#অন্ধপ্রেম
Writer : Shabnaj Hossain Moon
Part_30
রাজ চিকিৎসার জন্য ক্যাবিনে আছে আর শীতল ক্যাবিনের বাহিরে…
শীতলের চোখ টল মল করছে পানিতে…
হঠাৎ ক্লিনিকে খালান,চাচা,আর কাজল এলো…
কাজল শীতলকে জরিয়ে ধরলো….
চাচা ,খালা শীতলের মাথায় হাত দিয়ে দোয়া করলো…
.
.
.
শীতল কান্না করছে আর মনে মনে আল্লাহর কাছে দোয়া করছে যেনো রাজের কিছু না হয় …
রাজ যেনো সুস্থ সবল হয়ে স্বাভাবিক জিবনে ফিরে আসে….
হঠাৎ ডক্টর এলো রাজের ক্যবিন থেকে …
ডক্টর : এখানে শীতল কে ???
শীতল: আমি
ডক্টর : আপনি রোগির কি হন ???
শীতল : জি আমি….
শীতল কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে বললো …
আমি উনার ওয়াইফ মিসেস রাজ….
.
.
.
ডক্টর : আপনি থাকতে উনার এরকম অবস্থা হলো কি করে ???
যত দূর সম্ভব বোঝা যাচ্ছে রোগি নিজেই নিজের এই হাল করেছে …
সম্ভবত পরিবার ,সাংসারিক ঝামেলায় এমন হয়েছে …
আপনাদের মতো কিছু কেয়ারলেস স্ত্রিদের কারণেই স্বামিদের এই অবস্থা …
দেশে মেয়ে প্রধান মন্ত্রি আছে বলে নারী নির্যাতন মামলা আছে …
এজন্যই আজকে আমরা পুরুষরা নিপীরিত ,অবহেলিত ..
পুরুষ নির্যাতন মামলা যে কবে হবে তা কে জানে …
শীতল. এখন একটু জোরে জোরে কান্না করে দিলো…
.
.
.
ডক্টর. : এভাবে কাদাঁর কি হলো …
আপনার স্বামি চিকিৎসা করার সময়ও আপনার নাম নিচ্ছিলো…
এখন যান তাড়াতাড়ি
আপনার স্বামির কাছে …
.
.
.
শীতল ক্যাবিনে ঢুকে রাজকে দেখলো…
রক্তাক্ত দেহটা পড়ে আছে সাদা বেডে…
রাজের জ্ঞান আছে তবুও সে চোখ বন্ধ করে আছে…
শীতলের পায়ের শব্দ শুনেই রাজ তাকালো..
_শীতল তুমি এসেছো ??
এতক্ষন কোথায় ছিলে ???
আমি মনে করেছি তুমি চলে গিয়েছো আমায় ছেড়ে….
প্লিজজজজ এমনটা করোনা ডার্লিং …
আমি মরেই যাবো…
.
.
.
রাজের কথা শেষ হতে না হতেই শীতল রাজের মুখে আঙুল দিলো…
_খবর দার এমন কথা বলবেন না …
_বলবোনা ডার্লিং ..
আগে বলো আমায় ছেড়ে যাবেনা কোথাও..
তুমি ছাড়া আমার আর কেউ নেই যে ..
বাবা মা মারা যাওয়ার পর রোজা আমার প্রথিবী ছিলো…
সেও আমাকে বুঝতে পারলোনা ..
চলে গেলো আমাকে একা ফেলে ….
এখন তুমি আমার আশা ভরসা …
তোমায় আমি জিবনের থেকেও বেশি ভালোবাসি…
আমাকে ছেড়ে যেওনা প্লিজজজজ.
তুমি ছাড়া আমার কেউ নেই….
.
.
.
শীতল চুপ করে আছে …
_কি হলো ডার্লিং ??
কথা বলছোনা কেনো??
_আমি তো চলে যেতে চাইনি …আপনি আমায় বাধ্য করেছেন চলে যেতে….
.
.
.
আপনি আমাকে রেপ করেছেন বিয়ের আগে…
তারপর বিয়ের পরেও ….
একটা মেয়ের জিবনে এর থেকে কষ্টের আর কি হতে পারে …
এর থেকে আমাকে মেরে ফেলতেন তবুও ভালো ছিলো…
রাজ শীতলের মুখে আঙুল দিয়ে বললো…
_প্লিজজজ মারা যাওয়ার কথা বলোনা …
তুমি আমার জিবন…
আমার প্রথিবী রোজা ছিলো তুমি আমার লাইফে আসার আগে…
নিজের কলিজার বোনকে আমি কবরে রেখে এসেছি..
তখন আমি আমার মাঝে ছিলাম না …
তাই আমি প্রতিশোধের কথা ভেবেছি …
আর তোমার সাথে এমন আচরণ করেছি…
আমি তখন ড্রাংক অবস্থায় ছিলাম ..
আমার মাথা কাজ করছিলোনা…
আমার দ্বারা এজন্যই এই জঘন্য কাজটা হয়ে গেছে…
আমি এজন্যই এখন অনুতপ্ত ..
আর বিয়ের পর তোমার উপর আমার অধিকার ছিল…
এজন্যই তোমার উপর অধিকার খাটিয়েছি…
তোমাকে আমি ভালোবাসতাম মনে মনে…
আমার মনের সামনে তুমি ঘোরাঘোরি করতে …
আমার তখন নিজেকে সামলে নিতে কষ্ট হতো…
তোমার স্পর্ষই আমাকে কিছুটা শান্তি দিতো…
তোমাকে না পারছিলাম কাছে টানতে না পারছিলাম দূরে ঠেলে দিতে …
.
.
.
শীতল ভাবছিলো সেই জঘন্য দিনের কথা…
রাজের মুখ থেকে সত্যি সত্যি ড্রিংকের গন্ধ আসছিলো…
তার মানে রাজ নিজের হুশে ছিলোনা …
শীতল আর কিছু ভাবতে পারছিলোনা তার চোখ দিয়ে পানি পড়ছে….
.
.
.
শীতল চোখের পানি মুছে বেেডে তাকাতেই চমকে গিয়েছিলো…
বেডে রাজ নেই..
শীতল হঠাৎ পায়ে কারো স্পর্ষ অনুভব করলো…
শীতল তাকিয়ে দেখলো রাজ তার পায়ে হাত দিয়ে হাটু ঘেরে বসে আছে…
_শীতল আমাকে ক্ষমা করে দাও …
আমি জঘন্য কাজ করেছি তোমার সাথে…
যার ক্ষমা নেই …
তবুও আমায় ক্ষমা করে দাও…
আমি দোষি ,পাপি ,রেপার..
শীতল তাড়াতাড়ি রাজকে উঠানোর চেষ্টা করছিলো…
রাজ কিছুতেই শীতলের পা ছাড়ছেনা …
শীতলও নিচে বসে পড়লো…
_প্লিজজজ চুপ করুন আর এরকম করবেন না ..
আপনি আমার স্বামি…
আপনি আমার পায়ে ধরলে পাপ হবে আমার…
_কোনো পাপ হবেনা …
আগে বলো আমায় মাফ করে দিয়েছো তুমি ???
শীতল রাজকে বললো…
_আমার চোখের দিকে তাকান তাহলে বুঝতে পারবেন …
রাজ শীতলের চোখের দিকে তাকিয়ে আছে…
_প্লিজজ বেডে উঠুন আপনি অসুস্থ…
শীতল রাজকে বেডে বসিয়ে দিয়ে মাথায় হাত বুলাতে লাগলো…
ভাবলো রাজ সত্যি ঠিক হয়ে গিয়েছে…
শীতল মনে মনে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানাচ্ছে…
.
.
.
হঠাৎ শীতল পেছনে খেয়াল করলো…
জানালার পর্দা কেমন নড়ে উঠলো…
রোদের গায়ে যে পারফিউফ ব্যাবহার করা হয় …
শীতল আশে পাশে তাকিয়ে দেখলো কেউ নেই…
সব তার মনের ভুল…
.
.
.
রাজ ঘুমাচ্ছে …
শীতলের হাত রাজ শক্ত করে ধরে আছে…
যেনো কেউ শীতলকে ওর কাছে থেকে নিতে না পারে…
রাজের এমন কান্ড দেখে শীতল হাসবে নাকি কাদবে বুঝতে পারছেনা …
রাজকে স্যালাইনে রাখা হয়েছে..
সারা শরীরে ভেষজও ঔষধ মাখানো হয়েছে যেনো দাগ গুলো শুকিয়ে যায়…
.
.
.
রাজের প্রপার বিশ্রাম নেওয়ার জন্য ডক্টর তাকে ঘুমের ইনজেকসন দিয়ে রেখেছে …
.
.
.
রাজ মাঝে মাঝে শীতলের দিকে তাকায় বাট কথা বলতে পারেনা …
শীতল বুঝতে পারে রাজ কি চায় …
রাজ শীতলকে একটা কথায় বলতে চায় চোখ দিয়ে …
যেনো রাজকে ছেড়ে শীতল কোথাও না যায়…
.
.
.
সাত দিন পর …
রাজ আজকে অনেকটা সুস্থ হয়ে উঠলো…
শীতল রাজের কাছ থেকে একমূহুর্ত পর্যন্ত দূরে যায়নি..
রাজের সাথে থেকে তার সেবা করেছে….
.
.
.
কাজল প্রিতিদিন খালার রান্না করা খাবার নিয়ে আসতো ক্লিনিকে …
শীতল অল্প করে খেতো যেনো রাজের সেবার শক্তি টুকু থাকে তার মাঝে…
.
.
.
রাজ শীতলের হাত ধরে তাকিয়ে আছে উওরের অপেক্ষায় …
শীতল কখন মুঝ ফুটে বলবে …
আমি আপনাকে ভালোবাসি ।
আপনাকে ক্ষমা করেছি …
আপনাকে ছাড়া বাচবোনা…
আমি আপনার সাথে থাকতে চাই …
_আমি আপনাকে….
শীতল কিছু বলতে পারলোনা..
তার আগেই রোদ আর শীতলের বাবা মা ক্যাবিনে উপস্থিত হলো…
_শীতল আসতে পারি…???
রাজ আর শীতল চমকে গেলো…
.
.
.
রাজ বললো…
_আরে রোদ তুই ??
আঙকেল ,আন্টি আপনারা ???
প্লিজজজ ভেতরে আসুন..
শীতল দাড়িয়ে কাদতেঁ শুরু করলো…
রাজ শীতলের হাত ধরে ভরসা দিলো…
.
.
.
শীতলের বাবা শীতলকে জরিয়ে ধরলো…
_মা আমায় ক্ষমা করে দাও..
তোমাকে ভুল বুঝেছি…
_বাবা এমন করে বলোনা..
আমি জানতাম একদিন তুমি আমাকে কাছে টেনে নেবে…
মা আর রোদও শীতলকে জরিয়ে ধরলো…
সবাই রাজকেও কাছে টেনে নিলো…
রোদ হঠাৎ শীতলের হাত ধরে বললো….
_বোন তুই অনেক দুঃখ কষ্ট পেয়েছিস আর না ..
চল আমাদের সাথ তোর নিজের বাড়িতে..
রাজ আর শীতল অবাক হয়ে গেলো রোদের কথা শোনে ..
.
.
.
বাবা : রোদ ঠিক বলেছে মা ..
চল তোর বাড়িতে …
_আমি কোথায় যাবো ???
আমার বিয়ে হয়েছে ..
আমার তো বাড়ি আছে…
রাজ : কি বলছিস রোদ ???
শীতল কোথায় যাবে ???
আমার বাড়ি তো শীতলের বাড়ি …
রোদ হেসে বললো…
_আমি বলতে চেয়েছি শীতলকে বাড়ি নিয়ে যেতে চাই..
শীতলের জন্য বাড়িটা খালি খালি হয়ে আছে…
কিছুদিন থেকে আবার চলে আসবে তোর কাছে …
.
.
.
শীতল খুশিতে আত্মহাড়া হয়ে গেলো…
রাজের হাত ধরে বললো…
_আপনিও চলুন আমার সাথে…
রাজ নরম গলায় বললো…
_আমার আজকে এখান থেকে রিলিজ হয়ে অফিসে যেতে হবে ..
বিজনেসে মকটা জটিল সমস্যা হয়েছে …
তুমি যাও আমি পরষু তোমায় নিয়ে আসবো…
সবাই রাজের প্রস্তাবে রাজি হলো শুধু শীতল ছাড়া …
সে রাজকে এই অবস্থায় ছেড়ে কিছুতেই যাবেনা ..
রাজ শীতলকে অনেক বোঝালো…
শীতল তাতেও রাজি না ..
রাজকে ছাড়া কিছুতেই যাবেনা সে …
.
.
.
রাজ সবাইকে বাহিরে যেতে বললো…
সবাই চলে যাওয়ার পর রাজ বললো..
_শীতল আমার কসম তুমি যাবে …
শীতল চুপ করে রইলো…
রাজ শীতলকে জরিয়ে ধরলো শেষ বারের মতো…
তারপর শীতলের গালে চুমো দিলো…
_আমি আপনাকে ছাড়া থাকতে পারবোনা ..
_আমি তো তোমায় ছাড়া থাকতে পারবোনা …
রাজ কথাটা বলেই শীতলকে কাছে টেনে ঠোটেঁ কিছুক্ষন চুমো খেলো…
.
.
.
অনেক ক্ষন পর শীতলকে ছেড়ে দিলো…
শীতল মাথা নিচু করে আছে..
.
.
.
অবশেষে রোদ আর তার বাবা মা শীতলকে জোর করে নিয়ে গেলো…
শীতল যাওয়ার সময় কান্না করলো আর রাজের হাত ধরে থাকলো…
.
.
.
দুই দিন হয়ে গেলো রাজ অফিসের কাজ সব সামলে নিয়েছে ..
শীতলকে ফোন করেছে বাট ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে ..
রাজের টেনশন লাগছে…
.
.
.
রাজ অবশেষে শীতল দের বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্য রওনা দিল.
.
.
.
রাজের তাদের বাড়ি গিয়ে হার্ট অট্যাকের মতো সিচিয়েশনে পড়লো…
.
.
.
.
চলবে ……
.