#অদ্ভুত_সম্মোহনী ♥
#PART_06
#FABIYAH_MOMO🍁
” I warn you rup! I warn you! Don’t you dare to text me again! I don’t want to see your face again! Keep your dirty mind away from me! Remind it, if you do something wrong, it will be harmful for you! This Sad doesn’t care for you nor he will! Get lost ! ”
মেসেজটা সিন করে পড়া শেষ করতেই ওপাশ থেকে সাদ ভাইয়ার প্রোফাইল পিকটা ব্লার হয়ে গেলো। সাদ ভাইয়া আপুকে ব্লক মেরেছেন। আমি বড় বড় দুটো ঢোক গিলে ফোনটা আগের জায়গায় রেখে রুম থেকে স্বাভাবিক মুডে বেরিয়ে এলাম।
দুপুর একটা। সূর্যের দারুণ তীব্রতা বেড়েই চলছে হুরহুর করে। নাইমা আপুর বিয়ের ডেট খুব যে কাছে চলে এসেছে, সবাই এতে মন খারাপ করে একবেলা উদাস থাকি। সাদ ভাইয়া বাসায় ফিরেছেন। অবশ্য শাকিল ভাইয়া ও নিবির ভাইয়ার কঠোর তোষামোদে সাদ ভাইয়া আমাদের বাসায় থাকতে পুনরায় রাজি হয়েছেন। আমাকে আগের মতো কেউ এখন হুমকি টাইপ কিছুই পাঠায় না। দুটো দিন কাজের মাঝে খুবই ব্যস্ততার সাথে কাটিয়েছি। সাদ ভাইয়ার কাশিজনিত সমস্যার সাথে রক্ত পড়ার ঘটনাটা আমি ছাড়া কেউ জানে না। হয়তো সেটা সাদ ভাইয়া নিজেও জানে না তার অসুস্থতার বিষয়ে আমিও জানি। রূপ আপু ঘুমের ঘোরে প্রচুর বিলাপ করে কাদেন। অনেকবার এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলেও কেনো জানি জড়তার কাছে হেরে বসেছিলাম। আমি পারিনি আপুকে জিজ্ঞাসা করতে।
আজ নাইমা আপুর মেহেদি অনুষ্ঠান। কিছুটা ভিন্ন কালচারের যোগ হিসেবে বিয়ে ও হলুদ অনুষ্ঠানের সাথে মেহেদি অনুষ্ঠানটা যোগ করা হয়েছে। বাড়িতে প্রচুর জমজমাট অবস্থা। কেউ যেনো দম ছাড়ার ফুরসতই পায় না। আত্মীয়-স্বজন, পরিবারের সদস্যসহ সবাই মিলে হট্টগোলে বাড়ি মাতিয়ে তুলেছে চব্বিশ ঘন্টা জুড়ে। সাদ ভাইয়ার এখন আর তেমন দেখা মিলেনা। উনি যেই দৌড়াদৌড়িতে আছেন, শাকিল ভাইয়া তার একচুলও তাড়াহুড়োতে নেই। নবাবের বেটার মতো বন্ধুর কাধে সব চাপিয়ে দিয়ে নিজে আছেন আরাম আয়েশে, ঠান্ডা এসির নিচে। আমি রুমে বসে সন্ধ্যার ফাংশনের জন্য গাদা ফুলের পাপড়ি ছিড়ছি। আব্বু দরজায় দাড়িয়ে ছয়টা শপিং ব্যাগের বস্তা হাতে ঝুলিয়ে হুলস্থুল কন্ঠে বলে উঠলেন,
— রাহা!! মা তাড়াতাড়ি আয়!!ব্যাগগুলো ধর। নিচে কাজ পড়ে আছে অনেকগুলো।।
আমি ফুলের গুচ্ছা রেখে আব্বুর হাত থেকে ব্যাগগুলো নিয়ে বিছানায় ছড়িয়ে রাখি। গুণে গুণে দেখি ছয়টা ব্যাগ। কিন্তু ছয়টা কেনো? কার কার পোশাক এনেছে আব্বু? ব্যাগ সব খুলার আগে সবাইকে ডেকে আমার রুমে আনলাম। ব্যাগে নাইমা আপু, নিবির ভাইয়া, রূপ আপু, শাকিল ভাইয়া, সাদ ভাইয়া ও আমার পোশাক। টোটাল ছয়। আমার ডাকে সবাই আসলেও সাদ ভাইয়া আসেননি। উনি নাকি স্টেজ ডেকোরেশনের লোকদের সাথে কথাবার্তা বলছেন।
গাদা ফুলের পাপড়ি দিয়ে বড় বড় দুইটা ডালা পূর্ণ করে ঘড়ির দিকে তাকালাম। পাচঁটা বেজে দশমিনিট। ওরে কপাল! আমি শেষ! গোসল করবো কখন! কাপড়চোপড় পড়ে সাজবো কখন! ধ্যাৎ! বিছানার উপর রাখা দুটো শপিংব্যাগ থেকে আমারটা নিলাম। ব্যাগ থেকে কাপড় বের করে দেখি নেভি ব্লু রঙের লং রাউন্ড ড্রেস। পায়জামা ওড়না, কালো। ড্রেসটা অনেক বেশি সুন্দর!! সন্ধ্যার অনুষ্ঠানের জন্য পার্ফেক্ট! আমি ড্রেসটা হাতে নিয়ে নাড়াচাড়া করতে থাকলে হঠাৎ ভেতর থেকে সিটকিনি আটকে দেওয়ার শব্দ পাই। আমি ড্রেস হাতে মাথা ঘুরিয়ে পেছনে তাকাতেই কেউ আমার মুখ চেপে ধরলো! আমি চোখ খিচে ড্রেস ফেলে দিলে সে আমাকে সজোরে পেছনের দিকে ধাক্কা মেরে দেয়ালের সাথে এটে ধরলো। আমি মুখ দিয়ে চিৎকার করলেও সেই শব্দ রুমের বাইরে একবিন্দু পৌছাবে না। সে আমার হাত দেয়ালে চেপে আরেকহাত দিয়ে মুখ চেপে ধরে আছে। আমি চোখ খুলতে নিলে হুট করে আমার হাত ছেড়ে চোখ ধরে নেয় সে। কানের কাছে ওই একই আওয়াজ! ওই ঘ্যাটঘ্যাট গলা! সেদিনের স্বরটা !! সে কঠোর গলায় বলে উঠে,
— তুমি আবার ভুল করে ফেলেছো প্রিয়তমা! তুমি কি ভুল করেছো নিজেও জানো না! তুমি সাদের কাছ থেকে দূরে থাকো প্লিজ। তোমার জন্য মঙ্গল। ওই সাদ তোমার যোগ্য না প্রিয়সী। সাদ একটা গরীব পরিবারের ছেলে। ওর কোনো যশ, অর্থ, বিত্ত, সামাজিক মর্যাদা কিচ্ছুই নেই। সে গরীব! ওর মতো ছেলের দিকে তুমি তাকাও কেনো? আমি জানি তুমি ওর প্রতি একটু-আধটু উইক ফিল করো! কিন্তু কাউকে কিছু বুঝতে দাও না। প্লিজ ওর মতো লো ক্লাস ছেলের দিকে তাকানো বন্ধ করো!
চোখে পূর্বের মতো কাপড় বেধেঁ দিয়ে হাত ছেড়ে দিলো সে। আমি চোখ থেকে হুড়মুড় করে কাপড় সরাতেই দেখি রুম খালি। কেউ নেই। রুমের দরজা খোলা। তার মানে দরজা দিয়ে বেরিয়েছে!! আমি একদৌড়ে রুমের বাইরে গিয়ে দেখি সাদ ভাইয়া ড্রয়িং রুমে খাতা হাতে কলম নিয়ে হাসি ঠোঁটে নাইমা আপুর কথা লিস্ট করছেন। সাদ ভাইয়াকে দেখে মনে প্রশ্ন ঝেকে বসে আমার। তবে সাদ ভাইয়া কি রুমে এসে আবার আমাকে হুমকির মুখোমুখি করলেন? উহু! কেউ নিজেকে নিয়ে গরীব সম্বোধন করবেনা! সাদ ভাইয়া বড়লোক নয় সবাই জানি! উনি মধ্যবিত্ত, বাবা ছাড়া ফ্যামিলি থেকে বিলং করে। আহামরি কোনো স্টার্ডম না থাকলেও সাদ ভাইয়া দেখতে হ্যান্ডসাম ক্যাটাগরির এ্যাট্রেক্টেড পার্সন..এটা যে কেউ মানতে বাধ্য! কিন্তু রুমে আসলো কে?
#বিদ্র: ছোট পার্ট দেওয়ার জন্য দুঃখিত💔