#গল্প: অনুভূতি
#লেখা: আদনান তাওসিফ
[পর্ব:০২ ]
আমি দরজা খুলতে যাবো ঠিক তখন ই আদনান এক টান দেই আমি আদনান এর বুকে মিশে যাই।ঠিক তখন ই আদনান আমার চুল গুলো সরিয়ে গলায় কিস করে আর একটা ডাইমন্ড এর হার আমার গলায় পড়িয়ে দেই।
আদনান এর বুকে শান্তি অনুভব করলাম কেনো জানি আমি কিছু বললাম না শুধু যা হচ্ছিল চেয়ে চেয়ে দেখলাম আর লজ্জায় শেষ।একটা অচেনা অজানা মানুষের মাতাল করা এক স্পর্শ আমাকে পাগল করে দিলো।মনের মধ্যে তোলপাড় শুরু হয়ে গেলো না জানি এখন কি হবে আমার সব এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে একজনের স্পর্শে ।আদনান আমার খুব কাছে একদম কাছে ওর শিতল নিঃশ্বাস আমার গায়ে লাগছে আমি অনুভব করতে পারছি।আদনান আমার ঠোটের খুব কাছে ঠিক তখন ই ওর ফোনটা বেজে ওঠে ওর সাথে আমিও একটু চমকে উঠি,,,,।
স স সরি(আদনান তার থেকে আমাকে ছাড়িয়ে বলল)।
আমি নিশ্চুপ হয়ে দাঁড়িয়ে আছি কি বলবো ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না মনের মধ্যে কেমন জানি ঝড় বয়ে গেলো।
আচ্ছা আপনার এই হারটা পছন্দ হয়েছে তো আসলে এটা আমি আপনার জন্য লন্ডন থেকে নিয়ে এসেছি। জানি না পছন্দ হয়েছে কিনা আসলে মেয়েদের কি পছন্দ এগুলো সম্পর্কে আমার তেমন কোনো ধারনা নেই তারপর ও এই হারটা আমার কেনো জানি পছন্দ হলো ভাবলাম আপনাকে মানাবে সুন্দর লাগবে তবু যদি আপনার পছন্দ না হয় তো পড়ার দরকার নেই আমি জোর করবো না কখনো।
আমি মাথা নিচু করে বললাম আমার পছন্দ হয়েছে খুব পছন্দ।আর আপনার পছন্দ আমার পছন্দ তাই কখনো আর এমন কথা বলবেন না।আমি কথাটা বলে দরজার বাহিরে আসলাম আদনান আমার পিছন পিছন আসলো।দুজন দাঁড়িয়ে আছি।
আচ্ছা আমি কি আপনাকে বাসায় রেখে আসবো নাকি আপনি একাই চলে যাবেন।আসলে আমার একটু দরকারি কাজ পরে গেছে।
আপনাকে যেতে হবে না আমি একাই চলে যেতে পারবো।এই বলে আমি লিফট এ উঠে হোটেলের নিচে নেমে গাড়িতে বসলাম।তারপর বাসায় গিয়ে ফ্রেশ হলাম ।সব কিছু এলোমেলো লাগছে ।জানি না কেনো।
দেখতে দেখতে বিয়ের দিন চলে আসলো।আমার বিয়ে নিয়ে যে টুকু ভয় ছিলো তা আর নেই আমি এই কয়দিনে বুঝে গেছি আদনান অনেক ভালো ছেলে আমাকে সুখেই রাখবে।আদনান বিয়ের পর ই আমাকে লন্ডনে নিয়ে যাবে যার কারনে বিয়েটা একটু তারাতাড়ি হচ্ছে।আমার বিয়েতে আপু আসতে পারে নি তাই আমার মনটা ভিষন খারাপ।সবাই মিলে আমাকে সাজিয়ে রেখে গেছে বরের কাছে আমিও বসে আছি।
কবুল বলার সময় আমার মাথাই যত রকম চিন্তা ভবনা ভর করলো বারবার ভাবলাম আচ্ছা আমি কি ভুল করছি নাকি ঠিক বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে। যত রকম চিন্তা ভাবনা মাথা থেকে ফেলে দিয়ে কবুল বললাম ।মা বাবাকে বিদায় জানিয়ে আদনান এর সাথে তার বাড়ি উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।বাবা মার জন্য অনেক কষ্ট হচ্ছে এই প্রথম তাদের ছেড়ে আমি অন্য কোথাও যাচ্ছি।খুব বেশি সময় লাগলো না আদনান দের বাড়িতে যেতে।আদনান এর কেউ নেই ছোট তেই তার বাবা মা মারা যাই এখন সে একাই অনেক কষ্ট করে লন্ডনে বিজনেস করেছে পারমানেন্ট ওখানেই থাকে।
আমি রুমে বসে আছি ঠিক তখন ই আদনান রুমে দরজা বন্ধ করে দিলো। আমার কাছে আসছে।।
আদনান আমার চুলের মুঠি ধরে বলল,,,এই তোর সাহস কত হ্যা তুই আমার রুমে আমার বেডে বসে আছিস।
আমি কিছূ বলার সুযোগ পেলাম না আমার গলা খুব জোরে চিপে ধরে আছে ।আমার দম বন্ধ হয়ে আসছে ছাড়ানোর অনেক চেষ্টা করছি কিন্তু পারলাম না।আদনান আমাকে ছেড়ে দিলো। আমি হতভাগ হয়ে গেলাম এইটা কি সেই আদনান যে বিয়ের আগে আমাকে ভালোবাসার কথাগুলো বলেছিলো। তাহলে হঠাৎ এখন কি হলো আমার কি দোষ আমি কি করলাম হঠাৎ এমন পাগলামী করছে কেনো।
এই শোন তোকে বিয়ে করেছি আদর করে তুলে রাখার জন্য না তোকে বিয়ে করেছি তোর জীবনটা আমি জ্বালিয়ে পুড়িয়ে শেষ করে দেওয়ার জন্য।তোকে আমি ভালো থাকতে দিবো না শান্তি দিবো না কখনো।তোর জীবনটা নরক করে তুলবো বুঝলি তুই।
আদনান আমার দিকে কামানের দৃষ্টিতে তাকিয়ে কথাগুলো বলল চোখ দিয়ে আগুন বের হচ্ছে।এতটা রাগ কারো মনের মধ্যে থাকতে পারে।
আদনান সিগারেট লাগিয়ে আমাকে দেয়ালের সাথে চেপে ধরে বলতে লাগলো,,,,,তোর সাথে রোমান্স করার জন্য তোকে বিয়ে করিনি ।কাল আমরা লন্ডনে চলে যাবো হ্য তুই কাউকে এগুলো বলবি না তাহলে কিন্তু তোর মা বাবা জীবন,,,বুঝলি তো আমি কি বললাম।একদম চালাকি করার চেষ্টা করিস না বললাম।
আদনান কথাগুলো বলে রুম থেকে চলে গেলো আমার চোখ বেয়ে পানি পড়ছে ।এটা কি হয়ে গেলো আদনান এমন কেনো করলো আমি কি করেছি কাল এমন একজনের সাথে আমি দেশের বাহিরে বাবা মাকে ছেড়ে চলে যাবো,,,,না গেলেও ও বাবা মাকে বাঁচতে দিবে না।জীবনে কখনো আমি এত মার খাই নি জানি না কেনো আদনান এমন করলো।আমার দোষটা কি। কান্নায় মেঝেতে লুটিয়ে পড়লাম পরেরদিন সকালে কারো লাথির আঘাতে ঘুম ভাঙ্গলো।চোখ মেলে দেখি আদনান রাখি মুখ করে আমার দিকে তাকিয়ে,,,,।
এই তোর ঘুম হয়নি গতকাল রাতে তো বলেছিলাম আজকে চলে যাবো আসলে এতক্ষণ পরে পরে ঘুমাচ্ছিস উঠেক বলছি আর এক মিনিট লেট হলে এর শাস্তি পেতে হবে।আমি আর কথা বললাম না কি বা বলবো আর কাকেই বা বলবো ।
আমি ওয়াশরূম থেকে বেড়িয়ে এসে দেখি উনি তৈরি হয়েছেন।আমিও আর দেরি করলাম না তৈরি হলাম।আদনান আমাকে আমাদের বাড়িতে নিয়ে গেলো বাবা মা থেকে দুজন বিদায় নিলাম খুব কান্না পাচ্ছিল তবু করার কিছুই ছিলো না আমার আমাকে আদনান বার বার হুমকি দিচ্ছিল যেনো আমি না বলি যদি কিছু বলে দেই তাহলে বাবা মার ক্ষতি করবে,,।
আমরা লন্ডনে চলে আসলাম এমন একজনের সাথে যে আমাকে মেরে ফেলতে চাই।আমাকে সহ্য করতে পারে না কেনো জানি না। রাত অনেক হয়েছে এখনো আদনান বাসায় ফিরছে না একটা অচেনা অজানা জায়গায় আমি একা এত রাত হলো,,,। কিছুক্ষণ পর কলিং বেল এর শব্দ আমি গিয়ে দরজা খুলতেই দেখি আদনান নেশাগ্রস্ত অবস্থায় দাঁড়িয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে,,,,,,,,,,,,,
#চলবে
।