অনুভব
৯ম পর্ব(সমাপ্তি)
মারিয়া আফরিন নুপুর
সকাল বেলা পাখির কিচির মিচিরের সাথে যোগ হয়েছে কলিংবেলের খাপ ছাড়া শব্দ। একটানা অনেকক্ষন বেজেই যাচ্ছে কলিংবেল, মেহুল এবার বিরক্ত হলো জব্বার কাকা গেল কই? চোখ ডলতে ডলতে উঠে বসে বিছানা থেকে নেমেই বেশ আশ্চর্য হয়ে গেলো ও। এখন বলতে গেলে কাক ডাকা ভোর যাকে বলে, চারদিকে সবে সূর্যের কোমল আলো এসে ছুঁয়ে যাচ্ছে। কোমল মোলায়েম একটা আলোর ছাটা এসে পড়েছে মেহুলের বারান্দায়। কয়েকটা চড়ুই পাখি যেন নিজেদের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে কিচিরমিচির করে আলোচনা করেই যাচ্ছে। কিন্তু কয়েকটা কাক হয়ত আলোচনা না করে তুমুল স্বরে ঝগড়া করেই যাচ্ছে। এসবের দিকে মনোযোগ কাটিয়ে মেহুল আবার চলল দরজার দিকে, দরজা খুলে দিতেই বন্যার পানির মতন যেন হু হু করে ঘরে ঢুকতে লাগল, হাসনাহেনা বানু, লিপি বেগম, বেনু শায়লা, সোহেলী আর অর্ণব। মেহুল যেন এই হঠাৎ আগমনে বিশাল এক ধাক্কা খেল। ও আরো অবাক হল যখন দেখলো হাসান সাহেব সবার পেছনে কাঁচুমাচু করে রুমে ঢুকলো। স্লিভলেস মেরুন টিশার্ট আর পিংক শর্ট পরা মেহুলের সাথে সবার আগে কথা বলল হাসনাহেনা বানু,
___ ” কি ব্যাপার নাত বউ তুমি অর্ণবের কাপড় পরে আছো কেন? নাতি কি তোমার জামা কাপড় পরে আর তুমি ওর?”
হাসনাহেনা বানুর কথা শুনে এবার বেশ লজ্জা পেলো মেহুল। তাড়াতাড়ি লিপি বেগম প্রসঙ্গ পাল্টানোর জন্য বললেন,
___ ” মেহুল এই কয়েকদিনে কি পরিমাণ শুকিয়ে গেছো মা বলো তো। এবার আর কোন টেনশন নেই আমি এসে গেছি রান্নাবান্না সব দ্বায়িত্ব আমার।”
___ ” আচ্ছা বউ মা তুমি কেমনই জানি, এই মাত্র এলাম সবাই আর এসেই তুমি কান্নাকাটির দ্বায়িত্ব নিয়ে নিলে!”
হাসনাহেনা বানু বিরক্তির স্বরে বলল লিপি বেগমকে। হাসান সাহেব খুব কষ্ট করে হাসি আটকালেন নিজের, অন্য সবাই হাসনাহেনা বানুর এই স্বভাবের সাথে অভ্যস্ত হলেও উনার অভ্যাস হয় নি। লিপি বেগম দাঁতে দাঁত পিষেই বললেন,
___ ” যার এত গুনী একজন শাশুড়ী আছে, তার তো কান্নাকাটি করাই স্বাভাবিক “।
লিপি আর হাসনাহেনা বানুর এই বাকবিতন্ডের মধ্যে মেহুল আড় চোখে তাকালো অর্ণবের দিকে। অপলক চোখে তাকিয়ে আছে অর্ণব ওর দিকে, মেহুলের মনে হল গত তিনদিনে অর্ণব যেন শুকিয়ে গেছে অনেক। দাঁড়ি চুল বড় হয়েছে আরো, চোখ কোটরাগত হয়েছে, মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে বিশাল ঝড় বয়ে গেছে ওর উপর দিয়ে। মেহুলের হঠাৎ মনে হলো, আচ্ছা অর্ণব কি ওর ভালবাসার জন্য এমন করেছে, নাকি সমাজ ফ্যামিলি সবাই কি বলবে সে জন্য মেহুলের কাছে এসেছে। এবার ও নজর ঘুরিয়ে হাসান সাহেবের দিকে তাকালো, চেহারায় বিশাল এক আনন্দের ছটা। সোহেলি, শায়লা খুব আনন্দে ছুটে বেড়াচ্ছে চারিপাশ বাসা যেন বাজারের মতন হয়ে যাচ্ছে। মেহুল আস্তে করে বলল,
___ ” বাবা তুমি একটু আসবে আমার সাথে?”
___ ” অর্ণবকেও নিয়ে আসি সাথে?”
ভয়ার্ত এক ঢোঁক গিলে বলল হাসান সাহেব। মেহুল কিছু না বলেই চলল ওর রুমের দিকে। অর্ণবকে ফিসফিসিয়ে উনি বললেন,
___ ” বাবারে বুড়ো বয়সে মেয়ের ঝাড়ি হার্টে কুলাবে না হয়ত। তুমি যেয়ে একটু দেখো না সামলাতে পারো কি না!'”
অর্ণব মনে মনে বলল,” বাহ বেশ ভালই তো বাঘের গুহাতে আগে আমারে ঠেলে দেওয়ার বুদ্ধি। যাতে ঝড় বন্যা যা যায় আমার উপর দিয়ে যাক”।
___ ” চলেন বাবা আমি আর আপনি এক সাথেই যাই।”
অর্ণব উঠে দাঁড়িয়ে বলল হাসান সাহেবকে। হাসনাহেনা বানু শান্ত চোখে অর্ণবকে বললেন,
___ ” শোন বউ কিন্তু তোর মানানো বুঝানো যা ইচ্ছা হয় কর কিন্তু আমার নাতবউ আমি আমার বাড়িতে চাই। তাও কালকের মধ্যেই।”
লিপি বেগমও সাথে সায় দিল। অর্ণব হাসান সাহেবকে রেখেই চলল মেহুলের রুমে। দুই বার টোকা দেওয়ার পরে মেহুল ভেতরে ঢুকতে বলতেই, অর্ণব রুমে ঢুকে আগে দরজা লক করে দিল। গত তিনদিনের ঝাক্কির পরে এখন খুব রিলাক্স লাগছে ওর কাছে৷ মেহুল ভেবেছিল ওর বাবা এসেছে কিন্তু অর্ণবকে দেখেই একাধারে অসস্তি আর ভাল লাগা কাজ করতে লাগল। অর্ণব দৃঢ় পায়ে আগাতে লাগলো মেহুলের দিকে আর ধীর পায়ে মেহুল পিছাতে লাগল পেছনের দিকে। দেওয়ালের সাথে পিঠ ঠেকে যাওয়ার পরে ও চুপ করে দাঁড়িয়ে রইল। অর্ণব মেহুলের দুই পাশ দিয়ে দুই হাত দেওয়ালে রেখে মেহুলের একদম সামনে যেয়ে দাঁড়ালো। মেহুল টের পেলো উত্তপ্ত নিঃশ্বাসের এক ধারা বয়ে চলছে ওর কপাল ললাট চিরে। বেশ খানিক্ষন কেটে গেল সেই অসহ্যকর নিরবতার মাঝে। বাইরের রোদের তাপও বেশ বেড়েছে, সূর্য তার তপ্ত আলোকছটা দিয়ে যেন বলতে চাইছে আজকে দিন তার উত্তপ্ত রুপ দেখতে যাচ্ছে। চড়ুই গুলোও যেন চুপটি করে বসে আছে কি হবে সেটা দেখতে।
___ ” আমাকে একা ফেলে চলে এসেছিলে কেন?”
সমস্ত নিরবতাকে ঠুনকো কাঁচের মতন ভেঙ্গে প্রশ্ন করল অর্ণব। মেহুল এবার যেন আরো জমে গেল। মনে মনে একেক বার এক উত্তর সাজিয়ে আবার বাদ করে দিতে লাগল। অর্ণব এবার আরো একটু শক্ত করে বলল,
___ ” আমি কিন্তু একটা প্রশ্ন করেছি মেহুল।”
___ ” এক ঘরে একটা মানুষই থাকতে পারে, আমি তো অন্যজনের জায়গা দখল করতে গিয়েছিলাম”।
ধরা গলায় বলে উঠলো মেহুল৷ অর্ণব এবার চাপা নিঃশ্বাস টুকু ছেড়ে দিল৷ যা ভেবেছিল তাই হয়েছে।
___ ” জানো সবসময় চোখের দেখাটুকুই সত্যি হয় না। কখনও কখনও চোখও আমাদের ধোঁকা দেয়।”
___ ” এত স্পষ্ট সব দেখার পরেও যদি চোখ ধোঁকা দেয় তাহলে চোখের প্রয়োজনই তো ছিল না।”
___ ” মেয়েরা নাকি ভালবাসা অনুভব করতে পারে চোখ বন্ধ করে, আর দেখা দৃষ্টিতে তুমিও মনে হয় মেয়ে! তাহলে আমাকে অনুভব করতে পারো নি”।
মেহুল এবার রাগে ক্ষোভে অর্ণবের টিশার্টের কলার টেনে ওকে আরো কাছে নিয়ে বলল,
___ ” আপনি ভালবাসা অনুভবের কথা বলছেন? ভালবাসা অনুভব করার জন্যই বিয়ের রাতে স্ত্রীর অধিকার চাই নি, এতটা কাছে থাকার পরেও আপনার হাত ধরি নি। কিন্তু মেজর সাহেব আপনার ভালবাসা যে অন্যকারো কাছে। আমার জন্য আপনার কাছে কোন সময়ই নেই। ”
এবার অর্ণব মেহুলের কোমর জড়িয়ে ধরে মেহুলে আরো কাছে টেনে নিয়ে এসে দুহাতে ওকে শূন্যে তুলে নিয়ে ওর মুখের কাছে মুখ এগিয়ে নিয়ে এলো। দুজনের মধ্যে ব্যবধান তখন শুধু দুই ইঞ্চির। অর্ণব এবার ফিসফিস করে কিন্ত শক্ত কন্ঠে বলল,
___ ” সবাই এট্রোভাট হয় না মেহুল অনেকেই ইন্ট্রোভাটও হয়। ভালবাসি মুখে বলার চেয়ে বুঝিয়ে দেওয়াটা অনেক শক্ত কাজ মেহুল। সেদিন গনেশ টকের ঘটনাটা একটা এক্সিডেন্ট মাত্র। একটা বার আমাকে প্রশ্ন করতে পারতে যে মেয়েটা কে ছিল। এমন করে তুমি চলে এলে অন্যদেশে আমাকে ফেলে। তুমি জানো আমি কতটুকু চিন্তিত ছিলাম।”
___ ” আচ্ছা বলেন মেয়েটা কে? যে মেয়ে এক দেশ থেকে অন্যদেশে যায় শুধু আপনাক জড়িয়ে ধরার জন্য। কে সেই মেয়ে যার ছবি আপনার বিয়ের পরেও আপনার কাবার্ডে সযত্নে তোলা থাকে। উত্তর দেন মেজর সাহেব। আমি চাই না কারো ভালোবাসার মাঝে আসতে তাই সেচ্ছায় জায়গা ছেড়ে দিয়ে চলে এসেছি।”
___ ” হয়েছে তোমার ভাষন দেওয়া? ওর নাম ঝিলমিল ছিল, যে অনেক আগেই গত হয়ে গিয়েছিল আমার জীবন থেকে। যার কোন অস্বস্তিই নেই আমার জীবনে। তাকে শুধুই ঘৃণা করি আমি। আর হ্যাঁ ভাল যদি নাই বা বাসতাম তাহলে কুকুরের মতন ছুটে আসতাম না তোমার পিছে পিছে। গ্যাংটকে বসেই আয়েশ করতাম। কালকে সারাদিন মা দিদুন এদের বুঝিয়েছি। জানো মেহুল ওরা আমার চেয়ে এখন বেশি ভালোবাসে তোমাকে৷ তোমার কথা শুনে সোজা চলে এসেছে এখানে থাকতে। এখন বাকি টুকু তোমার উপরে। জোর করে সব পাওয়া গেলেও মন পাওয়া যায় না। আমি তোমার ওই মনটাকেই পেতে চাই।”
মেহুল চুপ করে দাঁড়িয়ে রইল। কি বলবে সেই ভাষাটাই যেন হঠাৎ হারিয়ে ফেলেছে ও। অর্ণব আবারও কিছুক্ষন চুপ করে থেকে বলল,
___ ” তোমার নিরবতাই বলে দিচ্ছে তোমার মনের কথা। ভালো থেকো মেহুল অন্তত নিজের মনকে বোঝাতে পারো আমি চেষ্টা করেছিল্যম তোমাকে পাওয়ার জন্য, বাট I m failed.”
অর্ণব সবাইকে নিয়ে চলে গেল ওদের বাসায়। কিন্তু তখনও মেহুল আসলো না। লিপি বেগম অসহায় হয়ে অর্ণবকে বোঝানোর ট্রাই করল কিন্তু অর্ণব বেশ শক্ত হয়েই রইল। হাসান সাহেব যখন মেয়ের ঘরে আসলে তখন সবাই চলে গেছে অলরেডি, মেয়েকে কিছু বলার আগেই , মেহুল হাত উঁচু করে থামিয়ে দিল। চুপ করে সব ঘটনার নিরব সাক্ষী হয়ে রইল জব্বার।
প্রায় মাস খানেক পরে অর্ণবের কাছে কল এলো লিপি বেগমের। ফোনটা দেখেই চোখ কুঁচকে উঠলো অর্ণবের। ওই দিনের ঘটনার পরেই ও চলে এসেছিল রংপুর ক্যান্টমেন্ট এ। খুব প্রয়োজন ছাড়া কারো কল রিসিভ করেনি, তাই বাসা থেকেও ফোন আসা অনেকটাই কমে গিয়েছে। সারাদিন ডিউটির পরে রাত হলেই মেহুলের সেই মুখটা চোখে ভাসে অর্ণবের। ও ভেবেছিল মেহুল হয়ত কল করবে, কিন্তু দিন গিয়েছে আর আশা ফিকে হতে হতে এখন মলিন হয়ে গিয়েছে। ফোন রিসিভ করে কানে রাখতেই অর্ণবের কানে এলো সোহেলির কান্না মাখা কণ্ঠ,
___ ” ভাইয়া তাড়াতাড়ি বাসায় এসো নানুমনি খুব অসুস্থ তাড়াতাড়ি চলে এসো তুমি”।
___ ” কি হয়েছে দিদুনের?”
আতংকিত হয়ে প্রশ্ন করল ও।
___ ” ভাইয়া এত কিছু তো বলতে পারি না ডাক্তার বলল অবস্থা ভালো না তুমি তাড়াতাড়ি এসো।”
___ ” আম্মু কই রে?”
___ ” মামিমা নানুমনির কাছে৷ আমি রাখছি তুমি তাড়াতাড়ি চলে এসো।”
এই সংবাদ পাওয়ার পরে অর্ণব যতদ্রুত সম্ভব ঢাকা চলে আসার ট্রাই করেছে তারপরও প্রায় রাত সাড়ে নয়টায় পৌঁছালো বাসায়। এক ছুটে চলল হাসনাহেনা বানুর রুমে যেয়ে দেখে বিছানায় বসে খুব মনোযোগ দিয়ে উনি প্লেট ভরে বিরিয়ানি খাচ্ছেন আর টিভিতে টম এন্ড জেরি কার্টুন দেখছেন। সাথে লিপিও আছে হাতে কাঁথা নিয়ে সেলাই করে যাচ্ছেন শাশুড়ীর পাশে বসে। অর্ণব অবাক হয়ে ওদের সামনে যেয়ে দাঁড়াতেই দুজনেই চমকে উঠলো।
___ ” দিদুন তুমি না অসুস্থ? এই তার নমুনা?”
রাগি স্বরে প্রশ্ন করলো ও। লিপি বেগম হা হা করে উঠে বললেন,
___ ” আম্মা কেন আপনি উঠেছেন শুয়ে পড়েন তাড়াতাড়ি। আহাহা কত অসুস্থ আপনি।”
মুখ ভরা বিরিয়ানি নিয়ে গ গ করে কিছু বলতে চেয়েও থেমে গেলেন হাসনাহেনা বানু। অর্ণব এবার ওর মায়ের দিকে তাকিয়ে বলল,
___ ” থাক আম্মু তোমার আর শাক দিয়ে মাছ ঢাকতে হবে না। রংপুর থেকে দৌড়াতে দৌড়াতে এসেছি।আর এসে দেখি আর এই পালা। বাচ্চারাও তো এমন করে না। ”
___ ” ওই পট পট করা থামা মাসের উপরে হয়ে গেল বাড়ি ঘর তালাক দিয়ে বসে আছিস। একটা মেয়েই তোর কাছে সব আর আমরা তো ধৈনচা তাই না?”
মুখের বিরিয়ানি টুকু কোঁত করে গিলে ফেলে ঝাড়ি দিয়ে বলল হাসনাহেনা বানু৷ লিপি বেগম শান্ত স্বরে বললেন,
___” যা যেয়ে ফ্রেশ হয়ে নে।”
গজগজ করতে করতে রুমে ঢুকেই যেন হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে পড়লো অর্ণব। সারাঘর ঠিক ওর আর মেহুলের বাসর রাতের মতন সাজানো ফুল আর লাইট দিয়ে। আর এমন সময় রিনঝিন শব্দ তুলে এগিয়ে আসল স্বয়ং মেহুল । ঠিক বিয়ের দিনের মতন বেনারসি আর এক গাঁ ভর্তি গয়না নিয়ে ওর সামনে দাঁড়ালো। অর্ণবের মনে হলো এযেন সব স্বপ্ন ধরতে গেলেই সব স্বপ্নটুকু ভেঙ্গে যাবে
___” আচ্ছা আপনার একটা টিশার্ট দেবেন প্লীজ আমি না টিশার্ট ছাড়া ঘুমাতে পারি না।”
মেহুল গড়গড় করে বলে উঠলো। অর্ণব এবার হাসলো ও স্বপ্নই দেখছে ও। আকুল স্বরে ও বলে উঠলো,
___ ” এই স্বপ্নটা যদি সত্যিই হতো।”
___ ” এরে ওই এতক্ষন এক গাঁদা গয়না পরে বসে ট্রায়েল দিচ্ছি আর উনি বলে এ না স্বপ্ন?”
এই বলেই মেহুল জোরে এক চিমটি দিল অর্ণবের পেটে। আউউক করে পেট ডলতে ডলতে অর্ণব যেন হাঁ হয়ে রইল। মেহুল ফিরে এসেছে, সত্যিই মেহুল ফিরে এসেছে৷ কিন্তু পরোক্ষনেই ভাবলো কিন্তু কিভাবে। মেহুল ততক্ষনে আঁছড়ে পড়লো অর্ণবের বুকে। অদ্ভুত এক শীতল পরশ যেন বয়ে গেল ওর মনের মাঝে। মেহুল শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলল,
___ ” ভালবাসি অনেক অনেক, কিন্তু আপনি তো একটুও ভালবাসেন না আমারে। একটা ফোন দিয়ে তো জিজ্ঞেস করতে পারতেন বেঁচে আছি না মরে গেছি।”
___ ” অভিমান করেছিলাম রে পাগলী। তোমাকে ছাড়া যে আমিও ভালো ছিলাম না.।”
আরো জোরে শক্ত করে ধরল অর্ণব। কাঁধের ব্যাগ ফ্লোরে ফেলে আড় কোলে ও তুলে নিল মেহুল কে। গলা জড়িয়ে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল ও।
___ ” সেদিন তো চিৎকার করে বলেছিলে বউয়ের অধিকার দেই নি। এখন ডিটেইলসে বল তো বউয়ের অধিকার কি কি”।
অর্ণবের কন্ঠে দুষ্টমির ছোঁয়া। মেহুল চোখ বন্ধ করে অর্ণবের ঠোঁটে ঠোঁট লাগিয়ে বলল,
___ ” এই হল ভালবাসার অনুভব।”
সমাপ্তি
মারিয়া আফরিন নুপুর
Wow…. very nice…