#অতল_গভীরে
#পর্ব৯
Eliyana Aara
–আ আ আ আম্মু বাচাও সাপ। আয়মান আ সাপ হেলেপ মি।আ আআআআআ।
ওরে এই মেয়েটা কি চিল্লাইতে পারেরে আমার কান।বয়রাই হয়ে গেছি মনে হচ্ছে।
এই দিকে তানহার চিৎকার এর আওয়াজ শুনে সবাই রুমে এসে গেলো।আয়মানকে ওয়াশরুমের দরোজার কাছে দারিয়ে থাকতে দেখে ওকে জাহিদ জিজ্ঞেস করলো,
—–কিরে কি হয়েছে?তানহার চিল্লানোর আওয়াজ শুনলাম মনে হলো?কোথায় ও?
আমি জোড় করে হাসি দিয়ে বললাম,
—–ভিতরে।
আবার তানহার গলা ভেষে আসছে,
—- আআআআআ বাচাও আমাকে। মিলি সাপ , তাহমিনারে সাপ,আয়মান সাপ আব্বু সাপ।
তানিজল মাথা চুলকে বলতে লাগলো,
—-হে ওরা আবার সাপ হলো কি করে।ওরাতো এখানেই দাঁড়িয়ে আছে।
জাহিদ তানজিল এর মাথায় গাট্টা দিয়ে বললো,
—–আরে গাধা সাপের কথা বলছে এই সাপ গুলোর কথা বলেনি।
তাহমিনা, মিলি, সুমিকে উদ্দেশ্য করে বললো,
—–ওওওওও(তানজিল)
আমি জাহিদের কাধে হাত দিয়ে ভর দিয়ে বললাম,
—–তাইতো বলি তানু নিজেইতো একটা সাপ ও আবার এই সাপ দেখে ভয় পাবে কেন?
—–এই তোরা চুপ থাক। মেয়েটা ভয়ে ওখানে চিল্লাচ্ছে আর তোরা ওর মজা উরাচ্ছিস।আর ওরাতো এখানে দাঁড়িয়ে আছে,সাপতো ভিতরে।(আম্মু)
—– তানহা আপু দরোজা খোলো।(তাহমিনা)
তানহা ঠাস করে দরোজা খুলেই বিছানায় গিয়ে পা তুলে বসে পরলো।
সবাই ছুটে ওর পাশে গিয়ে দারালো।
—–কিরে কি হয়েছে ভয় পাচ্ছিস কেন??(ছোট চাচি)
—– আম্মু সাপ(তানহা)
—–কোথায় ভাবি।(তানজিল)
—–ওই দেখ ওয়াশ রুমে।
তানজিল আর জাহিদ ওয়াশরুম চেক করে দেখলো দেখে হাতে করে একটা রাবারের সাপ নিয়ে এলো।
—–কিরে এটাতো রাবারের সাপ।এটা দেখে ভয় পাচ্ছিলি??(জাহিদ)
—–সাপ ও সাপকে দেখে বয় পায় যানতাম না।(আমি বললাম)
আমার কথা শুনে সবাই হেসে দিলো।
পরে আম্মু বললো,
—–কিন্তু এটা ওয়াশরুমে এলো কোথা থেকে।
সবাই এবার আমার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি ফেলে তাকিয়ে আছে।আমি আমতা আমতা করে বললাম,
—–স সবাই আ আমার দিকে তাকিয়ে আছো কেন?আমি কি করেছি?
—–এই রাবারের সাপের মালিক তুই তাহলে তোর জানার কথা ওটা ওখানে গেলো কি করে।(জাহিদ)
—–আ আমি জানি না।
—–এই তোমরা আমার দুলাভাইয়ার উপর দোষ দিচ্ছো কেন? আমার দুলা ভাইয়া কিছু করেনি।দেইখো তোমাদের কাছ থেকে বকা খাওয়ানোর জন্য আপুই সাথে করে নিয়েগেছে।(তাহমিনা)
—– সেটাই ভাইয়া কিছু করেনি(মিলি)
—–হুম (সুমি)
আমি ওদের কাছে গিয়ে ফিস ফিস করে বললাম,
—–এই না হলো আমার সালিকারা। আজকে তোদের পার্টি দিবোনি।
—–ওরে দুলাভাইয়ার চামচিরা, আমি কিছু করিনি।নিজের দুলাভাইয়ার হয়ে সাফাই গেতে হবে না আর।(তানহা)
—-হুহ।চলুনতো ভাইয়া।এদের কাছে থেকে লাভ নেই চলুন আপনাকে কিছু খেতে দেই।
বলেই মিলি সুমি তাহমিনা আমাকে ওখান থেকে নিয়ে এলো।সোফায় এসে বসলাম,সুমি আমাকে বললো,
—–ভাইয়া সাপটা ওখানে গেলো কি করে??
—–হাহহাহ আমার ওয়াশরুমে দরোজার উপরে কিছুটা জায়গা খালি আছে ইট দেয়নি ভুলে লোকেরা। পরে ওটা ঠিক করাবো করে আর করাইনি,চলে গেলাম বাহিরে। ওটারি আজকে ফায়দা উঠিয়েছি।আর জানিসই তে আমার কাছে ওই সাপটা অনেক আগে থেকে আছে।তোদের বোকা বোন সাপটাকে চিনতে পারেনি তাই এরকম চিল্লিয়েছে।যখোন চিনতে পেরেছে তখোন বের হয়ে এসেছে।আর আমাকে বকা খাওয়াতে বাহিরে একটু নাটক করলো।
—–হাহহাহা বাপরে ভাইয়া দেখা যায় সব বুঝে গেছো।(মিলি)
—–যাক ভালোই হয়েছে একটু এন্টার টেইনমেন্ট হলো।হাহহাহা।(তাহমিনা)
বিকালে,
—–ওরে বইন ছার আর জীবনেও তোর সাথে মজা করমু না।
—–এই আমি আপনার বোন লাগি বউ বলেন বউ।আর কোন দিন মজা করবেন আমার সাথে।
—–মাফ কইরা দে বউ।আর কোন দিনও করবো না। আমার লক্ষি বউ, ময়না বউ তোতা পাখি বউ।
আমার কাছ থেকে দুরে সরে গেলো আর আমি লাফাতে লাগলাম।
আসলে তানহা পিছোন থেকে এসে আমার টিশার্টের ভিতর বরফ দিয়ে আমাকে পেছন থেকে ধরে রেখে ছিলো।লাফাতেও পারছিলাম না ফেলতেও পারছিলাম না পিঠ পুরো ঠান্ডা হয়ে গেছিলো।আল্লাহগো ও সরতেই লাফিয়ে লাফিয়ে সব ফেলে দিয়েছি।
বরফ গুলো গুনে দেখি প্রায় ১২টা বরফ এর টুকটা।আইস কিউব।
—–হুম গুড বয়।এবার চলুন আমরা সবাই বাহিরে যাবো।
আমরা সবাই রেডি হয়ে নিলাম,আমি তানহা, সুমি, মিলি, তাহমিনা, তানজিল। জাহিদ যাবে না ওর নাকি কাজ আছে তাই চলে গেছে।আর রইলো বড় মানুষ গুলো ওনারা নাকি আমাদের বাচ্চাদের সাথে জাবে না ওনেক জোর করেও নিতে পারিনি।
সবাই মিলে আমরা মুভি দেখতে চলে গেলাম।আরে মুভি দেখে তানহা, তাহমিনা মিলি সুমি কি কান্না। ওদের কান্না দেখে আমি আর তানজিল যেন হাসি থামাতেই পারছি না। আমাদেরকে এভাবে হাসতে দেখে তানহা বললো,
—–কি হলো এভাবে হাসছেন কেন?
—–তোদের কান্না দেখে।
—–কি ইমোশনাল ছিলো আয়মান। খুব কষ্ট লেগেছে মুভিটা।(তানহা)
——ওলে আবার বেবিরে থাক কাদেনা চলো চকলেট কিনে দেই।
——না খিদে লেগেছে চকলেটে চলবে না।
—–তো চল রেস্তোরাঁয়। তোদের রাতের ডিনার করাই।
আমরা রাতের ডিনার করে সবার জন্য নিয়ে চললাম আগে থেকেই না করে দিয়েছিলাম সবাইকে রান্না না করতে।বাসায় গিয়ে সবাই যার যার রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিলাম। রাতে ঘুমানোর আগে আমি জাহিদের রুমে চলে গেলাম।দেখি ওও বসে বসে কাজ করছে,
আমি গিয়ে ওর পাশে চেয়ার টেনে বসে বললাম,
—–কিরে কি করছিস?
—–অফিসে একটু কাজ ছিলো সেটাই করছিলাম।
—–ওওও তা তুই বিয়ে করবি কবে?আমিও করে নিলাম আমাদের ফ্রেন্ডগুলাও করে নিয়েছে তুইও করে নে সামিয়াকে।(ওর গার্লফ্রেন্ড সামিয়া)
—–ভাবতিসি বলবো আব্বুকে আর কিছুদিন পর।
—–হুম যতো আগে বলবি ততোই ভালো।কেউ একজন বলেছে তারাতাড়ি বিয়ে করা ঠিক।
—–হাহহাহ।আচ্ছা তুই তো আমার আগে বিয়ে করলি এবার বল আমাদের চাচ্চু কবে বানাবি।
—–আলহামদুলিল্লাহ খুব তারাতাড়ি একটা সু খবর পাবি।
—– আলহামদুলিল্লাহ যাক তারাতাড়ি ভালো খবর পেলেই খুশি আমরা।
—–হুম।
——তা একটা খবর জানিস?
—–কি খবর???
—–তানজিল আর মিলি যে একে অপরকে পছন্দ করে।
—–নারে তাতো যানতাম না।তাইতো বলি এদের দুটো এতো ঝগরা কেন করে,আবার দুই সেকেন্ড সময় লাগে না মিশতে।
—–নতুন নতুন প্রেম করছেতো তাই।
—-ওওও যাক ভালোই।ওরা ভালো থাকলেও আমরাও ভালো। বাসার সবাইকি জানে?
—- না।কেউ জানে না,আমি অনেক লুকিয়ে চুরিয়ে ধরেছি ওদের। পরে বলতে চেয়ছিলাম কিন্তু বলিনি,তানজিল নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে যেদিন বলবে সেটাই হয়তো ওদের জন্য ভালো হবে।
—-হুম ঠিক বলেছিস।
—–আচ্ছা শোন যেটা বলার জন্য এসেছি।
—-কি??
—–তোর জানামতে তোর চেনা জানা কোন পুলিশ অফিসার আছে যে আমার সাথে কাজ করতে পারবে।
—–কি কাজ?আর আছে আমারি এক বন্ধু। কেন কিছু হয়েছে?
পরে আমি তানহার বেপারে সবটা ওকে খুলে বললাম।আর বসেরও পুরো বেপারটা বললাম। সবটা শুনে জাহিদের চোখ থেকে পানি গড়িয়ে পরছে।ও বললো,
—–তানহাটা এতো বোকা কেন? ওর সাথে এত কিছু হয়ে গেলো ও কাউকে একটিবার জানতে বুঝতে দিলো না।নিজে নিজেই এই তিনটা বছর গুমরে গুমরে মরেছে।কিরকম ভাই আমি ওর বুঝতেই পারলাম না কিছু আরো ওকে দোষ দিয়ে গিয়েছি।প্রথমে ভেবেছিলাম কোন ছেলের সাথে রিলশনে যাওয়ার পর হয়তো ছেকা খেয়ে এমন করছে, পরে আমি খোজ লাগিয়ে শুনলাম এরকম কিছুও নয়।এতো বড় একটা কারোন হবে ভাবতেও পারিনি।
—–হুম।আর ও আমাকেই ভালোবাশতো অনেক আগে থেকে,তাই আমি জাওয়ার পরেও কাউকে নিজের লাইফে আনেনি।
—–দেখেছিস আমি তোকে অনেক আগেই এই কথাটা বলেছিলাম তুইতো তখোন মজার ছলে উড়িয়ে দিয়েছিস।
—-হি হি।আচ্ছা বাদ দে যদি ওই পুলিশের নাম্বার তোর কাছে থেকে থাকে তাহলে দে।
০১৮……..
—–ওকে আমি কথা বলবোনি।
—–হুম আর জানোয়ারকেতো ছারবো না। আমার বোনের সম্মানে হাত দিয়েছে কেটে টুকরো টুকরো করে পানিতে ভাষিয়ে দিবো। আমিও দেখি কোন ক্লু পাই কিনা যদি কিছু পাই তোকে আমি জানিয়ে দিবো এখানে।
—–ওকে।আমি দেখি কোন জায়গার কিডনেপের সিসিটিভি ফুটেজ পাই কিনা।
—–হুম। যখোন জাবি আমাকে সাথে করে নিয়ে যাস
——আচ্ছা, থাক তাহলে আমি রুমে যাই।
রুমে চলে এলাম এসে দেখি তানহা নাক ডেকে ঘুমাচ্ছে কাথা মুরি দিয়ে।এই মেয়েটা ঠান্ডা নাই গরম নাই সবসময় কাথা মুরি দিয়ে শুয়ে থাকবে।আমারতো দম বন্ধ হয়ে আসে বাবা।যাই হোক বাদ এখোন ঘুমিয়ে পরি সকালে কথা বলবোনি ওর সাথে।
#অতল_গভীরে
#পর্ব১০
Eliyana Aara
কানে এমন শুরশুরি লাগছে কেন?ধেত নিশ্চয়ই এই তানু কিছু করছে আমার কান নিয়ে। (মনে মনে ভেবেই) চোখটা খুলে আসলেই দেখি ও আমার কানে কাপোর দিয়ে শুরশুরি দিচ্ছে। এই সকাল সকাল এরকম করলে কার ভালো লাগে,আমি বললাম,
—–এই কি হইসে তোর এমন করছিস কেন?
——কেমন করেছি?
—–কানে শুরশুরি দিচ্ছিস কেন?
—–তো আপনি ঘুমাচ্ছেন কেন?
—–শুরশুরির সাথে ঘুমের কি সম্পর্ক??
—-আছেতো।এখানে আমার ঘুম হচ্ছে না আর আপনি পরে পরে ঘুমাবেন সেটা কি আমার আর সয্য হবে।তাইতো আপনাকে উঠানোর জন্য শুরশুরি দিয়েছি।
—–বজ্জাত মাইয়া, নিজেও ঘুমাবে না আমাকেও ঘুমাতে দিবে না।
—–আপনার বউ বজ্জাত।
—–আমিও তাই বলসি আমার বউ ই বজ্জাত। এখোন কয়টা বাজে??
—–রাত ৪.৫৬ বাজে।
—–ওওওও।আচ্ছা উঠেই যখোন গেছি তোকে কিছু কথা বলার ছিলো।
—–কি কথা???
—–আচ্ছা তোকে কবে সাদ্দাফ কিডনেপ করেছিলো তারিখ সাল ডেট মনে আছে??
—-হুম।এই ধরেন ২০১৯ এর সেপ্টেম্বর এর ১৫ তারিখে।
—-ঠিক তো??
—-হুম, এই দিনটা আবার মনে না থাকে।
—–তোকে কোথায় নিয়ে গিয়েছিলো??কোথা থেকে বাসায় এসেছিলি?
—– বাড্ডার একটা হোটেলে নিয়েগিয়েছিলো।আমার ওখানের রাস্তা খুব বেশি একটা চেনা না হলেও ওখান থেকে বাসায় আসতে আমার অতটাও সমস্যা হয়নি।
—–হুম হোটেল এর নাম দেখেছিস??
—–গ্রীন লাইঠ হোটেল
—–ওকে।
—–কেন কিছু দরকার এগুলা জিজ্ঞেস করলেন যে??
—–না আসলে আমি আর জাহিদ আজকে ওই জায়গায় যাবো খোজ করতে।দেখি ওখান থেকে কোন প্রমান পাই কিনা।
—-ওওওও।এগুলা না করলে হয় না।ওই লোকটা আপনার ক্ষতি করে দিলে তখোন। আপনার কিছু করা লাগবে না যা হওয়ার হয়ে গেছে।
—–ভয় নেই কিছু হবে না আমার। আর ওকে শাস্তি না দিলে ও শুধরাবে না।ও তোর সাথে খারাপ কিছু করতে নিয়েছিলো পারেনি কিন্তু অন্য একটা মেয়েকে যে খারাপ কিছু করবে না তাতো বলা যায় না বল।
—-হুম।সাবধানে কাজ করবেন।
—–ওকে মেরি তানু বেবি।
সকালের নাস্তা করেই আমি আর জাহিদ বের হয়ে গেলাম বাড্ডায় জাহিদের সেই পুলিশ অফিসার ওও আসবে।
ওখানে পৌছানোর পর জাহিদ আমাকে সেই অফিসারের সাথে মিট করিয়ে দিলেন উনার নাম হলো, আরিফ সেখ।
—–হেলো মিস্টার আরিফ সেখ।
—- হেলো মিস্টার আয়মান জুহায়ের।কেমন আছেন?
—-আলহামদুলিল্লাহ আপনি?
—-আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।তো আমাদের এখানের আসার কারোনটা??
আমি উনাকে ফার্স্ট থেকে লাস্ট পর্যন্ত সব খুলে বললাম। উনি শুনে বললেন,
—–ঠিক আছে আমি আপনার সব কাজে যাথাযথ সাহায্য করার চেষ্টা করব।
—-ওকে।
—–এখোন এটাইতো হোটেল এর সিসিটিভি ফুটেজ দেখবেন।কিন্তু এতো আগের ফুটেজ কেমনে পাবো আদো আছে কি না তাদের কাছে কে জানে।
—-চলুন খুজে দেখি(জাহিদ)
আমরা হোটেল এর ফুটেজ চেক করলাম ওই দিনের সব ফুটেজ চেক করলাম, কিন্তু যেইটাইমটাতে হয়েছে ততটুকুর ফুটেজ নাই।কি হলো পেয়ে যেতটুকু দরকার ছিলো ততটুকুতো পেলাম না।তাই আসে পাশের বাহিরে গুলো দেখলাম শুধু একটাতে দেখতে পেলাম তানহাকে সাদ্দাফ অজ্ঞান করে হোটেল এর ভিতরে নিয়ে যাচ্ছে। এতটুকু কালেক্ট করে নিলাম।কিন্তু এতটুকুতেও কিছুই হবে না।আরো প্রমান চাই।
ওই দিনের মতো আরিফকে বিদায় দিয়ে বাসায় চলে এলাম এদিকটার কাজ শেষ আর কিছুই নেই এখানে।আর কি করতে পারি?মাথায় শুধু প্রমান লাগবে আরো শেটাই ঘুরপাক খাচ্ছে। বাসায় এসে তানহাকে বললাম।তারপর ও আবার ওর ভার্সিটির ওখান থেকে ফুটেজ এর কথা বললো।আমরাও ওর কথা শুনে বিকেলে চলে গেলাম ওটার খোজ করতে অবশেষে পেয়েও গেলাম।ওটাও কালেক্ট করে নিলাম যে ভার্সিটির সামনে থেকে সাদ্দাফ আর কয়েকটা ছেলে ওকে উঠিয়ে নিয়ে গেছে মুখ বাধা ছিলো কিন্তু গাড়ির ভেতরে সাদ্দাফকে একদম ক্লিয়ার দেখা যাচ্ছে। ও গারিতে বসে ছিলো।
আমি আর তানহা কয়েকদিন আরো ওখানে থেকে চলে গেলাম রাজশাহীর বাসায় ছুটি এখোন শেষ হয়নি।আরো তিনদিন ছুটি আছে।
এই তিনদিনকে কাজে লাগালাম সাদ্দাফ কোথায় যায় কি করে সব কিছুর একটা করে ভিডিও পিক নিতে লাগলাম। আমার অফিসের ছুটিও শেষ আবার রোজকার মতো জয়েন হয়ে গেলাম অফিসে। অফিসে বসে ওনার সব কিছু কালেক্ট করলাম কোথায় কোথায় কি কি ইনভেস্ট করে কোথায় টাকা লাগায় আমাদের নেতন কম কি করে হলো সব কিছু।এই সব প্রমান জোগার করতে আমার প্রায় আরো একটা মাসের বেশি লেগে গেলো।
এখোন আমার কাছে সব প্রমান আছে।আজ শুক্রবার তাই অফিস আাদালত সব বন্ধ তাই আজকে কিছু করতে পারবো না।সব খুললে তারপর আমি যেতে পারবো কিন্তু তার আগে বরং আরিফকে সব কিছুর একটা কপি মেল করে রাখি।
এর মধ্যে তানহা আমার লেপটপ রেখে আমার কোলে বসে পরলো,
—–আরে কি করছিস আমি কাজ করছিতো, লেপটপ টা রাখলি কেন?
—–এই সতীন লেপটপটাকে না আমার আর দেখতে ইচ্ছে করছে না।
—–লেপটপ আর সতীন?
—–তো আবার কি এটা ধরলেতো আর আমাদের মনেই থাকে না আপনার।
—–তোদের মনে রেখে কি করবো?
—–কি করবেন মানে আমাদের আদর করবেন নিজের হাতে খায়িয়ে দিবেন আমাদের যত্ন নিবেন।
—-ওরে আসছে কোথা থেকে উরে এসে জুরে বসে।আর এরকম আমাদের আমাদের করছিস কেন?আমাদের নিয়ে পরেছিস কেন?খালি আমাদের আমাদের করছিস।এখানে তোকে ছারা আর কে আছে??(আমার কিছুটা সন্দেহ লাগলো,)
ও আমার হাতটাকে টেনে নিয়ে ওর পেটে ধরলো।আমার সন্দেহটাকে সত্যি করে দিয়ে বললো,
—–এখানে আছে।
—-আরও ইউ প্রেগন্যান্ট??
—–হুম।
—–সত্যি
—–হুম।
আমি বাবা হতে যাচ্ছি। তানু আয়মান জুহায়ের বাবা হতে যাচ্ছে। এই খুশি আমি কোথায় রাখি।আমাদের ঘরে একটা প্রিন্সেস আসতে চলেছে।
——এই না না প্রিন্সেস না প্রিন্স হবে।
—–না মেয়ে হবে।
—–না ছেলে চাই আমার।
—–ওকে ওকে আল্লাহ যেইটা দিবেন সেটাতেই খুশি।যদি টুইন হয় তাহলেতো আরো খুশি।
—-হুম আলহামদুলিল্লাহ।
—–চল ডাক্তার এর কাছে নিয়ে যাই।তারপর দেখে সবাইকে বলবো খবরটা।
ডাক্তার এর কাছে গেলাম উনি কিছু টেস্ট করিয়ে কর্নফার্ম হয়ে বললেন যে ও প্রেগনেন্ট।বাসায় গিয়ে সবাইকে শুখবরটা দিয়ে দিলাম।সবাই শুনে কি খুশি।
তাহমিনা মিলি সুমি বলছে আমি খালামনি হবো। তানজিল জাহিদ বলছে ওরা চাচা হবে।আব্বু আম্মু বলছে দাদা দাদি হবে, তানহার আম্মুরা বলছে নানা নানি হবে। আর বড় কাকারা বলছে ওনারও দাদা নানা দাদি নানি দুটাই লাগে।
সবাই পারছেনা খুশিতে ডান্স করে।সবাই তানহাকে বুঝিয়ে বললেন কাজ কম করতে ভারি কাজ যাতে একেবারেই না করে।আমাকে তানহার খেয়াল রাখতে বলছে।সবাইকে বুঝিয়ে সুজিয়ে তারপর আমি কলটাকে রেখে দিলাম।
এরপর দুজনেই বারান্দায় বসে আছি। ও আমার কোলে বসে আছে আর আমি ওর ঘারে মুখ গুছে ওর চুলের গ্রান নিচ্ছি।তানহা আমার হাত দুটো কোমর জরিয়ে রাখলো।তারপর বললো,
—-/ওই মিস্টার আয়মান জুহায়ের।
——বলেন মিসেস আয়মান জুহায়ের।
—–সারাজীবন কি এই রাজশাহীতেই কাজ করবেন?
—-নাতো।এখানের কাজ কম্পিলিট হলেই চলে যাবো।পরে ওখানে আরেকটা জব খুজে নিবো।
—–ওওও আচ্ছা।
—–হুম আমার তানু বেবি।
ওই দিনকার মতো রাতে দুজনেই শুয়ে পরলাম।এরপরদিন বিকেল বেলা,
—–তানু কে যেন বেল দিচ্ছে দরোজা খোল।
—–খুলছি।
কিছু সময় পরেই কিছু ভাঙচুর এর আওয়াজ এলো। আমি দৌরে ডাইনিং গেলাম যেতেই দেখি কিছু লোক তানহার চুলের মুঠি ধরে দাড়িয়ে আছে।
আমি ওদের কাছে তানহাকে ছারাতে যেতেই পেছোন থেকে কেউ কিছু একটা দিয়ে খুব জোরে আঘাত করেছে।আমি মাথায় হাত দিয়ে দেখি রক্ত গড়িয়ে পরছে। আমার শরীর নিমিশেই মাটিতে লুটিয়ে পরছে।চোখের সামনে তানুর মুখটা কিছুটা ভেষে উঠছে।
কিছুটা ওর মুখ দেখতে পারছি সব ঝাপসা দেখা যাচ্ছে। যানি না সামনে আমাদের জন্য কি অপেক্ষা করছে, কিন্তু আমার তানু আর বেবিটা জেন ঠিক থাকে এটাই দোয়া করছি। কিছুক্ষণ এর মাঝেই আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেললাম।
চলবে……
চলবে….