরা পড়ার ভংগীতে রোদের দিকে তাকিয়ে জোরপূর্বক হেসে বললো,
—–একটুখানি খেয়েছি।
—–ডানহাত বের কর দেখি কতটুকু খেয়েছিস?
ফুল বক্সটা রোদের হাতে দিলো।
রোদ বক্সটা দেখে বললো,
—–তিনভাগের দুভাগ পেটে পুরে বলছিস একটুখানি খেয়েছি?বাকিটাও শেষ কর।
ফুল ভয়ে ভয়ে বললো,
—–না আর খাবোনা।
—-তাহলে আমাকে খাওয়া।
ফুল দুচামচ খেয়েই বললো,
—–বাজে টেস্ট।একটু ফ্লেভার,মিষ্টি ঠান্ডা জিনিসে কি আছে এমন যে খাওয়ার জন্য পাগল হয়ে যাস?
—-এই খবরদার,বাজে টেস্ট বলবা না।আইসক্রিম ইস দ্যা মোস্ট টেস্টি ফুড ইন দ্যা ওয়াল্ড।
—–হুম এতো টেস্ট যে আমার এতদিনের আদর-যত্ন,ভালোবাসা সব তুচ্ছ?
—–এভাবে বলছো কেন?
—–তো কিভাবে বলবো?তোকে কতবার না করেছি খেতে?দুদিন পর পর ঠান্ডা লাগাস।এত ঠান্ডা লাগানো ভালো?ডাক্তার বারবার নিষেধ করেছে ঠান্ডা কিছু খেতে।কিন্তু তুই আমার কথা শুনিস ই না।একটুও দাম দিস না।তুই কি বাচ্চা মেয়ে?আগে ছোট ছিলি মানা যায় কিন্তু এই বয়সেও?
—-খালি বকে,,আচ্ছা আর খাবোনা।(গাল ফুলিয়ে)
—-কিছু বললেই গাল ফোলাস কেন?
—–তবে কি নাক ফোলাবো?
রোদ বাকা হেসে বললো,
—–তাও ফোলাতে পারিস।বরাবরের মতোই টুপ করে নাকে চুমু খেয়ে নিবো।
ফুল রোদের পিঠে মেরে বললো,
—–স্যার আপনি কি দিনদিন বাচ্চা হচ্ছেন?
রোদ বললো,
—–তুই বলতে চাচ্ছিস আমি বুড়ো হয়ে গেছি?
—-না না অসম্ভব!
ফুল রোদের মুখে মাথা গুজে বললো,
—-তুমি বরাবরই আমার কাছে এক রকম আছো,থাকবে।আমার জীবনের সমস্ত খুশি,রং সব তুমি।এ ভালোবাসা শেষ হওয়ার নয়।আজীবন,আমৃত্যু থাকবে।
এই নাম,খ্যাতি,সুখের সংসার,আমার হৃদ,রোজ সব কিছু আল্লাহ তোমার উছিলায় দিয়েছে।তুমি আমাকে সব দিয়েছো,এর বিনিময়ে আমি তোমাকে ভালোবাসা ছাড়া কিছুই দিতে পারিনি।আর তুমি আমার ভালোবাসা ছাড়া আর কিছুই চাওনি।
রোদ ফুলের মাথায় চুমু খেয়ে বললো,
—-আজীবন আমি তোর ভালোবাসাই চাই।আর কিছু চাইনা।
হৃদ আর রোজ দুই ভাইবোন অরিত্রের জন্য ভার্সিটিতে অপেক্ষা করছে।রোজ অরিত্রকে দেখে পেছন থেকে ওর নাম ধরে ডাক দিলো।
অরিত্র রোজের দিকে চেয়ে মুগ্ধতাময় হাসি দিলো।
পর্ব-১৪
#ফাবিহা_নওশীন
🍁🍁
অরিত্র মাথা নিচু করে বসে আছে।কপালের কোনায় ব্যান্ডেজ করা।হৃদ এক হাতের আংগুলের সাথে অন্য আংগুল ঘষছে।রোজ হৃদের দিকে চেয়ে আছে।হৃদ মুখ খুলল।
—–আ’ম সরি ফর এভ্রিথিং।আসলে আমার একটা মিসআন্ডারস্ট্যান্ডিং হয়ে গিয়েছিলো।আমি ভেবেছিলাম কোনো বাজে ছেলে আমার বোনকে ডিস্টার্ব করছে।তাই রাগ উঠে গিয়েছিলো।অফিস থেকেই কোনো বিশেষ কারণে রাগের মাথায় বেরিয়ে যাই আর রাস্তায় এই ঘটনা দেখে আমার রাগ আরো চড়ে যায়।যার ফলে আমি খুব বাজেভাবে তোমার গায়ে হাত তুলে ফেলি।আমি আসলে জানতাম না তোমার সম্পর্কে।রোজ আমায় কিছুই বলেনি।
অরিত্র মুচকি হেসে রোজের দিকে একবার তাকিয়ে বললো,
—–বলার মতো কোনো সম্পর্ক আমাদের নেই তাই বলে নি।
হৃদ বললো,
—–হ্যা আমি জানি।রোজ আমাকে সবটা বলেছে প্রথম থেকে।রোজ হুট করেই তোমার কাছ থেকে প্রপোজ এক্সপেক্ট করেনি।তোমার প্রপোজে ও হতবিহ্বল হয়ে পড়েছিলো।তোমাকে চিনেনা,জানেনা।তারপর তোমার পাগলামি দেখে খোজ খবর নিয়ে তোমার সম্পর্কে সবটা জেনেছে।কিন্তু তারপরেও ও কোথাও একটা বাধা পেয়েছিলো সেটা হলো পাপা।পাপার ভার্সিটিতে পাপার নাকের নিচ দিয়ে প্রেম করার সাহস পায়নি।তাই তোমাকে যথাসম্ভব এড়িয়ে চলেছে।কিন্তু মনকে তো এড়িয়ে চলতে পারেনি।অবচেতন মনে তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছে।এখনো পাপার ভয় আছে কিন্তু অপর পাশে ভাইয়ের সাপোর্ট আছে যা ওর শক্তি আর সাহস জুড়িয়েছে।আশা করি দুজনের সমস্যা মিটিয়ে নিবে।আর আমি সত্যিই ওই দিনের ঘটনার জন্য লজ্জিত।প্লিজ ফোরগিভ মি।
—–আরে বাদ দিন।যখন আমি কিছু মনেই করিনি ক্ষমার কথা কোথায় থেকে আসছে?আপনার জায়গায় আমি থাকলে এটাই করতাম যদিও আমার কোনো বোন নেই।বাট রাস্তায় আমি এমন ঘটনা দেখলে ছাড় দেইনা।ভুল আমারি হয়েছে।আমার এমন করা উচিত হয়নি।সরি।এন্ড সরি রোজ।
(রোজের দিকে তাকিয়ে)
হৃদ অরিত্রের হাতের উপর হাত দিয়ে বললো,
—–ফরগেট দিস।এন্ড স্টার্ট এ নিউ লাইফ।বেস্ট অফ লাক বোথ অফ ইউ।সি ইউ।বায়।
হৃদ সানগ্লাস চোখে দিয়ে উঠে গেলো।অরিত্র রোজের দিকে তাকিয়ে আছে।রোজ অরিত্রের এমন দৃষ্টি দেখে আমতা আমতা করছে।
অরিত্র রোজের আমতা আমতা করা দেখে বললো,
—–তুমি আমাকে অযথা এতোদিন কেন ঘুরালে?আমি কিন্তু কিছুই ভুলিনি।এর শাস্তি তোমাকে পেতে হবে।
—–শাস্তি!!(আর যাই বলুক চিপস খেতে যেনো মানা না করে)
—-হ্যা ঠিক ধরেছেন মেম।চিপস!আগামী দুদিন তুমি চিপস খাবেনা।
রোজ কাদো কাদো হয়ে বললো,
—–ইটস নট ফেয়ার।আমি চিপস না খেয়ে থাকতে পারবোনা।ইম্পসিবল।
—-ইম্পসিবল??? তোমার শাস্তি আরেকটা বেড়ে গেলো এখন আমাকে আই লাভ ইউ টু বলবা রাইট নাও।
রোজ ভ্রু কুচকে তাকিয়ে বললো,
—–এখনো বিএফ হন নি আর এখনি এত শাসন আর শাস্তি?এ কেমন বয়ফ্রেন্ড?হিটলারের বংশধর নাকি আপনি?
—-কি বললা?আমি হিটলারের বংশধর?তোমার শাস্তি আরেকটা বেড়ে গেলো।তুমি এখনি ব্যাগ থেকে চিপস বের করে আমাকে দিবে।আজকেও চিপস পাবেনা।
রোজ অসহায় ফেস করে মনে মনে বললো,
—–আব্বে শালার বয়ফ্রেন্ড,এর মতো বয়ফ্রেন্ড জীবনেও দেখিনি।কথায় কথায় শাস্তি।আমার চিপ্স।আর মুখ খুলবো ই না এর সামনে।রোজ তোর শান্তির দিন শেষ।
.
.
“আরে হাত ধরে টেনে আমাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছো?মানুষ দেখলে কি ভাববে?”
শুভ্রা হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করছে আর হৃদকে বলছে।
“যার যা খুশি ভাবুক,বলুক আই ডোন্ট কেয়ার বেবি”
টেডি স্মাইল দিয়ে হৃদ বললো।
বিরক্তিতে শুভ্রার কপাল কুচকে আছে।
হৃদ শুভ্রাকে নিজের কেবিনে নিয়ে বসিয়ে দিলো।
তারপর হৃদ ওর দিকে চেয়ে রইলো।এভাবে অনেকক্ষণ কেটে যাওয়ার পরও হৃদ কোনো কথা বলছেনা।শুভ্রা বিরক্তি নিয়ে বললো,
“আমার মাথায় কি শিং জালিয়েছে?”
হৃদ বললো,
—–তা কেন হবে?
—–তাহলে এভাবে চেয়ে আছো কেন?
—-কি করবো আমার শুধু তোমাকেই দেখতে ইচ্ছে করে।ইচ্ছে করে সারাদিন চোখের সামনে রাখি।
এমন কথা শুনে শুভ্রার খুশি হওয়ার কথা থাকলেও শুভ্রা খুশি হতে পারছেনা।ওর মনে হচ্ছে এতবছর কিভাবে থেকেছে না দেখে।
—-হৃদ আমি যাচ্ছি।আমাকে ভার্সিটি যেতে হবে।
হৃদ এমন মুহূর্তে শুভ্রার কাছে থেকে এমন কথা আশা করেনি।হৃদের ঘাপলা লাগছে।
হৃদ শুভ্রার সামনাসামনি দাঁড়িয়ে বললো,
—–শুভ্রা কি হয়েছে তোমার?
—-কি হবে?
—-কিছু তো একটা হয়েছে।তুমি কি এখনো আমাকে মেনে নিতে পারোনি?যদি না মানতে পারো সোজাসাপটা বলে দেও।আমার মন রক্ষার জন্য নিজেকে কষ্ট দিওনা।আমি চাইনা আমার খুশির জন্য তুমি কষ্ট পাও।
শুভ্রা শুকনো হাসি হেসে বললো,
—–তেমন কিছু নয়।
—–তাহলে এমন করছো কেন?মনে হচ্ছে আমাকে এড়িয়ে চলতে চাইছো।গতকাল কি হলো জানিনা হুট করে চলে এলে।আজও কেমন যাই যাই করছো।আমাকে একটু ক্লিয়ার করে বলবে প্রব্লেম কি?
—–হৃদ আমি জানিনা আমার প্রব্লেম কি?তোমার যদি মনে হয় আমার মধ্যে প্রব্লেম আছে তবে তার কারণ খোজে বের করো।আমি আমার মধ্যে কোনো প্রব্লেম খোজে পাচ্ছিনা।
হৃদ শুভ্রার কোমড় জড়িয়ে নিজের সাথে মিশিয়ে নিলো।গালের উপর পড়ে থাকা চুলগুলো কানের পিছনে গুজে শুভ্রার চোখে চোখ রেখে শান্তস্বরে বললো,
—–আমি আমার সেই শুভ্রাকে চাই।যে আমার সঙ্গ পাওয়ার জন্য,আমার ভালোবাসার জন্য পাগলামি করতো।দুষ্টুমিতে মেতে থাকতো।
শুভ্রা অভিমানমিশ্রিত হাসি দিয়ে বললো,
—–ভুলে যেওনা তুমি সেই শুভ্রার অন্ত চেয়েছিলে।
—–শুভ্রার ভুলগুলোর অন্ত চেয়েছিলাম পাগলামো ভালোবাসার নয়।
—–কিন্তু সেই শুভ্রার ভুলগুলোর সাথে সাথে শুভ্রার চাঞ্চল্য হারিয়ে গেছে।হারিয়ে গেছে শুভ্রার ছেলেবেলার স্মৃতি।যেখানে শুরু হৃদের জায়গা ছিলো।
—–শুধু আমার জায়গা আমি কখনো চাইনি।তোমার সবটা জোরে আমি থাকতেও চাইনি।তবে চেয়েছি সবকিছুর মধ্যেই আমায় ভালোবাসো।কিন্তু এখন সেটাও পাচ্ছিনা।কেন বলোতো?
—–আমি তোমাকে ভালোবাসি আমি শুধু এটুকুই জানি।যদি আমার মাঝে কিছুর অভাব তোমার চোখে পড়েই থাকে তবে হয়তো এর জন্য তুমিই দায়ী।
শুভ্রার সোজাসাপ্টা উত্তর।
শুভ্রা নিজেকে ছাড়িয়ে নিলো।হৃদের দিকে একবার চেয়ে দরজা খোলে বেরিয়ে গেলো।
হৃদ নির্বাক হয়ে শুভ্রার চলে যাওয়া দেখছে।
সকাল সকাল হৃদ নিজের চুলে টান খাচ্ছে।মনে হচ্ছে নরম একটা হাত ওর চুলের গোড়া ধরে টানছে।হৃদ চোখ মেলে ঘুমঘুম চোখে শুভ্রাকে দেখলো।সকাল সকাল শুভ্রাকে দেখে ওর মুখে হাসি ফুটলো।শুভ্রার গালের দিকে হাত বাড়িয়ে ছুয়ে দিয়ে বললো,
—–গুড মর্নিং মাই লাভ।
শুভ্রা রহস্যময় হাসি দিয়ে বললো,
—-গুড মর্নিং টু।তাড়াতাড়ি উঠো।অনেক বেলা হয়ে গিয়েছে।
হৃদ মাথার কাছ থেকে ফোন নিয়ে দেখলো ওর বিছানা ছাড়ার সময় হয়নি কিন্তু শুভ্রা এতো তাড়া কেন দিচ্ছে?
—–এত তাড়া দিচ্ছো কেন?
—–অফিসে যাবে তাই।উঠো উঠো।
—–অফিস এখনো অনেক দেরী।আমার ঘুম কাটেনি পুরোপুরি।আরেকটু ঘুমাই।চাইলে তুইও আমার পাশে ঘুমিয়ে নিতে পারিস।
শুভ্রা ভ্রু কুচকে বললো,
—-তোমার পাশে কেন ঘুমাবো?অবিবাহিত ছেলে-মেয়েদের এক বিছানায় ঘুমানো ঠিক না।বাণীতে রাইসান হৃদয়।
হৃদ হোহো করে হেসে দিলো।
—-আসলেই অনেক বড় হয়ে গিয়েছিস।
—–তুমি আমাকে তুমি আবার হুটহাট তুই করে কেন বলো?
—–তুমি করেই বলতে চাই বাট বারবার ভুল করে ফেলি।ছোটবেলায় চলে যাই।পুরনো অভ্যাস চাইলেই ছাড়া যায়না।
—–তাহলে তুমি ঘুমাও।আমি যাই।
—–তাহলে সত্যি সত্যিই আমার পাশে ঘুমাবিনা?
—–উহু।তুমিই তো বললে আমি বড় হয়ে গেছি।
হৃদ বাকা হেসে শুভ্রার হাত ধরে বললো,
—–তাহলে তো বিয়েটা সেড়েই ফেলা যায়।
কথাটা শেষ করে আরো জোরে শুভ্রার হাত টান দিলো।
শুভ্রা হৃদের মুখে বিয়ের কথা শুনে লজ্জা পেয়ে গেলো।লজ্জা মাখা মুখে বললো,
—-জানিনা।
হাত ছাড়িয়ে নিয়ে দৌড়ে চলে গেলো।
কিছুক্ষণ পর হৃদ বিছানা ছেড়ে ফ্রেশ হওয়ার জন্য ওয়াশরুমে গেলো।বেসিনের সামনে দাড়াতেই ওর চোখ চড়কগাছ।
মাথায় ছোট একটা তালগাছ দাড়িয়ে আছে মানে শুভ্রা ওর চুলে ঝুটি করে দিয়েছে।
“ছোবড়া!!!!”
চিতকার শুনে শুভ্রা মুচকি হেসে নিচুস্বরে বললো,কাজ হয়েছে।
হৃদের চিতকার শুনে সবাই জড়ো হলেও শুভ্রা আসেনি।হৃদের মাম্মা জিজ্ঞেস করছে,
—–কি হয়েছে হৃদ?
—–মাম্মা শুভ্রা কই ওকে ডাকো?
পিছনে থেকে শুভ্রা বললো,
—–আমি এখানে।
—–তুই আমার চুলের সাথে কি করেছিস?
—–কি করেছি?(না জানার ভান করে)
হৃদ কটমট করে শুভ্রার দিকে তাকিয়ে বললো,
—–যদি নিজের মাথার চুল রাখতে চাস তবে বল কেন করেছিস?
হৃদের পাপা বললো,
—–শুভ্রা মামনি কি করেছিস?
—–কিছুই না বাবাই জাস্ট একটা ঝুটি করেছি।
শুভ্রার পাপা বললো,ঝুটি!!
তারপর সবাই হোহো করে হেসে দিলো।
হৃদ সবার দিকে তাকিয়ে বললো,
—–পাপাই তুমিও?
—–আরে এতো রাগ করছিস কেন একটা ঝুটিই তো করেছে।
—–হুম তাও মাথার মাঝখানে মনে হচ্ছে তালগাছ।হাসো হাসো।তোমাদের সাথে এমন হলে বুঝতে কেন রাগ করছি।হুহ।
হৃদের পাপা মুখ চেপে হাসছে সাথে ওর মাম্মাও।হৃদ সন্দেহবশত বললো,
—–কাহিনী কি?
হৃদের পাপা বললো,
—-তোমার মাম্মা আমার এই চুলের উপর অনেক অত্যাচার করেছে।বিয়ের পর কতবার ঝুটি করিয়েছে হিসেব নেই।
শুভ্রা বললো,
—–তাহলে আমিও অত্যাচার করবো।এটা আমার বংশগত অধিকার।
হৃদের পাপা বললো,
—–কিন্তু এর জন্য তো তোকে হৃদকে বিয়ে করতে হবে।
শুভ্রা বেখেয়ালিভাবে বললো,
—–করবো।
সবাই শুভ্রার মুখের দিকে চেয়ে আছে।ওরা তো আর জানে না এদের ঝামেলা মিটে গেছে।
শুভ্রা কয়েক সেকেন্ডের মাথায় বুঝতে পারলো ও মুখ ফস্কে কি বলে ফেলেছে।শুভ্রা সবার দিকে তাকিয়ে লজ্জা পেয়ে গেলো তারপর বললো,
—–ইয়েয়ে,,,মানে,,,
শুভ্রা তরি ঘটি করে কেটে পড়লো।
তারপর সবাই হৃদের দিকে জিজ্ঞাসুক দৃষ্টিতে চেয়ে রইলো।
হৃদ মাথা চুলকে মুচকি হেসে বললো,
ফ্রেশ হতে যাচ্ছি।
তারপর হৃদের পাপা বললো আমি যা ভাবছি তোরাও কি তাই ভাবছিস?
শুভ্রার পাপা বললো,
ভাইয়া টুইস্ট হে।
রোজ বললো,কইয়ি টুইস্ট নেহি।ওদের সব ফিট হয়ে গেছে।আর এর ক্রেডিট সম্পুর্ণ রুহানিয়া রোজের।
শুভ্রার পাপা গর্ব করে রোজকে বললো,
—–ওয়েল ডান,তোর মাঝে আমি নিজেকে দেখতে পাই।
🌺🌺
—-স্যার ইশানের রিপ্লেসের জন্য মডেল হায়ার করতে হবে।৪দিন বাকি আছে শো এর জন্য।
—–ডোন্ট ওরি ম্যানেজারের সাথে কথা হয়েছে।উনি ব্যবস্থা নিচ্ছেন।
—–এখন ৪দিনে সব ম্যানেজ করা গেলেই হয়।নিউ হায়ার করলে অনেক ঝামেলায় পড়তে হবে।এমন মুহূর্তে ইশানকে ফায়ার…
—–ইটস নান অফ ইউর বিজনেস।
—–সরি স্যার।
শুভ্রা পেছনে থেকে বললো,
—–এর সমাধান আমার কাছে আছে।
সবাই শুভ্রার দিকে তাকালো।
হৃদ বললো,
—–হোয়াট?
—–এভ্রিওয়ান লিসেন টু মি। রাইসান হৃদয়।হি ইজ এ হট,ইয়াং বিজনেসম্যান।আর তার শোতে যদি সে পার্টিসিপ্যান্ট করে তবে ইউনিক হবে।
সবার মুখেই একি কথা দ্যাটস গুড।শুভ্রার প্রস্তাবটা সবার পছন্দ হয়েছে।
হৃদ সবার কথা শুনে বিচলিত হয়ে যায়।শুভ্রাকে টেনে এক কিনাতে নিয়ে গিয়ে বললো,
—–মাথা গেছে তোর শুভ্রা?আমি আর মডেলিং? হাও ফানি ইয়ার?
—-কেন নয়?ফানি কেন?
—-কজ আমি কোনো মডেল নই।
—-শুনো হৃদবাবু কেউ মডেল হয়ে জন্মায় না।আর কিছুক্ষণের জন্য মডেলিংই তো।তোমাকে কেউ মুভির অফার করে নি।
—-আমি পারবোনা।
—–তুমিই ইশানের রিপ্লেস হবে।আমার ফাইনাল কথা।আমি আর কিছু শুনতে চাইনা।
—–শুভ্রা এটা আমাদের প্রেস্টিজের ব্যাপার।গড়বড় হলে অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যাবে।আমি মডেলিংয়ের বিষয়ে কিচ্ছু জানিনা।
—–মে হো না..
আমি তোমাকে সব শিখিয়ে নেবো।প্লিজ প্লিজ।
হৃদ মুখটা ছোট করে বললো,ওকে।
শুভ্রা খুশিতে হৃদের দুগাল টেনে ধরে বললো,ইউ আর সো সুইট।
হৃদ গালে হাত বুলাতে বুলাতে বললো,
—–আমার গাল ছিড়ে ফেলবি?
—–হ্যা ছিড়ে ফেলবো।
চলবে…