#রিপোস্ট
#অন্তরালের_কথা
লেখা – জান্নাতুল ফেরদৌস মাটি
পর্ব – ৪৯
.
.
” ও, তোমাকে তো বলা হয়নি। আসলে কাল নিদ্রার সাত মাস পূর্ণ হবে। তাই মা ঠিক করেছে কাল নিদ্রার সাধ করবে। আর ঠিক এই জন্যই তোমাকে নিয়ে এসেছি। ”
” ও, বেশ ভালোতো। তাহলে তো নিদ্রার জন্য কিছু গিফট কিনতে মার্কেটে যেতে হয়। ”
” হুম, সেতো যাবেই। তার আগে আমায় কিছুক্ষণ এভাবে তোমায় জড়িয়ে ধরে থাকতে দাও। যাতে হারিয়ে যাওয়া শান্তি গুলো পুনঃরায় ফিরে পাই। ”
অতল মুচকি হেসে তানহার কপালে চুমু খেয়ে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে চোখ বুজে তানহার মাতাল করা চুলের ভাজে নাক ডুবিয়ে গন্ধ শুকতে আরম্ভ করল।
.
ভেজা চুল ছেড়ে জানালার গ্রিল ধরে বসে আছে নিদ্রা। মনটা আজ বড্ড খারাপ। কাল তার জীবনে এতো গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন সেখানে কি-না তিহান থাকবে না, ভাবতেই গলাটা ধরে আসছে নিদ্রার। তারপরও বিছানা থেকে নেমে আলমারি খুলে ছবির এলবাম বের করতে নিল নিদ্রা। ঠিক সেসময় চোখে পড়ল কাপড়ের ভাজে থাকা ছয়মাস আগের সেই চিঠিটির উপর। যেটা কি-না তিহানের দেয়া শেষ বার্তা তার জন্য। এ নিয়ে যে কতবার চিঠিটি সে পড়ে চোখের জল ফেলেছে গুনে শেষ করা যাবে না। তারপরও সে বারবার চিঠিটি পড়ে কেবল তিহানের উপস্থিতি অনুভব করতে। আজও ঠিক তাই করল নিদ্রা। ছবির এলবামের সাথে চিঠিটিও হাতে তুলে নিল। আর গিয়ে বসল জানালার পাশে। এলবামটি একপাশে রেখে চিঠিটি খুলল….
.
” চিঠির শুরুতে অনেকেই অনেক কিছু লিখে তবে এই মুহুর্তে সেসবের একটিও লিখার মনমানসিকতা আমার মাঝে নেই। আর না সেই সম্পর্ক আমাদের মাঝে গড়ে ওঠেছে। তাই বিশেষ কোনোকিছু না লিখেই শুরু করলাম।
মানুষের মন আয়না স্বরূপ। আলতো করে মুছে দিলে চকচকে হয় আর, বেশি ঘষাঘষি করলে ঘোলাটে কাঁচে পরিণত হয়। যার জলজ্যান্ত প্রমাণ আমি নিজে। এই ছোট্ট জীবনের মাঝে ক’টা বছরে এত বেশি কষ্ট পেয়েছি যে, নিজের ভেতরের মনুষ্যত্ব বোধটাও হারিয়ে ফেলেছি। তাইতো আজ তোমার চোখে আমি পশুর ন্যায়। আমি একটিবারের জন্যও বলব না যে, ওইদিনের কাজটি আমি অনিচ্ছাকৃত ভাবে করেছিলাম। কেননা আমি কাজটি সজ্ঞানেই করেছিলাম তবে, রাগ বশত ভালোবেসে নয়। চেষ্টা করলে হয়তো আমি পারতাম নিজেকে সংযত রাখতে কিন্তু আমি সেই চেষ্টাই করিনি। একটিবারের জন্য নিজেকে বাঁধা দিইনি ওরকম একটি জঘন্য কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য। তবে বিশ্বাস করো পরবর্তীতে নিজেকে ভীষণ অপরাধী মনে হতো। আয়নার সামনে দাঁড়ালেই মনে হতো এ যেন আমি না, এ এক ধর্ষক। যে কি-না স্ত্রী নামক বন্ধুর থেকে বেহিসাবি ভালোবাসা পাওয়া সত্ত্বেও কিছু না পাওয়া অতীতের জন্য সেই স্ত্রীকে ঘুমন্ত অবস্থায় সীমাহীন কষ্টে জর্জরিত করেছে।
বিশ্বাস করো নিদ্রা সেদিনের পর তোমার সাথে থাকা ওই একটি মাস যেন আমার কাছে একটি যুগের ন্যায় ছিল। তোমার চোখের দিকে তাকাতে পারতাম না, তোমার আশেপাশে থাকার ইচ্ছাটাও মরে গিয়েছিল অপরাধ বোধের জন্য। তারপরও ছিলাম একপ্রকার বাধ্য হয়ে একসাথে, একরুমে। লোকলজ্জার ভয়ে। ভেবেছিলাম হয়তো কোনো একদিন সবকিছুই ঠিক হয়ে যাবে সেদিন না-হয় তোমার থেকে ক্ষমা চেয়ে নিব। কিন্তু আমার সেই ভাবনা ধীরে ধীরে ভুল করে দিল তোমার দৈনন্দিন আচার-আচরণে। আর বুঝিয়েও দিয়েছিল আমি তোমার জীবনের অভিশাপ। যে অভিশাপ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য তুমি ছটফট করছিলে। যে অভিশাপকে চোখের সামনে দেখতেও অস্বস্তি বোধে মরে যাচ্ছিলে তুমি। এতকিছু বুঝেও কি করে থাকি বলো তোমার সেই দৃষ্টিকোণ জুড়ে? হয়তো আমি না থাকলেই তোমার জীবন হয়ে উঠবে সুখময়। তাই চললাম অজানা পথের খোঁজে। তারপরও খুব করে চাই তুমি সুখে থাকো, শান্তিতে থাকো, স্বস্তির নিঃশ্বাস নিয়ে বাঁচো। আমিও না-হয় এই বিশ্বাসটুকু নিয়ে বাকি জীবনটা পার করে দিব।
আমি জানি, আমার এ চিঠিতে এমন কিছু লিখা নেই বা আমি লিখিনি যার জন্য তোমার মনে দাগ কাঁটবে। কিংবা আমার জন্য দুফোঁটা চোখের জল গড়িয়ে পড়বে। তারপরও লিখলাম শুধু তোমাকে জানাতে নিজের ভুলের কথা।
আর কিছু খুঁজে পাচ্ছি না লিখার জন্য। তাই এখানেই কলমের কালির প্রয়োজন ফোরালাম। ভালো থেকো নিদ্রা। আর ঠিক আগের মতো সবার ঠোঁটের কোণের হাসির কারণ হয়ে থেকো। না-ই বা আমার ঠোঁটের কোণের হাসির কারণ হলে তাতে কি! আমার পরিবারের মানুষের হাসির কারণ তো হলে, এটাই আমার জন্য অনেক।
ইতি_______________
.
চোখের পানি টপটপ করে পড়ছে নিদ্রার। তারপরও ঝাপসা চোখে তাকিয়ে রয়েছে সেই লেখাগুলোর টানে।
সারাদিনের খাটাখাটুনির পর কেবলই তিহান ঘরে পা রাখলো। জুতো জোড়া খুলে সুজ ক্যাবিনেটে না রেখে দরজার পেছনে এলোমেলো ভাবে রেখে দরজা লক করে চলে গেল ঘরের ভেতর। কোনোমতে ব্যাগটি বিছানার উপর রেখে গলায় ফাঁস লাগানো টাইয়ের বাঁধন লুজ করে শার্টের বোতাম খুলতে খুলতে যেতে লাগল রান্না ঘরে খাবার দাবার সব ঠিক আছে কি না দেখতে। অফিসে যাবার সময় খাবারগুলো ফ্রিজে রাখতে যে ভুলে গিয়েছিল সে।
রান্নাঘরে পা রাখতেই এক বাজে ধরনের দূর্গন্ধ তিহানের নাকে এসে লাগল। তিহান বুঝে ফেলে সবসময়ের মতো আজও তার খাবার পঁচে ফেনা উঠে গিয়েছে। যার ফলে তাকে আর খাবারের গন্ধ নেবার প্রয়োজন পড়বে না। দম আটকে পাতিলের ঢাকনা সরিয়ে কোনোমতে খাবারগুলো পাতিল থেকে পলিথিনে ঢেলে ময়লার ঝুড়িতে ফেলে দিল তিহান।আর এগুলো শোয়ার ঘরের দিকে।
অফিসের কাপড়চোপড় খুলে ফ্রেশ হয়ে টি-শার্ট আর লুঙ্গি পড়ে ওয়াশরুম থেকে বেড়িয়ে এলো তিহান। ওয়াড্রবের উপর থেকে মোবাইলটি হাতে নিয়ে এগুলো বিছানার দিকে। বালিশে হেলান দিয়ে আধশোয়া অবস্থায় মনে মনে ভাবল,
” কতগুলো দিন কেটে গেল বাবা-মা’কে দেখেনি সে। এমনকি কোনো খোঁজখবরও নেয়নি। তারা ভালো আছে কি-না তাও জানে না। আচ্ছা, সেকি একবার কল করে কথা বলে নিবে বাবা-মায়ের সাথে! না না, তাহলে যে ফোন ট্রেক করে সবাই জেনে যাবে সে কোথায় আছে। এই ভুল কিছুতেই করা যাবে না। কিছুতেই না। ”
ভেবেই তিহান মন ঘুরাবার জন্য মোবাইলের লক খুলে ফেসবুকে লগইন করল তিহান। তবে ফেসবুকেও মন টিকাতে পারছে না সে। তার যে ক্ষিধের জ্বালায় পেট চোঁচোঁ করছে। আর পেট ফাঁকা থাকলে যে কিছুই ভালো লাগে না।তারপরও কিছুক্ষণ নিউজফিডে ঘুরাঘুরি করে ডাটা অফ করে রেখে দিল মোবাইল। অবশ্য এটা নতুন কিছু না, বাড়ি ছাড়বার পর থেকে এরকম যন্ত্রণার সম্মুখীন সে বহুবার হয়েছে। কষ্ট হলেও ব্যাপারটা যেন সয়ে গিয়েছে তিহানের। তাইতো এভাবে সটান হয়ে বসে থাকতে পারছে।
তিহান দেয়াল ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে ১১টা বাজতে ৪ মিনিট বাকি। তার ঘুমের সময় হয়ে এলো বলে। বিছানার পাশে থাকা সাইড টেবিলের দিকে একবার চোখ ঘুরিয়ে দেখল পানি ভর্তি গ্লাস রাখা। যেটা সে আজ সকালে রেখেছিল। গ্লাসটি হাতে নিয়ে ডগডগ করে পানি ভর্তি গ্লাসটি মুহুর্তের মাঝে খালি করে দিল। আর বেড সুইজ অফ করে সোজা শুয়ে পড়ল বিছানার এক কোণে।
.
সাধের অনুষ্ঠান বেশ ভালো ভাবে শেষ হলেও মনে শান্তি, স্বস্তি কোনোটিই নেই নিদ্রার। এরকম একটি স্মৃতিময় দিন তার জীবনের মাঝে এলো তবে তিহানের ছায়াও রইলো না সেই স্মৃতি জুড়ে। ভাবতেই বুক ফেটে কান্না আসছে নিদ্রার। তাইতো বেলকনিতে গিয়ে তারা পূর্ণ আকাশ দেখে নিজের কষ্টকে বুঝ দেবার চেষ্টা করছে। এমন সময় পেছন থেকে কারো হাতের স্পর্শ নিজের কাঁধের উপর অনুভব করে নিদ্রা। পেছন ফিরে তাকাতে দেখে তার মা আইরিন বেগম দাঁড়িয়ে। নিদ্রা বলল,
” কি হয়েছে আম্মু? এতো রাতে না ঘুমিয়ে আমার রুমে যে! ”
” কেন, মেয়ের রুমে না বলে কয়ে আসতে পারি না, না-কি? ”
” আমি কি সেই কথা বলেছি ? ”
” না, তা বলিসনি তবে আমি ভাবলাম তুই তো একাই ঘুমোবি। তো আজ রাতটা যখন এখানে আছি তোর সাথেই নাহয় ঘুমাই। ”
” ও ভালো করেছ আম্মু। অনেকদিন তো হয়ে গেল তোমার বুকে ঘুমোনো হয় না, আজ নাহয় ঘুমিয়ে নেব। ”
” এতই যদি ঘুমোতে ইচ্ছে হয় তাহলে বাড়িতে সময় হাতে নিয়ে যাস না কেন? যেদিনই যাস না কেন দুপুরে গিয়ে তো সন্ধ্যায় আসার জন্য তাড়াহুড়ো লাগিয়েই দিস। ”
” এ বাড়িতে থাকাটা অভ্যেস হয়ে গিয়েছে তো তাই আর কি। তুমি বসো আমি এ ভারী কাপড়, গয়নাগাটি খুলে ফ্রেশ হয়ে আসি। তুমিতো জানোই এসব কাতান শাড়ি আমার একেবারেই সহ্য হয় না। ”
বলেই নিদ্রা বেলকনি থেকে ঘরের দিকে মুখ করল যাওয়ার উদ্দেশ্যে। পাশ থেকে আইরিন বেগম বললেন,
” এভাবে আর কতদিন নিদ্রা? ”
এক পা সামনে দিয়েও থমকে গেল নিদ্রা। বলল,
” ঠিক বুঝলাম না তোমার কথা। ”
” তোর মত বয়সের একটি মেয়ে একা একা জীবন পার করবে কতদিন? তোর কি ভবিষ্যৎ নেই? ”
” তো এখন কি করতে বলছ তুমি? ”
” নতুন করে আর কি বলব, যা বলার আছে তা তো আগেই বলেছি। কিন্তু তুই তো সেসবের ধারের কাছে দিয়ে যাচ্ছিস না। বারবার বলেছিলাম এ ভুল করিস না, সময় থাকতে থাকতে সময়ের মূল্যায়ন কর। যার সন্তান সে মুখ ফিরিয়ে নিলে তোর কিসের দায়! প্রথমেই সবকিছু শেষ করে দিয়ে চলে আয় আমাদের কাছে। কিন্তু তুই তো আমার কথা গ্রাহ্যই করলি না। এবার চোখের পানি দিয়ে বুঝে নেয় কেন সেদিন বলেছিলাম। ”
” সে আসবে না কিংবা সে বাচ্চার ভার নিবে না বলে যে, আমি আমার বাচ্চার ভার ঘাড় থেকে ঝেড়ে ফেলে দিব তাতো হয় না আম্মু। আচ্ছা আম্মু, তুমি তোমাকে আমার জায়গায় বসিয়ে দেখতো আমি কি ভুল করছি নাকি সঠিক! তুমি যেমন তোমার বিয়ে দিয়ে দাওয়া সন্তানের ভবিষ্যৎ এর কথা ভেবে তার ভালোর জন্য এসব বলছ, তেমনি আমিও তো আমার অনাগত সন্তানের ভবিষ্যতের কথা ভেবে সবকিছু করছি। তোমার বুঝদার সন্তানের ভালোর জন্য এত দুশ্চিন্তা হলে, আমার অবুঝ সন্তানের জন্য চিন্তা করাটা কি স্বাভাবিক নয়?”
আইরিন বেগম কি বলবে বুঝতে পারছে না। নিদ্রার কথা যে একটিও ফেলনা নয়। তবে নিদ্রাকে ঘিরে তার নিজের চিন্তার বিষয়টাও খুব একটা হালকা নয়।
এদিকে নিদ্রা তার মায়ের কোনো উত্তর না পেয়ে বলল,
” তোমার এখন হয়তো আমার সাথে ঘুমোতে ইচ্ছে হবে না আম্মু। তাই বলছি কি, কী প্রয়োজন এখানে থাকার।শুধু শুধু আরামের ঘুমকে হারাম না করে তুমি গেস্ট রুমে গিয়ে বাবার সাথে ঘুমিয়ে পড়ো। তোমার জন্যও ভালো আর আমার জন্যও। ”
বলেই নিদ্রা চলে গেল ঘরের দিকে। এদিকে আইরিন বেগমও নিদ্রার এরকম কথা শুনে দাঁড়িয়ে থাকতে পারেনি। তাই নিদ্রা বেলকনি ছেড়ে যেতেই সে নিজেও বেলকনি ছেড়ে গেস্ট রুমে যাওয়ার পথ ধরে।
.
দেখতে দেখতে চলে এলো নিদ্রার ডেলিভারির দিনটি। অবশ্য ১০ মাস ১০ দিন হয়নি। কেবলই ১০ মাসে পড়েছে। কিন্তু কেউ কোনো রিস্ক নিতে চায় না। তাই তো ১০ মাস হতেই সিজার করে নিদ্রা ও তার সন্তানকে মুক্ত করতে এসেছে সবাই। নিদ্রা এভাবে মা হতে একেবারেই নারাজ ছিল। সে চেয়েছিল প্রকৃতির নিয়মে মা হওয়ার স্বাদ গ্রহণ করতে। কিন্তু কেউ নিদ্রার সেই চাওয়াকে প্রাধান্য দেয়নি। অবশ্য দেয়নি বললে ভুল হবে দিতে চায়নি। প্রথমত নিদ্রা ছোট আর দ্বিতীয়ত তানহার বুক ভাঙা আর্তনাদের পুনরাবৃত্তি আরও একটিবার নিদ্রার মাঝে ঘটাতে চায় না। তাইতো সবাই নিদ্রাকে ওটিতে ঢুকিয়ে বাহিরে অপেক্ষা করছে।
তবে সবচেয়ে বেশি অপেক্ষা করছে যেন অতল। বাচ্চাটিকে একটিবার বুকে জড়িয়ে ধরার জন্য। নিজের মেয়েকে তো জীবিত অবস্থায় জড়িয়ে ধরে বুক শান্ত করতে পারেনি, এখন যদি ভাইয়ের সন্তানকে জড়িয়ে ধরে সেই উত্তপ্ত বুকে শীতল হাওয়া বিরাজ করাতে পারে সেই আশায়।
অতলের সাথে সাথে সবার অস্থিরতা কাটিয়ে মিনিট চল্লিশেক পর ওটির দরজা খুলে বেড়িয়ে এলো তানহা। আর তার কোলে জুড়ে রয়েছে এখানে উপস্থিত থাকা প্রতিটি মানুষের ভালোবাসা। তাদের ছোট্ট রাজপুত্র। হ্যাঁ, নিদ্রা ও তিহানের ছেলে হয়েছে।
তানহাকে দেখেই অতল দৌড়ে এসে বিসমিল্লাহ বলে নিজের কোলে চেপে নিল তাদের রাজপুত্রকে। কানের কাছে আস্তে করে আযান দিয়ে একে একে নানান সূরা পড়ে ফুঁক দিতে লাগল সমস্ত শরীর জুড়ে রাজপুত্রের।
অতলের এরকম কর্মকাণ্ড দেখে সকলের ভালো লাগলেও খারাপও লাগছে। তবে সবচেয়ে বেশি খারাপ লাগছে যেন তানহার নিজের। তার মেয়ে ফাতেমার কথা মনে পড়ে। তারপরও এতটা সুখের মাঝে নিজেকে ও অতলকে দুঃখের দরিয়াতে ভাসাতে চায় না তানহা। তাইতো সবকিছু ভুলে হাসি মুখ করে বলল,
.
.